‘তোমার কাজে আমরা সবাই খুশি। আমাদের অবশ্যই বলতে হবে, তুমি ভালো কাজ করছ। খুব তাড়াতাড়ি তুমি নতুন কাজ পাবে।’—বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানকে উদ্দেশ করে মুক্তিযুদ্ধের সময় এভাবেই চিঠি লিখেছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওই সময়ের কর্নেল আসলাম বেগ।
এ রকম একটি চিঠি সম্প্রতি নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। চিঠিটি মুক্তিযুদ্ধে ‘বীর উত্তম’ খেতাব পাওয়া সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকাকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে। বলা হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধে ছদ্মবেশে পাকিস্তানি হানাদারদের পক্ষ নিয়েছিলেন তিনি। আর দেশের স্বাধীনতায় ঝাঁপিয়ে পড়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঠেলে দিয়েছেন মৃত্যুর দিকে।
এ নিয়ে সংসদে কথা বলেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি তার বক্তব্যের পক্ষে সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তার লেখা একটি চিঠির কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘সে (জিয়াউর রহমান) কী করেছে, আমি বলি। কর্নেল আসলাম বেগ, সে তখন ঢাকায় কর্মরত ছিল, পরবর্তীতে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান হয়েছিল, সেই কর্নেল বেগ জিয়াকে একটা চিঠি দেয় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন, ’৭১ সালে। সেই চিঠিতে সে লিখেছিল, আপনি খুব ভালো কাজ করছেন। আমরা আপনার কাজে সন্তুষ্ট। আপনার স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে কোনো চিন্তা করবেন না। আপনাকে ভবিষ্যতে আরও কাজ দেয়া হবে।’
প্রধানমন্ত্রী সংসদকে বলেন, ওই চিঠি তার কাছে আছে। তিনি বলেন, ‘কথাটা উঠবে জানলে আমি চিঠিটা নিয়ে আসতাম। একসময় আমি নিয়ে আসব। এটা আমাদের প্রসিডিংসের পার্ট হয়ে থাকা উচিত।’
সেই চিঠির একটি অনুলিপি পেয়েছে নিউজবাংলা। ১৯৭১ সালের ২৯ মে মেজর জিয়াকে উদ্দেশ করে লিখেছিলেন কর্নেল বেগ।
যা লেখা ছিল মূল চিঠিতে
Dacca
Major Zia Ur Rahman, Pak Army
We all happy with your job. We must say, good job. You will get new job soon.
Don’t worry about your family. Your wife and kids are fine.
You have to be more careful about Major Jalil.
Col. Baig Pak Army
May 29. 1971
বাংলায় যা দাঁড়ায়:
ঢাকা
মেজর জিয়াউর রহমান, পাক আর্মি
তোমার কাজে আমরা সবাই খুশি। আমাদের অবশ্যই বলতে হবে, তুমি ভালো কাজ করছ। খুব তাড়াতাড়ি তুমি নতুন কাজ পাবে।
তোমার পরিবার নিয়ে চিন্তা কোরো না। তোমার স্ত্রী ও সন্তানরা ভালো আছে।
মেজর জলিল সম্পর্কে তোমাকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
কর্নেল বেগ, পাক আর্মি
মে ২৯, ১৯৭১
মুক্তিযুদ্ধের বীরত্ব দেখানোর স্বীকৃতি হিসেবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানকে দেয়া হয় ‘বীর উত্তম’ খেতাব। বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ফেনী নদী পর্যন্ত বিস্তৃত সেক্টর-১ এর দায়িত্ব পালন করেছেন মেজর জিয়া। ১ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
এরপর সেক্টরটির দায়িত্বভার বর্তায় ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলামের কাঁধে।
তবে এ চিঠির বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর-১ এর কমান্ডার এবং সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, বীর উত্তম।
তিনি বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে সংসদের বক্তব্য শুনুন। আমি এসব নিয়ে এখন কোনো কথা বলব না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদকে জানিয়েছেন জিয়াউর রহমান সেক্টর কমান্ডার ছিলেন না।
বৃহস্পতিবার সংসদে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদ মোশাররফ যখন আহত হয়ে যান, তখন মেজর হায়দার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান সেক্টর কমান্ডার হয়নি।’
সেদিন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদের কথার প্রসঙ্গ ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্য বলেছেন, জিয়া যেখানে দায়িত্বে ছিল, সেখানে নাকি বেশি মানুষ মারা গেছে। ক্যাজুয়ালিটি সব থেকে বেশি। সে একটা সেন্টারে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। আর সেখানে ক্যাজুয়ালিটি বেশি হয়েছে।’
জিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া থেকে মনে প্রশ্ন জেগেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘তাহলে প্রশ্ন আসে: সে তাহলে যুদ্ধে কী কাজ করেছে? পাকিস্তানিদের পক্ষে, যাতে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা মৃত্যুবরণ করে, ওই ব্যবস্থা করেছিল কি না সেটাই আমার প্রশ্ন। সে তো একটা সেক্টরের অধিনায়ক, সেক্টর কমান্ডার না।’
গত ৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৭২তম সভা থেকে জিয়াউর রহমানসহ বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সুপারিশ আনা হয়।
এ বছরের ৬ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যায় জড়িত এবং আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া চার আত্মস্বীকৃত খুনির বীর মুক্তিযোদ্ধা খেতাব বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
যারা খেতাব হারিয়েছেন তারা হলেন: লে. কর্নেল শরিফুল হক ডালিম (বীর উত্তম গেজেট নং ২৫), লে. কর্নেল এস এইচ এম এইচ এম বি নুর চৌধুরী (বীর বিক্রম গেজেট নং ৯০), লে. এ এম রাশেদ চৌধুরী (বীর প্রতীক গেজেট নং ২৬৭) ও নায়েক সুবেদার মোসলেম উদ্দিন খান (বীর প্রতীক গেজেট নং ৩২৯)।
তবে জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সেটি প্রক্রিয়াধীন আছে।
কে এই বেগ?
খোঁজখবর করে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীতে মির্জা আসলাম বেগ নামে একজন সেনা কর্মকর্তা ছিলেন, যিনি ’৭১-এ পাকিস্তানের একটি পদাতিক রেজিমেন্টের নেতৃত্ব দেন।
কিন্তু মির্জা আসলাম বেগ ইংরেজিতে নিজের নামের বানান লিখেছেন ‘Beg’। আর যিনি জিয়াউর রহমানকে চিঠি লিখেছেন, তার বানান ছিল ‘Baig’। এ দুজন একই ব্যক্তি কিনা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
১৯৭১ সালে আসলাম বেগ একটি পদাতিক রেজিমেন্টের নেতৃত্ব দিলেও পরে তাকে ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটিতে পাঠানো হয়। যেখানে পাঠদান বিষয়েই বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। ওই সময়টায় তিনি যুদ্ধবিদ্যায় এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৮৮ সালের ১৭ আগস্ট বিমান দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউল হক মারা গেলে পাকিস্তানের চিফ অফ আর্মি স্টাফের দায়িত্ব পান মির্জা আসলাম বেগ। ১৯৯১ সালে অবসর জীবনে যান বেগ। তার আগ পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এই চার তারকা জেনারেল।
নেত্রকোনায় জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল।
নেত্রকোনায় গণভোট, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নেত্রকোনা জেলা শাখা। গত রোববার বিকাল ৩ টায় নেত্রকোনা কালেক্টরেট মাঠ প্রাঙ্গনে এ সমাবেশের আয়োজন করে জেলা জামায়াত। জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা বদরুল আমিনের সঞ্চালণায় ও জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মাওলানা ছাদেক আহমাদ হারিছের সভাপতিত্বে এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ অঞ্চল টিম সদস্য, জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর ও নেত্রকোনা -২ আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক মাওলানা এনামুল হক। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাওলানা মাহবুবুর রহমান, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও পূর্বধলা আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক মাছুম মোস্তফা, ময়মনসিংহ মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক ও নেত্রকোনার -৪ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক আল হেলাল তালুকদার,জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো. জহিরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য ও নেত্রকোনা-৩ আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক খায়রুল কবির নিয়োগী, জেলা শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য, নেত্রকোনা-১ আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আবুল হাসিম, নেত্রকোনা পৌর জামায়াতের আমীর মো. রফিকুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেত্রকোনা জেলা সভাপতি ইয়াসিন মাহমুদ রাসেল, আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা ও উপজেলা জামায়াতের বিভিন্ন নেতারা। বক্তারা বলেন, নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট দিতে হবে। জুলাই সনদের আইনে ভিত্তি দিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, কোনো কোনো জায়গায় একটি দল আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণ করছে। আমরা বলতে চাই, এটি বন্ধ করুন। আওয়ামী লীগের মত ফ্যাসিস্ট হইয়েন না। তাহলে জনগণ আপনাদের সাথেও আওয়ামী লীগের মতোই আচরণ করবে। জেলা জামায়াতের আমীর সভাপতির বক্তব্যে বলেন, দেশের মানুষ যেনতেন কোনো নির্বাচন মেনে নিবে না। প্রশাসনকে বলবো নিরপেক্ষ আচরণ করুন। কোন দলের প্রতি আনুগত্য দেখাবেন না। এরপর মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নেত্রকোনা কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে জামায়াতের ২ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বৃহৎ জোট গঠন করতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য অটুট রাখতে চায় বিএনপি। আর ঐক্য বজায় রাখতে কেউ যেন বিভেদের পথে না যায় সেই বার্তাও দিতে চায় দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশের প্রার্থীদের সঙ্গে দলের হাইকমান্ডের বৈঠক হচ্ছে। দল ও নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার বার্তা দিতেই হাইকমান্ডের এই বৈঠক করছে বিএনপি।
এ সময়, আগামীর বাংলাদেশ হবে তারুণ্যনির্ভর মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, তরুণ-যুবকদের রাজনৈতিক ভাবনাকে ধারণ করে সামনের দিনে জাতি বিনির্মাণে কর্মসূচি প্রণয়ন করবে বিএনপি।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের শ্রদ্ধা নিবেদন।
চট্টগ্রামের রাউজানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আলমগীর আলম (৫৫) নামে এক বিএনপি নেতা নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেল ৫টার দিকে পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কায়কোবাদ আহম্মদ জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় রিয়াজ ও আকিব নামে দুইজন যুবদল নেতাও গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া।
স্থানীয়রা জানান, নিহত আলমগীর আলম বিএনপি নেতা। তিনি রাউজান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পূর্ব রাউজানের সিদ্দিক চৌধুরী বাড়ির আবদুস সত্তারের ছেলে।
আলমগীরের ছেলে আসফায়েত হোসেন বলেন, শনিবার দুপুরে পরিবারের সবাই মিলে পূর্ব রাউজান রশিদ পাড়ায় ফুফুর বাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়েছিলাম। বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে কায়কোবাদ আহম্মদ জামে মসজিদের সামনে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি করে আমার বাবাকে হত্যা করে।
রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আলমগীর নামে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ মরদেহ সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে কে বা কারা গুলি করে পালিয়ে গেছে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।
এদিকে বিএনপি নেতা আলমগীর হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার। তিনি বলেন, আলমগীর আওয়ামী শাসনামলে দীর্ঘ ১২ বছর কারাভোগের পর সম্প্রতি কারামুক্ত হয়েছিল। তাকে প্রকাশ্যে গুলি করে যারা হত্যা করেছে- তাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
গত ৭ অক্টোবর উপজেলার বিএনপি কর্মী মুহাম্মদ আবদুল হাকিমকে (৫২) রাউজানের খামার বাড়ি থেকে ফেরার পথে হাটহাজারীর মদুনাঘাটে চলন্ত গাড়িতে গুলি করে হত্যা করে অস্ত্রধারীরা। এ ঘটনার রেশ না কাটতেই উপজেলায় আরও একটি হত্যার ঘটনা ঘটল।
উল্লেখ্য, রাউজানে গত ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক সহিংসতায় মোট ১৭টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১২টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বলে জানা যায়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন বলেছেন, ‘আদর্শ ও মতের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও গণতন্ত্রের স্বার্থে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে এক হতে হবে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তনের সব দরজা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
গতকাল শনিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের বিভেদের কারণে ফ্যাসিবাদের প্রত্যাবর্তন ঘটলে জাতি ক্ষমা করবে না।’
তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দলে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও দেশ ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তন ঠেকাবো।’
আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘দুই-চার কলাম লেখার জন্য আমাকে প্রায় সাড়ে নয় বছর নির্বাসনে থাকতে হয়েছে, আয়নাঘরে থাকতে হয়েছে, নির্যাতনে কারাগারে থাকতে হয়েছে। কিন্তু কখনো সংগ্রামের পথ থেকে পিছিয়ে যাইনি।’
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘এক সময় আমি ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান পিজি হাসপাতালের প্রিজন সেলে ছিলাম। করোনারি কেয়ার ইউনিটের একটি সেলে আমাদের রাখা হয়। তিনি অনশন শুরু করলে তাকে বলেছিলাম, আপনি মারা গেলে শেখ হাসিনা খুশি হবে, দয়া করে অনশন ভঙ্গ করুন। ছয়-সাত দিন পর মুরুব্বিরা দেখা করে তার অনশন ভাঙ্গান।’
ছাত্রদের অভ্যুত্থানের গৌরবময় ইতিহাস বুকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।
তিনি বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের রক্তঝরা দিনগুলো স্মৃতিতে ধরে রেখে, তার ভিত্তিতেই আমাদের আগামীর বাংলাদেশ গড়তে হবে। সন্তানদের জন্য একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা গড়ে তোলাই হবে আমাদের দায়িত্ব।’
আমাদের সন্তানদের রক্তের অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে বলে সকলের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং মানিকগঞ্জ-১ আসনে এমপি প্রার্থী এস.এ জিন্নাহ কবির বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে ধোকা দিয়ে ভোট নেওয়ার পাঁয়তারা করছে। সাধারণ ভোটাদের ইসলাম ধর্ম নিয়ে মিথ্যা অপব্যাখ্যা দিয়ে বলে বেড়াচ্ছে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে জান্নাতে যাওয়া যাবে, নাওজুবিল্লাহ দেখেন কত বড় মিথ্যাবাদী।
তিনি বলেছেন, কোরআন শরীফের নিয়ম মেনে ও আল্লাহর সকল কিছু মেনে আল্লাহর খাঁটি বান্দা হলে একমাত্র জান্নাত পাওয়া যেতে পারে। ধর্ম ব্যবসায়ী জামায়াতের মিথ্যা কথায় আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। স্বাধীনতাবিরোধী মিথ্যাবাদী, প্রতারণাকারী জামায়াতকে প্রতিহত করতে হবে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে ঘিওর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ ও প্রচারণা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথ বলেন।
ঘিওর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর মানিকুজ্জামান মানিকের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জানে আলমের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কাজী মোস্তাক হেসেন দিপু, দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, জেলা বিএনপি সাবেক কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. লোকমান হোসেন, জেলা কৃষক দলের সিনিয়র সহসভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ, দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মতিন মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান আনিস ও জেলা যুবদলের সদস্য মোসলেম উদ্দিন প্রমুখ।
বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় এলে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে “রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা ৩১ দফা” বিষয়ে খন্দকার শামসুল আলম ফাউন্ডেশন আয়োজিত মেধাবৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি মো. শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তারেক রহমান বলেন, “দেশকে এগিয়ে নিতে হলে প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় এলে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হবে। শিক্ষকদের এমন সাপোর্ট দেওয়া হবে যাতে তারা পাঠদানে পুরো মনোযোগ দিতে পারেন।”
তিনি আরও বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শেখানো হবে নিজের যত্ন নেওয়া এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের শিক্ষা।”
তারেক রহমান জানান, ভবিষ্যতে মেধাবীদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এবং শিক্ষকদের মর্যাদা ও প্রণোদনা বাড়ানো হবে।
তারেক রহমান বলেন, “বিগত ১৫ বছরে প্রচুর অর্থবিত্ত পাচার হয়ে গেছে। পানির অপর নাম জীবন তাই খালগুলো পুনঃখনন ও পানির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে যে খাল খনন কর্মসূচি নিয়েছিলেন, তা পুনরায় বাস্তবায়নের মাধ্যমে পানির সংকট ও আর্সেনিক সমস্যা সমাধানের পথ উন্মুক্ত হবে।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “মেধাবীদের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আগামীর নেতৃত্ব। তরুণরা যেন বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মতো যোগ্যতা অর্জন করতে পারে ভাষা শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রতিটি ক্ষেত্রে স্কুল থেকেই দক্ষতা গড়ে তোলা হবে।”
তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, কোনো মেধাবী যেন আর ঝরে না পড়ে, সে লক্ষ্যে সরকার গঠন করলে শিক্ষাব্যবস্থায় যুগান্তকারী সংস্কার আনা হবে।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, বিএনপি'র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ।
প্রধান অতিথি তারেক রহমানের বক্তব্যের আগে অনুষ্ঠানস্থল থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা সরাসরি বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও ছাত্র-ছাত্রীরা উত্তর দেন।
উল্লেখ্য যে, তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার ওপর গত ১৬ আগস্ট ১০ হাজারের ওপর শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়া হয়। পুরস্কার দেওয়া হয় ৬০ জনকে। এরমধ্যে প্রথম পুরস্কার ২৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ১৫ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ১০ হাজার টাকা এবং চতুর্থ পুরস্কার ৫ হাজার টাকা।
প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত তিনটি স্কুলকে এক লাখ করে তিন লাখ টাকা দেওয়া হয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি প্রতিনিধি দল। শনিবার সকাল ১০টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এনসিপির প্রতিনিধি দলে থাকবেন—দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জাবেদ রাসিন, খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা।
বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধি দল জুলাই সনদের বাস্তবায়ন আদেশ, আইনি ভিত্তিসহ সনদের নানা বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।
মন্তব্য