ব্যাংকে টাকা রেখে মুনাফা হয় না বললেই চলে, মূল্যস্ফীতির হিসাব করলে বছর শেষে মূল্যমান কমে যাচ্ছে টাকার।
সঞ্চয়পত্রেও ইচ্ছা করলে বিনিয়োগ করা যায় না, আবার সেখানে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের বেশি বিনিযোগ করলে মুনাফার হারও কমিয়ে দেয়া হয়েছে।
তাহলে যারা উদ্যোক্তা না হয়ে ক্ষুদ্র সঞ্চয় করবেন, তারা কোথায় যাবেন?
এ ক্ষেত্রে দুটি বিকল্প বিনিয়োগের সুযোগ আছে, যার একটি হলো বন্ড ও অন্যটি মিউচুয়্যাল ফান্ড। এর মধ্যে বন্ডের মুনাফা পুরোপুরি আয়করমুক্ত আর মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মুনাফার একটি নির্দিষ্ট অঙ্ক পর্যন্ত আয়করমুক্ত।
আবার এই দুটি খাতে বিনিয়োগ করলে আয়কর ছাড় পাওয়া যায়। ফলে এগুলোতে বিনিয়োগে দুই দিক থেকে লাভ হয় বিনিয়োগকারীর।
ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কাছে বন্ডে বিনিয়োগ বিষয়ে তেমন ধারণা নেই্। এ জন্য তারা এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হয় না। উচ্চবিত্ত শ্রেণির মানুষ আর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখানে বিনিয়োগ করে। বাংলাদেশের মানুষ ইচ্ছা করলেই বন্ড কিনতে পারে না। কারণ, বন্ডের সেকেন্ডারি মার্কেট নেই।’
তবে এ ক্ষেত্রেও দিন বদল হতে যাচ্ছে। কারণ, পুঁজিবাজারে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের পারপিচুয়াল বন্ড সরাসরি তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে। পাশাপাশি ইসলামি শরিয়াভিত্তিক সুকুক বন্ড অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলোতেও আকর্ষণীয় মুনাফা হতে পারে।
সেই সঙ্গে আরেকটি বিকল্প হলো মিউচ্যুয়াল ফান্ড। পুঁজিবাজারে ৩৬টি ফান্ড তালিকাভুক্ত আছে। পাশাপাশি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয়, এমন মিউচ্যুয়াল ফান্ডও আছে এর চেয়ে বেশি। চলতি বছর অনেক ফান্ডই সঞ্চয়পত্রের সুদহারের চেয়ে বেশি হারে লভ্যাংশ দিয়েছে।
তবে এ ক্ষেত্রে কিছুটা ঝুঁকি আছে। কারণ, এই ফান্ডগুলোর লভ্যাংশ পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করে। তাই মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে হলে পুঁজিবাজার নিয়ে ন্যূনতম জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
বন্ড কী
বন্ড হচ্ছে একধরনের চুক্তি বা ঋণপত্র, যার বিপরীতে কোনো প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে মূলধন সংগ্রহ করে।
ইংরেজি ‘বন্ড’ অর্থ অঙ্গীকারনামা বা মুচলেকা। এটির বিপরীতে যে ঋণ গ্রহণ করা হচ্ছে, সেটি নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিশ্রুত সুদসহ ফেরত দেয়ার অঙ্গীকারপত্র।
এই ঋণপত্র বা অঙ্গীকারনামার বিপরীতে ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি কিংবা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করে। তার জন্য অবশ্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য অন্যান্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হয়।
বন্ডে বিনিয়োগের বিপরীতে যে সুদের হার উল্লেখ করা থাকে, নির্দিষ্ট বিরতিতে সেই সুদ এবং মূল অর্থের অংশবিশেষ পরিশোধ করা হয়। এই সুদের হার পরিবর্তনশীলও হতে পারে।
সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়, আবার বিল ও বন্ডের মাধ্যমেও অর্থ সংগ্রহ করে। ব্যাংকগুলোও বন্ড ছেড়ে বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। এই বিল ও বন্ডও হতে পারে বিনিয়োগের অন্যতম জায়গা।
শিগগিরই এসব বিল ও বন্ড কেনা যাবে ব্যাংকগুলোর শাখা থেকে। বর্তমানে অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে হিসাব খুলে এই বিল ও বন্ড কেনা যায়। এসব বন্ডে বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্য মুনাফায় কর ছাড়ও রয়েছে।
নতুন ধরনের বন্ড আসছে, যা পারপিচুয়াল বন্ড নামে পরিচিত। এ বন্ড পরিশোধের কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে না। কোম্পানি অবসায়িত না হওয়া পর্যন্ত এই বন্ড কার্যকর থাকে।
এ বন্ড ছেড়ে ব্যাংক বা ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠান সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। সেই অর্থের বিপরীতে বছরভিত্তিক বা ষাণ্মাসিক সুদের জন্য কুপন দেয়া হয়। যারা এ বন্ড কেনেন তারা কুপনে নির্ধারিত হারে সুদ পান। তবে সময়ে সময়ে সুদের কিছুটা কমবেশি হয়।
উচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এ ধরনের বন্ডে বিনিয়োগ করে থাকেন। কারণ, এ ধরনের বন্ডে সাধারণ মানুষের বিনিয়োগের সুযোগ সীমিত। তাই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে এটিকে সাধারণ মানুষের নাগালে আনার উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি।
নিয়ম অনুযায়ী, যদি কোনো ইস্যুয়ার পারপিচুয়াল বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করতে চায়, তাহলে তাকে অবশ্যই প্রস্তাবিত পারপিচুয়াল বন্ডের কমপক্ষে ১০ শতাংশ পাবলিক অফারের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে।
ইতোমধ্যে যে ১১টি ব্যাংককে পারপিচুয়াল বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের অনুমতি দেয়া হয়েছে, সেগুলোকে সরাকরি তালিকাভুক্ত করা হবে।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, সাধারণত মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করতে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান পারপিচুয়াল বন্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে। বিনিময়ে উচ্চ সুদ দেয়।
নতুন ধারার বিনিয়োগ সুকুক বন্ড
সুকুক হলো ইসলামিক শরিয়াহ নীতিমালা মেনে পরিচালিত বন্ড বা আর্থিক পণ্য। প্রচলতি বন্ডের সুদের পরিমাণ নির্ধারিত থাকে, কিন্তু তার বিপরীতে কোনো সম্পদের ব্যাকআপ থাকে না। তবে সুকুক নিদির্ষ্ট সম্পদ বা প্রকল্পের বিপরীতে গঠিত হয়। ওই সম্পদ ও প্রকল্পের আয়ই আনুপাতিক হারে পেয়ে থাকেন সুকুক ইউনিটধারীরা। সুদমুক্ত হওয়ায় বিশ্বব্যাপী এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী দুই ট্রিলিয়ন ডলারের ইসলামি আর্থিক সম্পদের ৭৩ ভাগই ব্যাংকিং সম্পদ, যার ১৭ শতাংশই সুকুক।
সম্প্রতি বেক্সিমকো লিমিটেডের তিন হাজার কোটি টাকার শেয়ারে রূপান্তরযোগ্য সুকুক বন্ড অনুমোদন করেছে বিএসইসি। এতে সর্বনিম্ন ৯ বা তার বেশি মুনাফা মিলবে। আবার বেক্সিমকো লিমিটেডের লভ্যাংশ ১০ শতাংশের বেশি হলে যতটুকু বেশি, তার ১০ শতাংশ যোগ হবে সুকুকের লভ্যাংশে।
আবার এক বছর শেষে বিনিয়োগের ২০ শতাংশ প্রত্যাহারের সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কেউ চাইলে নগদ টাকা পাবেন, কেউ চাইলে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার নিতে পারবেন। আর এখানেই বাড়তি মুনাফার সুযোগ আছে।
বিনিয়োগকারীরা বেক্সিমকোর শেয়ার পাবেন শেয়ারের দুই মাসের ভরিত মূল্যের চেয়ে ৭৫ শতাংশ ছাড়ে। ফলে এই শেয়ার বিক্রি করে তারা ৩৩ শতাংশ বেশি মুনাফা করতে পারবেন। এভাবে প্রতিবছরে ১৬ থেকে ১৭ শতাংশ মুনাফা করা সম্ভব।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের একটি বন্ডও অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। ধীরে ধীরে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এ ধরনের বন্ড বিক্রি শুরু করলে বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মুক্ত হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষমতা ও ধার শোধের সংস্কৃতি দেখেই বন্ড কেনা উচিত।
মিউচ্যুয়াল ফান্ড
অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো মিউচ্যুয়াল ফান্ড দেশে দেশে বিনিয়োগের আকর্ষণীয় এক সুযোগ। তবে ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে মহাধসের পর থেকে এই খাত ঘুমিয়ে ছিল গত এক বছর পুঁজিবাজার চাঙা হয়ে ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে এবার আবার এই খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
এই ফান্ডগুলোর একটি অংশ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত, একটি অংশ তালিকাভুক্ত নয়। সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির কাছ থেকে এই ফান্ডগুলো কেনা যায়।
ফান্ডগুলো জনগণের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে। দক্ষ ও অভিজ্ঞরা এর ব্যবস্থাপনায় থাকে বলে এর ঝুঁকি কম থাকে।
বছর শেষে যে মুনাফা হয়, তার কমপক্ষে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ নগদে বিতরণ করা হয়। চলতি বছর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়, এমন ফান্ডগুলোর বেশির ভাগ সঞ্চয়পত্রের সুদহারের চেয় বেশি হারে লভ্যাংশ বিতরণ করেছে।
তার পরেও এই খাত নিয়ে বিনিয়োগকারীরা সেভাবে আগ্রহী হচ্ছেন না। এর কারণ, বিশেষ করে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ফান্ডের লভ্যাংশ নেয়ার পর ফান্ডের দরপতন।
যে ফান্ড যত বেশি লভ্যাংশ দিয়েছে, তার ইউনিটপ্রতি দর কমে গেছে তত। অথচ এই দর কমার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। কারণ, ফান্ডগুলো গত ৩০ জুনে সমাপ্ত অর্থবছর শেষে হাতে থাকা নগদ টাকার ওপর ভিত্তি করে লভ্যাংশ দিয়েছে। এই লভ্যাংশ দেয়ার পর সেপ্টেম্বরে এসে কোনো ফান্ডের আর্থিক কোনো শক্তি ক্ষয় হয়নি।
এটি বিনিয়োগকারীদের মনস্তাত্ত্বিক চাপের কারণে হয়ে থাকে বলে মনে করেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা।
তবে এই ফান্ডে বিনিয়োগ করতে হলে পুঁজিবাজার সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা থাকা উচিত বলে মনে করেন ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান।
আবার পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হলে নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য মিউচ্যুয়াল ফান্ডই ভালো বিকল্প বলে মনে করেন তিনি।
নিউজবাংলাকে রকিবুর রহমান বলেন, ‘নতুন বিনিয়োগকারী যারাই পুঁজিবাজারে আসবে, তাদের আগে ভালো অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি দেখে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগ করা উচিত।’
চলতি বছর মিউচ্যুয়াল ফান্ড যে হারে লভ্যাংশ দিয়েছে, একই পরিমাণ মুনাফা করলে আগামী বছর এর চেয়ে বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে। এর কারণ, গত বছর করোনার প্রাদুর্ভাবের পর পুঁজিবাজারে ছোটখাটো ধসের কারণে ফান্ডগুলোর সিংহভাগ বড় অঙ্কের লোকসান দিয়েছে। আর সেই লোকসান এবারের লভ্যাংশ থেকে সমন্বয় করতে হয়েছে তাদের।
আগামী বছর যে মুনাফা হবে, তার পুরোটার ওপর ভিত্তি করে লভ্যাংশ দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে গ্রোথ ফান্ডগুলোকে তাদের আয়ের কমপক্ষে ৫০ শতাংশ আর মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোকে ৭০ শতাংশ বিতরণ করতে হবে।
তবে এই বিনিয়োগ বরাবরই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, পুঁজিবাজারের উত্থান-পতন ফান্ডের আয়ের প্রভাব ফেলে। তবে এ ক্ষেত্রে একটি সুবিধা আছে এ কারণে যে, প্রতিটি ফান্ড প্রতি সপ্তাহ শেষে ইউনিটপ্রতি সম্পদমূল্য কত আছে, সেটি প্রকাশ করতে বাধ্য। আর তিন মাস অন্তর তাদের মুনাফা বা লোকসান কত হলো, সেটিও প্রকাশ করে।
এগুলো ছাড়াও ওয়েবসাইটে প্রতিটি ফান্ড কোন কোন শেয়ারে কত টাকা বিনিয়োগ করেছে, সে তথ্য দেয়া থাকে। এগুলো পর্যালোচনা করেও বিনিয়োগকারীরা হিসাব-নিকাশ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ শিক্ষাটা জরুরি।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
মন্তব্য