ভোলায় নিয়ম ভঙ্গ করে রাতে স্কুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের ঘটনায় পাঁচ শিক্ষককে শোকজ করেছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। একই সঙ্গে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাদেরকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ভোলা সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্ত মঙ্গলবার সকালে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিষয়টি জানতে পেরে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ উদ্দিনসহ পাঁচজন সহকারী শিক্ষককে সরকারি চাকরি আচরণ বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী অসদাচরণ ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে শোকজ করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে তাদের কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র হালদার বলেন, ‘দেশে পতাকা উত্তোলনের নিয়ম অনুযায়ী সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা যাবে। সন্ধ্যার আগেই পতাকা নামিয়ে ফেলতে হবে। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছেন। আমি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অবহিত করেছি।’
ভোলা সদরের শিবপুর ইউনিয়নের ২৪ নম্বর দক্ষিণ পশ্চিম শিবপুর শরীফ সরদার বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সোমবার রাতে জাতীয় পতাকা উড়তে দেখা যায়।
শিক্ষকদের অবহেলায় রাতেও জাতীয় পতাকা না নামানোয় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচারের দাবিও জানান তারা।
এ বিষয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘আমি অসুস্থ থাকার কারণে স্কুল থেকে একটু আগে বের হয়ে গেছি। আমার সহকারী শিক্ষকদের ভুলবশত পতাকা নামাতে খেয়াল ছিল না।
‘শিক্ষকদের ভুলের কারণে পতাকাটি না নামিয়ে রাখায় আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতে আর এমন ভুল হবে না।’
আরও পড়ুন:চাঁদপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই কিশোরের মরদেহ নিয়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল।
নিহতদের স্বজন ও হাসপাতালের স্টাফদের মধ্যে বুধবার দুপুরে কয়েক দফা হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। মৃত ঘোষণার পরপরই স্বজনদের মরদেহ নিতে না দেয়ায় হাসপাতালের স্টাফদের ওপর হামলা করে স্বজনরা। এতে হাসপাতালের ৫ জন স্টাফ আহত হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার এলাকার পূর্ব শ্রীরকমদি এলাকায় বুধবার দুপুরে নিহত দুই কিশোরের মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সুশান্ত তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
পরে তাদের মরদেহ হাসপাতাল হেফাজতে রেখে দেয়া হয়। কিছুক্ষণ পর স্বজনদের মরদেহ নিতে হাসপাতালের স্টাফদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। একপর্যায় মরদেহ না দিলে ইমারজেন্সি রুমে এসে স্টাফদের ওপর হামলা করে। এতে দায়িত্বে থাকা ৫ স্টাফ আহত হয়।
এদিকে মমতাজ নামের একজন জানায়, সকালে চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার পূর্ব শ্রীরামদী এলাকায় কিশোররা মাঠে ফুটবল খেলছিল। ওই সময় ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে মাঠে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে। এতে খেলার ছলে বিদ্যুতের তার জড়িয়ে দুইজন নিহত হন। এ সময় তাদের উদ্ধার করতে গেলে এক বৃদ্ধ গুরুতর আহত হন।
নিহতরা হলেন, পুরানবাজার পূর্ব শ্রীরকমদি এলাকার শামীম ও মিনহাজ নামের দুই কিশোর। গুরুতর আহত হলে তাদের সদর হাসপাতালে আনার পর ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় হাফেজ খান নামের এক বৃদ্ধ গুরুতর আহত হন।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রশিদ বলেন, পুরান বাজারের পূর্ব শ্রীরকমদি এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট দুই কিশোরের মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের লোকজন হাসপাতালের স্টাফদের ওপর হামলার ঘটনায় আরিফুল্লাহ নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। আমরা পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের নিকলীতে আবাসিক হোটেল থেকে হাসপাতালে নেয়া এক তরুণীকে মৃত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
এ ঘটনায় তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
নিকলী সদরের ‘হাওর প্যারাডাইজ’ হোটেল থেকে বুধবার বেলা ১১টার দিকে তরুণীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।
২২ বছর বয়সী ওই তরুণীর নাম তামান্না আক্তার। তিনি কুলিয়ারচর উপজেলার পশ্চিম জগন্নাথপুর এলাকার ওয়াহিদ মিয়ার মেয়ে।
এ ঘটনায় আটক ২৯ বছর বয়সী হুয়ামুন কবীরের বাড়ী কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা গ্রামে।
নিকলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মনসুর আলী আরিফ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিকলী উপজেলা কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তনুশ্রী সাহা বলেন, ‘বেলা সোয়া ১১টার দিকে স্বামী পরিচয়ে হুমায়ুন কবীর নামে একজন হাসপাতালে তরুণীকে নিয়ে আসেন। তার সঙ্গে আরেকজন লোক ছিল। তিনি হোটেল কর্তৃপক্ষের নাকি অন্য কেউ বলতে পারছি না, তবে এই যুবতীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার গলায় কালো দাগ পাওয়া গেছে। পরে পুলিশ এসে মরদেহ নিয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে কথা বলতে হাওর প্যারাডাইজ হোটেল কর্তৃপক্ষের নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
নিকলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মনসুর আলী আরিফ জানান, গত ২৫ মার্চ হুমায়ুন কবীর ও তামান্না আক্তার স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হাওর প্যারাডাইজ হোটেলের ৬০৯ নম্বর কক্ষে ওঠেন। আজ সকালে হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। তরুণীর গলায় কালো দাগ পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শ্বাসরোধে তার মৃত্যু হয়েছে।
তিনি জানান, এ ঘটনায় স্বামী পরিচয় দেয়া হুমায়ুন কবীরকে হাসপাতাল থেকে আটক করা হয়েছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় নিরীহ কৃষককে পুলিশের বুটের লাথি ও লাঠিপেটার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
বুধবার বিকেলে উপজেলার পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের কুমরী বাজারে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে কুমরী গ্রামের শতাধিক মানুষ অংশ নেন।
এ ঘটনায় আহুতিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপ-পরিদর্শক নূরুল হকের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও চার/পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
রোববার রাত ১১টার দিকে উপজেলার পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের মহিষবেড় এলাকার নলা বিল থেকে বাড়ি ফেরার পথে পুলিশি হামলা-নির্যাতনের শিকার হন সিরাজ উদ্দিন। পুলিশের বুটের লাথি ও লাঠিপেটায় তার বাম পায়ের ঊরুর হাড় ভেঙে যায়। এছাড়াও তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। এক পর্যায়ে চিৎকার শুনে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা।
গুরুতর আহত ৪৫ বছর বয়সী কৃষক সিরাজ উদ্দিন পাকুন্দিয়া উপজেলার পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তার বাবা আশ্রাব আলী এই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।
সিরাজের ছোট ভাই রিয়াজ উদ্দিন জানান, নলা বিলে মাছের খাদ পাহারা দিয়ে তার ভাই বাড়ি ফেরার পথে এএসআই নুরুল হকসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা জুয়াড়ি অপবাদ দিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। সিরাজ এর প্রতিবাদ করলে এএসআই নুরুল হক তার বাম উরুতে লাথি মারেন। এতে তার উরুর হাড় ভেঙে যায়। পরে মাটিতে পড়ে থাকা সিরাজে গলায় পা দিয়ে চেপে ধরেন ওই এএসআই। এ সময় তার সঙ্গে থাকা অন্য পুলিশ সদস্যরাও সিরাজকে মারধর করেন। সিরাজের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে পুলিশের ওই সদস্যরা সটকে পড়েন। সিরাজ ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রিয়াজ উদ্দিন আরও জানান, এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া থানায় গিয়ে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি তিনি। পরে বুধবার দুপুরে তিনি বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেছেন।
সিরাজ উদ্দিনের স্ত্রী জেসমিন আক্তার জানান, হাসপাতালে চিকিৎসক জানিয়েছেন যে তার আঘাতগুলো গুরুতর। অপারেশন লাগতে পারে।
তিনি বলেন, ‘তিনটা কন্যা সন্তান নিয়ে এমনিতেই ভালভাবে চলতে পারছি না। যে মানুষটার উপার্জনে সংসার চলে তাকে পুলিশ অযথা মেরে পা ভেঙে দিয়েছে। এমন বর্বরোচিত হামলার তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মস্তুফা বলেন, ‘সিরাজ উদ্দিন খুব ভালো লোক। আর কেউ কোনো অপরাধ করলে পুলিশ তাকে আটক করতে পারে। কিন্তু তার শরীরে এভাবে আঘাত করতে পারে না। আমি ঘটনাটি শুনে ওই পুলিশ সদস্যের মোবাইলে ফোন করি। ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি ফোন কেটে দেন। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
এ বিষয়ে আহুতিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপ-পরিদর্শক নূরুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। তার দাবি, তিনি সেখানে যাননি।
মামলার আইনজীবী মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় সিরাজ উদ্দিনের ছোট ভাই আহুতিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপ-পরিদর্শক নূরুল হকের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও চার/পাঁচজনকে আসামি করে কিশোরগঞ্জের ৩ নং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। বিচারক পার্থ ভদ্র মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, মামলা হওয়ার পর তিনি বিষয়টি জেনেছেন। এর আগে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
পদ্মাসেতুর এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে শিবচর হাইওয়ে পুলিশের বিশেষ অভিযান চলছে এক্সপ্রেসওয়েতে। মহাসড়কের একাধিক স্থানে হাইওয়ে পুলিশ অবস্থান নিয়ে যানবাহনের গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
গতিসীমা লঙ্ঘন করায় ৩০টি যানবাহনকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত মামলা দিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, গত ১৯ মার্চ এক্সপ্রেসওয়ের কতুবপুর এলাকায় ইমাদ পরিবহনের একটি বাস ভয়াবহ দূর্ঘটনার শিকার হলে ১৯ জনের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে তৎপর হয় হাইওয়ে পুলিশ।
শিবচর হাইওয়ে থানা সূত্র জানিয়েছে, গতিসীমা লঙ্ঘন করায় বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৩০টি যানবাহনকে মামলা দেয়া হয়। এর আগে গত সোমবার ১৯৪টি এবং গতকাল মঙ্গলবার ১৫৪টি মামলা করে পুলিশ। গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে এক্সপ্রেসওয়েতে হাইওয়ে পুলিশের তিনটি টিম একযোগে কাজ করছে।
শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু নাঈম মো. মোফাজ্জেল হক বলেন, ‘গতিসীমা লঙ্ঘন করায় গত ৩দিনে ৩৭৮টি মামলা হয়েছে। আমাদের একাধিক টিম মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করছে।’
কক্সবাজারের উখিয়ায় পাহাড় কাটতে গিয়ে মাটি চাপা পড়ে তিন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয় আরও দুইজন।
উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের মুহুরী পাড়ায় বুধবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী নিউজবাংলাকে এসব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন, কুতুপালং ক্যাম্প ১/ইস্টের বি/১ ব্লকের মোহাম্মদ ওয়ারেসের ছেলে সৈয়দ আকবর, ক্যাম্প ১/ডব্লিউর সি/১৪ ব্লকের জাহিদ হোসেন ও ক্যাম্প ১৭ এর এইচ/১০৭ সাব ব্লকের নুর কবির।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের বরাতে ওসি মোহাম্মদ আলী জানান, পাহাড় কেটে সমতল করার কাজ করছিলেন একদল রোহিঙ্গা শ্রমিক। এ সময় পাহাড়ের মাটি ধ্বসে পড়লে তিন শ্রমিক চাপা পড়েন। এ সময় স্থানীয়রা একজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আরও দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ এমদাদুল হক জানান, প্রথমে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সৈয়দ আকবরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:বরিশাল জেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি শাহজাহান হাওলাদারের মালিকানাধীন ভবন ভাঙতে অভিযান চালিয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশন। নকশাবহির্ভূতভাবে ভবনটি নির্মানের অভিযোগে বুধবার এই অভিযান চালানো হয়। ভবন মালিকের দাবি, বিনা নোটিশে সিটি করপোরেশন বুলডোজার নিয়ে ভবনটি ভাঙতে এসেছে।
এদিকে ঘটনাস্থলের ছবি তুলতে সাংবাদিকদের বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে রোড ইন্সপেক্টরের সহযোগীদের বিরুদ্ধে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে রুঢ় আচরণেরও অভিযোগ করেছেন অনেকে।
বুধবার বিকেল পৌনে ৩টার দিকে নগরীর নতুন বাজারের টেম্পু স্ট্যান্ড এলাকায় ভবনটি ভাঙতে আসে সিটি করপোরেশন। তবে ভবন মালিককে কিছু সময় দিয়ে বুলডোজার তার ভবনের সামনেই রেখে দেন করপোরেশনের রোড ইন্সপেক্টররা।
রোড ইন্সপেক্টর রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘ভবনটির প্ল্যান রয়েছে ছয়তলার। প্ল্যানে গ্যারেজও রয়েছে। কিন্তু ভবনটি অনিয়মের মাধ্যমে সাততলা করা হয়েছে এবং গ্যারেজ রাখা হয়নি। এ কারণে ভবন মালিককে একাধিক বার নোটিশ দিলেও কোনো জবাব মেলেনি।
‘সবশেষ বুধবার এই বাড়িতে এসে নোটিশ দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া নেয়া হয়। ভবন মালিক আমাদের কাছে সময় চেয়েছেন। বাকিটা ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ বলতে পারবেন।’
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন বাজারের বাসিন্দা এবং বরিশাল পৌরসভার টানা ১৮ বছর কমিশনার পদে দায়িত্বে থাকা শাহজাহান হাওলাদারকে ভবনটির ব্যাপারে গত ৬, ২০ ও ২৭ মার্চ চূড়ান্ত নোটিশ দেয়া হয়। তিনি কোনো জবাব দেননি করপোরেশনকে। তাছাড়া নোটিশপ্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অনুমোদিত প্ল্যান করপোরেশনে দাখিলের নির্দেশ দেয়া হলেও তিনি তা করেননি।
ভবনটির মালিক বরিশাল জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ও বরিশাল জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার শাহজাহান হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন থেকে আমরা আগে কোনো ধরনের নোটিশ পাইনি। এখানে বুলডোজার নিয়ে আসার ৩০ মিনিট আগে প্ল্যান বহির্ভূতভাবে ভবন তৈরির কথা জানিয়ে আমাদেরকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশন উদ্দেশ্যমূলকভাবে এটা করেছে।’
এদিকে বুধবার বিকেলে শ্রমিক লীগ নেতার ভবন ভাঙার প্রস্তুতির আগেই নতুন বাজার টেম্পু স্ট্যান্ড থেকে গুপ্ত কর্নার মোড় পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ করে দেয় সিটি করপোরেশন। ব্যস্ততম সড়কটি বন্ধ করে দেয়ায় ভোগান্তিতে পড়া অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
ভবন ভাঙার কার্যক্রম না করে বুলডোজার শাহজাহান হাওলাদারের বাড়ির সামনে রেখে দিয়ে বিকেল ৪টার দিকে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে বুলডোজারটিও সরিয়ে নেয়া হয়।
মহানগর আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত একটি সূত্রের দাবি, বরিশাল নগরী থেকে বিভিন্ন রুটে থ্রি হুইলার মাহিন্দ্রা চলাচলে চাঁদাবাজি নিয়ে শ্রমিক লীগ নেতা শাহজাহান হাওলাদারের সঙ্গে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর দ্বন্দ্ব হয়। মেয়র নিজ ফেসবুক পেজে লাইভে এসেও শাহজাহান হাওলাদারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে কথা বলেন থ্রি হুইলার মাহিন্দ্রা শ্রমিকদের সঙ্গে নিজ বাসায় আলোচনার সময়। ওই বিষয়কে কেন্দ্র করেই শাহজাহান হাওলাদারের মালিকানাধীন ভবন ভাঙার প্রক্রিয়া নেয় সিটি করপোরেশন।
ধর্ষণ মামলার বাদীকে ৫০ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করে সংসার শুরু করায় পাবনা-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজুকে ধর্ষণের মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক বেগম সামছুন্নাহার বুধবার এই অব্যাহতির আদেশ দেন।
এর আগে ১৩ মার্চ একই আদালত বাদীকে বিয়ের শর্তে আরজুকে জামিন দিয়েছিল। সে অনুযায়ী বাদীকে বিয়ে করেন আসামি।
গত বছরের ২২ এপ্রিল শিক্ষানবিশ এক আইনজীবী আদালতে মামলাটি করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০০০ সালের ডিসেম্বরে বাদীর সঙ্গে প্রথম স্বামীর বিয়েবিচ্ছেদ হয়। সে সময় ওই নারী একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে চাকরি করা অবস্থায় অনেকটা নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করছিলেন। স্বজনরা তাকে ফের বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন।
একপর্যায়ে ২০০১ সালের শেষের দিকে চাচার মাধ্যমে আসামি আরজুর সঙ্গে পরিচয় হয় বাদীর। আরজু নিয়মিত ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে একপর্যায়ে সফল হন। আরজু তাকে জানান, তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা গেছেন। একাকীত্বের অবসান ঘটাতে নতুন সংসার শুরু করতে চান তিনি। ওই নারী আরজুর প্রেমে পড়ে তার বিয়ের প্রস্তাবে সাড়া দেন। ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর তারা বিয়ে করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০০৮ সালের ১৬ জানুয়ারি ওই দম্পতির একটি মেয়ে সন্তান হয়। এ সন্তান গর্ভে আসার সময় থেকে আরজু বিভিন্ন ছলচাতুরির মাধ্যমে ভ্রূণ নষ্ট করার চেষ্টা করেন। ওই নারীর দৃঢ়তায় তার সে চেষ্টা সফল হয়নি।
মামলার বিবরণে আরও বলা হয়, সন্তান হওয়ার পর আরজুর আচার-আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তিনি ওই নারীর বাসায় আসা কমিয়ে দেন। এ ছাড়া ফ্ল্যাট কিনে দেয়ার কথা বলে ওই নারীর বাবার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা এবং নারীর জমানো ৮ লাখ টাকা নিলেও ফ্ল্যাট কিনে দেননি আরজু। তিনি টাকাও ফেরত দেননি।
পরে খোঁজ নিয়ে ওই নারী জানতে পারেন, আরজুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী জীবিত। তার ঘরে মেয়েসন্তান আছে এবং স্ত্রীর সঙ্গেই থাকেন তিনি।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, আসামি বাদীর কাছে ফারুক হোসেন নামে পরিচয় দিলেও প্রকৃতপক্ষে তার নাম খন্দকার আজিজুল হক আরজু। শারীরিক সম্পর্ক করার জন্যই বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন তিনি। আরজু কয়েকবার নিজে এবং ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালান। একপর্যায়ে বাদীর সঙ্গে বিয়ে এবং তার ঔরসের সন্তানকে সরাসরি অস্বীকার করেন তিনি।
মামলার তদন্তে বাদীর মেয়ে সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। এতে ওই সন্তান বাদীর গর্ভজাত এবং আরজু তার জন্মদাতা বলে তথ্য-প্রমাণ উঠে আসে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য