× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Money is losing value
google_news print-icon

মান হারাচ্ছে টাকা

মান-হারাচ্ছে-টাকা
ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে। ফাইল ছবি
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে একই জায়গায় ‘স্থির’ ছিল ডলারের দর। গত ৫ আগস্ট থেকে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে। এখন প্রায় প্রতিদিনই ৫-৭ পয়সা করে বাড়ছে।

টাকার মান কমছেই। দেড় মাসের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে দশমিক ৬৫ শতাংশ দর হারিয়েছে বাংলাদেশের মুদ্রা টাকা। তবে পর্যাপ্ত রিজার্ভ থাকায় এতে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই বলে মনে করছেন অর্থনীতির গবেষকরা।

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে একই জায়গায় ‘স্থির’ ছিল ডলারের দর। গত ৫ আগস্ট থেকে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে। এখন প্রায় প্রতিদিনই ৫-৭ পয়সা করে বাড়ছে।

এই দেড় মাসে ডলারের বিপরীতে টাকা ৫৫ পয়সা দর হারিয়েছে। ৫ আগস্ট আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় বিক্রি হয়। রোববার বিক্রি হয়েছে ৮৫ টাকা ৩০ পয়সায়। আমদানি বাড়ায় ডলারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় শক্তিশালী হচ্ছে ডলার; বিপরীতে দুর্বল হচ্ছে টাকা।

মাঝে এক বছর ছাড়া প্রতি বছরই বাংলাদেশি টাকার মান কমেছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করে থাকে ডলারে। অনেকটা ‘রক্ষণশীল নীতি’ অবলম্বন করলেও আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১২ বছরে সেই ডলারের তুলনায় টাকার মান কমেছে প্রায় ২৪ শতাংশ।

অর্থাৎ ১২ বছর আগে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে যে পণ্য বা সেবা কিনতে ১০০ টাকা লাগতো, বর্তমানে তা কিনতে ১২৪ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এটি সরকারি হিসাবের তথ্য। বেসরকারি হিসাবে এই এক যুগে টাকার মূল্যমান আরও বেশি অর্থাৎ ২৯ শতাংশ কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এ বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুদ্রা বিনিময় হারের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে এ তথ্য মিলেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতি ডলারের বিনিময়ে পাওয়া যেত ৬৯ টাকা। আর রোববার প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৮৫ টাকা ৩০ পয়সা দরে। অথচ ২০১৭ সালের শুরুর দিকে প্রতি ডলারের মূল্যমান ছিল ৭৯ টাকা ৭৫ পয়সা।

তবে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক রোববার ৮৭ টাকা ২০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে। কিনেছে ৮৫ টাকায়।

অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যাংকের বাইরে (কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে) প্রতি ডলার ৮৯ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে রোববার।

বাংলাদেশে ডলার ও টাকার বিনিময় হার স্বাধীনতার পর থেকে সরকার নির্ধারণ করে দিত। টাকাকে রূপান্তরযোগ্য ঘোষণা করা হয় ১৯৯৪ সালের ২৪ মার্চ। আর ২০০৩ সালে এই বিনিময় হারকে করা হয় ফ্লোটিং বা ভাসমান। এর পর থেকে আর ঘোষণা দিয়ে টাকার অবমূল্যায়ন বা পুনর্মূল্যায়ন করা হয় না।

তবে বিনিময় হার ভাসমান হলেও পুরোপুরি তা বাজারভিত্তিক থাকেনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব সময়ই এতে পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ রেখে আসছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যাপারে অনুসরণ করে আসছে ‘ম্যানেজড ফ্লোটিং রেট’ নীতি।

ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

এদিকে বাজার স্থিতিশীল করতে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে ডলার বিক্রি শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রোববার পর্যন্ত ৬০ কোটি ডলারের মতো বিক্রি করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বাজারে ডলারের সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় অস্বাভাবিক দাম বাড়ার শঙ্কা নেই। রিজার্ভে পর্যাপ্ত ডলার জমা আছে। প্রয়োজনমতো সেখান থেকে ডলার বাজারে ছাড়া হবে।

অর্থনীতিবিদরা কী বলছেন

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টাকার অবমূল্যায়ন হলে রপ্তানিকারকরা সুবিধা পান, কিন্তু আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে মূল্যস্ফীতিতে চাপ পড়ার আশঙ্কা থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন কৃত্রিমভাবে ডলার কেনাবেচা করে পরিস্থিতি ঠিক রাখার চেষ্টা করছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত হবে এ বিষয়ে একটি সমীক্ষা করা।

‘সমীক্ষায় যদি দেখা যায়, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমলে মূল্যস্ফীতি বেশি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাহলে আর কমতে দেয়া ঠিক হবে না। মহামারির কারণে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর সব দেশেই মূল্যস্ফীতি হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের এখানেও যেন তেমনটি না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমদানি বাড়ায় ডলারের দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত অর্থবছরে প্রচুর রেমিট্যান্স আসায় ডলারের সরবরাহ বেড়ে গিয়েছিল। চলতি অর্থবছরে তেমনটি থাকবে বলে মনে হয় না। ইতিমধ্যে তার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে।

‘অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই-আগস্টে রেমিট্যান্স কমেছে। অন্যদিকে আমদানি অনেক বেড়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। আর চাহিদা বাড়লে যে কোনো পণ্যের দাম যেমন বাড়ে, ডলারের দামও তেমনি বাড়ছে। এটাই স্বাভাবিক। আর এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে হস্তক্ষেপ করে ডলারের দাম বাড়ার সুযোগ করে দিয়ে ঠিক কাজটিই করছে বলে আমি মনে করি।

‘এর ফলে রপ্তানি খাতের ব্যবসায়ীরা সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। টাকার মান বেড়ে গেলে অর্থনীতির এই দুই সূচকে নেতিবাচক প্রভাব পড়ত।’

আহসান মনসুর বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে প্রবাসী আয় বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। যদি রেমিট্যান্স প্রবাহ কমতে থাকে, তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এখানে এমন নিয়মিত হস্তক্ষেপ করতে হবে।

‘রেমিট্যান্স কমতে থাকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও ডলার বিক্রি করতে হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনী যন্ত্রপাতি– সব ধরনের পণ্যের আমদানি বাড়ছে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। বাংলাদেশে করোনা মহামারির মধ্যেই পুরোদমে উৎপাদন কর্মকাণ্ড চলছে।

‘সব মিলিয়ে আমদানি বাড়াটাই স্বাভাবিক। আর এটা অর্থনীতির জন্য মঙ্গল।’

তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ডলার বিক্রি করছে। এতদিন বাজার স্থিতিশীল রাখতে ডলার কেনা হয়েছিল। এখন সেই একই কারণে বিক্রি করা হচ্ছে।

‘এই কাজটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব সময়ই করে থাকে। যখন যেটা প্রয়োজন, সেটাই করা হয়।’

রেমিট্যান্স বাড়া ও আমদানি কমায় বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে সব মিলিয়ে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, যা ছিল অতীতের যে কোনো বছরের চেয়ে বেশি।

মহামারির মধ্যে ব্যবসায় মন্দার কারণে আমদানি কমে যায়। পাশাপাশি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন এবং রপ্তানি আয় বাড়ার কারণে দেশের ব্যাংকিং খাতে প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত ডলার জমা হতে থাকে। এ পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে ডলার কেনার এ রেকর্ড গড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর আগে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৫ দশমিক ১৫ বিলিয়ন (৫১৫ কোটি) ডলার কিনেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। গত অর্থবছরের আগে সেটিই ছিল সর্বোচ্চ ডলার কেনার রেকর্ড।

রপ্তানিকারকরা খুশি

টাকা অবমূল্যায়িত হওয়ায় খুশি দেশের রপ্তানিকারকেরা। কারণ এতে আগের তুলনায় বেশি আয় হচ্ছে তাদের। কিন্তু এই রপ্তানিকারকদের একটি অংশ যেখানে আমদানিকারক, সেই দিক থেকে তারা আবার নাখোশও।

সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, বাংলাদেশে রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি হচ্ছে। আবার প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের বড় অংশই আমদানিনির্ভর। তাই টাকার মূল্যমান কমে যাওয়ায় খুব বেশি লাভবান হতে পারছেন না এসব ব্যবসায়ী।

আর রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকা আরও খানিকটা অবমূল্যায়ন হলে করোনার এই কঠিন সময়ে রপ্তানি বাণিজ্য ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হতো।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমদানি-রপ্তানি দুটিই করি ডলারে। রপ্তানির পরিপ্রেক্ষিতে বিবেচনা করলে একটু একটু করে ডলারের দাম বাড়লে আমাদের উপকার হয়।

প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম, তুরস্ক ও ভারত ডলারের বিপরীতে তাদের মুদ্রার অনেক অবমূল্যায়ন ঘটিয়েছে বলে উদাহরণ দেন ফারুক।

টাকার মান কমছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বোচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতি ডলারের বিনিময়ে পাওয়া যেত ৬৯ টাকা। এরপর পাঁচ বছরে ডলারের বিপরীতে টাকা সাড়ে ৮ টাকার মতো দর হারায়।

আওয়ামীলীগ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ সালের আগস্টে ডলারের আন্তঃব্যাংক মুদ্রা বিনিময় হার ছিল ৭৭ টাকা ৪০ পয়সা। ২০১৫ সালের আগস্টে এই দর বেড়ে হয় ৭৭ টাকা ৮০ পয়সা। ২০১৬ সালের আগস্টে ডলারের দর ছিল ৭৮ টাকা ৪০ পয়সা।

২০১৭ সালের আগস্টে ডলারের দর বেড়ে হয় ৮০ টাকা ৭০ পয়সা। ২০১৮ সালের আগস্টে ডলারের দর ৮৩ টাকা ৭৫ পয়সা হয়।

২০১৯ সালের ১২ জানুয়ারি ডলারের দর ছিল ৮৪ টাকা ৯০ পয়সা। তবে এর পরপরই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপে ডলারের দর আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসে।

ওই বছরের ডিসেম্বর নাগাদ ডলারের দর একটু একটু করে বেড়ে আবার ৮৪ টাকা ৯০ পয়সায় উঠে আসে।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ডলারের দর ছিল ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সা। জুনে ওই দর ৮৪ টাকা ৮৫ পয়সায় নেমে আসে। এর পর থেকে ডলারের দর চলতি বছরের ৪ আগস্ট পর্যন্ত ৮৪ দশমিক ৮০ পয়সায় ‘স্থির’ ছিল।

অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন (দুই হাজার ৪৭৮ কোটি) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।

তবে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহে ধীরগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ৩৬৮ কোটি ১৬ লাখ ডলার এসেছে। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৯ দশমিক ৩০ শতাংশ কম।

অন্যদিকে মহামারির মধ্যেও ২০২০-২১ অর্থবছরের পণ্য রপ্তানি থেকে ৩৮ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন (তিন হাজার ৮৭৬ কোটি) ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।

ওই অর্থবছরে ৬৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন (ছয় হাজার ৫৬০ কোটি) ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের চেয়ে ১৯ দশমিক ৭১ শতাংশ বেশি।

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসের (জুলাই) আমদানির তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায় এই মাসে ৬৫৬ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। যা গত বছরের জুলাইয়ের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি।

সন্তোষজনক রিজার্ভ

আমদানি বাড়ার পরও বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ সন্তোষজনক অবস্থায় আছে। রোববার দিন শেষে রিজার্ভ ৪৬ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার।

গত ২৪ আগস্ট আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ১৪৪ কোটি ৮০ লাখ (প্রায় ১.৪৫ বিলিয়ন) ডলার এসডিআর (স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস) ঋণ রিজার্ভে যোগ হওয়ায় এক লাফে রিজার্ভ বেড়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অত্রিক্রম করে।

সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জুলাই-আগস্ট মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪৭ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে।

আরও পড়ুন:
গ্রাহকের মৃত্যুর সুযোগে ব্যাংকে ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ 
জাল টাকা চক্রের ৪ সদস্য কারাগারে
ঘরের দরজায় টাকা-চিরকুট রাখল কে
টাকার মান এখন পাকিস্তানি রুপির দ্বিগুণ
কার্যালয় থেকে টাকা চুরির অভিযোগ তোলা পিআইওর বদলি

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
On the occasion of the martyrdom anniversary of Shaheed President Ziaur Rahman
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে

জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতির আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত

জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতির আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে গত ০২ জুন, সোমবার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতি।

জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গোলাম মরতুজা, মোঃ ফয়েজ আলম ও মোঃ আশরাফুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সংগঠনের সভাপতি সাইফুল আবেদিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভা সঞ্চালনায় ছিলেন কার্যকরী সভাপতি শাহ জাহান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এস. এফ. এম. মুনির হোসেন, সহসভাপতি মজিবুর রাহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ছানোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Return is not obligated to get a credit card and trade license purchased by savings

সঞ্চয়পত্র কেনা, ক্রেডিট কার্ড ও ট্রেড লাইসেন্স নিতে রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা নেই

সঞ্চয়পত্র কেনা, ক্রেডিট কার্ড ও ট্রেড লাইসেন্স নিতে রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা নেই

১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনায় আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। আবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার সময় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। ট্রেড লাইসেন্স নিতেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দাখিলের বাধ্যবাধকতায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্রের বাধ্যবাধকতায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে। এত দিন ৪৬টি সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা ছিল।

এখন ১১ ধরনের সেবা নিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) সিস্টেম জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্র দাখিল করলেই হবে। ওই ১১টি সেবা হলো সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে; সমবায় সমিতির নিবন্ধন প্রাপ্তিতে; সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ারের নতুন লাইসেন্স গ্রহণে; ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও নবায়নে; চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, অ্যাকচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণে; পাঁচ লাখ টাকার অধিক পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়; এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মচারীর কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্ট্যাম্প, কোর্ট ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তিতে; ত্রি-চক্র মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নে; ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Proposes to increase the special advantage of government employees in the budget

বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব

বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আজ সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও দেশের ইতিহাসে ৫৪তম বাজেট।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ১২.৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।

তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, ২০১৫ সালের পর এখন পর্যন্ত বেতন কাঠামো প্রণীত না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Online shopping will be more expensive

অনলাইন কেনাকাটা হবে আরও ব্যয়বহুল

অনলাইন কেনাকাটা হবে আরও ব্যয়বহুল

ঘরে বসে যেসব ক্রেতারা কেনাকাটা করতে চান, তাদের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনাকাটা আগামী অর্থবছর থেকে খানিকটা ব্যয়বহুল হতে পারে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ই-প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় থেকে কমিশনের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্যের দাম বেশি হতে পারে।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ভ্যাটের হার ছিল ৫ শতাংশ।

জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশে ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে ভিন্ন আঙ্গিকে পেশ হলো বাজেট। এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বাজেট উপস্থাপন করার পর ৩০ জুন তা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর করা হবে।

তবে অতীতের রেওয়াজ মেনে বাজেট ঘোষণার পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বাজেট নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া পুরো জুন মাসজুড়ে অংশীজনদের মতামত নেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Inflation will come down to 5 percent this June Finance Advisor 

চলতি জুনেই মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে : অর্থ উপদেষ্টা 

চলতি জুনেই মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে : অর্থ উপদেষ্টা 

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে সরকারের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করায় এবং সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাওয়ায় মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তার এ বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে আমাদের সরকার যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে তখন আমাদের সামনে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরে মানুষকে স্বস্তি দেয়া।

তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছি। এর ফলে নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে সহায়তা করতে সংকোচনমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনায় সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০.৮৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। আশার কথা হলো এবারের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্মরণকালের মধ্যে সবচাইতে স্থিতিশীল ছিল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সাথে এ লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।’

মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকা জরুরি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকা অত্যাবশ্যক। প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হওয়ায় এবং রপ্তানি স্থিতিশীল থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে আমরা বিগত ১৪ মে তারিখে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করেছি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In the twilight of international finance the new challenge of IMF

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী আর্থিক অস্থিরতা সামাল দিতে গঠিত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। এর মূল লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক মুদ্রানীতি সমন্বয় সাধন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উৎসাহ দেওয়া এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। বহু দেশ সংকটে পড়ে এই সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে- কেউ সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে, কেউ আবার দীর্ঘমেয়াদি ঋণনির্ভরতার ফাঁদে পড়ে গেছে।

আজ, যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য ক্রমশ পশ্চিমকেন্দ্রীকতা থেকে সরে পূর্ব ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন আইএমএফ তার প্রাসঙ্গিকতা ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে এক নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন।

ঋণ সহায়তা, নাকি ঋণের ফাঁদ?

আইএমএফ সাধারণত এমন শর্তে ঋণ দেয়, যার মধ্যে থাকে কঠোর ব্যয়সংযম, ভর্তুকি হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারমুখী সংস্কার; কিন্তু এই শর্তগুলো অনেক সময় জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। স্থানীয় শিল্প ধসে পড়ে, বৈষম্য বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে। আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞতা এর এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ২০১৮ সালে আইএমএফ ইতিহাসের বৃহত্তম ঋণ প্যাকেজ ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করে। ফল ছিল বিপরীত- মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, দারিদ্র্য আরও বেড়ে যায় এবং দেশটি আবার মন্দার মুখে পড়ে।

এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে শুধু অর্থনৈতিক সমীকরণ দিয়ে কোনো দেশের সামাজিক বাস্তবতা নির্ধারণ চলে না।

আইএমএফের নীতিনির্ধারণ কাঠামো এখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শক্তির ভারসাম্যের প্রতিচ্ছবি। উন্নত দেশগুলো (বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন) সংগঠনের ভোটের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অংশগ্রহণ প্রায় অনুপস্থিত। এই গণতান্ত্রিক ঘাটতি আজ দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গভীর অসন্তোষ ও অবিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

বিকল্প প্রতিষ্ঠানের উত্থান

এই প্রেক্ষাপটে বিকল্প আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন- নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (NDB), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB) এবং ল্যাটিন আমেরিকান রিজার্ভ ফান্ড (FLAR) নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে। (NDB) এর সহায়তা তুলনামূলকভাবে শর্তমুক্ত এবং অংশগ্রহণমূলক। এখানে প্রতিটি দেশের ভোটের ও প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ আছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলো আরও আগ্রহী করে তুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন শুধু আর্থিক বিকল্প নয়- এরা এক নতুন উন্নয়ন দর্শনের বাহক। সেই দর্শনে উন্নয়ন নির্ধারিত হয় স্থানীয় বাস্তবতা ও প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে, বাইরের চাপ বা রূঢ় শর্ত নয়।

বিশ্ব আজ বহুমেরু। অর্থনৈতিক শক্তি ছড়িয়ে পড়ছে নানা অঞ্চলে। এই বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে আইএমএফকে নিজস্ব কাঠামো ও দর্শনে রূপান্তর আনতে হবে। প্রয়োজন গভর্ন্যান্সের সংস্কার, নীতিনির্ধারণে সমান অংশগ্রহণ, এবং সর্বোপরি সহানুভূতিশীল ঋণ নীতিমালা।

আইএমএফ যদি সত্যিই বৈশ্বিক আর্থিক স্থিতিশীলতার অভিভাবক হতে চায়, তাহলে তাকে হতে হবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক, এবং আঞ্চলিক বাস্তবতাসম্মত এটি শুধু আইএমএফের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন নয়; এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্ন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
There is no new surprise in the budget Devpriya Bhattacharya

বাজেটে নতুন চমক থাকছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বাজেটে নতুন চমক থাকছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ছবি: সংগৃহীত

জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচার হওয়া অর্থ জব্দ কর তা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার পরমর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময়ে এবারের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর এফডিসিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচারকৃত অর্থ জব্দের মাধ্যমে বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করলে তা হতে পারে এবারের বাজেটের একটি অভিনব উৎস।’

‘গত সরকারের রেখে যাওয়া বিদেশি ঋণের চাপ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এই সরকারের এই সময়ে অন্যতম সাফল্য ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধ করে বিদেশি ঋণের চাপ কমিয়ে আনা,’ যোগ করেন তিনি।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ঋণ বিলিয়ন ডলার করে বছর বছর বাড়ছিল। সামগ্রিকভাবে এই সরকারের সাফল্যের জায়গাটা হলো বহির্খাত, রেমিট্যান্স, রপ্তানি, দায়-দেনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, মজুদ বাড়ানো ও টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল রাখা।’

তবে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এবং করের আওতা বাড়ানোর মতো নতুন কোনো কিছু না থাকায় এবারের বাজেটে কোনো চমক থাকছে না।’

‘যে প্রকল্পগুলো সরকারের কাছে আছে, তা অতিমূল্যায়িত ও তার ৪০ শতাংশ ব্যয়ই ভুয়া। আগের যে প্রকল্পগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হতো, সেগুলো অব্যাহত আছে,’ বলেন তিনি।

সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘রাজস্ব ব্যয় সঠিকভাবে না করলে করদাতাদের উৎসাহ থাকে না। আমাদের কর কাঠামো বৈষম্যনির্ভর। আমাদের বৈদেশিক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা অর্জিত হলেও ব্যক্তি খাতে স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ এখনো আশানুরূপ অর্জিত হয়নি।’

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি নামের একটি বিতর্ক সংগঠন এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

‘রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা আসন্ন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজকে পরাজিত করে ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।

মন্তব্য

p
উপরে