বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) বিশেষ গণনিয়োগের ফল প্রকাশিত হয়েছে।
ফলাফল দেখা যাবে: http://ngi.teletalk.com.bd এবং www.ntrca.gov.bd ওয়েবসাইটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনটিআরসিএ সচিব মো. ওবায়েদুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ করা হয়েছে। ফলাফল এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। ৪৬৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬টি প্রতিষ্ঠানের ২৬টি পদ বাদ দেয়ার জন্য সেসিপের অনুরোধের প্রেক্ষিতে ৪৫২টি প্রতিষ্ঠানের ৬৬২টি পদের আবেদন বিবেচনা করা হয়।
‘মোট আবেদন ছিল ১৫ হাজার ১৯৮টি। ১০টি ট্রেডের মধ্যে প্লাম্বিং নামের একটি ট্রেডে কোনো আবেদন পাওয়া যায়নি। মোট ৬৬২টি পদের মধ্যে ৩৭১টি প্রতিষ্ঠানের ৪৭১টি পদে একজন করে প্রার্থীকে টেলিটকের স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার পদ্ধতিতে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘তবে ১৯১টি পদে প্রার্থী পাওয়া যায়নি৷ নির্বাচিত প্রার্থী ও প্রতিষ্ঠান প্রধানকে এসএমএস পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর নিয়োগ সুপারিশ করা হবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি প্রকল্পের ৬৮৮টি ইন্সট্রাক্টর পদের বিপরীতে ৫ আগস্ট গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। নিবন্ধনধারী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করেছেন।
১০টি বিষয়ে ৪৬৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য মোট ৬৮৮ জন শিক্ষক নিয়োগের কথা বলা হয়। সবগুলো পদই এমপিওভুক্ত।
যে সব বিষয়ে শিক্ষক নেয়া হবে
ফুড প্রসেস ও প্রিজারভেশন পদে ৫৮ জন, সিভিল কন্ট্রাকশনে ১৯ জন, জেনারেল ইলেকট্রিক ওয়ার্কে ১৯৩ জন, ড্রেস মিসিংয়ে ৪৪ জন, কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরশন টেকনোলজিতে ২৪২ জন, জেনারেল মেকানিকে ২২ জন, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৩৪ জন, পাম্পিং অ্যান্ড পাইপ ফিটিংয়ে ১৮ জন এবং ওয়েডিং অ্যান্ড ফিব্রিকেশনে পাঁচ জন।
আরও পড়ুন:স্নাতক পাস না করেও স্নাতকোত্তরে ভর্তি এবং চূড়ান্ত পরীক্ষায় পাস করে সনদ নিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ওই ছাত্রের স্নাতকোত্তরের সনদ বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৬তম একাডেমিক কাউন্সিলে এ সিদ্ধান্ত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫৮তম সিন্ডিকেট সভায় এটি পাস হয়।
তবে অভিযুক্ত শামীরুল ইসলামকে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষার সুযোগ দেয়া হয়েছে। তিনি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।
সভায় উপস্থিত একাধিক সদস্য সূত্রে জানা যায়, সভায় সব শিক্ষকের মতামতের ভিত্তিতে মানবিক দিক বিবেচনায় বিশেষ ব্যবস্থায় শামীরুল ইসলামের স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এ পরীক্ষায় পাস করলে আবার স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে পারবেন তিনি। পরীক্ষার দিনক্ষণ পরে বিভাগ থেকে জানিয়ে দেয়া হবে।
শামীরুল ইসলাম ২০১৭ সালে স্নাতক শেষবর্ষের পরীক্ষায় অংশ নেন।
পরে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে এমবিএ কোর্সে ভর্তির সুযোগ পান এবং ২০১৮ সালে তিনি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
কিন্তু মূল সনদ তুলতে এসে বিপাকে পড়েন শামীরুল। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি তিনি জানতে পারেন স্নাতক শেষ বর্ষের ফলাফলে ৪১৫ নম্বর কোর্সে তিনি অকৃতকার্য হয়েছিলেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান জানান, সিন্ডিকেটে ওই ছাত্রের সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে ওই পত্রে উপাচার্য এখনও সই করেননি।
ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পায়।
শামীরুল ইসলাম বলেন, ‘মূল সনদ তুলতে গিয়ে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি জানতে পারি স্নাতকের একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছিলাম। এর আগে বিষয়টি আমাকে জানানো হয়নি। এমনকি বিভাগ থেকেও কিছু জানায়নি।’
শামীরুল দাবি করেন, ‘এর আগে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সাময়িক সনদপত্র উত্তোলন করি। সেখানে আমাকে কৃতকার্যই দেখানো হয়। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে ডেকেছিল। আমি সব প্রমাণ সেখানে উপস্থাপন করি।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্নাতকের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরই স্নাতকোত্তরে পাঠদান শুরু হয়ে যায়। ফলাফল পরে প্রকাশ করা হয়।
শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব ফলাফল পেয়ে খারাপ করা বিষয়গুলোতে মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেয়া।
তবে অভিযুক্ত ছাত্র তার অকৃতকার্য বিষয় এড়িয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রেখেছিলেন।
আরও পড়ুন:নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তা অবশ্যই বিচারিক প্রক্রিয়ায় আসতে হবে বলে মনে করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
সমিতির নেতারা বলছেন, ড. মুহম্মদ ইউনুস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন। কিন্তু তাই বলে তিনি আইনের ঊর্ধ্বে নন। তিনি দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং-এর সাথে জড়িত না হলে নিশ্চয়ই আইনি প্রক্রিয়ায় সেটি প্রমাণিত হবে। এটিই সভ্য সমাজের রীতি।
ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে মামলা করাকে আইনের শাসন ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপ দাবি করে এর বিরুদ্ধে যারা বিবৃতি দিয়েছে তাদের এই কাজকে অশুভ তৎপরতা মন্তব্য করে এ ঘটনার নিন্দা এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
বুধবার রাতে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।
সম্প্রতি গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাতের ব্যাপারে অভিযোগ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করে ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাত ও মানিলন্ডারিংয়ের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে ড. মুহম্মদ ইউনুসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে।
শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে বলা হয়, তথাকথিত কিছু কিছু সংগঠন বিবৃতির মাধ্যমে ইউনূসের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় যে প্রতিবাদ করেছে তা আইনের শাসনের পরিপন্থা ও দুরভিসন্ধিমূলক। কেননা, তারা যে রাজনৈতিক দর্শনে বিশ্বাসী সেই রাজনেতিক দর্শনটি হত্যা-ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আইনের শাসন আর গণতন্ত্রকে হত্যার মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত অর্জনকে পদদলিত করে এদেশকে দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল। এদের নেতার দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং বিচারের মাধ্যমে প্রমাণিত।
শিক্ষক সমিতির নেতারা বলেন, এই ষড়যন্ত্রের শিকড় যে আরো গভীরে প্রোথিত তা স্পষ্ট হয়েছে বিবৃতিদাতাদের প্রদত্ত তথ্যে। ১৯৭৮ সালে একজন অবৈধ সামরিক স্বৈরশাসকের প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি পুরস্কারই প্রমাণ করে ড. মুহম্মদ ইউনুসের সাথে তাদের সম্পর্ক অনেক পুরানো। মূলত বাংলাদেশ বিরোধী প্রচার-প্রচারণা ও বিরাজনীতিকরণের ধারা প্রতিষ্ঠার অনুঘটকদের সাথে ড. ইউনুসের রয়েছে দীর্ঘদিনের সখ্যতা।
এতে বলা হয়, এ কারণেই প্রফেসর ইউনুসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার প্রতিবাদ করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির কথা তুলে এনে বস্তুত অর্থে তারা ঘোলাজলে মাছ শিকারের অপতৎপরতার বিষয়টিই স্বীকার করে নিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিএনপি-জামায়াততের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অপকৌশল এবং ষড়যন্ত্রের কারণে ওয়ান-ইলেভেন সৃষ্টি এবং ধোঁয়াশাচ্ছন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে অকার্যকর করে ভূঁইফোড় রাজনৈতিক দল গঠন করে এসব ব্যক্তিদের ক্ষমতার মসনদে বসানোর অশুভ তৎপরতা কারা চালিয়েছিল তা জাতি ভুলে যায়নি।
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশি-বিদেশি এসব চক্র আবারও অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে বলেও দাবি করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এ সব চক্রান্তকারীদের ব্যাপারে দেশপ্রেমিক নাগরিকদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক সমিতির নেতারা বলেন, নির্দোষ কোনো মুক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি। একই সাথে ব্যক্তির পরিচয় বিবেচনায় না নিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় জিরো টলারেন্স নীতিতে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় একজন পুলিশ সদস্য, একজন সহকারী প্রক্টরসহ অন্তত ১০ আহত হয়েছে।
বুধবার রাত সোয়া ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের সামনে একটি হোটেল এ সংঘর্ষ শুরু হয়। রাত পৌনে ১২টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে।
বিবাদমান দুটি পক্ষ হলো শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিক্সটি-নাইন ও সিএফসি। এদের মধ্যে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা সাবেক সিটি মেয়র আ.জ. ম. নাছির উদ্দিন ও সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, হলের সামনের একটি হোটেলে খাবার টেবিলে বসাকে কেন্দ্র করে সিএফসি ও সিক্সটি নাইনের কর্মীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে সেটি দুই গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে রুপ নেয়।
ঘণ্টাব্যাপী দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এসময় সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা শাহজালাল হল ও সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা শাহ আমানত হলে অবস্থান নেয়। থেমে থেমে চলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ।
ঘণ্টাব্যাপী ইটপাটকেল নিক্ষেপে অন্তত ৮ কর্মী আহত হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিজানুর রহমান ও সহকারী প্রক্টর আহসানুল কবীর পলাশ ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। একজন পুলিশ সদস্য ও আমাদের একজন সহকারী প্রক্টর আহত হয়েছেন।’
সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘আমরা খোঁজখবর নিয়ে দেখব কারা কারা জড়িত। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
সিএফসি গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সাদাফ খান বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। আমরা ওদের সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে একটা সমাধানে যাচ্ছি। আমাদের গ্রুপের ছয়জন আহত হয়েছেন।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির কারণে দেশের বাইরে পড়তে যেতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। তবে নির্বাচনে ষড়যন্ত্রকারীদের সাবধান থাকতে হবে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
বুধবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রবীন্দ্র কাচারি বাড়িতে সিআরআই ও ইয়াং বাংলার উদ্যোগে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন শিক্ষামন্ত্রী। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি দেশটিতে পড়তে যেতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াবে কি না- এমন প্রশ্নে জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যেতে চান, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই। সাবধান থাকতে হবে তাদের যারা ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন বয়কট করে; নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করে এবং নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দেশের মানুষের সাধারণ মানুষের জান-মালের ক্ষতি করে।
‘আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। গণতান্ত্রিক পন্থায় বাংলাদেশে নির্বাচন করে আসছি। আগামীতেও স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন হবে।’
শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ডিপিপির কাজ শেষ হয়েছে। সেটি মূল্যায়ন চলছে। এটি একনেকে আসলে তবেই চূড়ান্ত রূপ পাবে।’
সেটি খুব শীঘ্রই তারা করবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
উচ্চশিক্ষায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হার কমে যাবার প্রশ্নে দীপু মনি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবশ্যই খতিয়ে দেখব। এখন উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ডিগ্রি পাশ করেও অন্য কোনো বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। এছাড়া অনেক ডিপ্লোমা কোর্সেরও ব্যবস্থা রয়েছে।
শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর শাহ আজম, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনসহ সিআরআই ও ইয়াং বাংলার সদস্যরা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত মঙ্গলবার রাতে নগরীর কাটাখালি এলাকা থেকে তাকে আটক করে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার হাসিবুল ইসলাম শান্ত রাবির শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও নাটোর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিজয় কুমার বসাক বলেন, ‘মঙ্গলবারে আটক প্রক্সিদাতাদের তথ্য অনুযায়ী আমরা নগরীর কাটাখালি এলাকা থেকে হাসিবুল ইসলাম শান্তকে গ্রেপ্তার করি।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন পরীক্ষায় জালিয়াতি ও অন্যের হয়ে প্রক্সি দেয়ার অভিযোগে সাতজনকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে বুধবার সকালে ছাত্রলীগ নেতা শান্তসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নগরীর মতিহার ও চন্দ্রিমা থানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে মামলাগুলো করেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম। তাদের মধ্যে নয়জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, হাসিবুল ইসলাম শান্ত প্রক্সিদাতাদের সঙ্গে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে অন্যের হয়ে পরীক্ষা দেয়ার চুক্তি করেন। মঙ্গলবার আটক প্রক্সিদাতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা এ তথ্য জানান।
এ বিষয়ে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘আমরা কিছুক্ষণ আগে বিষয়টি জানলাম। যদি তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকেন তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ভোট শুরু হয়। অনুষদের ১৫৮ জন শিক্ষক এ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন।
সিনিয়র প্রতিনিধি পদে ১ জন, আহ্বায়ক পদে ১ জন ও যুগ্ম আহ্বায়ক পদে ২ জনসহ মোট ৪টি পদে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ৭৭ ভোট পেয়ে সিনিয়র প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হাসান আল শাফী। এ পদে বাকি প্রার্থীদের মধ্যে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিককতা বিভাগের অধ্যাপক আবুল মনসুর আহমেদ পেয়েছেন ১৫ ভোট, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান পেয়েছেন ৬৪ ভোট।
৯৬ ভোট পেয়ে আহ্বায়ক পদে নির্বাচিত হয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী। বাকি প্রার্থীদের মধ্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চক্রবর্তী পেয়েছেন ৪১ ভোট, ওমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ পেয়েছেন ১১ ভোট ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের ড. কাজী শাহেদুল হালিম পেয়েছেন ৮ ভোট।
যুগ্ম আহ্বায়কের দুই পদে সবচেয়ে বেশি ভোট অর্থাৎ ১০৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবিএম নাজমুস সাকিব ও ৮৫ ভোট পেয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শারমীন ভূঞা। এ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বাকি প্রার্থীদের মধ্যে জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম পেয়েছেন ৩৪ ভোট আর টেলিভিশন ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের এসএম ইমরান হোসেন পেয়েছেন ৪০ ভোট।
আরও পড়ুন:রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে দুই যুবককে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ভর্তি পরীক্ষার দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সকালে ‘এ’ ইউনিটের প্রথম শিফটের পরীক্ষা চলাকালে সন্দেহজনকভাবে তাদের আটক করা হয়।
পরে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা প্রক্সি দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন।
আটক দুজন হলেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার আব্দালপুর গ্রামের বাসিন্দা হোসাইন এবং নওগাঁ জেলার বদলগাছি থানার চকগোপিনাথ গ্রামের বাসিন্দা স্বপন হোসাইন। স্বপন রাবির লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে বলেন, ‘আমরা সন্দেহজনকভাবে দুইজনকে আটক করেছি। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।’
মন্তব্য