লকডাউন শেষ হয়ে গেলেও করোনার সময় সংকটে পড়া উত্তরাঞ্চলের হোটেল-রেস্টুরেন্ট ব্যবসার নাজুক হাল এখনও কাটেনি। লাখ লাখ টাকা ভর্তুকি দিয়ে চালানো হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। করোনা পরিস্থিতিতে কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বেতনও অর্ধেক করা হয়েছে। প্রায় সব রেস্টুরেন্টে অর্ধেক কর্মচারী ছাঁটাই করাও হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ থেকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পর্যন্ত ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের কয়েকটি হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
রংপুর, লালমনিরহাট বা পঞ্চগড়ে উল্লেখযোগ্য কোনো হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট নেই। তবে উত্তরাঞ্চলের মধ্যে হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের জন্য সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল মোড় এলাকা বিখ্যাত। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে এ এলাকা দিয়ে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলা এবং খুলনা বিভাগের কয়েকটি জেলার দূরপাল্লার বাসসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এই সেতুর ওপর দিয়ে ২৪ ঘণ্টায় সাধারণ সময়ে ২৫ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করে।
উত্তরাঞ্চল বা দক্ষিণের সব গাড়ি যাত্রাবিরতি দেয় সাধারণত হাটিকুমরুল মোড়ের কয়েকটি হোটেল বা রেস্টুরেন্টে। যাত্রীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সেখানে ‘ভিআইপি’ মানের একাধিক রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। সারা রাত খোলা থাকে হোটেলগুলো। এখানে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বেচাকেনা হয়। এতে অনেক মানুষের জীবিকার পথও খুলেছে।
তবে জমজমাট ব্যবসা বদলে গেছে বিশ্বকে নাজেহাল করা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় থেকে। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর কয়েক দফায় বিধিনিষেধ দেয়া হয় গণপরিবহনের চলাচলে, বন্ধ করা হয় দোকানপাট।
এর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে হাইওয়ে রেস্টুরেন্টগুলোর ওপর। লোকসান এড়াতে ছোট ছোট রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়। বড় রেস্টুরেন্টে করা হয় কর্মী ছাঁটাই।
প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক-কর্মকর্তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উত্তরাঞ্চলে ঢাকা-সিরাজগঞ্জ ও ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করে আসছে ফুড ভিলেজ। এসআর গ্রুপের এই প্রতিষ্ঠানের দুটি রেস্টুরেন্ট। একটি বগুড়ার দক্ষিণ সীমানায় ধনকুণ্ডি এলাকায় ১৮ বিঘা জমিতে, যা ২১ বছর আগে গড়ে তোলা হয়। আরেকটি গড়ে উঠেছে প্রায় ৬ বিঘা জমিতে হাটিকুমরুল এলাকায়। চলতি বছর করোনার কারণে প্রায় তিন মাস বন্ধ ছিল রেস্টুরেন্ট। কর্মকর্তারা জানান, এতে তাদের প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ফুড ভিলেজে প্রায় এক যুগ ধরে চাকরি করছেন আশরাফুল ইসলাম সেলিম। তিনি বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক। নিউজবাংলাকে আশরাফুল বলেন, ‘করোনার প্রভাব দেখা দেয়ার পর থেকেই দেশের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধুঁকে ধুঁকে চলছে। দেশে বিভিন্ন সময় সরকারি বিধিনিষেধ আরোপের পর রেস্টুরেন্ট কার্যত বন্ধ রাখতে হয়েছে। তারপরও কিছু খরচ ঠিকই হয়েছে।
‘তবে মালিকপক্ষ প্রথম থেকেই অর্ধেক শ্রমিক রেস্টুরেন্টে রেখেছে। শিফট করে কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে অবশ্য অনেকে পেশা বদল করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘লোকসান কমাতে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের বেতনও অর্ধেকে নামিয়েছে। কারণ প্রতি মাসে এই রেস্টুরেন্টে অন্তত অর্ধকোটি টাকা শ্রমিকদের বেতন দিতে হতো। লকডাউন তুলে দেয়ার পরও পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি। কারণ সাধারণ মানুষ আগের মতো করে এখনও রাস্তায় বের হয়নি। হলেও রেস্টুরেন্টমুখী কম। এ কারণে ব্যবসা নেই বললেই চলে। আশা করা হচ্ছে কোনো সমস্যা না থাকলে আগামী তিন মাসের মধ্যে আগের অবস্থায় ফেরা সম্ভব হবে।’
একই এলাকার ওভি হাইওয়ে ভিলা করোনার পর চালুই হয়নি। এই প্রতিষ্ঠানে করোনার আগে ৪০০ শ্রমিক ছিল। এখন কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে। তবে রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকার কারণে কোনো শ্রমিকের বেতন হয় না।
এই রেস্টুরেন্টের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘করোনার কারণে রেস্টুরেন্ট বন্ধ রাখা হয়েছে। শ্রমিকদের কাজ নেই, বেতনও দেয়া হয়নি। অনেকে ক্ষোভে চাকরি ছেড়েছেন। সরকারের তরফ থেকে একাধিকবার তালিকা নেয়া হলেও কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি।’
এ বিষয়ে ওভি হাইওয়ে ভিলা রেস্টুরেন্টের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার কারণে দেশের সব রেস্টুরেন্টের ব্যবসার অবস্থা খারাপ। সবাইকে বিভিন্ন সংকট মেনে কাজ করতে হচ্ছে।’
লকডাউনে শ্রমিকদের বেতন বন্ধের কথা স্বীকার করলেও এ নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি এই কর্মকর্তা।
মহাসড়কের হাটিকুমরুল এলাকায় ২০ বছরের বেশি সময় ধরে আছে অ্যারিস্টোক্র্যাট নামের রেস্টুরেন্টটি। এখানে ১০০ শ্রমিক-কর্মকর্তা কাজ করেন। করোনার সময় এই প্রতিষ্ঠানের কাউকে ছাঁটাই করা না হলেও বেতন কমানো হয়েছে। তবে চলতি মাস থেকে শ্রমিকদের বেতন আবার স্বাভাবিক করা হয়েছে।
অ্যারিস্ট্রোক্র্যাটের ব্যবস্থাপক শেখ গোলাম রহমান বলেন, ‘চাকরি জীবনে এমন পরিস্থিতির মুখে কখনও পড়তে হয়নি। ১২ বছর চাকরি করা অবস্থায় কাস্টমারের এত সংকট কখনও দেখা দেয়নি।
‘এখন রেস্টুরেন্ট চালালে কোনো মতে খরচের টাকা উঠছে। তবে মালিকের কোনো লাভ হচ্ছে না। করোনা চললে আদৌ লাভের মুখ দেখা যাবে কি না, তাও বলা যাচ্ছে না।’
বগুড়ার শাজাহানপুরে ছোট পরিসরে গড়ে ওঠা জব্বার হোটেল কম সময়েই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। করোনায় তাদের অবস্থায়ও নাজুক। এই প্রতিষ্ঠানের ৫০ শ্রমিককে ছাঁটাই করা না হলেও রেস্টুরেন্ট বন্ধের সময় কাউকে বেতন দেয়া হয়নি।
এই রেস্টুরেন্টের অন্যতম মালিক শাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘করোনায় সবাই মিলে বাঁচার চেষ্টা করা হচ্ছে। মহামারির ওপর তো কারও হাত নেই।’
গাইবান্ধার অন্যতম বন্দর গোবিন্দগঞ্জ। বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের ওপর এখানে মায়ামনি রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে কয়েক বছর হলো। পঞ্চগড়-নীলফামারী থেকে আসা কিছু পরিবহন এখানে যাত্রাবিরতি দেয়।
এই প্রতিষ্ঠানের মালিক বাবুল লাল চৌধুরী বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলে ভালোমানের হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট বিবেচনা করা হলে, সেগুলো হাটিকুমরুলে গড়ে ঊঠেছে। করোনায় তাদের মতোই আমাদের অবস্থা। লকডাউনের পর রেস্টুরেন্ট খোলা থাকলেও বিক্রি নেই। অথচ মাসে শ্রমিকদের সাড়ে চার লাখ টাকা বেতন দিতে হয়। সরকারি কোনো অনুদানও মিলছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে পথে বসা ছাড়া উপায় থাকবে না।’
উত্তরাঞ্চলের রেস্টুরেন্ট মালিকদের কোনো সংগঠন নেই। তবে বগুড়ায় আছে হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এর সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান নিশাদ বলেন, ‘করোনাকালে এই খাতে কোটি কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। অনেকে ব্যবসা বন্ধ করেছে। মহামারি করোনার সময় সব দিক বিবেচনা করা দরকার।
‘মালিকরা লোকসানে নাজেহাল হওয়ার পর টিকে থাকার জন্য শ্রমিকদের ছাঁটাই করেছেন। এখন সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে খোঁজ নিয়ে এসব শ্রমিকদের জীবিকার ব্যবস্থা করতে হবে।’
আরও পড়ুন:নাটোরের নলডাঙ্গায় এক স্কুলছাত্রকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো হিমেল হোসেন (১৫) উপজেলার পিপরুল গ্রামের ফারুক সরদারের ছেলে। সে পাটুল-হাপানিয়া স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নলডাঙ্গা থানার ওসি মো. মনোয়ারুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে হিমেলকে তার সহপাঠী ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। এরপর থেকে হিমেলের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান তার স্বজনরা। পরে রাত হলেও বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন এবং বিষয়টি পুলিশকে জানান।
ওসি বলেন, পুলিশ হিমেলকে উদ্ধারে অভিযানে নামে। অভিযানে হিমেলের বন্ধু পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পার্থের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় হিমেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হিমেলের মাথায় আঘাত, গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় মেহেদি, শিমুল ও সুজন নামে আরও তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী সীমান্তে পায়ুপথে স্বর্ণের বার পাচারের ঘটনায় একজনকে আটক করেছে খুলনা-২১ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা।
মসজিদবাড়ী এলাকার বিজিবি চেকপোস্টের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
আটক হওয়া মনোর উদ্দিনের বাড়ি বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী গ্রামে।
খুলনা-২১ বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘খুলনা-২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পুটখালী ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে সীমান্তের মেইন পিলার ১৭ এর ৭ এস এর ১৬৮ আর পিলার হতে ৫০০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে মসজিদবাড়ী বিজিবি চেকপোস্ট এলাকায় গোপন অবস্থান করে।
‘স্বর্ণ পাচারকারী মনোর উদ্দিন একটি ইজিবাইকে করে স্বর্ণের চালানটি ভারতে পাচারের উদ্দেশে সীমান্তের দিকে যাচ্ছিল। তখন মনোর উদ্দিনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রথমে তার শরীর তল্লাশি করে কোনো স্বর্ণ পাওয়া যায়নি। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্বীকার করে তার পায়ুপথে স্বর্ণের বারগুলো আছে।
‘এ সময় তাকে আটক করে বেনাপোল বাজারে রজনী ক্লিনিকে শরীর স্ক্যানিং করে পায়ুপথে ছয় পিস স্বর্ণের বারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তারপর তার কাছ থেকে স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়, যার ওজন ৭০০ গ্রাম।’
খুলনা-২১ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খুরশিদ আনোয়ার স্বর্ণসহ এক পাচারকারী আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উদ্ধারকৃত স্বর্ণের চালানটি যশোর ট্রেজারিতে আছে। আটক ব্যক্তিকে বেনাপোল পোর্ট থানায় পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:আগামী জুনের মধ্যে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করবে সরকার। সে জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেন, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কেউ যেন প্রতারিত না হয় কিংবা কেউ যেন প্রতারণা না করতে পারে সে জন্য সরকার সব ব্যবস্থা নেবে। আগামী জুনের মধ্যেই ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরিদর্শন করেছি। সেখানে খুব ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, তবে এ বছর নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম।’
এ সময় প্রতিমন্ত্রী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ও শেষ ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় আজ। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে লিখিত পরীক্ষা।
এ ধাপে কুমিল্লা জেলায় ৩২ হাজার ১৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে নারী ১৪ হাজার ৭৬৭ জন এবং পুরুষ ১৭ হাজার ৪৩২ জন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার বরুড়ায় ভাইকে হত্যার দায়ে ছোট ভাই, বোন ও ভগ্নিপতিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উপজেলার শালুকিয়া গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে বুধবার সকালে নিজ বসতঘর থেকে শরিফ হোসেন (৩৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন শরিফের ছোট ভাই আরিফ হোসেন, বড় বোন খুকি আক্তার ও ভগ্নিপতি নাছির উদ্দিন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর বুধবার নিহত শরীফের মা বরুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল বলেন, ‘শরীফ মাদকাসক্ত ছিল। কিছুদিন আগে শরীফ মাদকের টাকা যোগাড়ের জন্য ভাই আরিফের অটোরিকশা বিক্রি করে দেয়। মাদকের টাকার জন্য মাকেও মারধর করত সে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে শরিফের ছোট ভাই আরিফ ও তার বোন খুকি মিলে পরিকল্পনা করে শরীফকে পঙ্গু করে ঘরে রেখে দেবে। বাকি জীবন তাকে ঘরে বসিয়ে খাওয়াবে। পরিকল্পনা মোতাবেক ২৬ মার্চ রাত ১ টার দিকে পুকুরপাড়ে শরীফকে হাত পা বেঁধে পেটানো হয়। বাড়িতে এনে আরেক দফা পেটানো শেষে হাত পা বেঁধে ঘরের ভেতর ফেলে রাখা হয়। এ অবস্থায় শরীফ মারা যায়।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল জানান, তথ্য প্রযুক্তিসহ নিজস্ব গোয়েন্দা ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের আদালতে প্রেরণ করলে সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার শহরে বুধবার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ভেতরে গ্রাহককে অজ্ঞান করে ৮১ হাজার টাকা লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তানভীর হাবিব চৌধুরী রুমেল নামের ওই গ্রাহক মৌলভীবাজার মডেল থানায় অভিযোগটি করেন।
ব্যাংকের ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, বুধবার বেলা ১১টা সাত মিনিটে ঘটনাটি ঘটে।
অভিযোগের বিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি কে এম নজরুল বলেন, ‘মৌলভীবাজারের শহরের সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসিতে বুধবার সকালে ১১টার দিকে প্রবাস থেকে আসা টাকা তুলতে যান ব্যবসায়ী তানভীর। দুই লাখ টাকা তুলে তানভীর এক হাজার টাকার নোট দেয়ার জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাকে বলেন। এ সময় ব্যাংক কর্মকর্তা এক হাজার টাকার বান্ডিল দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে তাকে ৫০০ টাকা নোটের বান্ডেল প্রদান করেন।
‘তখন কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একজন রুমেলকে বলেন, তিনি এক হাজার টাকার বান্ডেল এক্সচেঞ্জ করবেন। তখন রুমেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তিনি গুনতে থাকেন। টাকা হাতে নেয়ার পর রুমেল কিছু সময়ের জন্য অজ্ঞান অনুভব করেন। তখন ওই চক্র ৮১ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।’
অভিযোগকারী রুমেল বলেন, ‘ওই ব্যক্তির হাতে থাকা টাকার বান্ডেল আমাকে গুনতে দিয়ে আমাকে একটি চেয়ারে নিয়ে বসান। আমি টাকা হাতে নেয়ার পর নিস্তেজ অনুভব করি। সবকিছু আমার কাছে কিছু সময়ের মধ্যে এলোমেলো মনে হয়। প্রায় পাঁচ মিনিট পরে একটু স্বাভাবিক হলে গুনে দেখি, তারা আমার কাছ থেকে ৮১ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।
‘পরবর্তী সময়ে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, তারা ১১টা সাত মিনিটে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যায়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে ওই চক্রের ছবি শনাক্ত করা হয়।’
ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসির মৌলভীবাজার শাখা ব্যবস্থাপক আবদুল কাদের বলেন, ‘সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখলাম, ব্যাংকের একজন গ্ৰাহকের সঙ্গে কয়েকজন লোক গল্পগুজব করে উনার সঙ্গে বিদায় নিয়ে চলে গেছে। এরপর তিনি বুঝতে পারেন, উনার টাকা নিয়ে চলে গেছে। তিনি পুলিশে অভিযোগ করেন।’
মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি কে এম নজরুল বলেন, ‘একজন ব্যাংক গ্ৰাহক অভিযোগ করেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।’
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় নদীতে গোসল করতে নেমে বজ্রপাতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চর বাউশিয়া বড়কান্দি গ্রাম সংলগ্ন গোমতী নদীতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। প্রাণ হারানো শাহেদ (১৪) ওই গ্রামের মোশারফ মিয়ার ছেলে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিকেলে গোমতী নদীতে বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করতে যায় শাহেদ। ওই সময় হঠাৎ করে বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতে মারা যায় সে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠালে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানা যায়, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাদের হাসপাতালে শাহেদকে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) আজাদ রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত রয়েছি, নিহতের লাশ গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে।’
নিহতের পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীতে মোটরসাইকেলে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় এক প্রবাসী যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা শহর মাইজদীর টোকিও ফুডসের সামনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো আনোয়ার হোসেন অনিক (২২) কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ জগদানন্দ গ্রামের মাজারুল হক মন্টু মিয়ার ছেলে।
সুধারাম থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি বলেন, আবুধাবি প্রবাসী অনিক দুই মাস আগে দেশে এসে বিয়ে করেন। সন্ধ্যায় বন্ধুদের ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে মোটরসাইকেলে গ্রামের বাড়ি থেকে জেলা শহর মাইজদীতে আসেন তিনি। ওই সময় মাইজদীর টোকিও ফুডসের সামনে রাস্তার উল্টোপথে যাওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য