সিভিল এভিয়েশনের চূড়ান্ত অনুমোদন না পাওয়ায় আটকে আছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট (সিবিডি) প্রকল্পের মহাপরিকল্পনা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামার জন্য সুউচ্চ ভবন নির্মাণে সিভিল এভিয়েশনের অনুমতি প্রয়োজন হয়।
আগামী সপ্তাহে এ অনুমোদনের বিষয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছে রাজউক।
প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিভিল এভিয়েশনের ক্লিয়ারেন্স পেলে আমরা সিবিডির মাস্টার প্ল্যান চূড়ান্ত করতে পারতাম, কিন্তু আমরা এখনও সেটা পাইনি।
‘আমরা তাদের কাছ থেকে ভবনের উচ্চতার বিষয়ে মতামত চেয়েছি, যা এখনও তারা কিছু বলছে না। আমরা তিনটি আইকনিক ভবন করতে চাই। এর প্রধানটি হবে ১৪২ তলা। একটি ৭১ ও অপরটি হবে ৫২ তলার। এখানে মোট ভবন হবে ৫২টি। আমরা এখনও এ টার্গেটেই আছি। আমাদের এখন অপেক্ষা করতে হচ্ছে সিভিল এভিয়েশন কতটা পর্যন্ত অ্যালাও করে।’
রাজউক চেয়ারম্যন বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে আমরা একটা বড় বৈঠক ডেকেছি। সেখানে চার প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকবেন। বুয়েটের বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। সেখানে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সিভিল এভিয়েশনের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। এখানে আমাদের প্রস্তাবিত উচ্চতা অনুমোদিত হলে অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা মাস্টার প্ল্যান চূড়ান্ত করে ফেলব।
‘আমাদের ১১১ তলা করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু আমরা ১৪২ তলা ভবনের টার্গেট ছাড়িনি। আমরা এটাই করতে চাই। এখন দেখি সিভিল এভিয়েশন কতটা অনুমোদন দেয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কোম্পানি নিয়োগ করেছি। তারা রাজউকের তহবিলে কিছু টাকাও জমা দিয়েছে। তারা ম্যানেজেরিয়াল ভবনও নির্মাণ করছে। বিদেশি কোম্পানির সঙ্গেও চুক্তি হয়েছে। মাস্টার প্ল্যান না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজ শুরু করতে পারছে না।’
শহরের যে অংশে প্রধান বাণিজ্যিক ক্রিয়াকলাপ গড়ে ওঠে, তাকে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এলাকা বা সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট বলে। যেহেতু এই কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এলাকাকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন মানুষের সমাগম ঘটে, এ অংশের সঙ্গে সব স্থানের ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকে।
সিবিডির বৈশিষ্ট্য হলো উন্নত যোগাযোগ নেটওয়ার্ক। এখানে সরকারি-বেসরকারি রুটে বাস, ট্রাম, মেট্রোরেল ও অন্যান্য গাড়ির সংযোগ থাকে এবং সকাল ও সন্ধ্যায় রাস্তায় বেশিসংখ্যক গাড়ির উপস্থিতি দেখা যায়। তবে রাতে থাকে নীরব, সুনসান।
সিবিডির স্বপ্ন
সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৬ সালের ২ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের সময় সিবিডি সম্পর্কে বলেন, ‘আমি আমার একটি স্বপ্নের কথা বলতে চাই। আমার এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রবৃদ্ধি সঞ্চালক ও জনবান্ধব একটি প্রকল্প সম্পর্কে সবাইকে বলব। আপনারা জানেন, পূর্বাচল ও এর নিকটস্থ এলাকা নিয়ে একটি স্বতন্ত্র মহানগর গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
‘এ মহানগরে পিপিপির আদলে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি। এর মাধ্যমে একটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার, একটি আধুনিক স্পোর্টস কমপ্লেক্স এবং ১৪২ তলা আইকনিক টাওয়ার স্থাপন করা হবে।’
সে সময় ঢাকায় ১৪২ তলার এই আইকনিক টাওয়ার নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
ভবন নির্মাণে প্রথমে সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্রের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ও কেপিসি গ্রুপের মালিক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কালী প্রদীপ চৌধুরী। অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও কালী প্রদীপ চৌধুরীর উপস্থিতিতে ২০১৬ সালের ১২ জুন এ টাওয়ার নির্মাণের বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের তারিখ চূড়ান্ত হয়।
কিন্তু জমির দাম সেই সময়ের বাজার মূল্যের তুলনায় অনেক বেশি ধরা হয় (প্রতি একর ২১ কোটি টাকা)। এ ছাড়া বিষয়টি নিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাও তৈরি হয়। এ কারণে চুক্তি করতে এলেও চুক্তি না করে ফিরে যান কেপিসি গ্রুপ চেয়ারম্যান।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে কেপিসি গ্রুপের চেয়ারম্যান কালী প্রদীপ চৌধুরী ভবনটি নির্মাণের ইচ্ছা প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী মুহিতের সঙ্গে ঢাকায় বৈঠক করেন। পরে কেপিসি গ্রুপের পক্ষে অর্থমন্ত্রী ১০০ একর জায়গার ওপর মূল ভবনসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় ওই বছরের নভেম্বর মাসে পূর্বাচলের সিবিডি অংশে ওই জায়গা দিতে রাজি হয়।
কনসোর্টিয়াম চুক্তি
নানা জটিলতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যেই ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর সিবিডি নির্মাণে ৮০০ কোটি বা ৮ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই করে ডেভেলপার কোম্পানি ‘কনসোর্টিয়াম অব পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংস’ ও জাপানি প্রতিষ্ঠান ‘কাজিমা করপোরেশন’।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে রাজউক ও ডেভেলপার কোম্পানি সূত্র জানায়, সিবিডি নামের নতুন এ বাণিজ্যিক শহরটি সাত বছরে শতাধিক একর জমির ওপর তৈরি করা হবে।
সিবিডিতে ৪৬৫ মিটার উচ্চতার ১৪২ তলা বিশিষ্ট আইকনিক লিগ্যাসি টাওয়ার, ৭১ তলা বিশিষ্ট স্বাধীনতা টাওয়ার ও ৫২ তলা বিশিষ্ট ভাষা টাওয়ারসহ ৪১টি গগণচুম্বী ভবন থাকবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য এসব ভবনে ৩ কোটি ৮০ লাখ বর্গফুট জায়গা পাওয়া যাবে।
রাজউক বলছে, সিবিডির বাকি ৩৮টি ভবনের প্রত্যেকটির উচ্চতা ৪০ তলার সমান হবে। বাণিজ্যিক শহরের এ পরিকল্পনায় একটি বড় সম্মেলন সেন্টারও থাকবে।
২০১৮ সালে এক উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান পাওয়ারপ্যাক ও জাপানি প্রতিষ্ঠান কাজিমা যৌথভাবে রাজউকের কাছ থেকে এ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পায়। পূর্বাচলের ১৯ নম্বর সেক্টরে ১১৪ একর জমির ওপর এ কাজ করবেন তারা।
প্রকল্পের কাজে নেতৃত্ব দেবে পাওয়ারপ্যাক। আর কারিগরি অংশীদার হিসেবে জাপানের কাজিমা তাতে সহায়তা করবে।
নিলামের শর্ত অনুসারে মোট ভূমির মূল্যের ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩১৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এরই মধ্যে রাজউককে পরিশোধ করেছে পাওয়ারপ্যাক-কাজিমা কনসোর্টিয়াম।
পাওয়ারপ্যাক কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্পের দায়িত্ব পাওয়ার পরই তারা নির্মাণকারী ঠিকাদার হিসেবে চীনা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার চায়না ইন্টারন্যাশন্যাল গ্রুপ লিমিটেড এবং প্রকল্পের নকশার জন্য বিশ্বের সপ্তম বৃহৎ প্রকৌশল কোম্পানি দক্ষিণ কোরিয়ার হিরিম আর্কিটেক্ট অ্যান্ড প্ল্যানার্স কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
এ ছাড়া নির্মাণ ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনার জন্য ফরাসি প্রতিষ্ঠান আরকেটাইপ কনস্ট্রাকশন হোল্ডিংস লিমিটেড, মাটি পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং ট্রাফিক ও পরিবেশের প্রভাব মূল্যায়নের জন্য প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপারকে (পিডব্লিউসি) নিযুক্ত করা হয়েছে।
বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাইস ওয়াটারহাউজ, ইন্ডিয়াকেও নিযুক্ত করেছে পাওয়ারপ্যাক।
ইপসার সঙ্গে চুক্তি
২০১৯ সালের ৭ ডিসেম্বর সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট প্রকল্পের একাংশের অর্থায়নসহ উন্নয়নে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ‘চায়না এনার্জি কোম্পানি লিমিটেড’ যুক্ত হয়েছে।
বেইজিংয়ে চায়না এনার্জির প্রধান কার্যালয়ে পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংস ও কাজিমা করপোরেশন কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ৩৬০ কোটি ডলারের প্রকৌশল, ক্রয় ও নির্মাণ (ইপিসি) চুক্তি হয়।
বাংলাদেশি মুদ্রায় চুক্তিমূল্য ৩০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই সব থেকে বড় অঙ্কের ইপিসি চুক্তি। পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংস ও কাজিমা করপোরেশন কনসোর্টিয়ামের পক্ষে পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার এবং চায়না এনার্জি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান ঝাং হংমিং এই ইপিসি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ার
সিবিডির প্রধান তিনটি ভবনকে বলা হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ার’। রাজউক মনে করে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সামগ্রিক অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ১৪২ তলাবিশিষ্ট আইকনিক লিগ্যাসি টাওয়ারসহ মোট ৪২টি আকাশচুম্বী স্থাপনা এখানে তৈরি হবে। আইকনিক লিগ্যাসি টাওয়ারটি হবে বিশ্বের পঞ্চম উঁচু ভবন। এর ৯৬ তলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রযাত্রা সম্পর্কিত একটি জাদুঘর থাকবে। আর ৭১ তলাবিশিষ্ট ভবনটি হবে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতির নিদর্শন হিসেবে। এ ছাড়া ৫২ তলা ভবনটি তুলে ধরা হবে ১৯৫২ সালে ভাষার জন্য ত্যাগ ও মহিমার নিদর্শন হিসেবে।
এই তিনটি ভবন বা টাওয়ারের নাম হবে ‘বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ার’। এগুলো তিনটি (ল্যাঙ্গুয়েজ, লিবারেশন ও লিগ্যাসি) প্রতীক বহন করবে।
১১৪ একর জমির ওপর পুরো প্রকল্পে একটি আধুনিক ও উচ্চ প্রযুক্তির সুরক্ষাপ্রাচীর স্থাপন করা হবে।
গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, প্রায় ৯৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ প্রকল্পের ইতোমধ্যেই প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের সংস্থান হয়েছে। বাকি অর্থ সংগ্রহের কাজ করছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রথম দুই বছরে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার নির্মাণ সামগ্রী কেনা হবে, যা দেশের অর্থনীতি ও নির্মাণশিল্পে বড় ভূমিকা রাখবে।
এরই মধ্যে প্রকল্পের মাটি পরীক্ষা, যানবাহন ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন সমীক্ষা, প্রকল্পের খসড়া মাস্টারপ্ল্যান, ডিজাইন রাজউকে জমা দিয়েছে প্রকল্প পরিচালক। একই সঙ্গে স্মার্ট ও অত্যাধুনিক নির্মাণ শৈলীর আইকনিক টাওয়ারের ডিজাইনের জন্য রাজউক একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে। পরিবেশবান্ধব এ ভবনটির সারা দেয়ালে সর্বাধুনিক সোলার গ্লাস লাগানো হবে। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানিসহ বিভিন্ন ধরনের ইউটিলিটির জন্য ব্যবহার করা হবে মাটির নিচের লাইনের ডাক্ট ব্যবস্থা।
গ্রিন ভবনগুলোর ওয়ালে চীনের গ্রেট ওয়ালের আদলে নির্মাণ করা হবে ওয়াকওয়ে। অভ্যন্তরীণ যাতায়াতের জন্য পরিবেশবান্ধব ইলেকট্রিক বাস ও আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াকওয়ে থাকবে। ভবনের স্থাপত্য নকশা তৈরির প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে কোরিয়ার বিশ্বখ্যাত হেরিম আর্কিটেক্ট।
আরও পড়ুন:এপনিক ফাউন্ডেশনের আইএসআইএফ এশিয়া প্রোগ্রামের মর্যাদাপূর্ণ অনুদান অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা খাতে এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছে টিম ফিনিক্স গ্রুপ। এই অনুদানের সহায়তায় সংস্থাটি বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা খাতকে রূপান্তরিত করার এক অগ্রণী উদ্যোগ ‘সিকিউরনেট বিডি’ (SecureNet BD) চালু করতে যাচ্ছে।
এই প্রকল্পের আওতায় দেশে প্রথমবারের মতো গড়ে উঠবে সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার অব এক্সিলেন্স (CCoE) এবং কমিউনিটি-নির্ভর সিকিউরিটি অপারেশনস সেন্টার (SOC) / কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (CSIRT), যা হবে দেশের ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
বাংলাদেশে দ্রুত ডিজিটাল রূপান্তরের সঙ্গে সঙ্গে সাইবার হামলা এবং অনলাইন নিরাপত্তা হুমকির সংখ্যা ও জটিলতা অভূতপূর্ব হারে বাড়ছে। বিশেষত বড় শহরের বাইরে থাকা প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং কমিউনিটিগুলোতে নিরাপত্তা অবকাঠামো বা প্রশিক্ষণের সুযোগ সীমিত। এই প্রেক্ষাপটে সিকিউরনেট বিডি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহযোগিতামূলক এবং কমিউনিটি-চালিত সাইবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশব্যাপী ১,০০০ এরও বেশি ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যার মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণ কমপক্ষে ৩০% নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া তৈরি হবে আধুনিক সাইবার রেঞ্জ (Cyber Range), যা হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ, স্থানীয় গবেষণা এবং বাস্তব সাইবার প্রতিরক্ষা অনুশীলনের সুযোগ সৃষ্টি করবে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে চালু হবে ফেলোশিপ ও মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম, যা ভবিষ্যতের সাইবার নিরাপত্তা নেতৃত্ব গড়ে তুলবে। পাশাপাশি কমিউনিটি এসওসি/সিএসআইআরটি একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, অলাভজনক সংস্থা এবং স্থানীয় সংগঠনগুলোকে সাইবার হুমকি মোকাবিলায় সহায়তা করবে।
টিম ফিনিক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ অব রিসার্চ এ. এস. এম. শামীম রেজা বলেন, “এই প্রকল্প শুধু প্রযুক্তি নিয়ে নয়, বরং মানুষের ক্ষমতায়নের গল্প। বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ ও কমিউনিটি-চালিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সিকিউরনেট বিডি সাইবার নিরাপত্তাকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং বাংলাদেশের বাস্তবতার সঙ্গে খাপ সামঞ্জস্যপূর্ণ করবে। আমাদের লক্ষ্য, ভবিষ্যৎমুখী কর্মশক্তি তৈরি করা এবং বাংলাদেশকে আঞ্চলিক সাইবার উদ্ভাবনের কেন্দ্রে রূপান্তর করা।”
সিকিউরনেট বিডি–এর এই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও প্রগতিশীল উদ্যোগ বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং দেশটিকে দক্ষিণ এশিয়ায় কমিউনিটি-চালিত সাইবার নিরাপত্তার নেতৃত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী।
বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার দপ্তরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী বলেন, নেপালে ১১টি জুট মিল রয়েছে। নেপালের জুট মিলগুলো তাদের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট আমদানির ওপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ করায় মিলগুলো কিছুটা সমস্যায় পড়েছে। এ সময় তিনি বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট রপ্তানির অনুমতি শিথিল করার আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে বাংলাদেশের পাটপণ্য ও কাঁচাপাটের চাহিদা রয়েছে। কাঁচাপাট রপ্তানি না করে বাংলাদেশ সেমি-ফিনিশড (আধা-প্রক্রিয়াজাত) পাটপণ্য রপ্তানি করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ উচ্চমানের ও পরিবেশবান্ধব সেমি-ফিনিশড পাটপণ্য উৎপাদন করছে। নেপাল এই পণ্যগুলো আমদানি করলে দুই দেশের বাণিজ্য ভলিউম বাড়বে এবং উভয় দেশই লাভবান হবে।
চীনা কোম্পানি অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেড চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে অবস্থিত বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে উচ্চ মানসম্পন্ন গার্মেন্ট উৎপাদনকারী একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে ১৯.৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে।
এ লক্ষ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেপজা কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেনের উপস্থিতিতে বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবীর এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল আহসান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বেপজার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এই প্রতিষ্ঠানটি বার্ষিক ৩০ লাখ পিস স্কি, স্নো স্পোর্টস, হান্টিং ও মোটর রাইডার গিয়ার, ইনসুলেটেড শীতকালীন কোট, ডাউন জ্যাকেট ও প্যান্ট, রেইন গিয়ার, ওয়ার্কওয়্যার, রানিংওয়্যার, ইয়োগাওয়্যার, এবং ওয়াটার স্পোর্টসওয়্যার তৈরি করবে।
প্রতিষ্ঠানটিতে ২ হাজার ৭৮৮ জন বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলকে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে ধন্যবাদ জানান এবং সুষ্ঠু ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডসহ এ পর্যন্ত মোট ৪৯টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যাদের মোট প্রস্তাবিত বিনিয়োগ প্রায় ১.০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৬টি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে। ক্রমাগত উন্নয়ন ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কারণে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বেপজার সদস্য (প্রকৌশল) আবদুল্লাহ আল মামুন, সদস্য (অর্থ) আ ন ম ফয়জুল হক, বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ এনামুল হক, নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) এ.এস.এম. আনোয়ার পারভেজ এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তা, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত ও বিনিয়োগে ধীরগতির প্রবণতার মধ্যেও বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে নিট এফডিআই প্রবাহ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংস্থাটির মতে, এই প্রবৃদ্ধি প্রমাণ করে বিদেশি কোম্পানিগুলোর আস্থা বাংলাদেশের বাজারে বাড়ছে এবং তারা ব্যবসা সম্প্রসারণে আরও বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে কার্যরত লাভজনক বিদেশি কোম্পানিগুলো তাদের মুনাফার একটি বড় অংশ পুনরায় বিনিয়োগ করছে। পুনঃবিনিয়োগের পরিমাণও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু মুনাফা স্থানান্তর করছে না, বরং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণের সম্ভাবনা দেখেই নতুন বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে।
বিশ্বব্যাপী নতুন মূলধনের (গ্রিনফিল্ড এফডিআই) প্রবাহ কমলেও বাংলাদেশে এ খাতে রেকর্ড হয়েছে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। পাশাপাশি বিদেশি মূল কোম্পানিগুলোর স্থানীয় ইউনিটগুলোতে অর্থায়ন বা ইন্টার-কোম্পানি ঋণের হার এক বছরে বেড়েছে ২২৯ শতাংশ।
শুধু ছয় মাস নয়, পুরো অর্থবছরের চিত্রও আশাব্যঞ্জক। জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫ অর্থবছরে নিট এফডিআই প্রবাহ আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৯ শতাংশেরও বেশি।
এদিকে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে দেশের পাঁচটি বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থা- বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বিএইচটিপিএ) ও বিসিকের মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোম্পানির মোট ১ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রস্তাবিত বিনিয়োগ। এর মধ্যে ৬৫ কোটি ডলারেরও বেশি এসেছে সরাসরি বিদেশি কোম্পানির পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার, ২০২৩ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। আর ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেই এ বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও এই প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ পরিবেশের প্রতি বিদেশিদের আস্থার প্রতিফলন। তাদের মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোতে আরও বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পণ্য রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি কমেছে ২০ শতাংশ। আর গত চার মাসে এই পতনের হার প্রায় ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়া নতুন শুল্ক কাঠামোর পুরোপুরি প্রভাব পড়েছে সেপ্টেম্বর মাসে। এই শুল্কের মধ্যে রয়েছে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধে ভারতের অস্বীকৃতির কারণে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ জরিমানা।
দিল্লিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) সহ-প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, শুল্ক বৃদ্ধির পর যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাজারে পরিণত হয়েছে।
জিটিআরআইয়ের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, শ্রমনির্ভর খাতগুলোর মধ্যে বস্ত্র, রত্ন ও গয়না, প্রকৌশলজাত পণ্য এবং রাসায়নিক খাত সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে। এসব খাতে রফতানি আয় ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ছিল ৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। সেপ্টেম্বর নাগাদ তা নেমে আসে ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস পায়। পর পর চার মাস ধরে রপ্তানি কমতে থাকায় ভারতের বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার, যা গত ১৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি কিছুটা ভারসাম্য রক্ষা করেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দীর্ঘ বিরতির পর গত মাসে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনা আবার শুরু হয়। চলমান আলোচনার লক্ষ্য আগামী মাসের মধ্যে একটি প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করা। একটি ভারতীয় প্রতিনিধি দল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছে।
বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে। ওয়াশিংটন মনে করছে, এর মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ক্রেমলিনের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানো সম্ভব হবে।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা বাড়াতে আলোচনা চলছে। বর্তমান মার্কিন প্রশাসন এই সহযোগিতা গভীর করতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
অবশ্য কৃষি ও দুগ্ধ খাতের বাজার প্রবেশাধিকার নিয়ে এখনও বড় ধরনের মতপার্থক্য রয়ে গেছে। বহু বছর ধরে ওয়াশিংটন ভারতের কৃষি খাতকে সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে দেখছে। কিন্তু নয়াদিল্লি খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষকের জীবিকা ও অভ্যন্তরীণ বাজার রক্ষার কারণ দেখিয়ে এই খাতকে রক্ষা করে আসছে।
কিছু দিন আগেও যুক্তরাষ্ট্রই ছিল ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। ২০২৪ সালে দুই দেশের পারস্পরিক বাণিজ্য দাঁড়িয়েছিল ১৯০ বিলিয়ন ডলারে। ট্রাম্প ও মোদি দুজনই এই অঙ্ক ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক শুল্কযুদ্ধ সেই লক্ষ্যকে এখন গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
সর্বস্তরের জনগণকে ব্যাংকিং সেবা প্রদানের লক্ষ্যে শরীয়াহ্ ভিত্তিক ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি’র রয়েছে বিভিন্ন মেয়াদি আকর্ষণীয় বিশেষ আমানত প্রকল্প। পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন ব্যাংকের যে কোন একটি আমানত প্রকল্প বেছে নেওয়ার জন্য ১৭৪ টি শাখা ও উপশাখায় আপনাকে স্বাগতম।
দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি ‘ইন্টিগ্রিটি ও এথিকস প্র্যাকটিস ইন ব্যাংকিং’ শীর্ষক এক গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালার আয়োজন করে। সম্প্রতি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে লার্নিং অ্যান্ড ট্যালেন্ট ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে (LTDC) এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় ।
অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ আবু জাফর, এবং অনুষ্ঠানে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য প্রদান করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান ডাঃ আরিফুর রহমান। তিনি টেকসই ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সততা ও নৈতিকতার গুরুত্বের ওপর বিশেষভাবে আলোকপাত করেন।
কর্মশালার মূল লক্ষ্য ছিল ব্যাংকিং কার্যক্রমের প্রতিটি স্তরে নৈতিক মান, স্বচ্ছতা এবং উত্তম শাসননীতি প্রচার ও বাস্তবায়ন করা। প্রধান কার্যালয় এবং বিভিন্ন শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন, যেখানে দৈনন্দিন ব্যাংকিং কার্যক্রমে সততা ও নৈতিক মূল্যবোধ বজায় রাখার বাস্তবসম্মত দিকগুলো আলোচিত হয়।
প্রযুক্তিগত অধিবেশনগুলো পরিচালনা করেন দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি স্বতন্ত্র পরিচালক এম. নুরুল আলম, এফসিএস, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর যুগ্ম পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান খান, যুগ্ন পরিচালক, এবং বাংলালিংকের কমপ্লায়েন্স ডিরেক্টর মোহাম্মদ আদিল হোসেন, সিসিইপি। তাঁরা ব্যাংকিং খাতে নৈতিক সংস্কৃতি শক্তিশালীকরণ, নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধি মেনে চলা এবং দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণ বিষয়ে মূল্যবান মতামত ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
মন্তব্য