জাতিসংঘ সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন গঠনসহ কথা বললেন নানা বিষয়ে।
আওয়ামী লীগ প্রধান অনেকটাই নিশ্চিত, জনগণ আবার তাদেরই ভোট দেবে। অন্যদের কী কারণে ভোট দেবে- এমন প্রশ্ন তুলে তিনি পরে আবার বলেন, যদি আওয়ামী লীগকে ভোট না দেয়, তাহলে ক্ষমতায় থাকার কোনো আগ্রহ নেই।
রাজনীতিতে আপাতদৃষ্টিতে তেমন চ্যালেঞ্জের মুখে না থাকলেও আত্মতুষ্টিতে না ভোগার কথাও বলেছেন শেখ হাসিনা। বলেছেন, খরগোশ আর কচ্ছপের যে গল্প আছে, সেটি মাথায় আছে তারও। প্রতিপক্ষকে অবহেলা করে তিনি তাদের সুবিধা করে দিতে চান না।
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়েও কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। জানিয়েছেন, আগের দুইবারের মতো এবারও কমিশন গঠন করা হবে সার্চ কমিটির মাধ্যমেই।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশন ও সাইডলাইনে উচ্চপর্যায়ের অংশ নেয়া আলোচনার বিষয়ে অবহিত করতে সোমবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা প্রথমে রাখেন লিখিত বক্তব্য। এতে তার বক্তব্যে সফরের বিষয়ে বিবৃতি ছিল।
তবে গণমাধ্যমকর্মীরা প্রশ্ন রাখেন সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অন্যান্য ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে।
মাথায় খরগোশ-কচ্ছপের গল্প
আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। এত আগে কেন মাঠে নামল সরকারি দল- এ বিষয়টি নিয়ে শেখ হাসিনার মন্তব্য জানতে চান একজন সংবাদমাধ্যমকর্মী।
জবাবে ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতি এ জন্য যে, আমি নির্বাচনে বিশ্বাস করি, জনগণের ভোটে বিশ্বাস করি। আমি কখনোই আত্মতুষ্টিতে ভোগি না যে, আমি এত কাজ করেছি যে আমার অপজিশন নাই। তাহলে ওই খরগোশ আর কচ্ছপের দৌড়ের মতো অবস্থা হবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনটাকে আমরা নির্বাচন হিসেবেই দেখতে চাই। জনগণের ভোট যাতে পাই, এ জন্য জনগণের কাছে যেতে চাই। জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করে জনগণের ভোটেই ক্ষমতায় ফিরতে চাই। জনগণ ভোট না দিলে আসব না, পরিষ্কার কথা। আর প্রতিপক্ষ কে হতে পারল কে পারল না, এটা তাদের ব্যাপার।’
দলকে সুসংগঠিত করা আর ভোটের জন্য জনগণের কাছে যাওয়া সব রাজনৈতিক দলেরই উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘অপরপক্ষে কী আছে না আছে, সেটা করার আগে নিজেরটা করতে হবে। কাজেই বিরোধী দলে কেউ নেই, এ জন্য আত্মতুষ্টিতে বসে থাকব… সেটা কিন্তু থাকব না। আমার সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। মানুষের কাছে না গেলে তাদের কষ্ট কখনও জানা যায় না।’
রায় আ.লীগ পাবে নিশ্চিত শেখ হাসিনা
অপর এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী উল্টো জানতে চান, আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণ কেন ভোট দেবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাধারণত জনগণ কাকে ভোট দেয়... তারা দেখে ক্ষমতায় যাবে কে। তারা তো (বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান) ইলেকশনও করতে পারবে না। …তাদের ভেতর একটা বিশ্বাস যে, নির্বাচনে জিতবে বা ক্ষমতায় যাবে এই বিশ্বাসটা আর নাই। হারিয়ে গেছে।’
নির্বাচনব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই বিএনপি ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। বলেন, ‘তারা জানে তাদের কোনো সম্ভাবনা নাই। আর এ জন্যই এটাকে বিতর্কিত করা, এটাই চেষ্টা।
‘২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জনগণ কেন ভোট দিল? কারণ '৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত জনগণ অন্তত এটুকু পেয়েছিল যে, সরকার মানেই জনগণের সেবক। কিছু হলেও উন্নতি হয় দেশের।’
কেন মানুষ বিএনপিকে ভোট দেবে
বিএনপি ও তার সমমনাদের জনগণ কেন ভোট দেবে, সেই প্রশ্নও রাখেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘কে আছে এর বাহিরে, কাকে দেবে? এর বাহিরে আর কে আছে?
‘এই যে প্রশ্ন যারা তোলে, এর বাহিরে আর কে আছে যে ভোট দেবে। কার কাছ থেকে মানুষ কী পেয়েছে?
‘ওদের কে ভোট দেবে? আমি সাংবাদিকদের কাছে জিজ্ঞেস করি, কারা, কী কারণে, কোন সুখের স্বপ্নে বিএনপি বা অন্যদের ভোট দেবে? আমরা কিছু করলাম কি না, সেটাও একটু তুলনা করেন।’
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা দল কীভাবে জিতবে? তাদের নেতৃত্ব কোথায়? একজন (বেগম খালেদা জিয়া) এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আরেকজন (তারেক রহমান) ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ নানা ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলে দেশান্তরি, সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তাদেরই নেতৃত্বেই রেখেছে। তাহলে জনগণ কোন ভরসায় তাদের ভোট দেবে?’
ক্ষমতা তার কাছে কোনো ভোগের বস্তু না বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘ও রকম আকাঙ্ক্ষা থাকলে তো আমার বাবাও যেমন অনেক আগে মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন, আমিও কিন্তু পারতাম। আমি কিন্তু তা হইনি।
‘আমার চিন্তা ছিল আমি যদি ক্ষমতায় যেতে পারি জনগণের জন্য যেন কাজ করতে পারি। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি। আমরা তো এগিয়ে যাচ্ছিলাম, করোনা এসে না আমাদের একটু বাধা দিয়েছে। তারপরও তো আমরা বসে থাকিনি। এমন কাজ করেছি যাতে গ্রামে অর্থ সরবরাহ হয়।’
ভোট নিয়ে সমালোচনা প্রত্যাখ্যান
বিএনপি ভোট নিয়ে যেসব অভিযোগ তুলে থাকে, তার সবই প্রত্যাখ্যান করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘গত কয়েক দিন আগে যে নির্বাচন হলো আপনারা দেখেছেন ভোটাররা কিন্তু খুব স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেছে। তবে হ্যাঁ, বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছেন, আপনারা একবার কি চিন্তা করে দেখেছেন অনেক চেষ্টা হয়েছে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে? শুধু তা-ই না, নির্বাচন যাতে না হয়, মানুষ যাতে না যায়, অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে হেন কাজ নেই যা না করা হয়েছে।
‘তারপরও নির্বাচন হয়েছে এবং এর পরে স্থিতিশীল পরিবেশ ছিল বলেই কিন্তু আজকে যে উন্নয়নটা দেখতে পারছেন, সেটা করা সম্ভব হয়েছে।’
বিএনপির জন্মের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন যেসব রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপিসহ যারা কথা বলে আসলে তারা নির্বাচন নিয়ে যে প্রশ্ন তোলে এই দলের জন্মটা কীভাবে? এটা কি কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত?’
শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের শেষ নির্বাচন প্রসঙ্গও তোলেন। বলেন, ‘আমি শুধু একটা কথা বলব বিএনপিকে, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তো তাদের কোনো অভিযোগ নাই। তাহলে সেটাতে তারা জিততে পারেনি কেন? তখন প্রশ্ন তোলেনি কেন?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এরপর যতটা নির্বাচন হয়েছে তাতে মানুষ তো ভোট দিয়েছে। আমরা যখন আধুনিক প্রযুক্তিতে গেলাম মানে ইভিএমে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন। এখন এরা যেহেতু সব সময় ‘পরভাতে পালিত’। সেই জায়গাটা মনে হয় তাদের আর নেই।”
নির্বাচন কমিশন গঠন আগের নিয়মেই
সার্চ কমিটির মাধ্যমেই আগামী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি একটি সার্চ কমিটি করবেন তার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে।’
কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে আগামী ফ্রেব্রুয়ারিতে। আগামী নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কবে, কীভাবে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন তা নিয়েও আলোচনা তুঙ্গে।
মেয়র জাহাঙ্গীর প্রসঙ্গ
ঘরোয়া আলোচনায় গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁস হওয়া একটি ভিডিওতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুর দেশ স্বাধীন করার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর গাজীপুরে যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, সে বিষয়েও আওয়ামী লীগ প্রধানের বক্তব্য জানতে চান একজন গণমাধ্যমকর্মী।
এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন দল জাহাঙ্গীরের কাছে বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়েছে আর গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, তার বক্তব্য কাটছাঁট করে ভিডিও ভাইরাল করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এখনও কোনো সিদ্ধান্তে আসতে চান না। বলেন, ‘ডিজিটাল যুগে কথা তো নানাভাবে ভেঙে ভেঙে কে কীভাবে প্রচার করেছে এটা জানান। এ জন্য তাকে (জাহাঙ্গীর) শোকজ করা হয়েছে। জবাব পেলে পার্টি বসবে, তখন সিদ্ধান্ত নেবে।’
বেশি কাজ বলে সমালোচনা
অন্য এক প্রশ্নে শেখ হাসিনা যা বলেন, তার অর্থ হচ্ছে, তিনি মনে করেন কাজ বেশি করেন বলেই সমালোচনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এত সুবিধা পেয়ে গালিটা আমার ওপর দিয়ে যাচ্ছে বা আওয়ামী লীগের ওপর দিয়ে যাচ্ছে, তাই তো? হবেই, কাজ বেশি, এটা তো আমাদের বাঙালিদের চরিত্রেই আছে। ভালো কাজ করলে মুখ ঘুরিয়ে বসে থাকা।’
টিউলিপের ওপর হামলা দুঃখজনক
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের গাড়িতে হামলার ঘটনায় কাউকে দোষারোপ করতে চান না শেখ হাসিনা। তবে ঘটনাটিকে দুঃখজনক বলেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অনেক সাজাপ্রাপ্ত আসামি, সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের বহুজনের আবাস ইংল্যান্ডে। সেখানে একজন ব্রিটিশ এমপির গাড়িতে হামলা। সে শুধু বঙ্গবন্ধুর নাতনিই নয়, একজন এমপিও।
‘এরা কী জাতীয় লোক? ইংল্যান্ডের মতো জায়গায়, একটি সভ্য জায়গায় এ ধরনের অসভ্য ঘটনা ঘটে। সেখানে তো কিছু লোক আছেই। এটা দুঃখজনক। আমি কাউকে দোষারোপ করতে চাই না, এটা ব্রিটিশ সরকার খুঁজে দেখবে।’
গত বুধবার স্থানীয় সময় রাতে ব্রিটিশ লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। তার বাড়ির বাইরে পার্ক করা গাড়িটির ছাদে রাজনৈতিক বার্তাও লিখে যায় দুর্বৃত্তরা। পাশাপাশি ভেঙে ফেলা হয় জানালার কাচ।
তালেবানে ভয় নেই বাংলাদেশের
আফগানিস্তানে উগ্রবাদী ধর্মীয় গোষ্ঠী তালেবানের উত্থানে বাংলাদেশের ভয়ের কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সার্কভুক্ত দেশটির ক্ষমতা কাঠামোতে এই পরিবর্তনের প্রভাব যেন বাংলাদেশে না পড়ে, সে জন্য সরকার সতর্ক বলেও জানিয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ বিষয়ে সোমবার ডাকা সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘তালেবানকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভয় পেলেই ভয়, না পেলে কিছু নয়। একসময় যখন তালেবানের উত্থান হলো, তখন অনেকে আফগানিস্তান থেকে ট্রেনিং নিয়ে আসে। এ জন্য দেশে জঙ্গিবাদ তৈরি হয়। এর জন্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
‘এটা যে মানুষের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না, মানুষ যে কষ্ট পায়, এ জন্য মানুষকে সচেতন হতে হবে। আমরা সতর্ক আছি এবং ব্যবস্থা নিচ্ছি যেন এ ঘটনার কোনো বাতাস আমাদের এখানে না আসে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ধরে রেখেই আমাদের এখানে যেন ওই ঘটনা না ঘটে, এ জন্য সচেতনতা বাড়াতে চেষ্টা করছি। জনগণই মূল শক্তি। জনগণ শান্তি চায়। আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায় থাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া এসেছে। এখন আর হাহাকার নেই। ভবিষ্যতে আরও উন্নত জীবন তারা পাবে।’
টিকা তৈরিতে প্রস্তুত দেশ
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনে সরকার প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘টিকা তৈরি করতে আমরা প্রস্তুত। এর জন্য ১০ একর জায়গা আমরা নিয়ে রেখেছি। এখানেই যাতে টিকা উৎপাদন করা যায়, সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।
‘আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করছেন। আমরা ফর্মুলা চাই। এটা এখানেই আমরা প্রস্তুত করতে পারব। তৈরি টিকা পরীক্ষা করতে মলিকিউলার ল্যাবরেটরি দরকার। আমাদের ল্যাব তৈরি প্রায় শেষ পর্যায়ে।’
তিনি বলেন, ‘যখনই সুযোগ পাব নিজেরা যাতে তৈরি করতে পারি। আমাদের ফার্মাসিউটিক্যালস (পণ্য) ১০০টিরও বেশি দেশে যায়। আমরা পারব বলে আশা করি। চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে ভ্যাকসিন নিজেরাই তৈরি করতে পারি।
‘আমাদের দেশেও অনেকে টিকা নিয়ে গবেষণা করছেন। এটা ভালো লক্ষণ।’
‘জিয়ার নির্বিচার হত্যার স্বরূপ উন্মোচন চান প্রধানমন্ত্রী’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বিমান ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের ‘নির্বিচারে হত্যার’ স্বরূপ উন্মোচন হওয়া উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সেই সময় বারবার ক্যু হয়েছে। ক্যুর নামে শুধু এয়ারফোর্সই না, সেনাবাহিনীরও বহু সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। এদের পরিবার লাশ তো পায়নি। বরং এরা যে গুম হয়ে গেল এটা নিয়ে কেউ কোনো কথাও বলেনি। এত বছর পর চেতনা এসেছে। এতকাল কেন সবাই এটা ভুলে ছিল?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতেই এটা করেছিলেন। সে সময় অনেক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকেও হত্যা করা হয়। তাকে (জিয়াউর রহমান) এমন ফেরেশতা বানানো হলো শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতার ঘোষক হয়ে গেল।
‘মিউটিনি বিচারের নামে ১১ অফিসারকে যে ফাঁসি দিল। জিয়া ক্ষমতায় থাকার সময় ক্যু এবং বিভিন্ন কারাগারে ফাঁসির হিসাব কেউ নেয়নি। আরও তথ্য বের হওয়া দরকার। এই পরিবারগুলো তো কিছু পায়নি। তাদের কথা কেউ জানতেও চায়নি।’
সরকারপ্রধান বলেন, এখন কমিশন গঠনের যে দাবি উঠেছে, আমি মনে করি এ জন্য ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় অনীহা
বিলাসিতায় নজর না দিয়ে গবেষণায় নজর দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সব সময় গবেষণায় বিশ্বাস করি। দুর্ভাগ্যজনক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণায় কেন যেন অনীহা। আমি যখনই দেশে ফিরেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেই বলি গবেষণা করতে হবে। এটা ছাড়া উন্নতি সম্ভব নয়।
‘প্রাইম মিনিস্টার এডুকেশন ফান্ড করেছি। বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ ব্যবস্থা করেছি। সেখানেও গবেষণার টাকা দিই।’
তিনি বলেন, ‘মেডিক্যাল সায়েন্সে আমাদের কোনো গবেষণাই হয় না। দু-একজন করেন। আমি বুঝি না কেন এই অনীহা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি গবেষণা থাকত… একসময় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ছিল। সেটি ধীরে ধীরে কেন যেন কমে গেল। সব জায়গায় আলাদা ব্যবস্থা আমরা করছি গবেষণার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞানের ওপর গবেষণা বন্ধই ছিল। এবার আলাদা বাজেট দিয়েছি। মেগাপ্রকল্প স্যাটেলাইটের কারণে অনেকের অভিজ্ঞতা হয়েছে। যা যা সুবিধা দেয়া আছে। তারা কেন করেন না এটার জবাব আমি দিতে পারব না। কেন যেন অনীহা।
‘মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করছে, চিকিৎসা করে প্রাইভেটে যায় টাকা কামাতে। শুধু টাকা কামানোই চিন্তা হলে গবেষণা করবে কীভাবে? টাকার অভাব হবে না। আমি তো ফান্ড করে দিয়েছি। উদ্যোগের অভাব। সবার নজর বিলাসিতার দিকে।’
প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমাদের দেশে একসময় আদর্শ নিয়ে সবাই চলত, এখন বিলাসিতায় নজর চলে গেছে। এখন সবাই মডেল হতে চায়, সমস্যা এখানে। বিলাসিতায় এত বেশি নজর, অন্য জায়গায় সময় দিতে পারে না।
‘তবে পরিবর্তন আসবে। আমি তো লেগে আছি। গবেষণা কিছু হচ্ছে বলে আজকে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। একেবারে হচ্ছে না, তা নয়। এখন স্বাস্থ্য আর বিজ্ঞানে গবেষণায় নজর দিচ্ছি বেশি।’
শরণার্থী পালা ব্যবসা
নিজেদের স্বার্থের জন্য কেউ কেউ রোহিঙ্গাদের শরণার্থী করে রাখতেই বেশি আগ্রহী হিসেবে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বারবার তাগিদ দেয়ার পরও তারা সেটি করতে চায় না। কারণ কারও কারও কাছে রোহিঙ্গাদের শরণার্থী করে রাখা একটা ব্যবসা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রিফিউজি থাকলে কিছু লোকের বোধ হয় একটু লাভই হয়। … অনেক প্রস্তাব আমরা পাই, যে রোহিঙ্গারা এখানে আছে, তাদের জন্য এটা করা হোক, ওটা করা হোক। সঙ্গে সঙ্গে আমরা বলি যে, ঠিক আছে, কাজগুলো আপনারা করেন, মিয়ানমারে করেন। করে এদের নিয়ে যান। আমার এখানে করার তো দরকার নেই। আমার এখানে যেটুক করার আমরা করেছি।’
বাংলাদেশে ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঢল নামার পর সরকারই তাদের আশ্রয় দেয়। সে কথা সংবাদ সম্মেলনে মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
‘এখন তাদের ফেরাতে কিছু সংস্থা চেষ্টা অব্যাহত রাখলেও অনেক সংস্থা চায় তারা বাংলাদেশে থেকে যাক। এতে তাদের লাভ হয়, সে জন্য তারা প্রত্যাবাসনকে বাধা দেয়’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:
অসম্ভবকে সম্ভব করার এই গল্পটি প্রতিটি ছাত্রের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। স্বপ্ন পূরণের পথে সাহস আর নিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে, কেবল বিজয়ের জন্য নয়, বরং একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার জন্যই লড়াই করতে হয়। সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে মেধা ও পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই, আর সেই পথেই রচিত হয় নতুন ইতিহাস। এই ডাকসু নির্বাচন সেই ইতিহাসেরই একটি অংশ, যেখানে মেধা আর সততা পেয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান।
দুর্ধর্ষ জয়, না অভিস্মরণীয় বিজয়! ডাকসুতে শিবিরের এই জয়কে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? সাদিক কায়েম, এস এম ফরহাদ এবং মহিউদ্দিন খান তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি ভোট পেয়েছেন, মানে এক কথায় অলআউট উইন। জয়ের ব্যবধানটাই সবচেয়ে বড় চমক সৃষ্টি করেছে এখানে। ডাকসুর ইতিহাসে এমন ঘটনা খুব বেশি ঘটেনি। ভিপি পদে সাদিক কায়েম পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট, ছাত্রদলের আবিদ পেয়েছেন ৫৬৫৮ ভোট, অর্থাৎ অর্ধেকেরও কম। জিএস পদে এস এম ফরহাদ পেয়েছেন ১০,৭৯৪ ভোট, অন্যদিকে ছাত্রদলের হামিম পেয়েছেন ৫২৮৩ ভোট। এখানেও রয়েছে দ্বিগুণ ব্যবধান। এজিএস পদে মহিউদ্দিন খান পেয়েছেন ৯৫০১ ভোট, অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মায়েদ পেয়েছেন ৪২৫৪ ভোট। অর্থাৎ ৫২৪৭ ভোটের ব্যবধান রয়েছে এখানে। শিবিরের এই তিন নায়ক সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেওয়া যাক।
শুরুতেই আলোচনা করা যাক মহিউদ্দিন খান মহিকে। চোখে চশমা, পরনে পাঞ্জাবি আর চেহারায় ভদ্রতার ছাপ সুস্পষ্ট। শিক্ষার্থীরা তো বটেই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যেও মহিউদ্দিনের জনপ্রিয়তা আছে। ভদ্রতার পাশাপাশি মেধাতেও যে কারো চেয়ে এগিয়ে তিনি। মহিউদ্দিন খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি অনার্সে ৩.৯৩ সিজিপিএ অর্জন করে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম এবং মাস্টার্সে ৪.০০ সিজিপিএ অর্জন করতে সক্ষম হন। এরপর তিনি মাস্টার্সের পূর্ণাঙ্গ ফলাফলে ৩.৯৭ সিজিপিএ পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন। তিনি বিজয় '৭১ হলের সাবেক শিক্ষার্থী। ছাত্র রাজনীতিতে দাপট বজায় রাখার জন্য হলে বছরের পর বছর সময় কাটানোর নজির আছে, সেখানে মহিউদ্দিন খান বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। স্নাতকোত্তর শেষ হওয়ার তিন দিনের মাথায় তিনি হল ছেড়ে দেন যা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয় তখন। তাই এজিএস হিসেবে ডাকসু নির্বাচনে মহিউদ্দিন খানের এই জয়টা মোটেও অবাক করার মতো নয়।
এবার আসবে এস এম ফরহাদের নাম। দেখতে সে ছোটখাটো হলেও তার দায়িত্বটা বিশাল। একজন ডিবেটর হিসেবে তার বেশ খ্যাতি আছে। কখনো কখনো তিনি বাম রাজনীতির সমালোচনা করেছেন, আবার কখনো ছাত্রদলের ভুলগুলোকে ধরিয়ে দিয়েছেন। আবার প্রতিপক্ষের দিক থেকেও কেউ কেউ ফরহাদকে নিয়ে নানা সময় নানা আলোচনা ও সমালোচনা করেছেন। তিনি সেসব সমালোচনার সুস্পষ্ট জবাব দিয়েছেন তার দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে। ছাত্রলীগের সাথে তার অতীত সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রচুর সমালোচনা আছে, কিন্তু ফরহাদের দাবি সেটা ছিল তার চৌকস কৌশল। তিনি নাকি পরিচয় লুকিয়ে শিবির করতেন। ফরহাদের যে রুমমেট তার সঙ্গে দীর্ঘ চার বছর থেকেছে, সেও ফরহাদের আসল রাজনৈতিক পরিচয় জানতো না। ২০০৪ সালের ৫ই আগস্টের পর ফরহাদের পরিচয় সামনে আসার পর, অন্য অনেকের মতো তার রুমমেটও অবাক হয়েছিল। ফরহাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ১৭-১৮ সেশনের এবং পাশাপাশি কবি জসীমউদ্দীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ডাকসু নির্বাচনের সময় ফরহাদকে তেমন প্রচারণা করতে দেখা যায়নি, অথচ তার জয় আল্লাহ সহজভাবে এনে দিয়েছেন।
সর্বশেষে আসবে এই ডাকসুর ইতিহাসের অন্যতম নাম, যার দ্বারা পুরো ডাকসু আগামী কয়েক বছর পরিচালিত হবে, তার নাম হলো সাদিক কায়েম। তিনি হলেন শিবিরের অন্যতম ফ্রন্টলাইনার। ডাকসুতে তিনি শিবিরের হয়ে প্রচার-প্রচারণা করেছেন সবচেয়ে বেশি। সাদিক কায়েমের প্রচারণা সবসময়ই ছিল একদম সাদামাটা। কিন্তু তার জয় আল্লাহ দিলেন অনেক বড়সড় করে। তিনি বর্তমান ডাকসুর ইতিহাসে শিবিরের প্রথম এবং একমাত্র ভিপি। মাঝরাতে গতকাল সবাই যখন বিজয় উল্লাসের অপেক্ষায়, সাদিক কায়েমকে তখন নামাজরত অবস্থায় একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়। ভিপি হওয়ার আগেই আল্লাহর নাম স্মরণ করে সাদিক কায়েম বলেছিলেন, “ডাকসুর কাজ নেতা তৈরি করা নয়, বরং শিক্ষার্থীদের স্বার্থ হাসিল করা। এই স্বার্থগুলোর মধ্যে রয়েছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ: আবাসন সংকট দূর করা, শিক্ষার্থীদের খাবার এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, এবং বিশেষ করে রেজিস্টার ভবনে শিক্ষার্থীদের অনেককালের ভোগান্তি থেকে চির বিদায় দেওয়া।” এবার মূলত সেসব বাস্তবিকতার চিত্র প্রমাণ করার পালা। তিনি শিক্ষার্থীদের পার্টটাইম চাকরির সুযোগ, আধুনিক লাইব্রেরি ব্যবস্থা, মসজিদের আধুনিকায়ন, শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসনের প্রসারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক সমস্যা সমাধানে কাজ করতে চান। শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপে সাদিক কায়েম অপূর্ব মেধার পরিচয় দিয়ে এসেছেন। সাদিক কায়েম যে এলাকা থেকে উঠে এসেছেন, সেখান থেকে খুব কম সংখ্যক ছেলে এ যাবৎ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা করে নিতে পেরেছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় খুব ভালোভাবে টিকে যান এবং একাধিক সংগঠনের প্রধান হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। তার নেতৃত্বের গুণটা তার ভেতর আগে থেকেই আছে। এবার ভিপি হিসেবে তিনি কতটা সফল হবেন, তা সময় বলে দেবে।
জীবনে বড় কিছু অর্জন করতে হলে শুধু মেধা থাকলেই চলে না, তার সাথে দরকার দৃঢ় সংকল্প আর সততা। এই নির্বাচন প্রমাণ করলো যে, যখন মেধা আর সততার সমন্বয় ঘটে, তখন যেকোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। ছাত্র রাজনীতিকে কলঙ্কমুক্ত করে নতুন একটি উদাহরণ সৃষ্টি করার এই সুযোগ এসেছে, যা আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। বিজয় শুধু একটি পদের নয়, বরং লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর প্রত্যাশার। এই পথচলা যেন নতুন দিনের সূচনা করে।
সংক্ষিপ্ত জীবনী :
ডঃ তারনিমা ওয়ারদা আন্দালিব, বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক এবং যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইমপ্যাক্ট গ্রুপে গ্লোবাল কনসালট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন।
দাউদ ইব্রাহিম হাসান, বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় একজন রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট হওয়ার পাশাপাশি ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি আইডিএলসি ফাইনান্স পিএলসিতে মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের একজন সদস্য হিসেবে নিয়োজিত আছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগমের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন।
আজ সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান সাংবাদিকদের জানান, রাহাত আরা বেগমের চিকিৎসকের শিডিউল আগে থেকেই নেওয়া ছিল। সেই অনুযায়ী আজ তারা সিঙ্গাপুর গেছেন।
তিনি জানান, সকাল ৮টা ১০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তারা রওনা হন। তবে, চিকিৎসার জন্য তারা কতদিন সিঙ্গাপুরে থাকবেন, তা জানাননি শায়রুল।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু বলেনছেন- নির্বাচনটা বানচাল করার জন্য অনেকেই চেষ্টা করতেছেন। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করতেছে, কিন্তু আপনাদের মনে রাখতে হবে একটি নির্বাচিত সরকার দেশকে সুশৃঙ্খল অবস্থায় নিয়ে আসতে পারে। নির্বাচন ছাড়া এ দেশের অবস্থা খারাপের দিকে যাবে।
বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারী ও এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা এবং ক্রেস্ট প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু বলেন, নির্বাচন নিয়ে যারা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করুন না কেন এই বাংলাদেশের মানুষ অন্তত সচেতন। আমরা জনগণকে নিয়ে সেই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে যাতে সঠিক সময়ে নির্বাচন হয় এবং সরকারও নির্বাচনটা সঠিক সময়ে দিতে বদ্ধপরিকর। সে ব্যাপারে আমরা সচেতন থাকব এবং সক্রিয় থাকব।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের সাথে জোটের ব্যাপারে এখন কিছু বলা যাচ্ছে না।
এ সময় ভূঞাপুর বালিকা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকে গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান তরফদার। এতে অতিথি ছিলেন- উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
আগামী রমজানের আগেই দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, এতে ষোলো বছর পর দেশের ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতিহা পাঠ শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
দেশের মানুষ এখনো নানাভাবে অধিকারবঞ্চিত উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারীদের দিক থেকে আমরা এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের মধ্যে বাস করছি। আমাদের আন্দোলনের চূড়ান্ত লক্ষ্য গণতন্ত্র এখনো প্রতিষ্ঠা পায়নি। তবে আমাদের বিশ্বাস খুবই দ্রুত রমজানের আগেই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, তাতে এ দেশের ভোটাররা ষোলো বছর ধরে যে ভোট দিতে পারেননি, এবার তারা সেই ভোট দিতে পারবেন।’
‘পাশাপাশি গণতন্ত্রের আরও বিভিন্ন শর্ত, যেমন: এ দেশের মানুষের মনে নিরাপত্তাবোধ তৈরি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা— পূরণ করা সম্ভব হবে।’
তিনি বলেন, ‘আদালত হতে হবে অসহায় মানুষের শেষ ভরসার স্থল। সেই ধরনের একটি সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আর এই লক্ষ্য পূরণে মানুষের অনুপ্রেরণা হচ্ছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি ছিলেন মানবতা, প্রেম ও দ্রোহের কবি। ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রাম, স্বাধীনতার লড়াই, নব্বইয়ের গণআন্দোলন এবং বছরখানেক আগে যে দুনিয়া কাঁপানো গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, প্রতিটি জাতীয় অর্জন ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে যার গান ও কবিতা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে, দেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছে, তার গান গাইতে গাইতে ও তার কবিতা আবৃত্তি করতে করতে আমরা রাজপথে নেমে আসতাম।’
রিজভী বলেন, ‘স্বৈরশাসনের তপ্ত বুলেটের সামনে নিঃশঙ্কচিত্তে দাঁড়াতেও দ্বিধা করিনি, কারণ আমাদের কণ্ঠে ছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান ও কবিতা। যখনই এ দেশের মানুষ অধিকারহারা হয়, তখনই তাদের সংঘবদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করে অত্যাচারীর শৃঙ্খল ভাঙার প্রত্যয় জেগে ওঠে যার কবিতা ও গানে, তিনি কাজী নজরুল ইসলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে তিনি (নজরুল) তার শানিত কলম চালাতে দ্বিধা করেননি। তার লেখা কবিতা, গান ও সৃষ্টির মধ্য দিয়ে যে চেতনা তিনি গোটা জাতিকে দিয়েছেন, তা ধারণ করেই আমরা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সংগ্রাম করেছি, জুলাই আন্দোলনে যার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ হয়েছে।’
বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠোমোতে দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্য চলে আসছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সেখানে রাতারাতি এগুলোর সমাধান সম্ভব হবে না। কিন্তু আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, এই রাষ্ট্রকাঠামো বদলাতে হবে।
তিনি বলেছেন, ‘রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারর চূড়ান্ত পর্যায়ে আমরা এখনো আসতে পরিনি। এমনকি নির্বাচন নিয়েও একই বিষয় আছে, যদিও জাতি এখন সেই দিকেই মনোনিবেশ করেছে। যে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন সংগ্রাম ও লড়াই করেছি, এটা মুহূর্তের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে— এমনটা মনে করার কোনো কারণ নেই।’
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর প্রেসক্লাবে একটি সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘সামাজিক সুরক্ষা কতটুকু সু-রক্ষিত’ শিরোনামের এই সেমিনারের আয়োজন করে অর্পণ আলোক সংঘ নামের একটি সংগঠন।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানু ও পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ। সেমিনারটির সঞ্চালনা করেন অর্পণ আলোক সংঘের চেয়ারম্যান বীথিকা বিনতে হোসাইন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এখন রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের কথা বলছি, একইসঙ্গে অর্থনৈতিক কাঠামোর কথাও বলছি। কিন্তু দীর্ঘদিনের সব অনাচার, অবিচার, নৈরাজ্য, দুর্নীতি ও স্বৈরাচার— সবকিছু কাটিয়ে একদিনে সুন্দর করে একটি রাষ্ট্র আমরা তৈরি করব, এটা মনে করার কোনো কারণ আছে বলে আমি মনে করি না।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। যে ৫২ বছরে একটা নিয়মিত ও শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিধান আমরা তৈরি করতে পারিনি, সেখানে আজ হঠাৎ করে মুহূর্তের মধ্যে আমরা সবকিছু ঠিক করতে পারব না। আমরা যারা রাজনীতি করছি, তারা চেষ্টা করছি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কিংবা জোড়াতালি দিয়ে কোনোকিছু করা যায় না। এর জন্য সুনির্দিষ্ট চিন্তাভাবনা ও লক্ষ্য প্রয়োজন। পাশাপাশি, রাজনৈতিক নেতাকর্মীদেরও আন্তরিকতা থাকতে হবে।’
এ সময়ে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের ওপর জোর দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। এই কাঠামো বদলাতে হবে। কারণ, বেগুন গাছ লাগিয়ে আমরা কমলালেবু আশা করতে পারি না। কাজেই আমাদের সামনে একটা সুযোগ এসেছে, সেটা যদি কাজে লাগাতে পারি, বৈষম্যহীন একটা সমাজব্যবস্থার কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারি, তাহলে হয়তো-বা অভ্যুত্থানের কিছুটা মূল্য আমরা পাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবকিছু নির্ধারণ করে আমলারা। সেখান থেকে সবকিছু নেমে আসে। একজন স্কুলশিক্ষককেও নিজের সমস্যা সমাধান করতে ঢাকায় আসতে হয়, যেটার কোনো প্রয়োজন নেই। এর জন্য তো জেলা পরিষদই যথেষ্ট হওয়ার কথা।’
‘কিন্তু ওই যে সিস্টেম। কারণ, তারা যদি ঢাকায় না আসেন, তাহলে ঘুষ আসবে কোথা থেকে? এখন স্কুলশিক্ষক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক— সব নিয়োগ হয় ঘুষের বিনিময়ে। যেই রাষ্ট্রকাঠামোতে এমন বৈষম্য চলতে থাকে, সেখানে রাতারাতি কিছু করে ফেলতে পারব না।’
অনুষ্ঠানে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘মেহনিত মানুষের আন্দোলনের দাবি-দাওয়ার মঞ্চ হিসেবে আমরা নিজেদের গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। ২০১৫ সালে গণসংহতি আন্দোলনকে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে ঘোষণা করি। এ সময়ে বাংলাদেশের মানুষের লড়াই-সংগ্রামে যুক্ত থাকার চেষ্টা করেছি।’
‘রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ রাখা; আমাদের লক্ষ্যও তাই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে শ্রেণিগত পার্থক্য রয়েছে। সবচেয়ে বড় পার্থক্য ধনসম্পদে। গত ৫৪ বছরে যে দলগুলো ক্ষমতায় ছিল, তারা যে নীতি তৈরি করেছে, তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ খেটে খাওয়া মানুষ, নিপীড়িত জনগোষ্ঠী কিংবা লিঙ্গীয় পরিচয়ের মানুষ, তাদের জন্য সাম্য তো দূরের কথা, ন্যূনতম ভারসাম্যও তৈরি করতে পারেনি।’
‘এতে লুটপাট-নির্ভর একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে ধরে নেওয়া হয়, ক্ষমতা দিয়ে টাকা-পয়সা বানাবে।’
ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে ব্যাংক লুট হয়ে সাফা হয়ে গেছে। কিন্তু গত পরশুদিন দেখলাম, ৯টি নন-ব্যাংকি ফিন্যানশিয়াল ইনস্টিটিউশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটা বিশাল ব্যাপার। কিন্তু হাসিনা চলে যাওয়ার পরও লুটপাট বন্ধ হয়ে যায়নি। গেল ১২ মাসে প্রায় একইভাবে ব্যাংকিং খাতে লুটপাট হয়েছে। এটি আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অবক্ষয়, যেগুলো হাসিনার আমলে বেশি হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এজন্য কোনো জবাবদিহিতা নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো ব্যাংক থেকে একটি টাকা লুট হলেও বাংলাদেশের ব্যাংকের নজরদারি থাকে। লুট হবে, বাংলাদেশ ব্যাংক জানবে না— এটা হয় না। হাসিনার আমলে যে লুট হয়েছে, তা বাংলাদেশ ব্যাংক জানত। কিন্তু সেখানে যে কর্মকর্তাদের এই নজরদারি করার কথা ছিল, তাদের নামে কোনো নিউজ হয়নি, মামলা হয়নি। অর্থাৎ এই প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা হয়নি।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, সাধারণ মানুষ ইসলামকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আমি নির্বাচনের ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস। যদি জনগণ চায় তবে আমরাই সরকার গঠন করব।
তিনি বলেছেন, ইসলামী সমমনাদের এক মঞ্চে আনার বিষয়ে সবাই একমত। বড় বড় রাজনৈতিক নেতারা অনেক সময় পিআর বুঝেন না, কিন্তু সাধারণ মানুষ বিষয়টি ভালোভাবেই বোঝে। কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়ন ও বিমানবন্দর চালুর বিষয়ে ইতোমধ্যে অগ্রগতি হয়েছে। শিগগিরই সুখবর আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে দিনব্যাপী কুমিল্লা ফানটাউনে জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা মহানগরীর ‘নির্বাচনী দায়িত্বশীল সমাবেশ’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. তাহের বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি চালুর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, প্রয়োজনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে হ্যাঁ/না ভোটের মতো পদ্ধতিও গ্রহণ করা হতে পারে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন- কুমিল্লা মহানগরীর আমির ও কুমিল্লা ৬ সংসদীয় আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী কাজী দ্বীন মোহাম্মদ।
কুমিল্লা মহানগরীর দুরবস্থার প্রসঙ্গ টেনে ড. তাহের বলেন, আমি কান্দিরপাড় থেকে ডুলিপাড়া ফানটাউনে আসতে ৪৫ মিনিট সময় নিয়েছি। যেখানে স্বাভাবিক সময়ে ৫ মিনিটের বেশি লাগার কথা নয়।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি আবারও জোর দিয়ে বলেন, নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি চালুর বিষয়ে জামায়াত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী। প্রয়োজনে বিকল্প ফরম্যাটেও কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কোনো দল যদি মনে করে আগামী নির্বাচনে নিশ্চিত জয়ী হবে তাহলে বোঝা যায় জেতার জন্য তারা কোনো একটা মেকানিজম করছে। একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশকে সংকট থেকে বের করে আনতে পারবে। জনগণ যাকে চাইবে তারাই জয়ী হবে।
মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মাহবুবুর রহমান এবং সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- মহানগরীর নায়েবে আমির অধ্যাপক এ কে এম এমদাদুল হক মামুন, যুব বিভাগের সভাপতি কাজী নজির আহমেদ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগর সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন মোল্লা, মোতাহার আলী দিলাল, ভিপি মুজিবুর রহমান, কুসিক ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন, অধ্যাপক এ জি এস শহিদুল্লাহ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সবুজ প্রমুখ।
মন্তব্য