উপকূলীয় জেলা বরগুনার বাসিন্দাদের রাজধানীসহ অন্য জেলায় যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম নৌপথ। জেলার বিষখালী ও পায়রা নদীর তিনটি নৌপথ ব্যবহার করে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে।
ডুবোচরের কারণে সম্প্রতি এ নৌপথের যাত্রী ও বিভিন্ন নৌযানের চালকরা পড়েছেন দুর্ভোগে। ডুবোচরে পর্যাপ্ত সংকেত বাতি না থাকায় প্রতিনিয়ত আটকা পড়ছে বিভিন্ন ধরনের নৌযান।
নৌপথে যাতায়াতকারী ও নৌযান চালকরা জানান, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বিষখালী ও পায়রা নদীর বিভিন্ন এলাকায় ড্রেজিং করে। তবে নৌযানচালক বা স্থানীয় লোকজনকে সমন্বয় না করে নিজেদের মতো কাজ শেষ করে চলে যায় প্রতিষ্ঠানটি।
ড্রেজিংয়ের পর কিছুদিন নৌচলাচলে সমস্যা না হলেও এক মাসের মাথায় ফের নদীতে দেখা দেয় নাব্য সংকট। সৃষ্টি হয় ডুবোচরের। এতে বেশি বিপদে পড়েছে বরগুনা-ঢাকা, আমতলী-ঢাকা রুটে চলাচলকারী লঞ্চ যাত্রীরা।
বরগুনার নৌ রুটে প্রতিদিন ছয়টি লঞ্চ চলাচল করে। এ ছাড়া ঝালকাঠি থেকে চারটি লঞ্চ যাতায়াত করে। তিনতলার বড় লঞ্চগুলো নদীতে নাব্য সংকটের কারণে প্রায়ই আটকা পড়ছে। পণ্যবাহী নৌযানগুলোও চরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর বিষখালী নদীর ডুবোচরে প্রায় ৪০০ যাত্রীসহ আটকা পড়ে ঢাকা-বরগুনা রুটের লঞ্চ এমভি পূবালী-১। উদ্ধারকারী লঞ্চ গিয়ে পরে যাত্রীদের তীরে নিয়ে আসে। পাঁচ দিন পর উদ্ধার করা সম্ভব হয় লঞ্চটি।
এর আগে ১৩ আগস্ট ভোরে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার চরপালট গুচ্ছগ্রামসংলগ্ন বিষখালী নদীতে ডুবোচরে আটকা পড়ে লঞ্চ অভিযান-১০। এতে লঞ্চে থাকা ৪৩৪ যাত্রী চরম দুর্ভোগে পড়েন।
পর দিন ১৪ আগস্ট রাতে জোয়ারের পানি বাড়লে চর থেকে নামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন লঞ্চচালক। ইঞ্জিনের কম্পনে উল্টো দেবে যায় লঞ্চের তলা। ৯ দিন পর উদ্ধারকারী জাহাজ লঞ্চটিকে উদ্ধার করে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, বরগুনা সদর, আমতলী ও তালতলী উপজেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার প্রশস্ততার পায়রা (বুড়িশ্বর) নদী। এটি পটুয়াখালীর লোহালিয়া ও লেবুখালী নদী হয়ে বরিশালের কীর্তনখোলায় মিশেছে।
বিষখালী নদী বরগুনা সদরের পশ্চিম প্রান্ত ও পাথরঘাটা উপজেলার পূর্ব প্রান্তের মাঝখান দিয়ে প্রায় চার কিলোমিটার প্রশস্ততা নিয়ে প্রবাহিত। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদী হয়ে পিরোজপুরের বেকুটিয়া ও কচা নদীর সঙ্গে মিশেছে এটি।
চালকদের তথ্যানুযায়ী, বরগুনার পায়রা নদীর ২৫ এবং বিষখালী নদীর ৩০টি পয়েন্টে ডুবোচরের সৃষ্টি হয়েছে। বরগুনা-ঢাকা নৌ রুটে খাকদোন নদীর মোহনা থেকে বরিশাল পর্যন্ত বিষখালী নদীতে বাইনচটকি, বামনার রুহিতা ও বেতাগী অংশেও সৃষ্টি হয়েছে অনেক ডুবোচর। এসব চরের আয়তন ৫ থেকে ১০ বর্গকিলোমিটার।
পায়রা নদী বরগুনার আমতলী ফেরিঘাট এলাকায় কয়েক কিলোমিটারজুড়ে অনেক ডুবোচরের সৃষ্টি হয়েছে। এতে এ স্থান দিয়ে ফেরিসহ নৌযান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। চর ক্রমে বিস্তৃত হয়ে পশরবুনিয়া, গুলিশাখালী, জাঙ্গালিয়া, আয়লা, ক্যামঘাট, বিঘাই ছাড়িয়ে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ, পায়রাকুঞ্জ, রাজগঞ্জ ও লেবুখালীতে ছড়িয়ে পড়েছে।
লঞ্চ মালিকরা জানিয়েছেন, নৌ রুটের স্থানগুলো পরিদর্শন করে পর্যাপ্ত বয়া ও বিকন বাতি না থাকার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আগেই জানানো হয়েছে। তবে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
পূবালী লঞ্চের চালক সেন্টু হাওলাদার বলেন, ‘এত কিছুর পরও বিআইডব্লিউটিএ ঝুঁকিপূর্ণ নৌপথে সংকেত বাতির ব্যবস্থা করেননি। এ কারণে লঞ্চ চালাতে ভয় পাচ্ছি। পর্যাপ্ত বয়া, বিকন বাতি ও মার্কার সংকট রয়েছে নৌপথে। পাশাপাশি পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ডুবোচর নির্ণয়ে সমস্যা হয়। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছি আমরা।’
লঞ্চটির মাস্টার জহিরুল ইসলাম জানান, বরিশালের পর বরগুনা পর্যন্ত ঝালকাঠির গাবখান মোহনা ছাড়া আর কোথাও নৌ-সংকেত নেই। বিশেষ করে বিষখালী নদীর ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়ন এলাকা খুবই ভয়াবহ। এখানে রয়েছে অসংখ্য ডুবোচর। মোড় ঘুরতে গেলেই বিপজ্জনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়।
শাহরুখ লঞ্চের চালক নাসির শেখ বলেন, ‘ঢাকা থেকে প্রায় ৪০০ যাত্রী নিয়ে বরগুনা যাওয়ার পথে বিআইডব্লিউটিএর কোনো বয়াবাতি বা মার্কিং না থাকায় অতি সতর্কতার সঙ্গে সামনে এগোতে হচ্ছিল।
‘ওই রাতে প্রচুর বৃষ্টি ছিল; জোয়ারের পানিও ছিল বেশি। এ কারণে চরটির নিশানা বোঝা যাচ্ছিল না। মোড় ঘোরার সময় লঞ্চটি চরের উপরে উঠে যায়।’
পূবালী লঞ্চের মালিক ইমরান খান রাসেল বলেন, ‘চর থেকে লঞ্চ নামানো খুবই ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ বিষয়। দুর্ঘটনার পরপরই আমরা বরিশাল নদীবন্দর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, এখানে দ্রুত মার্কিং (নাব্যসংকেত) স্থাপনের জন্য।’
বরগুনা জেলা নদী পরিব্রাজক দলের সভাপতি সোহেল হাফিজ জানান, সিডরের সময় বঙ্গোপসাগরের তলদেশের বালু ওপরে এসে বিশাল বালির স্তূপ তৈরি করে। তার উপর ধীরে ধীরে পলি জমে বর্তমানে বিশাল এলাকাজুড়ে ডুবোচরের সৃষ্টি হয়েছে।
বরগুনা বিআইডব্লিউটিএর বন্দর কর্মকর্তা মামুন অর-রশিদ জানান, ডুবোচরের কারণে পায়রা ও বিষখালী নদীর স্বাভাবিক গতিপথ কমে গেছে। ড্রেজিং করে পায়রা নদীর নাব্য ফেরাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মোহাম্মদ আবদুল মতিন বলেন, ‘আমরা নৌযান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে প্রতিবছরই খনন কাজ করে থাকি। বিষখালী ও পায়রায় গত অর্থবছরে খনন কাজ হয়েছে। নৌযান চলাচলের সুবিধার্থে আমরা দ্রুত ডুবোচর কেটে ও নদী খনন করে নির্বিঘ্ন নৌ রুট তৈরি করব।’
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আইয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্ত করে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানাধীন সাজেকে শ্রমিকবাহী ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
বাঘাইছড়ি থানার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত বলে জানান।
এর আগে বিকেলে সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ভাষ্য, খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের উদয়পুর সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য ডাম্প ট্রাকে ১৪ জন শ্রমিক জামান ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সেতুর কাজে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয়জনের মৃত্যু হয়।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার সাংবাদিকদের জানান, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ৭ (সাত) বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৈয়দ সরাফত আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক রিপন চন্দ্র গোপের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
৬০ বছর বয়সী সৈয়দ সরাফত আলী রাজনগর থানার করিমপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা।
পিবিআই জানায়, শিশুটিকে বাঁশের বাঁশি বানিয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে গত ১৪ এপ্রিল বেলা পৌনে দুইটার দিকে সৈয়দ সরাফত আলী তার বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ের নিচে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে তিনি আত্নগোপন করেন।
অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে গত প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাজনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পিবিআই মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীর পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে। মামলার খুঁটিনাটি বিষয় বিবেচনায় রেখে নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে দায়িত্ব পালনকালে রুহুল আমিন নামে এক ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। বাবার নাম কোরবান আলী।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের মধ্যে ট্রাক পরিদর্শন শেষে দুপুর পৌনে ১টার অফিস কক্ষে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন রুহুল আমিন। সহকর্মীরা তাকে দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন এসএম মাহমুদুর রশিদ জানান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই মারা যান। হাসপাতালে যারা নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন যে তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন, পানি খেতে চেয়েছিলেন।
তবে তার মৃত্যু যে হিট স্ট্রোকে হয়েছে এটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। অন্য কোনো রোগেও তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এখন যেহেতু প্রচণ্ড গরম চলছে তাই এটার প্রভাব থাকতে পারে।
সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ২৮৮ জন সদস্যকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিটিএ জেটি ঘাট থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের টাগবোটে তুলে দেয়া হয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন জানান, গভীর সাগরে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে অপেক্ষায় থাকা মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ চিন ডুইনে তাদের তুলে দেয়া হবে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সেনা ও সীমান্তরক্ষীদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওই জাহাজ বুধবারই বাংলাদেশের জলসীমায় পৌঁছায়। ওই জাহাজে করেই ১৭৩ জন বাংলাদেশি ফিরে এসেছেন। যারা বিভিন্নভাবে মিয়ানমারে আটকা পড়েছিলেন বা সাজা পেয়ে জেলখানায় ছিলেন।
মিয়ানমার নৌবাহিনীর ওই জাহাজে করে দেশটির ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও বুধবার দুপুরে কক্সবাজার পৌঁছায়। পরে তারা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটালিয়নে বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর তারা মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের যাচাই-বাছাইসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়।
বিজিবি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ১১টি বাসে করে মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ জেটি ঘাটে নিয়ে আসা হয়।
সেখানে আনার পর ইমিগ্রেশন ও ডকুমেন্টেশনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে শুরু হয় হস্তান্তর প্রক্রিয়া। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও কোস্ট গার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশশে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতসহ দেশটির প্রতিনিধি দলের কাছে তাদের হস্তান্তর করেন।
এরপর সকাল ৭টার দিকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কর্ণফুলি টাগবোটে তুলে দেয়া হয়। কোস্ট গার্ডের একটি ট্রলার টাগবোটটিকে পাহারা দিয়ে গভীর সাগরে নিয়ে যায়।
দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে, যার আঁচ লেগেছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাতেও। সীমান্তের ওপারের মর্টার শেল ও গুলি এসে এপারে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
ওই সংঘাতের মধ্যে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ ৩৩০ জনকে প্রথম দফায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ফেরত পাঠিয়েছিল সরকার।
তাদের মধ্যে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি ৩০২ জন, তাদের পরিবারের চার সদস্য, দুজন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন।
এরপর বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্ত নিয়ে কয়েক দফায় আরো ২৮৮ জন সীমান্তরক্ষী ও সেনা সদস্য এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এবার তাদের ফেরত পাঠানো হলো।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে বুধবার রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় দুটি ড্রেজার জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ।
মাওয়া নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের যশিলদিয়ায় বুধবার রাত দেড়টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় নিয়ম অমান্য করে বালু উত্তোলন করায় ওই দুটি ড্রেজার জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ড্রেজার জব্দ করার সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত ড্রেজার দুটির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য