স্কুলে যাওয়ার অপেক্ষায় স্বরিৎ ঋতি ভোর। বয়স তার সোয়া চার বছর। স্বাভাবিক সময়ে এই বয়সের আগেই শিশুরা স্কুলে যাওয়া শুরু করে।
রাজধানীতে বেসরকারি স্কুলগুলোতে প্রাক প্রাথমিকে প্লে গ্রুপ, নার্সারি, কেজি ও ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে কেজি টু পার হওয়ার পর প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়।
ভোরকে তার বাবা-মা ভর্তি করাতে চান ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে। এখনও ক্লাস শুরু না হলেও প্লে-তে ভর্তি নেয়া হচ্ছে আগে থেকেই।
জুলাই থেকে জুন শিক্ষাবর্ষে ভোরকে এখন ভর্তি করা হলে ক্লাস ওয়ানে উঠতে উঠতে তার বয়স আট বছর পার হয়ে যাবে।
এ কারণে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলোতে সাধারণত তিন বছর থেকেই শিশুদের ভর্তি করা হয়, যা করোনার কারণে সম্ভব ছিল না। ২০২০ সালের মার্চ থেকেই বন্ধ সব স্কুল। আর ১৭ মাস পর গত ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল খুললেও এখনও প্রাক-প্রাথমিকে ক্লাস শুরু হয়নি।
ভোরের মতোই লাখ লাখ শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হতে দেরি হয়েছে। যারা আগে থেকে স্কুলে ভর্তি ছিল, তারা অনলাইনে ক্লাস করলেও একেবারে প্লে গ্রুপের শিশুদের এভাবে ক্লাস করানো কঠিন। তাছাড়া এ বয়সে ভোরকে অনলাইন ক্লাসে অভ্যস্ত করতে রাজিও ছিলেন না তার বাবা-মা।
ভোরের মায়ের এ উদ্বেগের বিষয়টি উঠে এসেছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে। সেখানে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চতর শিক্ষার স্তর পর্যন্ত ৪ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব শিশু শুরুর বছরগুলোতে পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ে, তারা প্রায় ক্ষেত্রেই স্কুলে কাটানো অবশিষ্ট সময়ের জন্য পিছিয়ে থাকে এবং বছরের পর বছর এই ব্যবধান বাড়তে থাকে। একটি শিশুর প্রাপ্ত শিক্ষাবছরের সংখ্যা তার ভবিষ্যতের আয়ের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা জান্নাত আক্তারের দুশ্চিন্তা আরও বেশি। তার ছেলে আরিয়ান হোসেনের বয়স এখন ৬ বছর। কিন্তু সে এখনও স্কুলে যায়নি। ফলে তার শিক্ষাজীবন আরও পিছিয়ে যাবে।
নিউজবাংলাকে জান্নাত বলেন, ‘পরিকল্পনা ছিল ৫ বছরে ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করার। কিন্তু করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তা সম্ভব হয়নি। এখন কোন ক্লাসে ভর্তি করব, তা নিয়ে চিন্তায় আছি। তাছাড়া আমরা চাইলেই স্কুলগুলো ওপরের ক্লাসে ভর্তি নেবে কি না, তাও জানি না।’
মগবাজারের বাসিন্দা অর্পিতা সাহা বলেন, ‘করোনার কারণে ৫ বছরের ছেলে শুভ্র সাহাকে সঠিক সময়ে স্কুলে ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু ছেলে প্রতিদিনই স্কুলের ড্রেস পরে তৈরি হয়ে বাসায় বসে থাকে। আর সব বিষয়ে জেদ করে।’
মেয়ের শিক্ষার বয়স পিছিয়ে যাওয়ায় চিন্তিত মা নাহিদা খানম। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্কুলে যাওয়া শুরু করলে মেয়ের সঠিক সময়ে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরি হতো, এখন ঘুম থেকে ওঠে বেলা করে।
‘ঘরে একা থাকার কারণে কথা বলাতে তার জড়তাও রয়ে গেছে। মোবাইল ফোন আর টেলিভিশনে আসক্ত হয়ে পড়েছে। সে খেলাধুলা করতে চায়, তবে ঘরে তো সুযোগ কম। আগে পার্কে গেলেও করোনায় কয়েক মাস বন্ধ থাকায় অনভ্যস্ততার কারণে এখন আর যেতে চায় না।’
নাহিদা খানম বলেন, ‘জীবনের শৃঙ্খলা স্কুলে যাওয়ার মাধ্যমেই শুরু হয়। স্কুলে না যাওয়ায় মেয়েটা পিছিয়ে পড়েছে। শিক্ষাজীবন শুরু হতে না হতেই মেয়েটার জীবন থেকে এক বছর হারিয়ে গেল।’
সমাধান কী?
শুরুতেই পিছিয়ে পড়া এ শিশুদের নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনার তাগিদ এসেছে শিক্ষাবিদদের পক্ষ থেকে।
প্রাক-প্রাথমিকে পড়াশোনার চাপ কম থাকায় শিক্ষাবর্ষ ১২ মাসের বদলে কমিয়ে আনার পরামর্শ এসেছে। আবার ক্লাসে চাপ না দিয়ে শিশুদের সংবেদনশীলতার সঙ্গে যত্ন নিয়ে পড়ানোর তাগিদও এসেছে। প্রাক-প্রাথমিকে সনাতন পরীক্ষাপদ্ধতি তুলে নেয়ার কথাও বলছেন কেউ কেউ।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও কম্পিউটার বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশেই বেশি সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। বিষয়টিকে বাস্তব দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে।
‘আর যেসব শিশুর জীবন থেকে এক অথবা দুটি বছর হারিয়ে গেল, তাদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হতে হবে। কেননা দীর্ঘদিন বাসায় থাকার ফলে তাদের মানসিক ও দৈনন্দিন জীবনযাপনে বিভিন্ন পরির্বতন এসেছে। তাই শিক্ষক ও অভিভাবকদের বিশেষ যত্নবান হতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলামও মনে করেন, ‘যে সময়টুকু চলে গেছে তা মেনে নিয়েই আমাদের সামনের দিকে এগোতে হবে।’
শিশুদের শিক্ষাজীবনের গ্যাপ কমানোর জন্য শিক্ষকদের বিশেষ ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, ‘গ্যাপ কমাতে শিক্ষকদের একটু বেশি পরিশ্রম করতে হবে। তবে শিশুদের ওপর অতিরিক্ত চাপ না দেয়ার বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। আর পড়াশোনাকে আনন্দদায়ক করার ক্ষেত্রে মনোযোগী হতে হবে।’
আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের পরিচালক (শিশু সুরক্ষা কার্যক্রম) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘শিশুর জীবন থেকে কয় বছর অথবা কোন ক্লাস পার হলো, এটাকে বিবেচ্য না করে শিক্ষার্থী এই সময়ে কতটুকু শিক্ষা অর্জন করল, সেদিকে নজর দেয়া উচিত।’
তার মতে, প্রাক-প্রাথমিকে শিক্ষাবর্ষের সময় কমানো যেতে পারে। এক বছরের বদলে ৮ বা ৯ মাস করা যায়। এ জন্য আগামী পাঁচ বছরের পরিকল্পনা করতে হবে। তাহলে যাদের জীবন থেকে এক বছর হারিয়ে গেছে, সেটি ফিরে পাবে।
করোনার কারণে দীর্ঘদিন ঘরবন্দি শিশুদের ক্লাসমুখী করতে বিশেষ পরিকল্পনা প্রয়োজন বলে মনে করেন সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের প্রিন্সিপাল ব্রাদার লিও পেরেরা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে বেশির ভাগ প্রাক-প্রাথমিক স্কুলের ক্ষেত্রেই (কিছু ইংরেজি মাধ্যম ছাড়া) বইনির্ভর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কিন্তু শিক্ষাবিদরা চান শিক্ষার্থীরা যতটা বই পড়বে তার চেয়ে বেশি খেলাধুলা/গানবাজনা, চিত্রাঙ্কন ইত্যাদি করবে। এগুলোর উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার সঙ্গে তাদের পরিচয় করে দেয়া ও প্রস্তুত করা। এ বিষয়গুলোর প্রতি এখন বেশি করে জোর দিতে হবে।’
গতানুগতিক ক্লাস নেয়ার বিপক্ষে কথা বলেন এই শিক্ষক। বলেন, ‘প্রথমে তাদের স্কুলে আসার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। লম্বা সময় ধরে ক্লাস না নিয়ে আগে তাদের পড়ার জন্য প্রস্তুত করতে হবে।’
এসওএস হারমান মেইনার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রাফিয়া আক্তার বর্তমান বাস্তবতা মেনে দ্রুত প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের ক্লাস করার সুযোগ দেয়ার পক্ষে।
তিনি বলেন, ‘অন্যান্য ক্লাসের মতো এক দিনের জন্য হলেও প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসার সুযোগ দিতে হবে।’
দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকায় শিশুরা মানসিকভাবে চাপে থাকে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশন অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহজাবীন হক। তিনি বলেন, ‘তারা ঘন ঘন বিরক্ত ও হতাশ হতে পারে, আবার তাদের দুষ্টুমিও বেড়ে যেতে পারে। এ জন্য শিক্ষক ও অভিভাবকদের বিশেষ যত্নবান হতে হবে।’
আরও পড়ুন:এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট না হওয়া শিক্ষার্থীদের খাতা চ্যালেঞ্জ বা ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু হয়েছে।
আজ শুক্রবার থেকে আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুধু টেলিটক সিম ব্যবহার করে ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ের জন্য নির্ধারিত আবেদন ফি লাগবে ১৫০ টাকা।
পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে- RSC<Space> Board Name (First 3 letters)<Space>Roll<Space>Subject Code লিখে পাঠিয়ে দিতে হবে ১৬২২২ নাম্বারে। একাধিক Subject Code Type এর ক্ষেত্রে কমা (,) ব্যবহার করতে হবে। যেমন-১০১,১০২,১০৩।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যায় বড় ধরনের অবনতি লক্ষ করা গেছে। গত বছরের শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এবার সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক-তৃতীয়াংশেরও নিচে।
ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মাত্র ৯৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। অথচ, গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৬৮টি। সেই হিসাবে এবার শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেছে ১ হাজার ৯৮৪টি।
অন্যদিকে, ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গতবছর শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫১টি। সে হিসেবে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৮৩টি।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফল প্রকাশ করেছে।
বিগত বছরগুলোর মতো এবার ফল প্রকাশ ঘিরে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা রাখা না হলেও সার্বিক বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার সভাকক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কথা বলেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দকার এহসানুল কবির।
এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ১০ এপ্রিল। পরীক্ষা শেষ হয় ১৩ মে। চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ১ হাজার ৫৩৮ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন।
এ ছাড়াও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় এক লাখ পরীক্ষার্থী কম ছিল। এবার ফল তৈরি হয়েছে বাস্তব মূল্যায়ন নীতিতে।
এ বছর ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ৮টি কেন্দ্রে বিদেশি পরীক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন, পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
৮টি কেন্দ্র থেকে মোট ৪২৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন।
তাদের মধ্যে ৩৭৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন আর অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৫৪ জন। ১টি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
এবার সারাদেশে মোট পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন এক লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জনে। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আর জিপিএ ফাইভ পেয়েছিল এক লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন।
এ বছর সারা দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৭৯ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। মোট উপস্থিতি ছিল ১৯ লাখ আট হাজার ৮৬ জন। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তেরো লাখ তিন হাজার ৪২৬ জন।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষায় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। এ বোর্ডে সারাদেশে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৬ জন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে গড় পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। সে হিসাবে পাসের হার অনেক কমেছে।
ছাত্রীদের পাসের হার ৭১.০৩ শতাংশ এবং ছাত্রদের পাসের হার ৬৫.৮৮ শতাংশ। সেই হিসাবে এবারও পাসের হারে এগিয়ে রয়েছেন ছাত্রীরা। এ নিয়ে টানা ১০ বছর এসএসসিতে পাসের হারে এগিয়ে ছাত্রীরা।
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি (SEU) সামার সেমিস্টার ২০২৫-এ ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে ২ ও ৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস দুইদিনব্যাপী নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক স্কুলের উদ্যোগে চারটি পৃথক সেশনের মাধ্যমে আয়োজিত এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক যাত্রাকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।
২ জুলাই প্রথম সেশনে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (SSE) এর অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডেটাসফট সিস্টেমস বাংলাদেশ লিমিটেড-এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মঞ্জুর মাহমুদ। একই দিনে দ্বিতীয় সেশনে SSE-এর আওতাধীন আর্কিটেকচার, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE), এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। এ সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (IEB)-এর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহিউদ্দিন আহমেদ (সেলিম)।
৩ জুলাই তৃতীয় সেশনে স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (SASS) অর্থনীতি, ইংরেজি ও বাংলা বিভাগের নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানায়। এ সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর এবং SANEM-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক বাজিউল হক খোন্দকার।
সেদিনই চতুর্থ ও শেষ সেশনে সাউথইস্ট বিজনেস স্কুল (SBS) তাদের বিবিএ ও এমবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. মাহবুবুর রহমান, এফসিএ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিটি ব্যাংক পিএলসি-এর সিএফও। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা এবং নেতৃত্বের গুনাবলী অর্জনের আহ্বান জানান।
সবগুলো সেশনে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। এছাড়া প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. মোফাজ্জল হোসেন এবং রেজিস্ট্রার মেজর জেনারেল মো. আনোয়ারুল ইসলাম, SUP, ndu, psc (অব.) শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। বিভিন্ন সেশনে সংশ্লিষ্ট স্কুলের ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যানগণও উপস্থিত ছিলেন।
এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল নতুন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ, মূল্যবোধ ও বিভিন্ন সুবিধার সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেওয়া, যাতে তারা একটি প্রাণবন্ত বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করতে পারে।
৪৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ভাইভা শুরু হবে আগামী ৮ জুলাই থেকে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পিএসসি।
এবার চাকরি প্রত্যাশীরা তাদের আবেদনের পছন্দক্রম পরিবর্তন করতে পারবেন কিংবা আবেদনের ক্রমও বহাল রাখতে পারবেন সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করার আগে। তবে পছন্দক্রম পরিবর্তনের ফরমটি তাৎক্ষণিক চাকরিপ্রার্থীদের সরাসরি হাতে সরবরাহ করা হবে এবং তা পূরণ করে সাক্ষাৎকার বোর্ডে জমা দিতে হবে।
৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় সাময়কিভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ ক্যাডারে ২০৬ জন, সাধারণ ও কারিগরি /পেশাগত উভয় ক্যাডারে ১৮১ জন এবং শুধু কারিগরি/পেশাগত ক্যারের পদগুলোর ৬৫ জনসহ মোট ৪৫২ জন প্রার্থীর সাক্ষাৎকারের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে, যা কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশে চীন দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে চীন সফরে যোগদান করবেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। আগামী ৬ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত (ভ্রমণ সময় ব্যতীত) মোট ৬ দিনের সফরে যাচ্ছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত পহেলা জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এএসএম কাশেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভ্রমণ সংক্রান্ত সকল খরচ বাংলাদেশে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন দূতাবাস বহন করবেন। এতে বাংলাদেশ সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আর্থিক সম্পৃক্ততা থাকবেন না। মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে কর্মস্থলে যোগদান করবেন। ভ্রমণের একটি প্রতিবেদন তাঁর প্রত্যাবর্তনের ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। এছাড়া উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইয়াকুব আলী উপাচার্যের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন।
ইবি উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) গোলাম মাহফুজ মঞ্জু জানান, উপাচার্যের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৬ তারিখে উপাচার্যের সফরে যাবেন। তিনি উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির চেয়ারম্যানের অধীনে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যাচ্ছেন।
ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানান, ‘উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির অধীনে একটা বড় প্রতিনিধিদল নিয়ে চীন সফরে যাওয়া হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাস্ট) উপাচার্যগণ সঙ্গে থাকবেন।
মন্তব্য