সিভিল এভিয়েশনের চূড়ান্ত অনুমোদন না পাওয়ায় আটকে আছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট (সিবিডি) প্রকল্পের মহাপরিকল্পনা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামার জন্য সুউচ্চ ভবন নির্মাণে সিভিল এভিয়েশনের অনুমতি প্রয়োজন হয়।
আগামী সপ্তাহে এ অনুমোদনের বিষয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছে রাজউক।
প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিভিল এভিয়েশনের ক্লিয়ারেন্স পেলে আমরা সিবিডির মাস্টার প্ল্যান চূড়ান্ত করতে পারতাম, কিন্তু আমরা এখনও সেটা পাইনি।
‘আমরা তাদের কাছ থেকে ভবনের উচ্চতার বিষয়ে মতামত চেয়েছি, যা এখনও তারা কিছু বলছে না। আমরা তিনটি আইকনিক ভবন করতে চাই। এর প্রধানটি হবে ১৪২ তলা। একটি ৭১ ও অপরটি হবে ৫২ তলার। এখানে মোট ভবন হবে ৫২টি। আমরা এখনও এ টার্গেটেই আছি। আমাদের এখন অপেক্ষা করতে হচ্ছে সিভিল এভিয়েশন কতটা পর্যন্ত অ্যালাও করে।’
রাজউক চেয়ারম্যন বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে আমরা একটা বড় বৈঠক ডেকেছি। সেখানে চার প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকবেন। বুয়েটের বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। সেখানে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সিভিল এভিয়েশনের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। এখানে আমাদের প্রস্তাবিত উচ্চতা অনুমোদিত হলে অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা মাস্টার প্ল্যান চূড়ান্ত করে ফেলব।
‘আমাদের ১১১ তলা করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু আমরা ১৪২ তলা ভবনের টার্গেট ছাড়িনি। আমরা এটাই করতে চাই। এখন দেখি সিভিল এভিয়েশন কতটা অনুমোদন দেয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কোম্পানি নিয়োগ করেছি। তারা রাজউকের তহবিলে কিছু টাকাও জমা দিয়েছে। তারা ম্যানেজেরিয়াল ভবনও নির্মাণ করছে। বিদেশি কোম্পানির সঙ্গেও চুক্তি হয়েছে। মাস্টার প্ল্যান না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজ শুরু করতে পারছে না।’
শহরের যে অংশে প্রধান বাণিজ্যিক ক্রিয়াকলাপ গড়ে ওঠে, তাকে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এলাকা বা সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট বলে। যেহেতু এই কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এলাকাকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন মানুষের সমাগম ঘটে, এ অংশের সঙ্গে সব স্থানের ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকে।
সিবিডির বৈশিষ্ট্য হলো উন্নত যোগাযোগ নেটওয়ার্ক। এখানে সরকারি-বেসরকারি রুটে বাস, ট্রাম, মেট্রোরেল ও অন্যান্য গাড়ির সংযোগ থাকে এবং সকাল ও সন্ধ্যায় রাস্তায় বেশিসংখ্যক গাড়ির উপস্থিতি দেখা যায়। তবে রাতে থাকে নীরব, সুনসান।
সিবিডির স্বপ্ন
সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৬ সালের ২ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের সময় সিবিডি সম্পর্কে বলেন, ‘আমি আমার একটি স্বপ্নের কথা বলতে চাই। আমার এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রবৃদ্ধি সঞ্চালক ও জনবান্ধব একটি প্রকল্প সম্পর্কে সবাইকে বলব। আপনারা জানেন, পূর্বাচল ও এর নিকটস্থ এলাকা নিয়ে একটি স্বতন্ত্র মহানগর গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
‘এ মহানগরে পিপিপির আদলে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি। এর মাধ্যমে একটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার, একটি আধুনিক স্পোর্টস কমপ্লেক্স এবং ১৪২ তলা আইকনিক টাওয়ার স্থাপন করা হবে।’
সে সময় ঢাকায় ১৪২ তলার এই আইকনিক টাওয়ার নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
ভবন নির্মাণে প্রথমে সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্রের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ও কেপিসি গ্রুপের মালিক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কালী প্রদীপ চৌধুরী। অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও কালী প্রদীপ চৌধুরীর উপস্থিতিতে ২০১৬ সালের ১২ জুন এ টাওয়ার নির্মাণের বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের তারিখ চূড়ান্ত হয়।
কিন্তু জমির দাম সেই সময়ের বাজার মূল্যের তুলনায় অনেক বেশি ধরা হয় (প্রতি একর ২১ কোটি টাকা)। এ ছাড়া বিষয়টি নিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাও তৈরি হয়। এ কারণে চুক্তি করতে এলেও চুক্তি না করে ফিরে যান কেপিসি গ্রুপ চেয়ারম্যান।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে কেপিসি গ্রুপের চেয়ারম্যান কালী প্রদীপ চৌধুরী ভবনটি নির্মাণের ইচ্ছা প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী মুহিতের সঙ্গে ঢাকায় বৈঠক করেন। পরে কেপিসি গ্রুপের পক্ষে অর্থমন্ত্রী ১০০ একর জায়গার ওপর মূল ভবনসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় ওই বছরের নভেম্বর মাসে পূর্বাচলের সিবিডি অংশে ওই জায়গা দিতে রাজি হয়।
কনসোর্টিয়াম চুক্তি
নানা জটিলতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যেই ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর সিবিডি নির্মাণে ৮০০ কোটি বা ৮ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই করে ডেভেলপার কোম্পানি ‘কনসোর্টিয়াম অব পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংস’ ও জাপানি প্রতিষ্ঠান ‘কাজিমা করপোরেশন’।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে রাজউক ও ডেভেলপার কোম্পানি সূত্র জানায়, সিবিডি নামের নতুন এ বাণিজ্যিক শহরটি সাত বছরে শতাধিক একর জমির ওপর তৈরি করা হবে।
সিবিডিতে ৪৬৫ মিটার উচ্চতার ১৪২ তলা বিশিষ্ট আইকনিক লিগ্যাসি টাওয়ার, ৭১ তলা বিশিষ্ট স্বাধীনতা টাওয়ার ও ৫২ তলা বিশিষ্ট ভাষা টাওয়ারসহ ৪১টি গগণচুম্বী ভবন থাকবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য এসব ভবনে ৩ কোটি ৮০ লাখ বর্গফুট জায়গা পাওয়া যাবে।
রাজউক বলছে, সিবিডির বাকি ৩৮টি ভবনের প্রত্যেকটির উচ্চতা ৪০ তলার সমান হবে। বাণিজ্যিক শহরের এ পরিকল্পনায় একটি বড় সম্মেলন সেন্টারও থাকবে।
২০১৮ সালে এক উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান পাওয়ারপ্যাক ও জাপানি প্রতিষ্ঠান কাজিমা যৌথভাবে রাজউকের কাছ থেকে এ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পায়। পূর্বাচলের ১৯ নম্বর সেক্টরে ১১৪ একর জমির ওপর এ কাজ করবেন তারা।
প্রকল্পের কাজে নেতৃত্ব দেবে পাওয়ারপ্যাক। আর কারিগরি অংশীদার হিসেবে জাপানের কাজিমা তাতে সহায়তা করবে।
নিলামের শর্ত অনুসারে মোট ভূমির মূল্যের ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩১৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এরই মধ্যে রাজউককে পরিশোধ করেছে পাওয়ারপ্যাক-কাজিমা কনসোর্টিয়াম।
পাওয়ারপ্যাক কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্পের দায়িত্ব পাওয়ার পরই তারা নির্মাণকারী ঠিকাদার হিসেবে চীনা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার চায়না ইন্টারন্যাশন্যাল গ্রুপ লিমিটেড এবং প্রকল্পের নকশার জন্য বিশ্বের সপ্তম বৃহৎ প্রকৌশল কোম্পানি দক্ষিণ কোরিয়ার হিরিম আর্কিটেক্ট অ্যান্ড প্ল্যানার্স কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
এ ছাড়া নির্মাণ ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনার জন্য ফরাসি প্রতিষ্ঠান আরকেটাইপ কনস্ট্রাকশন হোল্ডিংস লিমিটেড, মাটি পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং ট্রাফিক ও পরিবেশের প্রভাব মূল্যায়নের জন্য প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপারকে (পিডব্লিউসি) নিযুক্ত করা হয়েছে।
বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাইস ওয়াটারহাউজ, ইন্ডিয়াকেও নিযুক্ত করেছে পাওয়ারপ্যাক।
ইপসার সঙ্গে চুক্তি
২০১৯ সালের ৭ ডিসেম্বর সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট প্রকল্পের একাংশের অর্থায়নসহ উন্নয়নে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ‘চায়না এনার্জি কোম্পানি লিমিটেড’ যুক্ত হয়েছে।
বেইজিংয়ে চায়না এনার্জির প্রধান কার্যালয়ে পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংস ও কাজিমা করপোরেশন কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ৩৬০ কোটি ডলারের প্রকৌশল, ক্রয় ও নির্মাণ (ইপিসি) চুক্তি হয়।
বাংলাদেশি মুদ্রায় চুক্তিমূল্য ৩০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই সব থেকে বড় অঙ্কের ইপিসি চুক্তি। পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংস ও কাজিমা করপোরেশন কনসোর্টিয়ামের পক্ষে পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার এবং চায়না এনার্জি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান ঝাং হংমিং এই ইপিসি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ার
সিবিডির প্রধান তিনটি ভবনকে বলা হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ার’। রাজউক মনে করে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সামগ্রিক অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ১৪২ তলাবিশিষ্ট আইকনিক লিগ্যাসি টাওয়ারসহ মোট ৪২টি আকাশচুম্বী স্থাপনা এখানে তৈরি হবে। আইকনিক লিগ্যাসি টাওয়ারটি হবে বিশ্বের পঞ্চম উঁচু ভবন। এর ৯৬ তলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রযাত্রা সম্পর্কিত একটি জাদুঘর থাকবে। আর ৭১ তলাবিশিষ্ট ভবনটি হবে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতির নিদর্শন হিসেবে। এ ছাড়া ৫২ তলা ভবনটি তুলে ধরা হবে ১৯৫২ সালে ভাষার জন্য ত্যাগ ও মহিমার নিদর্শন হিসেবে।
এই তিনটি ভবন বা টাওয়ারের নাম হবে ‘বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ার’। এগুলো তিনটি (ল্যাঙ্গুয়েজ, লিবারেশন ও লিগ্যাসি) প্রতীক বহন করবে।
১১৪ একর জমির ওপর পুরো প্রকল্পে একটি আধুনিক ও উচ্চ প্রযুক্তির সুরক্ষাপ্রাচীর স্থাপন করা হবে।
গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, প্রায় ৯৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ প্রকল্পের ইতোমধ্যেই প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের সংস্থান হয়েছে। বাকি অর্থ সংগ্রহের কাজ করছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রথম দুই বছরে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার নির্মাণ সামগ্রী কেনা হবে, যা দেশের অর্থনীতি ও নির্মাণশিল্পে বড় ভূমিকা রাখবে।
এরই মধ্যে প্রকল্পের মাটি পরীক্ষা, যানবাহন ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন সমীক্ষা, প্রকল্পের খসড়া মাস্টারপ্ল্যান, ডিজাইন রাজউকে জমা দিয়েছে প্রকল্প পরিচালক। একই সঙ্গে স্মার্ট ও অত্যাধুনিক নির্মাণ শৈলীর আইকনিক টাওয়ারের ডিজাইনের জন্য রাজউক একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে। পরিবেশবান্ধব এ ভবনটির সারা দেয়ালে সর্বাধুনিক সোলার গ্লাস লাগানো হবে। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানিসহ বিভিন্ন ধরনের ইউটিলিটির জন্য ব্যবহার করা হবে মাটির নিচের লাইনের ডাক্ট ব্যবস্থা।
গ্রিন ভবনগুলোর ওয়ালে চীনের গ্রেট ওয়ালের আদলে নির্মাণ করা হবে ওয়াকওয়ে। অভ্যন্তরীণ যাতায়াতের জন্য পরিবেশবান্ধব ইলেকট্রিক বাস ও আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াকওয়ে থাকবে। ভবনের স্থাপত্য নকশা তৈরির প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে কোরিয়ার বিশ্বখ্যাত হেরিম আর্কিটেক্ট।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশ-এর ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হলেন ফারুক আহমেদ।
ট্রাস্টি বোর্ডের ৬৬তম সভায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ফারুক আহমেদ ২৭ এপ্রিল থেকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বাস্থ্য বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত ফারুক আহমেদের উন্নয়ন খাতে রয়েছে বিস্তৃত অভিজ্ঞতা।
তিনি এক সময় ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন এবং ঢাকায় বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ে বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জেনেভাভিত্তিক গ্যাভি, দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (এঅঠও)-এর বোর্ড সদস্য ছিলেন, এছাড়া তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন কমিটিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ফারুক আহমেদ সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি) এন্টারপ্রাইজের পরিচালনা পরিষদের একজন সদস্য। তিনি বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ ওয়ার্কিং গ্রুপেরও একজন সদস্য।
ফারুক আহমেদ ২০২০ সালের ১৬ মার্চ থেকে আরডিআরএস-এর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
আরডিআরএস বিশ্বাস করে, ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে সংস্থাটি দেশজুড়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রাখতে এবং এ সম্পর্কিত কার্যক্রমকে বেগবান করতে সক্ষম হবে। প্রেস রিলিজ
দেশের বাজারে টানা তৃতীয় দিনের মতো কমেছে স্বর্ণের দাম। ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে ৬৩০ টাকা। সে হিসাবে স্বর্ণের ভরি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ টাকা। আগের দিন বুধবার তা ছিল এক লাখ ১৪ হাজার ১৯১ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট থেকে স্বর্ণের নতুন নির্ধারিত দাম কার্যকর হবে।
বাজুস এর আগে চলতি এপ্রিল মাসের ৬, ৮ ও ১৮ তারিখ তিন দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ভালো মানের স্বর্ণের ভরিতে ৬ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল দুই হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়। মাঝে ২০ এপ্রিল ভরিতে ৮৪০ টাকা দাম কমানোর পরদিন ২১ এপ্রিল আবার ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস।
এবার শুরু হয় দাম কমানোর পালা। সবশেষ দাম বাড়ানোর দু’দিন পর ২৩ এপ্রিল ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে তিন হাজার ১৩৮ টাকা ও ২৪ এপ্রিল দু’হাজার ৯৯ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। আর বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ টানা তিন দিনে স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ টাকা।
সোনার দামে এমন উত্থান-পতনের কারণ জানতে চাইলে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন নতুন পদ্ধতি বা পলিসি অনুসরণ করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করি। সেটি হচ্ছে বিশ্ব স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল পলিসি।
‘এতদিন আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করতাম। সেক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে যখন স্বর্ণের দাম কমত তখন আমরা কমাতাম। আর যখন বাড়ত তখন বাড়াতাম।’
তিরি আরও বলেন, ‘এখন আমরা আমাদের স্বর্ণের সবচেয়ে বড় বাজার তাঁতীবাজারের বুলিয়ান মার্কেট ফলো করে দর নির্ধারণ করি। এই বাজারে স্বর্ণের দাম ঘণ্টায় ঘণ্টায় উঠা-নামা করে। সেটা অনুসরণ করে আমরা নতুন দর নির্ধারণ করে থাকি। সেক্ষেত্রে দিনে দু’বারও গোল্ডের দাম বাড়ানো-কমানো হতে পারে।’
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০২৩ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড সুপারিশ করেছে।
ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে এ ডিভিডেন্ড প্রদান করা হবে।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলমের সভাপতিত্বে বুধবার অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদসহ অন্যান্য পরিচালক, ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এবং অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, এফসিএস উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ২৫ জুন ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। লভ্যাংশ প্রাপ্তি এবং সাধারণ সভায় যোগদানের ক্ষেত্রে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১৬ মে।
সভায় অন্যান্য আলোচ্যসূচির সঙ্গে ৩১ মার্চ শেষ হওয়া ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুমোদন করা হয়।
আরও পড়ুন:কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাতে সমগ্র বিশ্ব যখন টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে পতিত হয়, ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে টেনে তুলতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের দরবারে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়।
যদিও একটি শ্রেণি বাজারে নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে বরাবরই সক্রিয় ছিল। তবে দূরদর্শী নেতৃত্বগুণে বিনিয়োগকারীদের অর্থের সুরক্ষা দিতে বারবার বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হতে দেননি অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে অস্বাভাবিক আচরণ করছে পুঁজিবাজার। নিয়ন্ত্রক সংস্থাও এ পরিস্থিতি সামাল দিতে এরই মধ্যে অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে বাজারকে স্থিতিশীল করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এমনকি পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে গতকাল ফ্লোর প্রাইসমুক্ত সব শেয়ারে একদিনের দর কমার নিম্নসীমা (সার্কিট ব্রেকার) ৩ শতাংশে বেঁধে দিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএসইসির সময়োপযোগী এমন পদক্ষেপ বাজারকে আবারও টেনে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সন্দেহভাজন বেশকিছু লেনদেন পরিলক্ষিত হয়েছে বাজারে। এতে বিশেষ একটি শ্রেণি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বাজারকে ম্যানিপুলেট করার চেষ্টা করছে। কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও এতে জড়িত রয়েছে। বাজারে অবাঞ্ছিত বিক্রির আদেশ দিয়ে তারা অস্থিরতা তৈরি করছে। তাছাড়া বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে বাজারে একটা শ্রেণি স্বার্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। ফলে বেশ কিছুদিন ধরে বাজার কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করছে।
এ বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বেশ কিছু ট্রেডার নিজেদের মধ্যে যোগশাজসের মাধ্যমে প্রথমে কম দরে শেয়ার বিক্রি করত। পরে তাদের দেখাদেখি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যখন প্যানিক হয়ে শেয়ার বিক্রি করত তখন তারা আবার কম দরে শেয়ারগুলো কিনে নিত। এভাবে তারা নিজেদের মধ্যে শেয়ার লেনদেন করে প্যানিক সৃষ্টির মাধ্যমে ভালো শেয়ারগুলোর দাম কমাত। এই কাজে তাদের বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও সহযোগিতা করত।’
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শেয়ারের দর কমার কথা নয়। গুটি কয়েক অসাধু ট্রেডারের কারসাজিতে বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে বড় বড় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আল-আমিন বলেন, ‘এক শ্রেণির অসাধু বিনিয়োগকারী চাচ্ছেন বর্তমান কমিশন বিদায় হয়ে নতুন কেউ দায়িত্বে আসুক, যাতে তারা নতুন করে আরও সুযোগ নিতে পারেন। তারাই বিভিন্ন দুর্বল শেয়ারে কারসাজি করে সুবিধা নিচ্ছেন।
‘ফোর্সড সেলের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার তারা কম দরে কিনে নিচ্ছেন। কমিশনের উচিত হবে কারসাজিকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা, যাতে তারা বারবার বাজারকে ম্যানিপুলেট করার সাহস না পায়।’
এদিকে শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক সময়ের টানা পতন ঠেকাতে আবারও শেয়ারের মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে বিএসইসি এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে।
ওই আদেশে বলা হয়, এখন থেকে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর এক দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না। বর্তমানে দরভেদে কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত দরপতন হতে পারে।
দেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে আদেশে জানানো হয়েছে। সার্কিট ব্রেকারের এ সিদ্ধান্ত বুধবার থেকে কার্যকর করতে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘আজকের এই সার্কিট ব্রেকার আরোপ বাজারে কারসাজি রোধ করবে। এটি সন্দেহভাজন লেনদেন বন্ধ করবে। আর এ সিদ্ধান্তের ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও উচ্চ সম্পদশালী একক বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি সক্রিয় হবে বলে আশা করছি।’
তিনি বলেন, ‘অনেক ভালো শেয়ার বর্তমানে আন্ডারভ্যালুতে আছে। এখানে তারা বিনিয়োগ করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।’
সার্কিট ব্রেকার বাজারের দরপতন ফেরাতে ব্যর্থ হলে আবারও ফ্লোর প্রাইস দেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত আছে কি না জানতে চাইলে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আশা করছি, আমাদের বাজারে আর কখনও ফ্লোর প্রাইস দিতে হবে না। শিগগিরই বাজার একটা স্থিতিশীল অবস্থানে ফিরবে।’
আরও পড়ুন:দেশের পুঁজিবাজারে শেয়ারের দরপতনের গতি কমিয়ে আনার চেষ্টার অংশ হিসেবে এবার মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার আগের দিনের শেষ হওয়া দরের ভিত্তিতে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না।
শেয়ারের দাম কমার ক্ষেত্রে আগে মূল্যসীমা ছিল ১০ শতাংশ। তবে ঊর্ধ্বসীমা অর্থাৎ কোনো শেয়ারের দাম বাড়ার সীমা ১০ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বুধবার এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে। বৃহস্পতিবার থেকেই এ আদেশ কার্যকর হবে বলে আদেশে জানানো হয়েছে।
বিএসইসি জানিয়েছে, যেসব শেয়ার ফ্লোর প্রাইসের আওতায় আছে সেসব শেয়ারের ক্ষেত্রে নতুন আদেশ প্রযোজ্য হবে না।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে বাজার সূচকের অবাধ পতন ঠেকাতে এর আগে ২০২২ সালের জুলাই শেষে প্রতিটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দিয়েছিল বিএসইসি। ফ্লোর প্রাইস ছিল ২০২২ সালের ২৮ জুলাই ও তার আগের চার দিনের ক্লোজিং প্রাইসের গড়।
বর্তমানে বেক্সিমকো, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও শাহজীবাজার পাওয়ার কোম্পানির ক্ষেত্রে ওই ফ্লোর প্রাইস কার্যকর রয়েছে।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম একদিনের ব্যবধানে আরেক দফা কমেছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম ভরিতে দু’হাজার ১৩৯ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। বলা হয়েছে,
স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। নতুন নির্ধারিত দাম বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিট থেকে কার্যকর হবে।
বাজুস এর আগের দিন মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়ে ওই দিন থেকে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা নির্ধারণ করে। সে হিসাবে দুদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে কমলো ৫ হাজার ২৭৭ টাকা।
নতুন নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৩৯ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৯৫ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৯ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের ভরি ১ হাজার ৭১৪ টাকা কমিয়ে ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৩৭৭ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা।
অবশ্য স্বর্ণালঙ্কার কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের এর চেয়ে বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সে সঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় নূন্যতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৫৮ টাকা।
স্বর্ণের দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রূপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রূপার ভরি ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের বাজারে গত বছর প্রথমবারের মতো ল্যাপটপ নিয়ে আসে ট্রেন্ডি প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স। ইনবুক ওয়াইটু প্লাস নামের ল্যাপটপটি দিচ্ছে চমৎকার ডিজাইন, শক্তিশালী পারফরম্যান্স ও সাশ্রয়ী দামের প্রতিশ্রুতি। অল্প সময়ের মধ্যেই প্রযুক্তিপ্রেমী শিক্ষার্থী ও এক্সিকিউটিভদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে এ ল্যাপটপ।
দেখে নেওয়া যাক কী আছে ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাস ল্যাপটপটিতে। এর ফিচার, পারফরম্যান্স ও ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাই বা কেমন।
ডিজাইন ও গঠন
স্লিক ও হালকা ডিজাইনের ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাস সহজেই সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। শিক্ষার্থী ও ব্যস্ত এক্সিকিউটিভদের জন্য এ ল্যাপটপ যথার্থ। এর পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক মেটালিক ডিজাইন স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে দেয় প্রিমিয়াম অনুভূতি। স্লিক প্রোফাইল ও প্রাণবন্ত ডিসপ্লের সঙ্গে যুক্ত সরু বেজেল ল্যাপটপটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। ফলে বাজারের একই ধরনের দামি ল্যাপটপের সমকক্ষ হয়ে ওঠে ওয়াইটু প্লাস।
তা ছাড়া এর মসৃণ এজি গ্লাস টাচ প্যানেলের কারণে সিল্কি-স্মুথ ও স্থায়ী টাচের অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। ১.৫ মিলিমিটার কি ট্র্যাভেল এবং ব্যাকলাইটিংযুক্ত রেসপনসিভ কি-বোর্ড টাইপিংকে করে তোলে সহজ ও আরামদায়ক। তাই কম আলোতেও টাইপ করতে কোনো সমস্যা হয় না।
পারফরম্যান্স ও প্রোডাক্টিভিটি
১১তম প্রজন্মের কোর আই৫ প্রসেসর ও ৮ জিবি র্যাম রয়েছে ইনফিনিক্স ওয়াইটু প্লাসে। স্টোরেজের প্রয়োজন মেটাতে এতে আছে ৫১২ জিবি এনভিএমই পিসিআইই এসএসডি। প্রোডাক্টিভিটি সফটওয়্যার, ওয়েব ব্রাউজ করা কিংবা কনটেন্ট স্ট্রিম করাসহ সব ধরনের উচ্চ চাহিদাসম্পন্ন অ্যাপ্লিকেশন চালানো যায় খুব সহজেই। এর ইন্টিগ্রেটেড ইন্টেল ইউএইচডি গ্রাফিকস সাধারণ গেমিং ও মাল্টিমিডিয়া এডিটিংয়ের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যময় গ্রাফিকস পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। উইন্ডোজ ১১ পরিচালিত ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাসের অপারেটিং সিস্টেম সবার পরিচিত ও ব্যবহার করা সহজ।
ডিসপ্লে ও মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতা
উজ্জ্বল রং ও ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের সঙ্গে স্পষ্ট ও পরিষ্কার ভিজ্যুয়াল দেয় ১৫.৬ ইঞ্চি ফুল এইচডি আইপিএস ডিসপ্লেযুক্ত ইনবুক ওয়াইটু প্লাস। ৮৫ শতাংশ স্ক্রিন-টু-বডি রেশিওর সঙ্গে চমৎকার মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতার জন্য ডিসপ্লেটি দারুণ। কাজেই আপনার প্রিয় নেটফ্লিক্স সিরিজ দেখা কিংবা ফটো এডিট করা— সবই হবে স্বাচ্ছন্দ্যে।
ল্যাপটপটিতে আছে ডুয়েল এলইডি ফ্ল্যাশ ও এআই নয়েজ ক্যান্সেলেশন প্রযুক্তিযুক্ত ১ হাজার ৮০ পিক্সেলের ফুল এইচডি+ ক্যামেরা। এর ফলে ভিডিও কলের অভিজ্ঞতা হবে আরও উন্নত।
ব্যাটারি লাইফ ও চার্জিং
ইনবুক ওয়াইটু প্লাসের ৫০ ওয়াট-আওয়ার ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কোনো চার্জ ছাড়াই প্রতিদিনের কাজে আট ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাকআপ দিতে সক্ষম। পাশাপাশি এর ৪৫ ওয়াট টাইপ-সি পোর্টযুক্ত চার্জারে ডিভাইসটি দ্রুত ও সহজেই চার্জ করা যায়। ফলে ভারী চার্জার বহনের প্রয়োজন হয় না।
দাম
ল্যাপটপটির বর্তমান বাজারমূল্য ৫৮ হাজার ৯৯০ টাকা। অনুমোদিত ইনফিনিক্স রিটেইলার থেকে ল্যাপটপটি কেনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য