রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে করা মামলার রায় দেয়া হবে ১২ অক্টোবর।
রোববার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এই দিন ঠিক করে। পাঁচ আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনাল জানায় রোববার এই মামলায় আদেশ দেয়া হবে।
সেই দিন ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ ৫ আসামির যুক্তিতর্কের তারিখ পিছিয়ে দেয়া হয়।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহার অসুস্থ থাকায় রোববারের নির্ধারিত যুক্তিতর্ক হয়নি। এদিন যুক্তিতর্কের তারিখ পরিবর্তন করে ৩ অক্টোবর ঠিক করা হয়।
২০১৭ সালের ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ৬ মে বনানী থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলাটি করা হয়।
পুলিশ প্রতিবেদনে আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচ এম হালিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়। অপর আসামি সাদমান সাকিফ, রহমত আলী ও বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে ওই আইনের ৩০ ধারায় সহযোগিতার অভিযোগ করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৭ জুন অভিযোগপত্র জমা দেন।
আদালত সে বছর ১৩ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। এরপর গত ২২ আগস্ট মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। অভিযোগপত্রে ৪৭ সাক্ষীর মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত।
গত ২৯ আগস্ট আত্মপক্ষ শুনানিতে সাফাতসহ ৫ আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন। আসামিরা সকলেই জামিনে রয়েছেন।
আরও পড়ুন:স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, গত বছরের চেয়ে এবার পূজা শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, পূজা উপলক্ষে হামলার কোনো হুমকি নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আজ বুধবার রমনা কালী মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। এ সময় রমনা কালী মন্দির কমিটির সভাপতি অপর্ণা রায়সহ কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাহাঙ্গীর বলেন, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠানের জন্য ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং করা হবে। সে কারণে একটি নতুন অ্যাপ খোলা হয়েছে। কোথাও কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি পূজা উদযাপন কমিটিকে নজরদারি করার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সে কারণে ধর্মীয় নিয়ম মেনে সবাই এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বিগত সরকারের সময় ২ কোটি টাকা পূজা উপলক্ষে বরাদ্দ দেওয়া হতো। বর্তমান সরকার তা থেকে বাড়িয়ে গত বছর এ লক্ষ্যে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল; এবার সেটি থেকে বাড়িয়ে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। পূজা মণ্ডপের সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরো সহায়তা করা হবে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোঃ মাহফুজ আলম বলেছেন, যেসব শিশু জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ হয়েছে, তাদের লেখা ও স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে 'নবারুণ' পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করতে হবে। এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করতে উপদেষ্টা চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। বুধবার (১৭ই সেপ্টেম্বর) ঢাকার তথ্য ভবনে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর প্রকাশিত কিশোর মাসিক পত্রিক 'নবারুণ'-এর লেখকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
'নবারুণ' পত্রিকা নিয়ে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এই পত্রিকায় শিশু-কিশোরদের আঁকা ছবি ও লেখা গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করতে হবে। 'নবারুণ' পত্রিকায় শিশু-কিশোরদের লেখা ও ছবি বেশি পরিমাণে প্রকাশিত হলে তারা অনুপ্রাণিত হবে। এতে তাদের সৃজনশীলতা বিকশিত হবে।
মাহফুজ আলম বলেন, "যে সরকারই দায়িত্বে আসুক না কেন, শিশু-কিশোরদের ব্যাপারে নিরপেক্ষ থাকা উচিত।" তিনি ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান-সহ আর্থসামাজিক বিভিন্ন বিষয়ের ওপর লেখালিখি করার জন্য লেখকদের প্রতি অনুরোধ জানান।
'নবারুণ' পত্রিকা ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, প্রকাশনার শুরু থেকে (১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দ) এ পর্যন্ত 'নবারুণ' পত্রিকার সকল সংখ্যা ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে হবে এবং তা জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। এতে পাঠক অনলাইনে পুরাতন সংখ্যা পড়ে সমৃদ্ধ হতে পারবেন।
'নবারুণ' পত্রিকার কলেবর বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, 'নবারুণ' পত্রিকায় নতুন লেখকদের জন্য আলাদা বিভাগ চালু করা উচিত। পত্রিকার প্রতি সংখ্যায় কমপক্ষে পাঁচ জন নতুন লেখকের লেখা প্রকাশের জন্য তিনি কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেন। তিনি শিশু-সাহিত্যিকদের নিয়ে দিনব্যাপী একটি কর্মশালা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, যেসব লেখক ৪০-৫০ বছর ধরে লিখছেন, তাঁদের লেখা 'নবারুণ' পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতে হবে। এতে পত্রিকা আরও সমৃদ্ধ হবে। তিনি 'নবারুণ' পত্রিকার লেখক-সম্মানি বাড়াতে কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দেন।
সভায় 'নবারুণ' পত্রিকার লেখকরা তাঁদের মতামত তুলে ধরেন। তাঁরা 'নবারুণ'-কে একটি অসাধারণ ও সাহসী পত্রিকা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তাঁরা পত্রিকাটির মানোন্নয়নে বেশ কিছু প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদা বেগম। সভার শুরুতে 'নবারুণ' পত্রিকা বিষয়ে তথ্যচিত্র উপস্থাপনা করেন পত্রিকার সম্পাদক ইসরাত জাহান। মতবিনিময় সভাটি সঞ্চালন করেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের সিনিয়র সম্পাদক শাহিদা সুলতানা।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ঘাটিয়ারপাড়া গ্রামে গত ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে নিজ বাড়ির সামনে কোদালের আঘাতে নৃশংসভাবে খুন হন স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহ আলম। ঘটনার ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও মূল আসামি লাবলু এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আধুনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন এনসিপি লোহাগাড়া শাখার প্রধান সমন্বয়ক মো. জহির উদ্দিন। আরো উপস্থিত ছিলেন, আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু মুছা মুহাম্মদ খালিদ জামিল, বড়হাতিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এমডি জোনাঈদ চৌধুরী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন লোহাগাড়া শাখার সিনিয়র সহসভাপতি মো. রফিক দিদার, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন লোহাগাড়া সভাপতি অধ্যাপক হামিদুর রহমান, সহসভাপতি মুহাম্মদ নুরুচ্ছফা, আধুনগর সমাজ উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি সর্দার মাওলানা নুরুল আলম এবং শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আধুনগর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামসহ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, দিনের আলোয় প্রকাশ্যে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড সমাজকে আতঙ্কিত করেছে। দ্রুত ঘাতক লাবলুকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা। তারা আরও উল্লেখ করেন, শাহ আলম ছিলেন পরিশ্রমী ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। তার হত্যার বিচার বিলম্বিত হলে জনগণের ক্ষোভ ও অসন্তোষ আরও বাড়বে। সমাবেশ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘাতক লাবলুকে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। বক্তারা সতর্ক করে বলেন, দাবি আদায় না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি ও কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউপি সদস্য ফরিদুল আলম, শাহাজাহান চৌধুরী পারভেজ, সাবেক সদস্য ডা. হায়াত মাহমুদ, যুবদল নেতা রেজাউল করিম, এনসিপি লোহাগাড়া যুগ্ম-সমন্বয়কারী রিদওয়ান আর রায়হান, ছাত্র প্রতিনিধি মির্জা তামিম এবং ছাত্রদল নেতা ইমতিয়াজ আহমদ।
কিশোরদের মোবাইল আসক্তি কমিয়ে খেলার মাঠে ফিরিয়ে আনতে নীলফামারীর সৈয়দপুরে বুধবার দুপুরে খেলা সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এসব সামগ্রীর মধ্যে ছিলো মিনি ফুটবল বার, ফুটবল ও ফুটবল বার নেট। উপজেলার ১৫টি মাঠের কর্মকর্তাদের হাতে এসব সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। খেলা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী এম.এম আলী রেজা রাজু, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষন রায়, আইসিটি কর্মকর্তা আজিফার রহমান, উপ-সহকারি প্রকৌশলী শওকত কবির প্রমুখ। ভোরের শিশির স্পোর্টিং ক্লাবের পরিচালক মুসা ও সৈয়দপুর কিশোর ফুটবল একাডেমির খেলোয়ার সিজান বলেন, উপজেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ খেলা সামগ্রী সরবরাহ করায় আমরা ফের খেলার মাঠে ফিরতে পারছি। এতে করে কিশোর ও তরুণদের কমবে মোবাইল প্রেম। বর্তমান যুগের উঠতি তরুণরা মোবাইল পেয়ে লেখাপড়া বিমুখ হয়ে পড়েছে। খেলার মাধ্যমে অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আসবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উপজেলা প্রকৌশলী এমএম আলী রেজা রাজু বলেন, কিশোর ও যুবকদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে খেলার বিকল্প নেই। তবে মোবাইলের খেলা বাদে মাঠের খেলায় তাদের ফিরতে হবে। এজন্য সরকারি অর্থে এই কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তুলনামূলক শ্রম ও ব্যয় কম হওয়ায় জমিতে মাচা পদ্ধতিতে উন্নত জাতের লাউ চাষে বেশি ফলন ও দাম ভাল পাওয়ায় খুশি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের কৃষক শাহজাহান আলী।
লাউয়ের বাম্পার ফলন হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে লাউ যাচ্ছে ঢাকাসহ সারাদেশে। খাদ্যশষ্য উৎপাদনে মাটি ও পরিবেশ রক্ষার্থে জৈব সার ব্যবহার করে ব্যাপক সাফল্যের সাথে সাড়া ফেলেছেন এলাকায় তিনি।
উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের কৃষক শাহজাহান আলী। তিনি এক একর জমিতে মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ শুরু করেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে নবাব জাতের লাউ বীজ রোপন করেন। উন্নত জাতের লাউ চাষ করে ভালো ফলন হওয়ায় প্রতিমাসে প্রায় ৮০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করছেন তিনি। কীট নাশকের পরিবর্ততে খেতে জৈব নাশক ব্যবহার করায় বাজারে তার লাউয়ের চাহিদাও ব্যাপক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তার প্রতিটি মাচায় পর্যাপ্ত পরিমান লাউ ধরেছে। লাউয়ের ভারে মাচা হেলে পড়েছে। জুলাই মাস থেকে পরিপক্ষ লাউ বাজারে বিক্রী শুরু করেছেন তিনি।
চারা লাগানোর মাত্র সঠিক পরিচর্যা আর ক্ষেতে ফেরোমন ফাঁদ ও জৈব বালাই নাশক ব্যবহার করায় ৫০-৫৫ দিনের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে। প্রতিটি লাউয়ের ওজন ২ থেকে ৩ কেজি হয়। তিনি প্রতিমাসে লাউ বিক্রি করেন ৮০ হাজার টাকা।
লাউ চাষি শাহজাহান আলী জানান, এক একর জমিতে লাউ চাষ করতে সার, বীজ, মাচা তৈরি ও অন্যান্য খরচ বাবদ ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। জুলাই মাসেই প্রায় ৮০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। সেপ্টেম্বর মাসে এর চেয়ে বেশি বিক্রি করেছি। প্রতি দিন গড়ে ২ থেকে ৩ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করি। চলতি মাস পর্যন্ত আমি লাউ বিক্রি করতে পারব।
আমাকে বাজারে যেতে হয় না। আশপাশের বাজারগুলো থেকে পাইকাররা এসে খেত থেকে কিনে নিয়ে যায়। শুধু স্থানীয় বাজার না এমনকি ঢাকায়ও যাচ্ছে। লাউ বিক্রি করে খরচ বাদে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি জৈব বালাই নাশক ও ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করায় তার লাউ নিরাপদ সবজি হিসেবে ভোক্তাদের চাহিদাও ব্যাপক। অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ বাড়ছে এই উপজেলায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার লোকমান আলম বলেন, মাচা পদ্ধতিতে উন্নত জাতের লাউ চাষে বেশি ফলন ও দাম ভাল পাওয়ায় খুশি কৃষকেরা। মাচা পদ্ধতিতে উন্নত জাতের লাউ চাষ করলে আসলেই লাভবান হওয়া সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, লাউ উত্তোলনের পর একই মাচা ব্যবহার করে আরও ২টি ফসল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন এই এলাকার কৃষকরা।
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় এবার স্মরণকালের সবচেয়ে বড় শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে। ৭১টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে পূজা। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
কাপাসিয়া প্রতিটি মণ্ডপেই এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। দিন-রাত এক করে শেষ মুহূর্তের রঙের তুলির আঁচড়ে প্রাণ দিচ্ছেন দেবী দুর্গার প্রতিমায়।
গত বছরের তুলনায় এবার রেকর্ড সংখ্যক-৭১টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। যা কাপাসিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আয়োজন বলে জানিয়েছেন পূঁজা উদযাপন পরিষদের নেতারা।
কাপাসিয়া উপজেলার রাওনাইট বাজার সংলগ্ন পানবরাইদ রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নিতাই বর্ধন বলেন, রাধা গোবিন্দ মন্দিরে প্রতিমা রং করা হচ্ছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর আমাদের পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এই দুর্গাপূজায় আমাদের পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে, তারা প্রতিনিয়ত আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন, এমনিতেও আমাদের গ্রামের পরিবেশ ভালো। এবার কাপাসিয়ায় ৭১টি পূজা মণ্ডপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত বছর ৫ আগস্ট এর পর মানুষের মনের ভেতর যে একটা ভীতি কাজ করেছে, এই বছর সেই ভীতি নেই। আমাদের কাপাসিয়ার জনমানুষের নেতা রিয়াজুল হান্নান হিন্দু সম্প্রদায়কে নিয়ে প্রতি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক করছেন। হিন্দুদের যাতে মনোবল ভালো থাকে তিনি সাহস দিচ্ছে, পূজায় কোনো সমস্যা যাতে না হয় এবং সাম্প্রদায়িকতা বলতে কাপাসিয়া কোনো জিনিস থাকব না। সাম্প্রদায়িকতা তিনি পছন্দ করেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ভালো।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট কাপাসিয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ চন্দ্র পাল জানান, এ বছর কাপাসিয়া উপজেলায় ৭১টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ এবং প্রশাসনিক দিক দিয়ে নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন, থানা থেকে পুলিশ প্রত্যেকটি মণ্ডপ পরিদর্শন করেছে। উপজেলা পূজা কমিটির নেতারা মণ্ডপগুলো পরিদর্শন করেছে। মন্দিরে কোনো যাতায়াতের অসুবিধা আছে কি না বা তাদের সার্বিক কোনো অসুবিধা আছে কি না আমরা তা নিয়মিত খোঁজ-খবর নিচ্ছি। সমস্যা থাকলে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সমাধানের ব্যবস্থা করছি।
ইতোমধ্যে মন্দিরগুলোতে সাজসজ্জার কাজ শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ যেন থাকে সে ব্যাপারে প্রশাসনের সাথেও কথা হয়েছে। পাশাপাশি গাজীপুর জেলা থেকে ডিসি স্যার এবং এসপি স্যার কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। মন্দিরগুলো যেন রাতে আমরা পাহারা দেই, প্রত্যেকটি মন্দিরে যেন সিসি ক্যামেরা লাগানো হয় এবং কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে এগুলো বিষয়ে সকল মন্দিরে সতর্ক করা হয়েছে। সার্বিকভাবে আমরা আশা করছি অতীতের যেকোনো সময় থেকে এবারের পূজা হবে উৎসবমুখর, শান্তিপূর্ণ।
এছাড়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে কাপাসিয়ার গণমানুষের নেতা শাহ রিয়াজুল হান্নান, খন্দকার আজিজুর রহমান পেরাসহ নেতারা বিভিন্ন মণ্ডব পরিদর্শন করেছেন, পাশাপাশি অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা মন্দির পরিদর্শন করেছেন, খোঁজ-খবর নিচ্ছেন কোনো অসুবিধা আছে কি না। আশা করছি যেকোনো সময় থেকে এবার আমরা ভালো পূজা উদযাপন করব।
কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা বলেন, আপনারা জানেন হিন্দু সম্প্রদায় এবং মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে যে একটা ব্যবধান সৃষ্টি হয়েছিল, তা তৎকালীন সরকার হিন্দুদের একটা স্লোগানের মাধ্যমে তাদের কনভার্ট করার জন্য, তাদের ভোটব্যাংক বাড়ানোর জন্য, সমর্থন বাড়ানোর জন্য, এই ধরনের একটি উক্তি করা হয়েছিল। তারা বলেছিল বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তাদের পূজা করতে দেওয়া হয় না, শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকে না।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় গাজীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহ রিয়াজুল হান্নানের নেতৃত্বে কাপাসিয়া উপজেলা হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে উঠান বৈঠক করেছি, তাদের অভাব- অভিযোগ কী সম্পূর্ণ কিছু শুনে নেতা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, কোনোক্রমেই সনাতন ধর্মালম্বীদের বাক স্বাধীনতা হরণ করা হবে না।
কাপাসিয়া থানার তদন্ত ওসি রবিউল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে প্রত্যেকটি পূজা মণ্ডপ ভিজিট করেছি। পূঁজা মণ্ডপগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের তাগাদা দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ পূজা মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে পূজা উপলক্ষে স্থানীয় বাজারে বেড়েছে কেনাকাটার চাপ। সাধারণ মানুষও ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে।
শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনের প্রস্তুতিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. তামান্না তাসনীম বলেন, এটা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ একটি উপজেলা। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাধ্যমে সবাই একত্রে বসবাস করছেন।
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ‘ইসরাইলি গণহত্যা’ বন্ধে জরুরি ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বুধবার ভোরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি গাজায় চলমান সহিংসতার নিন্দা জানান। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতির ভিত্তিতে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপের দাবিও জানান।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বকে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতিতে সুরক্ষিত পথেই ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তারেক রহমান জানান, বিশ্ব শক্তিগুলোকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে অবিলম্বে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি তিনি অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করার আহ্বানও জানান।
তিনি দাবি করেন, গাজায় ইসরাইলের কর্মকাণ্ড ‘জাতিসংঘের গণহত্যা প্রতিরোধ ও শাস্তি বিষয়ক কনভেনশন (১৯৪৮)’-এর আইনি সংজ্ঞার সঙ্গে মিলে যায়। ওই আইনে আছে, একটি জাতি, নৃতাত্ত্বিক, বর্ণ বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস করার অভিপ্রায়কে গণহত্যা বলে।
তিনি জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক কমিশন রিপোর্টের কথা উল্লেখ করেন। সেখানে বলা হয়েছে, গাজার মানবিক সংকট ও ব্যাপক প্রাণহানির সরাসরি দায় ইসরাইলি সরকারের ওপর বর্তায়।
তারেক রহমান বলেন, ‘প্রচারণার আড়ালে লুকানোর দিন শেষ। কোনো অজুহাত আর চলবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে, নৈতিকতা ও সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করতে হয়। পথ কঠিন হলেও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যখন ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্বই হুমকির মুখে, তখন আমরা চুপ থাকতে পারি না।’
তারেক রহমান বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাংলাদেশিদেরও ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে এবং নিজেদের জাতীয় নেতাদের ইসরাইলের এই ‘নৃশংস ধ্বংসযজ্ঞ’-এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রগুলোর হাতে পরিবর্তন আনার ক্ষমতা আছে। সবসময়ই থাকে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখনই বিশ্বনেতৃত্বের দায়িত্ব আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন।’
মন্তব্য