× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Responsibility of the child of a Japanese citizen Parents have more time in the High Court
google_news print-icon

জাপানি নাগরিকের সন্তান: মা-বাবাকে আরও সময় হাইকোর্টের

জাপানি-নাগরিকের-সন্তান-মা-বাবাকে-আরও-সময়-হাইকোর্টের
সন্তানদের দায়িত্ব চেয়ে বাংলাদেশের হাইকোর্টে রিট করেছেন জাপানের নারী নাকানো এরিকো। ছবি: নিউজবাংলা
ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদকে উদ্দেশে আদালত বলে, ‘দেখেন সন্তানের ভবিষ্যত চিন্তা করে এবং দেশের ভাবমূর্তিও বাঁচবে এমন কিছু করেন, যাতে বাবা-মা দুইজন সমঝোতায় আসতে পারেন।’

দুই সন্তানের ভবিষ্যত এবং দেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় জাপানি নাগরিক মা এবং বাংলাদেশি বাবাকে সমঝোতায় আসতে আবারও সময় দিয়েছে হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সময় দেয়।

এদিন আদালতে বাবার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। অন্যদিকে মায়ের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

আদালত সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদকে বাবা এবং মায়ের মধ্যে সন্তান নিয়ে একটি সমঝোতায় আসতে দুই পক্ষকে নিয়ে বসার দায়িত্ব দিয়েছে।

২৮ আগস্ট পর্যন্ত এ মামলার শুনানি মুলতবি করেছে আদালত। তবে এ সময় পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এক দিন মা ও এক দিন বাবা সকাল ৮টা থেকে পরের দিন ৮টা পর্যন্ত এভাবে সন্তানের কাছে থাকতে পারবেন।

এসময় সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদকে উদ্দেশে আদালত বলে, ‘দেখেন সন্তানের ভবিষ্যত চিন্তা করে এবং দেশের ভাবমূর্তিও বাঁচবে এমন কিছু করেন, যাতে বাবা-মা দুইজন সমঝোতায় আসতে পারেন।’

২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানের নাগরিক এরিকো এবং বাংলাদেশি-আমেরিকান ইমরান শরীফ জাপানি আইনে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন।

তাদের ১২ বছরের সংসারে তিন মেয়েসন্তানের জন্ম দেন এরিকো। এরা হলেন জেসমিন মালিকা, লাইলা লিনা ও সানিয়া হেনা।

এরিকো পেশায় একজন চিকিৎসক। মালিকা, লিনা ও হেনা টোকিওর চফো সিটিতে আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের (এএসআইজে) শিক্ষার্থী ছিলেন।

এ বছরের ১৮ জানুয়ারি শরীফ ইমরান বিবাহ বিচ্ছেদের (ডিভোর্স) আবেদন করেন। ২১ জানুয়ারি ইমরান এএসআইজে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তার মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন।

স্কুল কর্তৃপক্ষ এরিকোর সম্মতি না থাকায় তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। পরে ইমরান তার মেয়ে জেসমিন ও লিনাকে স্কুলবাসে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপ থেকে অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।

২৫ জানুয়ারি ইমরান তার আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছে তার সন্তানদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। এরিকো সেটি প্রত্যাখ্যান করেন।

২৮ জানুয়ারি এরিকো টোকিওর পারিবারিক আদালতে তার সন্তানদের জিম্মার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চেয়ে মামলা করেন। আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি শিশুদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে সাক্ষাতের আদেশ দেয়। ইমরান আদালতের আদেশ ভঙ্গ করে মাত্র একবার মায়ের সঙ্গে দুই মেয়ের সাক্ষাতের সুযোগ দেন।

এরিকোর অভিযোগ, ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান তার মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন এবং গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট নেন। ২১ ফেব্রুয়ারি ইমরান তার দুই মেয়ে জেসমিন ও লাইলাকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।

দুই মেয়ের বিবৃতি ও সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে টোকিওর পারিবারিক আদালত ৩১ মে এরিকোর অনুকূলে জেসমিন ও লাইলার জিম্মা হস্তান্তরের আদেশ দেয়।

বিষয়টি নিয়ে এরিকো বাংলাদেশের একজন মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেন। তবে করোনা পরিস্থিতির জন্য তিনি বাংলাদেশে আসতে পারেননি।

এ বছরের ১৮ জুলাই এরিকো শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসেন।

এরপর মা জাপান থেকে বাংলাদেশে এসে সন্তানের জিম্মা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত সন্তানদের সঙ্গে বাবা-মাকে একসঙ্গে থাকতে নির্দেশ দেয়। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার শুনানি হয়।

আরও পড়ুন:
সেই জাপানি মায়ের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে আইনি নোটিশ
হাসপাতালে বাক্সবন্দি ২৮ যন্ত্র: তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
জাপানি নারীকে নিয়ে ভুয়া ভিডিও সরানোর নির্দেশ
দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য তহবিল গঠন কেন নয়: হাইকোর্ট
অফিসে বসে মোবাইল কোর্ট নয়: হাইকোর্ট

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Desecration of idols in India is called temple attack in Bangladesh

ভারতে মূর্তি বিসর্জনকে বাংলাদেশে মন্দিরে হামলা বলে প্রচার

ভারতে মূর্তি বিসর্জনকে বাংলাদেশে মন্দিরে হামলা বলে প্রচার
‘ফ্যাক্ট ওয়াচ’ ভাইরাল ভিডিও পোস্টটিকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যা ভারতীয় আরটি ইন্ডিয়ার এক্স হ্যান্ডেল থেকে শেয়ার করা হয়েছিল। পোস্টে দাবি করা হয়- এটি বাংলাদেশের একটি কালী মন্দিরে হামলার ঘটনা। প্রকৃতপক্ষে এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সুলতানপুর গ্রামে কালী দেবী বিসর্জনের ভিডিও।

ভারতীয় একটি মিডিয়া পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে কালী দেবীর মূর্তি বিসর্জনের একটি ভিডিওকে বাংলাদেশে একটি মন্দিরে হামলা হিসেবে প্রচার করেছে।

ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান ‘ফ্যাক্ট ওয়াচ’ ভাইরাল ভিডিও পোস্টটিকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যা ভারতীয় মিডিয়া আউটলেট আরটি ইন্ডিয়ার এক্স হ্যান্ডেল থেকে শেয়ার করা হয়েছিল। পোস্টে দাবি করা হয়- এটি বাংলাদেশের একটি কালী মন্দিরে হামলার ঘটনা।

ফ্যাক্ট ওয়াচ নিশ্চিত করেছে যে এটি প্রকৃতপক্ষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি কালী দেবীর বিসর্জনের ভিডিও।

ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা শনাক্ত করতে ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের অধীনস্থ এবং সেন্টার ফর ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড কোয়ালিটেটিভ স্টাডিজ (সিকিউএস) পরিচালিত স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা ফ্যাক্ট ওয়াচ ভিডিওটির বিভিন্ন কী-ফ্রেম ব্যবহার করে অনুসন্ধান চালায়।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওটি ২০২৪ সালের ৩ ডিসেম্বর বিনোদ ঘোষ নামে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আপলোড করা হয়েছিল, যা ফ্যাক্ট ওয়াচ তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত রিপোর্টে জানিয়েছে।

ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার সুলতানপুর গ্রামে শতাব্দী প্রাচীন কালীপূজোতে প্রাচীন রীতি অনুযায়ী, প্রতি ১২ বছরে গ্রামের পুরোহিতরা প্রথমে ১৩ ফুট লম্বা কালী দেবীর মূর্তির ছোট ছোট আঙুল ভাঙেন। তারপর গ্রামের সাধারণ মানুষেরা মূর্তির বাকি অংশ ভেঙে একে একে বিসর্জন দেন।’

রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ‘বিসর্জনের পর একটি নতুন মূর্তি তৈরি করা হয় এবং তা পরবর্তী ১১ বছর ধরে পূজা করা হয়।’

এই উৎস থেকে ফ্যাক্ট ওয়াচ দল আরও কিছু চিত্র এবং ভিডিও খুঁজে পায়, যা এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত। সেখানে দেখা যায় যে বিপুলসংখ্যক মানুষ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ও উদযাপন করছেন।

পরে দ্য ডেইলি স্টেটসম্যান পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্টেও একইরকম তথ্য পাওয়া যায়। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, এই প্রথাটি ৬০০ বছরের পুরনো। প্রথমদিকে গ্রামের কামার সম্প্রদায় (বঙ্গের কর্মকার জাতির সমতুল্য) এই পূজো পালন করত, পরবর্তীতে তারা দায়িত্বটি মণ্ডল পরিবারকে হস্তান্তর করে।

অন্যদিকে গুগল স্ট্রিট ভিউতে কালী দেবীর মন্দিরের দৃশ্য এবং ফেসবুক ভিডিওর সঙ্গে তুলনা করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে মন্দিরটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সুলতানপুর গ্রামে অবস্থিত, বাংলাদেশে নয়। এছাড়াও সেখানে কোনো হিন্দু ভক্ত নিহত হওয়ার মতো কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

কিন্তু ভাইরাল ভিডিওটি বাংলাদেশের ঘটনা উল্লেখ করে মিথ্যা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে শেয়ার করা হচ্ছে বলে ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠানটি জানায়।

প্রতিবেদনটি শেষ করে বলা হয়েছে, ‘সুতরাং, সবদিক বিবেচনা করে ফ্যাক্ট ওয়াচ ভাইরাল পোস্টটিকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
India wants constructive relations with Bangladesh Vikram Mishri

বাংলাদেশের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক চায় ভারত: বিক্রম মিশ্রি

বাংলাদেশের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক চায় ভারত: বিক্রম মিশ্রি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি সোমবার ঢাকায় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বৈঠকের আলোচনায় দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার বিষয়গুলো এসেছে। অত্যন্ত খোলামেলা ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে।’

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। তিনি বলেছেন, ‘গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে দুদেশের নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ আছে। দু’দেশের জনগণের স্বার্থে বাংলাদেশের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক চায় ভারত। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চায়।’

ঢাকায় সোমবার দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকের পর বিক্রম মিশ্রি এসব কথা বলেন।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বৈঠকের আলোচনায় দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার বিষয়গুলো এসেছে। অত্যন্ত খোলামেলা ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে।

‘আমি জোর দিয়ে বলেছি, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত একটি ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সম্পর্ক চায়। আমরা সবসময়... অতীতেও দেখেছি এবং আমরা ভবিষ্যতেও এ সম্পর্ককে একটি জনকেন্দ্রিক এবং জনমুখী সম্পর্ক হিসেবে দেখব। আর সে সম্পর্কের কেন্দ্রে থাকবে সব মানুষের কল্যাণ।’

বিক্রম মিশ্রি বলেন, পরস্পরের জন্য সহায়ক এই সহযোগিতা আমাদের উভয় দেশের জনগণের স্বার্থে অব্যাহত থাকবে না এটা ভাবার কারণ নেই। আমি আজ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য ভারতের আগ্রহের কথা তুলে ধরেছি। একই সময়ে, আমরা কিছু সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং সমস্যা নিয়ে আলোচনার সুযোগ পেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আলোচনায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের সঙ্গে সম্পর্কিত আমাদের উদ্বেগগুলো জানিয়েছি। আমরা সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং কূটনৈতিক সম্পত্তির ওপর হামলার কিছু দুঃখজনক ঘটনা নিয়েও আলোচনা করেছি।’

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘পারস্পরিক সুবিধাজনক সহযোগিতা উভয় দেশের জনগণের স্বার্থে অব্যাহত না থাকার কোনো কারণ নেই এবং এর জন্য আমি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ভারতের ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছি।’

এর আগে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় প্রায় দুই ঘণ্টা স্থায়ী বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন বাংলাদেশের এবং ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি তার দেশের নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকের আগে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব একান্তে বৈঠক করেন।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বিশেষ ফ্লাইটে আজ সকালে ঢাকায় অবতরণ করেন। এরপর বেলা ১১টার দিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের গাড়িবহর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় প্রবেশ করে। আনুষ্ঠানিক আলোচনার আগে দুই পররাষ্ট্র সচিব একান্তে বৈঠক করেন।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে এটি বিক্রম মিশ্রির প্রথম বাংলাদেশ সফর। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রথম বৈঠকও এটি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে উভয় পক্ষ রাজনৈতিক দূরত্ব কমানোর বিষয়ে জোর দিয়েছেন। ঢাকার পক্ষ থেকে ভারতে বসে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সক্রিয়তা বন্ধ, ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার ও ভিসার জট খোলার বিষয়ে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশ-ভারত এফওসি বৈঠক শেষ, বিবৃতি আসছে

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Pledge to remain in full support of the EU in the reform process

সংস্কার প্রক্রিয়ায় ইইউ’র পূর্ণ সমর্থন, পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি

সংস্কার প্রক্রিয়ায় ইইউ’র পূর্ণ সমর্থন, পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার নিজ কার্যালয়ে বৈঠক শেষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের বৈঠকে শ্রম অধিকার, বাণিজ্য সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন ও টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে উভয় পক্ষের অঙ্গীকার ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়।

সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিরা। পরামর্শ ও সুপারিশ জানিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি বাংলাদেশকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সোমবার ইইউভুক্ত ১৯ দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এসব কথা জানান।

বৈঠকে বাংলাদেশে থাকা ইইউভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূত ছাড়াও অনাবাসী ইইউভুক্ত দেশের রাষ্ট্রদূতগণ উপস্থিত ছিলেন।

ইইউ’র ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অফ ডেলিগেশন মাইকেল মিলার।

অপরদিকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে ১৫ জন প্রতিনিধি তাদের মতামত তুলে ধরেন। বৈঠকে শ্রম অধিকার, বাণিজ্য সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন ও টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে উভয় পক্ষের অঙ্গীকার ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে গত ১৬ বছর ধরে অত্যাচার, শোষণ, বলপূর্বক গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র সংক্ষেপে তুলে ধরেন। তিনি অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রের বিষয় উল্লেখ করে দুর্নীতি, অর্থপাচার এবং ব্যাংকিং সিস্টেমকে কীভাবে বিপর্যস্ত করা হয়েছিল সেসবও কথা জানান।

বাংলাদেশ সম্পর্কে ব্যাপক আকারে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এই মিস-ইনফরমেশন ঠেকাতে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি।’

শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা যে ব্যাপক পরিমাণ অর্থ পাচার করে নিয়ে গেছে তা দিয়ে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাম্প্রতিক মতবিনিময়ের কথাও বৈঠকে উল্লেখ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কেও ইইউ প্রতিনিধিদের বিশদভাবে জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান।

ড. ইউনূস উপস্থিত রাষ্ট্রদূতদেরকে বাংলাদেশিদের জন্য তাদের ভিসা সেন্টার দিল্লি থেকে সরিয়ে ঢাকায় অথবা প্রতিবেশী অন্য কোনো দেশে স্থানান্তরের অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সীমিত করায় অনেক শিক্ষার্থী দিল্লিতে গিয়ে ইউরোপের ভিসা নিতে পারছেন না। ফলে তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলাদেশের শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। ভিসা অফিস ঢাকা অথবা প্রতিবেশী অন্য কোনো দেশে স্থানান্তর হলে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয়েই উপকৃত হবে।’

বৈঠকে উপস্থিত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানান, ইতোমধ্যে বুলগেরিয়া বাংলাদেশিদের জন্য তাদের ভিসা সেন্টার ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে স্থানান্তর করেছে। তিনি অন্য দেশগুলোকেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণের আহ্বান জানান।

বৈঠকে সংখ্যালঘু ইস্যু, বাণিজ্য সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন এবং টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে উভয়ের অঙ্গীকার ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে।

এছাড়া আলোচনায় বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন কবে হবে, গণতন্ত্র, অর্থপাচার বিষয়গুলোও উঠে আসে। বিশেষ করে ফ‍্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের অগ্রগতি, জিএসপি সুবিধা নিশ্চিতকরণ ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, ‘গত ১৬ বছরের দমন-পীড়নের পর মানুষের আবেগের প্রকাশ স্পষ্ট। জোরপূর্বক গুমের করুণ কাহিনীগুলো একের পর এক সামনে আসছে। পুরো অর্থনীতিকে এমন এক অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে যে তা প্রায় ধসে পড়ার পথে।

‘ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রায় অকার্যকর অবস্থায় ছিল। আমরা একটি শ্বেতপত্র কমিটি গঠন করেছি। আগের সরকারের কাছ থেকে আমরা কী অবস্থায় দায়িত্ব নিয়েছি তা কমিটি নথিভুক্ত করেছে। অর্থনীতি, বিভিন্ন বাধ্যবাধকতা- সবকিছু এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মেটাকে আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
প্রধান উপদেষ্টার ঐক্যের ডাকে ধর্মীয় নেতাদের একাত্মতা
২৮ দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সোমবার প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
আমরা বাংলাদেশি, আমরা এক পরিবার: প্রধান উপদেষ্টা
নতুন এই স্বাধীনতা অনেকের পছন্দ হচ্ছে না: প্রধান উপদেষ্টা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bureaucrats come before us in many forms which are problematic
নাগরিক সম্মেলনে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

আমলারা বহুরূপে আমাদের সামনে আসেন, যা সমস্যার

আমলারা বহুরূপে আমাদের সামনে আসেন, যা সমস্যার নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সিপিডি-র সম্মানীত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত
সিপিডি’র সম্মানীত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আজকে যিনি আমলা, কাল তিনি রাজনীতিবিদ, পরের দিন তিনি ব্যবসায়ী। ওনারা বহুরূপে এখন আমাদের সামনে আসেন। অনেক ক্ষেত্রে এই তিনটি একই হয়ে গেছে। এটাই তো সমস্যা হয়ে গেছে।’

‘আজকের আমলাই ভবিষ্যতের রাজনীতিবিদ বা ব্যবসায়ী। তারা এখন নানা পরিচয়ে মানুষের সামনে হাজির হন, যা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সোমবার নাগরিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

‘সুশাসনের জন্য জনকেন্দ্রিক সংস্কার: সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর আকাঙ্ক্ষা’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ৮ ও ৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), বাংলাদেশ এবং সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশনের (এসডিসি) সহযোগিতায় এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে দেবপ্রিয় বলেন, ‘আজকে যিনি আমলা, কাল তিনি রাজনীতিবিদ, পরের দিন তিনি ব্যবসায়ী। এটাই তো সমস্যা হয়ে গেছে। ওনারা বহুরূপে এখন আমাদের সামনে আসেন। অনেক ক্ষেত্রে এই তিনটি একই হয়ে গেছে।’

সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘কে বেশি ক্ষমতাধর- আমলা, রাজনীতিবিদ নাকি ব্যবসায়ী?’

এই প্রশ্নের জবাবে অংশগ্রহণকারীরা সমন্বরে বলেন- আমলারা।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘আমরা সারা বাংলাদেশ ঘুরে আলোচনা করেছি। সেসব আলোচনায় আমলাদের সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী হিসেবে বলা হয়েছে। কিন্তু সমস্যাটা হলো অন্য জায়গায়। অনেক ক্ষেত্রে এই তিন পরিচয় একই ব্যক্তির হয়ে গেছে।’

স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের পরামর্শ দেন তিনি। বলেন, স্বাধীন স্থানীয় সরকার কমিশন হলে সাধারণ অজুহাতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বরখাস্তের সংস্কৃতি রোধ করা যায় এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাজেট বরাদ্দ দেয়া যায়।

সিপিডির এই সম্মানিত ফেলো রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনি প্রতীক ব্যবহারের বিধান প্রত্যাহারের সুপারিশ করেন।

সিপিডির সম্মানীত ফেলো রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক রওনক জাহানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিডির আরেক সম্মানীত ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সোনালি দয়ারত্নে প্রমুখ।

আরও পড়ুন:
অর্থনীতির ওপর শ্বেতপত্র রোববার জমা দেয়া হবে: দেবপ্রিয়
বিগত সরকারে অধিকাংশ প্রকল্প অনুমোদনে রাজনৈতিক প্রভাব ছিল: দেবপ্রিয়
সংস্কারে অসমাপ্ত ও অপরিহার্য বিষয়কে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান দেবপ্রিয়র
দেশের উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি চায় এনজিওগুলো: দেবপ্রিয়
অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়নে ১০ সদস্যের প্যানেল অনুমোদন

মন্তব্য

বাংলাদেশ
ACC Judiciary became servant of Hasina Asif Nazrul

দুদক, বিচার বিভাগ হাসিনার দাসে পরিণত হয়েছিল: আসিফ নজরুল

দুদক, বিচার বিভাগ হাসিনার দাসে পরিণত হয়েছিল: আসিফ নজরুল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সোমবার দুদক আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। সূত্র: বাসস
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘গত ১৫ বছরে শুধু দুর্নীতিই দেখা গেছে। দুদক ছিল, উচ্চ আদালতও ছিল। তাহলে কোনো দুর্নীতির বিচার কেন হয়নি? কারণ, কেউ তার (শেখ হাসিনা) সামনে কিছু বলতে পারেনি। বরং দুদক, বিচার বিভাগ তার দাসে পরিণত হয়েছিল।’

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বিচার বিভাগ বিগত সরকারের দাসে পরিণত হয়েছিল; যে কারণে দুর্নীতি লাগাম ছাড়ালেও এর কোনো বিচার হয়নি।

‘আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দুদক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে আসিফ নজরুল বলেন, ‘তার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছে -এটা হাসতে হাসতে তিনি জাতির সামনে বলেছেন। বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি স্বীকৃত আদর্শে পরিণত হয়েছিল। কোনো বিচার তো হতোই না, বরং দুর্নীতি যে একটা খারাপ বা নেতিবাচক বিষয় সেটা ভাবার সংস্কৃতি পর্যন্ত চলে গিয়েছিল।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে দুদক সংস্কার হয়েছে। বার বার সংস্কারের মাধ্যমে এটিকে ক্ষমতায়িত করা হয়েছে। কিন্ত গত ১৫ বছরে শুধু দুর্নীতিই দেখা গেছে। দুদক ছিল, উচ্চ আদালতও ছিল। তাহলে কোনো দুর্নীতির বিচার কেন হয়নি? কারণ, কেউ তার (শেখ হাসিনা) সামনে কিছু বলতে পারেনি। বরং দুদক, বিচার বিভাগ তার দাসে পরিণত হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘বিচার হতো শুধু খালেদা জিয়ার। শুধুমাত্র মামলায় প্রক্রিয়াগত ভুলের কারণে তাকে ১০ বছরের জেল দেয়া হয়েছে।’

উপস্থিত দুদক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘এখন তো সময় পরিবর্তিত হয়েছে, কেউ কোনোরকম হস্তক্ষেপ করছে না। শতাধিক মন্ত্রী, ব্যবসায়ী গত আমলে চুরি করে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে।

‘আপনারা এখন সেগুলোর তদন্ত করে দেখিয়ে দিন যে ভালো পরিবেশ পেলে আপনারা কাজ করতে পারেন। দেখিয়ে দিন যে তাদের দুর্নীতি আপনাদের হৃদয় ও বিবেককে দূষিত করতে পারেনি। আর এটাই আপনাদের কাছে এখন সারাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা।’

একাত্তর ও জুলাই-আগস্টের শহীদদের আত্মত্যাগের মহিমা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সন্তানেরা নিজেদের রক্ত দিয়ে নতুন সময় আমাদের উপহার দিয়ে গেছে। আসুন, আমরা তাদের কাছ থেকে শিখি; বিবেককে কাজে লাগিয়ে দুর্নীতি থেকে দূরে থাকি ও তাদের প্রত্যাশার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকি।’

দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।

আরও পড়ুন:
অপরিহার্য কিছু সংস্কার শেষে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন: আইন উপদেষ্টা
ব্রেকিং প্রতিযোগিতায় গণমাধ্যম অনেক সময় অপতথ্য ছড়ায়: আইন উপদেষ্টা
ঢালাও মামলার ঘটনায় সরকার বিব্রত: আইন উপদেষ্টা
সাইবার নিরাপত্তা আইনের সঙ্গে মামলাও বাতিল হবে: আইন উপদেষ্টা
স্পিকারের প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব পালন করবেন আইন উপদেষ্টা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bangladesh India FOC meeting final statement coming

বাংলাদেশ-ভারত এফওসি বৈঠক শেষ, বিবৃতি আসছে

বাংলাদেশ-ভারত এফওসি বৈঠক শেষ, বিবৃতি আসছে
বাংলাদেশ ও ভারত ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে পারস্পরিক উদ্বেগ নিরসন এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সম্পর্ককে এগিয়ে নেয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বাংলাদেশ ও ভারত ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে পারস্পরিক উদ্বেগ নিরসন এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সম্পর্ককে এগিয়ে নেয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সোমবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত এফওসিতে পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন এবং সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি যথাক্রমে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।

বিকেলে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এছাড়া পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দীন বিকেল সাড়ে ৫টায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৃথক ব্রিফিং করবেন।

ফরেন অফিস কনসালটেশনসহ বেশ কয়েকটি বৈঠক করতে সোমবার সকালে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব।

শাহজালাল বিমানবন্দরে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া উইং) ইশরাত জাহান।

পররাষ্ট্র সচিব মিসরি আজ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে পারেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে দুই প্রতিবেশী দেশ যে ধরনের অচলাবস্থা প্রত্যক্ষ করেছে, বাংলাদেশ ও ভারত তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।

‘আমরা আশা করছি এই অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারব। এ ধরনের অচলাবস্থা নিরসনে পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপন ও সাক্ষাৎ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সেমিনারে তিনি বলেন, এটাও মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কে পরিবর্তন এসেছে এবং উভয় পক্ষকেই এই পরিবর্তিত বাস্তবতা মেনে নিয়ে সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, দ্বিপক্ষীয় ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে গত কয়েক মাসে দু'দেশের মধ্যে যে মন্দা দেখা দিয়েছে তা বাংলাদেশ ও ভারত উভয়কেই প্রভাবিত করেছে।

গত ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটাই ভারত সরকারের কোনো জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার প্রথম বাংলাদেশ সফর।

পররাষ্ট্র সচিবদের নেতৃত্বাধীন এফওসি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি কাঠামোগত সম্পর্ক।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব উপাদানকে আলোচ্যসূচিতে রাখার চেষ্টা সব সময় রয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The idea of ​​reorganizing the ACC is in the existing law

বিদ্যমান আইনেই দুদক পুনর্গঠনের চিন্তা

বিদ্যমান আইনেই দুদক পুনর্গঠনের চিন্তা দুদকের লোগো। ফাইল ছবি
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিচার বিভাগ-দুদক শেখ হাসিনার দাসে পরিণত হয়েছিল। সেই সময়ে এমপি-মন্ত্রীরা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।’

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, দুদকের অফিসাররা পদত্যাগ করার পর কাজকর্মে কিছুটা অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। এ অচলাবস্থা দূর করার জন্য অবিলম্বে দুদকে বর্তমান আইনেই নতুন কমিশন নিয়োগ দেয়ার চিন্তা সরকারের রয়েছে।

রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে সোমবার আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘৫ আগস্টের পরে দুদক একেবারেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। ফলে এখনও ভয়াবহ ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির খবর আমরা পাচ্ছি।

‘এটি আমাদের বন্ধ করতে হবে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত কমিশন দিয়ে হবে না। আমাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিশন গঠন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘দুদক সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান সাহেব অন্তর্বর্তীকালীন একটা অবস্থার কথা বলছেন, কিন্তু এটা করতে গেলে আবার আইন পরিবর্তন করতে হবে।

‘সমস্যা হলো এখন যদি পরিবর্তন করা হয়, তারপর যদি সংস্কার কমিশন চূড়ান্তভাবে আবার আইন পরিবর্তন করতে বলে, তাহলে বিষয়টি কেমন দেখায়? এখন কোনটি আসলে সর্বোত্তম হবে, এটি নিয়ে আমরা বিচার-বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’

এর আগে অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিচার বিভাগ-দুদক শেখ হাসিনার দাসে পরিণত হয়েছিল। সেই সময়ে এমপি-মন্ত্রীরা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

‘দুদকে বর্তমানে যারা কাজ করছেন, আপনারা সেই সব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে তদন্ত করুন; প্রমাণ করুন তাদের মাধ্যমে আপনাদের হৃদয় পরিবর্তন হয়নি। এখন তো কাজের সুযোগ এসেছে।’

শেখ হাসিনার আমলে প্রতিটি দপ্তরই অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‌‘ভূমি অফিসে নামজারি করতে গিয়েছি। সেখানে ১০ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছে আমার কাছে।

‘ভূমি অফিসে যে লোকজন ছিল, তাদেরকে কি শেখ হাসিনা বলে গিয়েছিল তোমরা ঘুষ নিবা? সবকিছুর দায় চোরের নেত্রীকে দিলেই হবে না, নিজেদের কথা চিন্তা করুন; আপনি নিজে কতটা সততার জায়গায় আছেন।’

আরও পড়ুন:
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল হত্যার ভিডিও দেখে গ্রেপ্তার ৬
সাইফুল হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি: উপদেষ্টা নাহিদ
আইনজীবী সাইফুল হত্যা: সুপ্রিম কোর্টসহ সব বারে বিক্ষোভ সমাবেশ
দুদকের মামলা থেকে জয়নাল আবদীন ফারুককে খালাস
শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় ৪ প্লাটুন বিজিবি

মন্তব্য

p
উপরে