এক দশকের বেশি সময় ভোগান্তির পর এমপিওভুক্ত হলেন ডিগ্রি স্তরের ৮৪১ শিক্ষক। এই পুরোটা সময় তারা বিনা বেতনে চাকরি করে আসছিলেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. কামরুল হাসানের সই করা প্রজ্ঞাপনে সোমবার রাতে ৪ শর্তে তৃতীয় ৮৪১ শিক্ষকের এমপিওভুক্তির আদেশ দেয়া হয়।
২০১০ সালের পর বিভিন্ন ডিগ্রি কলেজে নিয়োগ পান ৮৪১ শিক্ষক। তবে এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না তারা। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছিল, তারা অর্থ বিভাগের কাঠামোভুক্ত নন। এ কারণে শিক্ষকদের যোগ্যতা ও বিধি মোতাবেক নিয়োগ ও কর্মরত থাকা সাপেক্ষে এমপিওভুক্ত করতে সম্মতির অনুরোধ জানিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক) ডা. সৈয়দ ইমামুল হোসেন বলেন, ‘তৃতীয় শিক্ষক পদটি রেগুলার এমপিওভুক্ত পদ নয়। তাদের এমপিওভুক্ত করতে হলে আর্থিক বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হয়। এতে সরকারের বার্ষিক ২৫ কোটি ১ লাখ ১৩ হাজার ৪০০ টাকা ব্যয় হবে। তাই অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতির জন্য চিঠি দেয়া হয়েছিল। অর্থ মন্ত্রণায়ের অনুমোদনের পর তাদের এমপিওভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’
জানা যায়, ১৯৯৮ সাল থেকে ডিগ্রি পর্যায়ের তৃতীয় শিক্ষক নিয়োগ দেয়া শুরু হয়। ২০১১ সাল পর্যন্ত এ শিক্ষকদের নিয়মিত এমপিওভুক্তি দেয়া হতো। এরপর থেকে তা বন্ধ হয়ে যায়।
যেসব শর্তে এমপিওভুক্ত
সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি স্তরটি সরকারি এমপিওভুক্ত হতে হবে।
এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী তৃতীয় শিক্ষক নিয়োগকালীন যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
নিয়োগকালীন বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কর্মরত হতে হবে।
৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখের মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্তদের এমপিওভুক্ত করতে হবে এবং আগে তৃতীয় শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি এমন কোনো প্রতিষ্ঠানে নতুন করে তৃতীয় শিক্ষক নিয়োগ করা যাবে না।
আরও পড়ুন:নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনস্থ অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
এ ছাড়া মানববন্ধনে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য-দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, হামলা এবং মামলার মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক মতানুসারীদের দমন-নিপীড়নের প্রতিবাদও জানান সাদা দলের নেতারা।
মানববন্ধনে শিক্ষকরা দাবি করেন, আমেরিকা ভিসানীতির মাধ্যমে বৈশ্বিক পর্যায়ে অপমানের ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে। তারা মনে করেন, এই নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে উগান্ডা-নাইজেরিয়ার সমপর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে কারা দায়ী, সরকার কেন তাদের ধরছে না। কারণ তারা সরকারের চেয়ে আরও শক্তিশালী। তারাই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বার বার প্রমাণিত হয়েছে যে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সেজন্য নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সারাদেশের মানুষ আন্দোলনে ফুঁসে উঠেছে। আমরা তাদের সাথে একাত্মতা জানাই।
যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, বাংলাদেশে এখন যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সেটা নজীরবিহীন। লোডশেডিংয়ের কারণে বাংলাদেশের জনজীবন এখন বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। এই মুহুর্তেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে বিদ্যুৎ নেই, অথচ সব বিভাগে ক্লাস চলছে। বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নের নামে লুটপাটের একটা নজির আমরা দেখতে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের জীবন একেবারে যখন নাবিশ্বাস উঠেছে, তখন আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এর প্রতিবাদও করতে পারবো না। আমাদের উপর নানাভাবে মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এবিএম শহীদুল ইসলাম বলেন, আমরা সবসময় চাই, এদেশ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক। ভোটারবিহীন নির্বাচন যেন আর না হয়। বর্তমান সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, রাতের আঁধারে ভোটের মাধ্যমে আপনারা যেভাবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন সেই দিন শেষ হয়ে গিয়েছে, আর নয়।
মানববন্ধনে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন খান, অধ্যাপক আব্দুস সালাম, অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মো. মহিউদ্দিন আহমেদ এবং সহযোগী অধ্যাপক এম এ কাউসার প্রমুখ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চারুকলা’ ইউনিটের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। ১৩০টি আসনের বিপরীতে এই ইউনিটের এবারের ভর্তি পরীক্ষায় চার হাজার ৭২৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র ২১২ জন পাস করেছেন।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অবস্থিত আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল শ্রেণিকক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান।
‘চারুকলা’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী নিসার হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অন্য বছর চারুকলা ইউনিটের সাধারণ জ্ঞান ও অঙ্কন পরীক্ষা আলাদা দিনে হলেও এবার দুই পরীক্ষায় এক সঙ্গে নেয়া হয়েছে। গত ২৯ এপ্রিল চারুকলা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এই ইউনিটে প্রথম হয়েছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সৌম্যদিপ্ত মন্ডল। তার ভর্তি পরীক্ষার রুল নম্বর ৪১০৭০২৪। তিনি ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় পেয়েছেন ৮২ আর মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের ফলসহ ১২০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছেন ১০২ নম্বর।
দ্বিতীয় হয়েছেন আদমজী ক্যান্টেনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শাফাত হোসাইন রিশতা। তিনি ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় পেয়েছেন ৮১.৫ নম্বর। আর মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের ফলসহ ১২০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছেন ১০১.৫ নম্বর।
তৃতীয় হয়েছেন আদমজী ক্যান্টেনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী হৃদিতা নৌশিন। তিনি ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় পেয়েছেন ৭৯.৭৫ নম্বর। আর মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের ফলসহ ১২০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছেন ৯৯.৭৫ নম্বর।
এই ইউনিটের ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (https://admissions.eis.du.ac.bd) থেকে ফলাফল জানতে পারছেন৷ এ ছাড়া ফোনের মেসেজ অপশনে রবি, বাংলালিংক বা টেলিটক নম্বর থেকে DU টাইপ করে ১৬৩২১ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়েও ফলাফল জানা যাবে৷
‘চারুকলা’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীকে ১৮ জুন বেলা ৩টা থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত ফরম ও বিষয় পছন্দক্রম ফরম পূরণ করতে হবে৷
কোটায় আবেদনকারীদের ৬ জুন থেকে ১২জুন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কোটার ফরম চারুকলা অনুষদের ডিন কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে হবে৷ তা যথাযথভাবে পূরণ করে ওই সময়ের মধ্যে ডিন কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।
কারো ফলাফল নিয়ে সন্দেহ থাকলে তা নিরীক্ষার জন্য ফি দেয়া সাপেক্ষে ৬ জুন থেকে ১২জুন পর্যন্ত চারুকলা অনুষদের ডিন কার্যালয়ে আবেদন করা যাবে৷
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দাবদাহের কারণে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চার দিন ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
রোববার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘দেশব্যাপী বিদ্যমান তীব্র তাপদাহের কারণে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনা করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম আগামী ৫ জুন ২০২৩ সোমবার থেকে ০৮ জুন ২০২৩ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।’
দাবদাহ বা তাপপ্রবাহ বইছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এতে চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে গরম। ঘরে কিংবা বাইরে অসহনীয় হয়ে উঠেছে তাপমাত্রা। এ থেকে কবে নিষ্কৃতি মিলতে পারে, তা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক রোববার বেলা সোয়া ১১টার দিকে নিউজবাংলাকে জানান, দাবদাহের কারণে দেশের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি হলেও সামগ্রিক তাপমাত্রা কমছে না। তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে ১২ জুনের পর।
তিনি আরও জানান, জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষের দিক থেকে তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে পারে। শেষ সপ্তাহ থেকে সহনীয় হতে পারে তাপমাত্রা।
আরও পড়ুন:গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে ভুয়া প্রবেশপত্র নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে আটক হয়েছেন এক তরুণ। পরীক্ষা দিতে আসা প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতেই মূলত তিনি ওই কাজ করেন। ছাড়া পেতে পরে মুচলেকা দিতে হয়েছে তাকে।
গুচ্ছের বিজ্ঞান শাখার ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রে ঘটনাটি ঘটে।
আটক তরুণ সাইফুল্লাহ্ জাহান প্রিন্স ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র।
এক পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র সংগ্রহ করে তিনি কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। কিন্তু দেখা করে বের হওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে আটক করে।
সাইফুল্লাহ্ জানান, প্রেমিকার সঙ্গে মামা আসায় পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে তিনি দেখা করতে পারছিলেন না। তাই তিনি ওই কাজ করেছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আবেগের বশে ছেলেটি এ ধরনের কাজ করেছে। তবে অপরাধের জন্য তিনি লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। ভবিষ্যতে আর এমন কাজ করবেন না বলেও জানিয়েছেন।’
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে লিখিত প্রতিশ্রুতি (মুচলেকা) নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান প্রক্টর।
আরও পড়ুন:দেশের ২২টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বিজ্ঞান শাখার এই ইউনিটের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ বছরের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা।
২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে শনিবার দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয়ে ১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টাব্যাপী এ ভর্তি পরীক্ষা চলবে।
‘এ’ ইউনিটে অংশ নিচ্ছেন ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৩৩ পরীক্ষার্থী। মোট আসন ৯ হাজার ৮৭৫টি। ফলে আসন প্রতি লড়বেন ১৭ পরীক্ষার্থী। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে মোট ১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় প্রতি প্রশ্নের সঠিক উত্তরে নম্বর থাকবে এক। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কাটা যাবে দশমিক ২৫ নম্বর। ১০০ নম্বরের এ ভর্তি পরীক্ষায় পাশ নম্বর ৩০।
বরাবরের মতোই আবেদনকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেয়ার জন্য কেন্দ্র হিসেবে পছন্দ করেছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫৬ হাজার ৫৩৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নটরডেম কলেজ, উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ, ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সরকারি বাংলা কলেজ ও গভ. কলেজ অফ অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স এই আটটি উপকেন্দ্রে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এ বছর গুচ্ছের শেষ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার সকাল ৯টা থেকেই শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রে প্রবেশ করেছে। তবে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে নির্ধারিত রুম খোলা হয়। প্রবেশপত্র ও নির্দেশিত অন্যান্য কাগজপত্র প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। কোনো ব্যাগ, মোবাইল কিংবা ইলেকট্রনিকস ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
এদিকে বাস-ট্রাক-লেগুনা, রিক্সার কারণে সৃষ্ট এই যানজটের ফলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পৌঁছাতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী সবগুলো রাস্তায় অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের ভিড়ের কারণে যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে। এর ফলশ্রুতিতে মারাত্মক অসুবিধায় পড়েছে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যাত্রীরা।
এ ছাড়াও প্রচণ্ড দাবদাহে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীরা।
এদিকে দয়াগঞ্জ নতুন রাস্তার মোড়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেললাইনের কাজ চলমান থাকায় এক লেনেই সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে, ফলে যাত্রাবাড়ী ও এর আশপাশের এলাকা এবং ঢাকার বাইরে থেকে যে সকল শিক্ষার্থী জবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসছে, তারা দীর্ঘক্ষণ জ্যামে আটকা পড়েছেন।
ভর্তি পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের গুণতে হচ্ছে অধিক ভাড়া। তাদের অভিযোগ, ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ নিয়ে বেশ কিছু রিকশাচালক অধিক ভাড়া আদায় করছেন।
ফারুক মিয়া নামের এক রিকশাচালক বলেন, ‘১০-২০ টাকাই তো বেশি চাই। রাস্তা ঘাটে বহুত জ্যাম। একবার ভার্সিটির ওইদিক গেলে সারাদিন লাইগা যায়।’
ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের সন্তানরা জ্যামের কারণে পরীক্ষার হলে পর্যন্ত ঢুকতে পারছে না। বাস রিক্সাসহ অন্যান্য যানবাহন একেবারেই গেটের কাছে যার কারণে জ্যামে একেবারে নাজেহাল অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রচণ্ড এই গরমে এমনিতেই মানুষের এতো ভিড় তার ভিতর এই জ্যাম সত্যিই হতাশাজনক।’
ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থী হৃদয় মিত্র বলেন, ‘পরীক্ষা শুরুর ৪ ঘণ্টা আগে মোহাম্মদপুর থেকে রওনা দিয়েছি, পরীক্ষা শুরু হতে আর ৩০ মিনিট বাকি। এই গরমে এভাবে জ্যাম ঠেলে এসে পরীক্ষা দিতে আর মনোবল থাকে না।’
গুচ্ছভুক্ত ২২টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা), ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (কুষ্টিয়া), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সিলেট), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুলনা), হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (দিনাজপুর), মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (টাঙ্গাইল), নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোয়াখালী), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুমিল্লা), জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (ময়মনসিংহ), যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যশোর), বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (রংপুর), পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবনা), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোপালগঞ্জ), বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (বরিশাল), রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাঙ্গামাটি), রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ (সিরাজগঞ্জ), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি (গাজীপুর), শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় (নেত্রকোণা), বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (জামালপুর), পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পটুয়াখালী), কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কিশোরগঞ্জ) এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চাঁদপুর)।
আরও পড়ুন:ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে চাকরিচ্যুত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক আসাদুজ্জামানকে প্রায় ছয় বছর পর পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশে বিশ্ববিদ্যালয় এ সিদ্ধান্ত নেয়।
গত সোমবার অনুষ্ঠেয় সিন্ডিকেটের ২৫৯তম সভার ৫৫ নম্বর প্রস্তাবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শিক্ষক আসাদুজ্জামান ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং বিভাগটির সাবেক সভাপতি।
তার বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩৬তম সিন্ডিকেটে আসাদুজ্জামানকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল।
রেজিস্ট্রার সূত্র জানায়, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের আদেশ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে ১৬ এপ্রিল ২০১৭ থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পুনর্বহাল করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘তিনি মামলা করলে হাইকোর্ট তার পক্ষে রায় দেয়। এ জন্য তাকে পুনর্বহাল করা হয়।’
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নিজ বিভাগের ছাত্রীর সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠে আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে।
২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রী তার বিরুদ্ধে উপাচার্য বরাবর এ অভিযোগ করেন।
সেই আবেদনপত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, তার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান আসাদ ২০১৪ সালের শুরুর দিকে তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন এবং নিয়মিত ফোন দিতেন।
পরে শিক্ষকের জোরাজুরিতে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং শিক্ষক তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখান।
কিন্তু পরে ওই শিক্ষক তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাচ্ছেন না।
ওই ছাত্রী আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করেন।
বিষয়টি নিয়ে সে সময় জরুরি বৈঠক হয়। এতে আসাদুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সত্যতা মিললে বিশ্ববিদ্যালয়ের আসাদুজ্জামানকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। আমি সম্মানের সঙ্গে পদটি ফিরে পেয়েছি। তখন আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছিল, উচ্চ আদালতে সুবিচার পেয়েছি এবং আমি যোগদান করেছি।’
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আবাসিক হলগুলোতে আসন সংকট সমাধানের দাবিতে মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে ৪৮ ঘণ্টা ধরে অনশন করছেন এক ছাত্র।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি অনশন শুরু করেন।
ওই ছাত্রের নাম সামিউল ইসলাম প্রত্যয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
তার দাবিগুলো হলো গণরুম বিলুপ্তি, মেয়াদোত্তীর্ণ ছাত্রদের হল ত্যাগ এবং গণরুম-মিনি গণরুমে অবস্থান করা বৈধ ছাত্রদের আসন বরাদ্দ দেয়া।
এর আগেও নিজের সিটের দাবিতে হলের অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন ওই ছাত্র। তখন ৪৪৭ নম্বর কক্ষে আসন বরাদ্দ দেয়া হয়।
এদিকে প্রত্যয়ের দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছে। আন্দোলনের পাশাপাশি তিনি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
সামিউল ইসলাম প্রত্যয় বলেন, ‘গত দেড় বছর ধরে প্রশাসনকে এই দাবিগুলো জানিয়ে আসছি। কোনো ফল না পাওয়ায় অনশন করতে বাধ্য হয়েছি।’
এ বিষয়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘আমরা তার দাবিগুলো শুনেছি। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তার দাবিগুলো সমাধানের আশ্বাস দিয়েছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার বলেন, ‘আমি তার দাবিগুলোর সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন সমস্যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমি বিষয়টি নিয়ে প্রভোস্টসহ হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা চাই না বিশ্ববিদ্যালয়ে গণরুম থাকুক।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য