ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর এই আঞ্চলিক জোট থেকে বের হয়ে যাওয়া ব্রিটেনও বাংলাদেশি পানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে যাচ্ছে। ফলে পান খেয়ে মুখ লাল করবে সে দেশের বসবাসকারী এশিয়ানরাও।
দেশটির পান রপ্তানির ইস্যু দেখভলকারী সংস্থা ‘ইউকে- ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি’ (এফএসএ) এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই পানে বহাল নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সুসংবাদ পেতে পারেন দেশের পান রপ্তানিকারকরা।
টানা ছয় বছর নিষিদ্ধ থাকার পর চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশে উৎপাদিত পান ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে রপ্তানির সুযোগ উন্মুক্ত হয়।
পানে ক্ষতিকর ‘সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া’ পাওয়ার পর ছয় বছর ইইউর নিষেধাজ্ঞায় পড়েছিল বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়, যা ধাপে ধাপে ২০২০ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ইউরোপে পান রপ্তানি
ইইউ তার বাজারে আবার পান রপ্তানির সুযোগ পেতে কমিশন কয়েকটি শর্ত প্রতিপালনের তাগিদ দেয়। শর্তগুলো ছিল-পান সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ামুক্ত হতে হবে, উৎপাদন থেকে শিপমেন্ট পর্যন্ত উত্তম কৃষি চর্চা (গ্যাপ), গুড হাইজিন প্র্যাকটিসেস (জিএইচপি), গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিসেস (জিএমপি) অনুসরণ করতে হবে, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব থেকে সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ামুক্ত সার্টিফিকেট প্রভৃতি প্রদান করতে হবে।
এর সবগুলো শর্ত পূরণের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। এই ইউনিয়নভুক্ত দেশ মোট ২৭টি দেশ। এরা অভিন্ন মুদ্রায় লেনদেন করে এবং এক দেশের পণ্য অন্য দেশে অবাধে যাতায়াত করে। এসব দেশগুলোর বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে ইইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশন।
বাংলাদেশের পানের ওপর বহাল থাকা নিষেধাজ্ঞা চলতি বছর মে মাসে তুলে নেয়া হয়েছে ইইউ কমিশনের সিদ্ধান্তের আলোকেই। যা মেনে নিয়েছে সদস্যভুক্ত সবকটি দেশ।
ইইউ থেকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিক ব্রেক্সিট নেয়ার পর যুক্তরাজ্য অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে তাদের সরকারের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে। ফলে বাংলাদেশের পান রপ্তানির ক্ষেত্রে ইইউ কমিশনের সিদ্ধান্ত অন্যরা কার্যকর করলেও যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে সেটি কার্যকর হয়নি।
এমন প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্যের বাজারেও পান রপ্তানির সুযোগ চেয়ে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ করে বাংলাদেশ।
এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর এসএম জাকারিয়া হক বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে পান রপ্তানির ইস্যুটি দেখভলকারি সংস্থা ‘ইউকে- ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি’ (এফএসএ) এর সিনিয়র ইমপোর্টস স্ট্রাট্যাজি ম্যানেজার অলিভিয়া সিটরনির সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এ যোগাযোগের পর থেকেই যুক্তরাজ্যের বাজারেও এখন পান রপ্তানির বাঁধা কেটে যাওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হতে শুরু করে।
এর আগে সরকার প্রয়োজনীয় শর্তপূরণ সাপেক্ষে বাংলাদেশের সক্ষমতা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য প্রমাণ দাখিল করে ইইউ কমিশনে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পানে বাংলাদেশের অর্জিত স্ট্যান্ডার্ড এর সন্তুষ্টি সাপেক্ষে ইইউ কমিশন তার আগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয়।
এখন যুক্তরাজ্যের বাজারেও বাংলাদেশের পান রপ্তানির সুযোগ তৈরি করতে দেশটির বা ইউকে ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সির (এফএসএ) কাছে অনুরূপ দালিলিক প্রমাণপত্র উপস্থাপন করতে হবে।
সম্প্রতি এমন বার্তা দিয়ে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের লন্ডন হাইকমিশন অফিস থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে বাণিজ্য সচিব ও কৃষি সচিবকে উদ্দেশ্য করে কমার্শিয়াল কাউন্সিলর এস এম জাকারিয়া হক চিঠি দেন।
চিঠিতে যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ পান রপ্তানির বাজার খুলতে বাংলাদেশের সক্ষমতা প্রমাণ করে এমন সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যতদ্রুত সম্ভব লন্ডন হাইকমিশনে পাঠানোর পরামর্শ দেন তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্বের যে কোনো দেশে পান রপ্তানির মত সক্ষমতা বাংলাদেশ অর্জন করেছে। একটা সময় একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। তার থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ এখন ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অর্জন করেছে। যে কারণে ইইউ কমিশন বাংলাদেশকে পুনর্বিবেচনা করেছে। এর ফলে ইইউর দেশগুলোতে বাংলাদেশের পান রপ্তানি বাড়তে শুরু করেছে।’
যুক্তরাজ্যের বাজারে পান রপ্তানির সুযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটা বাংলাদেশের জন্য দারুণ সংবাদ। ইইউর পর পান রপ্তানির বাঁধা ছিল যুক্তরাজ্যের বাজারে। এখন সেখানেও রপ্তানি অনুমোদন পাওয়ার একটি ইতিবাচক আবহ তৈরি হচ্ছে। আমরা আশা করছি শিগগিরই এর একটি সুরাহা হবে।’
ভবিষ্যতে রপ্তানি পণ্যে যেন কোনো ত্রুট না থাকে এবং দেশের পণ্যের মান নিয়ে যাতে বিদেশিরা প্রশ্ন তুলতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার কথাও বলেন সচিব।
নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে ২০১২-১৩ সালে ১৮ হাজার ৭৮০ টন ও ২০১৩-১৪ সালে ১৩ হাজার ২৫০ টন পান রপ্তানি হয়। যার মূল্য যথাক্রমে ৩৮ মিলিয়ন ও ৩০ মিলিয়ন ইউএস ডলার।
যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে
বাংলাদেশ ইইউ আরোপিত শর্তপূরণে অনেকগুলো ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এর মধ্যে রয়েছে পান আবাদের এলাকা নির্বাচন, চুক্তিভিত্তিক চাষ, উত্তম কৃষি চর্চার আলোকে কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, মনিটরিং, ট্রেসিবিলিটি বা শনাক্তকরণ, পানের স্যাম্পল টেস্ট, কৃষক নির্বাচন ও প্রশিক্ষণ, রপ্তানিকারকদের প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ, নিয়মিতভাবে পানের জমির মাটি ও পানি পরীক্ষা, রপ্তানি বাজারের জন্য নিরাপদ ও বালাইমুক্ত পান উৎপাদন নির্দেশিকা প্রভৃতি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি উইং) হাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রপ্তানি সক্ষমতা বাড়াতে সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের একটি হলো নিষিদ্ধ বাজারেও পান রপ্তানির পুনরায় সুযোগ পাওয়া। এর জন্য বিদেশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিয়োজিত কমার্শিয়াল কাউন্সিলরা দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এখন যুক্তরাজ্যের বাজারেও পান রপ্তানির যে সম্ভাব্য সুযোগ তৈরি হতে যাচ্ছে এটি তারই একটি কর্মপ্রচেষ্টা।’
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ও বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবলস অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফভিএপিইএ) সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ বসবাস করে। সেখানে পানসহ বাংলাদেশি উৎপাদিত বিভিন্ন ভেজিটেবল পণ্য দারুণভাবে সমাদৃত। কিন্তু ব্রেক্সিট হওয়ার কারণে ইইউর সিদ্ধান্ত এখন ব্রিটেনে বাস্তবায়ন হয়নি। তবে ইইউর সিদ্ধান্তের আলোকে আবেদন ও যথাযথ প্রমাণ দাখিল সাপেক্ষে ব্রিটেনে পান রপ্তানির সুযোগ তৈরি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। প্রয়োজন শুধু উদ্যোগের।
‘যতদূর শুনেছি, এ বিষয়ে সরকার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে যাচ্ছে। আমরা আশা করি এর মাধ্যমে যুক্তরাজ্যেও পান রপ্তানি উন্মুক্ত হবে।’
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। স্থগিত দল হওয়া মানে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত। তাই আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি আজ রোববার সকালে সিলেটে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার জেলা পুলিশ লাইনে নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আয়োজিত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র প্রতীক সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতীক নির্ধারণ সংবিধান ও নির্বাচনী বিধিমালার আওতায় করা হয়। শাপলা প্রতীক সেই তালিকায় নেই।
তাই তা বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও নেই।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে না হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘অতীতের মতো বিতর্কিত নির্বাচন আর হবে না। সবার সহযোগিতায় একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কর্মকর্তা যাতে নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’ সূত্র: বাসস
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারীকে।
অন্য সদস্যরা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব মুঃ রইচ উদ্দিন খান ও মোঃ তারেক হাসান এবং ঢাকা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ কামরুল হাসান। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব পঙ্কজ বড়ুয়া।
কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকা কাস্টম হাউসে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। সূত্র: বাসস
গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড SRO No-404-Law/2025 এর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩ এর Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর হতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের Authentic English Text প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text না থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text সরকারী গেজেটে প্রকাশ হবার ফলে দেশী-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন বিধায় করদাতাগণের আস্থা অধিকতর বৃদ্ধি পাবে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর Authentic English Text সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এই দুটি আইনের Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীগনের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন পদ্মা সেতুতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ক্যাশলেস, টোল কালেক্টর ব্যতীত ননস্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ETC) সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের টোল পরিশোধ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও ডিজিটাল ব্যবস্থার আওতায় এসেছে।
বর্তমানে বিকাশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপ এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকের অ্যাপ এর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর টোল পরিশোধ করা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা বিকাশ অ্যাপে গিয়ে “টোল” অপশনের অধীনে “মোটরযান রেজিস্ট্রেশন করুন” এ প্রবেশ করে গাড়ির নম্বর ও চেসিস নম্বরের শেষ ৪ (চার) ডিজিট প্রদান করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। সফল রেজিস্ট্রেশনের পর ফিরতি এসএমএসে একটি Ekpass ID প্রেরণ করা হবে।
এই Ekpass ID ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাপের “Pay Bill” অপশনের “D-Toll Top-Up” সেবার মাধ্যমে রিচার্জ করতে হবে। এরপর পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজার নিকটস্থ রেজিস্ট্রেশন বুথে বিআরটিএ অনুমোদিত RFID ট্যাগ প্রথমবারের মতো যাচাই করে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। একবার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে, যানবাহন কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিতে ETC লেন ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারবে।
১৮ অক্টোবর সেতু বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ পদ্মা সেতুর ইটিসি বুথ পরিদর্শন করেন এবং ইটিসি সেবা ব্যবহার করে পদ্মা সেতু পারাপার করেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ETC সিস্টেমের লাইভ পাইলটিং কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এই সেবার পরিসর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে ETC সিস্টেমের মাধ্যমে মোট ১,৮১৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং মোট ৩৪,৯১,৭০০ টাকা টোল আদায় সম্পন্ন হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মহোদয়ের বিশেষ নির্দেশনা ও দিকনির্দেশনায় পদ্মা সেতুতে এই ETC সিস্টেম বাস্তবায়িত হয়েছে। এটি দেশের টোল ব্যবস্থাপনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা সময়, জ্বালানি ও মানবসম্পদের অপচয় হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপ এই সেবার আওতায় যুক্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর a2i (এটুআই) কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং নতুন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে সংযুক্তির কাজ অব্যাহত রয়েছে।
এই টোল কালেক্টর ব্যতীত নন স্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেমের মাধ্যমে পদ্মা সেতু ব্যবহারকারীরা দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছভাবে টোল পরিশোধ করতে পারবেন—যা বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদাতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠান ২০২৫ আজ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহিদ ৫৮ টি পরিবার এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শহিদ ১৯টি পরিবারের সদস্যদের মাঝে পরিবার প্রতি ১০ লক্ষ টাকা করে, মোট ৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, "শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। ঐতিহাসিক শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের আজকের এই স্বীকৃতি তারই প্রমাণ।" শহীদ পরিবারদেরকে স্বীকৃতি দিতে পেরে সরকার গর্বিত উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন ইতিহাস থেকে যেনো কেউ ঐতিহাসিক শাপলা চত্বরের শহীদদের নাম মুছতে না পারে, এজন্য শাপলা চত্বরেই খোদাই করে লেখা হবে শহীদদের নাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন,"শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহিদদের আর্থিক সহায়তা প্রদান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ।" এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়ার সূচনা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মোদি বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, "স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এই মহতী উদ্যোগে সারা বাংলার আলেম সমাজ সম্মানিত হয়েছে। "
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবি পার্টির চেয়ারম্যান জনাব মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি জনাব নুরুল হক নুর, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া।
‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঐক্য ও সংস্কারের পথে বড় ধরনের অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
তিনি আরও বলেন, এটি ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।
শুক্রবার ফেসবুক পোস্টে মিলার লেখেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে আমি আনন্দিত। এই দলিল মৌলিক সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গড়ে ওঠা ব্যাপক ঐকমত্যের প্রতিফলন।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। ২০২৬ সালের নির্বাচনের পথে দেশটি ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এটি তারই প্রমাণ।
‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ মোট ২৫টি রাজনৈতিক দল যোগ দেয়।
অনুষ্ঠানে মিলারের উপস্থিতি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও শাসনব্যবস্থা সংস্কারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগীতা অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত বহন করে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের পক্ষে তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
এ লক্ষ্যে ইইউ কারিগরি সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর প্রস্তাবও দিয়েছে। এসব উদ্যোগ গণতান্ত্রিক চর্চা ও টেকসই উন্নয়নের প্রতি ইইউর প্রতিশ্রুতির অংশ। সূত্র: বাসস
ইতালির রোমে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব খাদ্য ফোরাম ২০২৫-এ যোগ দিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে আরও রয়েছেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান ও অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি উইং) ড. মো. মাহমুদুর রহমান।
উপদেষ্টার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল ফোরামে দেশের কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিয়ে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সদস্য দেশসমূহের সাথে বিভিন্ন সেশনে অংশগ্রহণ করবে। সফরকালে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা ইতালির ইন্টেরিয়র মিনিস্টার এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতালির রোমস্থ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য এ ফোরাম ১০ অক্টোবর শুরু হয়ে চলবে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত। সূত্র: বাসস
মন্তব্য