গভীর সমুদ্রের অন্যতম দ্রুতগতির মাছ সেইল ফিশ। স্থানীয় লোকজন একে বলে পাখি মাছ। গত মাস থেকে বরগুনার স্থানীয় বাজারে প্রায় প্রতিদিনই বিক্রির জন্য দেখা মিলছে এই বিশালাকার মাছের। নদীতে ও মোহনায় গভীর সমুদ্রের মাছ এভাবে ধরা পড়ার বিষয়টিকে উদ্বেগজনক মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের ধারণা, দূষণের কারণে খাদ্য সংকট ও বিচরণক্ষেত্র অনুপযোগী হওয়ায় মাছগুলো নদীতে উঠে আসছে।
এ বছর প্রথম পাখি মাছ ধরা পড়ার কথা জানা যায় গত ২৫ জুলাই লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনা নদীতে। সাত ফুট লম্বা মাছটির ওজন ছিল প্রায় ২২ কেজি।
২৯ জুলাই ও ১০ আগস্ট বরগুনার পাথরঘাটায় ধরা পড়ে আরও দুটি পাখি মাছ। ১০ আগস্ট ধরা পড়া ১০ ফুট দৈর্ঘ্যের ও প্রায় ২ মণ ওজনের মাছটি বিক্রি হয় ৪২০০ টাকা মণ হিসেবে।
এরপর থেকে আগস্ট মাসজুড়ে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে ১৫টি পাখি মাছ আসে।
বাংলাদেশ ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা চৌধুরী নিউজবাংলাকে জানান, পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক পাখি মাছ বিক্রি হয়েছে। গত ২৬ আগস্ট পটুয়াখালীর মহিপুরের নুরুন্নবী নামের এক জেলের জালে ধরা পড়ে আটটি পাখি মাছ।
২৪ ঘণ্টা পরই পটুয়াখালীর মহিপুর মৎস্যবন্দরে ১৫টি পাখি মাছ নিয়ে যান জেলেরা।
পটুয়াখালীর মহিপুর আলীপুর মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দীন মোল্লা জানান, আগস্টের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এখানে প্রায় ২০০টি পাখি মাছ নিয়ে এসেছেন জেলেরা।
এখন পর্যন্ত কক্সবাজার বিএফডিসি ঘাটে ৬ শতাধিক পাখি মাছ বিক্রি হয়েছে বলে জানান কক্সবাজার ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী।
বরগুনার পাথরঘাটা কালমেঘা এলাকার দুলাল সারা জীবন কাটিয়েছেন সমুদ্রে মাছ ধরে।
তিনি বলেন, ‘যহন সাগরের গভীরে যাইতাম, তহন মোগো জালে ভুল কইরা দু-একটা পাখি মাছ আটকাইয়া যাইত। এই বচ্ছর সাগরের মোহনায় অনেক পাখি মাছ পাইছি।’
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আনিসুর রহমান জানান, পাখি মাছ বা সেইল ফিশের বৈজ্ঞানিক নাম istiophorus platypterus. ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এ ধরনের মাছ পাওয়া যায়। এর পিঠের পাখনাটি অনেকটা নৌকার পালের মতো দেখতে হওয়ায় সেইল ফিশ বলা হয়। অ্যাটলান্টিক সেইল ফিশ নামে এর আরও একটি প্রজাতি আছে।
তিনি জানান, আমেরিকার ন্যাশনাল ওশান সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, পাখি মাছ ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারে। ৯১৫ মিটার নিচ পর্যন্ত এরা চলাচল করে। সমুদ্রের তীর থেকে ৫০ কিলোমিটার আয়তনের মধ্যেই এদের বাস। মাঝেমধ্যে তীরের কাছাকাছি এলেও কখনও নদীতে ঢোকে না।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) ২০০০ সালে একে লাল তালিকাভুক্ত করে।
বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এনভায়রনমেন্টাল ওশানোগ্রাফি ও ক্লাইমেট বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সুলতান আল নাহিয়ান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাধারণত প্রজননকালে সমুদ্রের বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী মোহনার দিকে উঠে আসে। তবে হঠাৎ করে এ বছর নদীতে ও সমুদ্রের মোহনায় পাখি মাছের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বাভাবিক।
‘বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবসৃষ্ট দূষণের কারণে বঙ্গোপসাগরের প্রাণীদের জীবনধারায় পরিবর্তন ঘটতে পারে বলে আমি মনে করি। এ নিয়ে গবেষণা জরুরি। ঠিক কী কারণে মাছগুলো মোহনার দিকে ছুটে আসছে, খাদ্যসংকট নাকি দূষণের কারণে বসবাসস্থল অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায়, তা নিয়ে মৎস্য বিজ্ঞানীদের ভাবা উচিত।’
এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘প্রাণীদের জীবনধারায় পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্লাস্টিক পলিউশন একটি উদ্বেগজনক কারণ। বঙ্গোপসাগর এখন একটি প্লাস্টিকের ট্র্যাশবিনে পরিণত হয়েছে। এতে মাছের প্রজননস্থল নষ্ট হচ্ছে, যা সরাসরি সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলছে। অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।’
২০১৯ সালের অক্টোবর মাসের শেষদিকে পরিবেশবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ‘উৎস থেকে সাগরে’ শীর্ষক এক গবেষণায় বলা হয়, পদ্মা নদী থেকে প্রতিবছর ৩০০ ধরনের প্লাস্টিক-পণ্য সাগরে পড়ছে। বঙ্গোপসাগরে যুক্ত হওয়া বর্জ্যের মধ্যে কোমল পানীয়ের বোতল থেকে শুরু করে থালা, কসমেটিকসের মোড়ক ও নিত্যব্যবহার্য নানা জিনিস রয়েছে। এই বর্জ্যের উৎস গঙ্গা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার দেশ চীন, ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশ।
২০১৮ সালে জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সংস্থা ইউএনইপি এক গবেষণার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিন প্রায় ৭৩ হাজার টন বর্জ্য বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ছে। বাংলাদেশে এককভাবে দিনে ৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়। এর কিছু অংশ নদী দিয়ে সমুদ্রে যায়। বেশির ভাগ বর্জ্য ভারত, নেপাল ও চীন থেকে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র দিয়ে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে সমুদ্রে পড়ছে।
বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার বলেন, ‘হঠাৎ করে মোহনা ও নদীতে সেইল ফিশের বিচরণ উদ্বেগজনক। এ নিয়ে গবেষণা জরুরি। তবে আমাদের লোকবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট নেই। এসব সীমাবদ্ধতার কারণে আমরা গবেষণা করতে পারছি না। সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে আমরা যত দ্রুত সম্ভব গবেষণা শুরু করব।’
সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের অবস্থা নিয়ে গবেষণা ও মৎস্য সম্পদ জরিপের সঙ্গে যুক্ত সমুদ্রবিজ্ঞানী সাইদুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘সেইল ফিশ যে পরিমাণে ধরা পড়তে শুরু করেছে, এটা আমাদের সায়েন্টিফিক কমিউনিটির জন্য খুবই উদ্বেগের। গালফ অফ থাইল্যান্ড যেমন অনেকটা মৎস্যশূন্য হয়ে গেছে, তেমন আমাদের বে অফ বেঙ্গল মৎস্যশূন্য হয়ে যাক তা আমরা চাই না।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশপথে যানজট নিরসনে ও পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও পৌর সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক ও ফুটপাত থেকে শতাধিক হকার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করা হয়।
প্যানেল মেয়র তসলিম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্থায়ী কিছু ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা করে আসছেন। এতে করে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পথচারীদের সুবিধার্থে যানজট দূর করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান।
উচ্ছেদ অভিযানে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ মো. তসলিম মিয়া ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানাসহ থানা পুলিশ ও পৌরসভার কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠির রাজাপুরে নদীর তীর থেকে এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো যুবকের মামুন হোসেন, যার বয়স ২৫ বছর। তিনি রাজাপুরের পশ্চিম সাতুরিয়া গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে।
ভ্যানচালক মামুন দুই দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন জানিয়ে রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে সাতুরিয়া গ্রামের ইদুরবাড়ি এলাকায় কচা নদীর তীর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। লাশের ময়নাতদন্তসহ পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে, তবে এটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, সেটি তদন্তে বের হবে।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পূর্ব পূয়ালী গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের একমাত্র ছেলে রাব্বি হাওলাদার।
২৫ বছর বয়সী রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট। ডাক্তারের পরামর্শ তার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রাব্বির কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য এতো টাকা লাগবে শোনার পর থেকেই তার কৃষক বাবা সাহায্যের জন্য ছুটছেন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় বিত্তবানদের কাছে। কেন না তার সবকিছুই বিক্রি করে দিলেও এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি জোগাড় করার সামর্থ্য হচ্ছে না।
রাব্বি বর্তমানে ঢাকার মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন অবস্থায় কৃষক বাবা তার সন্তানকে বাঁচাতে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। দেশের বিত্তবানরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই হয়ত বেঁচে যাবে তার সন্তান।
রাব্বির পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাব্বি হাওলাদার কয়েক মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (সেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান তার পরিবার। সেখানে চিকিৎসক তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল রাব্বির, কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরই মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ওপরে শুধু হাসপাতাল ও ওষুধের বিল দিতে হয়েছে। দরিদ্র এই পরিবারটি আত্মীয়স্বজনসহ সবার সহায়তায় ওই বিল দেয়া সম্ভব হয়।
রাব্বির মা রেভা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এভাবে আর কয়দিন চিকিৎসা করাতে পারব জানি না। কারণ আমাদের সামর্থ্য শেষ হয়ে এসেছে। শুধু টাকার অভাবে তাকে ভালো কোনো হাসপাতালেও নিতে পারছি না, কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপারেশনের ধকল সহ্য করার মতো সুস্থ অবস্থায় আনা খুব জরুরি।’
রাব্বির বাবা আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনাদের ভালোবাসা ও সাহায্য আমাদের খুব প্রয়োজন। কারণ শুধু টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার একমাত্র ছেলে অকালে ঝরে যাবে তা আমার জীবন থাকতে মানতে পারছি না।’
তাকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৯৭-২২৮৯৭৫ ও ০১৯৮৭-৩৬৬৫৬৮ (বিকাশ-পার্সোনাল) নাম্বারে পাঠাতে পারেন ও যোগাযোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন।
এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার উজানপাড়া এলাকায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ত্রিশাল থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, বেলা ১১টার দিকে মাদানী সিএনজি পাম্প সংলগ্ন উজানপাড়ায় একটি বাস ইউটার্ন নেয়ার সময় অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই বছর বয়সী এক মেয়ের মৃত্যু হয়। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে ৩৩ বছর বয়সী অটোরিকশার চালক শরিফুল ইসলাম ও অন্য একজনের মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, এ দুর্ঘটনায় আহত চারজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে, যারা হলেন ত্রিশালের রুদ্র গ্রামের জালাল উদ্দিনের ৪৫ বছর বয়সী স্ত্রী মনি আক্তার ও একই গ্রামের শামীম আহমেদের ৪৫ বছর বয়সী স্ত্রী সাহিদা আক্তার।
ফরিদপুর সদরে যৌনপল্লি থেকে দুই তরুণীকে উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই পল্লির এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার রাতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত পারুল বেগম ওরফে পারু (৪৮) জেলার রথখোলা যৌনপল্লির বাসিন্দা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন আপন (৩০), জহির (৩০) ও ববি (৩৮)।
গ্রেপ্তার না হওয়া এ তিনজনের মধ্যে ববি যৌনপল্লির সর্দারনি হিসেবে পরিচিত। আপন ও জহিরের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদপুরের কচুয়া থানা এলাকা থেকে এক তরুণীকে গত ১০ মার্চ ঢাকায় নিয়ে আসেন আপন। দুই দিন সেখানে রেখে তাকে (তরুণী) তিন ব্যক্তির হাতে তুলে দেন তিনি। ওই তিন ব্যক্তি ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় তরুণীকে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। পরের দিন একটি সাদা কাগজে তরুণীর স্বাক্ষর নিয়ে জানানো হয়, এখন থেকে তিনি যৌনপল্লির লাইসেন্সধারী সদস্য।
এতে আরও বলা হয়, মেয়েটিকে পারুর বাসায় রেখে ববি ও অন্যদের মাধ্যমে জোর করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। এর মাঝে মেয়েটি বাড়িতে যোগাযোগের জন্য একজন খদ্দেরকে তার ছোট বোনের মোবাইল নম্বর দেন। পরে ওই খদ্দেরের মোবাইল কলের মাধ্যমে মেয়েটির সন্ধান পায় তার পরিবার। এরপর তার মা ও ফুফা রথখোলায় এসে তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশকে জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ যৌনপল্লিতে অভিযান চালানোর পর ফেনীর পূর্ব ছাগলনাইয়ার আরেক তরুণীও তাকে উদ্ধারে পুলিশের সাহায্য চান। ওই তরুণী জানান, তাকেও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ঢাকার মিরপুরের একটি বাসায় এক রাত রেখে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে বিক্রি করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামান জানান, যৌনপল্লিতে তরুণীকে নেয়ার ঘটনায় তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে অভিযান চালিয়ে পারুল বেগম ওরফে পারুকে গ্রেপ্তার করে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
নোয়াখালীর কবিরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে সহোদর দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের রামেশ্বপুর গ্রামের ছর আলী মাঝি বাড়ির পুকুরে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুই শিশু হলো সাত বছর বয়সী বিবি ফাতেমা বেগম ও তার চার বছরের ভাই আবিদ হোসেন। শিশুদ্বয় ছর আলী মাঝি বাড়ির আবদুল হাইয়ের সন্তান।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি হুমায়ন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুই ভাই-বোন সকালে ঘরের পাশে পুকুরে দাঁত ব্রাশ করতে যায়। এ সময় হাত-মুখ ধোয়ার সময় একজন পুকুরে পড়ে গেলে আরেকজন উদ্ধার করতে পানিতে নামে।
‘পরে দুজনই পানিতে ডুবে যায়। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।’
আরও পড়ুন:ইস্টার সানডে, শবে কদর ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১৯ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)।
আগামী ৩১ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ছুটি শেষ হবে ১৮ এপ্রিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো.মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়।
এতে উল্লেখ করে বলা হয়, ‘৩১ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল ১৯ দিন সকল ধরনের ক্লাস কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ৩১ মার্চ ইস্টার সানডে উপলক্ষে এক দিন এবং ৭ থেকে ১৮ এপ্রিল ১২ দিন পবিত্র শবে কদর ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস বন্ধ থাকবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালীন সকল ধরনের সিকিউরিটি ও জরুরি সেবাসমূহ বহাল থাকবে।’
মন্তব্য