পরিবেশ দূষণের কারণে সম্প্রতি সাভারের হরিণধরা এলাকায় চামড়া শিল্পনগরী বন্ধ করে দেয়ার সুপারিশ এসেছে সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে। চালু হওয়ার চার বছরের মধ্যে এটি বন্ধের দাবি উঠতে শুরু করেছে।
চামড়া শিল্পনগরী কেন বন্ধ করা হবে না, বিসিকের কাছে এর কারণ জানতে চেয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এদিকে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত মালিক ও শ্রমিকরাও পরিবেশ দূষণ রোধ করে সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে বাঁচাতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি কামনা করেছেন।
বিসিক বলছে, ট্যানারিগুলো প্রয়োজনের বেশি পরিমাণ পানি ব্যবহার করায় তা সিইটিপির শোধন ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। তবে সলিড বর্জ্যকে রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে পুনর্ব্যবহার করলে এই সমস্যা সমাধান হবে। এই লক্ষ্যে নতুন একটি প্রকল্প নিয়ে তারা এগুচ্ছে।
গত ২৩ আগস্ট পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি দূষণের কারণে চামড়া শিল্প নগরী বন্ধের সুপারিশ করে।
সাভারের হরিণধরা এলাকায় চামড়া শিল্পনগরীতে গিয়ে পরিবেশ দূষণ দেখতে পায় নিউজবাংলা।
শিল্পনগরীতে গিয়ে দেখা যায়, শেষ প্রান্তে সড়কের দুই পাশে স্তুপ করে রাখা হয়েছে কঠিন বর্জ্য। কোথাও কোথাও ড্রেন উপচে রাসায়নিক মিশ্রিত কালো পানি চলে এসেছে সড়কে। উৎকট গন্ধের কারণে সড়ক দিয়ে চলাচল দায় হয়ে পড়েছে শ্রমিকদের। বর্ষাকালে কিংবা বৃষ্টি হলেই ট্যানারি বর্জ্য মিশ্রিত পানি সড়কে চলে আসে। তখন ভোগান্তি চরমে পৌঁছায়।
কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) পাশেই ধলেশ্বরী নদীর তীর ঘেঁষে রীতিমত ভরাট হয়ে গেছে ট্যানারির কঠিন ও তরল বর্জ্যে, যা নদীর জন্যে হুমকি।
স্বাধীন ট্যানারির শ্রমিক মোহাম্মদ বাশার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাস্তাঘাট নোংরা হয়ে থাকার কারণে আসা-যাওয়া খুব কষ্ট হয়। রাস্তার দুই পাশে ময়লা রাখার কারণে পানি কোনো পাশে যাইতে পারে না। এই জন্য সমস্যা হয়।’
রাসেল মিয়া নামে ট্যানারির আরেক শ্রমিক বলেন, ‘আমি ভাত খাইয়া এই দিক দিয়া আসলে গন্ধে আমার মাথা ঘুরে। সব সময় ৫ টাকা অটো ভাড়া দিয়া ফ্যাক্টরিতে যাই। কিন্তু বৃষ্টি হইলে ১০ টাকা দিলেও অটো এই দিকে আসে না। তখন পুরা রাস্তা ময়লার পানিতে ডুইবা যায়। ওই হাইটা গেলেও পায়ে পাঁচড়া (চুলকানি) হয়। অনেক সময় গাড়িগুলা রাস্তার মইদ্দেও ময়লা ফালায় যায়।’
এত সমস্যা নিয়েও ট্যানারি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে চান এই পেশার সঙ্গে ৩০ বছর ধরে জড়িত কবির হোসেন। বর্তমানে গ্রিনঅ্যারো ট্যানারিতে কাজ করেন তিনি।
কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ট্যানারি বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের রিজিকের উপর আঘাত আসবে। এটা আমরা কোনোভাবে মাইনা নিতে পারব না। এর জন্যে বিসিক একমাত্র দায়ী। এমনকি যারা এইটার পৃষ্ঠপোষক, সরকারও এইটার জন্য দায়ী। এইটার দায় কারা নিবে, কী করবে যাতে এই শিল্পটা বাঁচে। চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার পরে এটা গোল্ডরেও হার মানায়।’
ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারের মারাত্মক ধরনের ত্রুটি ছিল। পরিবেশবান্ধব চামড়া শিল্পনগরী গড়ে তোলার মূল কম্পোনেন্ট সিইটিপি (কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার)। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটা সঠিকভাবে আজ পর্যন্ত ফাংশনিং করছে না। এটা সরকারও স্বীকার করে এবং সর্বজনস্বীকৃত।
‘এটার জন্য সরকারের যে দায়িত্ব পালন করা উচিত, আর মালিকদের যে রেসপন্সিবিলিটি – কেউই তা মানছে না। তাই সংসদীয় কমিটির ট্যানারি বন্ধ করে দেয়াার সুপারিশের মতো সিদ্ধান্তে আমরা বিক্ষুব্ধ।’
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ‘ট্যানারি বন্ধ করে দেয়া কোনো সমাধান হতে পারে না। আমরা মালিকরা হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে হাজারীবাগ থেকে এখানে এসে বিনিয়োগ করেছি। এখন আমাদের প্রোডাকশন বেড়েছে। এই সময় এমন সুপারিশের কারণে মালিকরা বিপাকে পড়েছেন। এমন আত্মঘাতী সুপারিশ করার আগে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল।’
তবে পরিবেশকে বাঁচাতে চামড়া শিল্পনগরী বন্ধ করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে দাবি পরিবেশবিদদের।
সাভার নদী ও পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ড. রফিকুল ইসলাম মোল্লা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা লাল চিহ্নিত একটা ইন্ডাস্ট্রি। লাল মানে ভয়াবহ। সেই লাল চিহ্নিত ইন্ডাস্ট্রি লোকালয়ে করা হলো। প্রথম থেকেই আমরা এটাতে সম্মত ছিলাম না। এই চামড়া শিল্পে শুধুমাত্র তরল বর্জ্যের কারণে যে দূষণ হচ্ছে তা নয়। এখানে ক্রোমিয়াম এসিডের মতো মারাত্মক গ্যাস আছে এবং সলিড আছে ওয়েস্ট। এগুলাতো মিনিমাইজেশনের কোনো ব্যবস্থাই নাই। সলিউবল অক্সিজেন এখানে অনেক কম। পরিবেশ অধিদপ্তরের মতে, এখানে স্যালাইনিটি অনেক বেশি। এসব জিনিসের এখানে মিনিমাইজেশন দরকার। সোজা কথা এটা, জোড়াতালি দিয়ে করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংসদীয় কমিটির সুপারিশ করার আগে অন্যান্যদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। এটা সরকার ও তাদের ব্যাপার। আমাদের মতে, এই ট্যানারি এখানে আদৌ করা উচিত হয়নি। এটাকে সরিয়ে নেওয়াই সঙ্গত।’
তবে ট্যানারির দূষণের কথা স্বীকার এই শিল্পকে বাঁচাতে চলমান সমস্যা নিরসনে কাজ করে যাওয়ার কথা জানিয়েছে বিসিক।
বিসিকের জেনারেল ম্যানেজার জীতেন্দ্র নাথ পাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাজারীবাগে ট্যানারির প্রোডাকশন ক্যাপাসিটি ছিল কম। এখানে এসে প্রোডাকশন ক্যাপাসিটি অনেক গুণ বেড়ে গেছে। তবে আমাদের দুর্বলতা ফিজিবিলিটি স্টাডিতে। হাজারীবাগকে রেখে হয়ত কিছু বাড়ানো হয়েছে।
‘আমি নিজেও বলব, এটা যদি আর একটু চিন্তা ভাবনা করা যেত যে, ৫০ কিংবা ১০০ বছর মেয়াদি, তাহলে সিইটিপির যে ক্যাপাসিটি ২৫ হাজার কিউবি সেটা বাড়ানো যেত। তাহলে কিন্তু আজকে এই অবস্থা হতো না। আর এখন ৪০ থেকে ৫০ হাজার কিউবি যেটা যাচ্ছে, এটা কিন্তু কোরবানির ঈদের এই তিন মাস যাচ্ছে। সারা বছর কিন্তু এটা থাকে না, ১৫ থেকে ২০ হাজার কিউবির ভিতরেই থাকে।
‘তবে আমাদের পানির ইউজটা কিন্তু পরিমিত করতে হবে। ইন্টারন্যাশনাল নিয়ম অনুযায়ী, ১ টন চামড়া প্রসেস করার জন্য ৩০ হাজার লিটার পানি ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু আমাদের এখানে ব্যবহার হয় ৬০ হাজার লিটার পর্যন্ত। আর পরীক্ষা করেও আমরা জানতে পেরেছি, আমাদের সিইটিপিতে সেই ধরনের কোনো সমস্যা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে সলিড ওয়েস্টটা নিয়ে সমস্যা। আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল, এসপিজিএস অর্থাৎ স্ল্যাশ থেকে ইলেকট্রিসিটি তৈরি করা হবে, যেটা টেকনিক্যালি ঠিক না হওয়ায় বাতিল করা হয়েছে। নতুন একটা প্রজেক্ট পরবর্তীতে হাতে নেয়া হয়েছে। সেই প্রজেক্টেটার প্ল্যানিং গবেষণায় যাচাই-বাছাই চলতেছে। মূলত এই সলিড ওয়েস্টগুলা কিন্তু আমাদের সম্পদ, ফেলার কোনো জিনিস নয়। এগুলিকে আমরা রিসাইক্লিং, রিইউজ করার পরিকল্পনা নিয়েই এগুচ্ছি। এগুলি যখন সম্পদে পরিণত হবে তখন এই সমস্যাটা সমাধান হবে। তাছাড়া ডাম্পিং ব্যবস্থা চিরদিনের জন্য নয়। এটা করলে আমরা সবদিক দিয়েই উপকৃত হব।’
রাজধানীর হাজারীবাগে নদী দূষণের কারণে চামড়াশিল্পকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পরিবেশে উন্নীত করতে সাভারের হেমায়েতপুরে শিল্পনগরী গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয় বিসিক। ২০০৩ সালে শুরু করা প্রকল্প ১ হাজার ১৫ কোটি ব্যয়ে ১৭ বছরে বাস্তবায়িত হয়। ২০১৭ সালে ১৩০টি ট্যানারি একযোগে উৎপাদন শুরু করলেও বর্জ্য শোধন সমস্যায় ধুকছে এই বিসিক শিল্প নগরী।
আরও পড়ুন:ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে জানাগেছে।
সোমবার রাতে মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পরে তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।
মুন্নির পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীতে রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন তারাগুনিয়া ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বলেন, “রোগী কীভাবে মারা গেছে সেটা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, “রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “গতকাল রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক এলাকায় উত্তেজনা ও হট্টগোলের আশঙ্কায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠাই। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকা থেকে কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে।”
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক। ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে বলবো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
একই ক্লিনিকে এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখানের) সাবেক সংসদ সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিমের নামে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে সেলিম নামে এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকায় শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া স্বাক্ষাতকারে এ দাবি করেন হাফিজ ইব্রাহিম।
এর আগে দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, যায়যায়দিন সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকার ডিজিটাল প্লাট ফরমে একটি সংবাদে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তুলে সেলিম নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, সংবাদটি ডিজিটাল প্লাট ফরমে প্রকাশ হওয়ার পর আমার নজরে আসে। আমি মনোযোগ দিয়ে তার অভিযোগ শুনি। যে ব্যক্তি আমার নামে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা না। আমি খবর নিয়ে জেনেছি, তিনি ভোলা-১ সদর আসনের বাসিন্দা ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের বাড়ির পাশে তার বাড়ি। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেলিম নামে ওই ব্যক্তির সাথে তার আপন ভাতিজি জামাইয়ের দীর্ঘদিন ধরে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে তার ভাতিজি জামাই তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এমনকি ওই বিষয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা রয়েছে।
হাফিজ ইব্রাহিম আরও বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পতিত সরকারের পলাতক একটি কুচক্রী মহল বিএনপির নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা এই ঘটনার পেছনে যে আসল সত্য রয়েছে তা উদঘাটন করুন।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী মহানগরীর একটি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব-৫।
রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর টিকাপাড়া এলাকার একটি বালুর স্তূপের আনুমানিক ২ ফুট গভীর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
সোমবার সকালে র্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অভিযানে একটি ৭.৬২ মি.মি. বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৫; সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল জানতে পারে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন লুট হওয়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি দুষ্কৃতকারীরা বোয়ালিয়া থানাধীন টিকাপাড়া এলাকায় লুকিয়ে রেখেছে। পরে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে বালুর স্তূপের ভেতর থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র্যাবের গোয়েন্দা দল।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসস’কে জানান, এটি পুলিশের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। তবে কোন থানার অস্ত্র সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। কারণ পিস্তলের গায়ে বাট নম্বর ঘষা-মাজার চিহ্ন স্পষ্ট। উদ্ধারকৃত বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি বোয়ালিয়া থানায় জিডির পর হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য