জামালপুরগামী কমিউটার ট্রেনের ছাদে আঘাতে দুই যাত্রীর মৃত্যুর পর শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। উঠে আসছে ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তায় রেল কর্তৃপক্ষের নানা ব্যর্থতার কথা।
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনটি বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ময়মনসিংহ শহর পার হওয়ার পর ছাদে ওই দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়।
ছিনতাইকারীদের মারধরে ওই দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের। রেল পুলিশ প্রথমে ছিনতাইয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে রেল সেতুতে আঘাতের প্রসঙ্গ আনলেও পরে জানিয়েছে, দুষ্কৃতকারীদের আঘাতে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের ধারণা।
এ মৃত্যুর পর ময়মনসিংহ এলাকায় ট্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। জেলার বাসিন্দা ও যাত্রীদের অভিযোগ, ময়মনসিংহ এলাকায় ট্রেনের যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থ রেল কর্তৃপক্ষ। এখানে ছিনতাই ও পকেটমারির মতো ঘটনা অহরহই হয়।
ময়মনসিংহ রেল কর্তৃপক্ষও নিরাপত্তা নিয়ে তাদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, ট্রেনের যাত্রীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে লোকাল ট্রেনগুলোর বগিতে জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না।
বগিতে জায়গা না পেয়ে অনেক যাত্রী ছাদে উঠে পড়ে। রেলওয়ের কর্মকর্তারা বাধা দিলেও তারা মানেন না। লাফিয়ে ওঠে ছাদে। অরক্ষিত সেই ছাদেই অনেকে ছিনতাইয়ের শিকার হন।
বৃহস্পতিবারের মৃত্যুই অবশ্য এ রেলপথে প্রথম নয়। এর আগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে নেত্রকোণা থেকে আসা হাওর এক্সপ্রেস থেকে রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানা পুলিশ। ওই সময় এক ছিনতাইকারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়। ময়মনসিংহের গৌরীপুর স্টেশন থেকে শম্ভুগঞ্জ স্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে ছিনতাইয়ের ওই ঘটনাটি ঘটেছিল।
নিয়মিত ট্রেনে চলাচলকারী বেশ কয়েকজন যাত্রী জানান, ছিনতাইয়ের সময় মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেই শুধু নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। তবে ট্রেনে ছিনতাই ও চুরি এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন থামার পর পকেট থেকে মানিব্যাগ নিয়ে দৌড়ের ঘটনা ঘটে হরহামেশাই।
‘জন-উদ্যোগ’ ময়মনসিংহের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম চুন্নু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব রেল কর্তৃপক্ষের। ট্রেনের ছাদে যাত্রী ওঠার প্রক্রিয়াটা বন্ধ করা প্রয়োজন। আর যদি সেটা না হয়, তাহলে যাত্রীদের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আমরা ট্রেনে আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করতে চাই না।’
যাত্রীদের আইন মানাতে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে ময়মনসিংহ রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী নারায়ণ প্রসাদ সরকার বলেন, ‘বাংলাদেশে জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় ট্রেনে যাত্রীর চাপ বেশি। ট্রেনগুলোতে যাত্রী হুমড়ি খেয়ে পড়ে। বিশেষ করে লোকাল ট্রেনগুলোতে তিল ধারণের জায়গা থাকে না।
‘রেলওয়ের কর্মকর্তারা বাধা দিলেও কেউ মানে না। ফলে অরক্ষিত ছাদে মাঝেমধ্যেই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।’
তিনি জানান, ট্রেনের ছাদে ওঠার ব্যবস্থা পরিকল্পনা বন্ধ করে দেওয়া প্রয়োজন। যাতে কোনো যাত্রী ছাদে উঠতে না পারে। মৃত্যুর ঝুঁকি ছাদেই সবচেয়ে বেশি থাকে।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে মঙ্গলবার সড়ক দুর্ঘটনায় দুই স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়কে কটিয়াদী উপজেলার মধ্যপাড়া এলাকায় সকাল পৌনে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আলী আকবর (১৩) মধ্যপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সে মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. ফারুকের ছেলে। অন্যদিকে নিহত জুনায়েদ (১২) একই এলাকার ফেরদৌসের ছেলে। সে মধ্যপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয়দের ভাষ্য, বিদ্যালয়ের ক্রীড়া অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য তারা একটি মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিল। মধ্যপাড়া সড়কে একটি বাস তাদের চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই আলী আকবর নিহত ও জুনায়েদ আহত হয়। জুনায়েদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
সড়ক অবরোধ ও ভাঙচুর
ঘটনার পর শিক্ষার্থী ও উত্তেজিত জনতা সড়ক অবরোধ করে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। ঘটনার পর থেকে দীর্ঘক্ষণ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ইউএনওসহ তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
আরও পড়ুন:পর্যটন নগর কক্সবাজারের দৃষ্টিনন্দন মেরিন ড্রাইভ ধরে আগামী ২০ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আলট্রা ম্যারাথন ‘কোস্টাল আলট্রা-২০২৫’।
পরিচ্ছন্ন উপকূলের পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন ও সামুদ্রিক ইকোসিস্টেম সংরক্ষণের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ পর্যটন চর্চার বার্তা ছড়াতে এ ম্যারাথনের আয়োজন করা হচ্ছে।
‘সমুদ্র বাঁচাও, পৃথিবী বাঁচাও’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ইভেন্টটি আয়োজন করছে অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘কোস্টাল আল্ট্রা বাংলাদেশ’।
আয়োজকদের ভাষ্য, দেশে প্রথমবারের মতো ২০০ কিলোমিটার দূরত্বের আলট্রা ম্যারথন আয়োজন হতে চলেছে।
কোস্টাল আলট্রা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দীর্ঘ দূরত্বের দৌড় বা আলট্রা ম্যারাথন আয়োজনের মাধ্যমে দেশে স্পোর্টস ট্যুরিজমের প্রসার, ভ্রমণপিপাসু মানুষকে পরিবেশবান্ধব ভ্রমণে উদ্বুদ্ধকরণ এবং সেই সাথে উপকূলের পরিবেশগত ভারসাম্য ও সমুদ্র তলদেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে এই আলট্রা ম্যারাথনের আয়োজন করছে ‘কোস্টাল আলট্রা বাংলাদেশ’। এ ধরনের ইভেন্টের মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করাই সংগঠনটির অন্যতম উদ্দেশ্য।”
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আলট্রা ম্যারাথন বা আলট্রা রান হচ্ছে এক ধরনের দীর্ঘ দূরত্বের দৌড় প্রতিযোগিতা, যেখানে সাধারণত ৪২ দশমিক ১৯৫ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি দৈর্ঘ্যের দৌড়ের আয়োজন করা হয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে ছোট দূরত্বের আলট্রা ম্যারাথন হচ্ছে ৫০ কিলোমিটার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এ আলট্রা ম্যারাথনের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে।
আলট্রা ম্যারাথনে আয়োজক সংগঠনের বেঁধে দেওয়া যোগ্যতার আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ সাপেক্ষে বাছাইকৃত দেশি-বিদেশি প্রায় ৪০০ জন দৌড়বিদ অংশ নেবেন। তাদের সহায়তার জন্য ২৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন।
অংশগ্রহণকারীরা ৫০ কিলোমিটার, ১০০ কিলোমিটার, ১০০ মাইল ও ২০০ কিলোমিটার ক্যাটাগরিতে দৌড়ে অংশ নেবেন।
ইভেন্টে অংশগ্রহণের জন্য কোনো রেজিস্ট্রেশন ফি লাগবে না। সব সেবা বিনা মূল্যে পাবেন অংশগ্রহণকারীরা।
আরও পড়ুন:অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তরুণরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ করে দিয়েছে, সেটি গ্রহণের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির আয়োজনে বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠে রবিবার শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের তরুণেরা, ছাত্ররা যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংঘটিত করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দিল, সে সুযোগ আমাদের শুধু রাজনীতির ক্ষেত্রে নয়, আমাদের শিক্ষা, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, আমাদের জীবন, সামাজিক জীবন, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে, রাজনীতিসহ সব ক্ষেত্রে গ্রহণ করি।’
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দেশে একটা ভয়ংকর সময় আমরা পার করেছি। প্রায় ১৫ বছর একটা পাথর আমাদের বুকের মধ্যে চেপে ছিল। সেই পাথর সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
‘আমাদের তরুণেরা, ছাত্ররা যে একটি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংঘটিত করল, নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের সুযোগ করে দিল, তা যেন আমরা গ্রহণ করি। এ ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই।’
গণতন্ত্রে নির্বাচনের গুরুত্বের কথা বলতে গিয়ে ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনই একমাত্র পথ যার মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্রে পৌঁছাতে পারি। সেটাই আমাদের ক্রীড়াঙ্গনকে বলুন, শিক্ষা ক্ষেত্রে, সাংস্কৃতি ক্ষেত্রে বলুন, সুশাসনের ক্ষেত্রে বলুন, নির্বাচনই একমাত্র পথ, যার মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।’
আরও পড়ুন:দুর্ঘটনার ১০ ঘণ্টা পর সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকায় শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তেলবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়।
উদ্ধারকাজ শেষে ১০ ঘণ্টা পর রবিবার সকাল সাড়ে আটটার পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা তেলবাহী ট্রেনের ওয়াগনটি শনিবার রাতে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পারাইরচকের মোগলবাজার রেলগেট এলাকায় লাইনচ্যুত হয়। এতে ওই রুটে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি বা অন্য কোনো গন্তব্য থেকে সিলেটে ট্রেন প্রবেশ করেনি।
এদিকে রাতভর ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। বিশেষ করে ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী যাত্রীরা দীর্ঘসময় স্টেশনে অপেক্ষা করতে বাধ্য হন।
রেলওয়ে সূত্র আরও জানায়, উপবন এক্সপ্রেস রাতেই ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তা আটকে ছিল। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। বেশির ভাগ যাত্রী স্টেশনে রাত কাটান।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক নুরুল ইসলাম জানান, ওয়াগন লাইনচ্যুত হওয়ার কারণে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশে উপবন ট্রেনটি যাত্রা করতে পারেনি। সেটির যাত্রা বাতিল করা হয়। বাতিল হওয়া ট্রেনের যাত্রীদের টিকিটের মূল্য ফেরত দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, সকালে ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে আসা কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সিলেট স্টেশনে এসে পৌঁছেছে।
রেলওয়ের এ কর্মকর্তা আরও জানান, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলেও সারা দিন শিডিউল বিপর্যয় অব্যাহত থাকতে পারে।
দুর্ঘটনার পর রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এর মেরামতকাজ এখনও চলছে। রিলিফ ট্রেনের মাধ্যমে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
তদন্ত কমিটি
ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন স্টেশন ব্যবস্থাপক।
তিনি জানান, ১৪টি তেলবাহী ওয়াগনের মধ্যে একটি লাইনচ্যুত হওয়ায় রেলপথের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ ঘটনার পেছনের কারণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন:গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় বৈদ্যুতিক মোটর চালু করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক স্কুলশিক্ষক ও তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের সেলদিয়া গ্রামে শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে বলে জানায় কাপাসিয়া থানা পুলিশ।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন কাপাসিয়ার কির্তুনীয়া ইছব আলী ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া (৫৫)। তাকে বাঁচাতে গিয়ে স্ত্রী ফেরদৌসি আক্তারেরও (৪০) মৃত্যু হয়।
স্বজনদের বরাতে পুলিশ জানায়, গতকাল বিকেলে শহীদুল্লাহ বাড়ির পাশে ছোট একটি পুকুর থেকে মাছ ধরতে পানি সেচের জন্য বৈদ্যুতিক মোটর স্থাপন করেন। মোটরটি চালু করতে গিয়ে শহীদুল্লাহ প্রথমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাকে বাঁচাতে গিয়ে পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা স্ত্রী ফেরদৌসি এগিয়ে গেলে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হন। পরে গুরুতর অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তারা মিয়া নামে অপর একজন প্রতিবেশী আহত হন।
শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া স্থানীয় কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। তিনি তিন ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
কাপাসিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হালিম বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর লাশ থানায় নিয়ে এসেছেন স্বজনরা। স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন নরসিংহপুর এলাকার একটি বাসায় শুক্রবার রাতে রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নারী ও শিশুসহ ১১ জন দগ্ধ হয়েছে।
দগ্ধদের রাত পৌনে একটার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসার জন্য আনা হয়। তাদের মধ্যে ৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। বাকি দুজনকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।
দগ্ধদের মধ্যে চার বছর বয়সী মমিনের দেহের ২০ শতাংশ, ৯ বছরের মাহাদীর ১০ শতাংশ, ১৫ বছরের শামীমের ১৪ শতাংশ, চার বছরের সোয়াইদের ২৭ শতাংশ, তিন মাস বয়সী সুমাইয়ার ৯ শতাংশ, ৫০ বছরের সূর্য বানুর ৭ শতাংশ, ৩২ বছরের শিউলি আক্তারের ৯৫ শতাংশ, ৩৫ বছরের মোছাম্মৎ শারমিনের ৪২ শতাংশ, ৩৮ বছরের মোহাম্মদ সোহেল রানার ১০ শতাংশ, ৩২ বছরের মোহাম্মদ সুমন মিয়ার ৯৯ শতাংশ এবং ৭০ বছর বয়সী জহুরা বেগমের দেহের পাঁচ শতাংশ পুড়ে যায়।
দগ্ধদের বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা আবু ইসহাক জানান, আশুলিয়ার নরসিংহপুরের গোমাইল এলাকার একটি বাসার দ্বিতীয় তলায় শবে বরাত উপলক্ষে পিঠা তৈরির সময় হঠাৎ বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। এতে একই পরিবারের নারী ও শিশুসহ ১১ জন দগ্ধ হয়। সেখান থেকে তাদের প্রথমে সাভারের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে এলে তাদের ভর্তি রাখা হয়।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান জানান, আশুলিয়া থেকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ১১ জনের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুজনকে অবজারভেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনের শ্বাসনালি দগ্ধ হয়েছে।
দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর পর টেকনাফের নাফ নদীতে জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি মিলেছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচার বন্ধের কারণ দেখিয়ে ২০১৮ সালে নাফ নদীতে স্থানীয় জেলেদের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। তখন থেকে প্রান্তিক জেলেরা আর্থিক সংকটের মুখে পড়েন।
এত বছর ধরে অনেক দেন-দরবারেও জেলেরা আর নামতে পারেননি নাফ নদীতে। বৃহস্পতিবার কক্সবাজার জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, ‘সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমানার অভ্যন্তরে নাফ নদীতে শাহপরীর দ্বীপ হতে টেকনাফ জেটিঘাট পর্যন্ত মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা।
‘জেলেরা মাছ ধরতে যাওয়ার সময় বিজিবির পাঁচটি নির্ধারিত পোস্টে টোকেন বা পরিচয়পত্র দেখাবেন এবং মাছ ধরা শেষে ফেরত আসার পর বিজিবির পোস্টে তল্লাশি করার ব্যাপারে বিজিবি সদস্যকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। কোনো জেলে চেক পোস্টে না জানিয়ে মাছ ধরতে পারবেন না। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করা যাবে না।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘মৎস্য অধিদপ্তরের হালনাগাদকৃত নিবন্ধিত জেলেদের তালিকা বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে প্রদান করা হবে, যাতে কোনোক্রমেই নিবন্ধিত জেলে ব্যতীত কেউ নাফ নদীতে মাছ ধরতে না পারে।
‘এই অনুমোদন সম্পূর্ণ সাময়িক। আগামী তিন মাস পর সীমান্তের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এ অনুমতি নবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানান, জেলেদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
টেকনাফ মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আমান উল্লাহ বলেন, ‘নাফ নদীতে মাছ ধরার জন্য প্রাথমিকভাবে অনুমতি মিলেছে। এতে জেলেরা খুশি।
‘রাতে মাছ ধরার অনুমতি না পেলে জেলেদের পোষাবে না। কারণ রাতে বেশি মাছ পাওয়া যায়।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য