দুই বছর আগের আলোচিত ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর থেকে রাজধানীর ক্লাবগুলোতে প্রকাশ্যে এই খেলা বন্ধ হয়েছে। তবে এই খেলা বন্ধ হয়ে গেছে, এমনটা বলার সুযোগ নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি আর অভিযানের কারণে এখন ঝোঁক তৈরি হয়েছে অনলাইন ক্যাসিনোতে।
২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র্যাব। এই অভিযানে সরকার দলীয় বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বসহ ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করার কথা জানানো হয়।
অভিযানের সফলতা প্রসঙ্গে বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকার ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনোর জন্য খেলাধুলা বন্ধ ছিল। আমাদের অভিযানের পর আবার খেলা চালু হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ঢাকা শহরে দৃশ্যত এখন ক্যাসিনো নেই। কোনো ক্লাবেই এটা হচ্ছে না। গোয়েন্দারা নজরদারি করছে। কোথাও এমন কিছু পেলে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে ক্যাসিনো বন্ধ হলেও অনলাইন ক্যাসিনোতে ঝুঁকছে মানুষ। তা বন্ধেও আমাদের নজরদারি রয়েছে।’
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের টার্গেট করে এসব সাইটের বিজ্ঞাপন দেয়া হচ্ছে বাংলায়। অনলাইন ক্যাসিনোর অ্যাপ ইনস্টলের জন্যও দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন অফার। এমনকি বিজ্ঞাপনে বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগোও ব্যবহার করা হচ্ছে।
এসব অ্যাপের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কারিগরি সক্ষমতার অভাব রয়েছে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের। তারা বলছে, বিদেশ থেকে অনলাইন ক্যাসিনো পরিচালিত হওয়ায় এগুলো ঠেকানো সহজ নয়।
ফেসবুকে বুস্ট করা বেশ কয়েকটি অনলাইন ক্যাসিনোর বিজ্ঞাপন পেয়েছে নিউজবাংলা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে এই অনলাইন ক্যাসিনো। তবে এসব ক্যাসিনোর মালিক কারা বা কোথা থেকে পরিচালিত হচ্ছে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে কোনো তথ্য নেই।
কয়েকটি ক্যাসিনোর ফেসবুক পেজে দেয়া রয়েছে ওয়াটসঅ্যাপ নম্বর। এগুলোতে যোগাযোগ করেও তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বরং টাকার বিনিময়ে গ্রুপের সদস্য হওয়ার শর্ত দেয়া হয়েছে। চাওয়া হয়েছে ভোটার আইডি কার্ড, নাম, বয়স, জন্মতারিখ, মোবাইল ফোন নম্বর। এসব তথ্য দিলেই মেলে গ্রুপের সদস্য হওয়ার অনুমতি।
অনলাইনে ক্যাসিনো চালাতে রীতিমতো অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এর নাম বাজি। অ্যাপটি স্মার্টফোনে নামিয়ে জিমেইল আইডি ও ফোন নম্বর দিয়ে আইডি খুললেই ঢোকা যায় অনলাইন ক্যাসিনো দুনিয়ায়। যে অ্যাকাউন্ট খোলা হলো, তাতে বিকাশ, নগদ বা রকেটের মাধ্যমে টাকা ঢুকিয়ে শুরু করা যায় বাজি খেলা বা জুয়া খেলা। বাজি ধরা যায় সর্বনিম্ন ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ‘যত ইচ্ছা’ তত টাকা।
অ্যাপটিতে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টাই চলে জুয়া খেলা। অংশগ্রহণকারীরা যে যার মতো বিভিন্ন দানের ঘর বা আইকন বাজি ধরার পর ঘুরতে শুরু করে ক্যাসিনোর চাকা বা হুইল। হুইলের কাঁটা যে ঘরে থামে, সেই ঘরে যারা বাজি ধরেছিলেন তারা জিতে যান দান। টাকা পান ১০ গুণ, ২০ গুণ, ৪০ গুণ, ৪০০ গুণ, এমনকি ৪০০০ গুণ পর্যন্ত।
সাইবার পুলিশ বলছে, অনলাইন ক্যাসিনোর সাইটগুলোর ডোমেইন দেশের বাইরে এবং নির্ধারিত সময় পর পর এসব সাইটের আইপি (ইন্টারনেট প্রটোকল) ঠিকানা পরিবর্তন করে নিয়ন্ত্রণকারীরা। যে কারণে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মাধ্যমে অনলাইন ক্যাসিনোর কিছু সাইট বন্ধ করা হলেও ফল মিলছে না। এমন শতাধিক সাইট ও অ্যাপস চিহ্নিত করেছে র্যাব।
সারা দেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে অনেকগুলো মামলা হলে র্যাব তদন্তের দায়িত্ব পায় ১০টি মামলায়। এর মধ্যে ৯টির তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র দেয়া হয়ে গেছে। একটির তদন্ত আটকে আছে আদালতের স্থগিতাদেশে।
পাঁচটি ক্লাবে অভিযান দিয়ে শুরু
২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মতিঝিলে চারটি ও গুলশানের একটি ক্যাসিনোতে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান শুরু করে। ২০১ জনকে আটক করে দেয়া নয় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড। বিদেশি মদ, বিদেশি সিগারেট, বিয়ার, হেরোইন, কষ্টি পাথরের মূর্তি এবং ক্যাসিনো সামগ্রী উদ্ধার ও জব্দ করা হয়।
পাঁচটি ক্লাব হলো- ফকিরাপুল ইয়াং ম্যান্স ক্লাব, ওয়ান্ডার্স ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা চিত্তবিনোদন ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া ও গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ।
খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেপ্তার
অভিযান শুরুর প্রথমদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান থেকে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফকিরাপুল ইয়াং ম্যান্স ক্লাবে ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়।
তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় মাদক, অবৈধ অস্ত্র, ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৫০ টাকা ও বিদেশি মুদ্রা। লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করায় তার দুটি অস্ত্রও জব্দ করা হয়।
তার কমলাপুর অফিসে অভিযান চালিয়ে মাদক ও শক দেয়ার ইলেক্ট্রিক মেশিনও জব্দ করা হয়। গুলশান ও মতিঝিল থানায় চারটি মামলা করা হয়। গুলশান থানায় অস্ত্র আইনে মামলাটির অভিযোগপত্রও দিয়েছে র্যাব।
একই দিনে ঢাকার ওয়ান্ডার্স ক্লাবে অভিযান করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তারা হলেন- সাইফুল ইসলাম, তুহিন মুন্সি ও নবীর হোসেন সিকদার।
ওই ক্লাব থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ছাড়াও বিদেশি মদ পাওয়ার কথা জানানো হয়। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মতিঝিল থানায় মামলা হয়।
জি কে শামীম গ্রেপ্তার
২০ সেপ্টেম্বর যুবলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতা ও শীর্ষ ঠিকাদার জি কে শামীমের নিকেতনের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। সাত দেহরক্ষীসহ জি কে শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জি কে শামীমের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিং আইনে গুলশান থানায় তিনটি মামলা হয়।
শফিকুল আলম ফিরোজ গ্রেপ্তার
২০ সেপ্টেম্বর অভিযান চালানো হয় কলাবাগান ক্রীড়া চক্রে। অভিযানে ক্লাবটির সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজকে মাদক, অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ তাসসহ গ্রেপ্তার করা হয। তার বিরুদ্ধে ধানমন্ডি ও গুলশান থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা হয়
এই মামলাতেও র্যাব অভিযোগপত্র দিয়েছে।
ধানমন্ডি ক্লাবে অভিযান
একইদিন ধানমন্ডি ক্লাবে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে ক্লাবটি সিলগালা করা হয়। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্লাবে অভিযান
২১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পাশাপাশি চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্র, হালিশহরের আবাহনী লিমিটেড ও সদরঘাট এলাকায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জুয়া খেলার সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
এনু-রুপনের বাসায় অভিযান
ওয়ান্ডার্স ক্লাবে ক্যাসিনো পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় দুই ভাই এনামুল হক এনু, রুপন ভূঁইয়া ও তার দুই বিশ্বস্ত সহযোগীর বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৫ কোটি ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা, ৭ দশমিক ২০ ভরি সোনা এবং ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র (একটি অবৈধ) উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, ওয়ারী থানাতে সাতটি মামলা হয়। অস্ত্র, মানি লন্ডারিং ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাগুলো করা হয়।
এই মামলাতেও র্যাব অভিযোগপত্র দিয়েছে।
ফু-ওয়াং ক্লাবে অভিযান
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ফু-ওয়াং ক্লাবে অভিযান হয় ২৫ সেপ্টেম্বর। ব্যবস্থাপকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ক্লাব থেকে নগদ ৭ লাখ টাকা, অবৈধ মদ ২ হাজার বোতল, বিয়ার ক্যান ১০ হাজার ও বিপুল পরিমাণ আমদানি নিষিদ্ধ বিদেশি সিগারেট জব্দ করা হয়। তেজগাঁও থানায় মাদক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়।
এই মামলায় র্যা অভিযোগপত্র দিয়েছে।
‘ক্যাসিনো সেলিম’ গ্রেপ্তার
দেশ ত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ৩০ সেপ্টেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাই এয়ারওয়েজের বিমান থেকে অনলাইনে ক্যাসিনো ব্যবসার হোতা সন্দেহে সেলিম প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার দেয়া তথ্যে সেলিমের বাসা ও অফিস থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক, পাসপোর্ট, চেক বই, দেশি ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া সেলিমের তিন সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সেলিম প্রধানকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। এ ছাড়া গুলশানে মাদক ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়।
এই মামলাতেও র্যাব অভিযোগপত্র দিয়েছে।
সম্রাট-আরমান গ্রেপ্তার
৬ অক্টোবর ভোরে র্যাবের অভিযানে যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাট ও এনামুল হক আরমানকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানাধীন সাহেব নগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মনির চৌধুরী নামে একজনের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন তারা।
গ্রেপ্তারের সময় এমরানুল হক আরমানকে মদ্যপ অবস্থায় পাওয়া যাওয়ার পর ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক আইনে তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়।
গ্রেপ্তারের পর সম্রাট ও আরমানকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। সম্রাটের দেয়া তথ্যে ঢাকার কাকরাইল (সম্রাটের অফিস), মহাখালী ডিওএইচএস (বাসা), শান্তিনগরে (ভাইয়ের বাসা) অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সম্রাটের কাকরাইলের অফিস থেকে উদ্ধার করা মাদক, অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ, বন্যপ্রাণীর চামড়া ও শারীরিক নির্যাতনে ব্যবহার করা সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। সম্রাটকে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অফিসে বন্যপ্রাণী চামড়া রাখার দায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়।
সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা করা হয়। এ ছাড়া আরমানের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিরপুরের বাসায় অভিযান করে বিভিন্ন ব্যাংকের ১২টি চেক বই জব্দ করা হয়।
কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম থানায় তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা করা হয়েছে এবং রমনা মডেল থানায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। রমনা থানায় অস্ত্র আইনে মামলার অভিযোগপত্র দিয়েছে র্যাব।
পাগলা মিজান গ্রেপ্তার
২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর র্যাবের অভিযানে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি ও সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজানকে দেশত্যাগের সময় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর মিজানকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। মিজানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার লালমাটিয়া অফিস ও আওরঙ্গজেব রোডের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। মিজানের আওরঙ্গজেব সড়কের বাসা থেকে নগদ ২ লাখ টাকা, ৬ কোটি ৫৮ লাখ ৯০ হাজার টাকার চেক, এক কোটি টাকার এফডিআরসহ অস্ত্র এবং গুলি উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় শ্রীমঙ্গল থানায় অস্ত্র আইনে ও মোহাম্মদপুরে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়।
কমিশনার রাজীব গ্রেপ্তার
১৯ অক্টোবর চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলদারিত্ব, কিশোরগ্যাং নিয়ন্ত্রণ ও মাদক সেবন করার অভিযোগে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব। রাজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার দেয়া তথ্যে মোহাম্মদপুর বাসা ও অফিস অভিযান পরিচালনা করে বাসা থেকে নগদ ৩৩ হাজার টাকা, ৫ কোটি টাকার চেক, বিদেশি মদ, পাসপোর্টসহ অস্ত্র এবং গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
তার বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা হয়। অস্ত্র আইনে মামলাটির অভিযোপত্র দিয়েছে র্যাব।
কাউন্সিলর ময়নুল গ্রেপ্তার
চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, মাদক কারবার ও জুয়ার আসর পরিচালনার অভিযোগে ৩১ অক্টোবর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে ময়নুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার অফিস থেকে অস্ত্র ও মাদক জব্দ করা হয়। পরে তার তথ্যে হাটখোলা রোডের ‘গ্লোব নিবাসে' অভিযান চালিয়ে মাদক উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ওয়ারী থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা হয়।
সম্রাটের সহযোগী জাকির গ্রেপ্তার
ইসমাইল হোসেন সম্রাটের ক্যাসিনো ব্যবসার সহযোগী হিসেবে নাম আসা জাকির হোসেন আত্মগোপন করে ভোলার চরনোয়াবাদ এলাকায় চলে যান। ২৯ অক্টোবর অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে অস্ত্র ও মাদক জব্দ করা হয়। ভোলা সদর থানায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা হয়।
আরও পড়ুন:সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।
এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।
এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’
সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, ইসরাইলের নৃশংসতার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ওই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।
বাংলাদেশে সফররত ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. মাহমুদ সিদকি আল-হাব্বাশের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকাল মঙ্গলবার এক বৈঠকে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। আজ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানা অনুযায়ী দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি সমর্থন জানান।
ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. আল-হাব্বাশ বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের স্থায়ী সমর্থনের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্য আরও সুদৃঢ় করার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।
ফিলিস্তিনিদের নিরন্তর সমর্থনের জন্য দেশটির প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি এ বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বৃহত্তর ঐক্যের ওপরও জোর দেন।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির আমন্ত্রণে ড. আল-হাব্বাশ তিন দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।
মন্তব্য