ময়মনসিংহ সদরের খাগডহর ফেরিঘাট থেকে সিরতা বাজার পর্যন্ত বয়ে চলা কাটা খাল গ্রীষ্মে শুষ্ক থাকলেও বর্ষা ও বন্যায় থাকে পানিতে টইটম্বুর। স্থানীয় লোকজনের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর এ খালের ওপর নির্মাণ করে ৬০ ফুটের সেতু।
অর্ধকোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে সেতুর নির্মাণকাজ ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল শেষ হওয়ার পরদিনই বন্যার তোড়ে এর সংযোগ ভেঙে যায়। সেতুটিও হেলে পড়ে।
এরপর কেটে গেছে চার বছর। এত বছরেও সেখানে আর কোনো সেতুর জন্য প্রকল্প বরাদ্দ হয়নি। স্থানীয় লোকজনের দুর্ভোগ কমাতে তৈরি সেতুই এখন হয়ে পড়েছে তাদের গলার কাঁটা।
ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সিরতা বাজার কাটা খালের ওপর নির্মিত সেতুটি এখনও একপাশে হেলে আছে। যেকোনো সময় সম্পূর্ণ অংশ ধসে পড়তে পারে। সেতুটির দুই পাশে নেই কোনো সংযোগ সড়ক। খালে পানি না থাকায় দুই পারের লোকজন চলাচল করছে সেতুর নিচ দিয়ে।
উপজেলা প্রশাসন জানায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু-কালভার্ট কর্মসূচির আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৪ লাখ ৪ হাজার ৬৫০ টাকা। সেতুটি নির্মাণ করে বরিশাল সদরের মেসার্স মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, প্রত্যন্ত অঞ্চলের সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। সেতুর দুইপাশে ফেলা লোকদেখানো মাটি কাজ শেষ হওয়ার পরদিনই বন্যার পানির তোড়ে ভেসে যায়। ধীরে ধীরে হেলে পড়ে সেতুটিও। সরকারি বরাদ্দে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত সেতুটি নির্মাণ হলেও এক দিনও এর সুবিধা ভোগ করতে পারেনি কেউ।
স্থানীয় বিপ্লব হোসেন নামের একজন বলেন, ‘বন্যার সময় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এই এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়। হাজারও মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির মুখে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল।
‘তবে জনগণের সুবিধার কথা চিন্তা করে সেতুটি নির্মাণ করা হয়নি। দুর্বলভাবে নির্মাণ করে সরকারি টাকা অপচয় করা হয়েছে। জনগণের দুর্ভোগ কমাতে চেষ্টা করলে এত বছরে নিশ্চয় একটি টেকসই সেতু নির্মাণ করা হতো।’
এই সড়কে মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন করে সংসার চালান সাইদুর রহমান নামের এক যুবক। তিনি বলেন, ‘সেতুটির পাশ দিয়ে মোটরসাইকেলে করে লোকজনকে ব্রহ্মপুত্র নদের ফেরিঘাট পর্যন্ত পারাপার করি।
‘সেতুটি ভালোভাবে নির্মিত হলে যাত্রী নিয়ে দ্রুত চলাচল করা যেত। সেতুটির পাশ দিয়ে কোনো সড়ক নেই। ভাঙাচোরা গর্তের ওপর দিয়ে বাধ্য হয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।’
ভাঙাচোরা সড়কের কারণে প্রতিদিনই গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যত টাকা রোজগার করি, সেটা গাড়ি মেরামত করতেই খরচ হচ্ছে। ভালো একটি সেতু নির্মাণ করলে আমরা উপকৃত হতাম।’
স্থানীয় ঘটক আব্দুল করিম বলেন, খাগডহর ইউনিয়নের কাটা খালের পরের কয়েকটি গ্রামে উন্নয়নের ছোঁয়া নেই। যোগাযোগব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় দীর্ঘদিন এ এলাকার ছেলে-মেয়েদের বিয়ে করানো খুব কঠিন ছিল।
তবে সেতুর নির্মাণকাজ শুরুর পর দ্রুত অনেক বিয়ে হয়েছিল। এখন সবকিছু ঠিক হলেও যোগাযোগব্যবস্থার জন্যই অনেক বিয়ে ভেঙে যায়।
তাহের উদ্দিন নামের ষাটোর্ধ্ব একজন বলেন, ‘সেতু ভালা কইরা বানাইছে না। হুদাই উন্নয়নের স্বপ্ন দেহায়া ট্যাহা খরচ করছে। আমরার দুর্ভোগ শেষ হইত না৷
‘ভাবছিলাম, হামি সেতুর উরফে দিয়া না যাইতে পারলেও অন্যরা এর সুবিধা পাইব, কিন্তু এর উরফে দিয়া মানুষ তো দূরের কথা, একটা হেলও (শিয়াল) যাইবার পারছে না। এই সেতু এহন গলার কাঁডা। সবার কথা চিন্তা কইরা ভালা একটা সেতু নির্মাণ করা দরকার।’
ময়মনসিংহ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মনিরুল হক ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যতদূর মনে আছে, সরকারি বরাদ্দের সম্পূর্ণ টাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়নি৷ সেতু ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় ১৪ লাখ টাকা দেয়া হয়েছিল। আর সেতুটি আমার সময় নির্মিত হয়নি। বিস্তারিত তৎকালীন পিআইও বলতে পারবেন।’
নতুন সেতু নির্মাণের বিষয়ে তিনি জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর বর্তমানে ৬০ ফুট দীর্ঘ সেতু খুব কম নির্মাণ করছে। কাটাখালী খালে সেতু নির্মাণ করতে হলে ৬০ ফুটই করতে হবে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে একটি প্রস্তাব পাঠানোর পরিকল্পনা চলছে। যদি তারা অনুমোদন না পান, তাহলে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর (এলজিইডি) সেতুটি নির্মাণ করবে।
তৎকালীন পিআইও মমিনুর রহমান ছিলেন এই সেতুর নির্মাণকাজের তদারকিতে। তিনি বর্তমানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার সময়ে সেতুটি নির্মিত হয়েছিল সত্য। তবে আমি এখন ময়মনসিংহে নেই। ফলে সেতুটির বিষয়ে সামগ্রিক তথ্যও মনে নেই।’
এই কথা বলার পর তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন৷ এরপর বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
ময়মনসিংহ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেহেতু নির্মিত সেতুটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়েছে, সেহেতু একই স্থানে আরেকটি সেতু নির্মাণ করেই জনদুর্ভোগ লাঘব করতে হবে। এ জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে দ্রুত একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলেই প্রকল্পের মাধ্যমে আরেকটি সেতু একই স্থানে নির্মিত হবে।’
আরও পড়ুন:নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মিজানুর রহমান রিপন (৪৮) নামের এক স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর ও লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটেছে। মিজানুর রহমান রিপন ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে।
গত রবিবার সন্ধার দিকে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ বাজারে এই ঘটনা ঘটে। মিজানুর রহমান রিপন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমর সংবাদ পত্রিকার দৌলতপুর উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি নিউজ বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে কাজ করে আসছেন। এঘটনায় ওই দিন রাতে ভূক্তভুগী নিজে বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
এযাহার সূত্রে জানাযায়, গত ৮ জুন উপজেলার তারাগুনিয়া থানার মোড় এলাকার তারাগুনিয়া ক্লিনিকে আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রশুতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি সহ উপজেলার বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী সংবাদ প্রকাশ করে। তারি জের ধরে উপজেলা বাজারে থাকা সরকার নিষিদ্ধ ক্লিনিক বেবি নার্সিং হোম এর মালিক আহসান হাবিব কালুর ছোট ছেলে খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারে তাকে মারধর করে।
এবিষয়ে মিজানুর রহমান নামের ওই গণমাধ্যম কর্মী বলেন, গতকাল বিকেলে আমি উপজেলা বাজারে বাড়ির দৈনন্দিন বাজার করছিলাম এসময় খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারের বেবী ক্লিনিক মালিকের ছেলে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় সে আমাকে বলে আমার হাসপাতালে যে ডাক্তার আসে সেই ডাক্তারের নামে তুরা নিউজ করেছিস বলে আমার উপর হামলা চালিয়ে বেদড়ক মারধর করে। এঘটনার পর আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
গণমাধ্যম কর্মীকে মারধরের বিষয়ে, দৌলতপুর উপজেলার একজন প্রবীন গণমাধ্যম কর্মী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে এটি কখনই কাম্য নয়। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া উচিৎ।
এঘটনায় দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হুদা জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অভিযুক্ত খালিদ হাসান আর্জু
মন্তব্য