বিজ্ঞাপনমুক্ত (ক্লিন ফিড) সম্প্রচারের শর্তের কারণে তিন দিন ধরে কোনো বিদেশি চ্যানেল দেখতে পারছেন না দেশের টিভি দর্শকরা। এ সংক্রান্ত ১৫ বছর আগের আইন প্রয়োগে এবার অনড় সরকার।
কেব্ল টিভি অপারেটরা চান, এ সিদ্ধান্ত আরও কিছু সময়ের জন্য শিথিল করুক সরকার। এ নিয়ে আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছে তাদের একাংশ।
দর্শকরা বলছেন, তারা টাকা দেন, সব ধরনের চ্যানেল দেখার জন্য। তাই সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত এ সমস্যার সামাধান হোক।
বাংলাদেশে বিদেশি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারসংক্রান্ত আইন করা হয় ২০০৬ সালে, যার নাম ‘কেব্ল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন’। এ আইনে বলা আছে, যেসব বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়, সেসব চ্যানেল বাংলাদেশে প্রদর্শন করা যাবে না। প্রচার করতে গেলে বিজ্ঞাপন ছাড়া প্রচার করতে হবে। এতে বিবিসি-সিএনএনসহ আন্তর্জাতিক খবরের চ্যানেল, খেলার চ্যানেল এবং ভারতীয় বিনোদন চ্যানেলগুলোসহ সব বিদেশি চ্যানেল বন্ধ করে দেয় কেব্ল অপারেটররা।
কেব্ল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব অনুযায়ী, দেশি-বিদেশি মিলিয়ে বাংলাদেশে বর্তমানে ১০০টিরও বেশি চ্যানেল রয়েছে।
কী বলছেন কেব্ল অপারেটররা
দেশের গ্রাহকদের কাছে টিভি সংযোগ পৌঁছে দিচ্ছেন কেব্ল অপারেটররা। তারা বলছেন, বিজ্ঞাপন ছাড়া অনুষ্ঠান প্রচারের ক্ষেত্রে তাদের কোনো দায় নেই, তাদের সে সুযোগও নেই। কিন্তু ভুগতে হচ্ছে তাদেরকে। গ্রাহকদের কাছ থেকে তারা নানা কথা শুনছেন। অনেক গ্রাহক মাসিক টাকা না দেয়ার হুমকিও দিয়েছেন। তাই আরও কিছু সময় চান অপারেটররা।
কেব্ল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (কোয়াব) সভাপতি আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘আমরা সরকারের আইন ও বিধিনিষেধ মেনেই ব্যবসা করব। কিন্তু আমাদের আরও কিছু সময় প্রয়োজন। এ খাত ডিজিটাইজড করার পর এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হলে আমাদের ব্যবসা টিকে থাকবে। ডিজিটাল হলে আমাদের মার্কেটের পরিধিও বাড়বে।
‘যেমন আমি কোনো বাসায় একটি কানেকশন দিয়েছি, কিন্তু সেখানে হয়তো ১৫টা টিভি চলে। কিন্তু তা আমরা বুঝতে পারছি না। এখন এটা ডিজিটাইজড হলে, সেট-টপ বক্স বসলে বুঝতে পারব কত সংযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকার যদি পুরো সহযোগিতা ও আর্থিক সুবিধা দেয়, তাহলে আগামী এক বছরে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।’
এদিকে শনিবার কেব্ল অপারেটরস সমন্বয় কমিটি নামে কোয়াবের একটা অংশ চার দফা দাবি জানিয়েছে সরকারের কাছে।
৪ অক্টোবরের মধ্যে কেব্ল টিভি নিয়ে জটিলতার অবসান না হলে দেশের কেব্ল অপারেটরদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছে তারা।
এ অংশের নেতা সৈয়দ মোশারফ আলী বলেন, ‘ক্লিন ফিড করার দায়িত্ব আমাদের না। এ জন্য ব্রডকাস্টার ও ডিস্ট্রিবিউটর রয়েছে। কিন্তু ভোগান্তিতে পড়েছি আমরা। তাই আমরা এর সমাধান চাই।’
তথ্যমন্ত্রী যা বললেন
রোববার তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব দেশে আইন মেনে চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করে থাকে। শুধু আমাদের দেশে আইনকে বছরের পর বছর ধরে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করা হচ্ছিল। আমরা আইন বাস্তবায়নের কথা দুই বছর আগে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলেছিলাম। বেশ কয়েকবার তাগাদা দেয়া হয়েছে, নোটিশ করা হয়েছে। গত মাসের শুরুতে তাদের সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো বসে সিদ্ধান্ত হয়, ১ অক্টোবর থেকে আইন কার্যকর করা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিবিসি, সিএনএন, আল-জাজিরা, ফ্রান্স টিভি, রাশান টিভি, ইউরো টিভি, অ্যানিমেল প্ল্যানেটসহ ১৭টি টিভি বাংলাদেশে ক্লিন ফিডে আসে। এই চ্যানেলগুলো সম্প্রচারে কোনো আইনগত বাধা নেই। কিন্তু কেব্ল অপারেটররা লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে এগুলোরও সম্প্রচার বন্ধ করেছেন।
‘কেউ কেউ বলছে ডিজিটাইজড না হওয়া পর্যন্ত আইন শিথিল রাখতে। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কায় পুরোটা ডিজিটাইজড হয়নি। সেখানে আইন কার্যকর আছে। আগেও ২ বছর সময় দেয়া হয়েছে। আমি ২ বছর আগ থেকে তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। এর আগেও এই আইন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলাম।’
অপারেটরদের আন্দোলন সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘যেসব চ্যানেল দেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করছে, সংস্কৃতিকে চোখ রাঙাচ্ছে, সেগুলোর পক্ষে ওকালতি করা দেশের স্বার্থ ও আইনবিরোধী। আমি আশা করব, দেশের স্বার্থবিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত হবেন না। সরকার কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। সরকার দেশের স্বার্থ ঊর্ধ্বে তুলে ধরার জন্য, আইন বাস্তবায়ন করার জন্য বদ্ধপরিকর।’
সিএনএন-ডিসকভারিও বন্ধ কেন
শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ সম্পর্কে কোয়াব প্রেসিডেন্ট আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘সিএনএন, ডিসকভারির মতো সব চ্যানেলই বিজ্ঞাপন প্রচার করে। ট্রাভেলসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার হয় এসব চ্যানেলে। বিজ্ঞাপন প্রচারের সময় যদি ভ্রাম্যমাণ আদালত আসে, তাহলে তো আমরাই বিপদে পড়ব। এখন এ বিষয়ে কোনো আলাদা নির্দেশনা আমাদের দেয়া হয়নি।’
এ বিষয়ে মোশাররফ আলী বলেন, ‘আমরা এমন কোনো চ্যানেল পাই না, যেখানে বিজ্ঞাপন নেই। সরকার তো বলেছে, বিজ্ঞাপন থাকলে চালানো যাবে না। কম আর বেশির কথা তো বলা হয়নি। যদি বলত সীমিত বিজ্ঞাপনের চ্যানেল চলবে, তাহলেও তো হতো। কিন্তু আমাদের কিছুই বলা হয়নি। আমাদের কাছে তো কোনো প্রপার গাইডলাইনও নেই।
‘ব্রডকাস্টার ও লোকাল ডিস্ট্রিবিউটরদের সঙ্গে কথা বলে সমন্বয় করে সরকার এটার সমাধান করুক, এটা চাচ্ছি। সরকারের এ নির্দেশনার সঙ্গে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। বরং এটা হলে তো আমাদের জন্য ভালো। দর্শকরাও বিজ্ঞাপন ছাড়া অনুষ্ঠান পাবে।’
মোশররফ বলেন, ‘সরকার নিশ্চিত করুক কাল থেকে বিজ্ঞাপন ছাড়া সব চ্যানেল পাওয়া যাচ্ছে, অথবা লোকাল ডিস্ট্রিবিউটরদের বলে দিক এত দিনের মধ্যে ক্লিন ফিড করতে হবে। কিন্তু যতদিন না বিজ্ঞাপন ছাড়া চ্যানেল পাওয়া না যায়, ততদিন চ্যানেলগুলো চলতে দেয়ার দাবি করছি আমরা। দর্শকরা যেন বঞ্চিত না হয়। এখন মাসের শুরু, আমরা টাকাও তুলতে পারছি না।’
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘চ্যানেলগুলো তো অনুমোদন ছাড়া এ দেশে চলে না। তাহলে অনুমোদনের সময় কেন বিজ্ঞাপনসহ এগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়েছিল?’
ক্লিন ফিড করবে কে?
টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচারে তিনটি পক্ষ জড়িত: ব্রডকাস্ট কোম্পানি, ডিস্ট্রিবিউটর ও স্থানীয় কেব্ল অপারেটর। সরকার এখানে থাকে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায়। তবে স্থানীয় কেব্ল অপারেটররা যেহেতু সংখ্যায় অনেক এবং তাদের গ্রাহকসংখ্যাও সীমিত, তাই তারা ক্লিন ফিড চাইলেও করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে দায় ব্রডকাস্ট কোম্পানি ও স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটরের।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যেসব চ্যানেল ক্লিন ফিড পাঠায় না, এ দেশে তাদের এজেন্ট আছে। এই দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট চ্যানেল ও এজেন্টের। এটি কেব্ল অপারেটরদের দায়িত্ব নয়। কিন্তু কোনো কোনো কেব্ল অপারেটর এজেন্টদের পাশ কাটিয়ে সরাসরি স্যাটেলাইট থেকে পাইরেসি করে ডাউনলোড করে। সেটি কিন্তু তারা করতে পারেন না। এটি আইনবহির্ভূত।’
সমাধান কোথায়
অ্যাটকো বলছে, কেব্ল অপারেটররা এ খাতের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ঘরে ঘরে চ্যানেলগুলো পৌঁছে দিচ্ছে তারাই। কিন্তু এ অবস্থায় তাদেরই বেশি ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। ক্লিন ফিড ব্যবস্থা করা ডিস্ট্রিবিউটরদের কাজ। তাই তাদের বাধ্য করতে হবে।
অ্যাটকোর সহসভাপতি মোজাম্মেল বাবু বলেন, ‘ডিস্ট্রিবিউটরদের এটা বাধ্য করতে হবে যে তারা ক্লিন ফিড ব্যবস্থা করবে। আমরা কেব্ল অপারেটরদের সঙ্গে একমত। তাদের ক্ষতি আমরাও চাই না। কেব্ল অপারেটররা যেমন বঞ্চিত হচ্ছেন, ডিস্ট্রিবিউটররাও হচ্ছে।’
কোয়াব সভাপতি আনোয়ার পারভেজও বলেন, ‘এখন অ্যানালগ সংযোগের কারণে ব্রডকাস্টার ও ডিস্ট্রিবিউটরদের আয় অনেক কম। ডিজিটাল হলেই প্রকৃত কেব্ল সংযোগসংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে। তখন চ্যানেলগুলোর আয়ও বেড়ে যাবে। তারা যখন দেখবে দেশের কোটি গ্রাহক থেকে তারা বড় অঙ্কের আয় করছে, তখন তারা বিনিয়োগ করে এ দেশে ক্লিন ফিড পাঠাতে বাধ্য হবে।’
মোশাররফ আলীও বলেন, ‘দেশে চারটি ডিস্ট্রিবিউটর প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তাদের মাধ্যমেই চ্যানেলগুলো প্রচারিত হয়। তাই তাদের বাধ্য করা গেলে সমস্যার সমাধান হবে। আমরা আন্দোলন চাই না, সমস্যার সমাধান চাই। মানুষ টাকা না দিলে আমাদের ব্যবসা টিকবে কীভাবে। অথচ আমাদের কোনো দায় নেই।’
প্রশ্ন রাজস্ব হারানোর
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিজ্ঞাপনসহ বিদেশি চ্যানেল প্রচারে সরকার কয়েক শ কোটি টাকার রাজস্ব হারায়। এই বিনিয়োগ বঞ্চিত হওয়ার কারণে মিডিয়া থেকে অনেকে ছাঁটাই হচ্ছেন। যখন এই বিনিয়োগটা দেশি মিডিয়ার হবে, তখন মিডিয়া থেকে ছাঁটাই হওয়াটা বন্ধ হয়ে যাবে বা সেই অজুহাতে ছাঁটাই করা যাবে না। এভাবে পুরো দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।’
অ্যাটকো বলছে, বিজ্ঞাপন পাচার বা অ্যাড ওভারফ্লোর মাধ্যমে দেশের টেলিভিশন শিল্প ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা হারাচ্ছে। এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। সরকারও অন্তত ৩০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এটা কিছুতেই যেন ব্ল্যাক আউটের পর্যায়ে না যায়। গ্লোবাল ভিলেজে কোনো চ্যানেলের ওপর বাধা থাকুক সেটা অ্যাটকো চায় না। অ্যাটকো সরকারের এ অবস্থানকে সমর্থন করছে। এর সমাধানও চায়।
আরও পড়ুন:সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।
এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।
এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’
সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, ইসরাইলের নৃশংসতার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ওই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।
বাংলাদেশে সফররত ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. মাহমুদ সিদকি আল-হাব্বাশের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকাল মঙ্গলবার এক বৈঠকে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। আজ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানা অনুযায়ী দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি সমর্থন জানান।
ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. আল-হাব্বাশ বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের স্থায়ী সমর্থনের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্য আরও সুদৃঢ় করার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।
ফিলিস্তিনিদের নিরন্তর সমর্থনের জন্য দেশটির প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি এ বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বৃহত্তর ঐক্যের ওপরও জোর দেন।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির আমন্ত্রণে ড. আল-হাব্বাশ তিন দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।
মন্তব্য