× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Who will vote for BNP in any happy dream for any reason
google_news print-icon

কারা, কী কারণে, কোন সুখের স্বপ্নে বিএনপিকে ভোট দেবে

কারা-কী-কারণে-কোন-সুখের-স্বপ্নে-বিএনপিকে-ভোট-দেবে
জাতিসংঘের অধিবেশনে অংশ নিয়ে দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি
‘ওদের কে ভোট দেবে? আমি সাংবাদিকদের কাছে জিজ্ঞেস করি- কারা, কী কারণে, কোন সুখের স্বপ্নে বিএনপি বা অন্যদের ভোট দেবে? আমরা কিছু করলাম কি না, সেটাও একটু তুলনা করেন।’

জাতিসংঘ সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন গঠনসহ কথা বললেন নানা বিষয়ে।

আওয়ামী লীগ প্রধান অনেকটাই নিশ্চিত, জনগণ আবার তাদেরই ভোট দেবে। অন্যদের কী কারণে ভোট দেবে- এমন প্রশ্ন তুলে তিনি পরে আবার বলেন, যদি আওয়ামী লীগকে ভোট না দেয়, তাহলে ক্ষমতায় থাকার কোনো আগ্রহ নেই।

রাজনীতিতে আপাতদৃষ্টিতে তেমন চ্যালেঞ্জের মুখে না থাকলেও আত্মতুষ্টিতে না ভোগার কথাও বলেছেন শেখ হাসিনা। বলেছেন, খরগোশ আর কচ্ছপের যে গল্প আছে, সেটি মাথায় আছে তারও। প্রতিপক্ষকে অবহেলা করে তিনি তাদের সুবিধা করে দিতে চান না।

নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়েও কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। জানিয়েছেন, আগের দুইবারের মতো এবারও কমিশন গঠন করা হবে সার্চ কমিটির মাধ্যমেই।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশন ও সাইডলাইনে উচ্চপর্যায়ের অংশ নেয়া আলোচনার বিষয়ে অবহিত করতে সোমবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা প্রথমে রাখেন লিখিত বক্তব্য। এতে তার বক্তব্যে সফরের বিষয়ে বিবৃতি ছিল।

তবে গণমাধ্যমকর্মীরা প্রশ্ন রাখেন সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অন্যান্য ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে।

মাথায় খরগোশ-কচ্ছপের গল্প

আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। এত আগে কেন মাঠে নামল সরকারি দল- এ বিষয়টি নিয়ে শেখ হাসিনার মন্তব্য জানতে চান একজন সংবাদমাধ্যমকর্মী।

জবাবে ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতি এ জন্য যে, আমি নির্বাচনে বিশ্বাস করি, জনগণের ভোটে বিশ্বাস করি। আমি কখনোই আত্মতুষ্টিতে ভোগি না যে, আমি এত কাজ করেছি যে আমার অপজিশন নাই। তাহলে ওই খরগোশ আর কচ্ছপের দৌড়ের মতো অবস্থা হবে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনটাকে আমরা নির্বাচন হিসেবেই দেখতে চাই। জনগণের ভোট যাতে পাই, এ জন্য জনগণের কাছে যেতে চাই। জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করে জনগণের ভোটেই ক্ষমতায় ফিরতে চাই। জনগণ ভোট না দিলে আসব না, পরিষ্কার কথা। আর প্রতিপক্ষ কে হতে পারল কে পারল না, এটা তাদের ব্যাপার।’

দলকে সুসংগঠিত করা আর ভোটের জন্য জনগণের কাছে যাওয়া সব রাজনৈতিক দলেরই উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘অপরপক্ষে কী আছে না আছে, সেটা করার আগে নিজেরটা করতে হবে। কাজেই বিরোধী দলে কেউ নেই, এ জন্য আত্মতুষ্টিতে বসে থাকব… সেটা কিন্তু থাকব না। আমার সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। মানুষের কাছে না গেলে তাদের কষ্ট কখনও জানা যায় না।’

রায় আ.লীগ পাবে নিশ্চিত শেখ হাসিনা

অপর এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী উল্টো জানতে চান, আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণ কেন ভোট দেবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাধারণত জনগণ কাকে ভোট দেয়... তারা দেখে ক্ষমতায় যাবে কে। তারা তো (বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান) ইলেকশনও করতে পারবে না। …তাদের ভেতর একটা বিশ্বাস যে, নির্বাচনে জিতবে বা ক্ষমতায় যাবে এই বিশ্বাসটা আর নাই। হারিয়ে গেছে।’

নির্বাচনব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই বিএনপি ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। বলেন, ‘তারা জানে তাদের কোনো সম্ভাবনা নাই। আর এ জন্যই এটাকে বিতর্কিত করা, এটাই চেষ্টা।

‘২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জনগণ কেন ভোট দিল? কারণ '৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত জনগণ অন্তত এটুকু পেয়েছিল যে, সরকার মানেই জনগণের সেবক। কিছু হলেও উন্নতি হয় দেশের।’

কেন মানুষ বিএনপিকে ভোট দেবে

বিএনপি ও তার সমমনাদের জনগণ কেন ভোট দেবে, সেই প্রশ্নও রাখেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘কে আছে এর বাহিরে, কাকে দেবে? এর বাহিরে আর কে আছে?

‘এই যে প্রশ্ন যারা তোলে, এর বাহিরে আর কে আছে যে ভোট দেবে। কার কাছ থেকে মানুষ কী পেয়েছে?

‘ওদের কে ভোট দেবে? আমি সাংবাদিকদের কাছে জিজ্ঞেস করি, কারা, কী কারণে, কোন সুখের স্বপ্নে বিএনপি বা অন্যদের ভোট দেবে? আমরা কিছু করলাম কি না, সেটাও একটু তুলনা করেন।’

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা দল কীভাবে জিতবে? তাদের নেতৃত্ব কোথায়? একজন (বেগম খালেদা জিয়া) এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আরেকজন (তারেক রহমান) ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ নানা ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলে দেশান্তরি, সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তাদেরই নেতৃত্বেই রেখেছে। তাহলে জনগণ কোন ভরসায় তাদের ভোট দেবে?’

ক্ষমতা তার কাছে কোনো ভোগের বস্তু না বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘ও রকম আকাঙ্ক্ষা থাকলে তো আমার বাবাও যেমন অনেক আগে মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন, আমিও কিন্তু পারতাম। আমি কিন্তু তা হইনি।

‘আমার চিন্তা ছিল আমি যদি ক্ষমতায় যেতে পারি জনগণের জন্য যেন কাজ করতে পারি। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি। আমরা তো এগিয়ে যাচ্ছিলাম, করোনা এসে না আমাদের একটু বাধা দিয়েছে। তারপরও তো আমরা বসে থাকিনি। এমন কাজ করেছি যাতে গ্রামে অর্থ সরবরাহ হয়।’

ভোট নিয়ে সমালোচনা প্রত্যাখ্যান

বিএনপি ভোট নিয়ে যেসব অভিযোগ তুলে থাকে, তার সবই প্রত্যাখ্যান করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘গত কয়েক দিন আগে যে নির্বাচন হলো আপনারা দেখেছেন ভোটাররা কিন্তু খুব স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেছে। তবে হ্যাঁ, বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছেন, আপনারা একবার কি চিন্তা করে দেখেছেন অনেক চেষ্টা হয়েছে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে? শুধু তা-ই না, নির্বাচন যাতে না হয়, মানুষ যাতে না যায়, অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে হেন কাজ নেই যা না করা হয়েছে।

‘তারপরও নির্বাচন হয়েছে এবং এর পরে স্থিতিশীল পরিবেশ ছিল বলেই কিন্তু আজকে যে উন্নয়নটা দেখতে পারছেন, সেটা করা সম্ভব হয়েছে।’

বিএনপির জন্মের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন যেসব রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপিসহ যারা কথা বলে আসলে তারা নির্বাচন নিয়ে যে প্রশ্ন তোলে এই দলের জন্মটা কীভাবে? এটা কি কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত?’

শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের শেষ নির্বাচন প্রসঙ্গও তোলেন। বলেন, ‘আমি শুধু একটা কথা বলব বিএনপিকে, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তো তাদের কোনো অভিযোগ নাই। তাহলে সেটাতে তারা জিততে পারেনি কেন? তখন প্রশ্ন তোলেনি কেন?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এরপর যতটা নির্বাচন হয়েছে তাতে মানুষ তো ভোট দিয়েছে। আমরা যখন আধুনিক প্রযুক্তিতে গেলাম মানে ইভিএমে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন। এখন এরা যেহেতু সব সময় ‘পরভাতে পালিত’। সেই জায়গাটা মনে হয় তাদের আর নেই।”

নির্বাচন কমিশন গঠন আগের নিয়মেই

সার্চ কমিটির মাধ্যমেই আগামী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি একটি সার্চ কমিটি করবেন তার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে।’

কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে আগামী ফ্রেব্রুয়ারিতে। আগামী নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কবে, কীভাবে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন তা নিয়েও আলোচনা তুঙ্গে।

মেয়র জাহাঙ্গীর প্রসঙ্গ

ঘরোয়া আলোচনায় গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁস হওয়া একটি ভিডিওতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুর দেশ স্বাধীন করার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর গাজীপুরে যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, সে বিষয়েও আওয়ামী লীগ প্রধানের বক্তব্য জানতে চান একজন গণমাধ্যমকর্মী।

এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন দল জাহাঙ্গীরের কাছে বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়েছে আর গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, তার বক্তব্য কাটছাঁট করে ভিডিও ভাইরাল করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী এখনও কোনো সিদ্ধান্তে আসতে চান না। বলেন, ‘ডিজিটাল যুগে কথা তো নানাভাবে ভেঙে ভেঙে কে কীভাবে প্রচার করেছে এটা জানান। এ জন্য তাকে (জাহাঙ্গীর) শোকজ করা হয়েছে। জবাব পেলে পার্টি বসবে, তখন সিদ্ধান্ত নেবে।’

বেশি কাজ বলে সমালোচনা

অন্য এক প্রশ্নে শেখ হাসিনা যা বলেন, তার অর্থ হচ্ছে, তিনি মনে করেন কাজ বেশি করেন বলেই সমালোচনা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এত সুবিধা পেয়ে গালিটা আমার ওপর দিয়ে যাচ্ছে বা আওয়ামী লীগের ওপর দিয়ে যাচ্ছে, তাই তো? হবেই, কাজ বেশি, এটা তো আমাদের বাঙালিদের চরিত্রেই আছে। ভালো কাজ করলে মুখ ঘুরিয়ে বসে থাকা।’

টিউলিপের ওপর হামলা দুঃখজনক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের গাড়িতে হামলার ঘটনায় কাউকে দোষারোপ করতে চান না শেখ হাসিনা। তবে ঘটনাটিকে দুঃখজনক বলেছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অনেক সাজাপ্রাপ্ত আসামি, সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের বহুজনের আবাস ইংল্যান্ডে। সেখানে একজন ব্রিটিশ এমপির গাড়িতে হামলা। সে শুধু বঙ্গবন্ধুর নাতনিই নয়, একজন এমপিও।

‘এরা কী জাতীয় লোক? ইংল্যান্ডের মতো জায়গায়, একটি সভ্য জায়গায় এ ধরনের অসভ্য ঘটনা ঘটে। সেখানে তো কিছু লোক আছেই। এটা দুঃখজনক। আমি কাউকে দোষারোপ করতে চাই না, এটা ব্রিটিশ সরকার খুঁজে দেখবে।’

গত বুধবার স্থানীয় সময় রাতে ব্রিটিশ লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। তার বাড়ির বাইরে পার্ক করা গাড়িটির ছাদে রাজনৈতিক বার্তাও লিখে যায় দুর্বৃত্তরা। পাশাপাশি ভেঙে ফেলা হয় জানালার কাচ।

তালেবানে ভয় নেই বাংলাদেশের

আফগানিস্তানে উগ্রবাদী ধর্মীয় গোষ্ঠী তালেবানের উত্থানে বাংলাদেশের ভয়ের কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সার্কভুক্ত দেশটির ক্ষমতা কাঠামোতে এই পরিবর্তনের প্রভাব যেন বাংলাদেশে না পড়ে, সে জন্য সরকার সতর্ক বলেও জানিয়েছেন তিনি।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ বিষয়ে সোমবার ডাকা সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘তালেবানকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভয় পেলেই ভয়, না পেলে কিছু নয়। একসময় যখন তালেবানের উত্থান হলো, তখন অনেকে আফগানিস্তান থেকে ট্রেনিং নিয়ে আসে। এ জন্য দেশে জঙ্গিবাদ তৈরি হয়। এর জন্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

‘এটা যে মানুষের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না, মানুষ যে কষ্ট পায়, এ জন্য মানুষকে সচেতন হতে হবে। আমরা সতর্ক আছি এবং ব্যবস্থা নিচ্ছি যেন এ ঘটনার কোনো বাতাস আমাদের এখানে না আসে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ধরে রেখেই আমাদের এখানে যেন ওই ঘটনা না ঘটে, এ জন্য সচেতনতা বাড়াতে চেষ্টা করছি। জনগণই মূল শক্তি। জনগণ শান্তি চায়। আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায় থাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া এসেছে। এখন আর হাহাকার নেই। ভবিষ্যতে আরও উন্নত জীবন তারা পাবে।’

টিকা তৈরিতে প্রস্তুত দেশ

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনে সরকার প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘টিকা তৈরি করতে আমরা প্রস্তুত। এর জন্য ১০ একর জায়গা আমরা নিয়ে রেখেছি। এখানেই যাতে টিকা উৎপাদন করা যায়, সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।

‘আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করছেন। আমরা ফর্মুলা চাই। এটা এখানেই আমরা প্রস্তুত করতে পারব। তৈরি টিকা পরীক্ষা করতে মলিকিউলার ল্যাবরেটরি দরকার। আমাদের ল্যাব তৈরি প্রায় শেষ পর্যায়ে।’

তিনি বলেন, ‘যখনই সুযোগ পাব নিজেরা যাতে তৈরি করতে পারি। আমাদের ফার্মাসিউটিক্যালস (পণ্য) ১০০টিরও বেশি দেশে যায়। আমরা পারব বলে আশা করি। চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে ভ্যাকসিন নিজেরাই তৈরি করতে পারি।

‘আমাদের দেশেও অনেকে টিকা নিয়ে গবেষণা করছেন। এটা ভালো লক্ষণ।’

‘জিয়ার নির্বিচার হত্যার স্বরূপ উন্মোচন চান প্রধানমন্ত্রী’

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বিমান ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের ‘নির্বিচারে হত্যার’ স্বরূপ উন্মোচন হওয়া উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘সেই সময় বারবার ক্যু হয়েছে। ক্যুর নামে শুধু এয়ারফোর্সই না, সেনাবাহিনীরও বহু সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। এদের পরিবার লাশ তো পায়নি। বরং এরা যে গুম হয়ে গেল এটা নিয়ে কেউ কোনো কথাও বলেনি। এত বছর পর চেতনা এসেছে। এতকাল কেন সবাই এটা ভুলে ছিল?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতেই এটা করেছিলেন। সে সময় অনেক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকেও হত্যা করা হয়। তাকে (জিয়াউর রহমান) এমন ফেরেশতা বানানো হলো শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতার ঘোষক হয়ে গেল।

‘মিউটিনি বিচারের নামে ১১ অফিসারকে যে ফাঁসি দিল। জিয়া ক্ষমতায় থাকার সময় ক্যু এবং বিভিন্ন কারাগারে ফাঁসির হিসাব কেউ নেয়নি। আরও তথ্য বের হওয়া দরকার। এই পরিবারগুলো তো কিছু পায়নি। তাদের কথা কেউ জানতেও চায়নি।’

সরকারপ্রধান বলেন, এখন কমিশন গঠনের যে দাবি উঠেছে, আমি মনে করি এ জন্য ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় অনীহা

বিলাসিতায় নজর না দিয়ে গবেষণায় নজর দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সব সময় গবেষণায় বিশ্বাস করি। দুর্ভাগ্যজনক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণায় কেন যেন অনীহা। আমি যখনই দেশে ফিরেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেই বলি গবেষণা করতে হবে। এটা ছাড়া উন্নতি সম্ভব নয়।

‘প্রাইম মিনিস্টার এডুকেশন ফান্ড করেছি। বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ ব্যবস্থা করেছি। সেখানেও গবেষণার টাকা দিই।’

তিনি বলেন, ‘মেডিক্যাল সায়েন্সে আমাদের কোনো গবেষণাই হয় না। দু-একজন করেন। আমি বুঝি না কেন এই অনীহা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি গবেষণা থাকত… একসময় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ছিল। সেটি ধীরে ধীরে কেন যেন কমে গেল। সব জায়গায় আলাদা ব্যবস্থা আমরা করছি গবেষণার জন্য।’

তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞানের ওপর গবেষণা বন্ধই ছিল। এবার আলাদা বাজেট দিয়েছি। মেগাপ্রকল্প স্যাটেলাইটের কারণে অনেকের অভিজ্ঞতা হয়েছে। যা যা সুবিধা দেয়া আছে। তারা কেন করেন না এটার জবাব আমি দিতে পারব না। কেন যেন অনীহা।

‘মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করছে, চিকিৎসা করে প্রাইভেটে যায় টাকা কামাতে। শুধু টাকা কামানোই চিন্তা হলে গবেষণা করবে কীভাবে? টাকার অভাব হবে না। আমি তো ফান্ড করে দিয়েছি। উদ্যোগের অভাব। সবার নজর বিলাসিতার দিকে।’

প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমাদের দেশে একসময় আদর্শ নিয়ে সবাই চলত, এখন বিলাসিতায় নজর চলে গেছে। এখন সবাই মডেল হতে চায়, সমস্যা এখানে। বিলাসিতায় এত বেশি নজর, অন্য জায়গায় সময় দিতে পারে না।

‘তবে পরিবর্তন আসবে। আমি তো লেগে আছি। গবেষণা কিছু হচ্ছে বলে আজকে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। একেবারে হচ্ছে না, তা নয়। এখন স্বাস্থ্য আর বিজ্ঞানে গবেষণায় নজর দিচ্ছি বেশি।’

শরণার্থী পালা ব্যবসা

নিজেদের স্বার্থের জন্য কেউ কেউ রোহিঙ্গাদের শরণার্থী করে রাখতেই বেশি আগ্রহী হিসেবে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বারবার তাগিদ দেয়ার পরও তারা সেটি করতে চায় না। কারণ কারও কারও কাছে রোহিঙ্গাদের শরণার্থী করে রাখা একটা ব্যবসা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রিফিউজি থাকলে কিছু লোকের বোধ হয় একটু লাভই হয়। … অনেক প্রস্তাব আমরা পাই, যে রোহিঙ্গারা এখানে আছে, তাদের জন্য এটা করা হোক, ওটা করা হোক। সঙ্গে সঙ্গে আমরা বলি যে, ঠিক আছে, কাজগুলো আপনারা করেন, মিয়ানমারে করেন। করে এদের নিয়ে যান। আমার এখানে করার তো দরকার নেই। আমার এখানে যেটুক করার আমরা করেছি।’

বাংলাদেশে ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঢল নামার পর সরকারই তাদের আশ্রয় দেয়। সে কথা সংবাদ সম্মেলনে মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।

‘এখন তাদের ফেরাতে কিছু সংস্থা চেষ্টা অব্যাহত রাখলেও অনেক সংস্থা চায় তারা বাংলাদেশে থেকে যাক। এতে তাদের লাভ হয়, সে জন্য তারা প্রত্যাবাসনকে বাধা দেয়’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন:
তালেবানকে ভয়ের কিছু নেই, বাংলাদেশ প্রস্তুত: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির কোনো আশা নেই: প্রধানমন্ত্রী
এসডিজি বাস্তবায়নে সবচেয়ে অগ্রগামী ছিল বাংলাদেশ
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী
বিকেলে সম্মেলনে আসছেন প্রধানমন্ত্রী

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
The return of Khaleda Zia will ease the way of passing democracy
মির্জা ফখরুল

খালেদা জিয়ার ফিরে আসা গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সহজ করবে

খালেদা জিয়ার ফিরে আসা গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সহজ করবে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিনএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ফিরে আসা গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সহজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রবেশের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া দীর্ঘকাল ফ্যাসিবাদের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ফ্যাসিবাদ বিদায় নেওয়ার পর কারাবন্দিত্ব থেকে মুক্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়েছিলেন। সেখানে প্রায় ৪ মাস চিকিৎসা শেষে আজকে দেশে ফিরে আসছেন। এটা আমাদের জন্য, জাতির জন্য একটা আনন্দের দিন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্র উত্তরণের এই সময়ে খালেদা জিয়ার উপস্থিতি একটি উল্লেখযোগ্য দিক। তার ফিরে আসা আমাদের গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সহজ করবে। দেশকে সঠিক ও বৈষম্যহীন পথে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করবে।

গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৫ জানুয়ারি থেকে তার ছেলে তারেক রহমানের বাসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
BNP wants a roadmap for the election for December Nazrul Islam Khan

ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বিএনপি : নজরুল ইসলাম খান

ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বিএনপি : নজরুল ইসলাম খান

আগামী ডিসেম্বর ধরেই জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এ সময়ে ভোট আয়োজনে বাঁধা দেখছে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও সরকারের চাওয়ার মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। সরকার তো বলেনি ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে না। তিনি বলেন, ‘এজন্য আমরা বলেছি, ডিসেম্বরের একটা তারিখ ধরে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক।’

আজ সোমবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে লেবার পার্টির সঙ্গে লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। এটাকে ধরে একটা রোড ম্যাপ ঘোষণা করা হোক। সরকার বলছে যে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তার মানে তারা তো বলেনি যে, ডিসেম্বর নির্বাচন হবে না। কিন্তু আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে এরকম একটা তারিখ ধরে রোড ম্যাপ ঘোষণা করা হোক। পার্থক্য তো খুব বেশি না।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সরকারের কথা অনুযায়ী নির্বাচন ডিসেম্বরে হতে পারে, জানুয়ারিতে হতে পারে, ফেব্রুয়ারিতেও হতে পারে। কাজেই আমাদের সঙ্গে সরকারের পার্থক্য তো বহু মাসের না। আমরা শুধু সরকারকে বলছি, এভাবে না বলে, এভাবে বলেন।’

চলতি বছরের মাঝামাঝি নির্বাচন কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের দ্বায়িত্ব পূর্ণ করতে যাচ্ছেন। তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচনে বাধা কোথায় প্রশ্ন রেখে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, যারা ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় না তাদেরই উত্তর দিতে হবে বছরের শেষে ভোটগ্রহণে অসুবিধা কোথায়?

বিএনপি ৩১ দফা থেকে সরে যাচ্ছে কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এখানে সরাসরি কোনো ব্যাপার নেই। ৩১ দফা বিএনপির প্রস্তাব। সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব এসেছে এর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের মতামত প্রদান করেছে। এটা নিয়ে এখনো কোনো ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠা হয়নি। আমরা বলেছি পর পর দু’বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না। এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সিদ্ধান্ত হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম তখন আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছিলেন, এর চেয়ে ভালো কোনো প্রস্তাব যদি কারো কাছে থাকে তাহলে সেটা আমরা বিবেচনা করবো। এ কারণে আমরা দেখবো এর চেয়ে ভালো প্রস্তাব যদি কেউ দেয় সেটা যদি অধিকতর যুক্তিসংগত হয় তবে গ্রহণ করার সঙ্গে ৩১ দফার থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।’

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দাবি করছে প্রশাসন বিএনপির হয়ে কাজ করছে, সেক্ষেত্রে তারা মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে পাল্টা প্রশ্ন রেখে নজরুল ইসলাম বলেন, যারা অভিযোগ করছেন তারা সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন, তারাই বিএনপির লোক বসিয়ে এসেছেন কিনা?

তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে তো প্রশাসন থেকে উৎখাত করা হয়েছে। কোথাও বিএনপির কোনো ছিল না। যারা বৈষম্যের শিকার ছিল, যাদেরকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের ৭’শ অফিসারকে এখনো কোথাও পদায়ন করা হয়নি। তাহলে বিএনপির লোককে বসানো হলো কোথায়?’

বৈঠক শেষে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, জনগণ ও রাজনীতিবিদদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ড. ইউনূস ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেবেন। লেবার পাটির পক্ষ থেকে বিএনপির কাছে জাতীয় কনভেনশন করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Election is not before the renovation and trial of the murderers Jamaats Emir

সংস্কার ও খুনিদের বিচারের আগে নির্বাচন নয়: জামায়াতের আমির

সংস্কার ও খুনিদের বিচারের আগে নির্বাচন নয়: জামায়াতের আমির

আগামীতে যেকোনো নির্বাচনের আগে খুনিদের বিচার ও প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘যেকোনো নির্বাচনের আগে অবশ্যই দুটি কাজ সম্পন্ন করতে হবে। একটি হচ্ছে খুনিদের বিচার, যা দৃশ্যমান হতে হবে। আর আরেকটি হচ্ছে প্রয়োজনীয় সংস্কার—এই দুটি ছাড়া বাংলাদেশের জনগণ কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না।’

শনিবার (১৯ এপ্রিল) লালমনিরহাটের কালেক্টরেট মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, কালো টাকা ও পেশীশক্তির প্রভাবযুক্ত নির্বাচন আমরা দেখতে চাই না। সেজন্য অবশ্যই নির্বাচনের সমতল মাঠ তৈরি করতে হবে।’

ভারতের সঙ্গে সম্প্রীতি, শ্রদ্ধা ও সমতার ভিত্তিতে প্রতিবেশী হিসেবে বসবাসের দাবি জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা ভালো থাকলে তারাও ভালো থাকবে। আমাদের ভালো কেড়ে নিলে ভারতকে চিন্তা করতে হবে তারা ভালো থাকবে কিনা।’

জামায়াতপ্রধান আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন হলেও এখনও কিছু কু-রাজনীতিক চাঁদাবাজি-দখলবাজি করছে। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের সম্মান, নিরাপত্তা ও কাজের ব্যবস্থা করবে বলেও তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

পাশাপাশি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ লালমনিরহাটের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীকে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানান।

তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, আমরা এমন একটা দেশ চাই—যেখানে পক্ষ-বিপক্ষ বিভাজন চাই না। টুকরা টুকরা জাতি চাই না। আমরা মাইনরিটি ও মেজরিটি শব্দই শুনতে চাই না।

ডা. শফিকুর বলেন, এখন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকেরাও বলছে এই কথাগুলো বলেই বলেই আমাদের শোষণ করা হয়েছে। আমরাও চাই না। নারী পুরুষ নির্বিশেষে এই দেশকে গড়ে তুলবো। নারীদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হবে। তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে। তারা নিরাপদভাবেই ঘরে থাকবেন, বাইরে যাবেন পেশাগত দায়িত্ব পালন করবেন। যুবকদের হাতকে আমরা কাজের হাতে পরিণত করব। সেই অপেক্ষায় আছি।

তিনি বলেন, আমাদের লাখ লাখ মানুষ বলছেন, জীবন দেবো, দেশের সার্বভৌমত্ব দেবো না। কারো লাল চোখের দিকে আর আমরা তাকাবো না। আমাদের দিকে যদি কেউ লাল চোখ তুলে তাকায় তাও আমরা বরদাশতহ করব না। আমরা পিন্ডির হাত থেকে মুক্ত হয়েছি অন্য কারো হাতে বন্দি হওয়ার জন্য না। বরং সত্যিকার অর্থে একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হওয়ার জন্য। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সেই বৈষম্যহীন মানবিক সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চায় বলে উল্লেখ করেন জামায়াত আমির।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা সেই দিনটির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা বিভেদহীন জাতি চাই। আমরা ঐক্যবদ্ধ জাতি নিয়ে সামনে এগোতে চাই, লালমনিরহাটের প্রাণের দাবি তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও লালমনিরহাটের বিমানবন্দর চালু করতে হবে—তাহলে বেকারত্ব দূর হবে।

কালেক্টরেট মাঠ ছাড়াও শহরের অপর একটি মাঠে নারীদের জন্য বড় পর্দার ব্যবস্থা করা হয়।

জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট আবু তাহেরের সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল। এছাড়া দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দও এসময় জনসভায় বক্তব্য দেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
BNP reform is a party but at the root of all things Nazrul Islam Khan

বিএনপি সংস্কারেরই দল, তবে সবকিছুর মূলে জনগণ: নজরুল ইসলাম খান

বিএনপি সংস্কারেরই দল, তবে সবকিছুর মূলে জনগণ: নজরুল ইসলাম খান

বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘বরং বিএনপি সংস্কারেরই দল, তবে সবকিছুর মূলে জনগণ। জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয়।’

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির আলোচনার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘আমরা গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয়, বিএনপি সংস্কারেরই দল। কিন্তু কেউ কেউ নানান কথা বলেন। তারা যখন সংস্কারের দন্তস্য উচ্চারণ করেননি, তখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন।’

সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে শুরু হয়েছে।

গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ আন্দোলন–সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের সামনে আরেকবার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, আমরা তা কাজে লাগাতে চাই। আমরা এই কমিশনকে সহযোগিতা করছি, এই সরকারকে সহযোগিতা করছি, সেই প্রত্যাশা নিয়েই।’

যদি ঐকমত্য কমিশনের কোনো সনদ না-ও হয়, বিএনপির জন্য সংস্কারের সনদ রয়েছে বলে জানান নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, সবকিছুর মূলে জনগণ এবং জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয়। তিনি আরও বলেন, ‘আর জনগণ কার মাধ্যমে সম্মতি জানায়, তা আমরা জানি।’

আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ,আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সচিব নিরুজ্জামান খান অংশ নেন।

আজ দিনব্যাপী এই আলোচনা চলতে পারে বলে ঐক্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে। আজ আলোচনা শেষ না হলে প্রয়োজনে আগামী সপ্তাহে আবারও বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসবে কমিশন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Not absolutely satisfied with the chief advisers statement Mirza Fakhrul

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে একেবারে সন্তুষ্ট নই: মির্জা ফখরুল

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে একেবারে সন্তুষ্ট নই: মির্জা ফখরুল

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের’ ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে’ এমন বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘তার (প্রধান উপদেষ্টার) বক্তব্যে আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই।’

আজ বুধবার মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে বের হওয়ার পর তিনি এ হতাশা ব্যক্ত করেন। বিএনপির মিডিয়া উইং থেকে জানানো হয়, বৈঠকে দলটির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে একটি চিঠিও দেয়া হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্ট করে নির্বাচনের ডেটলাইন দেননি। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে তিনি নির্বাচন শেষ করতে চান। উনি ডিসেম্বর থেকে জুন বলেছেন, উনি বলেননি এটা ডিসেম্বরে হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি যে, আমাদের কাটঅফ টাইম ইজ ডিসেম্বর। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন যদি না হয়, তাহলে দেশে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং সামাজিক পরিস্থিতি, সেটা আরও খারাপের দিকে যাবে। সেটা তখন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।এ সময় ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে বিএনপি কী করবে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে দলটির মহাসচিব বলেন, দলের মধ্যে এবং মিত্র দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের আলোচনার প্রধান বিষয় ছিলো নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নিয়ে। সে বিষয়ে কথা বলেছি। আর বলেছি যে, যে পরিস্থিতি আছে এবং দেশের যে অবস্থা, তাতে করে আমরা বিশ্বাস করি এখানে দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, যে সংস্কার কমিশনগুলো করা হয়েছে, সেগুলোতে আমরা সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছি। কয়েকদিন আগে সংস্কার কমিশনের কাছে আমাদের মতামতগুলো দিয়েছি। আগামীকালও আমাদের সঙ্গে বৈঠক আছে। সবগুলো দল যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেগুলো নিয়ে আমরা একটা চার্টার করতে রাজি আছি। তারপরে আমরা নির্বাচনের দিকে চলে যেতে পারি। বাকি যেসব সংস্কারে আমরা একমত হব, সেটা আমরা অবশ্যই আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচিত হয়ে আসবেন, তারা সেগুলো বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেবেন। এটাই ছিল আমাদের (বিএনপির) মূল কথা।

এ বৈঠকের জন্য বেলা সোয় ১২টায় ‘যমুনা’য় পৌঁছায় বিএনপি মহাসচিবসহ দলের স্থায়ী কমিটির ৭ সদস্য। পৌনে দুই ঘণ্টার বৈঠকে নির্বাচনী রোডম্যাপ, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার, শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

সরকারের পক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ছিলেন উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।

চিঠিতে যা বলা হয়েছে

চিঠিতে বিএনপি উল্লেখ করে, মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে গণতন্ত্র ও মানবিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রতিটি লড়াইয়ের নেতৃত্বদানকারী কিংবা গর্বিত সক্রিয় অংশীদার হিসেবে বিএনপি তার অবস্থান থেকে প্রতিটি লড়াইয়ের সুফল জনগণের জন্য কার্যকর করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে এবং করছে। সেই লক্ষ্যেই এবারও জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের সুফল জনগণের কল্যাণে এবং তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে নিবেদিত করার টেকসই ক্ষেত্র প্রস্তুতের লক্ষ্যে দেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপরিচালনার ভার আপনার নেতৃত্বে অন্তর্র্বতী সরকার প্রতিষ্ঠায় আমরা সমর্থন জানিয়েছি এবং দায়িত্ব পালনে আপনাকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি এবং সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। আপনার ও আপনার নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্র্বতী সরকারের কাছে প্রায় দেড় যুগ ধরে গণতান্ত্রিক অধিকারহীন জনগণের স্বাভাবিক প্রত্যাশা ছিল। যত দ্রুত সম্ভব ফ্যাসিবাদী দল, তাদের দলীয় সরকার ও তার দোসরদের আইনের আওতায় এনে তাদের গণবিরোধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, দুর্নীতি-অনাচারের মাধ্যমে দেশের সম্পদ লুণ্ঠনকারীদের বিচার ও পাচার করা অর্থ পুনরুদ্ধারের, ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতে নিহত ও আহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ, সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন এবং দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পতিত সরকারের সব অপচক্র ও সিন্ডিকেট ধ্বংস করার পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া, যাতে তারা সম্মিলিতভাবে দেশে সুষ্ঠু রাজনীতি, উন্নত অর্থনীতি এবং জনগণের মানবিক অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে পারে।’

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘বিএনপি মনে করে যে জনগণের স্বার্থরক্ষা ও স্থায়ী কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য গণতান্ত্রিক শাসনের বিকল্প নেই। আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সংস্কার একটি সদা চলমান অনিবার্য প্রক্রিয়া। বিগত ফ্যাসিবাদী পতিত সরকারের মতো “আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র” যেমন জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অপকৌশল ছিল, এখনো কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর “আগে সংস্কার পরে গণতন্ত্র” তেমনই ভ্রান্ত কূটতর্ক। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও কার্যকর করার মাধ্যমেই সবার জন্য উন্নয়ন সম্ভব এবং এ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য রাষ্ট্রব্যবস্থা, আইন, নীতি, বিধানের সংস্কার অপরিহার্য। এর সবগুলো পরস্পরের পরিপূরক, কোনোটাই কোনোটার বিকল্প নয়; পরস্পর সাংঘর্ষিকও নয়।’

এতে আরও বলা হয়, আজ যারা সংস্কারের কথা বেশি বেশি বলে এবং বিএনপিকে সংস্কারের বিপক্ষের শক্তি বলে চিহ্নিত করার অপচেষ্টা করছে, তাদের ভিশন-২০৩০ এবং রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচিতে যেসব সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে ও যেসব পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে, তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, গোষ্ঠীস্বার্থে এবং রাজনীতি কিংবা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে হেয় ও অপ্রাসঙ্গিক করার অপচেষ্টায় অযথা সময়ক্ষেপণ করে জনগণকে তাদের ভোটাধিকার তথা রাষ্ট্রের মালিকানা প্রতিষ্ঠার অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার কৌশলকে বিএনপি সমর্থন করে না। দেশ ও জনগণের স্বার্থে জনগণের সম্মতি নিয়ে ৩১ দফায় বর্ণিত এবং ঐকমত্যে গৃহীত সব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিএনপি সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করে। চিঠিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী ও তার সরকারের বক্তব্য ও মতামতে সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি এর কিছু ব্যতিক্রম আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। আপনার সরকারের কিছু ব্যক্তি এবং আপনাকে সমর্থনকারী বলে দাবিদার কিছু ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রকাশ্য বক্তব্য ও অবস্থান জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। আশা করি আপনি এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’

বিএনপি বলে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য যেসব আইন, বিধি, বিধান সংস্কারে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেসব পরিবর্তন জরুরি, তা সম্পন্ন করার মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্ভব বলে আমরা মনে করি। সে লক্ষ্যে অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমরা আপনার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা এনআইডি প্রকল্প নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার এবং নির্বাচনি এলাকা পুনর্র্নিধারণের বিষয়ে আইনি জটিলতা দ্রুত নিরসনেরও প্রস্তাব করছি। একই সঙ্গে পতিত ফ্যাসিবাদী দল ও সেই দলীয় সরকারের সঙ্গে যারাই যুক্ত ছিল, তাদের বিচার দ্রুত করে রাজনীতির ময়দানকে জঞ্জালমুক্ত করার; জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ ও সুচিকিৎসা দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার এবং দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার অধিকতর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে ১/১১-এর অবৈধ সরকার এবং পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে করা সব মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি পুনর্ব্যক্ত করছি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Reform elections are not different things Mirza Fakhrul

সংস্কার-নির্বাচন আলাদা জিনিস না: মির্জা ফখরুল

সংস্কার-নির্বাচন আলাদা জিনিস না: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংস্কার আর নির্বাচন আলাদা জিনিস না। সংস্কার সংস্কারের মত চলবে। নির্বাচন নির্বাচনের মতো চলবে। এছাড়া সংস্কার প্রস্তাব যথাযথভাবে পর্যালোচনা করেই বিএনপি মতামত দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে নিজ বাসভবনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার সদ্য সমাপ্ত চীনসফর প্রসঙ্গে মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে চীন এক তরফাভাবে একটা দলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছে। তবে এখন তারা চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করে সব দলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ছে। চীন বাংলাদেশে উৎপাদনে ও উন্নয়নে বিনিয়োগের জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেটা দেশের জন্য আশাবাদের কথা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে বিষয়ে মতের ঐক্য হবে সেগুলো মেনেই নির্বাচন হবে। যারাই নির্বাচিত হবে সেই সংস্কার করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পরে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল ও ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি। এসময় জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাফরুল্লাহ, যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদ হাসান, ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ কায়েসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Iftar and Dua Mahfil in Savar for the well being of Khaleda Zia

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সাভারে ইফতার ও দোয়া মাহফিল

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সাভারে ইফতার ও দোয়া মাহফিল সাভারে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত বিএনপি নেতা-কর্মীসহ আয়োজন সংশ্লিষ্টরা। ছবি: নিউজবাংলা
প্রধান অতিধির বক্তব্যে লায়ন মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘বিগত ১৫-১৬ বছর আমরা যারা বিএনপি করেছি, শুধু আমি নই সাভারের নেত্রীবৃন্দসহ সারা বাংলাদেশে বিরোধী দলে যারা রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল, তাদের ওপর অত্যাচারের একটি স্টিমরোলার চালিয়েছে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার। নানা রকম মামলা, হামলা নির্যাতন সহ্য করেও যারা আজকে পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সম্পর্ক রেখেছে এবং দলের কাজকর্ম করে যাচ্ছে, তাদের আমি দলের পক্ষ থেকে ও আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানাই।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সাভারে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ তমিজ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ ইকবালের নির্দেশে এবং সাভার পৌর ছাত্রদলের মেহেদী হাসান সানির উদ্যোগে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অপারেটিভ অগ্রণী হাউজিং সোসাইটি মাঠে সম্প্রতি এ ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাভার পৌরসভার মেয়র পদপ্রার্থী লায়ন মো. খোরশেদ আলম।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাভার পৌর ছাত্রদলের নেতা-কর্মীসহ এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।

ওই সময় প্রধান অতিধির বক্তব্যে লায়ন মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘বিগত ১৫-১৬ বছর আমরা যারা বিএনপি করেছি, শুধু আমি নই সাভারের নেত্রীবৃন্দসহ সারা বাংলাদেশে বিরোধী দলে যারা রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল, তাদের ওপর অত্যাচারের একটি স্টিমরোলার চালিয়েছে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার। নানা রকম মামলা, হামলা নির্যাতন সহ্য করেও যারা আজকে পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সম্পর্ক রেখেছে এবং দলের কাজকর্ম করে যাচ্ছে, তাদের আমি দলের পক্ষ থেকে ও আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানাই।

‘কারণ চরম ধৈর্য না ধরলে এই দীর্ঘদিন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে কড়াভাবে লড়ে না গেলে আমরা সফল হতে পারতাম না।’

তিনি আরও বলেন,‘৫ আগস্ট যে স্বাধীনতা এসেছে, এই স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আর যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুস্থতা কামনা করছি। ’

সাভারের উন্নয়ন নিয়ে খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা একটু সাভারের দিকে তাকাই। এই সাভার একটি অবহেলিত সাভার। দীর্ঘদিন এই সাভারে যে পরিমাণ উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। এই না হওয়ার পিছনে একটি জিনিস দায়ী। সেটি হলো দায়িত্বশীল যারা ছিলেন তারা কখনোই, আপনাদের নিজের মানুষ মনে করেনি। যদি তারা কাজ করত বা সাভারকে নিজের পৌরসভা হিসেবে যদি গ্রহণ করত, তাহলে কাজ করতে পারত।

‘আমি দীর্ঘদিন কাউন্সিলর ছিলাম। সমস্যাগুলো আমি কাছ থেকে দেখেছি। এখানে শুধু দরকার একটু প্রচেষ্টা এবং জনগণের সহযোগিতা। একজন মেয়র যদি চিন্তা করে আমি সাভারের জন্য কাজ করব আর জনগণ যদি চিন্তা করে আমরা মেয়রের পাশে আছি, তাহলে কোনোকিছুতেই সেই উন্নয়ন ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব না।’

তিনি আরও বলেন, ‌‌‘আমার কাজ দ্বারা যদি আমাকে আপনাদের যোগ্য মনে হয়, তাহলে আপনারা আমাকে নির্বাচিত করবেন। যতদিন বেঁচে আছি আমি সাভারের জন্য এবং সাভারের মানুষের জন্য কাজ করে যাব।’

আরও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ‘সর্বোচ্চ মাত্রার’ নিরপেক্ষতা চায় বিএনপি
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরবেন বেগম খালেদা জিয়া
বরগুনার মন্টু দাসের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস বিএনপির
ভবিষ্যতে কেউ যেন এমন অপরাধ করার সাহস না পায়: তারেক রহমান
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো: ডা. জাহিদ

মন্তব্য

p
উপরে