‘খবরের সব দিক, সব দিকের খবর’ স্লোগান ধারণ করে অগ্রযাত্রার এক বছর পূর্ণ করল নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম। বিগত বছরের মতো আগামীতেও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি অগণিত পাঠকমন জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে হাঁটতে চায় বর্ষপূর্তিতে নতুন প্রেরণায় উদ্দীপ্ত সংবাদমাধ্যমটি।
রাজধানীর বীর উত্তম রফিকুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ের নিজস্ব কার্যালয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমটির প্রথম বর্ষপূর্তির কেক কাটেন সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
এ সময় তিনি বলেন, ‘দেখতে দেখতে এক বছর হয়ে গেল। আমরা আজ অনেক বড় পরিবার। আমি প্রাউড ফিল করছি, এত বড় একটি প্রফেশনাল টিম গড়ে উঠেছে। বিউটিফুল একটি টিম।
‘সবাই যখন বলেন, এই পরিবার খুব ভালো করছে, নিউজবাংলা ডুয়িং ভেরি ওয়েল, তখন প্রাউড ফিল করি। আমরা যখন কিছু করি, তখন আমরা চেষ্টা করি সেটাকে নেক্সট লেভেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ইনশাল্লাহ নিউজবাংলাও একসময় এক নম্বর হবে, এটা আমাদের গোল।’
নিউজবাংলা কখনও অপেশাদার কিছুর মধ্যে যাবে না, পক্ষপাতিত্ব করবে না বলেও জানান নাফিজ সরাফাত।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের শুভেচ্ছা জানান নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর সম্পাদক স্বদেশ রায়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিউজবাংলার নির্বাহী সম্পাদক হাসান ইমাম রুবেল, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শেখ জাহিদুর রহমান, বার্তাপ্রধান সঞ্জয় দে, কনসালট্যান্ট নিউজ শিবব্রত বর্মন, প্রধান বার্তা সম্পাদক ওয়াসেক বিল্লাহ সৌধসহ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা।
শুভেচ্ছা জানাতে অনুষ্ঠানে যোগ দেন আমাদের নতুন সময় ও আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, প্রতিদিনের সংবাদের সম্পাদক শেখ নজরুল ইসলাম, ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার, জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কে এম জিয়াউল হক, রাইজিং বিডির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এম এম কায়সার, এনটিভি অনলাইনের বার্তাপ্রধান খন্দকার ফখরুদ্দীন আহমেদ জুয়েলসহ গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা।
প্রতিষ্ঠার এক বছরেই নিউজবাংলা যে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে, তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন অতিথিরা। এই প্রশংসা যেন প্রতিষ্ঠানটি ধরে রাখতে পারে সেই প্রত্যাশাও রাখেন তারা।
গণমাধ্যমের খুব খারাপ সময়েও নিউজবাংলার শুরুটা চমৎকার হয়েছে বলে উল্লেখ করেন দেশের সাংবাদিকতায় পরিচিত মুখ নাঈমুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ‘চমৎকার একটা শুরু হয়েছে। শুরুটা শুধু চমৎকারই ছিল না, এটা সৃজনশীল ছিল, সাহসী ছিল। আমি বলব যে, এর মধ্যে অনেক সাংবাদিকতার গুণগত মান ও পেশার প্রতি অবিচল আস্থাটাও ছিল। একটা ফাউন্ডেশন তৈরি করার জন্য আমি বলি চমৎকার এক বছর। আগামী বছরগুলোতে নিউজবাংলা এই ফাউন্ডেশনের ওপর উঁচু ইমারত তৈরি করতে পারবে বলে বিশ্বাস করি।
‘বাংলাদেশের অনেক সফল গণমাধ্যম সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না বলে তারা কিন্তু ক্ষয়ে যাচ্ছে। সেই জায়গায় আমাদের জন্য একটা সম্ভাবনা, আমি বলব যে গত এক বছরে সফল সম্ভাবনার উদ্বোধন হয়েছে নিউজবাংলার।’
নিউজবাংলাকে ভিন্নধর্মী ‘নিও মিডিয়া’ হিসেবে উল্লেখ করে ঢাকা পোস্ট সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার বলেন, ‘এই সময়ের একটু ভিন্নধর্মী যেসব নিও মিডিয়া আছে তার মধ্যে অনেক এগিয়ে আছে নিউজবাংলা। নিউজবাংলাসহ অন্যান্য যেসব নিও মিডিয়া আছে তারা এখন অন্যদের ডমিনেট করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিউজবাংলা এক বছর পার করল। এটা ঐতিহ্যের এক বছর, আমি বলব সাফল্যেরও এক বছর। গত এক বছর ধরে পাঠকদের মাঝে অনলাইনে অনেক নতুন নতুন ধারণা, কনটেন্ট, আইডিয়া যোগ করেছে নিউজবাংলা, যেটা পাঠক মহলে সমাদৃত হয়েছে।
‘আমি আশা করব, আগামীর পথচলায় তারা আরও ভালো ভালো কনটেন্ট দেবে। এখন অনলাইনের যুগ। নিউজবাংলা গত এক বছরে অনেক ভালো করেছে। নিউজবাংলা প্রথম সারির গণমাধ্যম হিসেবে এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে এবং আশা করি তারা ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে।’
জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কে এম জিয়াউল হক বলেন, ‘এক বছরে নিউজবাংলা অনেক ভালো নিউজ করেছে। আমার মনে হয় অনলাইন পাঠকদের যে চাহিদা তার অনেকটাই তারা পূরণ করতে পেরেছে।’
রাইজিং বিডির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এম এম কায়সার বলেন, ‘নিউজবাংলার কালার আর ট্যাগ লাইন আমার খুব পছন্দ। গত এক বছরে তারা যেভাবে পারফর্ম করেছে, এটা যদি ধরে রাখতে পারে তাহলে যে লক্ষ্য নিয়ে নিউজবাংলা এসেছে তার কাছাকাছি তারা যেতে পারবে।’
এনটিভি অনলাইন সংস্করণের প্রধান ফখরুদ্দিন আহমেদ জুয়েল বলেন, ‘একটা কথা আমরা সব সময়ই বলে থাকি, ডিজিটাল উইল রুল। এই যে ডিজিটাল মাধ্যমে মানুষ বিভিন্ন সংবাদ পড়ছে, তাতে নিউজবাংলা একটি চমৎকার ভূমিকা পালন করছে। আমি আশা করব, এ ধারা অব্যাহত থাকবে।’
দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক শেখ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অনলাইনের স্বর্ণযুগে মাত্র এক বছরে নিউজবাংলা যে জায়গায় এসেছে এটি তাদের প্রচেষ্টারই ফসল। আমি মনে করি, এটি যদি ধরে রাখা যায় তাহলে একটি গুড টিম হতে আর কোনো সময় লাগবে না। এক বছর খুবই কম সময়, কিন্তু আমি চাইব আরও ১০০ বছর যখন হয়তো আমরা থাকব না, তখনও নিউজবাংলা থাকবে।’
নিউজবাংলার পথচলায় শুভেচ্ছা জানান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ অনেকে।
অ্যাটর্নি জেনারেলের পক্ষে শুভেচ্ছা জানাতে এসে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন (মানিক) বলেন, ‘আমরা প্রতিদিনই মোটামুটি এটা দেখি। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করছে নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম। আশা করি, ভবিষ্যতেও এটি বজায় থাকবে এবং সঠিক সংবাদটাই প্রচার করবে।’
সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকের প্রতিনিধি আসাদুল্লাহ গালিব বলেন, ‘একটা সংবাদ নতুন আঙ্গিকে অনেক দিক বিশ্লেষণ করে নিউজবাংলা যেভাবে আমাদের সামনে তুলে ধরছে, যদিও এক বছরে মূল্যায়ন করাটা কঠিন কিন্তু তাদের সংবাদে পাঠকদের যে আশা দেয়া হয়েছিল, তার বেশির ভাগই নিউজবাংলা পূরণ করতে পেরেছে।’
স্ট্র্যাটেজিক ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের স্বতন্ত্র পরিচালক আরিফ খান বলেন, ‘এখনকার প্রজন্ম কিন্তু প্রিন্টের চেয়ে অনলাইনেই সংবাদ পড়তে বেশি পছন্দ করে। আমরাও কিন্তু সময়ের অপ্রতুলতার কারণে এগুলো দেখি। এই পত্রিকাটি আসলেই একটি নতুনত্ব নিয়ে এসেছে। বিশেষ করে অর্থনীতি এবং পুঁজিবাজার নিয়ে যে প্রতিবেদনগুলো হয়, সেগুলো অনেক বিশ্লেষণমূলক ও তথ্যবহুল। এগুলোতে অনেক তথ্য পাওয়া যায়, যেগুলো পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করে।’
পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এহসান খশরু বলেন, ‘নিউজবাংলা নতুন হলেও এর পাঠক অনেক বেশি। এটি ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এর শুরুতেই যে সারসংক্ষেপ থাকে, সেটি পুরো রিপোর্টটি সম্বন্ধে পাঠকদের একটি ধারণা দেয়, এটা একটা নতুনত্ব।’
সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মনিরুজ্জামান টিপু বলেন, ‘পাঠক হিসেবে আশা করব, যেভাবে নিউজবাংলা এগিয়ে যাচ্ছে, সেভাবেই এগিয়ে যাবে এবং সত্যকে সত্য ও মিথ্যাকে মিথ্যা বলবে এবং এভাবেই পাঠকের আস্থা অর্জন করবে।’
বর্ষপূর্তি উপলক্ষে নিউজবাংলা কার্যালয়ে শুক্রবার সকাল থেকেই ছিল উৎসবের আমেজ। দিনভর অতিথিরা আসেন, নিউজবাংলার শুভকামনায় বক্তব্য রাখেন। তাদের মধ্যে ছিলেন কিংবদন্তি ফুটবলার কায়সার হামিদ, তারকা ফুটবলার জাহিদ হাসান এমিলি ও জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন এনায়েত উল্লাহসহ আরও অনেকে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা এমন একটি সময় অতিক্রান্ত করছি, যেখানে স্বাধীন সংবাদমাধ্যম হুমকির মুখে। এর মধ্যেও যে এক বছর আপনারা পার করেছেন, সেটি একটি বড় কাজ বলে আমি মনে করি। যেকোনো কাজের মধ্যেই যদি সততা, নিষ্ঠা এবং অবজেক্টিভটা যদি খুব পরিষ্কার থাকে, তাহলে তার ওপর যতই অত্যাচার করুক না কেন, সেটাকে কখনোই ধ্বংস করা যায় না। আমি বিশ্বাস করি, নিউজবাংলা সেই প্রত্যয় নিয়ে, সেই আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যাবে।’
চলচ্চিত্র নির্মাতা রাশিদ পলাশ বলেন, ‘গত এক বছরে আমরা নিউজবাংলার যে কার্যক্রম দেখেছি, তা আমাদের খুব মুগ্ধ করেছে। প্রথম বছরে যেহেতু তারা ভালো করেছে, তাই তাদের কাছে প্রত্যাশাও বেশি। আশা করি, আগামী বছর তারা আরও ভালো করবে। একটা জিনিস যখন প্রথমেই ভালো হয়ে যায়, তখন তার চ্যালেঞ্জও কিন্তু বেড়ে যায়। সেই জায়গা থেকে নিউজবাংলা এ চ্যালেঞ্জ নিতে পারবে বলেই আমি আশা করি।’
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, ‘যখন গুজব মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, তখন গণতান্ত্রিক ও আধুনিক গণমাধ্যম দরকার হয়। নিউজবাংলা এ বিষয়ে সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে, সতর্ক রয়েছে। আশা করি, তারা এ ধারা অব্যাহত রাখবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে নিউজবাংলা আগামীতে পথ চলুক।’
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক মহাসচিব ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘পেশাদারত্বের জন্য আমরা নিউজবাংলার জন্য গর্বিত। তারা এভাবেই এগিয়ে যাক, এটাই আমরা চাই। আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশে এ ধরনের সংবাদমাধ্যম অত্যন্ত প্রয়োজন।’
নিউজবাংলার বর্ষপূর্তি উদযাপনে একই আয়োজন ছিল দেশের সব জেলা ও বিভাগীয় শহরেও। আয়োজন করা শোভাযাত্রা, সভা, সেমিনার। এসব অনুষ্ঠানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
সারা দেশে ৬৪টি জেলায় প্রতিনিধি ও ঢাকায় প্রায় ৮০ জন কর্মী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল নিউজবাংলা। এই এক বছরে উল্লেখযোগ্য বেশ কিছু অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করে পাঠকের আস্থা অর্জন করে নিয়েছে এই নিউজপোর্টাল।
সেই সঙ্গে সংবাদের বিশ্লেষণ, সংবাদভাষ্য দেয়ার মাধ্যমে এটি পাঠকের কৌতূহল পূরণ করে চলছে। খবরের পাশাপাশি ছবি, ভিডিও, লাইভ করে পাঠকের কাছাকাছি চলে এসেছে নিউজবাংলা।
আরও পড়ুন:৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:চলতি বছর ব্যতিক্রমী কিছু মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এ বছর কারা ও কতজন এ পুরস্কার পাচ্ছেন, তা জানাননি উপদেষ্টা।
সচিবালয়ে রবিবার স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি উল্লিখিত বক্তব্য দেন।
উপদেষ্টা বলেন, কমিটি কিছু নাম সুপারিশ করেছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নামের তালিকা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো হবে।
দেশের জন্য অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ব্যতিক্রমী কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ওই সময়ে উপস্থিত আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, এর আগে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে দলগত ও গোষ্ঠীগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। র্যাবের মতো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকেও দেশের সর্বোচ্চ এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
এ বছর ১০ জনের কম ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য