উদ্যোক্তা পরিচালকের শেয়ার ৬০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে, ১১ বছর আগে করা এমন একটি বিধান বারবার প্রচারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বছরের জুলাই থেকে বিমা খাতের শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে বাড়লেও ঘটছে উল্টো ঘটনা।
বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ একাধিকবার সেই বিধানের বিষয়টি উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। জানানো হয়েছে, বাজার থেকে শেয়ার কিনতে কোম্পানিকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এমনও বলা হয়েছে, একাধিক উদ্যোক্তা-পরিচালককে শেয়ার বিক্রি করতে দেয়া হয়নি।
কিন্তু গত এক মাসে বিপুল পরিমাণ শেয়ার বিক্রির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে ঢাকা ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে।
এমন উদ্যোক্তা পরিচালকও আছেন, যিনি তার হাতে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। এমনও আছেন, যিনি হাতে থাকা বেশির ভাগ শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।
সব মিলিয়ে চলতি বছর বিমা খাতের উদ্যোক্তা পরিচালকরা মোট ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫০টি শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন। এর মধ্যে সিংহভাগ এরই মধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। আর বাকিগুলো বিক্রি করার ঘোষণা এখনও বলবৎ আছে।
উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি করতে হলে আগাম ঘোষণা দিতে হয়।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা কোম্পানির সংখ্যা ৫১টি। এর মধ্যে পাঁচটির মোট শেয়ারের ৬০ শতাংশের বেশি ধারণ করে আছেন উদ্যোক্তা পরিচালকরা।
এর মধ্যে সম্প্রতি একটি কোম্পানির ৬০ লাখের বেশি শেয়ার কিনে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হিস্যা ৬০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। এটি হলো স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স। গত জুন থেকে এই খাতে যে দর সংশোধন শুরু হয়েছে, সেখানে দেখা গেছে, এই কোম্পানির শেয়ার দরে পতন হয়নি, উল্টো বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
আইডিআরএর সেই চিঠি
চলতি বছরের শুরুতে বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ পক্ষ থেকে ২০১০ সালের একটি চিঠি নতুন করে সব কোম্পানির কাছে পাঠানো হয়। তখনই শুরু হয় হইচই। বিমা কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের আইন বাস্তবায়নে শেয়ার কিনতে হবে, এমন খবরে হুহু করে বাড়তে থাকে শেয়ারের দর।
সেই বিজ্ঞপ্তিতে বিমা আইন ২০১০-এর ২১(৩) ধারার তফসিল-১-এর কথা উল্লেখ করে বলা হয়, দেশে নিবন্ধিত জীবন বিমা কোম্পানির ক্ষেত্রে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন হবে ৩০ কোটি টাকা, যার ৬০ শতাংশ আসবে উদ্যোক্তাদের কাছ থাকে। বাকি ৪০ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে।
সাধারণ বিমা কোম্পানির ক্ষেত্রে পরিশোধিত মূলধন হবে ৪০ কোটি টাকা, যার ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তারা দেবেন। বাকি ৪০ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য।
বিমা কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের পরিশোধিত মূলধনের ৬০ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে, এমন সিদ্ধান্ত ২০১০ সালের। এক দশকেও সেটি প্রতিপালন করা হয়নি।
গত ২০ জুনও আইডিআরএর চেয়ারম্যান এম মোশাররফ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। সেদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে তিনি বলেন, ‘তাদের (উদ্যোক্তা-পরিচালকরা) পুঁজিবাজার থেকে শেয়ার কিনতে হবে। এ জন্য হঠাৎ করে শেয়ার কেনার ক্ষেত্রেও জটিলতা আছে। তবে যেহেতু এটি আইনগত বিষয়, তাই জটিলতা থাকলেও আইগনত বিষয়টিকেই আমরা গুরুত্ব দেব।’
কিন্তু আইডিআরএ কী উদ্যোগ নিয়েছে সেটি স্পষ্ট নয়। বরং এখন বলা হচ্ছে, করোনা মহামারিতে কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক কার্যক্রম ভালো না হওয়ায় এমন সিদ্ধান্তে কিছুটা শিথিলতা দেখানো হচ্ছে।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র এস এম শাকিল আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, `আইনের বিষয়টি সব কোম্পানিকেই জানানো আছে। তবে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড, করোনা মহামরি-পরবর্তী অবস্থায় বিষয়টি শিথিল অবস্থায় আছে। তবে আইনে যেহেতু আছে অবশ্যই তা বাস্তবায়ন করতে হবে।’
তবে করোনায় কোম্পানির ব্যবসা খারাপ হয়েছে এমন নয়। বরং চলতি বছর সিংহভাগ বিমা কোম্পানির আয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে দেখা যাচ্ছে। আর কোম্পানির ব্যবসা বাড়া বা কমার সঙ্গে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ধারণের কী সম্পর্ক, সেটি নিয়েও আছে প্রশ্ন।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আইন থাকলে তা অবশ্যই বাস্তবায়ন করা উচিত। সময় দেয়া যায়, কিন্তু সেই সময়েরও নির্দিষ্ট সময় থাকা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘আইডিআরএর সে সময় চিঠি দেয়ার পর প্রায় সব বিমা কোম্পানির শেয়ার দর ঢালাওভাবে বেড়েছে। অনেক বিমা কোম্পানির শেয়ার দর অতিমূল্যায়িত হয়েছে। মুনাফার আশায় বিনিয়োগকারীরা এই খাতে একচেটিয়ে বিনিয়োগ করেছেন। এখন মূল্য সংশোধন হচ্ছে সত্য, কিন্তু বেশি দরে যারা শেয়ার কিনেছেন তারা এখন লোকসানে। এই দায়িত্ব কে নেবে? কোম্পানিগুলোকে শেয়ার কেনার জন্য অনেক সময় দেয়া হয়েছে, এখন নতুন করে শিথিলতার বিষয়টি কতটা যৌক্তিক, সেটিও বিবেচনা করা উচিত।’
বিমা খাতে গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে ব্যাপক হারে। এমনও দেখা গেছে, মোট লেনদেনের ২৭ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে এই একটি খাতেই।
বিমা খাতে এক দিনে ৯০০ কোটি টাকারও বেশি লেনদেনের রেকর্ডও আছে চলতি সপ্তাহে। এখন কোনো কোনো দিন ২০০ কোটি টাকার নিচে, কখনও কখনও দেড় শ কোটি টাকারও নিচে হয় লেনদেন। আর এক দিন দাম বাড়লে চার দিন কমে, এভাবে ক্রমাগত কমছে শেয়ার দর।
সব শেয়ার বিক্রি করে দেবেন যারা
সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের উদ্যোক্তা পরিচালক রওশন আরা আর এই কোম্পানিতেই থাকতে চাইছেন না। তার কাছে থাকা কোম্পানির ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮১০টি শেয়ারের সবগুলোই বিক্রি করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
রোববার দেয়া এই ঘোষণায় আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে শেয়ার বিক্রি করবেন বলে জানানো হয়েছে।
কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে আছে মোট শেয়ারের ৩১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আইন অনুযায়ী কোম্পানিটির পুঁজিবাজার থেকে আরও ২৮ দশমিক ৪১ শতাংশ শেয়ার কেনা কথা।
রওশন আরা সরে দাঁড়ালে কোম্পানিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ারের হিস্যা কমে দাঁড়াবে ৩১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এ ঘোষণা আসার পর রওশন এতদিন উদ্যোক্তা পরিচালকের পদে কীভাবে ছিলেন, সেটি নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ১০ কোটি ৯৬ লাখ ৯৮ হাজার ৬৩৩টি। উদ্যোক্তা পরিচালক হতে হলে ২ শতাংশ হিসেবে কমপক্ষে ২১ লাখ ৯৩ হাজার ৯৭২টি শেয়ার থাকতে হতো তার। কিন্তু এর মাত্র ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেই তিনি এই পদে ছিলেন।
কোম্পানি সচিব মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সর্বশেষ যিনি শেয়ার বিক্রি করছেন, তার কিছু টাকার প্রয়োজন পড়েছে। তাই তিনি বিক্রি করছেন।’
আইনের বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ ও এককভাবে ২ শতাংশ শেয়ার নিশ্চিত করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। ৬০ শতাংশে উন্নীত করার বিষয়ে নির্দেশনার কোনো চিঠি আমাদের কাছে আসেনি।’
মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের তিন পরিচালক হাতের হাতে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
গত ১৯ আগস্ট পরিচালক মোহাম্মদ আলী আজগর তার কাছে থাকা কোম্পানির ২ লাখ ৮৭ হাজার ৩০২টি শেয়ারের সব বিক্রি করে দেয়ার ঘোষণা দেন।
আরেক উদ্যোক্তা সৈয়দ নূর আলম তার কাছে থাকা ১ লাখ ২৩ হাজার ২০০টি শেয়ারের সব বিক্রি করে দেয়ার ঘোষণা দেন।
আরেক পরিচালক মাহতাবুদ্দিন চৌধুরীও তার কাছে থাকা কোম্পানির ৮ লাখ ৯৮ হাজার ৫০৯টি শেয়ারের সব বিক্রি করার ঘোষণা দেন।
তিনজনের শেয়ার সংখ্যা কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। তাদের কারও হাতে ২ শতাংশ শেয়ার না থাকার পরেও তারা উদ্যোক্তা পরিচালক ছিলেন এতদিন।
এই শেয়ারগুলো বিক্রি হলে কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হিস্যা কমে যাবে ৩০ শতাংশের নিচে।
কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ আছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। সেটি কমে হবে ২৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের দুই উদ্যোক্তা এম এ মালেক তার হাতে থাকা ২১ হাজার ৫৭৫টি শেয়ারের সবগুলো আর জয়নাল আবেদন চৌধুরীর হাতে থাকা ১৩ হাজার শেয়ার বিক্রি করার ঘোষণা দিয়েছেন।
কমপক্ষে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের যে নির্দেশনা এক দশক আগে দেয়া হয়েছিল, সেই নির্দেশনা অনুযায়ী, তাদের কারও পরিচালক থাকার কথা ছিল না এই নগণ্যসংখ্যক শেয়ার নিয়ে।
কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ৫ কোটি ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৮২৩টি। কমপক্ষে ২ শতাংশ ধারণ করতে হলে একেকজনের হাতে থাকতে হতো ১০ লাখ ৬২ হাজার ৮৯৬টি শেয়ার।
ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের উদ্যোক্তা পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন তার হাতে থাকা ১৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮১১টি শেয়ারের সবগুলো বিক্রির ঘোষণা দেন গত ১০ আগস্ট। ১৯ আগস্ট জানান, তিনি সবগুলো শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন।
মোয়াজ্জেমের হাতে কোম্পানির মোট শেয়ারের ২ শতাংশ ছিল। এগুলো বিক্রি করে দেয়ায় কোম্পানিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হিস্যা ৪১ দশমিক ১৩ শতাংশ থেমে কমে হবে ৩৯ দশমিক ১৩ শতাংশ।
মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দুজন উদ্যোক্তা পরিচালক এক দিনে তাদের হাতে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
৩০ সেপ্টেম্বর দেয়া ঘোষণায় পরিচালক জামালউদ্দিন জানান, তিনি তার হাতে থাকা ৭১ হাজার ৫১২টি আর যোবায়দা ইসলাম তার হাতে থাকা ৫৯ হাজার ৮১৪টি শেয়ার বিক্রি করে দেবেন।
এই দুজনের হাতে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের শূন্য দশমিক ৩৯ শতাংশ শেয়ার ছিল। তারা বিক্রি করে দিলে কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার কমে হবে ৩০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশের মতো।
এত কমসংখ্যক শেয়ার নিয়ে দুজন কীভাবে উদ্যোক্তা পরিচালক ছিলেন, সেই প্রশ্নও আছে।
রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের করপোরেট উদ্যোক্তা মিনহার ফিশারিজ তার হাতে থাকা ২২ লাখ শেয়ারের সবগুলো ব্লক মার্কেটে বিক্রি করে দেয়ার ঘোষণা দেন গত ২৯ এপ্রিল।
সবচেয়ে বেশি বিক্রির ঘোষণা ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সে
ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের উদ্যোক্তা পরিচালক আবদুল মান্নান ও তার স্ত্রী উম্মে কুলসুম মান্নান তাদের মালিকানাধীন কোম্পানি পেনিনসুলা গার্মেন্টস, সানপ্যাক ইন্ডাস্ট্রিজ ও পাইওনিয়ার ড্রেস লিমিটেডের হাতে থাকা ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের বিপুল পরিমাণ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রথমে ঘোষণা আসে ৬ লাখ ৫৯ হাজার ১২০টি শেয়ার বিক্রির। এই শেয়ার বিক্রি শেষ না হতেই আসে এর চেয়ে চার গুণ বেশি শেয়ার বিক্রির ঘোষণার।
গত ৩১ আগস্ট ষোষণা আসে, পেনিনসুলার হাতে থাকা ৫ লাখ ২৮ হাজার ৬২২টি শেয়ারের মধ্যে ৩ লাখ ১০ হাজার ৭২২টি, সানপ্যাকের হাতে থাকা ৫ লাখ ২৮ হাজার ৬৩৩টি শেয়ারের মধ্যে ৩ লাখ ১০ হাজার ৭৩৩টি আর পাইওনিয়ার ড্রেসের হাতে থাকা ৪ লাখ ১৩ হাজার ৯৮৫টি শেয়ারের মধ্যে ৩৭ হাজার ৬৩৫টি শেয়ার বিক্রির ঘোষণা এসেছে।
এই পরিমাণ শেয়ার কোম্পানির মোট শেয়ারের ১ দশমিক ৫২ শতাংশের কিছু বেশি। আর এগুলো বিক্রি হলে কোম্পানিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ারের হিস্যা ৫৪ দশমিক ১৬ শতাংশ থেকে কমে হবে ৪৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
এই শেয়ার বিক্রি শেষ হতে না হতেই মান্নান ও তার স্ত্রী আরও বড় অঙ্কের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দেন ৩০ সেপ্টেম্বর।
এদিন মান্নান জানান, তার হাতে থাকা ২৭ লাখ ৩৯ হাজার ৫৬৭টি শেয়ারের মধ্যে তিনি বিক্রি করে দেবেন ১৮ লাখ ৭৫ হাজার শেয়ার।
তার স্ত্রী উম্মে কুলসুম মান্নান তার হাতে থাকা ১৪ লাখ ৩৭ হাজার ৯টি শেয়ারের মধ্যে বিক্রি করে দেবেন ৫ লাখ ৭০ হাজার শেয়ার।
একই দিন করপোরেট উদ্যোক্তা সানমান সোয়েটার তার হাতে থাকা ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৯৪৯টি শেয়ারের মধ্যে বিক্রি করে দেবে ৩ লাখ ৮০ হাজার শেয়ার।
অর্থাৎ এক দিনে বিক্রির ঘোষণা আসে ২৮ লাখ ২৫ হাজার শেয়ার বিক্রির। এটি কোম্পানির মোট শেয়ারের ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
অর্থাৎ ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের মোট ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে মালিকপক্ষ। এতে তাদের হিস্যা ৫৪ দশমিক ১৬ শতাংশ থেকে কমে হবে ৪৬ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।
গ্রিনডেল্টা ইন্স্যুরেন্স
কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালক মোজাম্মেল হক ও খুরশিদা চৌধুরী গত ৩ আগস্ট বিপুল পরিমাণ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন।
এর মধ্যে মোজাম্মেল বিক্রি করবেন ৬ লাখ ৯ হাজার ৮৭৮টি ও আর খুরশিদা চৌধুরী বিক্রি করবেন ৫৭ হাজার ৪৬৯টি শেয়ার।
কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩৫ দশমিক ৩২ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে।
এই শেয়ার বিক্রি হলে কোম্পানিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হিস্যা কমে যাবে শূন্য দশমিক ৬৬ শতাংশের কিছুটা বেশি।
ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স
২৮ জুলাই কোম্পানিটির উদ্যোক্তা আজিজ আল মাহমুদ তার কাছে থাকা কোম্পানির ১৮ লাখ ১৭ হাজার ১২০টি শেয়ারের মধ্যে ৮ লাখ ১০ হাজার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এই শেয়ার কোম্পানির মোট শেয়ারের ২ শতাংশের কিছুটা বেশি। বর্তমানে কোম্পানিতে উদ্যোক্তা পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে ধারণ করে আছেন ৩৪ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ শেয়ার। একজন বিক্রি করে দিলেই তা কমে হবে ৩২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স
কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩৮ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে। কোম্পানির উদ্যোক্তা মোহাম্মদ শফিক গত ২৬ সেপ্টেম্বর তার কাছে থাকা কোম্পানির ১ লাখ ৫২ হাজার ৯১৭টি শেয়ারের মধ্যে ১ লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন।
এই ঘোষণার পর শফিক কীভাবে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালক আছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ, ২ শতাংশ শেয়ার তো দূরের কথা, তিনি ১ শতাংশ শেয়ারেরই মালিক নন। মোট শেয়ারের কেবল শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশের মতো মালিকানা নিয়ে তিনি পরিচালক আছেন, যা এখন আরও কমে যাবে।
কোম্পানিটির মোট শেয়ার ৫ কোটি ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৮২৩টি। এর মধ্যে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করে উদ্যোক্তা পরিচালক হতে হলে থাকতে হবে ১০ লাখ ৬২ হাজার ৮৯৬টি।
এত কম শেয়ার হাতে থাকার পরেও তিনি কীভাবে উদ্যোক্তা পরিচালক থাকেন, তা নিয়েও আছে প্রশ্ন।
একই কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালক জয়নাল আবেদিন চৌধুরী গত ১২ সেপ্টেম্বর জানিয়েছেন, তিনি তার হাতে থাকা ১০ লাখ ৭৭ হাজার ৬৮৭টি শেয়ারের মধ্যে ১৩ হাজার শেয়ার বিক্রি করবেন।
অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স
কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান গত ৬ মে জানান, তিনি তার হাতে থাকা কোম্পানিটির ৭ লাখ ৫৬ হাজার ১০৭টি শেয়ারের মধ্যে দেড় লাখ বিক্রি করে দেবেন। পরে ৫ জুন তিনি জানান, সব শেয়ার বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।
আরেক উদ্যোক্তা পরিচালক মাহমুদুল হক একই সময়ে তার হাতে থাকা ১০ লাখ ৮০ হাজার শেয়ারের মধ্যে বিক্রি করে দিয়েছেন ৩০ হাজার শেয়ার।
বিএনআইসিএল
গত ৫ সেপ্টেম্বর কোম্পানির উদ্যোক্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া তার হাতে থাকা কোম্পানিটির ১২ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৩ লাখ ১৪ হাজার ১৭৫টি বিক্রি করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
১৯ আগস্ট আরেক উদ্যোক্তা এম এফ কামাল তার হাতে থাকা ১২ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৩ লাখ ১৪ হাজার ১৭৫টি বিক্রির ঘোষণা দেন।
এই কোম্পানির মোট শেয়ারের ৬০ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বর্তমানে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে আছে। এই দুই পরিচালক বিক্রি করবেন মোট শেয়ারের শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশের মতো। তারা শেয়ার বিক্রি করলে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হিস্যা ৬০ শতাংশের নিচে নেমে আসবে।
পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স
কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালক নাসিরুল্লাহ তার হাতে থাকা ২ লাখ ৩১ হাজার ৩৩২টি শেয়ারের মধ্যে ২০ হাজার শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন গত ১৪ সেপ্টেম্বর।
পূরবী ইন্স্যুরেন্স
কোম্পানিটির পরিচালক খালিদ হোসেন তার হাতে থাকা ১৩ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৬টি শেয়ারের মধ্যে ১ লাখ শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন গত ৭ সেপ্টেম্বর।
রূপালী ইন্স্যুরেন্স
কোম্পানির পরিচালক শাওন আহমেদ তার হাতে থাকা ৩৯ লাখ ১৫ হাজার ৮১৬টি শেয়ারের মধ্যে ৫০ হাজার শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। এ ঘোষণা গত ১৬ মে। পরে নিশ্চিত করা হয়, সেগুলো বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
মন্তব্য