বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন আশা জাগাচ্ছে কৃষিপণ্য। করোনা মহামারির মধ্যেই গত অর্থবছরে এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের মাইলফলক অতিক্রম করেছে এই খাত। চলতি অর্থবছরেও সেই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে।
চলতি বাজেটে কৃষিপণ্যের ছয় খাতে ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা দেয়া হয়েছে; তার প্রভাবে রপ্তানি আরও বাড়বে বলে আশা করছেন রপ্তানিকারকরা।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ১০ বছর আগে ২০১০-১১ অর্থবছরে কৃষিপণ্য রপ্তানি থেকে ৪০ কোটি ডলার বিদেশি মুদ্রা দেশে এসেছিল। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে তা আড়াই গুণের বেশি বেড়ে ১০২ কোটি ৮১ লাখ ডলারে পৌঁছে।
বর্তমান বাজারদরে টাকার হিসাবে (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ২০ পয়সা) এই অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের হিস্যাই বেশি।
গত চার বছর ধরে খাতটির রপ্তানি আয় বাড়ছে। অবশ্য করোনার কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরে এ খাতের রপ্তানি ৫ শতাংশ কমেছিল। সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে খাতটির রপ্তানি আয় ১৯ শতাংশ বেড়ে প্রথমবারের মতো ১ বিলিয়ন ডলারের ‘ঘর’ অতিক্রম করে। যদিও পুরো বছরটিই করোনা মহামারির মধ্যেই কেটেছে।
গত অর্থবছরে এ খাত থেকে আশাব্যঞ্জক বিদেশি মুদ্রা আসার পর ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১১০ কোটি ৯২ লাখ ডলার।
ইপিবির হালনাগাদ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, অর্থবছরের শুরুটা বেশ ভালোভাবেই হয়েছে। প্রথম দুই মাসে অর্থাৎ জুলাই-আগস্ট সময়ে কৃষিপণ্য রপ্তানি থেকে ২০ কোটি ৭২ লাখ ৩০ হাজার ডলার আয় হয়েছে। টাকার হিসাবে এই অর্থ ১ হাজার ৭৬৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
এই দুই মাসে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি বিদেশি মুদ্রা দেশে এসেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ।
যেসব পণ্য রপ্তানি
কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের মধ্যে বেশি রপ্তানি হয় রুটি, বিস্কুট ও চানাচুরজাতীয় শুকনা খাবার, ভোজ্যতেল ও সমজাতীয় পণ্য, ফলের রস, বিভিন্ন ধরনের মসলা, পানীয় এবং জ্যাম-জেলির মতো বিভিন্ন সুগার কনফেকশনারি।
বিস্কুট, রুটিজাতীয় শুকনা খাবার রপ্তানি করে বিদায়ী অর্থবছরে দেশীয় কোম্পানিগুলো ২৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার আয় করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৪৬ শতাংশ বেশি। এর বাইরে চা, শাকসবজি ও ফলমূলও রপ্তানি হয়েছে।
একসময় চা রপ্তানি করে বেশ ভালোই আয় করত বাংলাদেশ। কিন্তু এখন তা তলানিতে নেমে এসেছে। গত অর্থবছরে মাত্র ৩৫ লাখ ৬০ হাজার ডলারের চা রপ্তানি হয়েছে।
তবে এখন শাকসবজি রপ্তানি থেকে বেশ আয় করছে বাংলাদেশ। প্রতিবছরই বাড়ছে এ খাতের রপ্তানি। গত অর্থবছরে ১১ কোটি ৮৭ লাখ ৩০ হাজার ডলারের বিদেশি মুদ্রা এসেছিল শাকসবজি রপ্তানি থেকে। এবার লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১২ কোটি ডলার। জুলাই-আগস্ট মাসে এসেছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১০২ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যের চেয়ে বেশি ৩৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
জুলাই-আগস্ট সময়ে শুকনা খাবার রপ্তানি করে ৫ কোটি ১৩ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। তামাক রপ্তানি করে এসেছে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। মসলা রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে প্রায় ১ কোটি ডলার।
মোট রপ্তানির ১৬ শতাংশই করে প্রাণ
কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) তথ্য অনুযায়ী, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে বড় ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান আছে ২০টি। এগুলোর সবাই কম-বেশি রপ্তানি করছে। কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রপ্তানিতে বর্তমানে ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা দিচ্ছে সরকার।
কৃষিপণ্যের রপ্তানির বড় অংশ করে প্রাণ গ্রুপ। ২০২০-২১ অর্থবছরে তাদের রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা (৩৪ কোটি ১০ লাখ ডলার), যা এ খাতের মোট রপ্তানির ৩৩ দশমিক ১৬ শতাংশ।
১৯৯৭ সালে ফ্রান্সে খাদ্যপণ্য রপ্তানি শুরু করা এই শিল্পগোষ্ঠী বর্তমানে ইউরোপ-আমেরিকা, পাশের দেশ ভারতসহ ১৪৫টি দেশে পণ্য রপ্তানি করছে। ফ্রুট ড্রিংক, পানীয়, বিস্কুট, সস, নুডলস, জেলি, মসলা, সুগন্ধি চাল, পটেটো ক্র্যাকার, চানাচুর, ঝাল-মুড়ি ইত্যাদি পণ্য রপ্তানি করছে প্রতিষ্ঠানটি।
রপ্তানি আরও বাড়বে
আগামী দিনে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের চাহিদা আরও বাড়বে বলে আশার কথা শুনিয়েছেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের সম্ভাবনা ব্যাপক। তৈরি পোশাক মানুষ যেমন গ্রহণ করছে, তেমনি তৈরি খাদ্যও মানুষ কিনছে ও খাচ্ছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই প্রচুর পরিমাণে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য উৎপাদিত হয় না। তারা মূলত আমদানিনির্ভর। সব মিলিয়ে আগামী দিনে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের চাহিদা আরও বাড়বে। পণ্যটির রপ্তানি বাড়াতে হলে আমাদের দেশের কৃষিকে আরও বেশি উৎপাদনমুখী হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কেবল ধান উৎপাদন করলে হবে না। পাশাপাশি বেশি মূল্যের ফলমূল, বাদাম, মসলা, বীজজাতীয় শস্য উৎপাদনে যেতে হবে। তাছাড়া বন্দরের সক্ষমতা, অবকাঠামোর উন্নয়ন ও স্বল্প খরচের উৎপাদনব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের নিরাপত্তা, পরিবেশ ও মানে কোনো প্রকার আপস করা যাবে না।
‘তদারকি সংস্থাগুলোরও সচেতন হতে হবে। ভারতের মতো আমাদের দেশেও ফুড পার্ক করা যেতে পারে। তা ছাড়া প্রক্রিয়াজাত খাদ্য উৎপাদনে শীর্ষস্থানে থাকা থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আমন্ত্রণ জানাতে হবে। তাহলে আমাদের উদ্যোক্তারা নতুন কিছু শিখবে। শিল্পটিও এগিয়ে যাবে।’
কৃষিপণ্য উৎপাদনে ১০ বছরের কর অবকাশ
করোনাভাইরাসের এই সংকটের সময়ে দেশে কর্মসংস্থান বাড়াতে এবং বিনিয়োগ খরা কাটাতে উদ্যোক্তাদের জন্য বেশ কিছু খাতে কর ছাড় দেয়া হয়েছে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে। এর মধ্যে কৃষিপণ্যের ছয় খাতে থাকছে ১০ বছরের কর অবকাশ।
ফল ও শাকসবজি প্রক্রিয়াজাতকরণ, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন, সম্পূর্ণ দেশীয় কৃষি হতে শিশু খাদ্য উৎপাদনকারী শিল্প এবং কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনে নতুন বিনিয়োগে থাকবে ১০ বছরের করমুক্তি সুবিধা।
২০৩০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যারা এ খাতে বিনিয়োগ করবেন, তারা এই আয়কর অব্যাহতির সুবিধা পাবেন। এই করমুক্তি সুবিধা নিতে ন্যূনতম এক কোটি টাকা বিনিয়োগ এবং বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে বিডার নিবন্ধন নিতে হবে। কাঁচামাল পুরোটাই দেশে উৎপাদিত হতে হবে।
এর যুক্তি হিসেবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘দেশীয় কৃষিভিত্তিক শিল্পে বাংলাদেশে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষিজাত পণ্যের আমদানি বিকল্প তৈরির মাধ্যমে কৃষিভিত্তিক শিল্পের বিকাশ ও কমর্সংস্থান সম্ভব। একই সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যের এ যুগে কৃষিপণ্যে মূল্য সংযোজন ও বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে বৈশ্বিক রপ্তানি বাণিজ্যের দখল নেয়া সম্ভব।’
সরকারের এই করমুক্তি সুবিধা কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন কৃষি অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক এম আসাদুজ্জামান।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘উদ্যোক্তারা যদি সরকারের এই সুবিধা নিয়ে বিনিয়োগে এগিয়ে আসে, তাহলে কৃষি খাতে আমূল পরিবর্তন আসবে। এ খাত থেকে আরও বেশি বিদেশি মুদ্রা দেশে আসবে।’
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আম-টম্যাটোসহ আমাদের অনেক কৃষিপণ্য পচে নষ্ট হয়ে যায়। এগুলো যদি ভালোভাবে প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি করা যায় তাহলে একদিকে যেমন বিদেশি মুদ্রা দেশে আসবে, অন্যদিকে কৃষকও ভালো দাম পাবেন।’
আম কূটনীতিকে কাজে লাগানোর পরামর্শ
কৃষিপণ্য আম উৎপাদনে বাংলাদেশ অষ্টম থেকে সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে। এবার দেশে প্রায় ১৫ লাখ টন আম উৎপাদিত হয়েছে। কিন্তু আমের রপ্তানি বাজারে বাংলাদেশ বিশ্বের প্রধান উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে একেবারে তলানিতে; নামমাত্র কিছু আম রপ্তানি হয়। এগুলোও আবার প্রবাসী বাংলাদেশি ক্রেতাদের জন্য রপ্তানি করা হয়।
গত ১৮ জুলাই কৃষি মন্ত্রণালয়ে ‘আম রপ্তানি বৃদ্ধিতে করণীয়’ বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আমচাষিসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা অংশ নেন। সভায় দেশে নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম চাষ এবং আমের আন্তর্জাতিক বাজার অনুসন্ধানের ওপর জোর দেয়া হয়।
ওই সভায় জানানো হয়, ২০২০ সালে থাইল্যান্ড বিশ্বের সর্বোচ্চ ৭৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারের আম রপ্তানি করেছে। বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারত ১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার ও পাকিস্তান ১০ কোটি ১০ লাখ ডলারের আম রপ্তানি করেছে। সেখানে বাংলাদেশ মাত্র ৫০ হাজার ডলারের (৪২ লাখ টাকা) আম রপ্তানি করেছে, যার বড় অংশ মূলত প্রবাসী বাংলাদেশি ক্রেতাদের জন্য রপ্তানি করা হয়েছে।
বিদেশে আম রপ্তানির ক্ষেত্রে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে, রপ্তানিযোগ্য উন্নত জাতের আমের অভাব। দেশের আমের জাতগুলোর সেলফ লাইফ কম, অর্থাৎ দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। সংগ্রহ-পরবর্তী পর্যায়ে শনাক্তকরণের অভাব, আন্তর্জাতিক মানের প্যাকেজিংয়ের অভাব। আর দেশের আমের ব্র্যান্ডিং ইমেজ সৃষ্টি না হওয়া এবং রপ্তানি কার্যক্রমে দক্ষতা, সচেতনতা ও প্রশিক্ষণের অভাব।
আম রপ্তানি বাড়াতে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ‘দেশের আমকে আমরা ব্যাপকভাবে বিশ্ববাজারে নিয়ে যেতে চাই। সে জন্য রপ্তানি বাধাগুলো চিহ্নিত করে তা নিরসনে কাজ চলছে। ইতিমধ্যে নিরাপদ আমের নিশ্চয়তা দিতে তিনটি ভ্যাকুয়াম হিট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলছে। উৎপাদন থেকে শিপমেন্ট পর্যন্ত আম নিরাপদ রাখতে উত্তম কৃষিচর্চা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ফাইটোস্যানিটারি সার্টিফিকেট দেয়ার কাজ চলছে।’
ফলে আগামী বছর আম রপ্তানির পরিমাণ অনেক বাড়বে বলে জানান মন্ত্রী।
কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাদু আম উপহারের বিষয়টি এবার বেশ আলোড়ন তুলেছিল। শুধু প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত নয়, বিভিন্ন দেশের রাজা-বাদশাহ, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর জন্য উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছে ফলের রাজা আম।
এই আম উপহারের ফলে বাংলাদেশের সুস্বাদু আম নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও এসেছে বিষয়টি।
‘এই এখন রপ্তানিতে কাজে লাগাতে হবে’ জানিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘একটা ভালো সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এটাকে কাজে লাগাতে পারলে আম রপ্তানি থেকে প্রচুর বিদেশি মুদ্রা দেশে আসবে।’
আরও পড়ুন:দেশের ক্রমবর্ধমান স্টার্ট-আপ খাতকে অর্থায়ন সুবিধা দিতে ব্র্যাক ব্যাংকের সাথে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এই চুক্তির আওতায় স্টার্ট-আপ খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের সৃষ্ট ৫০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল ব্যবহারের সুযোগ পাবে ব্র্যাক ব্যাংক, যা ব্যাংকটির এই খাতে অর্থায়ন সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করবে। এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো, অর্থায়ন সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে উদীয়মান উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং তাঁদেরকে জাতীয় অর্থনীতিতে আরও বেশি অবদান রাখতে উৎসাহিত করা।
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন চুক্তিপত্র হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অংশগ্রহণকারী ২২টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্টের সহায়তায় এই উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করা হবে।
এই সম্ভাবনাময় খাতের উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশের স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই খাতটি ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে টেকসই সম্পর্কও গড়ে তুলছে। ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন সুবিধাটি উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী উদ্যোগ সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন পেতে সহায়তা করবে, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমন উদ্যোগ বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় তরুণ উদ্যোগগুলোর বিকাশে ব্যাংকটির ব্যক্ত করা প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখবে।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ২৯১টি শাখা ও উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
দেশে বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার খাতে স্মার্ট ও জ্বালানি-সাশ্রয়ী ব্যাটারির ব্যবহার বাড়াতে কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি ও সোলশেয়ার লিমিটেড কৌশলগত অংশীদারিত্বে যুক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার (০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কিমিয়া সাআদত এবং সোলশেয়ার লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ড. সেবাস্টিয়ান গ্রোহ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি ব্যাংকের, হেড অব করপোরেট ব্যাংকিং ও হেড অব বিজনেস (ব্রাঞ্চ) ড. মো. আরিফুল ইসলাম; হেড অব এডিসি অ্যান্ড হেড অব এমডি’স কোঅর্ডিনেশন টিম মো. মামুন-উর রহমান; সোলশেয়ার-এর ফাইন্যান্স ডিরেক্টর আনিসা আলী, সিএফএ সহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এই অংশীদারিত্বের ফলে দেশের শত শত বৈদ্যুতিক পরিবহনের গ্যারেজ সহজেই স্মার্ট ব্যাটারি প্রযুক্তি গ্রহণে সক্ষম হবে। এখন পর্যন্ত উচ্চ ব্যয়ের কারণে অনেক উদ্যোক্তা ব্যাটারি ব্যবহারে আগ্রহী হলেও অর্থায়নের সীমাবদ্ধতায় তা সম্ভব হচ্ছিল না। কমিউনিটি ব্যাংকের গ্রিন এসএমই ঋণ সুবিধা ও সোলশেয়ার -এর উদ্ভাবনী পে-অ্যাজ-ইউ-গো (পিএওয়াইজি) প্রযুক্তি একত্রে উদ্যোক্তাদের জন্য সাশ্রয়ী, নমনীয় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।
এ উদ্যোগের মাধ্যমে গ্যারেজ মালিকরা টেকসই অর্থায়ন সুবিধা পাবেন, দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে জ্বালানি-সাশ্রয়ী ব্যাটারি ব্যবহার, দেশের বৈদ্যুতিক পরিবহন খাতে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত হবে এবং বাংলাদেশ পরিচ্ছন্ন জ্বালানির দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।
এই উদ্যোগকে দেশের পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ও টেকসই পরিবহন ব্যবস্থার জন্য এক মাইলফলক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
যমুনা ব্যাংক পিএলসি. এবং অ্যাপোলো ক্লিনিক লাইসেন্সঃ জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতাল লিমিটেডের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে রাজধানীর যমুনা ব্যাংক টাওয়ারে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। যমুনা ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিও নূর মোহাম্মদ এবং অ্যাপোলো জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতাল লিমিটেডের উপদেষ্টা মসিউর রহমান কামাল উক্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে যমুনা ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিওও মো. আব্দুস সালামসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এই চুক্তির মাধ্যমে যমুনা ব্যাংক তাদের সম্মানিত গ্রাহক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাঁদের পোষ্যদের জন্য বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা আরও সহজলভ্য ও সুফলদায়ক করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করল। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অ্যাপোলো ক্লিনিকের লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতালের সঙ্গে এই অংশীদারিত্ব গ্রাহকদের জন্য বিশেষ সুবিধাসহ উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করবে।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এর করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত সোমবার কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার হতদরিদ্র কৃষক ও রিকশাচালককে স্ত্রী ও সন্তানের চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির করপোরেট প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ইমতিয়াজ ইউ. আহমেদ হতদরিদ্র কৃষক ও রিকশাচালক মো. মেহেদী হাসানকে ওই অনুদানের চেক প্রদান করেন।
ওই অনুদানের চেক প্রদানকালে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির এসইভিপি ও কোম্পানি সচিব জনাব মো. আবুল বাশার, ব্যাংকের এসএভিপি মো. জাকির হোসেন, ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগ ও ব্যাংক ফাউন্ডেশনের ইনচার্জ কে. এম. হারুনুর রশীদ এবং ব্যাংক ফাউন্ডেশন এর এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. কামাল মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় সীমান্ত ব্যাংকের উদ্যোগে শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) এবং টেকনাফ (কক্সবাজার) উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপনের মাধ্যমে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়। এই কর্মসূচির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা হয় এবং বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত করা হয়। শ্যামনগরের ৭টি এবং টেকনাফে ২টি বিদ্যালয়ে গাছের চারা রোপণ করা হয়।
সীমান্ত ব্যাংকের টেকনাফ শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হোসেন এবং শ্যামনগর উপশাখার ব্যবস্থাপক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম যথাক্রমে টেকনাফ এবং শ্যামনগরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী সমন্বয় করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীগন স্বতঃস্ফূর্তভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করেন।
বাংলাদেশে প্রতি বছর হাজারো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে যক্ষ্মা (টিবি)। কেবল ২০২৩ সালেই ৪৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে- ফলে প্রতি ১২ মিনিটে একজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন যক্ষ্মায়। এই জাতীয় সংকট মোকাবেলায় সাহসী উদ্যোগ নিয়েছে প্রাইম ব্যাংক পিএলসি। জীবনরক্ষাকারী যক্ষ্মা প্রতিরোধ কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করতে প্রাইম ব্যাংক বিশ্বখ্যাত স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি-এরর সাথে অংশীদারিত্ব করেছে।
আজ (০৯ সেপ্টেম্বর) গুলশানে প্রাইম ব্যাংকের করপোরেট অফিসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এক সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুযায়ী, প্রাইম ব্যাংক এক বছরের জন্য আইসিডিডিআর,বি-এর সিলেট টিবি স্ক্রিনিং অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টার (TBSTC)-এর যক্ষ্মা পরীক্ষার ও চিকিৎসা সেবার ধারাবাহিকতায় আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে। প্রাইম ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান ও. রশীদ এবং আইসিডিডিআর,বি-এর নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমীদ আহমেদ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
দেশে যক্ষ্মা প্রতিরোধে দীর্ঘদিনের আস্থাভাজন প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৫ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষকে স্ক্রিনিং করেছে। এ সময়ে শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজারের বেশি টিবি রোগী, যার মধ্যে ১৮ হাজার শিশু। পাশাপাশি ৫,৫০০-এরও বেশি ওষুধ-প্রতিরোধী টিবি রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এই সহযোগিতার মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংক জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কমিউনিটির কল্যাণে তাদের অঙ্গীকার আরও জোরদার করছে। ব্যাংকটি প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু হ্রাস এবং একটি সুস্থ, সহনশীল বাংলাদেশ গঠনে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উপর্যুক্ত বিষয়ের প্রতি সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো।
০২। সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কাস্টমস হাউস/স্টেশনে আমদানিকালে দাখিলকৃত পণ্য ঘোষণায় প্রদত্ত পণ্যের বর্ণনা ও HS Code কায়িক পরীক্ষায় পণ্যের নমুনা কিংবা শুল্কায়ন পরবর্তী সময়ে পণ্যের ঘোষিত বর্ণনা পরিবর্তিত হয়, যা ক্ষেত্রবিশেষে প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স অথবা প্রাপ্যতা শীট বা সংশ্লিষ্ট Utilization Declaration (UD) তে অন্তর্ভূক্ত থাকে না। ফলে শুল্কায়নকালে উহা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে যথাসময়ে কাঁচামাল/পণ্য খালাস না হওয়ায় রপ্তানি আদেশ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য জাহাজীকরণে বিঘ্ন ঘটছে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অবগত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ও রপ্তানি বাণিজ্যের বৃহত্তর স্বার্থে জরুরি বিবেচনায় নিম্নরূপ নির্দেশনা প্রদান করা হলো:
(ক) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন HS Code নিরূপণ করলে এবং নিরূপিত HS Code এর প্রথম ৪ ডিজিট বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত HS Code এর প্রথম ৪ ডিজিট এর সাথে মিল থাকলে; আমদানিকারক পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে এই নিরূপিত HS Code বন্ড লাইসেন্সে ও ইউডিতে অন্তর্ভূক্ত করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস এর কমিশনার এর নিকট দাখিল করবেন যার বিপরীতে কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
(খ) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন বর্ণনা নিরূপণ করলে; আমদানিকারক পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্তরূপ নিরূপিত পণ্যের বর্ণনা বন্ড লাইসেন্সে ও ইউডিতে অন্তর্ভূক্ত করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস এর কমিশনার এর নিকট দাখিল করবেন যার বিপরীতে কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
গ) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভিন্ন HS Code নিরূপণ করা হলে এবং বন্ড লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কাস্টমস বন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটের মাধ্যমে তার প্রাপ্যতায় উক্ত HS Code অন্তর্ভুক্ত করলে কাস্টমস হাউস এর কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করবেন এবং পণ্য চালান খালাসের তথ্য সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
০৩। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে; এবং বর্তমানে উক্তরূপ কারণে শুল্কায়ন নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষমান পণ্যচালানসমূহের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
মন্তব্য