এশার নামাজ শেষে উখিয়ার কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া ক্যাম্পে নিজের অফিসে বসে ছিলেন রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ। সেখানেই হাজির হয় ২০-২৫ জনের একটি সশস্ত্র দল। মুহিবুল্লার বুক লক্ষ্য করে গুলি চালান তাদের একজন।
বুধবার রাতে প্রায় বিনা বাধায় রোহিঙ্গাদের প্রভাবশালী এই নেতাকে হত্যা করে অস্ত্রধারীরা।
২০১৮ সালে রোহিঙ্গা আগমনের প্রথম বর্ষপূর্তিতে এই মুহিবুল্লাহর ডাকেই বালুখালির এক্সটেনশন মাঠে সমবেত হয়েছিলেন প্রায় পাঁচ লাখ নারী-পুরুষ। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে হওয়া ওই সমাবেশের খবর ফলাও করে প্রচার করেছিল বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
সমাবেশে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন মুহিবুল্লাহ। এর প্রথমেই ছিল মিয়ানমারের আরাকানের পিতৃভূমিতে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন। তবে শর্ত ছিল, এজন্য অবশ্যই মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের হারানো সম্মান, মর্যাদা ও নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে হবে।
মুহিবুল্লাহর এই দাবি সাধারণ রোহিঙ্গাদেরও প্রাণের দাবি। এ কারণে মুহিবুল্লাহকে নেতা হিসেবে গ্রহণ করেন তারা।
এই সমাবেশ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও মিয়ানমার সরকারের জন্য বিব্রতকর ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। একই সঙ্গে এটি মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের নতুন রাস্তা খুলে দেয় পশ্চিমা বিশ্ব ও জাতিসংঘের কাছে।
২০১৮ সালের ওই সমাবেশের পর রোহিঙ্গা ইস্যুতে সকল আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা, মানবাধিকার সংস্থা ও পশ্চিমা বিশ্বের আস্থার স্থল হয়ে উঠেন মুহিবুল্লাহ।
মুহিবুল্লাহর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রকাশিত হতে থাকে। অন্যদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প দেখতে আসা বিদেশি সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রধান ও প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠেন মুহিবুল্লাহ।
একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমার সরকারের জন্য এক চাপের নাম হয়ে উঠেছিলেন মুহিবুল্লাহ। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও রাষ্ট্রের কাছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সরকারের চালানো অমানবিক হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের বিবরণ তুলে ধরতেন তিনি।
এছাড়া বিভিন্ন ফোরামেও রোহিঙ্গাদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরতেন মুহিবুল্লাহ।
একাধিক রোহিঙ্গা নেতা নিউজবাংলাকে জানিয়েছে, মুহিবুল্লাহর স্বর ছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী, সরকার ও তাদের মিত্রদের জন্য বিব্রতকর। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের মধ্যে গড়ে ওঠা বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর জন্যও তিনি ছিলেন অস্বস্তির কারণ। বিশেষত, যেসব সংগঠন প্রত্যাবাসন বিরোধী ছিল। এদের মধ্যে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) বা আল ইয়াকিন অন্যতম।
রোহিঙ্গা নেতাদের বিশ্বাস, এই সন্ত্রাসী সংগঠনের কারণেই তাদের পিতৃভূমি ছাড়তে হয়েছে। এরা মিয়ানমার সরকারেরই পুতুল সংগঠন। মূলত কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন ঠেকাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় এই ছায়া সংগঠন দাঁড় করায় মিয়ানমার। পরে তাদের মাধ্যমে সীমান্ত চৌকিতে হামলার নাটক করে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার ত্যাগে বাধ্য করে।
উখিয়ায় বসবাসরত রোহিঙ্গা নেতারা মনে করেন, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আটকাতে এবং এই দাবির পক্ষের স্বর বন্ধ করতে আরসা বা আল ইয়াকিনের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে মুহিবুল্লাহকে হত্যা করেছে।
অন্যদিকে গোয়েন্দা সূত্রের ধারণা, মুহিবুল্লাহ পশ্চিমা ব্লকের লোক হওয়ায় ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। তার মাধ্যমে মিয়ানমারের অনেক নেতা ও সেনা কর্মকর্তার তথ্য পেতেন পশ্চিমারা। ফলে এটি মিয়ানমারের গোয়েন্দাদেরও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে।
তবে রোহিঙ্গাদের নিজেদের দ্বন্দ্বের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বরত ১৪ নম্বর ‘এপিবিএন’র পুলিশ সুপার নাইমুল হক।
যেভাবে ঘটে হত্যাকাণ্ড
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অস্ত্রধারীরা কোনো সুযোগই দেয়নি মুহিবুল্লাহকে। পাঁচ রাউন্ড গুলি করলে তিন রাউন্ড গুলি সরাসরি তার বুকে লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান মুহিবুল্লাহ।
মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উখিয়া কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া ক্যাম্পে এশার নামাজ শেষ করে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) অফিসে ছিলেন আমার ভাই। এ সময় ২০-২৫ জনের একটি বন্দুকধারী দল তার ওপরে হামলা চালায়। ওই অফিসে কর্মরত অন্যান্যদের মারধর করে ছেড়ে দিলেও ভাইয়ের বুকে গুলি চালায় মাস্টার আবদুর রহিম নামে এক সন্ত্রাসী।’
তিনি বলেন, ‘বন্দুকধারীদের এ দলে মাস্টার আব্দুর রহিম, মুর্শিদ, লালুসহ ২০ থেকে ২৫ জন আল ইয়াকিনের সদস্য ছিল।’
হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের যে কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য আমার ভাই এগিয়ে আসতেন। তাদের অধিকার আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছিলেন। শুধু এখানে নয়, আন্তর্জাতিক মহলেও আমার ভাইয়ের পরিচিতি ছিল। হয়তো ওই পথ বন্ধ করতেই তাকে হত্যা করেছে অস্ত্রধারীরা।’
হুমকি ছিল আগে থেকেই
নিজের কাজের জন্য কয়েক বছর ধরেই হত্যার হুমকি পাচ্ছিলেন মুহিবুল্লাহ। এমনটা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচডব্লিউও)।
মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড বিষয়ক রিপোর্টে মানবাধিকার সংগঠনটি বলেছে, ‘অজ্ঞাতপরিচয় অস্ত্রধারীদের গুলিতে কক্সবাজারের কতুপালং ক্যাম্পে নিহত হয়েছেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ। বর্মী সেনাদের বর্বর অত্যাচারে বাস্তুচ্যুত ১০ লাখ রোহিঙ্গার অধিকার আদায়ে আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে অ্যাডভোকেসি করতেন তিনি।’
সংস্থার সাউথ এশিয়ান ডিরেক্টর মিনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, ‘মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গা কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর ছিলেন। তিনি সব সময় তাদের নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের পক্ষে ছিলেন। তিনি রোহিঙ্গাদের জীবন এবং ভবিষ্যৎ নিশ্চিতের পক্ষে সোচ্চার কণ্ঠ ছিলেন। তার মৃত্যু শুধু রোহিঙ্গাদের অধিকারকে অবজ্ঞা করবে না, তাদের প্রত্যাবাসনের উদ্যোগেও বিঘ্ন ঘটাবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের অবিলম্বে মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য মহিবুল্লাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর ছিলেন, তার হত্যাকাণ্ড স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে স্বাধীনতার পক্ষে ও সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ।’
মুহিবুল্লাহর হত্যাকাণ্ডসহ ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলার তদন্তেরও দাবি জানান তিনি।
মিনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, ‘মুহিবুল্লাহর মৃত্যুতে আমরা একজন প্রকৃত বন্ধুকে হারিয়েছি। তিনি সবসময় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উদারতাকে স্বীকার করেছেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের অধিকার চেয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে তদন্ত, বিচার এবং দোষী সাব্যস্ত করা উচিত বলেও মনে করেন মীনাক্ষী।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘মুহিবুল্লাহ বাংলাদেশে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর নেতা হিসেবে কাজ করেছেন। এরা বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আসার সময় অকল্পনীয় ক্ষতি এবং যন্ত্রণা ভোগ করেছিলেন। তিনি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অপরাধের নথিপত্র এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে শরণার্থীদের অধিকারের পক্ষে কথা বলেছেন। মুহিবুল্লাহ সাম্প্রতিক সময়ে তার কাজের জন্য হত্যার হুমকিও পেয়েছিলেন।’
বিচার দাবি পশ্চিমা দূতদের
মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা। এদের অনেকে মুহিবুল্লাহকে ‘মানবাধিকারের অগ্রদূত’ আখ্যা দিয়ে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার এক টুইটে লিখেছেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবাধিকারের একজন সাহসী অগ্রদূত মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহর হত্যাকাণ্ডে আমরা শোকাহত ও বিচলিত। আমি তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই এবং আশা করি অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন টুইট করেছেন, ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের নেতা মুহিবুল্লাহর হত্যাকাণ্ডে আমরা মর্মাহত ও শোকাহত। তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য এটি এক মর্মান্তিক ক্ষতি। আমার আন্তরিক সমবেদনা।’
বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত আন্নে গেরার্ড ভেন লিউইন টুইটে লিখেছেন, ‘রোহিঙ্গা নেতা ও মানবাধিকার কর্মী মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় আমরা মর্মাহত ও ব্যথিত। আমি তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই এবং আশা করি অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’
এদিকে ইইউয়ের ঢাকা কার্যালয় এক টুইটে লিখেছে, ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে ইইউ মর্মাহত ও শোকাহত। তার পরিবার, বন্ধু ও রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য একটি মর্মান্তিক ক্ষতি। আমরা আন্তরিক সমবেদনা জানাই।’
নিন্দা জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।
বৃহস্পতিবার সংস্থাটির দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ঘটনার দ্রুত তদন্ত করতে এবং দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।’
এতে বলা হয়েছে, ‘রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইউএনএইচসিআর গভীরভাবে শোকাহত ও দুঃখিত। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
‘আমরা শরণার্থী শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি।’
বিশ্বের বৃহত্তম শিবিরটিতে নিজেদের লোকবল বাড়ানোর কথা জানিয়ে সংস্থাটি আরও বলেছে, ‘রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা এবং তাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো সরাসরি জানতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।
এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।
এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’
সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, ইসরাইলের নৃশংসতার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ওই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।
বাংলাদেশে সফররত ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. মাহমুদ সিদকি আল-হাব্বাশের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকাল মঙ্গলবার এক বৈঠকে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। আজ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানা অনুযায়ী দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি সমর্থন জানান।
ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. আল-হাব্বাশ বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের স্থায়ী সমর্থনের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্য আরও সুদৃঢ় করার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।
ফিলিস্তিনিদের নিরন্তর সমর্থনের জন্য দেশটির প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি এ বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বৃহত্তর ঐক্যের ওপরও জোর দেন।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির আমন্ত্রণে ড. আল-হাব্বাশ তিন দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।
মন্তব্য