× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Sir I was thinking of a good man I was listening to him with a stranger
google_news print-icon

‘হুজুর সাবরে ভালা মানুষ ভাবছিলাম, শুনতেছি পরকীয়া করে’

হুজুর-সাবরে-ভালা-মানুষ-ভাবছিলাম-শুনতেছি-পরকীয়া-করে
স্ত্রীকে নির্যাতন ও পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা। ছবি: নিউজবাংলা।
‘হুজুর সাবরে ভালা মানুষ ভাবছিলাম, কিন্তু সে তো ভালা না। শুনতেছি হুজুর পরকিয়া করে। বউ পিটায়। ভাবতেই পারছি না। তারে বাসা থাইক্যা তাড়াই দিছি।'

‘হুজুর দেইখ্যা কম টাকায় বাসা ভাড়া দিছি। হেই হুজুর নাকি; বউরে কেরোসিন ঢাইলা পুইড়া মারতে চাইছিল। হুজুর সাব বউয়ের গায়ে আগুন দিয়া ঘরে তালা মারছে। পরে পালাই গেছে।'

কথাগুলো বলছিলেন গভীর রাতে সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে ওয়াজ বাজিয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন ও পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটে যে বাড়িতে, সেই বাড়ির মালিক রেজাউল হক।

তিনি জানান, শনিবার রাত ৩টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার নতুনবাজারের আনছার রোড এলাকার বয়রাসালায় তার ভাড়াটিয়া মাওলানা শরিফ মাহমুদ তার স্ত্রী খুশি আকতারের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর ঘরে তালা দিয়ে বাইরে অবস্থান করে। পরে অন্য ভাড়াটিয়ারা তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে খবর দেন।

‘হুজুর সাবরে ভালা মানুষ ভাবছিলাম, শুনতেছি পরকীয়া করে’


তিনি বলেন, 'স্থানীয় মাতাব্বর নিজাম উদ্দিনের কথায় হুজুরকে বাসা ভাড়া দিছি। হুজুর দুই মাস হলো এখানে থাকে; তার এক মাসের ভাড়া বাকি এখনও।'

ইমামের যে চরিত্র দেখেছেন, তাতে অবাক হয়েছেন রেজাউল হক। বলেন, ‘হুজুর সাবরে ভালা মানুষ ভাবছিলাম, কিন্তু সে তো ভালা না। শুনতেছি হুজুর পরকীয়া করে। বউ পিটায়। ভাবতেই পারছি না। তারে বাসা থাইক্যা তাড়াই দিছি।'

রেজাউলের বাসায় পাশের রুমের ভাড়াটিয়া গার্মেন্টসকর্মী কল্পনা রানী সরকার বলেন, ‘রাতে আগুন আগুন চিৎকার হুইনা গেছি। যাইয়া দেহি পানি ঢালতাছে খুশির গায়। তহন হুজুর সাব দরজায় দাঁড়ায় আছিল। এরপর দেহি হুজুর ভাগছে।'

গত ১৮ সেপ্টেম্বর যৌতুক না পেয়ে গভীর রাতে উচ্চস্বরে সাউন্ডবক্সে ওয়াজ বাজিয়ে নির্যাতনের পর খুশি আকতার নামে ওই গৃহবধূর শরীরে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্বামী মাওলানা শরিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বুধবার রাতে শ্রীপুর থানায় মেয়েটির বাবা হাসেন আলী লিখিত অভিযোগ করেন।

‘হুজুর সাবরে ভালা মানুষ ভাবছিলাম, শুনতেছি পরকীয়া করে’

নির্যাতনের শিকার খুশি আকতারের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের বদলাগাড়ি গ্রামে।

খুশির পরিবার জানায়, পারিবারিকভাবে ২০১৯ সালের ১২ জুন গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় এলাকায় মাওলানা শরিফ মাহমুদের সাথে বিয়ে হয় খুশির। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে শ্রীপুরে যান শরিফ। সেখানে স্থানীয় ইয়াকুব আলী জামে মসজিদে ইমামতি শুরু করেন তিনি।

খুশির স্বজনদের অভিযোগ, আর্থিক দৈন্যদশা ও বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে শরিফ কিছুদিন ধরে স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল। গত শনিবার রাতে স্ত্রীর কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন শরিফ। এ সময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কের কথা তোলায় মারপিট শুরু করেন শরিফ।

এরপর রাত ৩টার দিকে উচ্চস্বরে সাউন্ডবক্সে ওয়াজ বাজিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পরে খুশির চিৎকারে পাশের রুমের এক নারী এসে প্রতিবেশিদের সহায়তায় খুশিকে উদ্ধার করে।

ঘটনার রাতে মোবাইলে খবর পেয়ে গাইবান্ধা থেকে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান তিনি। মেয়েটি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছে, আগুনে খুশির শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রায় ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তবে বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত।

‘হুজুর সাবরে ভালা মানুষ ভাবছিলাম, শুনতেছি পরকীয়া করে’

মেয়েটির বাবা হাসেন আলীর অভিযোগ, যৌতুকের জন্য তার মেয়ে খুশিকে প্রায় মারধর করতেন শরিফ। সম্প্রতি শরিফ বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ালে নির্যাতন আরও বাড়ে। প্রায়ই খুশিকে মোমবাতির আগুনে হাত-পায়ে ছ্যাঁকা দেয়া হতো।

তিনি বলেন, 'যে মারডা মারছে ছোলটাক। বাপ হয়ে সহ্য করতি পারি না। আল্লায় বাঁচাইছে ছোলটাক। সারা গাওত ফোসকা পড়ছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।'

হাসপাতালের বেডে শুয়ে খুশি আকতার বলেন, 'এখনও সেই রাতে কথা মনে হলে কলজাটা ফাটি যাচ্ছে। ওটা (শরিফ) মানুষ নয়; পশু।'

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান এম এ হামিদ পলাশ জানান, খুশির নাভির নিচ থেকে পা পর্যন্ত ১০ শতাংশ পুড়ে গেছে। স্তনের কিছু অংশও পুড়ে গেছে।

তিনি বলেন, 'আজ রাতে রোগীর প্লাস্টার খোলা হবে। আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি। সুস্থ হতে সময় লাগবে।'

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম হোসেন বলেন, 'প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। মামলা রেকর্ড করাসহ আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে।'

আরও পড়ুন:
‘স্ত্রীর’ সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ায় নির্যাতন, ‘শাশুড়ি’ আটক
সাউন্ডবক্সে ওয়াজ ছেড়ে স্ত্রীকে ‘হত্যাচেষ্টা’ ইমামের
কৃষককে মারধরের ভিডিও ফেসবুকে, গ্রেপ্তার ১
স্ত্রীর মরদেহ হাসপাতালে রেখে লাপাত্তা
বৃদ্ধাকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল: গ্রেপ্তার ২

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
The order of the writ on the hanging of Jessore Youth Dal leader on Monday

যশোর যুবদল নেতাকে ডান্ডাবেড়ি পরানো নিয়ে রিটের আদেশ সোমবার

যশোর যুবদল নেতাকে ডান্ডাবেড়ি পরানো নিয়ে রিটের আদেশ সোমবার সুুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ। ফাইল ছবি
গত ২৯ নভেম্বর যুবদল নেতাকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার ঘটনায় প্রকাশিত সংবাদের বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়। ওই দিন বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। তিনি আদালতের কাছে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ প্রার্থনা করেন।

বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার যশোরের যুবদল নেতাকে হাসপাতালে চিকিৎসার সময় ডান্ডাবেড়ি পরানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের শুনানি শেষে আদেশের জন্য সোমবার দিন ঠিক করে দিয়েছে হাইকোর্ট।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ দিন ঠিক করে দেয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

যুবদল নেতা আমিনুর রহমান মধুকে চিকিৎসার সময়ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তার স্ত্রী হাইকোর্টে এ রিট করেন।

গত ২৯ নভেম্বর যুবদল নেতাকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার ঘটনায় প্রকাশিত সংবাদের বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়। ওই দিন বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। তিনি আদালতের কাছে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ প্রার্থনা করেন।

তখন হাইকোর্ট বলেছিলেন, ‘জঙ্গি সম্পৃক্ততাসহ হেইনাস ক্রাইমের (জঘন্য অপরাধের) ক্ষেত্রে সাধারণত অপরাধীকে ডান্ডাবেড়ি পরানো হয়। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের একাধিক সিদ্ধান্তও রয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে ডান্ডাবেড়ি পরানো যাবে, সে বিষয়ে গাইডলাইন আছে।’

তখন আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেবেন না বলে রিট করার পরামর্শ দেন। তার পরিপ্রেক্ষিতেই মধুর স্ত্রী রিট করেন।

প্রেক্ষাপট

গত ২ নভেম্বর যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের আমদাবাদ গ্রাম থেকে পুলিশ মধুকে আটক করে। এরপর ১২ নভেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় আমিনুর রহমান মধু হৃদরোগে আক্রান্ত হন। কারাগার থেকে তার দুই পায়ে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া লাগিয়ে প্রথমে যশোরের ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ওই রাতেই তাকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। পরের দিন কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।

দুই পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে ও ডান হাতে হাতকড়া লাগানো অবস্থায় হাসপাতালের মেঝেতে রেখে মধুকে চিকিৎসা দেয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন:
সপ্তাহে দুদিন সন্তানকে দেখতে পারবেন আমেরিকান বাবা
‘তথ্য গোপন করে’ নেয়া মুক্তির জামিন বাতিল, আত্মসমর্পণের নির্দেশ
বিএনপি নেতা হাবিবকে ৫ মাসের কারাদণ্ড
আশিয়ান সিটি প্রকল্পের কাজে বাধা নেই: আপিল বিভাগ
প্রয়োজন ছাড়া সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশ করলে আইনি ব্যবস্থা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The SI closed Yabars leak of Laden

লাদেনকে ইয়াবার ‘ফাঁস’, সেই এসআই ক্লোজড

লাদেনকে ইয়াবার ‘ফাঁস’, সেই এসআই ক্লোজড পুলিশের এমন আচরণে এসআই রিয়াদের কঠোর শাস্তি চান কৃষক মোসলেম। ইনসেটে অভিযুক্তি এসআই রিয়াদ। ছবি: নিউজবাংলা
নিজ থানা এলাকার বাইরে গিয়ে অভিযান পরিচালনা করায় বৃহস্পতিবার এসআই রিয়াদকে ক্লোজ করে বরিশাল পুলিশ লাইন্সে যুক্ত করা হয়েছে। আর এদনি বিকেলে আদালতে জামিন আবেদনের মাধ্যমে কারাগার থেকে মুক্তি মিলেছে আব্দুল্লাহ বিন লাদেনের।

পিতা-পুত্রকে ডিবি পরিচয়ে ‘অপহরণ করে’ চাঁদা দাবি এবং পরে তা না পেয়ে ছেলেকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার ঘটনায় অবশেষে শাস্তি পেলেন বরিশালের কাউনিয়া থানার এসআই রেদোয়ান হোসেন রিয়াদ। আর এ ঘটনায় জামিনে মুক্তি মিলেছে নগরীর আলেকান্দা সরকারি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র আব্দুল্লাহ বিন লাদেন।

নিজ থানা এলাকার বাইরে গিয়ে অভিযান পরিচালনা করায় বৃহস্পতিবার এসআই রিয়াদকে ক্লোজ করে বরিশাল পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। আর এদনি বিকেলে আদালতে জামিন আবেদনের মাধ্যমে কারাগার থেকে মুক্তি মিলেছে আব্দুল্লাহ বিন লাদেনের।

এসআই রিয়াদকে ক্লোজ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম। অন্যদিকে লাদেনের জামিনের বিষয়টি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিউজবাংলকে নিশ্চিত করেন তার বাবা মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের চরফেনুয়া এলাকার বাসিন্দা কৃষক মোসলেম জমাদ্দার।

শুধু ক্লোজ করাই নয়, তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপরাধে সুষ্ঠু বিচার ও এসআই রিয়াদ ও তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দবি জানিয়েছেন মোসলেম জমাদ্দার। পাশাপাশি তিনি পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে মিথ্যে অভিযোগের মামলা থেকে নিরপরাধ ছেলের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।

নিউজবাংলাকে কৃষক মোসলেম জমাদ্দার জানান, বৃহষ্পতিবার দুপুরে তিনি তার ভাতিজাকে সঙ্গে নিয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তিনি ২১ নভেম্বর ঘুটে যাওয়া পুরো ঘটনা কমিশনারকে খুলে বলেন এবং ন্যায়বিচার দাবি করেন। পরে তিনি এসআই রিয়াদ ও তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পুলিশ কমিশনারের হাতে তুলে দেন।

তিনি বলেন, ‘পুলিশ কমিশনার স্যারের কথায় আমি আশ্বস্ত। তিনি কথা দিয়েছেন- আমার ও আমার ছেলের সঙ্গে ঘটা অন্যায়ের ন্যায়বিচার পাব। আর ছেলে নিরাপরাধ, সেটারও প্রমাণ হবে।’

এ বিষয়ে পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘পুরো ঘটনাটি এরমধ্যেই উপ-পুলিশ কমিশনার কে (উত্তর) খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। তিনি বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন।

‘প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ওই উপ-পরিদর্শক (এসআই) যে নিজ থানা এলাকার বাহিরে গিয়েছিলেন, সে বিষয়টি উঠে এসেছে। তাই তাকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

উল্লেখ্য, জমিজমা নিয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে চলা মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গত ২১ নভেম্বর সকাল উপবন নামক লঞ্চযোগে শ্রীপুর থেকে বরিশালের লঞ্চঘাটে আসেন মোসলেম ও তার ছেলে আব্দুল্লাহ ওরফে লাদেন। কোতোয়ালি মডেল থানাধীন লঞ্চঘাটের গেট থেকে বের হওয়ার সময় ডিবি পরিচয় দিয়ে এসআই রেদওয়ান হোসেন রিয়াদ ও তার সঙ্গে থাকা অপর এক লোক বাবা-ছেলেকে তল্লাশি করে। কথিত মাদক উদ্ধারের নামে তাদের সঙ্গে নিয়ে দিনভর নগরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ১ লাখ টাকা দাবি করেন এসআই রিয়াদ। টাকা আদায়ে প্রথমে বিকাশ নম্বর ও পরে বাবাকে ছেড়ে দিয়ে ছেলেকে কাউনিয়া থানায় আটকে রাখেন তিনি। পরে স্বজনদের মাধ্যমে ঘটনাটি গণমাধ্যমকর্মী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানতে পারেন।

নিজের ঝুঁকির কথা বুঝতে পেরে কথিত তিন পিস ইয়াবা উদ্ধারের রহস্যময় কাহিনী জুড়ে দিয়ে কাউনিয়া থানায় আটক থাকা আব্দুল্লাহকে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করেন এসআই রিয়াদ। পরে নিজে বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও ঠুকে দেন তিনি। এ ঘটনায় প্রমাণ মেলে, কাউনিয়া থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও এসআই রিয়াদ কোতোয়ালি থানার সহযোগিতা ছাড়াই লাদেনকে আটক করেন।

পরে এসআই রিয়াদকে বাঁচাতে নানাভাবে নিজের বিবৃতি পরিবর্তন করেন কাউনিয়া থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে যৌক্তিক কোনো প্রশ্নেরই সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

আরও পড়ুন:
লাদেনকে ফাঁসানো এসআইকে বাঁচাতে তৎপর ওসি!
পিতা-পুত্রকে অপহরণ, চাঁদা না পেয়ে মাদকের মামলা দিল পুলিশ!

মন্তব্য

বাংলাদেশ
OC eager to save the SI who trapped Laden

লাদেনকে ফাঁসানো এসআইকে বাঁচাতে তৎপর ওসি!

লাদেনকে ফাঁসানো এসআইকে বাঁচাতে তৎপর ওসি! পুলিশের এমন আচরণে হতাশ এবং একইসঙ্গে আতঙ্কিত ভুক্তভোগীর স্বজনরা। ইনসেটে অভিযুক্তি এসআই রিয়াদ। ছবি: নিউজবাংলা
লাদেন ও তার বাবা মোসলেম জোমাদ্দারকে অপহরণ করা হলেও ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে মঙ্গলবার বিকেলে মোসলেমকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে টাকা না পেয়ে লাদেনকে তিন পিস ইয়াবা দিয়ে এসআই রিয়াদ কাউনিয়া থানায় চালান দেন বলে অভিযোগ স্বজনদের।

পিতা-পুত্রকে ডিবি পরিচয়ে ‘অপহরণ করে’ চাঁদা দাবি এবং পরে তা না পেয়ে ছেলেকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার ঘটনায় ফুঁসছে বরিশালবাসী। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেদোয়ান হোসেন রিয়াদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার কাউনিয়া থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে। একেক সময় তার একেক রকম বিবৃতিতে বিভ্রান্ত সংবাদকর্মীরাও।

মঙ্গলবার সকালে জমিজমা-সংক্রান্ত একটি মামলায় হাজিরা দিতে মেহেন্দিগঞ্জের শ্রীপুর থেকে লঞ্চযোগে বরিশাল নদী বন্দরে আসেন মোসলেম জোমাদ্দার ও তার কলেজ পড়ুয়া ছেলে আব্দুল্লাহ বিন লাদেন। উপবন নামের একটি লঞ্চ থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই দুইজন ব্যক্তি নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে লাদেন ও তার বাবা মোসলেমকে তল্লাশি শুরু করেন। একপর্যায়ে নিচে পড়ে থাকা একটি নীল রঙের কাগজ দেখিয়ে তারা বলেন- ‘এই তো পেয়েছি’। তারা ঠিক কী পেয়েছেন, তা তারাই জানতেন। এরপর নদীবন্দর থেকে লাদেনকে মোটরসাইকেলে করে আর মোসলেমকে রিকশায় করে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে নিয়ে যাওয়া হয়। একপর্যায়ে লাদেনকে মারধর শুরু করেন ডিবি পরিচয় দেয়া ওই দুইজন। এক লাখ টাকা না দিলে তাদের ছাড়া হবে না বলে জানান তারা। সবশেষ ৪০ হাজার টাকায় সমঝোতা করতে রাজি হন তারা।

পরে বাবা মোসলেমকে ছেড়ে দিয়ে ছেলেকে আটকে রাখা হয় এবং জানা যায় ডিবি পরিচয় দেয়া ওই দুই ব্যক্তির একজন কাউনিয়া থানার এসআই রেদোয়ান হোসেন রিয়াদ। তিনি প্রথমে তিন পিস ইয়াবা পাওয়ার দাবি করে লাদেনকে কাউনিয়া থানায় আটকে রাখেন। তবে তাকে ধরে আনা হয় কোতোয়ালী থানা এলাকা থেকে।

এ বিষয়ে শুরুতে কাউনিয়া থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘রিয়াদ (এসআই) মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ৩ পিস ইয়াবাসহ ওই যুবককে আটক করেছেন- এমন খবর আমার কাছে রয়েছে। তার কাছে নাকি আরও ইয়াবা পাওয়ার কথা ছিল। অভিযান শেষ করে বিকেলে তাকে (লাদেন) থানায় রেখে যান তিনি।’ এমনকি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

কিন্তু ওই রাতেই বদলে যায় ওসি আসাদুজ্জামানের সুর। এসআই রিয়াদের পক্ষে সাফাই গেয়ে তখন তার দাবি ছিল, এক হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছিলেন এসআই রিয়াদ। অভিযানে লাদেনকে তিন পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়েছে।

সে সময় এক থানা পুলিশ অন্য থানা এলাকায় অভিযান চালাতে পারে কি না- এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হন ওসি।

পরে বুধবার দুপুরে ওসি আসাদুজ্জামান জানান, ধাওয়া দিয়ে ধরতে গিয়ে ঘটনাস্থল কোতোয়ালি মডেল থানার মধ্যে গিয়ে পড়ে। তাই নিয়মানুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মামলাটি কোতোয়ালি মডেল থানায় করা হয়েছে এবং মামলার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কাউনিয়া থানা থেকে অল্প সময়ের মধ্যেই কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখানে নিয়মের কোন ব্যত্যয় ঘটেনি। পাশাপাশি লাদেনের বিরুদ্ধে কাউনিয়া থানার এসআই রেদওয়ান হোসেন রিয়াদও কোতোয়ালি মডেল থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেছেন।

ঘটনার সত্যতা অনুসন্ধানে মঙ্গলবার রাতেই সরেজমিনে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউনিয়া থানায় হাজির হয় নিউজবাংলা। এ সময় দেখা যায়, থানা গারদে আটকে রাখা হয়েছে কলেজ ছাত্র আব্দুল্লাহ বিন লাদেনকে। গারদ থেকেই লাদেনের সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার।

সে সময় লাদেন বলে, ‘আদালতে হাজিরা দিতে যাওয়ার পথে লঞ্চঘাট থেকে আমাদের ডিবি বলে তুলে নেন এসআই রিয়াদ স্যার ও আরেকজন। পরে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে বিকেলে টাকা দাবি করে আব্বাকে ছেড়ে দেন তারা। কিন্তু আমাকে ইয়াবার মামলা দিয়ে থানায় নিয়ে আসেন। আমি বিড়ি-সিগারেটও খাই না। তাহলে আমার নামে এ মিথ্যা মামলা কেন?’

লাদেনের বাবা মোসলেম জোমাদ্দার জানান, টাকা না দিতে পারলে পরে তাকে চরকাউয়া খেয়াঘাট এলাকায় নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়, কিন্তু তার ছেলের কোনো হদিস ছিল না। পরে ৯৯৯-এ ফোন করা হলে সেখান থেকে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এক পর্যায়ে তিনি জানতে পারেন, কাউনিয়া থানার এসআই রিয়াদ এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

এ বিষয়ে মোসলেমের দাবি, তাদেরকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে। বলেন, ‘ঘুরে বেড়ানোর মধ্যেই পুলিশের কর্মকর্তা এসআই রিয়াদ ১ লাখ টাকা দাবি করেন, আর সেই টাকা চেয়ে বাড়িতে স্বজনদের কাছে ফোন দিতে বাধ্য করেন। একটি বিকাশ নম্বরও দেন তিনি। পরে ৪০ হাজার টাকা ম্যানেজ করে দেয়ার শর্তে আমার ছেলেকে কাউনিয়া থানায় আটকে রেখে ছেড়ে দেন।

‘টাকা ম্যানেজ করতে না পেরে রাতে থানায় গিয়ে পুলিশের কর্মকর্তাদের কাছে বিষয়টি খুলে বলি, কিন্তু তারা তাতে কোন ভ্রুক্ষেপ করেননি। পরে টাকা দেয়ার জন্য এসআই রিয়াদের দেয়া বিকাশ নম্বরে যোগাযোগ করে জানতে পারি সেটি বরিশালের আমতলার মোড় এলাকায় অবস্থিত। এ ধরনের প্রমাণ থাকার পরও পুলিশ লাদেনকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়েছে।’

জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের যোগসাজশেই এসআই রিয়াদ এমন করে থাকতে পারেন বলে দাবি করেন মোসলেম।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি সূত্র নিউজবাংলাকে জানিয়েছে, এসআই রিয়াদ চাকরির মাত্র কয়েক বছরে মেট্রোপলিটনের বেশ কয়েকটি থানা ও ডিবিতে দায়িত্ব পালন করেন। তবে অজানা কারণে কোনো জায়গাতেই দীর্ঘদিন থাকা হয়নি তার। তার বিরুদ্ধে এর আগে রোগীর দালালদের ধরে কৌশলে টাকা আদায়সহ কয়েকটি অভিযোগও রয়েছে, যদিও সেগুলো পরবর্তীতে আলোর মুখ দেখেনি। এছাড়া মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোয়ারা নেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সূত্র আরও জানায়, ওসি আসাদুজ্জামানের সঙ্গে এসআই রিয়াদের পূর্ব পরিচিতি আছে। কারণ ওসি আসাদুজ্জামান যখন বন্দর থানায় কর্মরত, তখন রিয়াদও ওই থানায় ছিলেন।

এদিকে লাদেনকে ফাঁসানোর বিষয়টি পরিষ্কার হতে তার স্বজনরা সিসি ক্যামেরা পর্যালোচনা করার দাবি তোলেন।

এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. ফজলুল করিম বলেন, ‘ঘটনাস্থল কোতোয়ালি থানা এলাকায় হওয়ায় মামলাটি এখানে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই হয়েছে। তদন্তও সঠিকভাবে করা হবে।’

না জানিয়ে অন্য থানা এলাকায় অভিযান চালানো, তুলে নেয়া ব্যক্তিদের নিয়ে সারা দিন বিভিন্ন স্থানে ঘোরা, রাতে দীর্ঘ সময় এক থানায় আটকে রেখে পরে অন্য থানায় হস্তান্তর এবং দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় ফাঁসিয়ে দেয়াসহ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। সেখানে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাছাড়া কোনো পুলিশ সদস্য বা অন্য কারও ইন্ধনে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য এমনটা করছে কি না, সে বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।’

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তর জোনের উপ-কমিশনার বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, ‘এসআই রিয়াদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তাতে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। যে অপরাধ করবে সেটার দায় ব্যক্তিরই নিতে হবে। রিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে পেরে ইতোমধ্যে উত্তর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনারকে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটলে সেই অনুযায়ী অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এক্ষেত্রে পুলিশের প্রশাসনিক ব্যবস্থা আশা করে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক নেত্রী ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এ ধরনের প্রাকটিস কাম্য নয়। ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আর ক্ষমতার জবাবদিহিতা থাকাও দরকার। পুলিশের ক্ষমতার জবাবদিহিতা না থাকলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে।’

গবেষক আনিসুর রহমান খান স্বপন এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ‘যে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, তাকে কেন থানাতে রাখা হয়। তার বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগগুলো ভালোভাবে তদন্ত করা হয়নি অথবা আইনের কোনো ফাঁক-ফোকর দিয়ে বের হয়ে ওই পুলিশ সদস্য আবারও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এখানে সিস্টেমে সমস্যা রয়েছে। এইসব পুলিশ সদস্য পুলিশের ভাবমূর্তি যেভাবে নষ্ট করছে সেইভাবে সমাজেরও ক্ষতি করছে। চাকরির সামান্য কয়েক বছরের মধ্যে কয়েকটি অপকর্ম ঘটানো এই পুলিশ সদস্যকে স্থায়ী ভাবে বহিষ্কার করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ। এ ছাড়া এসব পুলিশ সদস্যকে যারা প্রশ্রয় দিয়ে পুষে রেখেছেন, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা উচিৎ।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
BRTC bus fire Chchhasevak leader arrested

বিআরটিসির বাসে আগুন: স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আটক

বিআরটিসির বাসে আগুন: স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আটক রুপনগর থানা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মো. সাজেদুল আলম টুটুল। ছবি: সংগৃহীত
ডিএমপি মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা বলেন, ‘বিআরটিসির দোতলা বাসে যাত্রীবেশে আগুন দেয়ার ঘটনায় ঘটনাস্থলের পাশ থেকে রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক  সাজেদুল আলম টুটুলকে আটক করা হয়েছে।’

বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর মিরপুরে ভরদুপুরে বিআরটিসির একটি দোতলা বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকে ঘটনাস্থলের পাশ থেকে আটক করেছে পুলিশ।

আটক সাজেদুল আলম টুটুল রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক।

সোমবার দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরের পাশে রাস্তার ওপর বিআরটিসির দোতলা বাসে আগুনের ঘটনায় গাড়ির উপরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা বলেন, ‘রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরের পাশে রাস্তার ওপর বিআরটিসির একটি দোতলা বাসে যাত্রীবেশে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় ঘটনাস্থলের পাশ থেকে রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাজেদুল আলম টুটুলকে আটক করা হয়েছে।’

তিনি জানান, পুড়ে যাওয়া বিআরটিসি পরিবহনের গাড়ির চালক সাজেদুল আলম টুটুলককে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করেন।

আটকের এই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন:
চট্টগ্রামে ৩ বাসে আগুন
রাজধানীতে ককটেল বিস্ফোরণে যুবলীগ কর্মীসহ দুজন আহত
চট্টগ্রামে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের চেষ্টার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২
হরতালের প্রথম দিনে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ গাড়িতে আগুন গ্রেপ্তার
রাজশাহীতে চলন্ত বাসে আগুন

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Eastern train service with Dhaka started after 14 hours
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বগি লাইনচ্যুত

ঢাকার সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের ট্রেন চলাচল শুরু ১৪ ঘণ্টা পর

ঢাকার সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের ট্রেন চলাচল শুরু ১৪ ঘণ্টা পর রোববার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কনটেইনারবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হয়। ছবি: নিউজবাংলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. জসিম উদ্দিন জানান, দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনার ট্রেনের বগিটি উদ্ধার কাজ প্রায় ১১ ঘণ্টা পর রাত ৭টা ৫ মিনিটে সম্পন্ন হয়। তবে আপলাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় রাত সাড়ে ১০টায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কনটেইনার ট্রেনের বগি লাইনচ্যুতির ঘটনায় ১৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ঢাকার সঙ্গে আপলাইনে চট্টগ্রাম, সিলেট ও নোয়াখালীর রেল যোগাযোগ পুনরায় চালু হয়েছে।

রোববার রাত সাড়ে ১০টায় দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনার ট্রেনটি ঢাকা অভিমুখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেড়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে কনটেইনার ট্রেনটিকে ২০ কিলোমিটার গতিতে ঢাকায় যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের আউটারে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী একটি কনটেইনার ট্রেনের একটি বগির চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় আপলাইনে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম, সিলেট ও নোয়াখালীর ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

দুর্ঘটনায় অন্তত ৩০০ মিটার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি শতাধিক স্লিপার ভেঙে যায়। পরে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন মেরামত এবং স্লিপার পরিবর্তন শেষে দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনার ট্রেনের বগিটি উদ্ধারে কাজ শুরু করে উদ্ধারকারী ট্রেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. জসিম উদ্দিন জানান, দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনার ট্রেনের বগিটি উদ্ধার কাজ প্রায় ১১ ঘণ্টা পর রাত ৭টা ৫ মিনিটে সম্পন্ন হয়। তবে আপলাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় রাত সাড়ে ১০টায়।

আরও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মালবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Rakib murder Shaon and other accused demand exemplary punishment

রাকিব হত্যা: শাওনসহ আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি

রাকিব হত্যা: শাওনসহ আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি রাকিব হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে রোববার ময়মনসিংহ নগরে মিছিল করেন স্থানীয়রা। ছবি: নিউজবাংলা
স্মারকলিপি দেয়া শেষে নেতারা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, রাকিব হত্যার ঘটনায় এরই মধ্যে ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যায় জড়িত অন্যরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। নয়তো তারা আবারও অন্য কাউকে হত্যা করে অন্য কোনো মায়ের বুক খালি করবে। এতে সন্তান হবে বাবাহারা; স্ত্রী হবে স্বামী ছাড়া।

ময়মনসিংহে আবদুর রাজ্জাক রাকিব নামের যুবক হত্যার ঘটনায় মহানগর যুবলীগের বহিষ্কৃত সদস্য ইয়াছিন আরাফাত শাওনসহ আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে রোববার দুপুরে স্মারকলিপি দেয়া হয়। এতে নেতৃত্ব দেন মহানগর আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ও নিহত যুবকের চাচা আবু বক্কর সিদ্দিক সাগর।

ওই সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবিএম আবু বক্কর সিদ্দিক, ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন, ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এমদাদুল হক মন্ডল, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ফারজানা ববি কাকলি, মহানগর আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ফজলুল হকসহ অনেকে।

এর আগে নগরের চায়না মোড় থেকে আওয়ামী লীগ নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার নারী-পুরুষ মিছিল নিয়ে ‘রাকিব হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই’ স্লোগানে স্লোগানে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এসে মিছিলটি শেষ করেন।

স্মারকলিপি দেয়া শেষে নেতারা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, রাকিব হত্যার ঘটনায় এরই মধ্যে ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যায় জড়িত অন্যরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। নয়তো তারা আবারও অন্য কাউকে হত্যা করে অন্য কোনো মায়ের বুক খালি করবে। এতে সন্তান হবে বাবাহারা; স্ত্রী হবে স্বামী ছাড়া।

তারা পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে লাগাতার আন্দোলন চলবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।

প্রেক্ষাপট

গত ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইয়াছিন আরাফাত শাওন ও তার কর্মীরা তিনটি হাই-এইস গাড়ি নিয়ে ময়মনসিংহ শহরে ফিরছিলেন। পথে নগরের চায়না মোড়ের টুলবক্স এলাকা পর্যন্ত আসতেই একটি ট্রাকের পেছনে আটকা পড়ে হাই-এইস। ওই ট্রাকটি সাইড না দেয়ায় ওভারটেকের সময় হাই-এইস গাড়িতে ঘষা লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়িতে থাকা ট্রাকচালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান শাওন ও তার কর্মীরা। একপর্যায়ে ট্রাকচালককে মারধর শুরু করেন।

ওই সময় স্থানীয় বাসচালকসহ অন্যরা তাদের থামাতে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান শাওন ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন। এতে আবদুর রাজ্জাক রাকিব, সাদেক আলী, শহিদ মিয়া নামে তিনজন জখম হন। এ অবস্থায় আশপাশের লোকজন তাদের ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক আবদুর রাজ্জাক রাকিবকে মৃত বলে জানান।

রাকিব হত্যার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাতেই স্থানীয়রা চায়না মোড়ে সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং একজনকে আটক করে পরের দিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

ছুরিকাঘাতে রাকিব নিহত হওয়ার পরের দিন তার মা হাসি বেগম শাওনসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

গত বৃহস্পতিবার সাভারের আমিনবাজার থেকে মামলার প্রধান আসামি শাওন, তার ভাই মাসুদ পারভেজ, আনিছুর রহমান ফারুক, মো. মানিক, মো. মবিন ও মো. শান্তকে গ্রেপ্তার করে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরের দিন শুক্রবার ভোরে ত্রিশালের উজানভাটিপাড়া এলাকা থেকে ইয়াছিন আরাফাত শাওনের ছোট ভাই মো. প্রান্ত ও মো. রাহাত নামের আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা ডিবির ওসি ফারুক হোসেন বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া ইয়াছিন আরাফাত শাওনের বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা, মাসুদ পারভেজের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা, আনিছুর রহমান ফারুকের বিরুদ্ধে দুটি মামলা, মানিক মিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা, মো. মমিন ও মো. শান্তর বিরুদ্ধে তিনটি করে মামলা রয়েছে। শুক্রবার বিকেলে ময়মনসিংহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নম্বর আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তাদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হলে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

‘অন্য দুই আসামিরও সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

আরও পড়ুন:
মুক্তাগাছার ঐতিহ্যবাহী মণ্ডার দোকানকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা
জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ ময়মনসিংহে
ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার ৯ বছর পর আসামি গ্রেপ্তার
সেতু ভেঙে যাওয়ায় লরি চালকের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি টাকার মামলা
পরিবারের সঙ্গে ঈদ করা হলো না সোলেমানের

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Two more arrested in Rakib murder case in Mymensingh

ময়মনসিংহে রাকিব হত্যা মামলায় আরও দুইজন গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহে রাকিব হত্যা মামলায় আরও দুইজন গ্রেপ্তার ময়মনসিংহে রাকিব হত্যা মামলায় আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। ছবি: নিউজবাংলা
ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ফারুক হোসেন বলেন, ‘মামলার প্রধান আসামি ইয়াসিন আরাফাত শাওন ও তার ভাইসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছি। শুক্রবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

ময়মনসিংহ নগরীতে আব্দুর রাজ্জাক রাকিব নামের যুবক হত্যা মামলায় আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

জেলার ত্রিশালের উজানভাটিপাড়া এলাকা থেকে শুক্রবার ভোরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার দুইজন হলেন নগরীর পুরোহিত পাড়া এলাকার মো. প্রান্ত ও সেহড়া ডিবি রোড এলাকার রাহাত।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভারের আমিনবাজার থেকে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেন মামলার প্রধান আসামি ৩৫ বছর বয়সী ইয়াসিন আরাফাত শাওন, তার ভাই ৩৭ বছর বয়সী মাসুদ পারভেজ, ৩৮ বছর বয়সী আনিছুর রহমান ফারুক, ৩২ বছর বয়সী মো. মানিক, ৩০ বছর বয়সী মো. মবিন ও ২০ বছর বয়সী শান্ত।

ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ সদর দপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাকিবকে হত্যার পর আসামিরা দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ওই দুইজনের পালিয়ে থাকার অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’

ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ফারুক হোসেন বলেন, ‘মামলার প্রধান আসামি ইয়াসিন আরাফাত শাওন ও তার ভাইসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছি। শুক্রবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

তিনি জানান, গত শনিবার সন্ধ্যায় যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইয়াসিন আরাফাত শাওন ও তার কর্মীরা ফুলপুরে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে হায়েস গাড়ি দিয়ে ময়মনসিংহ শহরের ফিরছিলেন। পথে নগরীর চায়না মোড়ের টুলবক্স এলাকা পর্যন্ত আসতেই একটি ট্রাকের পেছনে আটকা পড়ে হায়েস। ওই ট্রাকটি সাইড না দেয়ায় ওভারটেকের সময় হায়েস ঘষা লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়িতে থাকা ট্রাকচালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান শাওন ও তার কর্মীরা। একপর্যায়ে ট্রাকচালককে মারধর শুরু করেন।

ওই সময় স্থানীয় বাসচালকসহ অন্যরা তাদের থামাতে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান তারা। এতে আব্দুর রাজ্জাক রাকিব, সাদেক আলী, শহিদ মিয়া নামে তিনজন রক্তাক্ত জখম হন। এ অবস্থায় আশপাশের লোকজন তাদের ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাক রাকিবকে মৃত বলে জানান।

আহত দুজন হলেন সাদেক আলী ও শহিদ মিয়া। তারা বাসচালক ও হেলপার।

রাকিব হত্যার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাতেই স্থানীয়রা চায়না মোড়ে সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনায় পরদিন নিহতের মা হাসি বেগম মহানগর যুবলীগের বহিষ্কৃত সদস্য শাওনসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

আরও পড়ুন:
দৌলতপুরে শিশু হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে প্রাণ গেল ইলেকট্রিক মিস্ত্রির
নোয়াখালীতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ৬ ডাকাত গ্রেপ্তার
গৃহবধূর মুখে জোর করে বিষ ঢেলে হত্যাচেষ্টা
যাত্রীবাহী লঞ্চে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে মহানগর ছাত্রদল সভাপতিসহ গ্রেপ্তার ২

মন্তব্য

p
উপরে