মাদারীপুরে নদ-নদী, খাল-বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে মাছ ধরতে বেশ কিছু দিন ধরে ‘চায়না দোয়ারি’ বা ঘন বুননের এক ধরনের জাল ব্যবহার করছেন জেলেরা। এ জালে ধরা পড়ছে ছোট-বড় মাছ ও পোনা। এমনকি মাছের ডিমও উঠে আসছে।
চায়না দোয়ারির কারণে হুমকির মুখে পড়ছে জেলার মৎস্য সম্পদ। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ ধারা অব্যাহত থাকলে মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে সরকারের কোনো উদ্যোগই কাজে আসবে না। মুক্ত জলাশয়গুলো হয়ে পড়বে মাছ শূন্য।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ‘চায়না দোয়ারি’ জব্দ ও অভিযুক্তদের জরিমানা করা হয়েছে। তবে এসব অভিযানে থামেনি মৎস্য শিকারিদের দৌরাত্ম্য।
জেলার বিভিন্ন নদীপাড়ের বাসিন্দা ও জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি প্রায় ৬০ থেকে ৮০ ফুট লম্বা একেকটি চায়না দোয়ারির দাম ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা। অতি সূক্ষ্ম ও ঘন এ জালের বৈশিষ্ট্য হলো নদ-নদী, বিল-বাওর বা অন্যান্য জলাশয়ে মাটির সাথে লম্বা-লম্বিভাবে লেগে থাকে এবং দুই দিক থেকেই মাছ ঢুকতে পারে।
তারা আরও জানান, চীনের এ জালে মাছ ধরতে কোনো খাবার বা টোপ দিতে হয় না। সহজে মাছ ধরা পড়ে বলে আয় বেশি, পরিশ্রমও কম। নদীর মিঠা পানির সব ধরনের মাছ সূক্ষ্ম এই জালে ধরা পড়ছে।
নদীতে পানি বেশি থাকলেও ডিমওয়ালা চিংড়ি, পুঁটি, টেংরা, কই, শিং, মাগুর, তেলাপিয়া, বেলে, বোয়াল, শোল, টাকিসহ প্রাকৃতিক সব মাছই ধরা পড়ছে।
জেলেরা জানান, মাছের ডিমও এ জালে আটকে যায়। এ ছাড়া কুচিয়া, ব্যাঙ, সাপসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীও উঠে আসে। খাওয়া না যাওয়ায় এগুলো অবাধে মারা পড়ছে।
মাদারীপুর সিনিয়র সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তপন মজুমদার বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সহযোগিতায় নিষিদ্ধ চায়না দোয়ারির বিরুদ্ধে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, উদ্বুদ্ধকরণ সভা, মোবাইল কোর্ট ও অভিযান অব্যাহত আছে। এভাবে মৎস্য সম্পদ ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না।’
মাদারীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল কৃষ্ণ ওঝা বলেন, ‘অবৈধ চায়না দোয়ারি বিল-বাওর, নদী-নালা, খাল ও মুক্ত জলাশয়ের মৎস্য সম্পদের জন্য হুমকি স্বরূপ। ১৭টি অভিযানে ২২২টি চায়না দোয়ারি জব্দ ও নষ্ট করা হয়েছে। একটি মামলা ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি বেআইনি কাজ। এর বিরুদ্ধে জেলাব্যাপী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে।’
আরও পড়ুন:জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও তাকে বিশ্রামে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর।
তিনি বলেন, ‘তবে তার স্বাভাবিক কাজকর্মে—অর্থাৎ খেলাধুলায়—ফিরতে অন্তত তিন মাস সময় লাগবে।’
সাভারের কেপিজি হাসপাতালে মঙ্গলবার দুপুরে তামিমকে দেখে সাংবাদিকদের তিনি এসব তথ্য দিয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে এ চিকিৎসক বলেন, ‘তামিম ইকবালকে নরমাল কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য অন্তত তিন মাস সময় দিতে হবে। মানে খেলাধুলায়। এ ছাড়া তিনি বাসায় স্বাভাবিক কাজকর্ম ও হাঁটাচলা করবেন সপ্তাহখানেক। তাকে বিশ্রামেই থাকতে হবে। যদিও সব পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সব রোগ সবসময় ধরা পড়ে না।
‘প্রথমিক ইসিজিতে কোনো চেঞ্জ আসেনি। আজ সকালে ইকো (ইকোকার্ডিওগ্রাম) করা হয়েছে। সবকিছুই ভালো। কিন্তু তারপরও যেকোনো সময় যেকোনো জিনিস ঘটে যেতে পারে। এ বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে তার পরিবারের সাথে আলাপ করেছি। এখন তাদের সিদ্ধান্ত আমাদের সিদ্ধান্ত।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমাদের জাতীয় সম্পদ তামিম ইকবালের শারীরিকভাবে অসুস্থবোধ করেন গতকাল সাড়ে ১০টায়। তিনি এখানে আসার পর ডাক্তাররা তাকে কার্ডিয়াক প্রবলেম হিসেবে সন্দেহ করেছেন। প্রাথমিকভাবে কিছু চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন। তাকে এখন মুভ (নিয়ে যাওয়া) করানো ঠিক হবে না বলেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
‘তিনি একজন জাতীয় সেলিব্রেটি। নিজের অবস্থান বিবেচনা করে তিনি তাড়াতাড়ি ঢাকায় শিফট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। হেলিকপ্টারের ব্যবস্থাও হয়েছিল। আমাদের এখানকার দুজন ও ওখানকার দুজন মিলে চারজন চিকিৎসক মিলে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তখন তার হার্ট অ্যাটাক হয়, তার নাড়ির স্পন্দন পাওয়া যায়নি। তারপর ডাক্তারররা সিপিআর দিয়েছেন। হার্ট বন্ধ হয়ে গেলে চালু করার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।’
অধ্যাপক আবু জাফর বলেন, ‘আপনাদের সবার দোয়ায় আমাদের জাতীয় দলের ক্রিকেট তারকা তামিম ইকবাল এখন সুস্থ। তার সার্বিক অবস্থা আশাব্যঞ্জক। কিন্তু কখনও কখনও যে প্রাইমারি পিসিআই হয়েছে, এটা একটা ফরেন বডি, এটা রিঅ্যাকশন হতে পারে, হার্ট নানাভাবে এটার ওপর অ্যাকশন ও রিঅ্যাকশন হতে পারে।
‘রে রিংটা লাগানো হয়েছে, সেটা সামায়িকভাবে, কোনোভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেই ঝুঁকি রয়েছে। যদিও সেই পরিসংখ্যান খুবই কম।’
তিনি বলেন, ‘তার পরিবারের সদস্যদের সেটা বলেছি। চিকিৎসক যারা ছিলেন, ডা. মারুফ, তাদের পরিশ্রমে, আল্লাহর বিশেষ রহমতে তাকে আমরা একটি নবজীবন দিতে পেরেছি। সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধা যেখানে সম্ভব, সেখানে মানুষ যেতে চাইবে। কিন্তু তার যাওয়াটা কতটা নিরাপদ, সে বিষয়ে আমরা তার পরিবারের সঙ্গে আলাপ করেছি। তার এই মুহূর্তে শিফট করায় ঝুঁকি আছে।’
এ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘ঝুঁকিটা কম, এক শতাংশ। যদি ঘটে যায়, তখন ঝুঁকিটা শতভাগ। ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা তার এখানে থাকা উচিত। তার পর তিনি অন্য কোথাও যেতে পারবেন।’
আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘তামিমের যেটা হয়েছিল, অ্যাকিউট হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে সেটা কিন্তু হয়। আমরা দেখেছি, অ্যাকিউট হার্ট অ্যাটাক হলে ১০ থেকে ২০ শতাংশ রোগী কখনও হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন না। তার হার্ট অ্যারেস্ট হয়। এখানেও তাই হয়েছে। কিন্তু তার সাথে চিকিৎসকরা ছিলেন, সাথে সাথে কার্ডিয়াক ম্যাসেজ শুরু হয়েছিল। হার্ট নিজে পাম্প করছে না, জোর করে কিছুটা পাম্প করিয়ে রাখা হয়েছিল। তারপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
‘তার বন্ধ আর্টারি খুলে দেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, অ্যাকিউট এপিসোডটা গেছে। ৩২ মিনিটের মতো তাকে কার্ডিয়াক প্লেসে দিতে হয়েছে। সেখান থেকে উঠে আসার সৌভাগ্য সবার হয় না। যথাসময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা পাওয়ার কারণেই তামিমকে আমরা ফিরে পেয়েছি। কতটা ফেরত পেয়েছি, আজ সকালবেলায় ইকোকার্ডিয়াক করে হার্টের ফাংশন দেখা হচ্ছিল, দেখে মনে হয়, কোনো সমস্যা নেই, একেবারে তরতাজা। মনে রাখতে হবে, এটিই একটি ছদ্মবেশ। হার্ট আবার অ্যাবনরমাল হতে পারে। তবে শঙ্কা অবশ্যই কমে গেছে।’
এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘তবে ওটা হয়েছিল, কারণ একটা বড় আর্টারি বন্ধ ছিল। খাবার নেই, অক্সিজেন নেই, ওই টিস্যুটা ইরিটেটেড, সে জন্যই এটা হয়েছিল। এখন সেটা খুলে গেছে। স্লাইট শঙ্কা আছে। সে জন্য আমরা তাকে বলেছি, ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত একটি ক্রিটিক্যাল টাইম, যাতে আর কোনো প্রবলেম না হয়।
‘কথাবার্তা একটু কম বলা উচিত, বিশ্রামে থাকা উচিত। এখানে থেকে স্থিতিশীল হয়ে আরও ভালো কোনো জায়গায় যদি যেতে চান, তাহলে যেতে পারবেন।’
আরও পড়ুন:বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের হৃৎপিণ্ডে রিং পরানো হয়েছে।
বর্তমানে তাকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছে।
ইউএনবিকে সোমবার এমন তথ্য নিশ্চিত করেন বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুনীরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘তাকে রিং পরানো হয়েছে নিশ্চিত। প্রথমে মাঠে খেলার সময় তার বুকে ব্যথা ওঠে। আমরা তাকে হাসপাতালে পাঠাই। তাকে যখন হেলিকপ্টারে তোলা হচ্ছিল, তখন আবার বুকে ব্যথা শুরু হয়।
‘হঠাৎ করেই তার বুকে ব্যথা ওঠে। এরপর আমাদের অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকসহ তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিকিৎসা বিভাগের প্রধান দেবাশীষ চৌধুরী সাংবাদমাধ্যমকে জানান, তামিমের দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি উন্নতির দিকে।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে মোহামেডানের হয়ে শাইনপুকুরের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন তামিম। অধিনায়ক হিসেবে টসেও অংশ নেন।
এরপর হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করায় তামিমকে বিকেএসপিতেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় বিকেএসপির পাশে সাভারের ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে। এ মুহূর্তে তিনি সেখানেই ভর্তি।
তামিমের অসুস্থতার খবরে বিসিবির বোর্ড সভা স্থগিত করা হয়। দুপুর ১২টায় ১৯তম বোর্ড সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল।
এ ক্রিকেটারকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন বিসিবি পরিচালক ও কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন:বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সাভারে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ তমিজ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ ইকবালের নির্দেশে এবং সাভার পৌর ছাত্রদলের মেহেদী হাসান সানির উদ্যোগে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অপারেটিভ অগ্রণী হাউজিং সোসাইটি মাঠে সম্প্রতি এ ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাভার পৌরসভার মেয়র পদপ্রার্থী লায়ন মো. খোরশেদ আলম।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাভার পৌর ছাত্রদলের নেতা-কর্মীসহ এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
ওই সময় প্রধান অতিধির বক্তব্যে লায়ন মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘বিগত ১৫-১৬ বছর আমরা যারা বিএনপি করেছি, শুধু আমি নই সাভারের নেত্রীবৃন্দসহ সারা বাংলাদেশে বিরোধী দলে যারা রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল, তাদের ওপর অত্যাচারের একটি স্টিমরোলার চালিয়েছে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার। নানা রকম মামলা, হামলা নির্যাতন সহ্য করেও যারা আজকে পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সম্পর্ক রেখেছে এবং দলের কাজকর্ম করে যাচ্ছে, তাদের আমি দলের পক্ষ থেকে ও আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানাই।
‘কারণ চরম ধৈর্য না ধরলে এই দীর্ঘদিন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে কড়াভাবে লড়ে না গেলে আমরা সফল হতে পারতাম না।’
তিনি আরও বলেন,‘৫ আগস্ট যে স্বাধীনতা এসেছে, এই স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আর যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুস্থতা কামনা করছি। ’
সাভারের উন্নয়ন নিয়ে খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা একটু সাভারের দিকে তাকাই। এই সাভার একটি অবহেলিত সাভার। দীর্ঘদিন এই সাভারে যে পরিমাণ উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। এই না হওয়ার পিছনে একটি জিনিস দায়ী। সেটি হলো দায়িত্বশীল যারা ছিলেন তারা কখনোই, আপনাদের নিজের মানুষ মনে করেনি। যদি তারা কাজ করত বা সাভারকে নিজের পৌরসভা হিসেবে যদি গ্রহণ করত, তাহলে কাজ করতে পারত।
‘আমি দীর্ঘদিন কাউন্সিলর ছিলাম। সমস্যাগুলো আমি কাছ থেকে দেখেছি। এখানে শুধু দরকার একটু প্রচেষ্টা এবং জনগণের সহযোগিতা। একজন মেয়র যদি চিন্তা করে আমি সাভারের জন্য কাজ করব আর জনগণ যদি চিন্তা করে আমরা মেয়রের পাশে আছি, তাহলে কোনোকিছুতেই সেই উন্নয়ন ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার কাজ দ্বারা যদি আমাকে আপনাদের যোগ্য মনে হয়, তাহলে আপনারা আমাকে নির্বাচিত করবেন। যতদিন বেঁচে আছি আমি সাভারের জন্য এবং সাভারের মানুষের জন্য কাজ করে যাব।’
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তামিম ইকবাল।
তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
ইউএনবিকে সোমবার দুপুরে এমন তথ্য নিশ্চিত করেন বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুনীরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বুকে ব্যথা অনুভব করায় তাকে বিকেএসপির পাশে ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বিকেএসপি থেকে আমাদের অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক সবকিছুসহ তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই। আমাদের কর্মকর্তা ও ক্রিকেটের প্রশিক্ষকরা ওখানে আছেন।
‘ঢাকা থেকেও টিম আসছে। আমাদের কর্মকর্তা-চিকিৎসক সেখানে আছে। বিকেএসপির মাঠে হেলিকপ্টার অপেক্ষা করছে। দেখি কী করা যায়।’
টাইগারদের সাবেক এ ক্যাপ্টেনের শরীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে জানিয়ে মুনীরুল ইসলাম বলেন, ‘সম্ভবত একটা এনজিওগ্রাম হয়েছে। এরপর তিনি স্থিতিশীল আছেন।’
মোহামেডান ক্লাবের কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘তামিম ইকবাল বর্তমানে চিকিৎসাধীন। আমরা সবাই তার সুস্থতা কামনা করছি।’
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে মোহামেডানের হয়ে শাইনপুকুরের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন তামিম। অধিনায়ক হিসেবে টসেও অংশ নেন।
এরপর হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করায় তামিমকে বিকেএসপিতেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় বিকেএসপির পাশে সাভারের ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে। তিনি সেখানে ভর্তি রয়েছেন।
তামিমের অসুস্থতার খবরে বিসিবির বোর্ড সভা স্থগিত করা হয়েছে। দুপুর ১২টায় ১৯তম বোর্ড সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল।
তামিমকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন বিসিবি পরিচালক ও কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবির পর উদ্ধারে গিয়ে নিখোঁজ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সিপাহী মো. বিল্লাল হাসানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়ায় বঙ্গোপসাগর থেকে রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিল্লাল শাহপরীর দ্বীপ বিজিবি সীমান্ত চৌকির অধীনে সিপাহী ছিলেন। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কাজিরতলা গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে।
এর আগে গত শুক্রবার গভীর রাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় কক্সবাজারের টেকনাফে সমুদ্রে রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনায় নারী-শিশুসহ ২৫ জন রোহিঙ্গাকে জীবত উদ্ধার করে। সে সময় বিজিবির সদস্যের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নিখোঁজ হন।
ঘটনার পরের দিন শনিবার পর্যন্ত পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘নিখোঁজ থাকার দুই দিন পর সাগর থেকে বিজিবি সদস্যের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। এর আগে সমুদ্রে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টাকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম পাড়ায় বহনকারী নৌকায় উদ্ধার অভিযানে যায় বিজিবি সদস্য। ওই সময় নৌকাডুবির ঘটনায় সমুদ্রে নিখোঁজ হন তিনি। অবশেষে তার মৃতদেহ পাওয়া গেছে।’
তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া ঘটনার দিন খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় উদ্ধার অভিযানে যান এবং শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। আমাদের উদ্ধার অভিযান চলছে।’
এদিকে নিহত বিজিবি সদস্যের ভাই আবু বকর বলেন, ‘ভাইকে খোঁজার জন্য টেকনাফের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলাম। এর মধ্য খবর আসে সাগরে চরের মধ্য ভাইয়ের মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
‘গত শুক্রবার সাগরে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকা উদ্ধার অভিযানে গেলে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ছিল ভাই। ওই সময় আমাদের জানানো হয়েছিল তিনিসহ ৩৩ জন নিখোঁজ ছিল। এ নিয়ে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল।’
নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘এর আগে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনায় শিশুসহ চার রোহিঙ্গার মৃতদেহ ভাসমান পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আরও বেশ কিছু রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছে। তাদের বিষয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।’
স্থানীয়রা জানান, গত ২২ মার্চ রাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাবাহী একটি নৌকা টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া এলাকায় সাগরে ভাসতে দেখেন বিজিবির সদস্যরা। তারা স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আমিনের মালিকাধীন মাছ ধরার নৌকায় শাকের মাঝির নেতৃত্বে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকাটি থামানোর সংকেত দেন সমুদ্রে। পরে ওই নৌকাতে ওঠেন বিজিবি সদস্য।
ওই সময় উত্তাল সাগরের ঢেউয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। সেখানে চিৎকারে নারী-শিশুসহ ২৫ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে স্থানীয় জেলে ও বিজিবি। পরে নিখোঁজ বিজিবি সদস্যসহ রোহিঙ্গাদের সন্ধানে সাগরে তল্লাশি চালানো হয়।
ডুবে যাওয়া নৌকায় অর্ধশতাধিক লোকজন ছিল বলে জানিয়েছেন উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা।
মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য ঈমান হোসাইন ও আবুল মনছুর মিলে মিয়ানমারের থেকে রোহিঙ্গা পারাপার করছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন:বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের একটি অংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
ইউএনবি জানায়, তিন কিলোমিটার দূরে মরা ভোলা নদী থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি নিয়ে আগুন নেভানো হয়েছে। বনে আগুনের ওই এলাকায় মাঝেমধ্যে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। আগুনে এরই মধ্যে প্রায় ৪ একর বনভূমি পুড়ে গেছে।
বার্তা সংস্থাটি জানায়, রবিবার সকালে সুন্দরবনের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে বন বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত করেছে।
তদন্তে কমিটি
এদিকে সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় বন বিভাগ রবিবার ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ওই কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, শনিবার রাতভর বন বিভাগ এবং গ্রামবাসী মিলে আগুন নেভানোর কাজ করে। ভোলা নদী থেকে পানি নিয়ে তারা জ্বলতে থাকা আগুনেব ছিটিয়েছে। রবিবার সকাল ৮টার দিকে তাদের সঙ্গে ফায়ার ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত হয়। ৩ কিলোমিটার দূরে মরা ভোলা নদীতে পাইপ লাইন বসিয়ে পানি নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। এরই মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম আরও জানান, রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বনে আগুন জ্বলতে দেখা যায়নি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে মাঝেমধ্যে কোনো কোনো স্থানে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। ধোঁয়া দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পাইপ দিয়ে সেখানে পানি ছিটানো হচ্ছে। আগুনে প্রায় ৪ একর বনের ক্ষতি হয়েছে।
ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিমের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৪ মে সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী সুন্দরবনের ২৪, ২৫ এবং ২৭ নম্বর কম্পার্টমেন্টাল এলাকায় মৌয়ালদের পাশ (অনুমতি) দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বছর ১ এপ্রিল থেকে সুন্দরবনে মধু আহরণ মৌসুম শুরু হবে।
ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিমের ধারণা, মৌসুম শুরুর আগেই অবৈধ কোনো মৌয়াল সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারে। মৌয়ালের মশাল অথবা বিড়ি সিগারেটের অংশ থেকে সুন্দরবনে আগুন ধরতে পারে। এ ছাড়া আইন ভঙ্গ করে কোনো কোনো রাখাল ভোলা নদী পাড়ি দিয়ে তাদের গবাদি পশু নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে। ওই রাখালদের ফেলে রাখা বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকেও সুন্দরবনে আগুনের ঘটনা ঘটতে পারে।
তিনি আরও জানান, সুন্দরবনে আগুনের সূত্রপাত এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব জানতে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপেন চন্দ্র দাসকে।
কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা বিপুলেশ্বর চন্দ্র দাস এবং কলমতেজি টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম।
কমিটির সদস্যদের আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ডিএফও।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপেন চন্দ্র দাস জানান, সুন্দরবনে যে স্থানে আগুন লেগেছে, ওই এলাকার দেড় কিলোমিটারজুড়ে ফায়ার লেন কাটা হয়েছে। আগুন ফায়ার লেন অতিক্রম করতে পারেনি।
তিনি আরও জানান, শনিবার সকালের পর থেকে বন বিভাগের সদস্যরা একটানা আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আগুনে কিছু বলা এবং নলবন পুড়ে সামান্য ক্ষতি হয়েছে।
বাগেরহাটের শরণখোলা ফায়ার স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা আফতাব-ই-আলম জানান, সুন্দরবনে জ্বলতে থাকা আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সুন্দরবনে জ্বলতে থাকা আগুন প্রায় ৯০ শতাংশ নিভে গেছে। এই মুহূর্তে কোথাও আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছে না। তবে মাঝেমধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। ধোঁয়া দেখলেই সঙে সঙ্গে পানি ছিটানো হচ্ছে। সন্ধ্যার মধ্যে আগুন সম্পূর্ণ নেভানো সম্ভব হবে।
এ নিয়ে ১৯ বছরে সুন্দরবনে ২৯ বার আগুনের ঘটনা ঘটে। গত ৪ মে সুন্দরবনে আগুন লাগে।
বিভিন্ন সময়ে সুন্দরবনে আগুনে এ পর্যন্ত প্রায় ৮৫ একর বনভূমি পুড়ে গেছে।
আরও পড়ুন:গাজীপুরের কাশিমপুরে রবিবার নিজ বসতঘর থেকে এক দম্পতি ও তাদের সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, রবিবার সকালে কাশিমপুরের গোবিন্দবাড়ী এলাকার একটি বাসা থেকে নাজমুলের মরদেহ ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় এবং তার স্ত্রী খাদিজা ও শিশু কন্যা নাদিয়ার লাশ বিছানা থেকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, নাজমুল নিজে ফাঁসিতে ঝোলার আগে স্ত্রী ও সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন। পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদের জেরে এর আগে নাজমুল ব্লেড দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গা রক্তাক্ত করে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
মন্তব্য