× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The longest national hero in South Asia
google_news print-icon

দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘকালীন দেশনায়ক

দক্ষিণ-এশিয়ার-দীর্ঘকালীন-দেশনায়ক
২০১৯ সালে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
বাংলাদেশের ১৩ জন প্রধানমন্ত্রীর আর কেউ এত দীর্ঘ সময় দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ পাননি। এমনকি দক্ষিণ এশিয়াতেও আর কোনো রাজনীতিবিদের জীবনে এ সুযোগ আসেনি। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ১৭ বছর দেশ শাসন করেছেন। হিসেবের খাতা বলছে, প্রায় ১৮ বছর দেশ পরিচালনা করছেন শেখ হাসিনা। 

১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা যখন প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন, তখন তার বয়স ৪৯ বছর। আর ২০১৯ সালে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর শপথ নেয়ার সময় তিনি ৭২ বছরের এক অভিজ্ঞ রাষ্ট্রনায়ক।

বাংলাদেশের ১৩ জন প্রধানমন্ত্রীর আর কেউ এত দীর্ঘ সময় দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ পাননি। এমনকি দক্ষিণ এশিয়াতেও আর কোনো রাজনীতিবিদের জীবনে এ সুযোগ আসেনি। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ১৭ বছর দেশ শাসন করেছেন। হিসেবের খাতা বলছে, প্রায় ১৮ বছর দেশ পরিচালনা করছেন শেখ হাসিনা।

বিশ্লেষকরা বলেন, দীর্ঘ সময় ও টানা নেতৃত্বের সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক হলো, একটি ভিশন বা স্বপ্নের পথে দেশকে পরিচালিত করতে পারা। দীর্ঘ সময় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং মানব সম্পদের যে অগ্রগতি হয়েছে, তা সারা বিশ্বে স্বীকৃত।

অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়নচিন্তক কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ এ বিষয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে যে চেতনায়, সেই চেতনাটা হচ্ছে, সবাইকে নিয়ে দেশটা এগিয়ে যাবে। এটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যক্তিগত চিন্তা। সেটি শেখ হাসিনা ধারণ করেন। সেটা ২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, এই দেশে একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক কল্যাণ রাষ্ট্র তৈরি করা হবে। কল্যাণ রাষ্ট্র মানে সবাইকে নিয়ে।’

বৈশ্বিক মহামারি করোনার মধ্যেও যে কটা দেশ এগিয়ে আছে, তার একটা বাংলাদেশ বলে জানান তিনি। বলেন, ‘এসডিজির কিছু কিছু লক্ষ্য অর্জনেও আমরা সেরার মধ্যে আছি। সে জন্য প্রধানমন্ত্রীকে এসডিজি সলিউশন নেটওয়ার্ক অগ্রগতি সম্মাননা দেয়া হয়েছে।’

কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে অর্থনীতির পাশাপাশি সামাজিক অনেক সূচকেও অগ্রগতি এসেছে।

করোনা শুরুর আগে দেশে দরিদ্রের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিশুমৃত্যুর হার কমেছে, মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে, প্রত্যাশিত যে জীবন একজন মানুষের, সেটার মান বেড়েছে, প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। করোনা শুরু হওয়ার আগের বছর আমরা ৮ দশমিক ২ শতাংশ অর্জন করেছি। দক্ষিণ এশিয়ায় এসব ক্ষেত্রে আমার সবার চেয়ে এগিয়ে আছি।’

২০১৬ থেকে টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘এর মূল কথাটা হচ্ছে কাউকে বাদ দেয়া যাবে না। তার মানে বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে, দুর্নীতি হবে না, বাস্তবায়ন স্বচ্ছ হবে।’

দুর্নীতি, বৈষম্য কিংবা বাস্তবায়নের গাফিলতি, গ্রামের উন্নয়ন-এই বিষয়গুলো আওয়ামী লীগ ২০১৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে চিহ্নিত করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন তিনি।

বলেন, ‘তার মানে হচ্ছে, এগিয়ে যাচ্ছি। তার সঙ্গে কিছু সমস্যা থাকবে এবং সেই সমস্যা নতুন করে আবার সৃষ্টি হতে পারে, কিন্তু সাধারণত সরকারের লোকজন এসব স্বীকার করে না। এটা তার দূরদর্শী চিন্তার একটা দিক। যে সমস্যাগুলো আছে, যে সমস্যাগুলো আসতে পারে, সেগুলো ২০১৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে চিহ্নিত করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ‘বাংলাদেশকে অন্য উচ্চতায়’ দেখতে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার যে জাতিসংঘের স্বীকৃতি, সেটা আমরা পেয়েছি। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, জিডিপির পরিমাণ বেড়েছে, আকার বেড়েছে। বাংলাদেশের ভেতরে যে উন্নয়ন, মেগাপ্রজেক্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে, বলা যায় বর্তমান যে বাংলাদেশ- এটির রূপকার বা এটি বাস্তবায়ন করা সবই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান।’

দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘকালীন দেশনায়ক

শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ ভাবমূর্তি বদলে গেছে বলেও মনে করেন এই অধ্যাপক।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশের যে পরিচয়টা ছিল, বিশেষ করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি অথবা ক্ষুধা দারিদ্র্যপীড়িত একটি রাষ্ট্র মনে করা হতো, সেই ভাবমূর্তি উনি পুরোপুরি মুছে দিতে পেরেছেন।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ ‍মজিবুর রহমানের পররাষ্ট্রনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’- এটাকে অনুসরণ করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কূটনৈতিক সাফল্য পেয়েছেন বলে মনে করেন এ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক।

তিনি বলেন, ‘গত ২০ বছর ধরে বা স্নায়ুযুদ্ধের পর থেকে বিশ্বায়নের যে ব্যাপক প্রসার ঘটেছে, সেখানে একটি দেশকে শক্তিশালী করার জন্য যে ধরনের বিনিয়োগ, যে ধরনের বাণিজ্য, যে ধরনের রেমিট্যান্স অপরচুনিটি তৈরি করা দরকার ছিল, সেগুলো তিনি করেছেন। এবং তার নেতৃত্বেই এসব হয়েছে।’

বহির্বিশ্বের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি’কেও বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, ‘শক্তিশালী রাষ্ট্র বলি বা মধ্য পর্যায়ের শক্তি, সব দেশের সঙ্গে একটা ভারসাম্যপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে পেরেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখা যে দেশগুলো আছে, আমরা যদি পশ্চিমা দেশগুলোর কথা বলি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা যুক্তরাজ্য এবং তাদের সঙ্গে ভীষণভাবে ঘনিষ্ঠ ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আইএমএফ-এর সহযোগিতা নিয়ে একদিকে বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা।

‘অন্যদিকে, ভারত এবং চীনের সহায়তা নেয়া, বাংলাদেশের অনেকগুলো মেগা প্রজেক্টে চীন এবং ভারতের যুক্ততা আছে, সেটাও একটা সুযোগ। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের উন্নয়নের সঙ্গে জাপান যুক্ত আছে। তারা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দ্বিপাক্ষিক দাতা রাষ্ট্র। ফলে জাপানের ইনভলবমেন্ট এবং রাশার মতো একটা দেশকে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে ইনভলব করা– এগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী এবং কার্যকর ভারসাম্যপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক।’

সরকারের ধারাবাহিকতার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুযোগ পেয়েছেন দেশকে এগিয়ে নেয়ার। আর এ কারণেই বিশ্বসভায় বাংলাদেশকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয় বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক দেলোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে এখন বহির্বিশ্বে কাউন্ট করা হয়, হিসেব করা হয়। বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার, দক্ষিণ এশিয়ার ভেতরে বা উন্নয়নশীল বিশ্বে। শেখ হাসিনা অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছেন। ভারতের সঙ্গে সমুদ্র জলসীমা বিরোধ তিনি নিষ্পত্তি করেছেন, মিয়ানমারের সঙ্গে জলসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি করেছেন, ভারতের সঙ্গে স্থলসীমা বিরোধ, সেটি নিষ্পত্তি হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কূটনীতিকে তিনি শক্তিশালী করেছেন। উনি জলবায়ু কূটনীতিকে শক্তিশালী করেছেন।’

মিয়ানমারে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বের একটি বড় দিক বলে মনে করেন তিনি।

দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘তিনি তাদের শুধু আশ্রয়ই দেননি, তাদের প্রত্যাবাসনে কাজ করছেন। এ নিয়ে সারা বিশ্বে কথা বলছেন, এবারও জাতিসংঘের ভাষণে বিষয়টি তুলে ধরেছেন সংকট মোকাবিলায়।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাসনামলের ১৮ বছরে বড় ধরনের কোনো ক্ষোভ, জনরোষ দেখা যায়নি। রাজনৈতিক সভা, সেমিনার, সরকারের সমালোচনা থাকলেও বড় কোনো কর্মসূচি চোখে পড়েনি।

দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘকালীন দেশনায়ক
১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্তী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মানুষ কখন বিক্ষোভ করে, মানুষ কখন গণরোষে উদ্বুদ্ধ হয়? যখন আপনার চাহিদা পূরণ হবে না, যখন আপনি খেতে পাবেন না, যখন আপনার মাথার ওপর ছাদ থাকবে না, যখন আপনার সন্তানদের লেখাপড়া হবে না, যখন মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাচ্ছে, জীবনযাত্রার মান নিচে নেমে যাচ্ছে, তখনই মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে আনরেস্ট তৈরি করে।’

তিনি বলেন, মানুষের যখন মৌলিক চাহিদা পূরণ হয়, তখন সে আসলে কোনো প্রকার বিক্ষোভে যায় না।

বঙ্গবন্ধুর অধরা স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথেই তার কন্যা শেখ হাসিনা হাঁটছেন বলে মন্তব্য এই শিক্ষকের। তিনি বলেন, ‘টানা তিন দফায় ক্ষমতায় আছেন প্রধানমন্ত্রী, আমার মনে হয়েছে বঙ্গবন্ধুর যে পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে ক্ষুধাহীন, দারিদ্র্যহীন একটা রাষ্ট্র তৈরি করা, যেখানে সবাই মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে – মূলত এটাই তিনি ধারণ করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা হিসেবে। আসলে তো তার শরীরে বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। সেটিকে তিনি ধারণ করেছেন।’

প্রধানমন্ত্রীর ‘ভারসাম্যপূর্ণ রাজনীতি’কে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার একটি বিশেষ দিক বলে মনে করেন গোবিন্দ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী দুটো দেশ, ভারত ও চীন, আঞ্চলিক রাজনীতিতে তাদের যে প্রভাব, এ প্রভাবের মধ্যেও ব্যালেন্সড কন্টেইনমেন্টের মধ্য দিয়ে তিনি উভয়পক্ষকে ডিল করে সামনের দিকে এগুচ্ছেন।’

এ কারণেই শেখ হাসিনা দেশের গণ্ডি ছাপিয়ে বিশ্বনেতা হয়ে উঠছেন বলেও মন্তব্য তার।

গোবিন্দ চক্রবর্তী বলেন, ‘পররাষ্ট্রনীতিতে তার যে দক্ষতা এবং তিনি যেভাবে এ জায়গাটা নিয়ন্ত্রণ করছেন বা সামাল দিচ্ছেন, আমার ধারণা এই কারণেই তিনি বৈশ্বিক পরিসরে একজন রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে আর্বিভূত হতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি এখন শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নন, সাউথ এশিয়ার দু-একজনের নাম যদি বলতে হয়, বিশ্বনেতৃত্বের মধ্যে যারা আছেন, শেখ হাসিনার নাম, কিন্তু কোনোভাবে পেছনে আসবে না।’

বিশ্বে দীর্ঘ সময় ধরে অনেকেই ক্ষমতায় থাকলেও মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর যে কর্মপ্রয়াস সেটাই শেখ হাসিনাকে সবার চেয়ে আলাদা করেছে বলে মনে করেন তিনি।

এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র দূরীকরণ, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন – এই যে কতগুলো জায়গা, এই জায়গাগুলো চিন্তাই করা যায় না। আমরা তো লম্বা সময় ধরে অনেককেই ক্ষমতায় দেখেছি, কিন্তু মানুষের উন্নয়ন চিন্তাকে কেন্দ্রে নিয়ে, মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে, যে কথাটা তিনি বারবার বলেন, এটা তিনি শুধু বলেন না, আন্তরিকভাবে ধারণ করেন।’

আরও পড়ুন:
শেখ হাসিনার বহরে হামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব গড়তে প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ প্রস্তাব
‘মুকুটের মণি’ শেখ হাসিনা
টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে প্রধামন্ত্রীর ছয় দফা

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Singras ruble received grief from the team
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে ‘অপরহরণ ও মারধর’

দল থেকে শোকজ পেয়েছেন সিংড়ার রুবেল

দল থেকে শোকজ পেয়েছেন সিংড়ার রুবেল সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল হাবীব‌ রুবেল। ছবি: সংগৃহীত
এর আগে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও লুৎফুল হাবীব রুবেলকে শোকজ করা হয়েছে।

নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল হাবীব রুবেলকে কারণ দর্শোনোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ।

শুক্রবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস স্বাক্ষরিত চিঠিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ ইস্যু করা হয়।

নোটিশে বলা হয়, ‘গত ১৫ এপ্রিল নাটোর জেলা নির্বাচন কমিশন অফিসের সামনে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পাশার মনোনয়নপত্র জমাদানে বাধা প্রদান, মারপিট ও অপহরণের ঘটনা যা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হয় এবং উক্ত ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি সুমনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে আপনার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, যা দলীয় আচরণবিধি পরিপন্থির সামিল।

‘এমতাবস্থায় কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার জবাব আগামী ৩ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

ওই সময়ের মধ্যে জবাব না দিলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

শোকজের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় দলীয় তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই তাকে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাবের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন সোমবার বিকেলে সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পাশা অনলাইনে আবেদনের পর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে মনোনয়নপত্রের প্রতিলিপি জমা দিতে আসেন। সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাকে মারধর করে কালো মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে আবারও বেধড়ক মারধর করে বাড়ির সামনে ফেলে যায়। সেখান থেকে পরিবারের সদস্যরা তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন।

এ ঘটনায় দেলোয়ার হোসেনের পরিবার লুৎফুল হাবীব রুবেল ও তার সমর্থকদের দায়ী করে আসছে। ইতোমধ্যে তাদের করা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত সুমন নামের এক আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন যে, লুৎফুল হাবীব রুবেলের পক্ষ নিয়েই সুমনসহ অন্য আসামিরা দেলোয়ার হোসেন পাশাকে অপহরণ ও মারধর করেছেন।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় রুবেলকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

লুৎফুল হাবীব‌ রুবেল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে তার। তিনি প্রতিমন্ত্রীর শ্যালক।

আরও পড়ুন:
সিংড়া উপজেলা নির্বাচনে সেই প্রার্থীকে ইসিতে তলব
নাটোরে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী ও ভাইকে অপহরণ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
BNP leaders speech is like a circus Foreign Minister

বিএনপি নেতাদের বক্তব্য সার্কাসের মতো: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বিএনপি নেতাদের বক্তব্য সার্কাসের মতো: পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: নিউজবাংলা
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মৃত্যুঞ্জয়ী শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বিচলিত হননি, বরং আরো দৃপ্ত পদভারে জনগণের সংগ্রামের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়েছেন, দেশকে বিশ্বের বুকে মর্যাদা ও সম্মানের আসনে আসীন করেছেন।

বিএনপির নেতাদের বক্তব্য সার্কাসের মতো মনে হয় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ-পিআইবির মহাপরিচালক একুশে পদকে ভূষিত সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদ গ্রন্থিত ‘ভুবনজোড়া শেখ হাসিনার আসনখানি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপি আবার বিদেশি দূতাবাসে ধরনা দিচ্ছে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, যে কোনো কিছুতেই বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়া বিএনপির সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দুর্বলতা। বাংলাদেশে ক্ষমতার উৎস জনগণের কাছে না গিয়ে বিদেশিদের কাছে গেলে বিদেশিরা তো বিএনপিকে কোলে করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাসী। জনগণই ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। ফলে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য সার্কাসের মতো মনে হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মৃত্যুঞ্জয়ী শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বিচলিত হননি, বরং আরো দৃপ্ত পদভারে জনগণের সংগ্রামের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়েছেন, দেশকে বিশ্বের বুকে মর্যাদা ও সম্মানের আসনে আসীন করেছেন।

তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব বর্তমান বিশ্বে বিরল। তিনি শুধু দেশেরই নন, তিনি আজ বিশ্বনেতা। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, শেখ হাসিনা শুধু তারই নন, তার সন্তানদেরও প্রেরণা। ভারতের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে ধরে তাকে নিজের প্রেরণা বলে উল্লেখ করেছেন। ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আরব বিশ্বে একজন শেখ হাসিনা থাকলে হয়তো গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা যেতো।

হাছান বলেন, শুধু তাই নয়, যে কোনো বিশ্বসভায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যোগ দিলে তিনিই মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন।

মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি

এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ২৮৫ জন সদস্যকে মিয়ানমারের জাহাজে নৌপথে ফেরত যাওয়ার ক্লিয়ারেন্স দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, ২২ এপ্রিল জাহাজে তাদের ফেরত নিতে সম্মত মিয়ানমার। এ ছাড়া মিয়ানমারে আটকে পড়া ১৫০ জন বাংলাদেশিও একই জাহাজে ফেরত আসবে। তবে জাহাজের যাত্রা সমুদ্র ও মিয়ানমারের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পিআইবির কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Jails are the permanent residence of many BNP leaders Rizvi

কারাগারগুলো বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীর স্থায়ী আবাসস্থল: রিজভী

কারাগারগুলো বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীর স্থায়ী আবাসস্থল: রিজভী রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
রিজভী বলেন, বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী এখনো কারাগারে রয়েছেন। আর কয়েকজন ৩ থেকে ৪ মাস কারাভোগের পর বের হতে পেরেছেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দলের অনেক নেতাকর্মীকে সরকার কারাগারে নিক্ষেপ করে আলো-বাতাস থেকে বঞ্চিত করছে।

শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জিয়া প্রজন্ম দল আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে রিজভী এ কথা বলেন। খবর ইউএনবির

তিনি আরও বলেন, বিনা কারণে মাসের পর মাস কারাগারে বন্দি থাকতে থাকতে কারাগারগুলো বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীর স্থায়ী আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে।

রিজভী বলেন, মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিবের মতো শীর্ষ নেতারা তিন-চার মাস ধরে কারাভোগ করে মুক্তি পেয়েছেন।

শেখ হাসিনার বিএনপি নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠানোর নীতি এখনো শেষ হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিএনপিকে ভয় পান এবং জানেন যে তার পক্ষে কোনো জনসমর্থন নেই।

জনগণের সমর্থনহীন সরকার স্বৈরাচারী হয়ে যায় উল্লেখ করে রিজভী বলেন, জনগণ যখন অধিকারের জন্য আওয়াজ তোলে তখন তারা দমন করে।

এই বিএনপি নেতা বলেন, তারা দমন-পীড়নের সব উপায় অবলম্বন করে, যেমন- আটকে রাখা, নির্যাতনের জন্য আয়না ঘর তৈরি করা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে হত্যা করা এবং বিরোধী দলকে ঘায়েল করতে দলীয় ক্যাডারদের ব্যবহার করা।

তিনি দাবি করেন, ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপির ২৫ থেকে ২৬ হাজার নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে।

রিজভী আরও বলেন, বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী এখনো কারাগারে রয়েছেন। আর কয়েকজন ৩ থেকে ৪ মাস কারাভোগের পর বের হতে পেরেছেন।

বিএনপির এত সদস্য কেন কারাগারে, তার কোনো সদুত্তর সরকারের কাছে আছে কি না জানতে চান রিজভী।

অবৈধভাবে অর্জিত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্যই প্রধানমন্ত্রী এসব করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
No political case against BNP PM

বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী

বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “তারা (বিএনপি) যেভাবে বলছে তাদের ৬০ লাখ লোক গ্রেপ্তার হয়েছ, ৬০ লাখ লোক ধারণ করার ক্ষমতাও নাই এসব জেলে। তারপরও যতটুকু ধারণ ক্ষমতা আছে সবই বিএনপির লোক এটাই তো তারা বলতে চাচ্ছে। তার মানে বাংলাদেশে যত অপরাধ সব অপরাধ করে বিএনপি।”

বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলাই রাজনৈতিক নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অগ্নিসংযোগ, গ্রেনেড হামলা, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান ও দুর্নীতির মতো সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তরাই এ সংক্রান্ত মামলার আসামি হয়েছেন।

তিনি বলেন,“আজকে তারা (বিএনপি) সব জায়গায় কান্নাকাটি বলছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা। তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে মামলাগুলো কীসের মামলা? অগ্নিসন্ত্রাস, অস্ত্রপাচার, গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা। তারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সেটাই তো বাস্তবতা।”

এসব মামলাগুলো দ্রুত শেষ করে এগুলোর শাস্তি দিয়ে দেয়া উচিত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা শুক্রবার সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে দেয়া ভাষণে এসব কথা বলেন। খবর বাসসের

২০১৩ ও ১৪ সালে নির্বাচন বানচালের জন্য এবং পরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাস ও সহিংসতার প্রসংগ টেনে তিনি বলেন, তারা ৩ হাজার ৮০০ গাড়ি পুড়িয়েছে, বাস, লঞ্চ ও রেল পুড়িয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না তো কি হবে।

তিনি বলেন, ওদের বিরুদ্ধে কোনো মামলাইতো পলিটিক্যাল মামলা না, প্রত্যেকটা মামলা হচ্ছে অগ্নিসন্ত্রাসের মামলা। তারা মানুষ হত্যা করেছে আগুন দিয়ে। নির্বাচন ঠেকাতে যেয়ে তারা রেলে আগুন দিয়ে মা-শিশুকে পুড়িয়ে মেরেছে, যারা এগুলো করলো তাদের বিরুদ্ধে কি মামলা হবে না?

“যারা এগুলো করলো তাদের বিরুদ্ধে কি মামলা হবে না? তাদেরকে কি মানুষ পূজা করবে,” সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।

বিএনপির নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কান্নাকাটি করে তারা সব জায়গায় বলছে এত লাখ লোক তাদের গ্রেপ্তার। সারা দেশে যত জেলখানা আছে সেগুলোর একটা ধারণ ক্ষমতা রয়েছে, তারা যত লক্ষ গ্রেপ্তার হয়েছে বলছে জেলখানাগুলোর তত ধারণ ক্ষমতা নেই।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “তারা (বিএনপি) যেভাবে বলছে তাদের ৬০ লাখ লোক গ্রেপ্তার হয়েছ, ৬০ লাখ লোক ধারণ করার ক্ষমতাও নাই এসব জেলে। তারপরও যতটুকু ধারণ ক্ষমতা আছে সবই বিএনপির লোক এটাই তো তারা বলতে চাচ্ছে। তার মানে বাংলাদেশে যত অপরাধ সব অপরাধ করে বিএনপি।”

শেখ হাসিনা বলেন, তাদের ভাগ্য ভালো আমরা ক্ষমতায় আছি, আমরা তাদের মতো প্রতিশোধপরায়ণ না, তাই তারা এখনো কথা বলার সুযোগ পায়। তারা সারাদিন কথা বলে মাইক লাগিয়ে, তারপর বলবে কথা বলার সুযোগ পায় না।

বিরোধী দলে থাকার সময়কার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অফিসেতো আমরা ঢুকতেই পারতাম না। কীভাবে তারা অত্যাচার করেছে আমাদের ওপর, আমরা তো তার কিছুই করি নাই। আমরা প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত থাকিনি। আমরা আমাদের সব শক্তি-মেধা কাজে লাগিয়েছি দেশের উন্নয়নে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাংক অনুসরণ করে সমবায় ভিত্তিক কৃষি নিশ্চিত করে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি দেশের প্রতি ইঞ্চি অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনার মাধ্যমে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোর জন্য তার আহবান পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমবায় ভিত্তিক কৃষি চালু করে জমির আইল দূর করে বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি রক্ষা করা যেতে পারে। কৃষিতে গবেষণার পাশাপাশি কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “কৃষি গবেষণায় বাংলাদেশ সবচেয়ে সফল। আমাদের সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের উদ্যোগে কৃষিখাতের উন্নয়ন এবং খাদ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থানার পদক্ষেপ সমূহের চুম্বকাংশ তুলে ধরে বলেন, “বাংলাদেশের কৃষি উন্নত হয়েছে, কারণ সরকার কৃষিখাতের গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার কৃষি খাতে ২৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপের ফলে দেশের খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে।

তিনি বলেন, “একসময় যারা নুন-ভাত বা ডাল-ভাতের কথা ভাবতেন, তারা এখন মাছ-মাংস-ডিমের কথা ভাবেন। তাই যারা সরকারের সমালোচনা করেন, তাদের বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত যে, বাংলাদেশ উন্নত হয়েছে কি না।”

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান সংগঠনের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
BNP leaders meeting with British High Commissioner

ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাইকমিশনারের বারিধারার বাসায় যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ দলের তিন নেতা। এ সময় হাইকমিশনের রাজনৈতিক শাখার দুজন কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি নেতারা। ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারের সঙ্গে এটাই বিএনপির নেতাদের প্রথম বৈঠক।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাইকমিশনারের বারিধারার বাসায় যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ দলের তিন নেতা। এ সময় হাইকমিশনের রাজনৈতিক শাখার দুজন কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।

হাইকমিশনারের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) বৈঠকের কারণ উল্লেখ করে ব্রিটিশ হাইকমিশন লিখেছে, হাইকমিশনার সারাহ কুক আজ (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) রাজনৈতিক কৌশল বুঝতে দলটির নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন।

ওই লেখায় বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সঙ্গে হাইকমিশনার সারাহ কুকের একটি ছবিও সংযুক্ত করা হয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Awami League sunk their own boat Moin Khan

আওয়ামী লীগ নিজেরাই তাদের নৌকা ডুবিয়েছে: মঈন খান

আওয়ামী লীগ নিজেরাই তাদের নৌকা ডুবিয়েছে: মঈন খান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। ফাইল ছবি
বিএনপির এই বর্ষীয়াণ নেতা বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ছাড়া এবং এই সরকার ও তাদের সাজানো নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে আমরা যাবো না। তবে গ্রাম-গঞ্জে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কে যাবে কে যাবে না সেটা তো বিএনপি দলীয়ভাবে দেখতে পারে না।’

আওয়ামী লীগ তাদের নৌকা নিজেরাই ডুবিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।

বিএনপির সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক হৃদরোগে আক্তান্ত ডা. পারভেজ রেজা কাকনের শারীরিক খোঁজ-খবর নিতে বৃহস্পতিবার রাজধানীর মগবাজারে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় তিনি অসুস্থ কাকনের শারীরিক ও পারিবারিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।

উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির এই বর্ষীয়াণ নেতা বলেন, বাংলাদেশে অতীতে কখনোই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হয়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তা দলীয় প্রতীকে শুরু করেছে।

‘৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে বর্জনের পর তারা বুঝতে পেরেছে যে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করা হলে দেশের সামাজিক কাঠামোটা ভেঙে যাবে। তারা নিজেদের নৌকা নিজেরাই ডুবিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ছাড়া এবং এই সরকার ও তাদের সাজানো নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে আমরা যাবো না। তবে গ্রাম-গঞ্জে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কে যাবে কে যাবে না সেটা তো বিএনপি দলীয়ভাবে দেখতে পারে না।’

মঈন খান বলেন, বিরোধী দলকে দমনের জন্য সরকার হামলা-মামলাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। তবে এসব করে ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনেও তারা দেশের মানুষকে ভোট কেন্দ্রে নিতে পারেনি।

‘ভয় দেখিয়ে মানুষকে দমিয়ে রাখতে চায়। দেশের জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ করেছে। তারা ভোট কেন্দ্রে যায়নি। কারণ এই ভোটের ওপর তাদের আস্থা নেই।’

মঈন খান বলেন, ‘দল গোছানো ও সংগঠন পুনর্গঠন করা চলমান প্রক্রিয়া। রাজনীতি কোনো কাপড় নয় যে, সাজিয়ে গুছিয়ে আলনা বা আলমারিতে রাখা যায়। সরকারকে বলবো- প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে আদর্শের রাজনীতিতে ফিরে আসুন। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবো, ইনশাআল্লাহ।’

আরও পড়ুন:
মেজর হাফিজ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও আক্রোশের শিকার: মঈন খান
বাংলাদেশ আজ ডামি সোনার বাংলা: মঈন খান
তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে আ.লীগ সরকার: মঈন খান
নির্বাচনে ৫ শতাংশ ভোট পড়বে কি না, সন্দেহ আছে: মঈন খান
প্রহসনের নির্বাচন করে আ.লীগ ক্ষমতায় টিকতে পারবে না: মঈন খান

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Awami League does not want candidates of relatives of ministers and MPs in the upazila

উপজেলায় মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রার্থিতা চায় না আওয়ামী লীগ

উপজেলায় মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রার্থিতা চায় না আওয়ামী লীগ
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দল চায় মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের নিজ পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনরা যেন এই নির্বাচনে অংশ না নেন। আজ (বৃহস্পতিবার) এক বৈঠকে সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি জানান। আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও জেলা-উপজেলায় তা জানাতে শুরু করেছি।’

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করতে কড়া নির্দেশনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

বৃহস্পতিবার দলটির এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এরপর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের মাধ্যমে তা বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জানিয়ে দেয়া হয়।

বৈঠকে উপস্থিত থাকা নেতাদের একজন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিকভাবে চান উপজেলা নির্বাচন প্রভাবমুক্ত হোক। সে কারণে দল চায় যে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের নিজ পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনরা যেন এই নির্বাচনে অংশ না নেন।’

‘আজ (বৃহস্পতিবার) দলের একটি বৈঠকে সাধারণ সম্পাদক আমাদেরকে বিষয়টি জানান। আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং জেলা-উপজেলায় তা জানাতে শুরু করেছি।’

এবার স্বতন্ত্র মডেলে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে নিজ নিজ এলাকায় রাজনৈতিক বলয় নিজেদের কব্জায় রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগের কিছু মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য। দলের হাইকমান্ড এই নির্বাচনে কাউকে সমর্থন না দেয়ার নির্দেশনা দিলেও এসবে কান দিচ্ছেন না তারা।

কোনো কোনো সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা তাদের স্ত্রী, সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনদের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন। নিজ দলের প্রভাবশালীদের এমন হস্তক্ষেপে ইতোমধ্যে তৃণমূলে নানামুখী বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরে জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো নিজেদের পরিবারের দখলে রাখার চেষ্টার পাশাপাশি উপজেলায় একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা। ভোটের মাঠে স্বজনদের জিতিয়ে আনতে নানামুখী কৌশল অবলম্বন শুরু হয়েছে। এতে তৃণমূলের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। এ নিয়ে তৃণমূল আওয়ামী লীগে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ।

দলীয় সূত্র জানায়, দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক নেতারা ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী এবং একজন প্রভাবশালী সংসদ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সন্তান বা নিকটাত্মীয়দের প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার থেকে দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকেরা নিজ নিজ বিভাগের মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের দলের এই নির্দেশ জানাতে শুরু করেছেন।

ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক দলীয় ও দলীয় স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দলের হাইকমান্ডের কাছে জমা পড়েছে। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। কেউ কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করলে তাদেরকে শো-কজ, সতর্কতা, তলবসহ বর্তমান দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে দলের হাইকমান্ডের।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর করার স্বার্থে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদেরকে নিজ পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’

বিএনপি ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বর্জন করায় ওই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে দলের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে উৎসাহ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে বিরোধ তৈরি হয়।

জাতীয় নির্বাচনের মাস তিনেকের মাথায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের পছন্দের ব্যক্তিদের প্রার্থী করা নিয়ে দলীয় বিরোধ আরও বেড়ে যাচ্ছে। এর রেশ ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় পড়তে শুরু করেছে।

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নিজের ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন কাজ না করার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। নাটোরে প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিবের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে।

এসবের পরিপ্রেক্ষিতে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। বৈঠকে ওবায়দুল কাদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দপ্তরকে সারা দেশে মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের মধ্যে যাদের স্বজন ও পরিবারের সদস্য নির্বাচন করছেন, সেই তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, এবার চার পর্বে দেশের ৪৮১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হতে যাচ্ছে। প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে ১৫২টি ও দ্বিতীয় ধাপে দেশের ১৬১টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরপর ২১ মে হবে দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ।

আরও পড়ুন:
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে বৈধ প্রার্থী ১৭৮৬ জন
উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিএনপির
উপজেলা নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ চান না প্রধানমন্ত্রী
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ১৮৯১ মনোনয়নপত্র দাখিল
নাটোরে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী ও ভাইকে অপহরণ

মন্তব্য

p
উপরে