সিলেট নগরের দাঁড়িয়াপাড়া এলাকার একটি বাসার সামনে উঁকিঝুঁকি মারছেন এক তরুণ। বাসার মূল ফটক বন্ধ। ফটকের পাশেই দেয়ালে টানানো লেমিনেটিং করা কাগজে লেখা রয়েছে- ‘করোনার কারণে দর্শনার্থী প্রবেশ নিষেধ’।
এমন লেখা দেখেও তরুণটি দাঁড়িয়ে আছেন ফটকের সামনে। ফটকে শব্দ করে বাসার ভেতরের লোকদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন।
বাসাটির নাম- ‘সালমান শাহ ভবন’। যে তরুণ দাঁড়িয়ে আছেন ফটকের সামনে তার নাম আবিদুর রহমান। বাড়ি সিলেটের কানাইঘাটে। একটা কাজে সিলেট শহরে এসেছিলেন। কাজ শেষ করে প্রিয় নায়কের স্মৃতি লেগে থাকা এই বাড়িটি একবার দেখতে এসেছেন। প্রবেশ নিষিদ্ধ জেনেও ভেতরে ঢোকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সালমান শাহ ভবনের সামনে গিয়ে রোববার দুপুরে দেখা মেলে আবিদুর রহমানের। এই দিনটি সালমান শাহর জন্মদিন।
১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর এই বাড়িতেই জন্ম নিয়েছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের চিরসবুজ নায়ক সামলান শাহ।
আবিদুর বলেন, ‘সালমান শাহ আমার প্রিয় নায়ক। তার সব ছবি আমি দেখছি। এখন পর্যন্ত তার মতো কুনু নায়ক বাংলাদেশো আইছে না। পরে যারা আইছইন সবে খালি সালমানরে নকল খরছইন। কিন্তু তার মতো অইতো পারছইন না। সালমান মারা যাওয়ার কারেণই আইজ বাংলাদেশোর সিনেমার অতো বাজে অবস্থা।’
কমর উদ্দিন চৌধুরী ও নীলা চৌধুরীর বড় ছেলের নাম ছিল শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। চলচ্চিত্রে আসার পর তার নাম হয় সালমান শাহ।
১৯৯৩ সালে ধুমকেতুর মতো বাংলা চলচ্চিত্রে আবির্ভাব সালমানের। প্রথম ছবি সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। প্রথম ছবিই সুপার হিট। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে। এগিয়ে চলেছেন দুর্দান্ত প্রতাপে। উপহার দিয়েছেন একের পর এক দর্শকনন্দিত ছবি। মৌসুমী ও শাবনূরের সঙ্গে জুটি গড়ে হয়েছেন বাংলার রোমান্টিক নায়ক।
তার আবির্ভাব যেমন ছিল আচমকা ও সবকিছুকে কাঁপিয়ে দিয়ে, তার প্রস্থানও তেমনই। অকস্মাৎ, অবিশ্বাস্য, সবকিছু তছনছ করে দিয়ে।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে বিটিভির সংবাদের কল্যাণে দেশবাসী জানতে পারে, নিজের শোবার ঘর থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে হার্টথ্রব এই নায়কের মরদেহ। মুহূর্তেই থমকে যায় চলচ্চিত্র প্রিয় সব মানুষ। থমকে দাঁড়ায় বাংলা চলচ্চিত্র।
কিন্তু যে নায়ক চিরকালের, যে নায়ক চিরযৌবন আর অনন্ত প্রেমের প্রতীক, তাকে কি মৃত্যু কেড়ে নিতে পারে? মৃত্যু তো তাকে বরং অমরত্ব এনে দিয়েছে। এমন আকস্মিক আর রহস্যময় মৃত্যুও বোধহয় তার অমরত্বকে পাকাপোক্ত করেছে। ফলে শারীরিক অনুপস্থিতি সত্ত্বেও তিনি ভক্তদের হৃদয়ে গভীরভাবে বেঁচে আছেন।
মৃত্যুর ২৫ বছর পেরিয়ে গেছে, অথচ এখনও সালমান শাহ এক ক্রেজের নাম। এখনও তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের পোস্টার বয়। আর ফ্যাশন আইকন।
এখনও অনেক তরুণ, যাদের জন্ম সালমান শাহের মৃত্যুর পর তারাও এই নায়কের মতো করে মাথায় কাপড় বাঁধেন, উল্টো করে ক্যাপ পরেন, চুলে ঝুঁটি বাঁধেন আর সালমানের অনুকরণ করে কথা বলেন। সালমানের মৃত্যুরহস্য উদঘাটনের দাবিতে আজও রাস্তায় নামে অসংখ্য মানুষ।
মাত্র তিন বছরের চলচ্চিত্র জীবন। অভিনয় করেছেন ২৭টি ছবিতে। কিন্তু এই স্বল্প সময়েই অভিনয় দক্ষতা দিয়ে নিজেকে চিরকালের করে নিয়েছেন সালমান। জীবদ্দশায় পেয়েছেন উত্তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা। হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ট্রেডমার্ক।
যেমনটি বলছিলেন শাকিল আহমদ সোহাগ। রোববার দুপুরে সালমান শাহ ভবনের সামনে গিয়ে কথা হয় সোহাগের সঙ্গেও।
তিনি বলেন, ‘সালমান শাহর সময়ে কলকাতার সিনেমা থেকে বাংলাদেশের সিনেমা অনেক এগিয়ে ছিল। সেখানকার শিল্পীরা আমাদের এখানে অভিনয় করতে আসতেন। এখন তারা এগিয়ে গেছে। আমরা পিছিয়ে গেছি। কারণ সালমানের মৃত্যুর পর এমন কোনো নায়ক বাংলা চলচ্চিত্রে আসেননি যার নামে দর্শকরা সিনেমা হলে ছুটে যাবেন। যিনি হয়ে উঠবেন অসংখ্য তরুণ-তরুণীর স্বপ্নের নায়ক। সালমানের পর এ রকম কোনো স্বপ্নপুরুষ পায়নি বাংলা চলচ্চিত্র। পরবর্তী সময়ে অনেকে সালমানকে অনুকরণ করতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তার মতো হতে পারেননি।’
যে বাড়িতে সালমান শাহ জন্মেছিলেন, জন্মদিনে নগরের দাঁড়িয়াপাড়া এলাকার এই বাড়িটিতে গিয়ে কথা হয় সালমানের মামা আলমগীর কুমকুমের সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘জন্মদিন মৃত্যুদিন ছাড়া অন্য দিনগুলোতেও এই বাড়িতে সালমানের ভক্তরা ভিড় করেন। বাড়িতে সালমানের বিভিন্ন সময়ের ছবি, তার স্মৃতিচিহ্ন, তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র, সম্মাননা স্মারক সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এগুলো দেখতে দূর-দূরান্ত থেকেও অনেক ভক্ত আসেন। মানুষজনের ভিড় লেগে থাকায় করোনা সংক্রমণের কারণে এখন দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ রেখেছি আমরা।’
সালমানের জন্মস্থান নিয়ে অনেকে ভুল তথ্য প্রচার করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকে প্রচার করেন সালমানের জন্ম সিলেটের জকিগঞ্জে। আসলে তা সত্য নয়। জকিগঞ্জে তাদের মূল বাড়ি। তবে সে জন্মেছে এখানে, দাঁড়িয়াপাড়ায়। মামার বাড়িতে।
চলচ্চিত্র পরিচালক আলমগীর কুমকুম বলেন, মৃত্যুর ২৫ বছর পরও যেভাবে মানুষ সালমান শাহকে ভালোবাসছে, তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, তাতে বোঝা যায় সালমান ছিলেন তার সময় থেকে এগিয়ে থাকা একজন মানুষ। তার অভিনয়, তার স্টাইল এখনও কেউ ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। ফলে সালমানকে আজও সমসাময়িক মনে করেন ভক্তরা। এসবই একজন নায়ককে মহানায়ক করে তোলে। সালমান ছিলেন সত্যিকারের মহানায়ক।
বেঁচে থাকলে আজ ৫০ পূর্ণ হতো সালমানের। একান্নতে পা দিতেন। কিন্তু ভক্তদের হৃদয়ের যে সালমান, তার তো মৃত্যু নেই। তিনি চিরসবুজ। অমর।
জন্মের পঞ্চাশ আর মৃত্যুর ২৫ পেরিয়েও ভক্তদের হৃদয়ে সালমানের ২৫ বছর বয়সী ছবিই ফ্রিজশট হয়ে আছে। পঁচিশের পর আর বয়স বাড়ছে না তার।
তার নায়িকাদের বয়স বাড়ছে। তার সেই সময়ের তরুণ ভক্তরা যৌবন পেরোচ্ছে। তরুণী প্রেমিকারা মধ্যবয়সে এসে হয়তো সংসারের হিসাব মেলাতে ব্যস্ত। অথচ সালমান শাহ আটকে আছেন ২৫ বছরে। অক্ষয় যৌবন আর রোমান্টিক ইমেজ নিয়ে আজও তিনি আছেন অসংখ্য তরুণীর হৃদয়ের পুরুষ হয়ে।
মুক্তির আগ থেকেই তুমুল আলোচনায় ছিল ভারতের দক্ষিণের কন্নড় সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার টু।
যেমনটি আলোচনায় ছিল, বাস্তবেও ঠিক তেমনই ঘটছে। গত ১৪ এপ্রিল মুক্তির পর থেকেই বক্স অফিসে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কেজিএফ টু।
ইতোমধ্যে হিন্দি ভার্সনে রেকর্ড গড়েছে সিনেমাটি। ৭ দিনে ২৫৫ কোটি রুপি আয় করেছে। যা বাহুবলি টুর রেকর্ডও ভেঙেছে।
হিন্দি ছাড়াও সিনেমাটি কন্নড়, তেলেগু, তামিল ও মালায়ালাম ভাষায় মুক্তি পেয়েছে। সব মিলিয়ে প্রথম সপ্তাহের শেষে সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী ৭০০ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করেছে।
ভারতীয় চলচ্চিত্র বাণিজ্য বিশ্লেষক মনোবালা বিজয়বালান বৃহস্পতিবার দুপুরে এক টুইটে এ তথ্য জানিয়েছেন।
#KGFChapter2 ZOOMS past ₹700 cr milestone mark.
— Manobala Vijayabalan (@ManobalaV) April 21, 2022
২০১৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় প্রশান্ত নীল পরিচালিত এই ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান।
মুক্তির পর শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এটি। বক্স অফিসে গড়েছিল ইতিহাস।
গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের এই সিনেমায় দুর্দান্ত মারকুটে অভিনয় দিয়ে পুরো ভারত মাতিয়েছিলেন কন্নড় সুপারস্টার যশ। শুধু তা-ই নয়, এই সিনেমা দিয়ে দেশের বাইরেও লাখো ভক্ত-অনুরাগী জুটিয়েছেন এই অভিনেতা।
যশ বাদেও কেজিএফ চ্যাপ্টার টু-তে আরেক মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তকে। এ ছাড়া এতে গুরুত্বপূর্ণ সব চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাবিনা ট্যান্ডন, প্রকাশ রাজ, শ্রীনিধি শেট্টির মতো তারকারা।
আরও পড়ুন:করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে স্থগিত থাকা ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ এপ্রিল নজরুল মঞ্চে। উৎসব চলবে ১ মে পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলিউড অভিনেতা ও আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে বিজয়ী তৃণমূল এমপি শত্রুঘ্ন সিনহা।
আরও উপস্থিত থাকবেন অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়সহ অনেকে।
উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান পরিচালক রাজ চক্রবর্তী বলেন, ‘করোনার বিধিনিষেধ শিথিল হলেও আমাদের সাবধানে থাকতে হবে। সাবধানতার কথা বিবেচনা করেই এবার বাইরের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।’
কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষের শ্রদ্ধায় উৎসবের উদ্বোধনী ফিল্ম হিসেবে একই সঙ্গে নজরুল মঞ্চ ও রবীন্দ্র সদনে দেখানো হবে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত অরণ্যের দিনরাত্রি।
পরিচালক অরিন্দম শীল সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে সত্যজিতের সঙ্গে কাজ করা জীবিত শিল্পী ও কলাকুশলীদের এবার সংবর্ধনা দেয়া হবে।
এবার সত্যজিৎ রায় স্মারক বক্তব্য দেবেন পরিচালক সুজিত সরকার। সত্যজিতের জীবন ও কাজের ওপর প্রদর্শনীও থাকছে উৎসবে।
চলচ্চিত্র উৎসবের থিম ‘কান্ট্রি ফিনল্যান্ড’। কলকাতা শহরের ১০ হলে ৪০ দেশের ১৬৩টি সিনেমা দেখানো হবে এবারের উৎসবে।
২৭তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে আটটি বিলুপ্তপ্রায় ভাষার সিনেমা দেখানো হবে। ভাষাগুলো হলো বোরো, টুলু, রাজবংশী, সান্তাড়, ও কোঙ্কনী ও কুড়ুম্বা।
চিদানন্দ দাশগুপ্ত, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, দিলীপ কুমার, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত ও নিকোলাস জাঙ্কসোকে নিয়ে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকছে।
শিশির মঞ্চে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব শান্তনু বসু, মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান রাজ চক্রবর্তী, পরিচালক গৌতম ঘোষ, পরিচালক অরিন্দম শীল, হরনাথ চক্রবর্তী, অভিনেত্রী জুন মালিয়া।
চলতি বছরের শুরুর দিকে বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জানান যে, তার এবং নিক জোনাসের জীবনে সন্তান এসেছে। সারোগেসির মাধ্যমে তারা মা-বাবা হয়েছেন। তবে ছেলে না মেয়ে সন্তান তা জানাননি তিনি।
সেসময় বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম জানায়, কন্যা সন্তানের মা-বাবা হয়েছেন তারকা দম্পতি।
কিন্তু কখনো সন্তানের নাম কিংবা ছবি, কোনোটাই প্রকাশ্যে আনেননি অভিনেত্রী।
তবে দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রিয়াঙ্কা-নিক তাদের মেয়ের নাম কী রেখেছেন তা এবার প্রকাশ্যে। তারকা দম্পতি কন্যার নাম রেখেছেন মালতী মারি চোপড়া জোনাস।
জন্ম সনদও নাকি হাতে পেয়েছে হলিউড কেন্দ্রিক একটি সংবাদ সংস্থা। সেই সূত্রেই জানা গেছে এই নাম।
সংস্কৃত এবং ল্যাটিন দুই শব্দ মিশিয়ে মেয়ের নাম রেখেছেন প্রিয়াঙ্কা-নিক। সংস্কৃতে ‘মালতী’ শব্দের অর্থ হল একরকম সুগন্ধযুক্ত ছোট সাদা ফুল অথবা চাঁদের আলো।
অন্যদিকে ‘মারি’ শব্দের অর্থ সমুদ্রকে রক্ষা করে যে নারী। মূলত মাতা মেরিকে অনেক সময় এই আখ্যা দেয়া হয়। যিশুর মাতা মেরিকে ফ্রাঞ্চে ‘মারি’ বলা হয়।
যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও মেয়ের নাম বা ছবি কোনোটাই প্রকাশ্যে আনেননি তারকা জুটি।
যুক্তরাষ্ট্রের সান দিয়াগো শহরের এক হাসপাতালে গত ১৫ জানুয়ারি জন্ম হয়েছে নিক-প্রিয়াঙ্কার মেয়ের।
এরপর ২২ জানুয়ারি ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান হওয়ার কথা প্রকাশ্যে আনেন প্রিয়াঙ্কা।
প্রিয়াঙ্কার হাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রোজেক্ট। এর মধ্যে টেক্স অফ ইউ রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। পাশাপাশি আমাজনের টিভি সিরিজ সিটাডেল-এর শুটিংও শেষ করেছেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি এক পান মসলার কোম্পানির বিজ্ঞাপন করেন বলিউডের অভিনেতা অক্ষয় কুমার। শাহরুখ খান, অজয় দেবগনের মতো বলিউড তারকারা আগে থেকেই সেই সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।
তবে অক্ষয় এই বিজ্ঞাপনে অংশ হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া জানান তার ভক্ত-অনুরাগীরা। তাই তাদের ভাবনাকে সম্মান জানিয়ে ক্ষমা চেয়ে সেই সংস্থা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন অভিনেতা।
নিজের স্বাস্থ্য এবং শরীরচর্চা নিয়ে অত্যন্ত সজাগ অক্ষয়। যা তার চারপাশের লোকজন এবং অনুরাগীদেরও অনুপ্রেরণা জোগায়। তাই তিনি এই ধরনের বিজ্ঞাপনে অংশ নেয়ায় রুষ্ট হন অনেকেই।
এ জন্য বুধবার গভীর রাতে এক টুইট বার্তায় বিজ্ঞাপন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেন অক্ষয়।
সেই পোস্টে ক্ষমা প্রার্থনা করে অভিনেতা লেখেন, ‘আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমার অনুরাগী, শুভাকাঙ্ক্ষীসহ সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। গত কয়েক দিন ধরে আপনাদের কাছে থেকে যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছি তা আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। আমি তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন কখনই করিনি এবং কোনো দিন করব না। বিমন ইলাইচির সঙ্গে আমার চুক্তি নিয়ে আপনাদের আবেগ বুঝতে পারছি। সেই আবেগকে সম্মান জানিয়েই বিনয়ের সঙ্গে সরে দাঁড়াচ্ছি।’
ওই বিজ্ঞাপন থেকে পাওয়া টাকা সমাজসেবার কাজে দান করে দেবেন বলেও জানিয়েছেন অক্ষয়।
তিনি লেখেন, ‘বিজ্ঞাপনের পারিশ্রমিক বাবদ পাওয়া টাকা দান করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওই সংস্থা হয়তো বিজ্ঞাপনটির সম্প্রচার চালিয়ে যাবে, অন্তত আইনিভাবে চুক্তির মেয়াদ শেষ না পর্যন্ত। তার দায় আমারই। তবে কথা দিচ্ছি, আগামী দিনে কাজের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকব। বিনিময়ে আপনাদের ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা প্রার্থনা করি।’
তবে সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ কবে শেষ, তার উল্লেখ করেননি অক্ষয়।
আরও পড়ুন:২০১৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় ভারতের দক্ষিণের কন্নড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিগ বাজেটের সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান।
মুক্তির পর শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এটি। বক্স অফিসে গড়েছিল ইতিহাস।
গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের এই সিনেমায় দুর্দান্ত মারকুটে অভিনয় দিয়ে পুরো ভারত মাতিয়েছিলেন কন্নড় রকিং স্টার যশ। শুধু তা-ই নয়, এই সিনেমা দিয়ে দেশের বাইরেও লাখো ভক্ত-অনুরাগী জুটিয়েছেন এই অভিনেতা।
এরপর আবার ১৪ এপ্রিল কেজিএফ চ্যাপ্টার টু মুক্তির পর ঝড় তুলেছে বক্স অফিসে। জনপ্রিয়তা আর খ্যাতির শীর্ষে এখন যশ। তার সঙ্গে যখন অভিনয় করতে মুখিয়ে আছেন একাধিক অভিনেত্রী, কিন্তু তিনি কার সঙ্গে অভিনয় করার অপেক্ষায় রয়েছেন।
সেই অভিনেত্রী আর কেউ নন তিনি বলিউডের মাস্তানি দীপিকা পাডুকোন। ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যশ।
সেই সাক্ষাৎকারে যশ জানান, যদি সুযোগ দেয়া হয় তাহলে দীপিকা পাডুকোনের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি। আর তার বিপরীতে অভিনয় করেই বলিউডে পা রাখতে চান তিনি।
শুধু দর্শকদের নয় অনেক তারকারও পছন্দের অভিনেত্রী দীপিকা। তার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন অনেকেই। এবার সেই তালিকায় যোগ হল কেজিএফ তারকা যশ।
আরও পড়ুন:বিগত কয়েক বছরে বলিউডের চেয়ে বেশি সাড়া ফেলছে ভারতের দক্ষিণী সিনেমা। তার উদাহরণ বাহুবলী, পুষ্পা, আরআরআর, কেজিএফসহ অনেক সিনেমা। বর্তমানে বক্স অফিসে চলছে দক্ষিণী কন্নড় সিনেমা কেজিএফ টু-এর ঝড়।
কন্নড়, তেলেগু, তামিল, মালয়ালাম ও হিন্দি ভাষায় মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। এতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কন্নড় রকিং স্টার যশ। আর অন্যতম আরেক প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জয় দত্ত।
বলিউড ও দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে পার্থাক্য কোথায়? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তা নিজের অভিমত জানিয়েছেন সঞ্জয় দত্ত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সেই সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘আমার মনে হয় হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি হিরোইজম ভুলতে বসেছে, কিন্তু দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি বীরত্বকে এখনও ভুলে যায়নি। আমি বলছি না যে স্লাইস অফ লাইফ খারাপ। কিন্তু আমরা কেন আমাদের উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থানের দর্শকদের ভুলে গিয়েছি, যারা আমাদের দর্শকমহলের একটি বড় অংশ।
‘আমি আশা করি, হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সেই প্রবণতা ফিরে আসবে। আগে আমাদের স্বতন্ত্র প্রযোজক এবং অর্থদাতা ছিল, যা ফিল্ম স্টুডিওগুলোর করপোরেটাইজেশনের অবসান ঘটিয়েছে। করপোরেটাইজেশন ভালো, তবে এটি সিনেমার পছন্দের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।’
উদাহরণ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘দেখুন এস এস রাজমৌলির নির্দিষ্ট প্রযোজক রয়েছেন, যারা তার দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন। আমাদের সঙ্গে আগেকার দিনে গুলশান রাই, যশ চোপড়া, সুভাষ ঘাই এবং যশ জোহরের মতো প্রযোজকও ছিলেন। তারা যে সিনেমাগুলো তৈরি করেছেন তা দেখুন। দক্ষিণে তারা কাগজে স্ক্রিপ্ট দেখে, এখানে আমরা কাগজে পরিসংখ্যান দেখি।’
সঞ্জয়কে পরবর্তী সময়ে যশ রাজ ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিতব্য পৃথ্বীরাজ সিনেমায় দেখা যাবে। এতে আরও রয়েছেন অক্ষয় কুমার, মানুষী চিল্লার, সাক্ষী তানওয়ার এবং সোনু সুদ। এ ছাড়া শামশেরায় দেখা যাবে তাকে।
আরও পড়ুন:ভারতের দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী কাজল আগারওয়াল মা হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে তার কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে পুত্রসন্তান। মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছেন অভিনেত্রীর বোন নিশা আগারওয়াল।
এটি জীবনের সেরা সুখবর উল্লেখ করেন নিশা। এর আগে তিনি ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, ‘এটি একটি আনন্দের দিন, একটি বিশেষ খবর আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার অপেক্ষা সইছে না।’
চলতি বছর জানুয়ারিতে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জানিয়েছিলেন কাজল। ২০২০ সালের অক্টোবরে প্রেমিক গৌতম কিসলুর সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন অভিনেত্রী। এবার তাদের পরিবারে এলো নতুন সদস্য। তা নিয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত তারকাদম্পতি।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গৌতম কিসলু তাকে যেভাবে দেখভাল করেছেন, তাতে ভীষণ খুশি অভিনেত্রী। গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বামীকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি আবেগঘন বার্তাও লিখেছিলেন কাজল।
সেখানে তাকে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমাদের সন্তান আসার আগে কতটা যত্ন নিচ্ছ আমার, আমি জানতে চাই, তুমি ঠিক কতটা অসাধারণ একজন মানুষ আর কতটা অসাধারণ একজন বাবা হতে চলেছ।’
শিগগিরই কাজলকে দেখা যাবে চিরঞ্জীবী এবং রামচরণ অভিনীত আচার্য সিনেমায়। ২৯ এপ্রিল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
মন্তব্য