অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক মো. আব্দুল মালেকের স্ত্রী নার্গিস বেগমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে বৃহস্পতিবার আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন নার্গিস বেগম।
তার পক্ষে আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম অনি জামিন শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জামিনের বিরোধিতা করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নাকচ করে নার্গিসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
দুদকের কোর্ট ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে আবদুল মালেক ও তার স্ত্রীর নামে কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলা দুটি করেন।
এক মামলায় বলা হয়, আসামি আবদুল মালেক (বর্তমানে বরখাস্ত) চাকরিকালে অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে ১ কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার ৮১০ টাকার স্থাবর-অস্থাবর অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি ৯৩ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪৮ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা বা ভিত্তিহীন তথ্য ঘোষণা দিয়েছেন। আবদুল মালেক অবৈধ সম্পদ অর্জন করে ও তা ভোগদখলে রেখে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
আরেকটি মামলায় আবদুল মালেক ও তার স্ত্রীকে আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১ কোটি ১০ লাখ ৯২ হাজার ৫০ টাকা মূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
এ পরিমাণ সম্পদ আসামি নার্গিস বেগমের ভোগদখলে রাখার ক্ষেত্রে স্বামী আবদুল মালেক প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছেন বলে অভিযোগ। তাদের নামে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ধারা ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি করা হয়।
গত ২০ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনের মামলায় মালেককে আলাদা দুটি ধারায় ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত।
আরও পড়ুন:ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের মেয়ে অর্পিতা শাহরিয়ার কবির মুমুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে বনানীর বাসা থেকে ৪১ বছর বয়সী মুমুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বনানী থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে বনানীর বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর পরিবারের অনুরোধে রাতেই পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে পুলিশ।
থানা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, পরিবারের অনুরোধে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি মারা যান শাহরিয়ার কবিরের স্ত্রী ডানা কবির।
আরও পড়ুন:রাজধানীর রামপুরার হাজীপাড়ার বিসমিল্লাহ টাওয়ারে নিনা খান (৪৩) নামের নারীকে তার স্বামী কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মেটলাইফ বাংলাদেশ নামের ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কর্মী নিনাকে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান তার স্বামী গিয়াস উদ্দিন। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
বার্ন ইনস্টিটিউটের এক চিকিৎসক নিউজবাংলাকে জানান, নিনার শরীর পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি তাতে ক্ষতচিহ্ন ছিল। তার স্বামীর তাড়াহুড়া দেখে চিকিৎসকের সন্দেহ হয়। পরে হাসপাতাল থেকে থানায় ফোন করলে পুলিশ এসে বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে স্বামীকে আটক করে।
ইন্স্যুরেন্স কর্মীর ভাই শওকত হোসেন খান বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে এসে দেখি, আমার বোনের পোড়া ও ক্ষতচিহ্ন নিয়ে নিথর দেহ পড়ে আছে বিছানায়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যা শুনেছি শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে এসে দেখি সব উল্টো। যদি আমার বোন পুড়ে থাকে, তাহলে তার দেহতে ধারালো অস্ত্রের ক্ষত হলো কীভাবে? এটা দুর্ঘটনা নয়, আমার বোনকে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শওকত বলেন, ‘আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে আমার বোনের হত্যার বিচার চাই।’
তিনি জানান, তার বোন ও ভগ্নিপতি উভয়ই মগবাজার এলাকায় মেটলাইফ বাংলাদেশে কাজ করেন। তাদের (নিনা) গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলার পলাশ থানায়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, ময়নাতদন্তের জন্য নিনার মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি বাজারের মার্কেটকে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, মার্কেটটি ধসে যে কোনো সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
এ সময় তিনি ব্যবসায়ীদের কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘দূর্ঘটনা ঘটলে তার দায়িত্ব কে নেবে?’
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর টিসিবি ভবনে কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের লক্ষ্যে কারওয়ান বাজারস্থ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
পৃথিবীর কোনো উন্নত দেশের রাজধানীর মাঝখানে পচনশীল পণ্যের পাইকারি কাঁচাবাজার নেই উল্লেখ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশে ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে এমন পাইকারি কাঁচাবাজার থাকতে পারে না। কারওয়ান বাজারে কোন কাঁচাবাজার থাকবে না।
‘উন্নত দেশের পাইকারি মার্কেটগুলো পরিদর্শন করেছি। পর্যাপ্ত খালি জায়গাসহ সকল সুবিধা নিশ্চিত করে নতুন মার্কেটের ডিজাইন করা হবে।’
সবার সাথে আলোচনা করেই কারওয়ান বাজার মার্কেটটি স্থানান্তর করা হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘এগারো সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করে দিচ্ছি। স্থানীয় তিনজন কাউন্সিলর, কারওয়ান বাজারের সুপার মার্কেট ও কাঁচাবাজার মার্কেটের ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও ডিএনসিসির কর্মকর্তার সমন্বয়ে এই কমিটি গঠিত হবে। ১৫ দিনের মধ্যে তারা কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন জমা দেবে।'
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট স্থানান্তরের চিঠি পাওয়ার পরই আমি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে এ এলাকার কাউন্সিলরদের দায়িত্ব দিয়েছি। আমি কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গেও আলোচনা করেছি, কাঁচাবাজারে আসা-যাওয়ার রাস্তা নির্মাণের জন্য বিএডিসির জায়গা প্রয়োজন। কৃষিমন্ত্রী তাতে সম্মতি দিয়েছেন।
‘স্থানান্তর হলে নতুন মার্কেটে সমপরিমাণ জায়গা বরাদ্দ দেয়া হবে। এর জন্য নতুন করে কোনো টাকা দিতে হবে না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে এমন সিদ্বান্ত আমাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি কথা দিচ্ছি, ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য কারওয়ান বাজারের চেয়ে বহুগুণ সুবিধা-সম্বলিত নিরাপদ আধুনিক মার্কেট নির্মাণ করে দেয়া হবে।’
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে একটি কমিটি ডিএনসিসির আটটি মার্কেটকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। আমাকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারাই তড়িৎ গতিতে ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট স্থানান্তর করার সিদ্বান্ত জানিয়েছে।
‘সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে কারওয়ান বাজার সরানোর জন্য যাত্রাবাড়ী, গাবতলী ও মহাখালীতে মার্কেট নির্মাণ করা হয়। এটি একনেকে পাশ হওয়া প্রকল্পের আলোকে হয়েছে। সে সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনেই একনেকে পাশ হয়ে এটি বাস্তবায়ন করা হয়। অতএব, এটি কারও মনগড়া কথা নয়।’
মেয়র আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায় ছয় মাস আগে পার্লামেন্টে বলেছেন, পদ্মা সেতু হয়ে গেছে। অতএব, দক্ষিণের জেলাগুলো থেকে আসা পণ্য ঢাকা শহরের দক্ষিণ প্রান্তে থাকবে। আর বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে আসা পণ্য ঢাকার উত্তর প্রান্তে থাকবে।
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা আমাদের জন্য অনুশাসন। সেই আলোকেই আমরা সিদ্ধান্ত নিই ও বাস্তবায়ন করি। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন বাস্তবায়ন করা আমাদের দায়িত্ব।’
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্বান্তেই স্থানীয় সরকারমন্ত্রী আমাকে বলেছেন ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট স্থানান্তরে ব্যবস্থা নিতে হবে। রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটের ভবন ধসে পড়ছে। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার পুনরায় চিঠি দিয়েছে আটটি ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট ইমিডিয়েটলি সরিয়ে নিতে হবে। তাই আমরা মার্কেটগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণ লিখে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই সাইনবোর্ডও সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’
মতবিনিময় সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কারওয়ান বাজার একটি ঐতিহ্যবাহী পাইকারি বাজার। প্রকৌশলীরা এ বাজারের কয়েকটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছেন। বিভিন্ন সময় সিটি করপোরেশন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো থেকে ব্যবসায়ীদের অন্যত্র সরে যাওয়ার জন্য বলেছে।
‘কারওয়ান বাজারের পাশ দিয়ে মেট্রোরেল হচ্ছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে। একসময় হয়তো কারওয়ান বাজারের রাস্তায় ট্রাক চলবে না। ব্যবসায়ীদের এটি আগে থেকেই বিবেচনা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাউকে জোর করে, ব্যবসা বন্ধ করে, রুটি-রোজগার বন্ধ করে আমরা স্থানান্তর করব না। আপনাদের জন্য বিকল্প ভালো ব্যবস্থা করেই স্থানান্তর করা হবে। আরও আধুনিক সুন্দর মার্কেট নির্মাণ করে স্থানান্তর করা হবে। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেই সিদ্বান্ত নেয়া হবে।
‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর বিকল্প ব্যবস্থা দ্রুতই করতে হবে। আমরা কেউই চাইনা আত্মাহুতি দিতে৷ সবাই মিলেমিশে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। আশা করি, উইন-উইন পজিশন নিশ্চিত করে কারওয়ান বাজারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এ সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি মানুষ যেন আত্মমর্যাদা নিয়ে জীবনযাপন করতে পারে, সে লক্ষ্য নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশ পরিচালনা করছেন। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা, কেউই পরিকল্পনার বাইরে নয়। কারওয়ান বাজারের পাইকারি মার্কেট স্থানান্তর একটি জটিল সমস্যা। সবার সহযোগিতায় এই সমস্যা সমাধান করতে হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘মার্কেট স্থানান্তরে অনেকের জীবন-জীবিকার বিষয় জড়িত। কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে হবে। পৃথিবীর সকল দেশের উন্নয়নে ডেস্ট্রাকশন-কনস্ট্রাকশন হয়েছে। কাউকে রিজিড হওয়া যাবে না। কাউকে প্রতিপক্ষ হিসেবে চিন্তা না করে, একপক্ষ হিসেবে চিন্তা করতে হবে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর মিরপুর চিড়িয়াখানায় হায়েনার আক্রমণে মো. সাইফ নামে দুই বছর বয়সী এক শিশুর ডান হাতের কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে শিশুটি জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল চিকিৎসাধীন।
মিরপুরের দারুস সালাম জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মফিজুর রহমান পলাশ নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘সাত ফিট উঁচু বেড়ায় (হায়েনার খাঁচার) নেট লাগানো। এই নেটের ভেতরে বড় মানুষের হাত ঢুকতে পারে না। সাইফ দুই বছরের বাচ্চা হওয়ায় কোনোভাবে সে হাত ঢুকিয়ে দিয়েছে।
‘চিড়িয়াখানায় সতর্কীকরণ ব্যানার ও মাইকিং করা হয় যে, খাচার আশেপাশে যাওয়া যাবে না। কিন্তু অসাবধানতাবশত বাচ্চাটি হাত ঢুকিয়ে দিয়েছিল।’
এ ঘটনায় শিশুটির ডান হাতের কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শিশুটি তার বাবা-মাসহ ৭ জন মিলে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে গিয়েছিল বলে জানান এসি।
আরও পড়ুন:লোডশেডিংয়ের কারণে ঢাকায় পানি সরবরাহের সংকট দেখা দিয়েছে। এ সংকট আরও বাড়লে কোনো এলাকায় আট ঘণ্টা পানি বন্ধ রেখে অন্য এলাকায় দেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কাওরানবাজারে ওয়াসা ভবনে চলমান পানি সংকট নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান ওই কথা বলেন।
তাকসিম এ খান বলেন, ‘আমাদের ১০টি মডস জোনের মধ্যে পাঁচটিতে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। বাকি পাঁচটি জোনে সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যুৎ নিয়মিত না পাওয়ার কারণে পাম্প চালাতে পারছে না ঢাকা ওয়াসা। ফলে ডিপ টিউবওয়েল থেকে পানি উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না।’
তিনি জানান, ঢাকায় দৈনিক ২৮৫ থেকে ২৯৫ কোটি লিটার পানির চাহিদা আছে। কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে ২৪০ কোটি লিটারের মতো।
এমডি বলেন, ‘এই সংকটের সময় রানিং পানি ব্যবহার না করে, পাত্রে নিয়ে পানি ব্যবহার করুন। এ ছাড়া সংকট বাড়লে প্রয়োজনে রেশনিংয়ের মাধ্যমে কোনো এলাকায় ৮ ঘণ্টা পানি বন্ধ রেখে অন্য এলাকায় দেয়া হবে।’
ঢাকা ওয়াসার এমডি জানান, যেসব এলাকায় পানির সমস্যা হচ্ছে, সেখানে ওয়াসার গাড়ির মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ কাজে ঢাকা ওয়াসার ৪৮টি পানির গাড়ি কাজ করছে। ছোট রাস্তার জন্য ১৭টি ট্রলি গাড়ির মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
তবে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য গাড়িতেও পানি ভরতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তাকসিম।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা বলেছি ওয়াসার পাম্পে ডুয়েল লাইন যেন করে দেয়া হয়।’
পানির অপচয়ও হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দুই ধরনের সমস্যা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। একদিকে পানি কম উৎপাদন হচ্ছে। পাইপের পানি গরম থাকায় অনেকে দীর্ঘ সময় পানি ছেড়ে ঠান্ডা পানি আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।’
আরও পড়ুন:অ্যালুমিনিয়াম ফসফেট মিশ্রিত কীটনাশক বড় গার্মেন্টস, বীজের গুদাম, অনাবাসিক স্থানে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বসুন্ধরার একটি বাসায় তেলাপোকা মারার বিষে ওই বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহারে ‘বিষক্রিয়ায়’ দুই শিশু মারা যায় বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তেলাপোকা মারার ‘বিষের ক্রিয়ায়’ দুই শিশুর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় ৫ জুন মামলা হয়।
ওই মামলায় ডিসিএস অর্গানাইজেশন লিমিটেড কোম্পানির চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান এবং কোম্পানিটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফরহাদুল আমিনকে গ্রেপ্তার করে লালবাগ গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
ভাটারা থানা পুলিশের সহযোগিতায় দুই আসামির ভ্রাম্যমাণ অবস্থান সনাক্ত করে বৃহস্পতিবার সকালে নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন অর-রশীদ এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা টের পেয়ে দুজনই তাদের নিজস্ব গাড়িতে টাঙ্গাইল, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতে থাকেন। এ কারণে তাদের ধরা সম্ভব হচ্ছিল না।’
‘অর্থের লোভে কোম্পানির মালিক-কর্মচারীরা স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয় উপলব্ধি না করে এবং পরিবারের সদস্যদের যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার উপদেশ না দিয়েই কর্মচারীদের দিয়ে কীটনাশক স্প্রে করে। যার ফলশ্রুতিতে দুটি শিশু মারা যায় এবং অসুস্থ হয় পরিবারের অন্য সদস্যরাও।’
ডিবি প্রধান আরও বলেন, ‘অ্যালুমিনিয়াম ফসফেট সমৃদ্ধ ওই কীটনাশক বড় গার্মেন্টস, বীজ গুদাম, অনাবাসিক স্থান ছাড়া ঘর-গৃহস্থে ব্যবহার করা যায় না। ঘরবাড়িতে এগুলো ব্যবহার করলে ৭২ থেকে ৯৬ ঘণ্টা প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হয়।’
‘গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ওই বিষাক্ত উপাদান কোথা থেকে কীভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে, এর অনুমোদন ছিল কি না, এর অনুপাত সঠিক ছিল কি না, মানবদেহের জন্য এগুলো কতটা ক্ষতিকর তা যাচাই-বাছাই করা হবে।’
ভিডিও কলে মারা যাওয়া দুই শিশুর বাবা মোবারক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফুটফুটে দুই শিশুর এভাবে মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমি সুষ্ঠু বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
পুলিশ জানায়, গত ২ জুন বসুন্ধরার আই ব্লকের একটি নতুন বাসায় পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিসের কর্মীরা তেলাপোকা মারার বিষ স্প্রে করেন। এর দুদিন পর ভুক্তভোগী পরিবারটি ওই বাসায় ওঠে।
বাসায় প্রবেশ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। পরে তাদের হাসপাতালে নেয়া হয়।
সেখানে রোববার ভোরে ৯ বছর বয়সী শাহিল মোবারত জায়ান এবং একইদিন রাত ১০টার দিকে ১৫ বছর বয়সী শায়েন মোবারত জাহিন মারা যায়।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে ঢাকায় আসত ইয়াবা বড়ির চালান। আর সেগুলো গ্রহণ করে সাভারের হেমায়েতপুরের বাসায় মজুত করতেন ঠাকুরগাঁওয়ের শাহজাহান। এরপর নানা কৌশলে উত্তরবঙ্গের কারবারিদের কাছে পৌঁছে দিতেন ইয়াবা। টেকনাফ থেকে ঢাকায় চালান আনার পর ইয়াবা উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে কীভাবে, কার কাছে পৌঁছাবে, তার সমন্বয় করতেন শাহজাহান।
একটি ইয়াবার চালানের সূত্র ধরে বুধবার হেমায়েতপুর থেকে শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
এর আগে শাহজাহানের কাছে ইয়াবার চালান নিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার হন ট্রাকচালক আলমগীর। তার ট্রাকের স্পেয়ার চাকার টিউবে বিশেষভাবে লুকানো অবস্থায় ১০ হাজার ইয়াবা বড়ি এবং হেমায়েতপুরে শাহজাহানের বাসা থেকে পেটিকোটে সেলাই করে লুকানো অবস্থায় ১৫ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের (উত্তর) উপপরিচালক মো. রাশেদুজ্জমান বলেন, ‘টেকনাফ থেকে ঢাকায় আসা ইয়াবা সমন্বয় করে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে পাঠাত শাহজাহান। রংপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়সহ অন্য জেলাগুলোতে ইয়াবা সরবরাহ করে আসছিল তারা। আর ইয়াবা বহন করার জন্য নারীদের ব্যবহার করত শাহজাহান।’
ট্রাকচালক আলমগীরের বিষয়ে রাশেদুজ্জামান জানান, টেকনাফ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় পণ্য পরিবহনের আড়ালে ইয়াবা বহন করে আসছিলেন আলমগীর। টেকনাফের ইয়াবা কারবারিদের নির্দেশে দেশের বিভিন্ন জেলায় তিনি পৌঁছে দিতেন ইয়াবা। এ কাজের জন্য প্রতি ট্রিপে এক থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত পেতেন আলমগীর। এ পর্যন্ত কতগুলো ট্রিপ দিয়েছেন, তা স্বীকার করেননি তিনি।
ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, হাতেনাতে আটক করার পরও মাদক কারবারে জড়িতরা কিছু স্বীকার করতে চান না। রিমান্ডে নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য