দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং বিভিন্ন সেক্টরে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে একটি রোডম্যাপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ও কুয়েত।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ খালেদ আল-হামাদ আল সাবাহর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
লোটে নিউ ইয়র্ক প্যালেস হোটেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। কুয়েতের সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে অনেক দিনের পুরোনো সম্পর্ক। উনি (কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী) মনে করেন আগামী ৫ বছর বাংলাদেশ ও কুয়েত একটা রোডম্যাপ তৈরি করবে, অ্যাকশনেবল প্রোগ্রাম তৈরি করবে। যাতে আমাদের সম্পর্ক আরও অধিকতর শক্তিশালী হয়। বিভিন্ন রকম প্রজেক্টও হাতে নিতে চান তিনি।’
দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে খুবই ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, ‘দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এই রোডম্যাপ তৈরির বিষয়ে বিস্তারিত কাজ করা হবে। তারা বলছে, আগামী পাঁচ বছর তারা একটা রোডম্যাপ করতে চায় এবং আমরা এটা নিয়ে কাজ করব। আমাদের আলোচনা করতে হবে যে কী কী ক্ষেত্রে আমরা তাদের সাহায্য চাইব এবং তারা আজকে বলেছে কোন কোন ক্ষেত্রে তারা আমাদের সাহায্য চায়।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যেই কুয়েত ফান্ড থেকে অনেকগুলো প্রজেক্ট আমরা দেশে চালিয়েছি। আমরা আরও চাই এবং তারাও আগ্রহী। তারা রিফাইনারি করার জন্য বাংলাদেশে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন অবশ্যই, আমরা তাদের জায়গা দিয়ে দেব। সুতরাং আমরা সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছি।’
কুয়েত ও বাংলাদেশের মধ্যকার ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের কথা তুলে ধরে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কুয়েতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরে যিনি আমির হন তিনি ঢাকায় এসে ওআইসি সম্মেলনে উনি নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই সময় থেকে কুয়েতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক।
কুয়েত একাধিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে চায় জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে কুয়েতের অর্থায়নে পাঁচটি বড় প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। আমরা সেগুলোকে আরও শক্তিশালী করতে চাই, আরও বড় করতে চাই। রিফাইনারি করার জন্য তাদের থেকে প্রাথমিক একটা প্রস্তাব এসেছে। এখন এটা আরও সুনির্দিষ্ট হবে।’
কুয়েত ফান্ড সম্পর্কে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, কুয়েত ফান্ডটি বাংলাদেশে প্রথম দফায় ব্যবহার করা হয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, বিভিন্ন পৌরসভা এবং উপজেলার অবকাঠামো উন্নয়নে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে দ্বিতীয় দফার যে ফান্ড সেটা ১০০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি হবে, সেটা চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। প্রথম দফার যে ৫০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প ছিল সেটার সবই বাস্তবায়ন হয়ে গেছে।
কুয়েত সেনাবাহিনীতে ‘বাংলাদেশ কন্টিনজেন্ট’ নামে একটা কন্টিনজেন্ট আছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিশেষ করে ইরাক যখন কুয়েত আক্রমণ করে, কুয়েতের বর্ডারে যে মাইনগুলো তখন ছিল সেগুলো সরাতে এখনও কাজ চলছে। যদিও কুয়েত সেনাবাহিনীর নিজস্ব সক্ষমতা তৈরি হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চূড়ান্তভাবে সেটাকে আরেকবার দেখেছে। তারপর এই এলাকাটাকে উন্মুক্ত ঘোষণা করা হয়।
কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর এই অবদানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন বলে জানান শাহরিয়ার আলম।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনের উদ্বোধনী পর্বে অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তিনি সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লোফভেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে ডাকাতি মামলার আসামি ও ডাকাত সর্দার শ্রী নিরঞ্জন দাসকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) সীতাকুণ্ড থানার দক্ষিণ ঈদিলপুর এলাকায় র্যাবের অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার নিরঞ্জন দাস, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ থানার সারিকাইভ এলাকার প্রফুল্ল কুমার দাসের ছেলে।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারে– চট্টগ্রাম মহানগরের কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া একটি ডাকাতি মামলার প্রধান আসামি শ্রী নিরঞ্জন দাস সীতাকুণ্ড এলাকায় অবস্থান করছেন। ওই তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
চট্টগ্রাম র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এ আর এম মোজাফফর হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সদরঘাট নৌ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রং, সংগীত আর তরুণদের উদ্দীপনায় তিন দিন ধরে মুখর ছিল গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম জনপ্রিয় এই আয়োজন ‘গ্রিন ফেস্ট ২.০’ অনুষ্ঠিত হয় গত ১৫ থেকে ১৭ অক্টোবর। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, সাংস্কৃতিক বন্ধন আর পরিবেশ সচেতনতাকে একসূত্রে গেঁথে তৈরি এই উৎসব ছিল আনন্দ আর শিক্ষার এক অপূর্ব সমন্বয়।
১৫ অক্টোবর এক বর্ণাঢ্য ফ্ল্যাশ মবের মাধ্যমে শুরু হয় উৎসব, যা মুহূর্তেই গোটা ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দেয়। ১৬ অক্টোবরের আয়োজন ছিল আরও বৈচিত্র্যময়। ‘আমার ক্লাস, আমার থিম’ শিরোনামে শিক্ষার্থীরা নিজেদের শ্রেণিকক্ষ ও বিভাগ সাজিয়েছিলেন নানা সৃজনশীল উপায়ে। দিনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল শিক্ষার্থী ও এলামনাইদের মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচ, যা নতুন-পুরাতনের এক উৎসাহ ও বন্ধুত্বের মেলবন্ধন। সন্ধ্যায় ‘ওপেন মাইক’ সেশনে শিক্ষার্থীরা গান, কবিতা আর কৌতুক দিয়ে মাতিয়ে রেখেছিলেন সবাইকে। দিনের শেষে অনুষ্ঠিত হয় এক ভিন্নধর্মী ‘খাদ্য প্রস্তুতি প্রতিযোগিতা’।
উৎসবের শেষ দিন, ১৭ অক্টোবর, শুরু হয় ‘কালচারাল ফিউশন’ ও ক্লাসরুম প্রদর্শনী দিয়ে। শিক্ষার্থীরা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) নিয়ে তাদের চিন্তাভাবনা তুলে ধরেন ‘এসডিজি ক্যানভাস’-এ। পরিবেশ ও স্থায়িত্ব নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে আয়োজন করা হয় বিশেষ সেমিনার। বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনাইদের আকর্ষণীয় পরিবেশনাও পায় শিক্ষার্থী-শিক্ষক এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের অকুণ্ঠ প্রশংসা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দশটি বিভাগের মধ্যে ইইই বিভাগ ‘আমার ক্লাস, আমার থিম’ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন এবং সিএসই বিভাগ রানার-আপ হবার গৌরব অর্জন করে। ক্রিকেট খেলায়, নিয়মিত শিক্ষার্থীদের দল চ্যাম্পিয়ন এবং এলামনাইদের দল রানার-আপ হয়।
সন্ধ্যার মূল আকর্ষণ ছিল আমন্ত্রিত শিল্পীদের অনুষ্ঠান। প্রথমে মঞ্চে আসেন খ্যাতনামা লোকসংগীত শিল্পী শাহ মুহাম্মদ শিপন ও তার দল। তাদের বাউল ও লোকসংগীতের সুরে মুগ্ধ হন দর্শকরা। উৎসবের সমাপ্তি ঘটে দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘লেভেল ফাইভ’-এর প্রাণচঞ্চল ও উদ্দীপনাময় পরিবেশনার মধ্য দিয়ে।
গ্রিন ফেস্ট ২.০-এর এই সফল আয়োজনে গ্রিন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: শরীফ উদ্দিন বলেন, "এই উৎসব আমাদের শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, সাংস্কৃতিক সম্প্রীতি ও পরিবেশ সচেতনতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা শুধুমাত্র ক্লাসরুমভিত্তিক একাডেমিক কার্যক্রমই নয়, শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, নেতৃত্বের গুণাবলী, উদ্যম ও মেধার বিকাশেও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
‘গ্রিন ফেস্ট ২.০’ কেবল একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানই ছিল না, বরং এটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সবুজ ক্যাম্পাস’ চেতনারই প্রতীক। এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে দলগত কাজ, সাংস্কৃতিক সম্প্রীতি ও পরিবেশ সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে, যা গ্রিন ইউনিভার্সিটির মূল আদর্শের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এই উৎসব নিঃসন্দেহে শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত ও সৃজনশীল মনেরই স্বাক্ষর বহন করে।
কিশোরগঞ্জের ইটনায় ধনু নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজের ৪৮ ঘণ্টা পর এক জেলের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রবিবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার শিমুলবাঁক গ্রামের পাশে ধনু নদী থেকে শ্রীকৃষ্ণ দাস (৫০) নামের ওই জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি ইটনা উপজেলার এলংজুরী ইউনিয়ন সদরের বড়হাটি গ্রামের মৃত রসিক দাসের ছেলে।
ইটনা ধনপুর নৌপুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, “রবিবার সকালে স্থানীয়রা নদীতে মরদেহটি ভাসতে দেখে আমাদের খবর দেয়। পরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করি।”
এর আগে শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে শ্রীকৃষ্ণ দাস নিজের বাড়ির পাশের ধনু নদীতে একটি ডিঙি নৌকায় করে মাছ ধরতে যান। সকাল ৮টার দিকে অন্যান্য জেলেরা দেখতে পান, তার নৌকায় জাল ও মোবাইল ফোন পড়ে আছে, কিন্তু তিনি নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার কোনো সন্ধান মেলেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা আশিক দাস জানান, “দুই বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শ্রীকৃষ্ণ দাসের স্ত্রী মারা যান। তিনি একটি মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে জীবনযাপন করছিলেন।”
স্বজনদের বরাতে এসআই নিখিল চন্দ্র দাস আরও জানান, শ্রীকৃষ্ণ দাস কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। তারপরও জীবিকার তাগিদে মাছ ধরতে বের হন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মাছ ধরার সময় দুর্বল শরীরের কারণে তিনি নদীতে পড়ে যান এবং ডুবে মারা যান।
শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের লংগরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী সাবানার কোলে জন্ম নিয়েছে এক নবজাতক কন্যা শিশু। পরে অসুস্থ ওই নারীকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। এ শিশুটিকে দত্তক নিতে আসছে অনেকেই। নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস স্থানীয় প্রশাসনের।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী সাবানা দীর্ঘদিন ধরে শ্রীবরদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলো। তাকে বিভিন্ন সময় রাতে লংগরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে ঘুমাতে দেখা যায়। ১৮ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ স্কুলের পরিত্যক্ত ভবন থেকে নবজাতকের কান্নার শব্দ শুনে এলাকাবাসী ছুটে যান সেখানে। পরে তারা দেখতে পান, ওই নারীর কোলে জন্ম নিয়েছে একটি কন্যা শিশু। পরে স্থানীয়রা দ্রুত মা ও নবজাতককে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান এবং তাদের খাবার ও প্রাথমিক সেবা দেন। শিশুটি সুস্থ থাকলেও মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
এদিকে অসহায় নবজাতককে দত্তক নিতে অনেকেই এগিয়ে এসেছে। বলতে গেলে প্রতিযোগিতাই শুরু হয়েছে।
এঘটনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে কেউ ওই নারীর পরিচয় জানেনা। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্ন ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
শ্রীবরদী সমাজসেবা অফিসার মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমরা বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে প্রতিনিধি পাঠিয়েছি। হাসপাতালে সমাজসেবা শাখা রয়েছে। তারাই চিকিৎসা সহায়তা দেবে। এরপর নবজাতক ও ওই নারীর পূনর্বাসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শ্রীবরদী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নিবার্হী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হাসিব-উল-আহসান বলেন, মা ও নবজাতকের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সমাজসেবা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন। তাদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হবে। এছাড়াও ওই নারীর ঠিকানা সম্পর্কে খোঁজ নিতে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়েছে।
শেরপুর জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা: তানবির আহমেদ জানান, নবজাতক ভাল আছে। তবে মানষিক ভারসাম্যহীন মহিলার অবস্থা খারাপ থাকায় তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তার চিকিৎসা চলছে।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে ফাঁসির আসামিদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা যাবে না, হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানির জন্য আগামী ২৮ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই দিন ধার্য করেন।
আদালতে বিষয়টি শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন রিটকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
এর আগে ২০২৪ সালের ১৫ মে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে ফাঁসির আসামিদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা যাবে না, এ রায় স্থগিত করেন হাইকোর্ট। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এর আগে ২০২৪ সালের ১৩ মে, মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। দীর্ঘ সাড়ে ৩ ঘণ্টাব্যাপী রায় ঘোষণা করা হয়।
রায়ে বলা হয়েছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির আপিল, রিভিউ, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার ধাপগুলো নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না। বর্তমানে মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার আগে সারা দেশে যত আসামিকে কনডেম সেলে রাখা হয়েছে, তাদের দুই বছরের মধ্যে ক্রমান্বয়ে সাধারণ সেলে রাখার কথা বলা হয়েছে। তবে, বিশেষ কারণে (স্বাস্থ্যগত কারণ, সংক্রামক রোগ) কোনো ব্যক্তিকে নির্জন কারাকক্ষে রাখতে পারবে কারা কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির উপস্থিতিতে শুনানি হতে হবে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এমএমজি সারোয়ার পায়েল, নাসিম ইসলাম রাজু।
আইনজীবীরা বলেছেন, এটি একটি ঐতিহাসিক রায়।
২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা কেন বেআইনি হবে না এবং কেন জেলকোডের ৯৮০ বিধি অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়।
বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।
২০২৩ সালের ৫ এপ্রিল এ বিষয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কনডেম সেলে থাকা বন্দিদের বিষয়ে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয় সেদিন। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দেন।
এর আগে ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মামলা চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হওয়ার আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
চট্টগ্রাম কারাগারে কনডেম সেলে থাকা জিল্লুর রহমানসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন বন্দির পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির এ রিট দায়ের করেন।
রিট আবেদনকারীরা হলেন– চট্টগ্রাম কারাগারের কনডেম সেলে থাকা সাতকানিয়ার জিল্লুর রহমান, সিলেট কারাগারে থাকা সুনামগঞ্জের আব্দুল বশির ও কুমিল্লা কারাগারে থাকা খাগড়াছড়ির শাহ আলম। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এই তিন আসামির আপিল হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীতে মা ইলিশ সংরক্ষণে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছেন মোহনপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। এ অভিযানে অবৈধভাবে ইলিশ মাছ ধরার অভিযোগে ১৬ জন জেলেকে আটক করা হয়।
শুক্রবার রাতে উপজেলার মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় ৬টি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও প্রায় ৬ লাখ মিটার অবৈধ কারেন্টজাল জব্দ করা হয়। পরে উদ্ধারকৃত কারেন্টজাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
আটককৃত জেলেরা হলেন রিপন মোল্লা (২৫), মো. রিপন দেওয়ান (৪৪), মো. মফিজুল (৩৫), মো. জসিম মিজি (৩৫), মো. আকাশ (২০), মো. উজ্জল (৪৫), স্বপন সিকদার (২৪), মো. শান্ত মাদবর (২০), মো. শাহিন সরদার (৩৪), আল আমিন (৩৫), মো. জব্বার সিকদার (৪৫), মো. বিল্লাল গাজী (৪০), মো. নাসির ঢালী (৩২), আব্দুর রাজ্জাক (২০), মো. আরিফ (১৯) ও মো. জাহাঙ্গীর মোল্লা (৩৭)। তাদের বিরুদ্ধে মৎস্য সংরক্ষণ আইনে ৬টি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মোহনপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় আমরা দিন-রাত নদীতে টহল ও অভিযান চালাচ্ছি। কেউ নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরলে ছাড় দেয়া হবে না। আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, সরকার ঘোষিত মা ইলিশ সংরক্ষণের সময় নদীতে অভিযান অব্যাহত থাকবে। অবৈধভাবে মাছ ধরার সরঞ্জাম পেলেই ধ্বংস করা হবে।
আগামী ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন।
গতকাল শনিবার বিকেলে বরিশাল সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
এর আগে, তিনি বরিশাল বিভাগ এবং জেলা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা সভা করেন।
এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, যেহেতু আওয়ামী লীগের সকল কর্মকাণ্ড সরকার নিষিদ্ধ করেছে, তাই বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে, যদি নির্বাচনের আগে বিচার সম্পন্ন হয় তখন সেটা দেখা যাবে।
এনসিপির শাপলা প্রতীকের দাবির প্রশ্নে সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনের তালিকায় না থাকায় শাপলা প্রতীক দেওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, কোনো গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা প্রভাবিত হবে না নির্বাচন কমিশন। সভায় বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার, ছয় জেলার জেলা প্রশাসকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য