হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর এক বছর হলেও নড়ছে না তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হওয়া হত্যা মামলার বিচার। পুলিশের তদন্ত সংস্থা পিবিআই মামলাটির প্রতিবেদন ১২ এপ্রিল আদালতে জমা দিলেও এখনও শুরু হয়নি বিচার কার্যক্রম।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান আহমদ শফী। এর আগের দুই দিন চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় হাঙ্গামার ঘটনা ঘটে। মাদ্রাসায় বাবুনগরীর অনুসারীরা এসময় হেফাজতের আমিরের কক্ষে ভাঙচুর চালিয়ে তাকে নানা হুমকি-ধমকি দিয়েছিলেন বলে তার স্বজনরা অভিযোগ করেছেন।
শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর প্রায় তিন মাস পর চট্টগ্রাম জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শিবলু কুমার দের আদালতে আহমদ শফীকে মানসিক নির্যাতন করে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ এনে মামলা করেন তার শ্যালক মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়।
আল্লামা শফীর এক নাতনির লেখা পুস্তিকায় বলা হয়েছে, আল্লামা শফীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা ছাড়াও তার চিকিৎসায় বাধা দেয়া হয়েছে। অক্সিজেনের নল কেটে ফেলা হয়েছে, এমনকি অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে দেয়া হয়নি। আর এ কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
হাটহাজারী মাদ্রাসায় হাঙ্গামার পর হেফাজতের সে সময়ের আমির শাহ আহমেদ শফীকে যখন হাসপাতালে আনা হয়, তখনই তার জীবন ছিল সংকটাপন্ন। ফাইল ছবি
পুলিশের তদন্ত সংস্থা পিবিআই তদন্ত করে ‘অপরাধজনিত নরহত্যার’ অভিযোগ এনে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। গত ১২ এপ্রিল আদালতে জমা দেয়া প্রতিবেদনে ৪৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে শফীর পর হেফাজতের আমির হওয়া জুনায়েদ বাবুনগরীর নাম ছিল। তিনি মারা গেছেন।
দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি
আল্লামা শফীকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে এই ঘটনার উপযুক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার দুই দিন পর গত ১৪ এপ্রিল মন্ত্রী ঢাকায় তার বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে কথা বলেন বিষয়টি নিয়ে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মওলানা শফী সাহেব আমার নির্বাচনী এলাকার ও আমার পাশের ইউনিয়নের একজন আলেম ছিলেন। তার মতাদর্শ নিয়ে নানা কথা থাকলেও মানুষ হিসেবে তিনি ছিলেন সজ্জন। যারা মামলা করেছেন, তারাও আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষ। আমি চাই, আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষ মওলানা শফী সাহেবকে যারা নির্যাতন করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে, তাদের উপযুক্ত দৃষ্টান্তমূলক বিচার হোক।’
আল্লামা শফী চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার সাবেক মহাপরিচালকও ছিলেন। তিনি কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড আল হাইয়াতুল উলইয়ার চেয়ারম্যান ও আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত বাংলাদেশের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।
আহমদ শফী আলোচনায় আসেন ২০১০ সালে নারীনীতি বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে হেফাজতে ইসলাম গঠন করে।
তবে এই সংগঠনটি তোলপাড় ফেলে দেয় ২০১৩ সালে। সে সময় মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গড়ে উঠা শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের বিরোধিতা করে সংগঠনটি ঢাকা অবরোধ ডাকে ৫ মে।
মতিঝিলে সমাবেশ করে সেখান থেকে সরে যেতে অস্বীকৃতি জানানোর পর রাতে সেখানেই অবস্থান করে হেফাজত সরকার পতনের দাবি তোলে। রাতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবির যৌথ অভিযানে তারা শাপলা চত্বরের দখল ছাড়ে।
এরপর শুরু হয় নজিরবিহীন গুজব। ওই রাতে হাজার হাজার মানুষকে হত্যার অবাস্তব অভিযোগ তুলে শেষ পর্যন্ত একজনেরও নাম দিতে ব্যর্থ হয় হেফাজত। আর আল্লামা শফী এক পর্যায়ে সরকারের সঙ্গে দূরত্ব ঘুঁচিতে আনেন। কওমিপন্থিদের প্রধান দাবি দাওরায়ে হাদিসকে ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্সের সমমানের স্বীকৃতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার হাতেই তুলে দেন।
তবে আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর হেফাজত আবার সরকারবিরোধী অবস্থানে ফিরে যায়। গত মার্চ ও এপ্রিলের শুরুতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের নানাস্থানে ব্যাপক সহিংসতা চালায় নেতা-কর্মীরা। পরে ধরপাকড় শুরু হলে হেফাজত ‘সমঝোতায়’ মরিয়া হয়ে উঠে।
এর মধ্যে জুনায়েদ বাবুনগরীর মৃত্যু হলে সংগঠনটি কওমিপন্থিদের মধ্যেও গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে অনেকাংশে।
আল্লামা আহমদ শফীর জন্ম ১৯২০ সালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার পাখিয়াটিলা গ্রামে। ১৯৪১ সালে তিনি ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখান থেকে দাওরায়ে হাদিস শেষ করেন ১৯৪৬ সালে হাটহাজারীতে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠানের মজলিসে শূরার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাপরিচালক পদে দায়িত্ব পান। ২০০৫ সালে তিনি কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড-বেফাকের সভাপতি নির্বাচিত হন।
ব্যক্তিগত জীবনে আল্লামা শপীর স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়ে, নাতি, নাতনি রয়েছে।
আরও পড়ুন:আগামী রবিবারের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের অস্থায়ী (টিএলআর) শ্রমিকরা তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন।
রাজধানীর রেলভবনে সোমবার টিএলআর কর্মচারীদের পক্ষ থেকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলাম আন্দোলনরত টিএলআর শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ২৩ মার্চের মধ্যে পরিশোধের আশ্বাস দেন।
সাংবাদিকদের ব্রিফকালে তিনি বলেন, ইন্টিগ্রেটিড বাজেট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম (আইবাস) সংক্রান্ত জটিলতার কারণে রেলওয়ের টিএলআর শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে সমস্যা ছিল। সে সমস্যা সমাধানে অর্থ বিভাগ ও মন্ত্রণালয় পর্যায়ে অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আশা করা যাচ্ছে, আগামী রবিবারের মধ্যে টিএলআর শ্রমিকদের বকেয়া বেতন তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে।’
এপ্রিল থেকে তাদের বেতন প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করা সম্ভব হবে বলেও জানান সচিব ফাহিমুল।
তার এ আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে টিএলআর শ্রমিকরা তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তবে রবিবারের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধ করা না হলে তারা পুনরায় আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানান।
ব্রিফিংকালে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেনসহ রেলপথ মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং টিএলআর শ্রমিকদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বক্তব্য দেন।
মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ এবং রাজশাহীর পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম।
সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় হওয়া মামলা ৩০ দিনের মধ্যে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরে হাইকোর্টের রায় বহাল রয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তৎকালীন সময়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিলটি রাষ্ট্রপক্ষ সোমবার প্রত্যাহারের আবেদন করে।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বিভাগ লিভ টু আপিলটি খারিজের আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ। রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আবদুল কাইয়ুম, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক ও ব্যারিস্টার কামারুন মাহমুদ দীপা।
আজকের এ আদেশের ফলে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলা ৩০ দিনের মধ্যে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করে বিচারে বাধা রইল না বলে জানান ব্যারিস্টার আবদুল কাইয়ুম।
প্রেক্ষাপট
এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর স্বামীকে আটকে রেখে নারীকে (২০) ধর্ষণের ঘটনায় ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন।
ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে যান। তবে তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র্যাব।
আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেন। তাদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় আটজন আসামির মধ্যে ছয়জনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়। ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পুলিশ।
সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি অপহরণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযোগ গঠন করেন।
একই আদালতে ২০২২ সালের ১১ মে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা চাঁদাবাজি ও ছিনতাই মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়।
একপর্যায়ে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এ মামলার বিচার চেয়ে বাদী হাইকোর্টে রিট করেন। সে রিটের রুলের শুনানি শেষে ২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর এক হাইকোর্ট বেঞ্চ ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলা ৩০ দিনের মধ্যে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
আরও পড়ুন:চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) নিবন্ধিত তালিকা থেকে ২০১৩ সালে সাপ্তাহিক ‘একতা’ পত্রিকার নাম বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল শুনানি চলাকালে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ দেন।
এ আদেশের ফলে কয়েক দশকের পুরোনো সাপ্তাহিকটি প্রকাশে আর কোনো আইনি বাধা থাকল না।
রিটকারীর পক্ষে আইনজীবী হাসান তারিক চৌধুরী আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
তিনি বলেন, “২০১৩ সালে ডিএফপির তালিকাভুক্ত গণমাধ্যমের তালিকা থেকে সাপ্তাহিক ‘একতা’ পত্রিকার নাম বাদ দেওয়া হয়। মূলত সমালোচনা সহ্য করতে না পেরে অন্যায়ভাবে ওই সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।”
আইনজীবী আরও বলেন, ‘গত ১৭ নভেম্বর পত্রিকাটির ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন। রুলে ডিএফপির ওই সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
‘রুল শুনানি চলাকালে আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই স্থগিতাদেশ জারি করেছেন। এর ফলে সাপ্তাহিক একতা প্রকাশে বাধা কাটল।’
আরও পড়ুন:আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনযাত্রায় যাত্রী হয়রানি ও প্রতারণা এড়াতে বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত অ্যাপ ব্যবহার করে অথবা সরাসরি কাউন্টার থেকে যাত্রীদের টিকিট কেনার পরামর্শ দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
গত ১৪ মার্চ থেকে ঈদযাত্রার ট্রেনগুলোর টিকিট বিক্রি শুরু হয়।
বিপুল চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু অসাধু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান টিকিট কালোবাজারি করতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষে বিভিন্ন আইডি থেকে কেনা টিকিট বেআইনিভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে বিক্রির চেষ্টা করতে পারে। এতে যাত্রী সাধারণের হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত অ্যাপ (রেল সেবা) ব্যবহার করে কিংবা সরাসরি কাউন্টার থেকে টিকিট কেনার পরামর্শ দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ে।
ঈদযাত্রায় (২৪ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত) একটি আইডি থেকে সর্বোচ্চ একবার চারটি টিকেট কেনা যাবে। এ ক্ষেত্রে আইডিধারী ব্যক্তির সহযাত্রীদের নামও ইনপুট দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। অনুরূপভাবে ফেরত যাত্রার ক্ষেত্রেও (৩ এপ্রিল থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত) একটি আইডি থেকে সর্বোচ্চ একবার চারটি টিকিট কেনা যাবে।
ঈদযাত্রার শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত অ্যাপ (রেল সেবা) এবং নির্ধারিত কাউন্টার ব্যতীত অন্য কোথাও ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না।
কোনো যাত্রী বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত অ্যাপ (রেল সেবা) এবং নির্ধারিত কাউন্টার ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা স্থান থেকে টিকিট কিনলে তিনি নিশ্চিতভাবে প্রতারিত হবেন।
আরও পড়ুন:জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে উদারতা দেখিয়েছে, তা সত্যিই অসাধারণ।
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শনিবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘপ্রধানের সম্মানে আয়োজিত প্রধান উপদেষ্টার ইফতার পার্টিতে তিনি এ কথা বলেন।
কক্সবাজার এবং এর আশেপাশের এলাকায় সমাজ, অর্থনীতি ও পরিবেশের ওপর নাটকীয় প্রভাব সত্ত্বেও ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এ অসাধারণ উদারতার জন্য গুতেরেস বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত বিশ্বজুড়ে অনেক সীমান্তই বন্ধ। আপনারা যে অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা অনুসরণ করা উচিত।’
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা যে আতিথেয়তার সুবিধা পাচ্ছেন, তাদের জীবনে এর কোনো বিকল্প ছিল না।
বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগের প্রতি পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করে গুতেরেস বলেন, ‘এটি দেশটিকে বিশ্বের অন্যতম নিখুঁত গণতন্ত্রে পরিণত করতে সাহায্য করবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভুয়া তথ্য মোকাবিলায় জাতিসংঘের সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের আশীর্বাদ আমাদের প্রয়োজন। বিশেষ করে একটি বিষয় মোকাবিলা করতে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। তা হলো ভুয়া তথ্য, যা আমাদের হত্যা করছে।’
জাতিসংঘপ্রধানের বাংলাদেশ সফর সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এ সফর জাতির জন্য আনন্দ বয়ে এনেছে। আমরা রমজানের মাঝামাঝি সময় পার করছি।
‘কিন্তু আপনার সফরের কারণে এবার ঈদের আনন্দ আগেই বিরাজ করছে। আপনি আপনার সফর দিয়ে আমাদের ঈদ আনন্দের সূচনা করেছেন।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবনের রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আপিল বেঞ্চ রবিবার এ রায় দেন।
এর আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হয়।
বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়।
২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলা বিচারে এসেছিল। দুই পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় আসে, যাতে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
আসামিদের মধ্যে তিনজন মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বাকি ২২ জনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুনতাসির আল জেমি কারাগার থেকে পালিয়েছেন। গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর গত ৬ আগস্ট তিনি গাজীপুরের হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের দেয়াল ভেঙে পালিয়ে যান।
আবরার ছিলেন বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।
মামলার আসামিদের সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। গ্রেপ্তার ২১ জনের মধ্যে আটজন আদালতে দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আবরারকে কীভাবে ক্রিকেট স্টাম্প আর স্কিপিং রোপ দিয়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে বেধড়ক পেটানো হয়েছিল। সেই ভয়ংকর বিবরণ উঠে আসে তাদের জবানবন্দিতে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য