বাজারে চাল, ডাল, তেল, আটা, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়লেও তা কমাতে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ করেছে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বুধবার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে ন্যাপ আয়োজিত মানববন্ধনে এ অভিযোগ করেন দলটির মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া।
মোস্তফা বলেন, ‘গরিব মানুষের সস্তায় কেনা শেষ পণ্য মোটা চালের কেজি পৌঁছেছে ৫০ টাকায়। চালের দামের ওপর নির্ভর করছে অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম। পরিণামে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন কৃষক, শ্রমিক এবং পেশাজীবীসহ সীমিত আয়ের মানুষ।
‘অথচ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা চোখে পড়ছে না। চোখে পড়ছে না সারা দেশে কালোবাজারি ঠেকানোর কার্যক্রম।’
ন্যাপ মহাসচিব বলেন, ‘সরকার শুধু ধনী আর লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত। এদিকে বাজার সিন্ডিকেট জনগণের পকেট কেটে নিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বারবার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির উপযুক্ত কোনো কারণ হাজির করতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। বরাবরের মতো কৃত্রিম সংকট সরবরাহে ঘাটতি ও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কথা বলেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো।
‘খাদ্যের অভাবে এই পৃথিবীতে কখনো পণ্যের দাম বাড়াতে হয়নি; সংকট লাগেনি। সংকট লেগেছে মজুতদারদের মজুতদারিতে, আড়তদারিতে।’
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু বলেন, ‘পণ্যের সহজলভ্যতা এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ করে বাংলাদেশে দুর্নীতি, কালোবাজারি ও মজুতদারি শক্ত হাতে দমন এখন সময়ের প্রয়োজন। নতুবা আমাদের ভাগ্যে অপেক্ষা করছে চরম মহামারি।’
মানববন্ধনে ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া সভাপতিত্ব করেন। সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভূঁইয়া এতে সঞ্চালনা করেন।
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি ঐক্য প্রক্রিয়ার সমন্বয়ক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, লেবার পার্টি চেয়ারম্যান হায়দুল্লাহ আল মেহেদী, মহাসচিব আবদুল্লাহ আল মামুন, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ সভাপতি ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ, দলের ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহাসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:অনিয়মের কারণে ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশ-(টিসিবি) এর ৪৩ লাখ কার্ড বাতিল হয়ে গেছে। হাতে লেখা কার্ডগুলোকে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডে রূপান্তর করতে গিয়ে এনআইডি যাচাইকালে এসব কার্ড বাদ পড়ে যায়।
তবে নানা জটিলতায় টিসিবির সব কার্ড স্মার্ট কার্ডে রূপান্তর করা সম্ভব হয়নি। তাই এখনও আগের হাতের লেখা কার্ডেই টিসিবির পণ্য বিতরণ করতে হচ্ছে।
রাজধানীর তেঁজগাওয়ে টিসিবির আঞ্চলিক কার্যালয়ে শনিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির।
মুখপাত্র বলেন, ‘টিসিবির এক কোটি হাতে লেখা কার্ড এনআইডি’র সঙ্গে ইন্টিগ্রেশন করতে গিয়ে অনিয়ম ধরা পড়েছে। দেখা গেছে, একই এনআইডি দিয়ে ঢাকায় একবার কার্ড নিয়েছে, আবার নিজের গ্রামের বাড়িতে হয়তো আরেকটি কার্ড করেছে। ফলে যখন আমরা এনআইডি দিয়ে যাচাই করতে গেলাম তখন ৪৩ লাখ কার্ড বাদ পড়ে গেছে।’
তিনি জানান, ‘এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি পণ্য পাচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসন বা জনপ্রনিধিরা না থাকায় ভোক্তা পর্যায়ে পণ্য ঠিকমতো পৌঁছাচ্ছে কি না তা-ও সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাচ্ছে না।
হুমায়ূন কবির বলেন, ‘ফ্যামিলি কার্ডের এসব সমস্যা দূর করার জন্য একটি পরিবার যাতে একটি কার্ডের বেশি না পায়, সেজন্য আমরা স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড করার উদ্যোগ নিয়েছি। এখন পর্যন্ত ৫৭ লাখ স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড হয়েছে।
‘বাকি কার্ডগুলো করার জন্য আমরা জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনকে চার দফা চিঠি দিয়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে জেলা প্রশাসনে যে রদবদল হচ্ছে সেজন্য তাদের পক্ষ থেকে এই তথ্যগুলো না পাওয়ার কারণে বাকি কার্ডগুলো আমরা এখনও শনাক্ত করতে পারিনি।’
তিনি জানান, রমজানে টিসিবির পাঁচটি পণ্য তেল, চিনি, ছোলা, খেজুর, ডাল বিক্রি করা হবে। আর সিটি করপোরেশনের বাইরে খেজুর বাদে চারটি পণ্য বিক্রি হবে। কার্ডের বাইরেও ট্রাকে করে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মোট ৭০টি পয়েন্টে ২৪ হাজারের বেশি মানুষ পণ্য কিনতে পারবে। প্রতি ট্রাকে ৩৫০ জনের উপযোগী পণ্য দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন:বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে শনিবার বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছেন টিঅ্যান্ডজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড নামের কারখানার শ্রমিকরা।
এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয় এবং তিন ঘণ্টা ধরে এ অবস্থা চলে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন মহাসড়কে চলাচলকারী লোকজন।
সকাল ৯টার পর তারা বিক্ষোভ শুরু করেন।
কারখানার শ্রমিকরা জানান, তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে কয়েক দিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত বেতন-ভাতা পাননি। এ কারণে বাধ্য হয়েই রাস্তায় নামতে হয়েছে।
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘টিঅ্যান্ডজেড কারখানার শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে মহাসড়কে নেমে এলে যানজট লেগে যায়। তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে।’
কুমিল্লা নগরে চিকিৎসকের ভুলে এক প্রসূতির মূত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার।
নগরের ঝাউতলার এইচআর হসপিটালে শুক্রবার রাত আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ইসরাত জাহান এরিন (২০) কুমিল্লা সদর উপজেলার শিমপুর গ্রামের মোবারক হোসেনের মেয়ে। বছরখানেক আগে শিমপুরের পাশের ভুবনঘর গ্রামের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ইসমিত পাশা দিদারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
স্বামী দিদার অভিযোগ করেন, চিকিৎসক মারজান সুলতানা নিঝুম অস্ত্রোপচারে সময় এরিনের নাড়ি কেটে ফেলেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়।
তিনি আর্তনাদ করে বলেন, ‘একজন চিকিৎসকের ভুলে আমার স্ত্রী মারা গেল। সদ্য জন্ম নেয়া ছেলেটিও মাকে হারাল।’
এরিনের মামা হাসনাত জানান, এরিন সন্তানসম্ভবা ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে নগরের ঝাউতলার এইচআর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাতেই তার ভাগনির অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক নিঝুম।
তিনি জানান, শুক্রবার দুপুরে এরিনের অবস্থার অবনতি হয়। চিকিৎসক পালস খুঁজে না পেলে তাকে আইসিউতে নেয়ার পরামর্শ দেন। পরে এরিনের স্বজনরা পার্শ্ববর্তী মুন হাসপাতালে নিয়ে যান তাকে। সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করানোর পর এরিনের পেটে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানান। ততক্ষণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় এরিনের।
হাসনাতের অভিযোগ, চিকিৎসক একটি নাড়ি কেটে ফেলায় তার ভাগনির মৃত্যু হয়েছে।
এরিনের বাবা মোবারক হোসাইন বলেন, ‘তারা আমার মেয়ের নাড়ি কেটে ফেলেছে। আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সময় পার করেছে। নার্সরা অনেক দুর্ব্যবহার করেছে।
‘তাদের ভুল চিকিৎসায় আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার বিচার দাবি করছি আমি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
চিকিৎসক মারজান সুলতানা নিঝুমকে কল করে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ঘটনা শোনামাত্রই সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জেলার সিভিল সার্জন নাছিমা আক্তার শনিবার সকালে জানান, তিনি ঘটনা শুনে তদন্ত দল গঠন করেছেন। তদন্তে দোষী সাব্যস্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে বিনা মূল্যে ডেঙ্গু টেস্ট করানোর উদ্যোগ নিয়েছেন নতুন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
নগরের দক্ষিণ খুলশীর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ভিআইপি হাউজিং সোসাইটি জামে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে শুক্রবার তিনি এ সেবার কথা উল্লেখ করেন।
মেয়র শাহাদাত বলেন, ‘নগরীর মেমন হাসপাতালের ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট সেল স্থাপন করেছি। কারও ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শক্রমে সেখানে বিনা মূল্যে এনএস-১ এন্টিজেন টেস্ট করাতে পারবেন।
‘ফ্রি টেস্টের পাশাপাশি আক্রান্তদের সেবা দিতে প্রস্তুত আমাদের চিকিৎসকরা। এ ছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সচেতনতা বাড়ানোর কার্যক্রম চালু করা হয়েছে এবং মশার লার্ভা ধ্বংস করতে স্প্রে ব্যবহার করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশার লার্ভা জন্মায়, যা ডেঙ্গু রোগ বিস্তারের জন্য দায়ী। এ জন্য বাড়ির আঙিনার কোথাও পানি জমতে দেয়া যাবে না।
‘ছাদে বা বারান্দায় ফুলের টব বা পানির টব খালি রাখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, যা নগরবাসীর সচেতনতার মধ্য দিয়ে সম্ভব।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম মহানগরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই যুবক নিহত হয়েছেন।
এক্সপ্রেসওয়ের ইপিজেড থানার বে-শপিং সেন্টার এলাকায় শুক্রবার রাত ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন মোহাম্মদ মোক্তার (২৮) ও মোহাম্মদ রুবেল (৩৬), যারা নগরের সদরঘাট এলাকার বাসিন্দা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজারের দিকে যাওয়ার সময় ইপিজেড এলাকায় দুর্ঘটনায় ঘটে। ধারণা করছি, মোটরসাইকেল দ্রুতগতিতে আসার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কবাতির খুঁটিতে ধাক্কা গেলে দুই আরোহী ছিটকে পড়ে যায়।
‘দুইজনই ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। একজন খুঁটিতে আটকে ছিলেন, অন্যজন রাস্তায় ছিটকে পড়েছিলেন।’
ওসি আরও বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে রয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি এবং পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
দেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে এটিই প্রথম সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু।
এর আগে ছিনতাইকারী ‘ফাঁদ’ সুতাতে আটকে এক যুবক আহত হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:বিগত সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম ও নির্যাতনের সমালোচনা করে দেশে বৈষম্যহীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিুর রহমান।
শুক্রবার সকালে নীলফামারীর বড় মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
ডা. শফিকুর বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সাড়ে ১৫ বছরে দেশবাসীর শান্তি কেড়ে নিয়েছিল। সব ধরনের, সব বর্ণের মানুষ তাদের কাছে নির্যাতিত হয়েছিল। সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
‘তারা জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের কার্যালয়গুলো সিলগালা করে দিয়েছিল। ঘরে বসেও জামায়াতের নেতাকর্মীরা শান্তি পায়নি। ঘর থেকে তুলে নিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দেয়া হয়েছে। শীর্ষ নেতাদের নামে যুদ্ধাপরাধীর মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে বিচারের নামে খুন করা হয়েছে।’
জামায়াত প্রধান বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসার পরই ঝাল মিটিয়েছিল আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর ওপর। তারা তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে ৫৭জন চৌকস, সাহসী ও দেশপ্রেমিক সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে। হত্যা করেছিল নির্মমভাবে তাদের পরিবারের সদস্যদের।’
তিনি বলেন, ‘রাতে বাতি নিভিয়ে দিয়ে ঘাতকদের পিলখানা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ সুষ্টি করা হয়েছিল। ঘাতকদের পরিচয় জাতিকে জানতে দেয়া হয়নি। সেনাবাহিনীর নিজস্ব তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করতে দেয়া হয়নি। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকারীদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল।’
জামায়াত আমির বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী টার্গেট ছিল জামায়াতে ইসলামী। মিথ্যা মামলায় তাদের শীর্ষ ১১ নেতাকে যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগে হত্যার অভিযোগ করেন ডা. শফিকুর।
তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে শেখ মুজিবের শাসনামলে ১৯৭১ সালে যারা বিভিন্ন অপরাধ করেছিল তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। যুদ্ধপারাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে যে মামলা হয়েছিল, সেখানে একটি মামলাও তাদের বিরুদ্ধে ছিল না।
‘এছাড়া শেখ মুজিব সরকার সে সময় যাচাই-বাচাই করে ১৯৫ জনের যে তালিকা করেছিল তাদের মধ্যে বর্তমান বাংলাদেশের সীমানার ভেতরের কোনো নাগরিক ছিল না।’
ডা. শফিকুর বলেন, ‘৫ আগস্ট যখন পরিবর্তন এলো আমরা সঙ্গে সঙ্গে দেশবাসীকে অনুরোধ করেছি ধৈর্য্য ধরার জন্য। দেশবাসী আমাদের কথা শুনেছে।
‘আওয়ামী লীগ নির্দয় হতে পারে, খুনি হতে পারে। কিন্তু দেশের ১৮ কোটি মানুষ অত্যন্ত দায়িত্বশীল ও দেশপ্রেমিক।’
জামায়াত আমির বলেন, শেখ হাসিনা বলেছিলেন পালাবেন না। তিনি চলে গেলেন তার প্রিয় দেশে। তারা আমাদের প্রতিবেশী। আমরা তাদের সম্মান করি। আমরা আমাদের প্রতিবেশীকে অনুরোধ করব- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৫০টির অধিক মামলা হয়েছে। আমাদের বিচারালয় যখন তাকে চাইবে তখন তাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেবেন।’
জামায়াত প্রধান বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে আমরা দুর্নীতি করব না, কাউকে দুর্নীতি করতে দেবো না। আমরা ঘুষ খাবো না, কাউকে খেতেও দেবো না। আমরা এমন একটি সমাজ গড়তে চাই- যে সমাজে লেখাপড়া করার পর ‘আমরা শিক্ষিত বেকার’ শব্দটি আমাদের কানে আসবে না।
‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে সমাজের উন্নয়নে নারীরা অবদান রাখতে পারেন। নারীরা নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ও মর্যাদার সঙ্গে জাতি গঠনে অবদান রাখবেন।’
নীলফামারী জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন জেলা সেক্রেটারি আন্তাজুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী অঞ্চল পরিচালক মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের টিম সদস্য অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান বেলাল প্রমুখ।
আরও পড়ুন:ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
জামায়াতে ইসলামীর কর্মী ও ঝিনাইদহ সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুস সালাম হত্যা মামলার আসামি তিনি। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকার সাভারে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে অভিযান চালিয়ে সাবেক এমপিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাবের বরাত দিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, জামায়াতের কর্মী হত্যা ছাড়াও ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকের নামে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির কার্যালয় ও জেলা বিএনপির সভাপতি এমএ মজিদের বাড়িতে আগুন ও ভাঙচুরের দুটি মামলা রয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সাভারের নবীনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মন্তব্য