গ্রাফিতি বা দেয়ালচিত্র আঁকার মধ্য দিয়ে মনের চাপ কমানোর কথা কি আগে শুনেছেন? অথবা শুধু একটি গলি, যেটিকে পরিণত করা হয়েছে কেবল দেয়ালচিত্র আঁকার জন্য নির্দিষ্ট জায়গায়- শুনেছেন কি সেই জায়গার নাম?
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড রাজ্যের বাল্টিমোর নগরীতে এই ‘গ্রাফিতি অ্যালি’ বা ‘দেয়ালচিত্রের গলি’র অবস্থান। প্রাচীন এই মার্কিন নগরী বহু কারণেই বিখ্যাত। তবে যে রাজ্যে দেয়ালে সামান্য আঁকিবুঁকিতেও পকেট থেকে খসতে পারে অন্তত আড়াই হাজার ডলার বা ক্ষেত্রবিশেষে আরও বেশি। সঙ্গে কারাদণ্ডও ভোগ করতে হতে পারে।
সেখানে কীভাবে একটি গলির সবগুলো দেয়াল পরিণত হলো কেবল গ্রাফিতি আঁকার জন্য?
গ্রাফিতি কী, সেটা কমবেশি জানা থাকলেও আবার ঝালিয়ে নেয়া যেতে পারে। জনগণের দৃষ্টিসীমায় যেকোনো দেয়াল, সড়ক, বাড়ির দরজায় কিছু এঁকে রাখাকেই গ্রাফিতি বলা হয়। ধারণা করা হয়, প্রাচীন মিসর বা গ্রিসে এর জন্ম হাজার বছর আগে। (সূত্র:উইকিপিডিয়া)
যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণত প্রতিবাদের ভাষা হিসেবেই গ্রাফিতির ব্যবহার হয়ে আসছে। বাল্টিমোরের গ্রাফিতি গলিকে ধারণ করছে ‘গ্রাফিতি ওয়্যারহাউস’ নামে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। যারা মূলত স্ট্রিট আর্টিস্ট বা পথশিল্পীদের নিয়ে কাজ করে থাকে।
বহুদিন থেকেই বাল্টিমোরের ওই জায়গাটি ছিল অপরাধী চক্রের দখলে। বিভিন্ন মাদক কারবারি দলের সদস্যরাই সেখানে গ্রাফিতি আঁকতেন। মানতেন না কোনো বিধিনিষেধ। এরই মধ্যে কিছু গ্রাফিতির দেখা মেলে যেগুলো ছিল দারুণ নান্দনিক। মেরিল্যান্ডের আর্টস অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট ইনস্টিটিউটসংলগ্ন হওয়ায় গলিটি সহজেই চোখে পড়ে যায় গ্রাফিতি ওয়্যারহাউস কর্তৃপক্ষের।
২০০৫ সালে ওয়্যারহাউস তাদের স্টুডিও সরিয়ে নেয় ঠিক গ্রাফিতি অ্যালের সামনে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকেও নিয়ম করা হয়, মেরিল্যান্ডে কেউ গ্রাফিতি আঁকতে চাইলে সোজা চলে যাবেন ওখানে। যত খুশি বা যা খুশি আঁকা হোক না কেন, মানতে হবে না কোনো নিয়ম। পড়তে হবে না আইনের বেড়াজালে।
এখন এই গলিতে গ্রাফিতি আঁকতে আসেন বহু দূরের রাজ্যের বাসিন্দারা। মন খুলে এঁকে যান যা ইচ্ছা।
যা খুশি আঁকার বিষয়টি একটু ব্যাখ্যা করা যাক। গলিতে গিয়ে চোখে পড়ল যুক্তরাষ্ট্রের পপ তারকা বিয়ন্সের গ্রাফিতি। সঙ্গে রয়েছে বেশ কঠিন কিন্তু সরেস কোনো বার্তা। অথবা হিজাব পরিহিত মুসলিম নারী বন্দুক তাক করে রয়েছেন আপনারই দিকে। স্প্রে পেইন্টে নিচে লেখা ‘নো রুলস্’। যার বাংলা করলে বলা যেতে পারে ‘কোনো নিয়ম নয়’।
আছে বিখ্যাত কার্টুন চরিত্রে বাগস বানির বিশাল গ্রাফিতি। কিন্তু বাগসকে পরিণত করা হয়েছে আবেদনময়ী নারীতে। কারণ হিসেবে শিল্পী নিচে লিখে গেছেন, ‘শরীরই তো সবকিছু, তাই বাগসের এই দশা’।
ইংরেজি ‘এল’ আকৃতির এই গলির পুরোটাই রঙের ছড়াছড়ি। সঙ্গে আছে রঙের গন্ধ। গ্রাফিতি আঁকতে মূলত স্প্রে পেইন্ট ব্যবহার করা হয়। সঙ্গে ম্যাগাজিনের কাটা অংশ থেকে শুরু করে পানি নিরোধক মেকআপ ব্যবহার হয় সবকিছুই।
সেখানকার ময়লা ফেলার বাক্সগুলোতেও গ্রাফিতি আঁকা। বাদ পড়েনি সিউওয়্যারেজ পাইপ, মিটার বক্স, সুইচ বোর্ড বা রাস্তার একটি অংশও।
এখানে কিন্তু প্রতি সপ্তাহে পাল্টে যায় গ্রাফিতিগুলো। কখনও কখনও পাল্টে যায় এক দিনের ভেতরেই। ছুটির দিনে গ্রাফিতি অ্যালিতে দেখা মিলতে পারে শখের সংগীত শিল্পীর। এসেছেন দারুণ রঙিন এই জায়গায় মিউজিক ভিডিওর শুটিং করতে।
‘বি’ নামের এক শিল্পী জানান বেশির ভাগ শিল্পী এখানে আসেন মনের চাপ কমাতে। গ্রাফিতির সঙ্গে জুড়ে দেয়া বার্তা পছন্দ না হলে পাল্টে দিতে পারেন যে কেউ। কিন্তু চেষ্টা করা হয় সার্বিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে।
মনের কী কথা প্রকাশ করতে ইচ্ছা করছে? ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন সরকারের ওপর? কোনো ব্যাপারই না। চলে আসুন বাল্টিমোরের গ্রাফিতি অ্যালিতে। এঁকে বা লিখে যান সবকিছু। কোনো সমস্যা নেই।
গভীর রাতে ডিজে পার্টি বা ব্রেক ডান্স গ্রুপ নিয়ে চলতে পারে জন্মদিনের উৎসবও। যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পপ্রেমীদের মতে, জায়গাটি এই দেশের একটি 'লুকোনো রতনের' মতোই। (সূত্র: ইয়েল্প)
এটি শুধু শিল্পবোদ্ধাদেরই নয়; টেনে আনতে পারে যেকোনো পর্যটককেই।
আরও পড়ুন:প্রবাসে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি কর্মীদের ভোগান্তি নতুন কিছু নয়। প্রতি বছরই অসংখ্য স্বপ্ন ঝরে পড়ে শুধু সময়মতো বিএমইটি বহির্গমন ছাড়পত্র না পাওয়ার কারণে। তবে বর্তমানে ঘরে বসেই কোনো প্রকার ভ্রমণ ও বাড়তি খরচ ছাড়া স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রবাসীরা নিতে পারবেন এই বহির্গমন ছাড়পত্র।
২০২৩ সাল থেকে এমন সেবাই দিয়ে আসছে বিশ্বের একমাত্র ওয়ান স্টপ অভিবাসন সেবা প্রদানকারী অ্যাপ ‘আমি প্রবাসী’। চলুন জেনে নিই, কীভাবে বিএমইটি বহির্গমন ছাড়পত্রের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন ঘরে বসেই।
ক্লিয়ারেন্সের আবেদন করার জন্য প্রথমে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন ও প্রাক বহির্গমন ওরিয়েন্টেশন (পিডিও) কোর্স সম্পন্ন করতে হবে আগ্রহী প্রার্থীকে। এরপর তিনি ‘আমি প্রবাসী অ্যাপ থেকে সরাসরি বহির্গমন ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর রিক্রুটিং এজেন্সির (RA) মাধ্যমে আবেদন করলে তারা নিজস্ব পোর্টাল থেকে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করবে।
বহির্গমন ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হলে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর, প্রাক বহির্গমন সার্টিফিকেট বা শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, পাসপোর্ট, ভিসা, ৩০০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে করা চুক্তিপত্র, নারীদের ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট দেশে গমনের ক্ষেত্রে স্বামী বা অভিভাবকের অনুমতিপত্র (স্ট্যাম্প পেপারে), ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কাগজপত্র, ওয়ান স্টপ ফরম (শুধু ওয়ান স্টপ সেবা গ্রহণকারী প্রার্থীদের জন্য), মেডিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট, নির্দিষ্ট কিছু দেশের জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত কিছু নথিপত্র এবং চাকরির চুক্তিপত্র (শুধু রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য প্রযোজ্য) জমা দিতে হবে।
ঘরে বসে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাইলে প্রথমেই প্রার্থীদের আবেদন ফি বাবদ ৫০ টাকা দিতে হয়। এরপর প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র নিয়ে ইন্টারভিউর জন্য বিএমইটি অফিসে উপস্থিত হতে হয়। আবেদন জমা দেওয়ার পর এটি বিএমইটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে পর্যায়ক্রমে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।
ওয়ান স্টপ সেবা গ্রহণকারী বা নিজ উদ্যোগে আবেদন করা প্রার্থীদের আবেদন চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে সরকারি ফি ও আবেদন চার্জ পরিশোধ করতে হয় তাদের। পেমেন্ট সম্পন্ন হওয়ার পর ব্যক্তি কিংবা রিক্রুটিং এজেন্সি উভয়েই বিএমইটি স্মার্ট বহির্গমন ছাড়পত্র কার্ড ডাউনলোড করতে পারেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর থেকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পাশাপাশি আরও বাংলাদেশি কর্মী নিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আমিরাতের দুবাইয়ে দুই দিনব্যাপী ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে অংশগ্রহণের পাশাপাশি দেশটির বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আহ্বান জানান।
বৈঠকগুলোতে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়, বাণিজ্য ও ব্যবসার সম্প্রসারণ, চট্টগ্রাম বন্দরে আমিরাতি বিনিয়োগ পরিকল্পনা এবং ক্রীড়া ও শিক্ষা খাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
তিনি জানান, আমিরাতি কোম্পানিগুলোকে তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের আমন্ত্রণ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রী থানি বিন আহমেদ আল জেয়ৌদি এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করলে ড. ইউনূস আমিরাতি ব্যবসার জন্য বিশেষ শিল্প পার্ক স্থাপনের বিষয়ে নীতিগত সম্মতি দেন।
অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রীকে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশকে একটি ‘হালাল পণ্য উৎপাদন কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে, যেখানে কম খরচে শ্রম সুবিধা পাওয়া যাবে।
এরপর আগামী কয়েক মাসের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রতিনিধিদল নিয়ে বাংলাদেশ সফর করতে চান বলে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রী।
প্রধান উপদেষ্টার এ সফরে তার সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী ও জ্যেষ্ঠ সচিব লামিয়া মোরশেদ।
ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে অংশগ্রহণ শেষে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস।
দুবাই বিমানবন্দরে শুক্রবার তাকে বিদায় জানান সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রীড়ামন্ত্রী ড. আহমদ বেলহৌল আল ফালাসি।
আরও পড়ুন:প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে শ্রম ও অভিবাসন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করা হবে।
ঢাকায় বৃহস্পতিবার প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ড. আসিফ নজরুল সৌদি আরবের মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার ড. আবদুল্লাহ আবুথনাইন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার ড. নাসের বিন আবদুল আজিজ আল দাউদের সঙ্গে রিয়াদে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উল্লিখিত কথা বলেন।
বৈঠকগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করা, শ্রম বাজারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মীদের অধিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
ড. আসিফ নজরুল সৌদি আরবে ৩০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মীকে সুযোগ দেওয়ার জন্য সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি সৌদি কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শনের জন্য আমন্ত্রণ জানান এবং কিছু নির্দিষ্ট কেন্দ্রকে (টিটিসি) দক্ষতা স্বীকৃতি দিতে বিবেচনার আহ্বান জানান।
সৌদি পক্ষ এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেয় এবং সম্ভাব্য টিটিসি মূল্যায়নের সম্মতি জানায়।
বৈঠকে মূলত উচ্চ ইকামা নবায়ন ফি এবং এর ফলে কর্মীদের চাকরিহীন হওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়।
সৌদি পক্ষ জানায়, শ্রম আইন সংস্কার করা হচ্ছে, যাতে উভয় পক্ষের অধিকার সংরক্ষিত হয়। এ ছাড়া কর্মীরা যাতে বাংলাদেশ থেকে রওনা হওয়ার আগে তাদের নিয়োগ চুক্তি নিশ্চিতভাবে পায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়।
এ ছাড়াও ঢাকায় সৌদি দূতাবাসে পেশাদার সার্টিফিকেট সত্যায়ন সংক্রান্ত সমস্যা উত্থাপন করা হয়। কালচারাল অ্যাটাচের অনুপস্থিতির কারণে এই প্রক্রিয়ায় দেরি হচ্ছে, তাই এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ সরকার সৌদি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায়। এৎই সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে বলে নিশ্চিত করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
সৌদি কর্মকর্তারা জানান, অবৈধ শ্রমিক সমস্যা এবং নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়ম দূর করতে শিগগিরই একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। তারা এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের একটি যৌথ টিম গঠনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানায়।
বৈঠকে গৃহকর্মী প্রশিক্ষণের মানোন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়, যেখানে বাংলাদেশ প্রশিক্ষণের সময়কাল সংক্ষিপ্ত করে গুণগত মান উন্নত করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
ড. নজরুল সৌদি আরবের মেগা প্রকল্পগুলোতে আরও দক্ষ কর্মী নিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সৌদি ভাইস মিনিস্টারকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার ড. নাসের বিন আবদুল আজিজ আল দাউদের সঙ্গে পৃথক এক বৈঠকে বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে নিরাপত্তা ও অভিবাসন সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ সৌদি আরবে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করায় সৌদি সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে।
বৈঠকে অনিয়মিত অভিবাসন রোধ এবং বৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়া উন্নত করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
উপদেষ্টা অনিয়মিত অভিবাসীদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে সৌদি সরকারের সহায়তা চেয়ে অনুরোধ জানান। সৌদি ভাইস মিনিস্টার বিষয়টি পর্যালোচনার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন:প্রতি বছর হাজারো বাংলাদেশি উন্নত ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে অভিবাসন করেন। কিন্তু বাস্তবতা অনেক সময়ই কঠিন।
প্রযুক্তিগত ও কারিগরি দক্ষতার ঘাটতি এবং প্রশিক্ষণের অভাব বাংলাদেশি শ্রমিকদের আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে টিকে থাকার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বপ্ন ও বাস্তবতা
নোয়াখালীর ৩০ বছর বয়সী যুবক রফিক সৌদি আরবে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে গিয়েছিলেন পরিবারের জন্য ভালো কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু বাস্তবতা ছিল কঠিন। প্রযুক্তিগত ও কারিগরি দক্ষতার অভাবে অন্যান্য দেশের সহকর্মীদের তুলনায় অনেক কম বেতনে কাজ করতে হতো তাকে।
রফিক বলেন, ‘একই কাজ করলেও আমার সহকর্মীরা আমার প্রায় দ্বিগুণ বেতন পেত। আমি অধিকাংশ মেশিন পরিচালনার নিয়ম জানতাম না, যা আমার কাজের ক্ষেত্রে বড় সমস্যা তৈরি করেছিল।’
বরিশালের ২৮ বছর বয়সী নারী সালমা মালয়েশিয়ায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করতে গিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি যে বাড়িতে কাজ করতাম, সেখানে তারা আধুনিক গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের প্রত্যাশা করত। কিন্তু আমি আগে কখনও এসব ব্যবহার করিনি।’
সালমা জানান, প্রায়ই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পড়তে হতো তাকে। যেখানে ফিলিপাইনের গৃহকর্মীরা উচ্চ বেতন পেত, সেখানে সালমা অনেক কম বেতনে কাজ করতেন।
ঢাকার বাসিন্দা ২৬ বছর বয়সী রনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি দোকানে সুপারভাইজার হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি লক্ষ করেন, তার সহকর্মীরা তার তুলনায় অনেক দক্ষ।
রনি বলেন, ‘আমার পাকিস্তান ও ভারতের সহকর্মীরা দ্রুত কাজ শেষ করে ফেলত। তারা প্রযুক্তি ব্যবহার করে যোগাযোগ, বিক্রয়, নগদ লেনদেন এবং দোকান ব্যবস্থাপনায় অনেক দক্ষ ছিল, যেখানে আমাকে সব কাজ হাতে-কলমে করতে হতো।’
দক্ষতার ঘাটতির প্রভাব
বিদেশে অবস্থানরত হাজারো বাংলাদেশি কর্মীর বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তোলে উল্লিখিত গল্পগুলো। প্রতি বছর অসংখ্য বাংলাদেশি অভিবাসী দক্ষতার অভাবে চাকরি হারান, ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হন এবং অনেক ক্ষেত্রে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন।
আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম প্রধান জনশক্তি রপ্তানিকারক হলেও দক্ষতার ঘাটতি একটি বড় সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। অনেক বাংলাদেশি প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ না নিয়েই যাত্রা করেন বিদেশে।
দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশি অভিবাসীরা অধিক পারিশ্রমিক পেতে পারেন, যা রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াবে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ২০২৪ সালের বিশ্ব অভিবাসন প্রতিবেদন ও ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি কর্মীরা গড়ে প্রতি মাসে ২০৩.৩৩ ডলার আয় করেন, যেখানে ফিলিপাইনের কর্মীরা ৫৬৪.১ ডলার, ভারতীয় কর্মীরা ৩৯৫.৭১ ডলার, পাকিস্তানি কর্মীরা ২৭৫.৭৪ ডলার এবং চীনা কর্মীরা ৫৩২.৭১ ডলার আয় করেন।
এ ছাড়াও ৬০ শতাংশ বাংলাদেশি অভিবাসী স্বল্প দক্ষতার কাজ করে থাকেন, যা অন্যান্য দেশের দক্ষ কর্মীদের তুলনায় তাদের আয় কমিয়ে দেয়।
দক্ষতা উন্নয়নের পথ
বিশ্বের প্রথম ডিজিটাল অভিবাসন প্ল্যাটফর্ম ‘আমি প্রবাসী’ প্রতিষ্ঠার পর থেকে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। তাদের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে এরই মধ্যে সাড়ে তিন লাখের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে শুধু ২০২৪ সালেই ১ লাখের বেশি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
‘আমি প্রবাসী’র প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক ই. হক বলেন, ‘বাংলাদেশের বৈদেশিক আয়ের অন্যতম চালিকা শক্তি হলো অভিবাসন খাত। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, শুধু নভেম্বর মাসেই আমরা ২.১৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছি, যা বার্ষিক ১৩.৪৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
‘যদি আমরা দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা বাড়াতে পারি, তাহলে এই আয় সহজেই দ্বিগুণ বা তারও বেশি হতে পারে। আমরা শুরু থেকেই এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি এবং অভিবাসীদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করেছি।’
প্রশিক্ষণের প্রভাব
‘আমি প্রবাসী’র বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২৪ অনুযায়ী, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে ড্রাইভিং, কম্পিউটার অপারেশন এবং গৃহপরিচারিকার কাজ ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রশিক্ষণ কোর্স। ২০২৪ সালে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ১৭ হাজার ৭৯৯ জন। অন্যদিকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ১৬ হাজার ৭৩২ জন এবং গৃহকর্মীর কাজ শিখেছেন ৯ হাজার ৩২৩ জন।
বাংলাদেশি অভিবাসীদের আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে সফল হওয়ার জন্য দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম। সরকার, বেসরকারি সংস্থা এবং অভিবাসীদের নিজেদের সহযোগিতায় এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা সম্ভব।
দক্ষতার ঘাটতি পূরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে আরও সম্মানজনক স্থান অর্জন করতে পারে এবং রেমিট্যান্স আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত অবৈধ অভিবাসনবিরোধী আইনে অনুমোদন দিয়েছে রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস।
সন্দেহভাজন বিদেশি অপরাধীদের বিচারপূর্ব কারাবাসের মেয়াদ বাড়ানোর একটি বিলও অনুমোদন করেছে কংগ্রেস।
আইনসভা কংগ্রেসের অনুমোদন লাভের পর সিনেটে ৬৫-৪৫ ভোটে অবৈধ অভিবাসনবিরোধী আইনটি সহজেই পাস হয়।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি বৃহস্পতিবার এ খবর জানায়।
এদিকে দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানায়, কংগ্রেসের অনুমোদন লাভের পর অবৈধ অভিবাসীবিরোধী ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে চার বাংলাদেশিসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত কারও কাছেই বৈধ কাগজপত্র ছিল না। এদের মধ্যে একজন এথেন্সের ও অন্যজন ভেনেজুয়েলার নাগরিক। তারা দুজনই খুনের মামলার আসামি।
প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন এক এক্স বার্তায় বলেন, ‘অবৈধ অভিবাসীদের অবশ্যই আটক করা হবে এবং তাদের কখনও আমাদের দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।’
মাইক জনসন বলেন, ‘আমেরিকানরা নিরাপত্তা দাবি করে এবং নিরাপত্তা দাবির অধিকারও তাদের রয়েছে।’
নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চার বাংলাদেশিকে।
অভিবাসী ধরপাকড়ে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে স্কুল-গির্জা-হাসপাতালেও।
সংবেদনশীল এসব স্থানে অভিবাসী আটক কার্যক্রমের ওপর থেকে এক দশকের বেশি সময়ের নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে ট্রাম্প প্রশাসন। এতে সেসব স্থানে ধরপাকড়ে আর কোনো বাধা নেই। এ সিদ্ধান্তে আতঙ্কিত অভিবাসীরা।
প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কালবিলম্ব করেননি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শপথ নিয়েই শক্ত হাতে অবৈধ অভিবাসী দমন শুরু করেছেন তিনি।
ধরপাকড় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নানা অঙ্গরাজ্যে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। এর মধ্যে চার বাংলাদেশিও রয়েছেন ।
নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে ওই চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট (আইস)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পরিচয়পত্র দেখাতে অস্বীকৃতি জানানোয় তাদের গ্রেপ্তার করে সাদা পোশাকের পুলিশ। এ ঘটনার পর বাঙালি অধ্যুষিত এলাকার সড়ক ও রেস্তোরাঁয় লোকজনের ভিড় নেই বললেই চলে। চরম আতঙ্কে রয়েছেন বৈধ কাগজপত্রহীন অভিবাসীরা।
এদিকে এখন থেকে স্কুল, গির্জা এমনকি হাসপাতালগুলোতেও অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ।
আইস এবং কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন সংস্থাগুলোর ওপর গেল এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এসব স্থানে অভিযান পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞা ছিল।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পক্ষ থেকে এ নিষেধাজ্ঞা বাতিল করাসহ জারি করা হয় নতুন নির্দেশনা।
এতে বলা হয়, স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে যাতে কেউ লুকিয়ে না থাকতে পারে, তাই এ নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা হয়।
অপর নির্দেশনায় বলা হয়, বৈধ কাগজপত্র না থাকা কেউ গ্রেপ্তার হলে সেই ব্যক্তি যদি যুক্তরাষ্ট্রে দুই বছরের বেশি সময় ধরে তার অবস্থান করার প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে তাকে দ্রুতই দেশ থেকে বের করে দিতে পারবে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে গ্রেপ্তারের অনুমতি দেওয়ার ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে বলে সতর্ক করেছেন আইনজীবীরা।
সেন্টার ফর ল’ অ্যান্ড সোশ্যাল পলিসি এক বিবৃতিতে জানায়, এ পদক্ষেপের কারণে অভিবাসীদের পরিবার ও তাদের সন্তানের পাশাপাশি আমেরিকান শিশুরাও মারাত্মক মানসিক চাপের সম্মুখীন হতে পারে।
এরই মধ্যে মেক্সিকো সীমান্তে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। নিশ্চিত করা হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এ আদেশের আওতায় অভিবাসীদের বৈধতা দেওয়ার একটি প্রকল্পও বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষীরা।
আরও পড়ুন:যুদ্ধবিধস্ত লেবানন থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ৪৭ বাংলাদেশি।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে পৌঁছান তারা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বৈরুতের বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহযোগিতায় তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
ফেরত আসা এসব নাগরিককে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম কর্মকর্তারা।
আইওএমের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা পকেটমানি, কিছু খাদ্যসামগ্রী ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
বিমানবন্দরে ফিরে আসা বাংলাদেশিদের খোঁজ নেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এখন পর্যন্ত একজন বাংলাদেশি বোমা হামলায় নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
এ পর্যন্ত ১৯ ফ্লাইটে ১ হাজার ২৪৬ বাংলাদেশিকে লেবানন থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন করা হয়।
আরও পড়ুন:রেমিট্যান্স প্রবাহে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অক্টোবর-নভেম্বরে তুলনামূলক কম রেমিট্যান্স এলেও ডিসেম্বরের শুরুতেই বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম এই খাতে সুবাতাস বইছে।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দেশে ৬১ কোটি ৬৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ৮ কোটি ৮১ লাখ ডলার প্রবাসী আয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম সাতদিনে দেশে এসেছে ৬১ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স। আর গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রেমিট্যান্স এসেছিল ৫০ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ১১ কোটি ডলার।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮ কোটি ৫২ লাখ ২০ হাজার ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে চার কোটি ৫৮ লাখ ২০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩৮ কোটি ৩৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২০ লাখ ৩০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে উঠা-নামার প্রবণতা দেখা গেছে। গত জুনে ২৫৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসার পর জুলাইয়ে তা কমে দাঁড়ায় ১৯১ কোটি ডলারে, যা গত দশ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ ও দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেমিট্যান্সের পালে ফের হাওয়া লাগতে শুরু করে।
আগস্টে দেশে রেমিট্যান্স আসে ২২২ কোটি ডলার এবং সেপ্টেম্বরে আসে ২৪০ কোটি ডলার, যা চলতি অর্থবছরে এক মাসে সর্বোচ্চ।
এরপর অক্টোবরে (২৩৯ কোটি ডলার) ফের রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা পড়ে, যা নভেম্বরেও (২১৯ কোটি ডলার) অব্যাহত থাকে। তবে ডিসেম্বরে ফের ঊর্ধ্বমুখি প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য