ঘোষণা দিয়েও এমারেল্ড অয়েল যে জটিলতায় উৎপাদনে যেতে পারেনি, তার সমাধানে হাত বাড়িয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
কোম্পানিটির আগের পর্ষদের নেয়া ঋণের সুদ মওকুফে বেসিক ব্যাংককে অনুরোধ করেছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান শিবলী-রুবাইয়াত উল ইসলাম। ব্যাংকটিও তা মেনে নিয়েছে বলে জানাচ্ছেন সেই বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক পক্ষ।
বেসিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মালিকপক্ষ উধাও হয়ে যাওয়ায় ২০১৬ সাল থেকে উৎপাদন বন্ধ এমারেল্ড অয়েলের। পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা শেয়ারধারীরা আশায় বুক বাঁধছেন বিএসইসির উদ্যোগে।
যে ১২টি বন্ধ ও লোকসানি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে সেগুলোতে প্রাণ ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, তার মধ্যে একটি এই এমারেল্ড।
জাপান প্রবাসী বাংলাদেশির কোম্পানি মিনোরি বাংলাদেশ এই কোম্পানির নতুন ব্যবস্থাপনায় এসেছে। তারা শেরপুর সদরে কারখানাটি সংস্কার করে উৎপাদনে নিয়ে আসার পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। গ্যাস সংযোগ চালুর বিষয়ে তিতাস গ্যাসের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। টাকা জমা দিলেই গ্যাস পাওয়া যাবে। বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েও আর জটিলতা নেই।
তবে সমস্যা ছিল বেসিক ব্যাংকের ঋণ নিয়ে জটিলতা। আগের পর্ষদ যে ঋণ নিয়েছিল, তা সুদ আসলে ১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। মিনোরি চাইছিল সুদ মওকুফ সুবিধা। আর কোম্পানির শেয়ারের বিনিময়ে তারা ঋণের দায়ভার নিতে চাইছে। অন্যদিকে বেসিক ব্যাংক সুদ মওকুফের বিষয়ে রাজি ছিল না। পাশাপাশি তারাও আগের পর্ষদের শেয়ারের মালিকানা চাইছিল।
মতভিন্নতা মেটাতে পরে মিনোরি যোগাযোগ করে বিএসইসির সঙ্গে। আর গত মঙ্গলবার রাতে বেসিকসহ তিন পক্ষে বৈঠক হয় চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত এর উপস্থিতিতে।
মিনোরি বাংলাদেশের পরিচালক আফজাল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আলোচনায় বেসিক ব্যাংকের ঋণ জটিলতা নিয়ে কথা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে ব্যাংকের কাছে সুদ মওকুফের জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। বিএসইসি চেয়ারম্যানও একই বিষয়ে কথা বলেছেন।’
তিনি বলেন, ‘বৈঠকে বেসিক ব্যাংকের প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় ভালো হয়েছে। আশা করি আমরা কোম্পানিটি চালু করতে পারব।’
বিষয়টি নিয়ে বেসিক ব্যাংকের বক্তব্য জানতে পারেনি নিউজবাংলা। তবে বিএসইসি অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বৈঠকে কোম্পানিটির বেসিক ব্যাংকের যে ঋণ জটিলতা আছে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কোম্পানির পক্ষ থেকেও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। আশা করি সব সমাধান হয়ে যাবে।’
বিএসইসি চেয়ারম্যান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে জটিলতা আছে সেটি মনে হয় আর হবে না। ব্যাংকের সঙ্গে কিছু সমস্যা আছে। আমরা তাদের বলেছি, আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করব।’
শেয়ার নিয়ে জটিলতাও
বিএসইসি পর্ষদ পুনর্গঠনের আগে যারা মালিকানায় ছিলেন, তাদের হাতে এখনও কোম্পানিটির ২৫ শতাংশের মতো শেয়ার আছে। মিনোরি বাজার থেকে কিনেছে ৮ শতাংশের কিছু বেশি শেয়ার। তারা আগের পর্ষদ সদস্যদের শেয়ারের মালিকানা চায়। এর বিনিময়েই কারখানাটির যে ঋণ আছে, তার দায়িত্ব নিতে তারা আগ্রহী।
বৈঠকের পর আফজাল হোসেন বলেন, ‘ব্যাংক ঋণের বিষয়টি সমাধান হয়ে গেলে শেয়ার হস্তান্তরের বিষয়টিও সমাধান হয়ে যাবে। আগের যে চেয়ারম্যান, তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। বিষয়টি সমাধানে প্রয়োজনে আমরা অ্যাম্বাসির সহযোগিতা নেব।’
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘শেয়ার হস্তান্তরে কোনো জটিলতা হবে না। এটা আমরা নিশ্চিত করব।’
পর্ষদে নতুন চেয়ারম্যান
গত ৩ মার্চ সাবেক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হককে চেয়ারম্যান করে নতুন পর্ষদ করা হয় এমারেল্ড অয়েলের।
পর্ষদের অন্য স্বাধীন পরিচালকরা হচ্ছেন বিআইবিএমের প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গোলাম সারওয়ার, সজিব হোসেইন ও সন্তোষ কুমার দেব।
তবে শহিদুল হক পর্ষদ থেকে সরে গেছেন অন্য একটি কারণে। তিনি একটি ব্রোকারেজ হাউজের লাইসেন্স নিয়েছেন। ফলে কোনো কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে থাকতে চাইছেন না।
এই পরিস্থিতিতে নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সাবেক অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলামকে।
শফিকুল ইসলাম এর আগে পর্ষদ পুনর্গঠন করা আলহাজ্ব টেক্সটাইলকে উৎপাদনে নিয়ে আসতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
লাইসেন্স নবায়নের আবেদন জমা দেয়া হয়েছে
গত ২৬ আগস্ট ঢাকা ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জকে এমারেল্ড অয়েল জানায়, ১ সেপ্টেম্বর থেকে তারা উৎপাদন শুরু করতে পারছে না। এর কারণ হিসেবে, করোনার সময় বেশ কিছু অফিস বন্ধ থাকায় তারা কয়েকটি লাইসেন্সের কাজ করতে না পারার কথা জানানো হয়।
পরিচালক আফজাল হোসেন জানান, এই লাইসেন্সগুলো রপ্তানিসংক্রান্ত।
তিনি বলেন, ‘ইএফসি, আইএফসি, এনার্জি রেগুলেটরির লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। তিনটি লাইসেন্স নবায়ন না করলে আমরা উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করতে পারব না। আবার শেয়ার ট্রান্সফার না হলে এ তিনটি লাইসেন্সও নবায়ন করা সম্ভব হবে না। তাই উৎপাদন শুরু করার আগে এই বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
লাইসেন্স করতে আর কত দিন লাগবে- এই প্রশ্নে আফজল বলেন, ‘এখন আমরা শেয়ার হস্তান্তরকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। লাইসেন্সের কাগজপত্র জমা দেয়া আছে। এগুলো প্রক্রিয়াধীন আছে।’
কারখানা মেরামত, গ্যাস সংযোগ কতদূর
শেরপুর পৌরসভার শেরীপাড়ায় এমারেল্ডের কারখানা অবস্থিত। গত দুই মাস ধরেই সেখানে কর্মযজ্ঞ চলছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া যন্ত্রপাতির যা যা নষ্ট হয়েছে, সেগুলোর মেরামতকাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আফজাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘ফ্যাক্টরিতে গ্যাস-সংযোগের জন্যও তিতাসের সঙ্গে কথা হয়েছে। টাকা পরিশোধ করলে লাইন সংযোগ দেয়া হবে। এটি পেতে আরও মাসখানেক সময় লাগবে। এটি আসার পর আমরা ১৫ দিনের ট্রায়াল দেব। এরপর পরিপূর্ণ উৎপাদনের যেতে আরও কিছু সময় প্রয়োজন হবে।’
কোম্পানির তথ্য
এমারেল্ড অয়েল ২০১৪ সালে ১০ টাকা করে অভিহিত মূল্যে দুই কোটি শেয়ার বিক্রি করে ২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে পুঁজিবাজার থেকে। কোম্পানিটি ধানের কুঁড়া থেকে তেলের ব্র্যান্ড ‘স্পন্দন’ বাজারে বেশ সাড়া ফেলেছিল।
তবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার দুই বছর পর রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি মামলার কারণে ২০১৬ সালের ২৭ জুন থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় কোম্পানিটির। মামলার আসামি হয়ে মালিকপক্ষ উধাও হয়ে যায়।
শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বিএসইসি এ রকম রুগণ বেশ কিছু কোম্পানিকে বাঁচানোর উদ্যোগ নিয়েছে। পর্ষদ পুনর্গঠন করে স্বাধীন পরিচালক নিয়োগের পর এরই মধ্যে উৎপাদন শুরু হয়েছে আলহাজ টেক্সটাইলে, ডুবে যাওয়া রিংসাইন টেক্সটাইলেও শুরু হয়েছে পরীক্ষামূলক উৎপাদন।
এমারেল্ড উৎপাদনে এলে এটা হবে তৃতীয় কোম্পানি, যেটিকে ডুবে যাওয়া থেকে টেনে তোলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য