রুটি বানানো কঠিন কাজ। তাই ফেসবুকে প্রস্তুত করা সুদৃশ্য আটার রুটির ছবি দেখে আকৃষ্ট হন রুহুল আমিন। পুরান ঢাকার ঠিকানা দেয়া একজন উদ্যোক্তা রুটি বানিয়ে বিক্রি করেন। অর্ডার দেয়ার তিন দিন পর হাতে রুটি পেলেন রুহুল। কিন্তু সেঁকে খাওয়ার সময় রুটি থেকে দুর্গন্ধ। অর্থাৎ অনেক দিন আগে বানিয়ে রাখা রুটি নষ্ট হয়ে গেছে।
ফেসবুকের ওই পেজে পুরো ঠিকানা এবং ফোন নম্বর দেয়া ছিল না। তাই রুহুল আমিন মেসেঞ্জারে রুটির গন্ধের বিষয়ে জানতে চান। পরে পেজটি থেকে নতুন করে রুটি দেয়ার আশ্বাস দেয়া হলেও রাখা হয়নি সেই প্রতিশ্রুতি।
ফেসবুকভিত্তিক পণ্য বিক্রি বা ‘এফ-কমার্স’ ব্যবসায় ভোক্তা সেবা নিয়ে বাড়ছে অনিয়মের অভিযোগ। যেসব অভিযোগ সাধারণত ই-কমার্সের ক্ষেত্রে উঠতে দেখা যায়, সেগুলো থেকে মোটেও মুক্ত নয় এফ-কমার্সও।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা জানান, ‘পণ্য বিক্রি এবং মান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এখনও দুর্বলতা আছে। ফেসবুকভিত্তিক এফ-কমার্স কর্মকাণ্ডে ঠকছেন ক্রেতা। এ ক্ষেত্রে বড় সমস্যা পেজগুলোতে উৎপাদনকারীর নাম, ঠিকানা এবং ফোন নম্বর দেয়া থাকে না। ফলে পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে ছলচাতুরীর আশ্রয় নিলেও ব্যবস্থা নেয়া যায় না।’
বেসিস-এর সাবেক সভাপতি ফাহিম মাসরুর মনে করেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের যৌথ তদারকিতে এই ব্যবসা পরিচালত হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, জনগণের অর্থের সুরক্ষা নিশ্চিত করা না গেলে সম্ভাবনাময় এই খাত মুখ থুবড়ে পড়বে।
এফ-কমার্সে তিক্ত অভিজ্ঞতা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নুসরাত জাহান ফেসবুকের একটি পেজে ছবি দেখে ২ হাজার ৫০০ টাকার একটি ড্রেস অর্ডার করেন। মেসেঞ্জারে জানানো হয়, ডেলিভেরির আগে টাকা পরিশোধ করতে হবে। তিনি ফেসবুক পেজে দেয়া মোবাইল নম্বরে বিকাশ করে দেন। কিন্তু ডেলিভারির পর দেখা যায়, ছবি দেখিয়ে তিনি যে ড্রেস অর্ডার করেছেন, সেটা তাকে দেয়া হয়নি। এমনকি তিনি যে ড্রেসটি পেয়েছেন, সেটা নিম্নমানের। মেসেঞ্জারে বিষয়টি জানানো হলে সরবরাহকারী বলেন, যেটা অর্ডার করা হয়েছে সেটাই তারা পাঠিয়েছেন।
ফেসুবকের একটি পেজে মেয়েদের টপস, প্লাজো, নাইটিসহ বিভিন্ন পণ্য দেখে পছন্দ করেন রায়হানা শামস। মেসেঞ্জারে পছন্দের পণ্যের ছবি দেখিয়ে অর্ডার দিলে পাওয়া যাবে কি না জানতে চান। উত্তরে জানানো হয়, ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগবে। পছন্দের পণ্য হাতে পাওয়ার পর টাকা দিলেই হবে। কিন্তু অর্ডার করার সময় কিছু টাকা দিতে হবে। একটি বিকাশ নম্বরও দেন তারা।
রায়হানা মেয়েদের দুটি টপস ও দুটি প্লাজো অর্ডার দেন। সব মিলিয়ে ১ হাজার ৮০০ টাকার মধ্যে ৪০০ টাকা বিকাশ করেন তিনি। কিন্তু প্রায় দুই মাস পার হলেও এখনও অর্ডার করা পণ্য পাওয়া যায়নি। কয়েকবার যোগাযোগ করা হলে ২/৩ দিনের মধ্যে ডেলিভারি দেয়া হবে বলে একাধিবার আশ্বস্ত করা হলেও কাঙ্ক্ষিত পণ্য বা টাকা কোনোটাই পাওয়া যায়নি।
ভোক্তায় বাড়ছে অভিযোগ
অনলাইন ব্যবসায় ঠকলেই প্রতিকারের একমাত্র জায়গা এখন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সকাল থেকে সন্ধ্যা– বলা যায় সারা দিনই এই ব্যবসা নিয়ে জমা পড়ছে অভিযোগ।
৩১ আগস্ট পর্যন্ত পণ্য না পাওয়ার কারণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ জমা পড়েছে ৪ হাজার ৯৮২টি। ফেসবুক পেজে পণ্য দেয়ার কথা বলে আর দেয়া হয়নি, অথবা পেজে যে পণ্যের ছবি দেয়া হয়, সেই পণ্য না পাওয়ায় অভিযোগ করা হয়।
এ পর্যন্ত ৪ হাজার ২৮৮টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। তবে অনেক অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণ পেজে পণ্য বা সেবা সরবরাহকারীর ঠিকানা এবং ফোন নম্বরের অনুপস্থিতি। ফলে ভোক্তা প্রতারিত হলেও পদক্ষেপ নিতে পারেনি সরকারের এই সংস্থা।
কে করবে নজরদারি?
পূর্ণাঙ্গ আইন না থাকায় বাংলাদেশে ইচ্ছেমতো চলছে অনলাইন ব্যবসা। বিদ্যমান ই-কমার্স নীতিমালায় অনেকটাই উপেক্ষিত হচ্ছে ক্রেতা সুরক্ষার দিক। ক্রেতার স্বার্থ সুরক্ষায় এবং বিক্রেতাদের পেমেন্ট সুরক্ষা– দুই ক্ষেত্রেই আইনি ব্যবস্থা নেই এখনও। ২০১৮ সালের নীতিমালা অনুযায়ী ক্রেতা প্রতারিত হলে ভোক্তা অধিদপ্তরে যেতে পারেন। তবে তা যথেষ্ট নয়।
২০২০ সালের বেসরকারি হিসাব বলছে, ওই বছর ই-কমার্স খাতে ব্যবসার পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার কোটি টাকা। আইসিটি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে সাম্প্রতিক সময়ে এ ব্যবসা বেড়েছে ৩০০ গুণ।
ভারত ও চীনে পৃথক আইনের অধীনে রয়েছে পৃথক নীতিমালা ও কমিশন। সেই কমিশন ই-কমার্স ব্যবসা মনিটরিং করে থাকে ভোক্তা সুরক্ষায়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ১০ শতাংশ ক্রেতা। মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ১০ কোটির বেশি মানুষ। করোনাকালে দেশে বেড়েছে অনলাইন ব্যবসার প্রসার। বাজার বড় হওয়ার ফলে দেশে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে আলীবাবা, অ্যামাজন, গুগল ও ফেসবুকের মতো ই-জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান। ব্যবসার ক্ষেত্রে বড় অঙ্কের করও দিচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান।
আইন করা নিয়ে ধূম্রজাল
বিদ্যমান ই-কমার্স নীতিমালার অধীনেই দেশের ই-কমার্স এবং এফ-কমার্স ব্যবসা নিয়ন্ত্রিত হবে, নাকি শক্ত কোনো আইন করা হবে, যেখানে পৃথক তদারকি সংস্থা এবং শাস্তির বিধান করা হবে?
ই-কমার্স নিয়ে সাম্প্রতিক নানান অনিয়মের পর এই ব্যবসায় শৃঙ্খলা আনতে আইন করার উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু এতে আপত্তি তুলেছেন ই-কমার্স খাতের উদ্যোক্তারা। তারা বলছেন, বিকাশমান এই শিল্প এখনই নিয়ন্ত্রিত হলে সুযোগ হারাবে বাংলাদেশ।
গত সপ্তাহে ই-কমার্স ব্যবসার নানান দিক নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে বসেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ওই বৈঠকে স্বরাষ্ট্র, আইন ও তথ্যমন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে বিফ্রিংয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ই-কমার্স ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে আইন করা হবে।
তবে তার এই বক্তব্যের তিন দিন পর দোদুল্যমান ভূমিকায় অবতীর্ণ হন টিপু মুনশি। গত রোববার এক কর্মশালায় বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণে আইন না নীতিমালা- কী হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। সব দিক পর্যালোচনার পরই নেয়া হবে সিদ্ধান্ত। আইন ও নীতিমালা করার বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত এসেছে। এসব পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে রেকর্ড ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের সাড়ে তিন মাসে অষ্টমবারের মতো স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হলো।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৃহস্পতিবার বৈঠক করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। নতুন নির্ধারিত এই দাম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী- ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেট প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৬৫৬ টাকা বেড়ে ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৩৮৮ টাকা কমে ৭৮ হাজার ৮০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সবশেষ দশ দিন আগে ৮ এপ্রিল বাজুস ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৪৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা নির্ধারণ করে। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও দাম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দেশের স্বর্ণের বাজারে উচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হলো।
অবশ্য স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের আরও বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সেসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ১ লাখ ২৯ হাজার ১১৯ টাকা।
এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আরও পড়ুন:বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
খোলা সয়াবিন তেলের দাম কমার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।
সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘…১৪৯ টাকা যেটা খোলাবাজারে ছিল, সেটাকে দুই টাকা কমিয়ে ১৪৭ টাকা সর্বোচ্চ খোলাবাজারে সয়াবিন তেল বিক্রি হবে।
‘আর আমাদের সয়াবিন তেলের প্রতি লিটার, বোতল যেটা, পেট বোতলে যেটা, যেটার মধ্যে সিল করা থাকে, সেইটা আমাদের নির্ধারিত ছিল ১৬৩ টাকা। সেইখান থেকে বৃদ্ধি করে ১৬৭ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।’
খোলা সয়াবিন তেলের পাঁচ লিটারের বোতলের দামের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আর খোলাবাজারে সয়াবিন তেল পাঁচ লিটারের বোতল ৮০০ টাকা ছিল। সেটাকে ৮১৮ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।’
পাম অয়েলের দাম নিয়ে টিটু বলেন, ‘সুপার পাম অয়েল তেল প্রতি লিটার, এটা আগে নির্ধারণ করা ছিল না। এবার আমরা নির্ধারণ করে দিচ্ছি। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৩৫ টাকা লিটার।
‘তো এই চারটা পণ্যের দাম, এইটা কিন্তু আমরা নির্ধারণ করলাম না। আমাদের যারা অ্যাসোসিয়েশনের, তাদের রিকমেন্ডেশনে এবং আমাদের ট্যারিফ কমিশনের অনুমোদনক্রমে উনারা উনাদের অ্যাসোসিয়েশন থেকে চিঠি দিয়ে আগামীকাল থেকে এই মূল্য উনাদের মিল গেট থেকে উনারা কার্যকরী করবে।’
আরও পড়ুন:কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি জানিয়েছিল যে আর কোনো ব্যাংককে একীভূতকরণের সুযোগ দেয়া হবে না। তবে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বিদেশি ব্যাংক আলফালাহকে অধিগ্রহণের জন্য ব্যাংক এশিয়াকে অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নতুন মাত্রার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এশিয়া বিদেশি ব্যাংক আলফালাহকে অধিগ্রহণের পরিকল্পনা করছে। সূত্র: ইউএনবি
করাচিভিত্তিক ব্যাংক আলফালাহ বুধবার (১৭ এপ্রিল) পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জকে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, ব্যাংক আলফালাহ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের বাংলাদেশ পরিচালনা, সম্পদ ও দায় অধিগ্রহণের জন্য প্রাপ্ত বাধ্যবাধকতামুক্ত ইঙ্গিতমূলক প্রস্তাবের ক্ষেত্রে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্যাংক আলফালাহ বাংলাদেশের ব্যাংক এশিয়ার জন্য যথাযথ কার্যক্রম শুরুর জন্য স্টেট ব্যাংক অফ পাকিস্তানের অনুমোদন চাইছে।
ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইন বলেন, ‘এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এটি একীভূতকরণ নিয়ে খুব বেশি আলোচনার অংশ নয়।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে দুই ব্যাংকের নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে অধিগ্রহণের বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ পাবে বলে।
বিষয়বস্তু অবহিত না করে ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থিভাবে ‘রূপান্তর’ শিরোনামের একটি নাটক প্রচার করায় বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’কে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে ওয়ালটন।
পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সব ধরনের বিজ্ঞাপনী চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
ওয়ালটনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’ এর স্বত্বাধিকারী মোহন আহমেদকে মঙ্গলবার ওই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
ওয়ালটনের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট রাইসুল ইসলাম রিয়াদ স্বাক্ষরিত আইনি নোটিশে উল্লেখ করে যা বলা হয়, ‘আপনি লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান এর স্বত্বাধিকারী। আপনার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার নির্মিত ছয়টি নাটকে ওয়ালটন ফ্রিজ ব্র্যান্ডিং করতে সম্মত হয়। শর্ত থাকে যে, উক্ত নাটকসমূহে দেশের আইন, নীতি, নৈতিকতা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হয় এরকম কোনো বিষয় অর্ন্তভুক্ত হবে না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক যে, উক্ত নাটকসমূহের মধ্যে ‘রূপান্তর’ নাটকটিতে এমন কিছু বিষয় অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে, যাতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে ও মানুষের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে।’
নোটিশে আরও বলা হয়, ‘ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে নাটকটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে পূর্বে অবহিত না করে রূপান্তর নাটক প্রচার করায় আপনার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হলো এবং সেই সঙ্গে কেন আপনার বিরুদ্ধে ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থিভাবে নাটক প্রচারের জন্য আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে জানানোর জন্য বলা হলো।’
এর আগে ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম থেকে ‘রূপান্তর’ নাটকটি প্রত্যাহারের জন্য বিজ্ঞাপনী সংস্থাকে নির্দেশ দেয় ওয়ালটন। তাৎক্ষণিকভাবে ফেসবুক-ইউটিউবসহ সব মাধ্যম থেকে নাটকটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
এরপর বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ওয়ালটন গ্রুপের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থি নাটকে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কেন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’কে লিগাল নোটিশ দেয় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ওয়ালটনের ভাষ্য, দেশের মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কোনো কর্মকাণ্ড কখনও তারা সমর্থন করে না এবং এসব কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকে না। অনাকাঙ্ক্ষিত এই বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ মর্মাহত এবং সম্মানিত ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন রূপালী ব্যাংক পিএলসির মহাব্যবস্থাপক মো. ফয়েজ আলম। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার কর্তৃক পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়ে তিনিসহ রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংকের আট জন মহাব্যবস্থাপককে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি দেয়া হয়।
ডিএমডি হিসেবে পদোন্নতি হওয়ার আগে তিনি রূপালী ব্যাংক পিএলসিতে মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
মো. ফয়েজ আলম ১৯৯৮ সালে বিআরসির মাধ্যমে সিনিয়র অফিসার পদে রূপালী ব্যাংকে যোগদান করেন। কর্মজীবনে ব্যাংকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শাখার শাখা ব্যবস্থাপক, জোনাল অফিস এবং প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। পেশাগত প্রয়োজনে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও আরব অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণসহ দেশ-বিদেশে ব্যাংকিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন।
ফয়েজ আলমের জন্ম ১৯৬৮ সালে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার যোগীরনগুয়া গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে বিএ অনার্সসহ এমএ পাশ করার পর এমফিল ডিগ্রিও অর্জন করেন খ্যাতিমান এই ব্যাংকার।
পেশাগত জীবনের বাইরে ফয়েজ আলম একজন সফল লেখকও। বাংলাদেশে তিনি অগ্রণী উত্তর উপনিবেশী তাত্ত্বিক, প্রাবন্ধিক ও কবি হিসেবে বিশেষ খ্যাতিমান। এডওয়ার্ড সাঈদের বিখ্যাত গ্রন্থ অরিয়েন্টালিজম-এর অনুবাদক হিসেবেও তার আলাদা খ্যাতি আছে। তার পনেরটির বেশি গ্রন্থ এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে।
ভোজ্যতেলের ওপর শুল্ক অব্যাহতির সময়সীমা শেষ হয়েছে সোমবার (১৫ এপ্রিল)। এ অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিভিওআরভিএমএফএ) সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।
বিভিওআরভিএমএফএ’র নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম মোল্লার পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কাঁচামাল আমদানি ও ভোজ্যপণ্য উৎপাদনে কর অব্যাহতির মেয়াদ ১৫ এপ্রিল শেষ হচ্ছে বিধায় পরদিন ১৬ এপ্রিল থেকে ভ্যাট অব্যাহতির আগের নির্ধারিত মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ১৭৩ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৮৪৫ টাকা ও এক লিটার পাম তেল ১৩২ টাকায় বিক্রি করা হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত ফেব্রুয়ারিতে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত (অপরিশোধিত) সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে।
এদিকে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করা যেতে পারে, তবে সময় লাগবে।
‘ভোজ্যতেলের নতুন চালান আমদানির ক্ষেত্রে দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
আরও পড়ুন:প্রবাসীদের আয়ের একটি বড় অংশই আসে ঢাকায় অবস্থিত ব্যাংকের শাখাগুলোতে। অর্থাৎ প্রবাসীদের পরিবারের বেশিরভাগই ঢাকায় থাকেন বা তাদের অধিকাংশ অ্যাকাউন্ট ঢাকার ব্যাংক শাখায়।
ইউএনবি জানায়, রেমিট্যান্সের জেলাভিত্তিক চিত্র নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম। সিলেট তৃতীয় এবং কুমিল্লা চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
এরপরে রয়েছে উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর ও নরসিংদীর অবস্থান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জেলাভিত্তিক প্রবাসী আয় প্রতিবেদনে গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে প্রবাসীরা ১ হাজার ৫০৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ২১৬ কোটি ডলার। তার আগের মাস জানুয়ারিতে দেশে প্রবাসী আয় ছিল ২১০ কোটি ডলার।
জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়কালে ঢাকা জেলায় এসেছে ৫২৩ কোটি ডলার এবং চট্টগ্রাম জেলায় এসেছে ১৪২ কোটি ডলার।
এই সময়ে সিলেট জেলা ৮৭০ মিলিয়ন ডলার, কুমিল্লা ৮১০ মিলিয়ন ডলার এবং নোয়াখালী ৪৬০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ কোটি, ফেনীতে ৩৭ কোটি, মৌলভীবাজারে ৩৬ কোটি, চাঁদপুরে ৩৫ কোটি ডলার এবং নরসিংদীতে ২৫০ মিলিয়ন ডলার এসেছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলো থেকে বেশি প্রবাসী আয় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু এমনটা হচ্ছে না। কারণ অনেক প্রবাসী বিদেশে স্থায়ী হয়েছেন। বরং তারা (প্রবাসীরা) দেশে থাকা সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে অর্থ পাচার বাড়ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য