দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত। আমেজ ফিরেছে দুর্গাপূজায়। উৎসব প্রাণবন্ত করতে চলছে শেষ সময়ের কেনাকাটা। ক্রেতা আকর্ষণে বাহারি সাজপোশাকের পশরা সাজিয়েছে বিপণীবিতানগুলো।
দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোতে আনা হয়েছে বাহারিপোশাক। গরমের বিষয়টি মাথায় রেখে সুতি কাপড়ে বিভিন্ন ডিজাইনে বর্ণিল পোশাক নিয়ে এসেছে ‘দেশি দশ’। তাদের আনা পোশাকগুলোতে রয়েছে দেশীয় ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মিশেল।
পূজার পোশাকে এবারের ট্রেন্ড ‘ফ্যামিলি প্যাক’। অর্থাৎ বিশেষ ম্যাচিং পোশাক রয়েছে পরিবার ও যুগলদের জন্য। বেশির ভাগ পোশাকেই দুর্গা দেবীর মাথার শূল, মুকুটসহ, মন্দির ও পূজার বিভিন্ন উপকরণ প্রাধান্য পেয়েছে। দামও নাগালের মধ্যে।
এবারের শারদ সংগ্রহে তৈরি করা হয়েছে আরামদায়ক নানা পোশাক। এসব পোশাকে মূলত কটন, হাফসিল্ক, সেমি পিউর, লিলেন কাপড়কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। মূল রঙ হিসাবে বেছে নেয়া হয়েছে লাল, নীল, পিচ, কমলা, হলুদ, ব্রাউন, লাইট অলিভ ও গেরুয়া।
শারদ সংগ্রহে সব বয়সের সবার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অনন্য ডিজাইনের পোশাক। যেমন: শাড়ি, থ্রিপিস, কামিজ, স্কার্ট টপস, ফ্রক, বেবি শাড়ি, রেডি ব্লাউজ, ওড়না, আনস্টিচ ড্রেস, পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, শার্ট, ধূতি, উত্তরীয় ইত্যাদি। এ ছাড়া, বিশেষ ম্যাচিং পোশাক রয়েছে পরিবার ও যুগলদের জন্যে।
মেয়েদের জন্য সুতি থেকে শুরু করে জামদানি, সিল্ক, তসর, কাতান শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। মেয়েদের পোশাকের পাশাপাশি ছেলেদের ও বাচ্চাদের জন্যও নতুন ডিজাইনের পোশাক এসেছে। পোশাকের নকশা ফুটিয়ে তোলার জন্য স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, হাতের কাজ, প্যাচওয়ার্ক, কারচুপি ব্যবহার করা হয়েছে।
দেশি দশের মধ্যে ‘রঙ বাংলাদেশ’, ‘অঞ্জন’স’, ‘কে ক্রাফট’ পূজা উপলক্ষে ফ্যামিলি প্যাক পোশাক বাজারে এনেছে। বাবা-বা, ছেলে-মেয়ে সবাই একই ডিজাইনের পোশাক পাবেন এখানে। উৎসবে ম্যাচিং পোশাকের কারণে থ্রি পিস ও শাড়ি দুটির সঙ্গে মিলিয়ে পাঞ্জাবি, ফতুয়া, টপস পাওয়া যাচ্ছে।
‘দেশী দশ’ এর ফ্যাশন হাউসগুলোতে মেয়েদের কুর্তি কিনতে খরচ হবে ৭৫০-৩০০০ টাকা, থ্রি-পিস পড়বে ১৮০০-৮০০০ টাকা। মেয়ে বাচ্চার পোশাক পড়বে ৬০০-৩০০০ টাকার উপরে এবং ছেলে বাচ্চাদের পোশাক পড়বে ৪৫০-২৫০০ টাকা। শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। ছেলেদের পাঞ্জাবি ৭০০-৬০০০ টাকা, শার্ট ও পলো পড়বে ৫৫০-২৫০০ টাকার ওপরে।
শারদীয় আয়োজনকে অনিন্দ্যসুন্দর করতে ‘রঙ বাংলাদেশ’ থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে মন্দির ও প্রতীক, দেবীর অলংকার ও শতরঞ্জি।
‘রঙ বাংলাদেশ’ এর বিক্রয়কর্মী সোনিয়া আক্তার বলেন, অন্যান্যবারের চেয়ে এবার ফামিলি প্যাকের চাহিদা বেশি। বিবাহিত নারীরা থ্রি পিস বা শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে পাঞ্জাবি ও ছেলে মেয়েদের পোশাক কিনছে।
বাবা-মা আর ছোট ভাই চন্দনের সঙ্গে পূজার কেনাকাটা করতে এসেছে বিএফ শাহিন স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র নন্দন। ‘রঙ বাংলাদেশ’ থেকে দুটি ফতুয়া আর একটি পাঞ্জাবি কিনেছে নন্দন। পুজার এক একটি দিন ভিন্ন ভিন্ন পোশাকে নিজেকে দেখতে চাই সে।
দুই ভাই কী একই রকম পোশাক কিনেছো, এমন প্রশ্নে নন্দন জানায়, ছোট ভাইয়ের সঙ্গে অধিকাংশ সময় তার পছন্দ মেলে না। কখনও পছন্দ মিলে গেলে কেনা হয়।
তাদের মা জানান, বছরে এই একটি বড় উৎসব। গত বছর করোনার কারণে পূজায় কেনাকাটা করা হয়নি, কিন্তু এবার নিজেদেরসহ আত্মীয়দের জন্যও নানা পোশাক কিনেছেন।
‘বাংলার মেলা’ এবার শারদ উৎসবে অল্প কিছু পোশাক নতুন তুলেছে। বিক্রয়কর্মী রুমানা, ‘মেয়েদের ড্রেস বেশি বিক্রি হয়েছে। কোনোদিন থ্রি পিস বেশি, আবার কোনোদিন শাড়ির চাহিদা বেশি। দুটোরই চাহিদা আছে।’
শারদ উৎসবে গতানুগতিক ড্রেস আছে ‘দেশাল’ এ। মেয়েদের জন্য নতুন টপস আর ছেলেদের জন্য নতুন পাঞ্জাবি নিয়ে এসেছে দেশাল।
‘কে ক্র্যাফট’ তৈরি করেছে লং-কুর্তি, টপস, শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, পাঞ্জাবি, শার্ট ও শিশুদের জন্য নতুন ডিজাইনের সব পোশাক। বরাবরের মতো এবারও যুগল ও ফ্যামিলি পোশাক রয়েছে তাদের। অর্থাৎ মা ও মেয়ের কুর্তি, বাবা ও ছেলের জন্য পাঞ্জাবি। এ ছাড়া, যুগলদের জন্য রয়েছে শাড়ি ও পাঞ্জাবি।
লিনেন, কটন, ভয়েল ও সিল্ক ইত্যাদি আরামদায়ক কাপড়ে প্রিন্টিং, এমব্রয়ডারি ও মিক্সড মিডিয়া ব্যবহার করা হয়েছে। এবারকার পূজা আয়োজনে উল্লেখযোগ্য রঙের মাঝে আছে মেরুন, ফিরোজা, লাইট ব্রাউন, কোরাল রেড ও অরেঞ্জ।
‘কে ক্রাফট’ এর বিক্রয়কর্মী হীরা আক্তার বলেন, ‘অন্যান্য বারের চেয়ে এবার ফ্যামিলি প্যাকেজ বেশি কিনছে। তবে ফ্যামিলি প্যাক আলাদাও বিক্রি হচ্ছে।’
দুর্গাপূজা সামনে রেখে ‘অঞ্জনস’ নিয়ে এসেছে বিভিন্ন ধরনের নকশা ও প্যাটার্নের বৈচিত্র্যময় পোশাক।
মেয়েদের ফতুয়া, কুর্তি ও টপস, জমকালো কাজের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি রয়েছে এখানে। ছোটদের জন্য আছে বিভিন্ন ধরনের রঙিন পোশাক। পোশাকে আরামের কথা চিন্তা করে বেছে নেয়া হয়েছে কটন, লিনেন কটন, সিল্ক, এন্ডি সিল্ক, জর্জেট, এন্ডি কটনসহ নতুন ধরনের উইভিং ডিজাইনের কাপড়। পোশাক ছাড়াও থাকছে বিভিন্ন ধরনের গয়না ও হোম টেক্সটাইল।
দুই মেয়েসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন রিপা রায়। তিনি বলেন, ‘পূজাতে নারীদের শাড়িই পছন্দ বেশি। আমি দুটো শাড়ি কিনেছি। আর একটি জামদানি অথবা কাতান শাড়ি কিনতে মার্কেটে এসেছি।’
সপ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী রায় বলেন, “পূজা উপলক্ষে ফ্যাশন হাউস ‘সারা’ থেকে কয়েকটি টপস কিনেছি। এখনও পার্টি ড্রেস কেনা হয়নি। সেটা কেনার জন্য আজ এসেছি। প্রায় সব দোকানেই পছন্দসই পোশাক পাওয়া যাচ্ছে।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মৃত্তিকা সাহা জানান, থ্রি-পিস পরে সহজেই চলাফেরা করা যায়। তাই পূজা উপলক্ষে এবার তিনি দুটি থ্রি-পিস কিনেছেন।
দেশী দশের ‘নিপুন’ এর সেলসকর্মী বলেন, ‘ফ্যামিলি প্যাকের ক্ষেত্রে নিপুণ-এ মায়ের সঙ্গে মেয়ে আর বাবার সঙ্গে ছেলের ম্যাচিং পোশাক রয়েছে। পুরো পরিবারের ম্যাচিং পোশাক তাদের নেই।’
‘দেশী দশ’ এর পাশাপাশি পূজা উপলক্ষে নতুন পসরা সাজিয়েছে ফ্যাশন হাউস ‘সারা’। মেয়েদের জন্য থাকছে ফ্যাশন টপস, থ্রিপিস, কুর্তি, এথনিক, লেডিস ক্যাজুয়াল শার্ট, আনস্টিচ লউন থ্রিপিস,লন থ্রি পিস, পালাজ্জো এবং ডেনিম ওয়্যার। পাশাপাশি পার্টি ওয়্যার সিঙ্গেল পিস, এক্সক্লুসিভ প্রিন্টেড শাড়ি, প্রিন্টেড থ্রিপিস, ফ্যাশন টপস এবং প্রিন্টেড কাফতানও রয়েছে এখানে।
সারার পূজা কালেকশনে ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবি, টি-শার্ট,ফতুয়া, কাতুয়া, ডেনিম ওয়্যার, ক্যাজুয়াল শার্ট, পোলো শার্ট, ফরমাল শার্ট, চিনো প্যান্ট, ডেনিম প্যান্ট, পায়জামা রয়েছে।
পাশাপাশি বাবা-ছেলের জন্য একই ডিজাইনের পাঞ্জাবিও রয়েছে পূজার স্পেশাল কালেকশনে।
সারা লাইফস্টাইল মেয়ে শিশুদের জন্য ফ্যাশন টপস, ফ্রক, থ্রিপিস ইত্যাদি নিয়ে এসেছে। আর ছেলে শিশুদের জন্য থাকছে কাতুয়া, পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, সিঙ্গেল শার্ট, শার্ট ও প্যান্ট সেট, সিঙ্গেল প্যান্ট ইত্যাদি।
‘আড়ং’ এ মেয়েদের পাঞ্জাবি, কুর্তা, থ্রি-পিস পাওয়া যাচ্ছে ৭ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার উপরে পর্যন্ত। মেয়েদের সুতি থেকে শুরু করে জামদানি, সিল্ক, তসর, কাতান শাড়ি পাওয়া যাবে। যার দাম পড়বে ১ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত।
ছেলেদের পাঞ্জাবি-পাজামা, শর্টকুর্তা, ফতুয়া, ও বিভিন্ন ধরনের শার্ট রয়েছে। এগুলোর দাম ৬৫০ থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত।
মেয়ে বাচ্চাদের পোশাকের দাম পড়বে ২৫০ থেকে ৪ হাজার টাকার উপর পর্যন্ত। আর ছেলে বাচ্চাদের পোশাক পড়বে ২৫০ থেকে ৩ হাজার টাকার উপরে।
আড়ংয়ের এক বিক্রয়কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘গতবার করোনার কারণে উৎসবে কেউ বের হতে পারেনি, কিন্ত এবার বিক্রি ভালো। পূজাতে সবাই নতুন পোশাক কিনছে। পোশাকের পাশাপাশি তাদের গয়নাগুলোও ভালো বিক্রি হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:চলতি বছর ব্যতিক্রমী কিছু মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এ বছর কারা ও কতজন এ পুরস্কার পাচ্ছেন, তা জানাননি উপদেষ্টা।
সচিবালয়ে রবিবার স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি উল্লিখিত বক্তব্য দেন।
উপদেষ্টা বলেন, কমিটি কিছু নাম সুপারিশ করেছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নামের তালিকা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো হবে।
দেশের জন্য অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ব্যতিক্রমী কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ওই সময়ে উপস্থিত আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, এর আগে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে দলগত ও গোষ্ঠীগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। র্যাবের মতো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকেও দেশের সর্বোচ্চ এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
এ বছর ১০ জনের কম ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য