কৃষিকাজ ফেলে টিকা নিতে এসেছিলেন আতিয়ার রহমান। কেন্দ্রে অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর তিনি জানতে পারেন আজ আর টিকা দেয়া হবে না।
আফসোস করে আতিয়ার বলেন, ‘আসা-যাওয়ার খরচও হল, কাজও কামাই হল।’
এই কৃষি শ্রমিকের মতো টিকা নিতে এসে কুষ্টিয়ায় ভোগান্তির শিকার হয়েছেন অনেকে। সিভিল সার্জন বলছেন, টিকার ডোজ সময়মতো হাতে না আসায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
কুষ্টিয়ার কলকাকলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে টিকা নিতে আসেন আবু তালেব। তিনি বলেন, ‘গতকাল টিকা নিতে এসেছিলাম। বলেছিল শেষ হয়ে গেছে, আজ আসতে। আজ আসছি; আজও বলছে টিকা শেষ হয়ে গেছে।’
চাকরিজীবী সেলিম হোসেন বলেন, ‘আমিও কাল আসছিলাম। বলেছিল, আজ টিকার গাড়ি আসবে। আজও দিচ্ছে না। অফিস কামাই করে আসলাম। কবে টিকা দেবে সেই কথা কে জানাবে।’
অনেকেই বলেন, ম্যাসেজ মোতাবেক এসেও তাদের ফেরত যেতে হচ্ছে। কেন্দ্র থেকে মৌখিকভাবে আসতে বলা হয়। তারপর আর টিকা দেয়া হয় না।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের একটা গড়মিল হয়েছে। ভোর ৪টার দিকে টিকার গাড়ি আসার কথা ছিল। বিশেষ কারণে এটা আসেনি।
‘আমরা চেয়েছিলাম এক দিনও যাতে টিকা দেয়া বন্ধ না থাকে। সেজন্য ম্যাসেজ দিয়েছিলাম। ম্যাসেজ তো ফেরত নেয়া যায় না।’
মানুষের ভোগান্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রগুলোতে স্বাস্থ্যবিভাগের লোক রাখা হয়েছে। তারা সবাইকে বুঝিয়ে ফেরত পাঠাচ্ছে। কলকাকলী বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রদীপ নামে একজন আছেন।’
কেন্দ্রে গিয়ে প্রদীপকে পাওয়া যায়নি। খোঁজ করে জানা গেল, তিনি অবস্থান করছেন কেন্দ্র থেকে দূরে শিক্ষার্থী ছাউনির নিচে। প্রথমে নিজের পরিচয় অস্বীকার করলেও পরে প্রদীপ বলেন, ‘মানুষকে বলে বলে কাহিল হয়ে পড়েছি। তাই এখানে এসে বসে আছি।’
সিভিল সার্জন আনোয়ারুল দাবি করেন, ‘এর আগে কখনও এমন হয়নি। যদি আগামীকাল ভোর ৪টার সময় গাড়ি আসে তাহলে কালই টিকা দেয়া যাবে।
‘এবার ১ লাখ সিনোফার্মের ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে কুষ্টিয়ার জন্য। আগামী ১২-১৩ দিন টিকাদান চলবে।’
প্রতিদিন কুষ্টিয়ার ৮টি কেন্দ্রে ৮ থেকে ৯ হাজার টিকা দেয়া হয়। কিন্তু গত ১১ সেপ্টেম্বর ১১০ জনকে প্রথম ডোজ দেয়ার পর অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকা শেষ হয়ে যায়। আর সিনোফার্মার টিকা শেষ হয়েছে ১২ সেপ্টেম্বর। এদিন ৭৫১ জনকে প্রথম ডোজ এবং ৪৯৪ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে।
কুষ্টিয়ায় এ পর্যন্ত টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৬ লাখ ১৮ হাজার ৪৪৩ জন। প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ২ লাখ ৪৬ হাজার ৭৬১ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১ লাখ ২১ হাজার ৩০৩ জন।
আরও পড়ুন:এবারের দুর্গাপূজায় প্রায় দ্বিগুণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, এর আগে দুর্গাপূজায় দুই থেকে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হতো।
তিনি বলেন, এবারের পূজায় সরকার ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার পূজায় নিরাপত্তা অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি। প্রশাসনও আন্তরিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে।
‘পূজামণ্ডপের আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশসহ বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত করা হয়েছে।’
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের সন্তোষপাড়া দুর্গামন্দিরের পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে শনিবার বেলা ১১টার দিকে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে জেলার শ্রীনগর উপজেলায় পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন, জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার, সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ, ওসি খন্দকার হাফিজুর রহমান, জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ড্যান্ট বিউটি আক্তার, সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল কুদ্দুস ধীরন, জামায়াতে ইসলামীর সিরাজদিখান উপজেলার সভাপতি মাওলানা কবির হোসেন, ইছাপুরা ইউপি চেয়ারম্যান মো. সুমন মিয়া, সিরাজদিখান উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তপন কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক জ্ঞানদীপ ঘোষ, সিরাজদিখান প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল-মাসুদ ও সিরাজদিখান রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মো. নাছির উদ্দিনসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শানঘাট গ্রামে শনিবার দুপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আপন বোন এবং ভাইয়ের স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) প্রধান।
কোপে আহত হন ওই ব্যক্তির ভাই ও আরেক বোন।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন জোসনা খাতুন ও তার ভাইয়ের স্ত্রী জাকিউল ইলমা।
আহত দুজন হলেন জাহিদ হোসেন ও শামীমা খাতুন।
নিহত জাকিউল ইলমা গাংনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।
ইলমাসহ দুজনকে ধারালো অস্ত্র (রামদা) দিয়ে কুপিয়ে মারধরের শিকার হন মহিবুল ইসলাম ওহিদ, যিনি শানঘাট পল্লী উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি এনজিওর নির্বাহী পরিচালক। খবর পেয়ে মেহেরপুর সদর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের ভাষ্য, পারিবারিক জমি নিয়ে শানঘাট গ্রামের মহিবুল ইসলাম ওহিদের সঙ্গে তার অপর দুই ভাই ও তিন বোনের বিরোধ চলে আসছিল। ওহিদ একাই প্রায় দেড় একর জমির পুকুর দখল নিয়ে মাছ চাষ করে আসছিলেন। তিন ভাই এবং দুই বোন মিলে আজ সকাল থেকে পুকুর ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করছিলেন। অপর বোন অনুপস্থিত ছিলেন।
আলোচনার একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বাধে। ওই সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওহিদ তার ভাই-বোনদের ওপর আক্রমণ করেন। এতে ঘটনাস্থলেই বোন জোসনা খাতুন ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী জাকিউল ইলমা নিহত হন।
গুরুতর আহত অবস্থায় মহিবুলের ভাই জাহিদ হোসেন ও ছোট বোন শামীমাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাদের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয় বলে জানান গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মারুফ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জোসনা খাতুনের স্বামী কুদরত-ই-হাফিজ জানান, ভাই-বোনদের মধ্যে জমি ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। মহিবুল ইসলাম ওহিদ বাড়ির পাশের ১ একর ২৮ শতক জমির একটি পুকুর দখল করে আছেন। ভাই-বোনদের ভাগ নির্ধারণ করার জন্য আজ সবাই মিলে আলোচনায় বসা হয়েছিল। এর একপর্যায়ে মহিবুল ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এতে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়। আহত হন দুজন।
নিহতের প্রতিবেশীরা জানান, ভাই-বোনদের মধ্যে জমিজমার ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ। এ নিয়ে এর আগেও একবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। দুই পক্ষই আদালতে মামলা করেছিল। স্থানীয়ভাবে অনেকবার আলোচনায় বসা হলেও সমস্যা সমাধান হয়নি। দুই ভাই এবং তিন বোন এক পক্ষে এবং মহিবুল একাই তাদের প্রতিপক্ষ। কোনোমতেই মহিবুল তাদের সঙ্গে সমঝোতায় আসেননি।
দীর্ঘদিনের বিরোধের জের শেষ পর্যন্ত রক্তাক্ত হত্যাকাণ্ডের পথে গড়ায়।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর প্রক্রিয়া করছে পুলিশ।
দুজনকে হত্যাকারী মহিবুল ইসলাম ওহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন:জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
এ নিষেধাজ্ঞার সময় প্রত্যেক জেলে ভিজিএফের চাল পাবেন ২৫ কেজি করে।
নিষেধাজ্ঞার সময়ে বরাদ্দকৃত চালের সঠিক তালিকা তৈরি করে দ্রুত তা বাস্তবায়নের দাবি জানান জেলেরা।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তার ভাষ্য, নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করার জন্য নদীতে মৎস্য বিভাগ, উপজেলা-জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে প্রতিদিন অভিযান চালানো হবে। গত বছরের অভিযান সফল হওয়ায় মাছের উৎপাদন বাড়ছে।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলায় ৫২ হাজার জেলে আছেন। তাদের মধ্যে নিবন্ধিত জেলে ৪৩ হাজার ৩০০। এসব জেলে মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় শনিবার মধ্যরাত (১৩ অক্টোবর) থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মেঘনা নদীতে সব ধরনের জাল ফেলা ও মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
নিষেধাজ্ঞার সময় এসব এলাকায় সব ধরনের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও মজুতকরণ নিষিদ্ধ রয়েছে।
জেলেদের সচেতন করার জন্য নদী এবং উপকূলবর্তী এলাকায় মাইকিং ও পোস্টারিংসহ সব ধরনের প্রচার অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য বিভাগ।
আরও পড়ুন:মেহেরপুর সদর উপজেলার দফরপুর ও সোনাপুর গ্রামে বজ্রপাতের ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন।
বজ্রপাতে একজন কৃষক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন দফরপুর গ্রামের প্রয়াত আবদুর রশিদের ছেলে রাফিজ ও সোনাপুর গ্রামের আবদুর রশিদ।
আকস্মিক বজ্রপাতে শুক্রবার তাদের মৃত্যু হয়।
বজ্রপাতে আহত হন সোনাপুর গ্রামের আবদুল মান্নান নামের কৃষক। তিনি বর্তমানে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার আগে আকস্মিক বৃষ্টি শুরু হয় মেহেরপুরের কিছু গ্রামে। ওই সময় বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
সদর উপজেলার দফরপুর গ্রামের রাফিজ কবুতর পোষেন। তিনি মাঠে যান কবুতরের খোঁজে। সন্ধ্যার পর তার দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা।
অপরদিকে একই উপজেলার সোনাপুর গ্রামের মাঠে কৃষিকাজ করছিলেন আবদুর রশিদ ও আবদুল মান্নান। ওই সময় আকস্মিক বজ্রপাতে আবদুর রশিদের মৃত্যু হয় ও আবদুল মান্নান আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি আমানুল্লাহ আল বারী বজ্রপাতে দুটি স্থানে দুজন নিহত ও একজন আহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন:নাটোরে আলাদা ঘটনায় শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
নলডাঙ্গা উপজেলায় শুক্রবার সকালে বজ্রপাতে দুইজন এবং বড়াইগ্রাম উপজেলায় ডোবার পানিতে পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়।
প্রাণ হারানো তিনজন হলেন নলডাঙ্গা উপজেলার খোলাবাড়িয়া গ্রামের নূর হোসেনের ছেলে আবদুল মোমিন, নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার ক্ষুদ্র বিশা গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে রায়হান আলী এবং নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মাঝগাঁওয়ের সুমন মন্ডলের শিশুকন্যা সানজিদা খাতুন।
জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফাত হোসাইন জানান, নলডাঙ্গার হালতিবিলে নৌকায় করে শামুক আনতে যান কয়েকজন। ওই সময় বজ্রপাতে আবদুল মোমিন নামের একজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হন আরও দুইজন।
তিনি জানান, একই সময়ে হালতিবিল সংলগ্ন মরা আত্রাই নদীতে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে রায়হান আলী নামে আরও এক যুবকের মৃত্যু হয়।
এসপি আরও জানান, নাটোরের বড়াইগ্রামে বাড়ির পাশের ডোবার পানিতে পড়ে সানজিদা খাতুন নামে দুই বছর বয়সী শিশু মারা যায়। বাড়ির আঙিনায় খেলা করার একপর্যায়ে সবার অগোচরে ডোবায় পড়ে যায় শিশুটি।
আরও পড়ুন:নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলায় পূজার অঞ্জলি দিতে গিয়ে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের হরিণধরা গ্রামে শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুজন হলো হরিণধরা গ্রামের সঞ্জয় তালুকদার ও বাসন্তী তালুকদার দম্পতির মেয়ে ঋতু তালুকদার (১৮) এবং বিপ্লব তালুকদার ও রুপা চন্দ্র তালুকদার দম্পতির ছেলে অমিত তালুকদার (৮)।
ঋতু কলমাকান্দা সরকারি কলেজের বিএ অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ছিলেন। অন্যদিকে অমিত হরিণধরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। দুজন সম্পর্কে ফুফু (পিসি) ভাতিজা হন।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে হরিণধরা গ্রামে নিজ বাড়ির পাশে পশ্চিমপাড়ায় একই পরিবারের ছয়জন মিলে দুর্গাপূজার অঞ্জলির উদ্দেশ্যে ছোট একটি নৌকায় করে বের হয়। পথে কালীবাড়ি খাল পার হওয়ার সময় নৌকাটি ডুবে যায়। ওই সময় চারজন সাঁতরে খালপাড়ে উঠলেও ঋতু তালুকদার ও অমিত তালুকদার উঠতে পারেনি।
পরে দুজনকে উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শামীম আরা নিপা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
ফুফু ভাতিজার মৃত্যুর সংবাদে ওই গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মৃতের স্বজন স্বপন তালুকদার জানান, ঋতু তালুকদার সাঁতার জানত, কিন্তু ভাইপো অমিত তালুকদারকে বাঁচাতে গিয়ে দুজনই পানিতে তলিয়ে যায়। জীবিতদের আর্তচিৎকারে স্থানীয় লোকজন দুজনকে উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ হোসেন জানান, খবর পেয়ে হাসপাতাল ও ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া শেষে দুজনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল থেকে শুক্রবার এক পর্যটকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যার পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।
শহরের হোটেল-মোটেল জোনের মরিয়ম রিসোর্ট নামের আবাসিক হোটেল থেকে দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয় বলে জানান কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফয়জুল আজীম।
নিথর অবস্থায় উদ্ধার হওয়া অমিত বড়ুয়া (৩২) চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শাকপুরা এলাকার রণজিত বড়ুয়ার ছেলে।
রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের বরাতে ওসি ফয়জুল আজীম জানান, গত ৮ অক্টোবর সকালে অমিত বড়ুয়া কক্সবাজার ঘুরতে আসেন। তিনি রিসোর্টটির ১০৮ নম্বর কক্ষে ওঠেন। শুক্রবার সকালে তার হোটেল কক্ষ ছাড়ার কথা ছিল।
তিনি আরও জানান, বেলা ১১টার দিকে অমিত বড়ুয়ার অবস্থান করা কক্ষটি ছাড়ার বিষয়ে হোটেলের এক কর্মচারী কথা বলতে যান। ওই সময় সেটি ভেতর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়। কয়েকবার ডাকার পরও সাড়াশব্দ না পাওয়ায় হোটেল কর্মচারীর সন্দেহ জাগে। পরে তিনি বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করেন।
পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, খবর পেয়ে বাহিনীর একটি দল কক্ষটির দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে রশি দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে। ওই সময় তার পকেটে চিরকুট পাওয়া যায়।
তিনি জানান, চিরকুটটি খুলে পড়া সম্ভব হয়নি। তাই কী কারণে যুবক ‘আত্মহত্যা’ করেছেন এবং চিরকুটে কী লিখেছেন, তা জানা সম্ভব হয়নি।
ফয়জুল আজীম জানান, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করছে পুলিশ। তারপরও ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ খোঁজখবর নিচ্ছে।
পুলিশ আরও জানায়, মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য