দ্বিমুখী চাপে পড়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। প্রশাসনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব অপরদিকে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা সঙ্গ ছাড়ায় বেকায়দায় তিনি। বলা যায় ঘর ভাঙছে সাদিকের।
সাদিকের পক্ষ ছেড়ে সদর আসনের সংসদ সদস্য পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুখের কাছে ভিড়ছেন কাউন্সিলর এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। অনেক আওয়ামী লীগ নেতা গোপনে সম্পর্ক রাখলেও ৯ কাউন্সিলর প্রতিমন্ত্রীর দলে ভিড়েছেন প্রকাশ্যেই।
সঙ্গ পাল্টানো কাউন্সিলররা বলছেন, সাদিক আব্দুল্লাহর অত্যাচার ও স্বেচ্ছাচারিতার মধ্যে থাকতে হয়েছে এতদিন। তাই তারা সদর আসনের সংসদ সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করেছেন কীভাবে উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা যায়।
গত ১৮ আগস্ট রাতে বরিশালে সংঘর্ষের ঘটনার পর সমঝোতা হলেও বরিশাল জেলা প্রশাসকের বক্তব্য নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে আলোচনা। অপরদিকে সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এসে নেতাকর্মীদের পেছনের কথা ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে কাজ করার নির্দেশনা দেন মেয়র সাদিক।
১৮ আগস্ট রাতে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমানের ওপর হামলার অভিযোগে আনসার সদস্যদের ছোড়া গুলিতে সাদিক আব্দুল্লাহসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৩০ নেতাকর্মী আহত হওয়ার অভিযোগ ওঠে।
এরপর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে পরের দিন ইউএনও ও পুলিশ মামলা করে, যাতে প্রধান আসামি করা হয় সাদিক আব্দুল্লাহকে।
পরিস্থিতি গুমোট হওয়ার এক পর্যায়ে ২২ আগস্ট সমঝোতা বৈঠক হয় বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের বাসভবনে। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর হোসেন সমঝোতার বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান। তবে প্রায় তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মামলা তুলে নেয়ার কোনো প্রক্রিয়ার খবর আসেনি।
২৯ আগস্টে বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুখের উপস্থিতিতে ওই সভায় জেলা প্রশাসক তার সঙ্গে বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহ আলম এবং বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথের সুসম্পর্কের কথাও বলেন।
এই দুই সংসদ সদস্য বরিশালের রাজনীতিতে বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর বিরোধী বলে প্রচার রয়েছে। হাসনাতপুত্র হওয়ায় সাদিকের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক খুব একটা ভালো নয়।
প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা হলেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডের আমীর বিশ্বাস, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৌহিদুল ইসলাম বাদশা, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের জাকির হোসেন ভুলু, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়াউর রহমান বিপ্লব, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের আনিসুর রহমান দুলাল, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের এনামুল হক বাহার, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের শরীফ মো. আনিসুর রহমান, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের হুমায়ন কবির এবং ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফরিদ আহম্মেদ। এরা সবাই সাদিক আব্দুল্লাহর একনিষ্ঠ অনুসারী ছিলেন।
কাউন্সিলর আনিছুর রহমান দুলাল বলেন, 'আমরা মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর অসহযোগিতা ও স্বেচ্ছাচারিতার শিকার। বরিশালে যে গুমোট রাজনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছিল, এর পরিবর্তন করা যায় কি-না এবং সাংগঠনিক ও উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। কারও সঙ্গে কোনো সংঘাতে আমরা যাব না।'
তিনি বলেন, 'বিএনপির লোকজন নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি হয়েছে। অথচ আমরা দলে ভালো জায়গা পাই না।'
কাউন্সিলর শরীফ আনিছুর রহমান বলেন, 'আমরা কারও বিরুদ্ধে যাইনি। দলের স্বার্থে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। যেখানে সম্মান পাওয়া যায় না, পদে পদে হেনস্তা হতে হয়, সেই বলয়ে থেকে লাভ কী? শুধু আমরাই নই, আরও প্রায় অর্ধডজন কাউন্সিলর যোগ দেবেন প্রতিমন্ত্রীর বলয়ে।'
কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার বলেন, ‘বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগে নেতাকর্মীদের সম্মান নেই। গত তিন বছরে আমরা দলীয়ভাবে মর্যাদা পাইনি।’
জিয়াউর রহমান বিপ্লব বলেন, ‘নগর ভবন থাকতেও সকল সভা ডাকা হয় মেয়রের বাসায়। বাসায় নিয়ে নগর উন্নয়নে কোনো সভা তো নয় বরং অপমান করা হয় কাউন্সিলরদের। আমার এলাকায় কারা দুঃস্থ সেটা তো আমি জানি। কিন্তু আমাকে না জানিয়েই সে নিজের মুখচেনা লোকদের ত্রাণ দিয়েছে করোনাকালে। এতে আমি প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি। সাধারণ মানুষ আমাকে দোষী ভাবছে। এক পর্যায়ে আমি নিজ উদ্যেগে ২০নং ওয়ার্ডে দুঃস্থদের মাঝে ত্রাণ দিয়েছি।’
প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে যোগ দেয়ার অপেক্ষায় থাকা আরও চার কাউন্সিলর নিউজবাংলাকে বলেন, সিটি করপোরেশনের নিয়ম অনুযায়ী কাউন্সিলরদের নিয়ে ১৪টি স্থায়ী কমিটি গঠনের নিয়ম রয়েছে। গত তিন বছরে একটি কমিটিও গঠন করেননি মেয়র। তিনি পরিষদের সভা ডাকেন বাসায়। সেখানে মেয়রের অনুসারী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের রাখা হয়। তাদের সামনেই তিনি কাউন্সিলরদের অপমান করেন।
কোনো ওয়ার্ড পরিদর্শনে গেলে কাউন্সিলরদের জানানো হয় না। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা থাকেন মেয়রের সঙ্গে। করোনাকলে দুঃস্থদের মধ্যে খাদ্য সহায়তা কাউন্সিলরদের না দিয়ে ওয়ার্ড সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে।
মেয়র তার অনুসারী ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীদের সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন পদে অস্থায়ী নিয়োগ দিয়েছেন। তাদের নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হয়। কাউন্সিলরদের কোনো মূল্যায়ন তো নেই বরং জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকায় রাখা হয়েছে।
তবে নেতাকর্মীদের পেছনের কথা ভুলে গিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মেয়র সাদিক। ৬ সেপ্টেম্বর রাতে ফেসবুক লাইভে এসে এই আহ্বান জানান তিনি।
মেয়র বলেন, ‘রাজনীতি একদিনের নয়। এটা লং প্রসেস। অনেক কিছু আমার চোখ বন্ধ করে সহ্য করতে হয় বাপ দাদার মান ইজ্জতের কথা চিন্তা করে। যে ঘটনা ঘটেছে সেটা একটা লেসন (শিক্ষা)। এটা মাথায় রেখেই আমাদের আগাতে হবে।… দেশকে উন্নয়নের দিকে নিতে সিভিল প্রশাসন, পুলিশ সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কোনো কিছুই শেষ হয়ে যায়নি, সবে শুরু।’
মেয়রের ঘনিষ্ঠ বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বড় দল, প্রাচীন দল। এই দলে অনেক লোক আসবে যাবে। এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবেই। এখানকার ৯ জন কাউন্সিলর যে একজনের সঙ্গে দেখা করেছে তাতে দলের ক্ষতি হয়নি। তারা দেখা করতেই পারে। আওয়ামী লীগের বাইরের কারো সঙ্গে তো দেখা করেনি। যদি কোনো দ্বন্দ্ব থাকে তাহলে সেটা জেলা বা মহানগর আওয়ামী লীগ বা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সেটি সমাধান করতে পারবে।‘
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর আওয়ামী লীগের দুই নেতা বলেন, মেয়র ও প্রশাসনের দ্বন্দ্বকে পুঁজি করে সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুখ রাজনীতিতে অবস্থান সংহত করতে চাইছেন।
সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণের মৃত্যুর পর সাদিক আব্দুল্লাহর চাপে পরা নেতাকর্মীরা জাহিদ ফারুখের কাছে ভিড়লেও বরিশালের রাজনীতিতে আধিপত্য দেখাতে পারেননি তিনি।
জাহিদ ফারুখ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কাউন্সিলররা নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই অবহেলিত। তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, সাধারণ আলোচনা হয়েছে। দল এবং বরিশালের উন্নয়নে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কথা হয়েছে তাদের সঙ্গে। ভোটারদের কাছে তারা মুখ দেখাতে পারে না। আমি তাদেরও জনপ্রতিনিধি। তারাও আমার ভোটার। তাদের কথা শুনেছি এবং দল ও উন্নয়নের স্বার্থে পাশে থাকার কথা বলেছি।’
আরও পড়ুন:ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে জানাগেছে।
সোমবার রাতে মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পরে তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।
মুন্নির পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীতে রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন তারাগুনিয়া ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বলেন, “রোগী কীভাবে মারা গেছে সেটা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, “রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “গতকাল রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক এলাকায় উত্তেজনা ও হট্টগোলের আশঙ্কায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠাই। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকা থেকে কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে।”
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক। ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে বলবো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
একই ক্লিনিকে এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখানের) সাবেক সংসদ সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিমের নামে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে সেলিম নামে এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকায় শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া স্বাক্ষাতকারে এ দাবি করেন হাফিজ ইব্রাহিম।
এর আগে দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, যায়যায়দিন সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকার ডিজিটাল প্লাট ফরমে একটি সংবাদে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তুলে সেলিম নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, সংবাদটি ডিজিটাল প্লাট ফরমে প্রকাশ হওয়ার পর আমার নজরে আসে। আমি মনোযোগ দিয়ে তার অভিযোগ শুনি। যে ব্যক্তি আমার নামে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা না। আমি খবর নিয়ে জেনেছি, তিনি ভোলা-১ সদর আসনের বাসিন্দা ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের বাড়ির পাশে তার বাড়ি। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেলিম নামে ওই ব্যক্তির সাথে তার আপন ভাতিজি জামাইয়ের দীর্ঘদিন ধরে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে তার ভাতিজি জামাই তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এমনকি ওই বিষয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা রয়েছে।
হাফিজ ইব্রাহিম আরও বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পতিত সরকারের পলাতক একটি কুচক্রী মহল বিএনপির নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা এই ঘটনার পেছনে যে আসল সত্য রয়েছে তা উদঘাটন করুন।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী মহানগরীর একটি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব-৫।
রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর টিকাপাড়া এলাকার একটি বালুর স্তূপের আনুমানিক ২ ফুট গভীর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
সোমবার সকালে র্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অভিযানে একটি ৭.৬২ মি.মি. বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৫; সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল জানতে পারে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন লুট হওয়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি দুষ্কৃতকারীরা বোয়ালিয়া থানাধীন টিকাপাড়া এলাকায় লুকিয়ে রেখেছে। পরে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে বালুর স্তূপের ভেতর থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র্যাবের গোয়েন্দা দল।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসস’কে জানান, এটি পুলিশের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। তবে কোন থানার অস্ত্র সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। কারণ পিস্তলের গায়ে বাট নম্বর ঘষা-মাজার চিহ্ন স্পষ্ট। উদ্ধারকৃত বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি বোয়ালিয়া থানায় জিডির পর হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য