দেশজুড়ে পণ্যবাহী পরিবহনশ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটের প্রথম দিন কোথাও কোথাও বন্ধ রয়েছে পরিবহন, আবার কোথাও পরিবহনশ্রমিকরা বলছেন, তারা জানেনই না ধর্মঘটের কথা।
মোটরযান মালিকদের ওপর আরোপিত অগ্রিম আয়কর (এআইটি) প্রত্যাহারসহ ১৫ দফা দাবি আদায়ে বাংলাদেশ কাভার্ড ভ্যান-ট্রাক-প্রাইম মুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে ধর্মঘট।
প্রাইম মুভার ট্রেইলর মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হাসান মুরাদ বাদশা জানান, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের বৈঠক রয়েছে। তার আগ পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। বৈঠকের পর নতুন করে সিদ্ধান্ত হবে কর্মবিরতি চলবে কি না।
ধর্মঘটের কারণে পচনশীল পণ্য পরিবহন নিয়ে উদ্বেগে আছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। যদিও তিন দিনের ধর্মঘটের প্রথম দিন পালনে দেশের বিভিন্ন জেলায় দেখা গেছে ভিন্ন ভিন্ন চিত্র।
চট্টগ্রাম
ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য পরিবহনে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে পণ্যবাহী কোনো গাড়ি ঢুকতে পারেনি বন্দরে।
কনটেইনার পরিবহনকারী গাড়িতে চট্টগ্রামের ১৮টি ডিপো থেকে বন্দরে আমদানি-রপ্তানি ও খালি কনটেইনার আনা-নেয়া হয়। গাড়ি না থাকায় জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
কনটেইনার ডিপো সমিতির সচিব রুহুল আমিন সিকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিদিন রপ্তানি পণ্যবাহী দেড় হাজার কনটেইনার বন্দরে পাঠানো হয়। কর্মবিরতির কারণে রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনার বন্দরে পাঠানো যাচ্ছে না। আবার আমদানি পণ্যবাহী যেসব কনটেইনার ডিপোতে খুলে খালাস করা হয়, তাও বন্দর থেকে আনা যাচ্ছে না।’
বরিশাল
বরিশালে পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘটে অংশ নিয়েছে বরিশাল জেলা ট্রাক, ট্যাংক-লরি, কাভার্ড ভ্যান ও ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন। বন্ধ রয়েছে পণ্যবাহী সব ধরনের যানবাহন।
জেলা ট্রাক, ট্যাংক-লরি, কাভার্ড ভ্যান ও ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজাদ হোসেন কালাম মোল্লা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বাধ্য হয়েই ১৫ দফা দাবি আদায়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। মহাসড়কে চাঁদাবাজি ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ধর্মঘটে কোনো ট্রাক, ট্যাংক-লরি, কাভার্ড ভ্যান ও ট্রাক চলতে দেয়া হবে না।’
ধর্মঘটের সমর্থনে মঙ্গলবার দুপুরে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রহমতপুর বিমানবন্দর মোড়ে সমাবেশ করেছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।
বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তালুকদার মো. মনির জানান, গাড়ির কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে পুলিশি হয়রানি ও পৌর টোলের নামে সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। তাদের ১৫ দফা দাবি মানা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
সিলেট
ধর্মঘটে সিলেট বিভাগে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। তবে বিভাগের চার জেলার মধ্যে কিছু ট্রাক, পিকআপ ভ্যান চলাচল করছে।
বাংলাদেশ কাভার্ড ভ্যান-ট্রাক-প্রাইম মুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সিলেট জেলার আহ্বায়ক শাব্বির আহম্মেদ ফয়েজ নিউজবাংলাকে জানান, ধর্মঘটের কারণে পণ্যবাহী ট্রাক সিলেটে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। তবে বিকেলের মধ্যে এই সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজশাহী
পরিবহনশ্রমিকদের কেন্দ্রীয় ঘোষণার প্রতি সমর্থন দিয়ে রাজশাহীর ট্রাকশ্রমিকরা সকাল থেকে ট্রাক নামায়নি। জেলার বাইরে কোনো পণ্যবাহী পরিবহন যায়নি।
তবে রাজশাহী মহাসড়কে বাইরের জেলার কিছু ট্রাক চলতে দেখা গেছে। চলেছে পিকআপ ভ্যানও।
আশপাশের উপজেলা ও জেলা থেকে অটোরিকশা ও ভটভটিতে করে পণ্য নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ীরা।
ট্রাক বন্ধ থাকায় ব্যবসার ওপর এখনও কোনো প্রভাব পড়েনি বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজশাহী বেনেতি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী নিউজবাংলাকে জানান, ট্রাক বন্ধের ঘোষণা আগে থেকে দেয়া ছিল বলে এখন পর্যন্ত এর প্রভাব সেভাবে নেই। কারণ যাদের জরুরি পণ্য প্রয়োজন ছিল তারা আগেই নিয়ে এসেছেন। তবে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভয় কাজ করছে যে ধর্মঘট যদি শিগগিরই তুলে নেয়া না হয়, তাহলে পণ্যসংকট দেখা দেবে। পণ্যের দামও বেড়ে যেতে পারে।
সেকেন্দার আলী বলেন, ‘রাজশাহীতে তেমন পাইকারি বড় ব্যবসায়ী নেই। এখানে বেশি দিনের জন্য পণ্য মজুত করা হয় না। কয়েক দিন পরপরই পণ্য আনা হয়। এ কারণে তাদের মধ্যে ভীতি কাজ করছে।’
রাজশাহী ট্রাক মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক সাদরুল ইসলাম বলেন, ‘রাজশাহীতে প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার ট্রাক চলাচল করে। রাজশাহীর কোনো ট্রাক আজকে চলাচল করেনি। তবে অন্য জেলায় কিছু চলেছে।
‘আমাদের নিজেদের দাবি আদায়ে এই কর্মসূচি পালন হচ্ছে। এখানে কোনো জোরজবরদস্তি নেই। কোনো পিকেটিং নেই।’
রংপুর
ধর্মঘটের বিপরীত চিত্র দেখা গেছে রংপুরে। এখানে চলাচল করছে সব ধরনের যানবাহন।
জেলা ট্রাক, ট্যাংক-লরি, কাভার্ড ভ্যান ও ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মানিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যে কর্মবিরতি দেয়া হয়েছে তা রাজধানীর তেজগাঁওকেন্দ্রিক। এই কর্মসূচি আমরা পালন করছি না।’
শহরের শাপলা টার্মিনালে ট্রাকচালক মনির হোসেন বলেন, ‘শুনছি ঢাকাত ধর্মঘট চলোছে। আমাদের এই দিকে ধর্মঘট নাই। আমরা গাড়ি নিয়ে ভাড়ার জন্য আসচি। ভাড়া পাইলে ভাড়া মারমো।’
কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালের ট্রাকচালক আশরাফুল ইসলাম জানান, তিনি শুনেছেন ২৬ তারিখ থেকে ধর্মঘট।
রংপুর নগর পুলিশের উপকমিশনার কাজী মুত্তাকী ইবনে মিনান বলেন, ‘আমরা মাঠেই আছি। কোথাও কোনো ধর্মঘট নেই।’
ময়মনসিংহ
রংপুরের মতো ময়মনসিংহেও মানা হচ্ছে না ধর্মঘট। সব সড়ক-মহাসড়কে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। ট্রাকের কারণে কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে যানজটও।
ধর্মঘটের কথাই জানেন না পণ্যবাহী পরিবহনের চালকরা।
ময়মনসিংহের পাটগ্রাম বাস টার্মিনালে ট্রাকচালক মো. ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘সারা দেশে ধর্মঘট চলছে শুনেছি। তবে আমাদের নেতারা কিছুই জানায়নি। বলেছে এ ধর্মঘট মানতে হবে না। এ জন্য গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি।’
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাইপাস মোড়ে সিমেন্টবোঝাই ট্রাকের চালক মো. আরফান বলেন, ‘কের (কিসের) ধর্মঘট? এক দিন বাড়িতে বইয়্যা (বসে) রইলে পেডে ভাত দেওন যাইত না। দাবি আদায় করলে নেতারা আলোচনা করে করুক।’
জেলা মোটর মালিক সমিতির (ট্রাক বিভাগ) সম্পাদক রবিউল ইসলাম শাহীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ধর্মঘটের ডাক দেয়া সংগঠনটি একটি অঞ্চলভিত্তিক সংগঠন। তাদের ধর্মঘটে আমরা সাড়া দিইনি। পণ্য পরিবহনের সব গাড়ি চলাচলের নির্দেশ দিয়েছি।’
শাহীন জানান, তারা নিজেদের দাবি আদায়ে আগামী ২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর পরিবহন ধর্মঘট পালন করবেন। দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
চালকরা মনে করেন, পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের একাধিক সংগঠনের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে দাবি আদায় হয় না। যদি সবাই একসঙ্গে বসে আলোচনা করে আন্দোলনের ডাক দেয়, তাহলেই সুফল মিলবে। বিচ্ছিন্নভাবে ধর্মঘট করে দাবি আদায় অসম্ভব।
সাভার
সাভারে সারা দিন স্বাভাবিকভাবে পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল করেছে। ধর্মঘটের কোনো প্রভাব দেখা যায়নি।
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির আশুলিয়া শাখার সদস্য আমির আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ধর্মঘটটা মূলত দক্ষিণবঙ্গের ওই দিকে। আমাগো এই দিকে কোনো ধর্মঘট নাই। সব স্বাভাবিকভাবেই চলতেছে। এই দিকে ধর্মঘট দেয়ার কোনো সম্ভাবনাও নাই।’
সাতক্ষীরা
পণ্য পরিবহনশ্রমিকদের ধর্মঘটের কোনো প্রভাব পড়েনি সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরেও।
জেলা ভিআইপি ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহিন আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা পণ্য পরিবহন ধর্মঘটে সহমর্মিতা জানিয়েছি। তবে এতে অংশ নিচ্ছি না।’
ভোমরা স্থলবন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি পরিতোষ ঘোষ জানান, বন্দরে ট্রাক চলাচল স্বাভাবিক আছে। বন্দরের কোনো কার্যক্রম ব্যাহত হয়নি।
চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গায় কৃষিপণ্যের ওপর ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
সকাল থেকেই জেলার সব রুটে বন্ধ রয়েছে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ সব ধরনের পণ্যবাহী পরিবহন। এতে জেলার বাইরে পণ্য পাঠাতে পারছেন না কৃষকরা। পচনশীল পণ্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
দামুড়হুদা উপজেলার হোগলডাঙ্গা গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫ বিগি শিম চাষ করিচি। আমি শিম নিয়ি ঢাকায় বিক্রি করি। টিরাক ও মিনি টিরাক বন্দ হওয়ায় আমরা চিন্তায় পড়িগিচি। একুন তো সব নষ্ট হয়ি যাবে। একেনেও খুব একটা দাম পাওয়া যাবে না।’
জেলা শহরের বড় বাজার কাঁচামাল আড়ত সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষিপণ্য আমদানি করি। পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় কাঁচামাল আমদানি করতে পারছি না। এতে কৃষিপণ্যের দামও বেড়ে যাচ্ছে।’
এদিকে দাবি আদায় না হলে আরও বড় কর্মসূচি দেয়ার কথা জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকনেতারা।
জেলা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাবিবুর রহমান লাভলু বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারিতে সারা বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্য বিপর্যস্ত হয়েছে। এই সময় পণ্য পরিবহনমালিকদের ওপর অগ্রিম আয়কর চাপিয়ে দিয়েছে সরকার। এই সিদ্ধান্ত বাতিলসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা কর্মবিরতি পালন করছি।
‘আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করছেন। দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।’
নওগাঁ
পণ্যবাহী পরিবহনশ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে নওগাঁর সঙ্গে সারা দেশের পণ্য পরিবহন সেবা বন্ধ হয়ে গেছে।
নওগাঁ শহরের রজাকপুর ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। সকাল থেকে কোনো ট্রাক বা কাভার্ড ভ্যান ছেড়ে যায়নি। বাইরে থেকেও শহরে আসেনি।
এতে নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী।
শহরের বিহারী কলোনির রশিদুল আলম বলেন, ‘আমি তিন মাস হলো ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করছি। আজ থেকে ধর্মঘটের কারণে কোনো ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান চলছে না। আমি পড়েছি মহাবিপদে।
‘দুই দিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছিলাম। পরিবারসহ বাসার সব মাল নিয়ে আমার আজ ঢাকা ফেরার কথা ছিল। এখন মনে হচ্ছে সব রেখে একাই ফিরতে হবে।’
নওগাঁ পৌর কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন আমরা কাঁচা পণ্য ট্রাকে করে ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় সরবরাহ করি। ধর্মঘটের কারণে কোনো পণ্য আজ পাঠাতে পারিনি। এভাবে তো আমার লস হয়ে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি সব চালু না হলে বড় ধরনের লসে পড়ে যাব।’
জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার জানান, দেশের ৮ থেকে ৯ শতাংশ চাল নওগাঁয় উৎপাদিত হয়। তিন দিন অন্য জেলায় চাল পাঠাতে না পারায় অনেক চাল ব্যবসায়ীই বিপাকে। কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
নওগাঁ জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি শেখ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘১৫ দফার মধ্যে আমাদের প্রধান দাবি হচ্ছে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের অগ্রিম আয়কর নেয়া যাবে না এবং এ পর্যন্ত নেয়া অগ্রিম আয়কর ফেরত দিতে হবে। সহজ শর্তে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের নিবন্ধন এবং এসব গাড়িচালকদের লাইসেন্স দিতে হবে।
‘কেন্দ্রীয় সংগঠনের নির্দেশনা অনুযায়ী মালিক ও শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মঘট পালন করছেন। আমাদের দাবি আদায় না হলে আগামীতে আবারও ধর্মঘটের ডাক দেয়া হতে পারে।’
প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন চট্টগ্রামের সিফায়াত উল্লাহ, বরিশালের তন্ময় তপু, সিলেটের দেবাশীষ দেবু, রাজশাহীর আহসান হাবিব অপু, রংপুরের রফিকুল ইসলাম, ময়মনসিংহের কামরুজ্জামান মিন্টু, সাভারের ইমতিয়াজ উল ইসলাম, সাতক্ষীরার রফিকুল ইসলাম শাওন, চুয়াডাঙ্গার জহির রায়হান সোহাগ ও নওগাঁর সবুজ হোসেন
আরও পড়ুন:নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক নির্বাচন নয়। কারণ বর্তমান সরকার দলীয় রাজনৈতিক দল স্থানীয় সরাকর নির্বাচনকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। কাজেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক কোনো ফ্লেভার নেই।
তিনি বলেছেন, তারপরও যাতে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে যে কেউ নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন, সেটার অপশনও রাখা হয়েছে, অর্থাৎ ভোট ফ্লেক্সিবল করা হয়েছে। ইচ্ছে করলে স্বাধীনভাবে নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন; রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। আবার চাইলে অনেকে রাজনৈতিক পরিচয়েও নির্বাচন করতে পারবেন, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।
শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের হলরুমে হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলার প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির উদ্দেশে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও তাদের অনেক সমর্থক-প্রার্থী আনঅফিশিয়ালি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। সুতরাং এটা বলার সুযোগ নেই যে, নির্বাচন অংশগ্রহণ মুলক নির্বাচন হচ্ছে না।’
ইসি আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচন অবশ্যই শান্তিপূর্ণ হতে হবে এবং কোনোমতেই যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি না হয়। অন্যায়ভাবে কেউ যাতে কোনো প্রার্থীকে প্রচারে ও ভোটদানে বাধা দিতে না পারে। সবাই যাতে সমানভাবে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা করতে পারে এবং ভোটরা যাতে স্বাধীনভাবে তার ভোট দিতে পারে। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কার কোন আত্মীয় অংশ নিল বা কে অংশ নিল না- সেটা আমাদের বিষয় নয়; সেটা রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক বিষয়, কিন্তু আমাদের নির্বাচনি আইনে যদি কোনো ব্যক্তি ওই এলাকার ভোটার হয় এবং তার বিরুদ্ধে যদি কোনো আইনি ঝামেলা না থাকে, তাহলে তিনি নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন। আমাদের আইনে আত্মীয়তার সঙ্গে কোনো সর্ম্পক নেই।’
এ সময় জেলা প্রশাসক রেহেনা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. তরিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সুজন সরকার ও জেলা নির্বাচন অফিসার আমিনুর রহমান মিঞাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। এর মধ্যে যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। শনিবার যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজধানী ঢাকায় শনিবার চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। শনিবার হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গায় টানা চার দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে জেলায় এটি সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
জেলার দামুড়হুদায় গ্রামে মাঠে কাজ করার সময় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার ঠাকুরপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমানবলেন, ‘কয়েকদিন থেকে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। এদিন এখানে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অঞ্চলে আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।’
দিন ও রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় অতিষ্ঠ এই অঞ্চলের জনজীবন। দিনের বেলায় একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। শহর-গ্রামের রাস্তাঘাট ফাঁকা।
শ্রমজীবী মানুষগুলো বেশি বিপাকে পড়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে তারা কাজে বেরুতে পারছে না। ধান কাটার মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু সূর্যের প্রখর তাপের কারণে শ্রমিকরা মাঠে যেতে সাহস পাচ্ছে না।
দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডে ভ্যানচালক করিম আলী বলেন, ‘জীবনে আমি এত তাপ দেখিনি। ছেমায় গিয়িও শান্তি নেই। যে তাপ পড়চি তাতে মানুষ রাস্তায় বের হচ্চি না। আমাদের ভাড়াও কমি গিচে।’
এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে বলায় জনসাধারণকে সচেতন করতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে পথচারী ও এলাকাবাসীকে সতর্ক করছে জেলা প্রশাসন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
পাবনা প্রতিনিধি জানান, অসনীয় গরমে অতিষ্ঠ পাবনার জনজীবন। শনিবার জেলার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা পাবনা জেলায় চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ।
শনিবার দুপুরে পাবনা শহরের রূপকথা রোডে চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় এক ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন। তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃত সুকুমার দাস পাবনার শহরের শালগাড়িয়া জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, কয়েকদিন ধরেই পাবনায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস । এর আগে চলতি বছরে জেলায় এতোটা বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়নি। ঈশ্বরদীসহ আশপাশের এলাকাজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে তীব্র গরমে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। তীব্র এই তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন শ্রমজীবী মানুষ। জীবন-জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদে কাজ করতে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের। বাইরে বের হওয়ার সময় অনেকেই ছাতা নিয়ে বের হচ্ছেন।
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের বালুচরে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে প্রবাসীকে হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি করেছেন স্বজন ও স্থানীয়রা।
উপজেলার চরপানিয়া এলাকায় শনিবার বেলা ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে অংশ নেন নিহতের স্ত্রী-সন্তানসহ শতাধিক মানুষ।
পরিবারের এক সদস্যের ভাষ্য, পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় সৌদি আরব প্রবাসী মুজিবুরকে (৪৫)। এ ঘটনায় মামলা করা হলেও ঘটনায় জড়িত খাসকান্দি এলাকার জহির হোসেনকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। জহির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ফাঁসি দিতে হবে।
চরপানিয়া এলাকার একটি ক্ষেত থেকে গত ১০ মার্চ প্রবাসী মুজিবুরের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যায় অভিযুক্ত জহির হোসেন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গাড়ির চাপায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন একজন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কেওডালা এলাকায় শনিবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন ঝালকাঠি সদর উপজেলার খেজুরা এলাকার সুরেশ ডাকুয়া (৩৫) ও তার ছেলে লোকেশ ডাকুয়া (৯)। এ ঘটনায় আহত লোকেশ ডাকুয়ার মা নিপু রায় (৩০) বলে জানিয়েছেন কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক রেজাউল হক।
তিনি জানান, শুক্রবার রাতে স্বামী-সন্তানসহ নারায়ণগঞ্জে ‘বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী’ মন্দিরে পূজা করতে যান তারা। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্বামী স্ত্রী ও সন্তান ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কেওঢালা এলাকা পার হচ্ছিলেন। এ সময় একটি গাড়ি তাদের চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, আহত অবস্থায় তিনজনকে স্থানীয়রা একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে লোকেশকে চিকিৎসক মৃত বলে জানান। সুরেশ ও নিপু রায়কে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে সুরেশ ডাকুয়ার মৃত্যু হয়।
কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক রেজাউল হক বলেন, ‘নিপু রায় ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি শঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে। নিহত দুইজনের মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
এ ঘটনায় মামলাসহ গাড়ি ও চালককে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:নওগাঁয় সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁর উদ্যোগে ১৯৭১ সালের অসহায় শরণার্থীদের দুর্ভোগ স্মরণে ‘রোড টু বালুরঘাট’ প্রতীকী পদযাত্রায় ফুটে উঠেছে নওগাঁয় রোড ধরে ভারতে পাড়ি দেয়া শরণার্থীদের দুর্দশার চিত্র।
ঐতিহাসিক ২০ এপ্রিলের এ দিনে ‘রোড টু বালুরঘাট’ স্মরণ করল নওগাঁবাসী। প্রায় ৬০ মিনিটে ৩ কিলোমিটার পদযাত্রায় যুদ্ধকালীন নওগাঁ রোডের শরণার্থীদের যুদ্ধ বিভীষিকা ও অবর্ণনীয় দুর্দশা তুলে ধরা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছর পর শনিবার বেলা ১১টার দিকে পাঁচ শতাধিক মানুষ নওগাঁ রোডে এ প্রতীকী পদযাত্রায় অংশ নেন। শহরের তাজের মোড় শহিদ মিনার পাদদেশ থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল মুক্ত মঞ্চ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
একুশে পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি এম আব্দুল বারীর সভাপতিত্বে শরণার্থীদের প্রতীকী পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন উপদেষ্টা মইনুল হক দুলদুল, সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যক্ষ বিন আলী পিন্টু, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, সাইমা ফেরদৌসী, নাইস পারভীন, বিষ্ণু কুমার দেবনাথ, গুলশানারাসহ অনেকে।
এ সময় বক্তারা জানান, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের বর্বরোচিত অত্যাচার-নিপীড়ন ও গণহত্যা থেকে বাঁচতে যুদ্ধের শুরু থেকে বিশেষ করে ২০ এপ্রিল এই দিনে পায়ে হেঁটে নওগাঁর সড়ক পথে হাজার হাজার মানুষ শরণার্থী হিসেবে ভারতের বালুরঘাটে আশ্রয় নেন। চলার পথে সেই সময় পাকহানাদার ও দোসরদের আক্রমণে অনেকের মৃত্যু হয়। সে সব শরণার্থীদের ক্লান্তি ও দুর্ভোগ স্মরণে একুশে পরিষদ নওগাঁ ‘রোড টু বালুরঘাট’ প্রতীকী পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি এম আব্দুল বারী বলেন, ‘আমরা অনেকেই একাত্তরের ইতিহাস ভুলে গেছি। ৫৩ বছরের আগে কী ঘটেছিল। লাখ লাখ মানুষ নওগাঁ শহরের ওপর দিয়ে দেশ ছেড়েছিল দেশকে মুক্ত করার জন্য। চলার পথে সে সময় পাকহানাদার ও দোসরদের আক্রমণে অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। নওগাঁর মূল ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী এ জেলার সব তরুণ প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীদের জানানোর লক্ষ্যেই আয়োজনটি করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে জোর করে ধান কাটা বন্ধে উদ্যোগ নেয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলায় পুলিশের এক উপপরিদর্শক তথা এসআইসহ চারজন আহত হয়েছেন।
উপজেলার হাদিরা ইউনিয়নের পলশিয়া গ্রামে শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে শনিবার আদালতে পাঠায় পুলিশ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘পলশিয়া পূর্বপাড়া গ্রামের কাজিম মন্ডল একদল সন্ত্রাসী নিয়ে একই গ্রামের সানু মিয়ার ডুব বিলের দুই বিঘা পাকা বোরো ধান কাটা শুরু করেন। সানু মিয়া ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে গোপালপুর থানার এসআই সাইফুল ইসলাম একজন কনস্টেবল নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। পুলিশ দেখে সস্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়।
‘তারা রামদা, লাঠি ও লোহার রড নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে সাব-ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলামের মাথা ফেটে যায়। কনস্টেবল শফিকুল ইসলামসহ সানু মিয়ার দুই আত্মীয় আহত হয়। আহতরা সবাই গোপালপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
গোপালপুর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘সাব-ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলামের মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই দেয়া হয়েছে।’
গোপালপুর থানার ওসি ইমদাদুল হক তৈয়ব বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। হামলার অভিযোগে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের পটিয়ার সড়কে শুক্রবার বিকেল ও রাতে দুটি দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।
বাস উল্টে হেলপার নিহত
পটিয়ার মনসা বাদামতলা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামমুখী একটি মিনিবাস বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে শুক্রবার বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে মহাসড়কের পাশে উল্টে যায়। ওই সময় বাসটির হেলপার রফিক (২৩) লাফ দিলে বাসের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারান তিনি।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার ওসি তৌফিকুল ইসলাম দুর্ঘটনার বিষয়টি জানিয়েছেন।
অটোরিকশায় বাসের ধাক্কায় দুজন নিহত
উপজেলার খরনা চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাসের ধাক্কায় দুজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।
নিহত দুজন হলেন চন্দনাইশ উপজেলার বৈলতলী এলাকার আবু বক্কর তাসিফ (১৮) ও কক্সবাজারের ঈদগাহ মধ্যম মাইজপাড়া এলাকার নুরুল আমিন (২৭)।
আহত চারজন হলেন বৈলতলীর রাকিব হোসেন (২০), মোহাম্মদ জাবেদ (১৯), মোহাম্মদ সিহাব (২২) ও চকরিয়ার অটোরিকশার চালক লিটন (৩৫)।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার ওসি তৌফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম অভিমুখী দ্রুতগামী মারসা পরিবহনের একটি বাস নম্বরবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়।
তিনি আরও জানান, স্থানীয়রা অটোরিকশার যাত্রীদের উদ্ধার করে চন্দনাইশের বিজিসি ট্রাস্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত চারজনকে হাসপাতালেই চিকিৎসা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য