চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পরীমনিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডে দেয়ার বিষয়ে বিচারিক আদালতের দুই বিচারককে গত ১৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট ব্যাখ্যাসহ ডেকে পাঠানোর পর থেকে বিচারিক হাকিমের আদালতগুলো নড়েচড়ে বসেছে। রিমান্ডের বিষয়ে উচ্চ আদালতের দেয়া নির্দেশনা অনুসরণ করছেন হাকিমরা।
আদালতের আইনজীবী ও আদালতসংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা এ কথা বলেছেন।
ঢাকার নিম্ন আদালতের আইনজীবী ও হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন ঢাকা কমিটির সভাপতি মো. পারভেজ বলেন, ‘বর্তমানে শুধু বিচারিক হাকিম আতিকুল ইসলাম ও দেবব্রত বিশ্বাস নয়, সব বিচারিক হাকিম হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে আসামিদের রিমান্ডে পাঠাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি মামলার মেরিট পরীক্ষা করা হচ্ছে।
‘হাইকোর্টে ব্যাখ্যার জন্য ডেকে পাঠানো দুজনই বিচারিক আদালতের খুব যোগ্যতাসম্পন্ন ম্যাজিস্ট্রেট বলে আমি মনে করি। তাদের একটি ভুলের কারণে হয়তো পরীমনি ইস্যুতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ড নিয়ে আইনি ব্যত্যয় ঘটেছে। তবে এসবের জন্য দুই ম্যাজিস্ট্রেট শুধু দায়ী নন। আরও ওপর থেকে বিষয়টি মনিটর করা হলে এ ধরনের ব্যত্যয় হয়তো আর ঘটবে না।’
সন্ত্রাস দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম ছারোয়ার খান জাকির বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয় এবং সুপ্রিম কোর্টের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিএ) কমিটি যদি তাদের তদারকি সঠিকভাবে পালন করে, তাহলে বিচারিক আদালতগুলোর এ ধরনের ব্যত্যয় ঘটবে না।’
এ সময়ে কতগুলো রিমান্ড দেয়া হয়েছে জানতে চাওয়া হলে আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরীমনির ঘটনার পর রিমান্ডের পরিসংখ্যান দেয়া সম্ভব নয়। তবে প্রতি সপ্তাহে আনুমানিক অর্ধশতাধিক আসামির রিমান্ড দিয়ে থাকেন একজন বিচারক। এটা স্রেফ অনুমাননির্ভর।
‘কারণ প্রতিদিন থানার জিআর মামলাগুলোর শুনানির জন্য পৃথক আদালত ঠিক করা হয়ে থাকে। আজ যে আদালত পড়ে, কাল ওই থানার মামলার আসামিদের জমা বা রিমান্ড শুনানি ওই আদালতে হয় না। তাই এটার সংখ্যা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।’
বিষয়টি নিয়ে মুখ্য মহানগর হাকিম রেজাউল করিম চৌধুরীর প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম নিউজবাংলাকে জানান, এ বিষয়ে কোনো তালিকা তাদের কাছে আসে না, তাই তাদের পক্ষে রিমান্ডের পরিসংখ্যান বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়া সম্ভব নয়।
জুডিশিয়াল পেশকার ওমর ফারুক জানান, তাদের দায়িত্ব শুধু হাইকোর্টের জামিন সংক্রান্ত বিষয়ে যাচাই করা, রিমান্ডের বিষয়ে কোনো পরিসংখ্যান তাদের জানা নাই।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার পুলিশের উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আজ আমাদের যে আদালত পড়েছে, শুধু সেই আদালতের কতজন আসামিকে আদালতে জমা দেয়া হয়েছে এবং কতজনকে রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে শুধু তা-ই বলতে পারব। ওই আদালতে তো অন্য থানার মামলাও আছে, বিষয়টি খোদ সিএমএম স্যারই বলতে পারবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দুই বিচারক সাধারণত শুক্র ও শনিবারের বিশেষ আদালতের দায়িত্বে থাকেন। তাই সব মিলিয়ে দুজনের আদালত গত ১৫ সেপ্টেম্বরের পর শতাধিক আসামির রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন। এর মধ্যে তৃতীয় দফার কোনো রিমান্ড নাই। দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে দেয়ার এক-আধটা ঘটনা থাকতে পারে।’
রিমান্ডে পাঠানো মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে মাদক, হত্যা, ডাকাতি, প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি ও অস্ত্র মামলা।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘দুই হাকিমকে হাইকোর্ট ডাকার পর থেকে কোনো হাকিমকেই তিন দিনের বেশি কাউকে রিমান্ডে পাঠাতে দেখা যায়নি। ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনে মাত্র এক দিনের রিমান্ড দিতেও দেখা গেছে বিচারিক হাকিম আতিকুল ইসলামকে।’
১৫ সেপ্টেম্বর বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হয়ে ক্ষমা চান বিচারিক আদালতের দুই হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস ও আতিকুল ইসলাম।
এরপরও তারা পৃথকভাবে বিভিন্ন মামলার গ্রেপ্তারকৃত অর্ধশতাধিক আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছেন। তবে তারা এসব আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই কোনো সরকারি ডাক্তার বা মেডিক্যাল বোর্ডের মাধ্যমে পরীক্ষা করে হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশকে।
কোনো মামলায় তৃতীয় দফা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠাতে আর দেখা যায়নি বলে জানান আদালতের বাড্ডা থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক রনপ কুমার ভক্ত।
দ্বিতীয় দফা রিমান্ডের ক্ষেত্রে সব বিচারিক হাকিম বা ম্যাজিস্ট্রেট সাবধানতা অবলম্বন করছেন।
আরও পড়ুন:দেশে চলমান দাবদাহ শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় এ কথা জানায়।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
‘জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।’
৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলেছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহের বিষয়ে বলা হয়, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা এবং ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থী দাঁড়িয়েছে এক হাজর ৭৮৬ জন। মাঠ পর্যায় থেকে পাঠনো তথ্য একীভূত করার পর এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি জানান, প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন এক হাজার ৮৯০ জন। এদের মধ্যে বাছাইয়ে ১০৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল, আর বৈধতা পেয়েছে এক হাজার ৭৮৬ প্রার্থীর।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আপিল করা যাবে। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। এরপর প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল এবং ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে।
অপপ্রচার রোধে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আরাফাত বলেন, ‘অপপ্রচার রোধে ভারতের কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করে। তারা কীভাবে কাজ করে, তাদের অভিজ্ঞতা এবং প্রক্রিয়া-পদ্ধতি বিনিময় জানা-বোঝার চেষ্টা করব। এক্ষেত্রে কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে আমরা তাদের কাছ থেকে সহায়তা নেব।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে যেসব কো-অপারেশন আছে, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বিটিভিতে দুই ঘণ্টার একটি চাংক নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সংবাদ বিশ্লেষণ, চলমান ঘটনাপ্রবাহ এবং সংবাদ উপস্থাপনা শুরু করতে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে ভারতের যে সংবাদ সংস্থাগুলো আছে, বিশেষ করে এএনআইয়ের সঙ্গে কোলাবরেশন করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
‘যেহেতু বিটিভি ইন্ডিয়াতে দেখানো হয়, সেহেতু দুই ঘণ্টার এ চাংক আমরা ধীরে ধীরে দুই, তিন, চার ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়াব। আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করতে চাচ্ছি, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে। এর বাইরেও বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব ভারতীয় দর্শকদের আকৃষ্ট করতে। এ ছাড়া ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন নিয়ে ইনস্টিটিউশন আছে, তাদের সঙ্গে কোলাবরেশন করা, বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম ও ট্রেনিং করা।’
‘সম্প্রতি মুজিব শিরোনামের যে সিনেমাটি সহ-প্রযোজনা হয়েছে, এমন অন্য কোনো সিনেমায় সহ-প্রযোজনার সুযোগ আছে কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে’- যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
ভারতের সিনেমা যেহেতু বাংলাদেশের বাজারে চলে সেহেতু বাংলাদেশেরও ভালো মানের সিনেমা ভারতে চালানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দর্শককে জোর করে কিছু দেখানো যায় না। বাজারে কোনো জিনিসের চাহিদা থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যাবে-আসবে। সিনেমা যেহেতু প্রোডাক্ট, সেহেতু ভারতের বাজারে দর্শক থাকলে অবশ্যই যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আরও কো-অপারেশনের সুযোগ আছে, সেসব নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমি মনে করি- বাংলাদেশ এ বিষয়ে বেশি লাভবান হবে। কারণ ভারতের ফিল্মে, টেলিভিশনে বা অন্যান্য জায়গায় যে অভিজ্ঞতা আছে, তা আমরা যত বেশি নেয়ার চেষ্টা করা যায়। দেশের উন্নয়নের জন্য এসব জরুরি।’
আরও পড়ুন:সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অর্জনে অবদান রাখতে এবং দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করায় অবদান রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবকিছু করছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ‘ডিফেন্স ডিপ্লোমেসি: স্ট্র্যাটেজি ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সূত্র: ইউএনবি
সেনাপ্রধান বলেন, ‘মাতৃভূমিকে রক্ষা করা, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য এবং আমরা তার জন্য প্রস্তুত আছি। আমরা সবকিছুই করছি।’
বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্র নীতির বাণী ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে আমরা সবকিছু করছি।’
জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রেখে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘কূটনীতি যেকোনো ধরনের জাতীয় স্বার্থ অর্জনের প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
বেসামরিক শক্তির সহায়তায় সেনাবাহিনী কীভাবে দেশে গঠনমূলক কর্মকাণ্ড, দেশ-বিদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে সে কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘যেখানেই সুযোগ আছে, তা প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ, আমরা সুযোগ গ্রহণ করি এবং বাংলাদেশের স্বার্থে সবকিছু করি।’
সামরিক কূটনীতির কথা বলতে গিয়ে জেনারেল শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আরও সম্পদ ও বাজেট বরাদ্দ করে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আমরা জানি কীভাবে এটা করতে হয়। কিন্তু আমাদের এটা করার সামর্থ্য থাকা উচিত।’
মিয়ানমার ইস্যু প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ‘মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের কেউ কেউ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হচ্ছেন এবং এখানে নিজেদের সমস্যায় ফেলার ঝুঁকি রয়েছে।
‘এক বন্ধুকে খুশি করার জন্য আমরা আরেক বন্ধুর বিরোধিতা করতে পারি না। বেশকিছু বিষয় রয়েছে যা আমাদের খেয়াল করতে হবে। এসব ঘটনার প্রভাবও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এবং আমরা সঠিক পথেই রয়েছি।’
জেনারেল শফিউদ্দিন বলেন, দূর থেকে চালানো যায় এমন কিছু যানবাহন দেশেই তৈরি হচ্ছে যা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য বেশ উপকারে আসবে। আগে এসব যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হতো। তাই এখন আমাদের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে।’
সেনাপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কেবল যুদ্ধে লড়াই করাই শেখে না, বরং জাতীয় স্বার্থে কীভাবে যুদ্ধ প্রতিরোধ বা এড়াতে হয় তা-ও জানে। আমরা সঠিক পথেই আছি এবং আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবো না।’
একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা সামরিক বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব। এটি তারা কখনও ভুলে যায় না এবং এ কাজে সবসময় তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
‘উদ্দেশ্য রাতারাতি পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু সক্ষমতা রাতারাতি পরিবর্তন হয় না। আজ আপনি আমার বন্ধু, আগামীকাল বন্ধু না-ও হতে পারেন। কিন্তু জাতীয় স্বার্থ, মাতৃভূমি রক্ষায় আমাদের সক্ষমতা থাকতে হবে- পররাষ্ট্রনীতির এই আদেশ আমাদের সবার জন্য সমান।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিআইআইএসএস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকার ও মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খান।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বৃহস্পতিবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন শেষে বিজিবি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। দুপুরে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া প্রতিবেশী দেশটির জান্তা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেন তিনি।
পরে তিনি ১১ বিজিবির অধীন চাকঢালা বিওপি (বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট) পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের পালিয়ে আসার স্পটগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমসহ বিজিবি রামুর সেক্টর ও অধীনস্ত বিজিবি ব্যাটালিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র জোন কমন্ডার ও অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ এসিসহ বিজিবির কর্মকর্তারা।
বান্দরবানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রুমা থানার দুটি মামলায় বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি এক নারীকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদসহ মামলায় ৫৭জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বান্দরবান সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইন বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে একাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীরা জানান, রুমা থানার জিআর মামলা নং- ৪ ও ৭ মামলায় পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর মধ্যে ৫২জনকে দু’দিন করে রিমান্ড এবং একজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়।
এর আগে বান্দরবান জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় ১৮জন নারী ও ৩৯জন পুরুষ বন্দিকে দুটি গাড়িতে করে আদালতে হাজির করা হয়। সম্প্রতি বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে লুটের ঘটনায় তাদেরকে রুমা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে বান্দরবানে চলমান যৌথ অভিযানে সন্দেহভাজন আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৬জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকারের অধীনে অন্যান্য সেক্টর কমান্ডারদের মতোই ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারী ছিলেন জিয়াউর রহমান। অথচ পরিতাপের বিষয়, সেই বিএনপি মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ দিবস ১৭ এপ্রিল পালন করে না।
গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে ‘নবম আওয়ার ওশান কনফারেন্সে’ যোগ দেয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে নভোটেল এথেন্স হোটেল বলরুমে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিস আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানের।
মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের যে ভাষণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অবিচ্ছেদ্য অংশ, সেই ৭ মার্চও বিএনপি পালন করে না। এ থেকেই স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধে বিএনপি কতটুকু বিশ্বাস করে তা প্রমাণ হয়।
মুজিবনগর দিবস স্মরণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার বৈদ্যনাথতলা অর্থাৎ বর্তমান মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণের আগের মধ্যরাতে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের কলকাতা প্রেসক্লাবে সমবেত হতে বলা হয়। গোপনীয়তার মধ্যে তাদেরকে পরদিন সকালে মুজিবনগরে পৌঁছানো হয় যেখান থেকে তারা সংবাদ পরিবেশন করেন।
এ সময় গ্রিস প্রবাসী বাংলাদেশিদের আইনানুগ ও পরিশ্রমী জীবনের জন্য নিজের ও গ্রিক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশংসার কথা জানিয়ে এই সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে ও সবাইকে বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে আহ্বান জানান মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সমবেতদের হর্ষধ্বনির মধ্যে তিনি জানান, গ্রিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার সাথে বৈঠকে জানিয়েছেন যে, গ্রিস আরও ৬টি দেশে দূতাবাস খোলার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
গ্রিস আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ ত্রিশটিরও বেশি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
গ্রিস আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল মান্নান মাতুব্বরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল হাওলাদারের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য এফেয়ার্স মোহাম্মদ খালেদ, বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিস নেতাদের মধ্যে গোলাম মওলা, হাজী আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুল খালেক মাতুব্বর, আহসান উল্লাহ হাসান, শেখ আল আমিন, আব্দুল কুদ্দুস মাতুব্বর, রায়হান খান, মিজানুর রহমান আলফা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
মন্তব্য