একদিনের বিরতির পর পুঁজিবাজারের সূচক বাড়লেও ছড়িয়ে পড়া হতাশার অবসানের কোনো আভাস মিলছে না। এর কারণ, বড় মূলধনির অল্প কিছু শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে সূচক বাড়লেও আবারও কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর।
৭৫টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে ২৬৯টির দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তির কোনো কারণ ছিল না।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পতন হয়েছে যে ২০টি কোম্পানির, তার মধ্যে ১৭টিই হয় স্বল্প মূলধনি, নয় লোকসানি।
জুলাই থেকে এসব কোম্পানির শেয়ারদর টানা বাড়ছিল। তবে সংশোধন শুরু হওয়ার পর থেকে এগুলোর দরই সবচেয়ে বেশি কমছে। এই ঘটনাটি ঘটছে গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকেই।
প্রায় প্রতিদিনই বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারাচ্ছে, এর ভিড়ে সবচেয়ে বেশি কমছে গত তিন মাসে যেগুলোর দর অস্বাভাবিক হারে বেড়েছিল।
ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যাদের মূলধন কম, উচ্চহারে দর বৃদ্ধি পেতে থাকায় তাদের একটি বড় অংশই এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে ফেসে গেছে।
তবে এবার বাড়ছে লাফার্জ হোলসিম, ওরিয়ন ফার্মা, বেক্সিমকো লিমিটেড, জিপিএইচ ইস্পাত, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স, সাইফ পাওয়ারটেক, বেক্সিমকো ফার্মা, ইফাদ অটোর শেয়ারের দর আরও বেড়েছে।
এর মধ্যে কেবল লাফার্জ হোলসিমের দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে ১০.০৯ পয়েন্ট। এছাড়া আইসিবি সূচক বাড়িয়েছে ৪.৭, গ্রামীণ ফোন ২.৯৩, ওরিয়ন ফার্মা ২.৫২, জিপিএইচ ইস্পাত ২.৫, বেক্সিমকো লিমিটেড ২.৪১, একমি ল্যাবরেটরিজ ১.৬৯, ইফাদ অটো ১.১৬, বিএসআরএম স্টিল ০.৮২ ও হাইডেলবার্গ সিমেন্টের দর বৃদ্ধির কারণে সূচক বেড়েছে ০.৭৮ পয়েন্ট।
অর্থাৎ এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২৯.৬ পয়েন্ট। তবে সার্বিকভাবে পুঁজিবাজারে সূচক বেড়েছে ৩.৮৪ পয়েন্ট।
দরপতনের বাজারেও লেনদেনে কমতি নেই। হাতবদল হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি, যা চলতি বছরের আগে মন্দা বাজারে দেখা যায়নি।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর যখন ক্রমাগত বাড়ছিল, তখন সিংহভাগ বিনিয়োগকারী মৌলভিত্তি বাদ দিয়ে দুর্বল ক্যাটাগরিতে বিনিয়োগ করেছে। এখন সেসব কোম্পানির শেয়ারদর কমে আসায় তাদের বিনিয়োগও আটকে গেছে। ফলে লেনদেনেও কিছুটা ভাটার টান দেখা যাচ্ছে।’
স্বল্প মূলধনি ও লোকসানি কোম্পানির পতনই বেশি
গত সোয়া এক বছরে পুঁজিবাজারে উত্থানে ব্যাংক খাতের ঘুমিয়ে থাকার মধ্যে এই খাতের পুরনো কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম সবচেয়ে বেশি বাড়ে কখনও লভ্যাংশ না দেয়া আইসিবি ইসলামী ব্যাংক।
এই এক বছরে ১০ টাকার শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম ছিল ৩ টাকা ৬০ পয়সা, সর্বোচ্চ দাম উঠে ৭ টাকা ৫০ পয়সা।
এই উত্থানের মধ্যে দাম সবচেয়ে বেশি বাড়ে গত তিন মাস। এই সময়ে সর্বনিম্ন দাম ছিল ৪ টাকা ৬০ পয়সা। আর পতন শুরু হওয়ার আগে সেপ্টেম্বরের শুরুতে এক দশকের সর্বোচ্চ দামে উঠে।
টানা দুই দিন শেয়ারটির দাম কমেছে এক দিনে যত কমা সম্ভব ততই। দুই দিনেই কমল প্রায় ২০ শতাংশ।
দিনের সবচেয়ে বেশি পতন হওয়া কোম্পানির মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করা কোম্পানিটি দর হারিয়েছে ৬০ পয়সা বা ১০ শতাংশ। আগের দিন দাম ছিল ৬ টাকা, দিন শেষে দাম দাঁড়িয়েছে ৫ টাকা ৪০ পয়সা।
স্বল্প মূলধনি কোম্পানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কমিটি গঠনের খবরে এসব কোম্পানির শেয়ারদর তেজী ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকে। কোম্পানির আর্থিক অবস্থা, সম্ভাবনা বিচার বিবেচনা না করে কেবল শেয়ার সংখ্যা কম- এমন কোম্পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিনিয়োগকারীরা। এখন এসব কোম্পানির শেয়ারধারীরাই বেশি ক্ষতির মুখে।
গত এক যুগেও লভ্যাংশ দেয়ার ইতিহাস না থাকা শ্যামপুর সুগারের আধুনিকায়ন নিয়ে একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা হয়েছে। এই খবরে গত ৫ আগস্ট থেকে ক্রমাগত বাড়তে থাকে। সেদিন দাম ছিল ৬২ টাকা ৮০ পয়সা। সেপ্টেম্বরের শুরুতে দাম উঠে ১৪১ টাকা ২০ পয়সা। দাম যত বাড়ছিল, শেয়ার লেনদেনও বাড়ছিল তত। এখন দাম যত কমছে, লেনদেন তত কমছে।
আগের দিনের তুলনায় ৮ টাকা ৫০ পয়সা হারিয়ে দিন শেষে শ্যামপুরের দাম দাঁড়িয়েছে ৯৮ টাকা ৩০ পয়সা। এক দিনেই কমেছে ৭.৯৫ শতাংশ।
লভ্যাংশের ইতিহাস আহামরি হয়। তার ওপর উৎপাদন বন্ধ। তারপরেও আজিজ পাইপের দাম বাড়ছিল উৎপাদন আবার শুরুর ঘোষণায়। এই কোম্পানিটি এক দিনে দর হারিয়েছে অভিহিত মূল্যের প্রায় সমান। ৯ টাকা ২০ পয়সা বা ৬.৪৫ শতাংশ কমেছে কোম্পানিটির শেয়ারদর।
মৌলভিত্তির কোম্পানি হলেও বছর শেষে মুনাফা ও লভ্যাংশ কখনও আহামরি হয় না এএমসিএল প্রাণের। তবে কেবল শেয়ার সংখ্যা কম, এই কারণে এই কোম্পানিটির শেয়ারদর ব্যাপকহারে বাড়ছিল।
এই কোম্পানিটি দর হারিয়েছে ১৪ টাকা বা ৫.২৭ শতাংশ।
একই অবস্থা ফার্মা এইডের। মুনাফায় থাকা কোম্পানি, তবে লভ্যাংশ আহামরি কিছু দেয় এমন নয়। শেয়ার সংখ্যা কম, এ কারণে দামটা বরাবরই থাকে বেশি। গত তিন মাসে শেয়ার দর ৩৯৫ টাকা থেকে ৭১৬ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।
দিন শেষে এই কোম্পানিটি ৩১ টাকা ৫০ পয়সা বা ৫.১১ শতাংশ দর হারিয়েছে। শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ৫৮৪ টাকায়।
বন্ধ থাকা কোম্পানি বিডিওয়েল্ডিং দর হারিয়েছে ১ টাকা বা ৪.৮৫ শতাংশ।
বন্ধ থাকা কোম্পানি চালু হবে, এমন বাস্তবতায় আরএসআরএম স্টিলের শেয়ারদর গত তিন মাসে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি বিপুল পরিমাণ লোকসান বিনিয়োগকারীরা বিবেচনায় আনেননি বলেই মনে হয়। অথচ কোম্পানি চালু হওয়ার পরদিন এটি ১.৬০ টাকা বা ৪.৮৩ শতাংশ দর হারিয়েছে।
এ ছাড়া স্বল্প মূলধনি পেপার প্রসেসিং ৮ টাকা বা ৪.৭৭ শতাংশ, লোকসানি দুলামিয়া কটন ২ টাকা ৭০ পয়সা বা ৪.৭৬ শতাংশ, জেমিনি সি ফুট ১০ টাকা ১০ পয়সা বা ৪.৭৫ শতাংশ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক ৯০ পয়সা বা ৪.৪৭ শতাংশ দর হারিয়েছে।
১০ কোম্পানিতে মোট লেনদেনের ২৬ শতাংশ
লেনদেনে শীর্ষে থাকা ১০টি কোম্পানরি দখলে ছিল মোট লেনদেনের ২৬ শতাংশ। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লার্ফাজ হোলসিমের। একক কোম্পানি হিসেবে লেনদেন হয়েছে ২১৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
তারপরেই আছে ওষুধ ও রসায়ন খাতের ওরিয়ান ফার্মা, যার লেনদেন হয়েছে ১৯৫ কাটি ৩২ লাখ টাকা। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৯০ শতাংশ।
বিবিধ খাতের বেক্সিমকো লিমিটেডের দর লেনদেন হয়েছে ১৩৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। কোম্পানিটির দর বেড়েছে ১.৬৩ শতাংশ।
এছাড়া ৫০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে তিনটি কোম্পানির। এগুলো হচ্ছে প্রকৌশল খাতের জিএসপি ইস্পাত, যার লেনদেন হয়েছে ৬৮ কোটি ১২ লাখ টাকা। লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্সের লেনদেন হয়েছে ৬১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। সাইফ পাওয়ারটেকের লেনদেন হয়েছে ৫০ কাটি ৩৫ লাখ টাকা।
আবার আগ্রহের শীর্ষে ওষুধ ও রসায়ন
লেনদেনে আগ্রহ ধরে রেখেছে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাত। সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে ওরিয়ন ফার্মার ৯.৯০ তাংশ। শেয়ার দর ৯৪ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০৪ টাকা ৩০ পয়সা।
তারপরই আছে এ খাতের ওরিয়ন ইনফিউশন, যার শেয়ার দর বেড়েছে ৮.৯৩ শতাংশ। এছাড়া এডভেন্ড ফার্মার দর বেড়েছে ৮.০৪ শতাংশ। একমি ল্যাবরটরিজের দর বেড়েছে ৬.৬৬ শতাংশ।
এ খাতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১১টি কোম্পানির, দর হারিয়েছে ১৯ টি, একটির লেনেদেন স্থগিত।
মোট লেনদেন হয়েছে ৪৪৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪১২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
অন্যান্য খাতের লেনদেন
লেনদেনের দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা প্রকৌশল খাতে হাতবদল হয়েছে মোট ২৮২ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এই খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭টির, কমেছে ২৩টির, অপরিবর্তিত ছিল বাকি ১২টির দর।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা সিমেন্ট খাতের ৭টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪টির, কমেছে দুটির, একটির লেনদেন ছিল স্থগিত। হাতবদল হয়েছে মোট ২৩৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১৯৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
দরপতনের বৃত্তে থাকা বস্ত্র খাতের কোম্পানি ফ্যামিলি টেক্সের দর প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। তবে গোটা খাতে দর পতন হয়েছে ৪০টি কোম্পানির, বেড়েছে ১৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল বাকি ৫টির দর।
দিন শেষে হাতবদল হয়েছে ২০০ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
লেনদেন ও শেয়ারদরে পতন হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেও। ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দর হারিয়েছে ২০টি। বেড়েছে কেবল ৩টির দর। হাতবদল হয়েছে ১৯৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ২৬৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
আর্থিক খাতের ২২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৪টির, কমেছে ১৮টির। লেনদেন হয়েছে ১৯১ কোটি ৭২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ২৪৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
বিবিধ খাতের ১৪টি কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে ১৮৪ কোটি ১৭৭ কোটি ২১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল মোট ২২২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। তিনটি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে বাকি ১০টির দরও।
বিমা খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ১১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৪৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর কমেছে ৪০টির। দর বেড়েছে ১১টির।
ব্যাংক খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ৮৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৫টির। কমেছে ১৭টির। দর পাল্টায়নি ১০টির।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দর হারিয়েছে ১৫টি। বেড়েছে ৫টির দর। লেনদেন হয়েছে ৬৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১০৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১১টি কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে মোট ৪৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ৭২ কোটি ০৬ শতাংশ। বেড়েছে একটির দর, কমেছে ১০টির দর।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডে লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে। ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে কেবল দুটির, কমেছে ২০টির। বাকি ১৪টি ফান্ডের দর পাল্টায়নি।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ১৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩১ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৩৩১ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট।
শরিয়াভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস দশমিক ৬৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৯৪ দশমিক ৪২ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১২ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৭৪ দশমিক ১২ পয়েন্ট।
দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা ।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য