চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি জাহাজ থেকে বেড়েছে রাজস্ব আয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে এ খাতে ৩ হাজার ২৪৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করেছে চট্টগ্রাম বন্দর।
এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে আয়ের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। মূলত রাজস্ব আয় বৃদ্ধি নির্ভর করে কনটেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের ওপর।
বিভিন্ন কৌশল ও যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত এবং বৈদেশিক জাহাজ আসার সংখ্যা দিন-দিন বাড়ার কারণে রাজস্ব আয় বাড়ছে বলে দাবি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে জাহাজের মোট পরিচালনা আয়ের মধ্যে শুধু বৈদেশিক জাহাজ থেকে রাজস্ব এসেছে ৫২০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
২০১৯-২০ অর্থবছরে সে আয় ছিল ৪৮৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। অন্যদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সে আয় ৪৩৬ কোটি টাকায় এসে দাঁড়িয়েছিল।
বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পণ্য ওঠানামা করানো হয়। এর মাধ্যমেও রাজস্ব আয় করে বন্দর। ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য ওঠানামা করে ২ হাজার ৭২৭ কোটি, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২ হাজার ৫৮০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ হাজার ৩৭৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকার পণ্য ওঠানামা বাবদ আয় করে বন্দর।
পাশাপাশি ২০২০-২১ অর্থবছরে বন্দরে প্রতি টন পণ্যে রাজস্ব এসেছিল ২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরেও একই পরিমাণে রাজস্ব আদায় হয়েছিল।
বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আরও জানান, বন্দরে জাহাজ আসার সংখ্যাও আগের তুলনায় বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩ হাজার জাহাজ এসেছিল বন্দরের জেটিতে। তার আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২ হাজার ৯৭০টি জাহাজ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ হাজার ৮৬৮টি জাহাজ এসেছিল।
অন্যদিকে জাহাজ বহির্গমনের সংখ্যাও অন্যান্য বছরের তুলনায় বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ২ হাজার ৯৯০টি জাহাজ, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২ হাজার ৯৬০ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গিয়েছিল ২ হাজার ৮৫০টি জাহাজ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বেড়েছে আমদানি ও রপ্তানি মালপত্র খালাসের পরিমাণও। আমদানি করা মালপত্রের মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯৩৯ লাখ টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮৯১ লাখ টন এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮২৯ লাখ টন আমদানিপণ্য খালাস করা হয়েছে।
অন্যদিকে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৮১ লাখ টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৬৯ লাখ টন এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৫২ লাখ টন পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে বেড়েছে পণ্য রপ্তানিও।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য মতে, দুই বছরের ব্যবধানে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ অবস্থানের জন্য বার্থ ও মুরিংয়ের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ অবস্থানের জন্য ১৭টি বার্থ ও ১৯টি মুরিং ছিল।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে সে সংখ্যা বেড়ে ১৯টি বার্থ ও ৩৫টি মুরিং রয়েছে। এ ছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে মোট ৩০ লাখ ২০ হাজার টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে। তার আগের অর্থবছরেও একই ধারা বজায় ছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৯ লাখ ১৯ হাজার টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মোহাম্মদ উমর ফারুক বলেন, ‘বর্তমানে বন্দরে সার্বিক কাজে গতিশীলতা ফিরেছে। কোনো ধরনের কনটেইনার জটসংক্রান্ত জটিলতাও নেই। সবকিছু স্বাভাবিক গতিতেই চলছে।
‘পাশাপাশি গত বছরগুলোর তুলনায় বন্দরে জাহাজের আগমনের সংখ্যাও বেড়েছে। তাই জাহাজ থেকে আয়ও বেড়েছে। আশা করছি, সামনে এ আয় আরও বাড়বে।’
আরও পড়ুন:হালকা ইস্পাতের রড থেকে ইলেকট্রনিক্স বা খাবার- সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে সব পণ্যের বিজ্ঞাপন কমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন- উচ্চ মূল্যস্ফীতি, টাকার মান কমে যাওয়া ও ব্যাংকের উচ্চ সুদহারের কারণে তাদের খরচ কমাতে হচ্ছে।
এ ছাড়াও, কয়েকটি কারখানা অফিস ইউটিলিটি ব্যবহার ও ব্যাংক নির্ভরতা কমানো এবং অর্থায়নের বিকল্প উৎস খোঁজার পথে হাঁটছে।
অন্যরা পরিচালন খরচ পর্যালোচনা করছে। অতিরিক্ত খরচ কমানো ও সীমিত সংখ্যক কর্মী দিয়ে সর্বাধিক উৎপাদন পাওয়ার চেষ্টা করছে।
ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্সের প্রস্তুতকারক ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ইলেক্ট্রো মার্ট গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল আফসার বলেন, ‘পরিস্থিতি সত্যিই কঠিন।’
সাম্প্রতিক মাসগুলোয় ইলেক্ট্রো মার্ট খরচ কমানোর অংশ হিসেবে সংবাদপত্র ও টেলিভিশন বিজ্ঞাপনসহ প্রচারণামূলক কার্যক্রম কমিয়েছে।
ক্রমবর্ধমান আর্থিক চাপ সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটি পণ্যের দাম বাড়াতে পারেনি এই ভয়ে যে চলমান মূল্যস্ফীতির মধ্যে তাদের পণ্য বিক্রি আরও কমে যেতে পারে। এর পরিবর্তে তারা খরচ কমানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে জানান নুরুল আফসার।
তিনি আরও জানান, ব্যাংক সুদের হার ১৭ শতাংশের বেশি হওয়ায় তার প্রতিষ্ঠানের মুনাফা কমেছে।
তিন বছর আগেও ব্যাংকগুলোর সুদহার ছিল ১০ শতাংশের নিচে। সেসময় ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮০ টাকা। মূল্যস্ফীতি ছিল ছয় থেকে সাত শতাংশ।
নুরুল আফসার বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর তুলনায় উচ্চ সুদহারের কারণে আমাদের মুনাফা অনেক কমেছে। বাড়তি খরচ মোকাবিলায় অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানোর চেষ্টা করছি।’
এই প্রচেষ্টার মধ্যে আছে ইউটিলিটি ব্যবহার সীমিত করা ও অফিসের অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানো।
‘যেখানেই অর্থ সাশ্রয়ের সুযোগ আছে, সেখানেই খরচ কমিয়ে আনছি,’ যোগ করেন তিনি।
বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত বলেন, ‘ব্যাংকের সুদহার ক্রমাগত বাড়ছে। মূল্যস্ফীতিও অসহনীয় পর্যায়ে। এসব মোকাবিলায় আমরা খরচ কমানোর বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছি।’
তার ভাষ্য, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে খরচ কমানো ও প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে উচ্চ সুদহার ও মূল্যস্ফীতির প্রভাব মোকাবিলার চেষ্টা করছি।’
‘কর্মীদের বেতন নিয়মিত রাখতে খরচ কমানোয় মনোযোগ দিচ্ছি’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘কেবল সেখানেই খরচ করি সেখানে খরচ না করলেই নয়। প্রচারের বাজেট কমিয়ে আনা হয়েছে।’
বিনিয়োগের জন্য ঋণ নেওয়া জরুরি। কিন্তু, ব্যাংকের উচ্চ সুদহার এড়ানো সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
এ দিকে, ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
দেশের অন্যতম শীর্ষ এই শিল্পগোষ্ঠীর প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘টিকে থাকার জন্য ব্যাংক ঋণ কমাতে হয়েছে। খরচ কমাতে হয়েছে। নতুন কিছু চিন্তা করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসা করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে।’
তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানটি উৎপাদন খরচ ও ব্যাংকের ওপর নির্ভরতা কমানো এবং টাকার বিকল্প উৎস খোঁজার দিকে মনোনিবেশ করছে।
‘আমাদের কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। খরচ কমানো ও দক্ষতা বাড়াতে ক্রমাগত উদ্ভাবনী পদ্ধতির প্রয়োগ করছি।’
আহসান খান চৌধুরী আরও বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে ব্যাংকের বাড়তি সুদহার ও মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ‘ইউটিলিটি বিলের খরচ বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের সংকট আরও বেড়েছে।’
ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা খাত সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোয় উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। অন্যদিকে, ব্যাংকের উচ্চ সুদহার আমাদের টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব করে তুলেছে।’
এমন পরিস্থিতিতে অনেক কারখানার মালিক পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। এটি জীবনযাত্রার বাড়তি খরচে পিষ্ট মানুষের ওপর সরাসরি বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার মতো বলে মনে করেন তিনি।
গত বছরের তুলনায় এ বছর পণ্য বিক্রি ও মুনাফা কমে যাওয়ার কথা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।
আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ আরও বলেন, ‘পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো যদি এতটা হিমশিম খায়, তাহলে তালিকাভুক্ত নয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্দশা কত বেশি তা কল্পনাও করা যায় না।’
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যবসার পরিবেশ নিয়ে বিসিআইয়ের সাম্প্রতিক মূল্যায়নের কথা উল্লেখ করে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘জরুরি নীতিগত উদ্যোগ নেওয়া না হলে গভীর স্থবিরতা দেখা দেবে।’
অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে টানা পাঁচ দিনের মতো চলছে কর্মকর্তাদের কলমবিরতি কর্মসূচি। এই কর্মবিরতির ফলে দেশের রাজস্ব ঘাটতি বাড়ছে এবং এ নিয়ে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনার প্রক্রিয়া আরও চাপে পড়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) পরিচালক ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ ইউএনবিকে বলেন, ‘এনবিআর কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে অবশ্যই রাজস্ব আদায়ে বিঘ্ন ঘটছে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এ ধরনের কর্মবিরতিতে যাওয়া উচিৎ হয়নি।’
এই কর্মবিরতির ফলে সৃষ্ট ক্ষতি পরবর্তীতে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে ‘এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই’ বলে জানান তিনি।
সরকার সম্প্রতি এনবিআর ভেঙে দুটি নতুন সংস্থা—রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও রাজস্ব নীতি বিভাগ—গঠনের সিদ্ধান্ত দিলে এর প্রতিবাদে কলমবিরতির ঘোষণা দেন এনবিআর কর্মকর্তারা। এর ফলে দেশের রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়া ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার (১৩ মে) রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পুনর্গঠন কার্যকর হয়।
সরকারের দাবি, এর ফলে রাজস্ব সংগ্রহ ও নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়া আরও দক্ষ হবে। তবে হঠাৎ নেওয়া এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কঠোর আপত্তি জানিয়েছেন এনবিআর কর্মকর্তারা। তাদের আশঙ্কা, নতুন কাঠামোয় তাদের দায়িত্ব ও চাকরির নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
কর্মবিরতির ফলে আয়কর রিটার্ন প্রক্রিয়া, কাস্টমস ছাড়পত্র ও ভ্যাট আদায়ে বিলম্ব হচ্ছে। এতে করে রাজস্ব আদায়ের ওপর বিদ্যমান চাপ আরও বেড়েছে।
২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই–ডিসেম্বর) এনবিআর গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় করেছে, যা ২৫ শতাংশ ঘাটতি। এ ছাড়া ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ২২ হাজার ১৫১ কোটি টাকা, কিন্তু আদায় হয়েছে মাত্র ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ মার্চ মাস পর্যন্তই রাজস্ব ঘটতি হয়েছে ৬৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা।
এই ঘাটতির জন্য রাজনৈতিক অস্থিরতা, আমদানির হ্রাস ও কর ব্যবস্থার কাঠামোগত দুর্বলতাকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। তবে এনবিআর কর্মকর্তাদের চলমান কর্মবিরতি রাজস্ব আদায় আরও ব্যাহত করছে, যার ফলে ঘাটতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
পলিসি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) পূর্বাভাস দিয়েছে, রাজস্ব আদায়ের এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছরের শেষে রাজস্ব ঘাটতি ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারকে ব্যয় সংকোচন করতে হতে পারে কিংবা বাড়াতে হতে পারে ঋণগ্রহণের পরিমাণ, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এই সংকট মোকাবিলায় কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া এনবিআর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এনবিআর কর্মকর্তাদের উদ্বেগের অবসান ঘটানো এবং নতুন কাঠামোকে তারা যাতে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারেন, সেই লক্ষ্যেই এই আলোচনা।
তাছাড়া কর্মবিরতি চলাকালে জরুরি রাজস্ব আদায় কার্যক্রম সচল রাখতে বিকল্প ব্যবস্থার কথাও ভাবছে সরকার। তবে দেশের রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় আস্থা পুনর্প্রতিষ্ঠার জন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই সংকটের সমাধান করে নতুন রাজস্ব বিভাগের সফল বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘কর্মবিরতি যে ক্ষতিসাধন করেছে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তার আনেকটাই পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। সমস্যাটির সমাধান তাড়াতাড়ি এলে ঘাটতি পূরণ বড় কোনো সমস্যা হবে না।’
টানা দুই দিন পতনের পর ঢাকার পুঁজিবাজারে উত্থান হলেও সূচক কমেছে চট্টগ্রামে। তবে দুই বাজারেই বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৮ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়া ভিত্তিক ডিএসইএস ৫ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯০ কোম্পানির দাম বেড়েছে বেশিরভাগের। ২২১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১০৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই বেড়েছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ২১৩ কোম্পানির মধ্যে ১০৬ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ৭০ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ১৩ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩ কোম্পানির।
৩১ কোম্পানির ২৩ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড সর্বোচ্চ ১১ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৯৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৮৮ কোটি টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফুওয়াং ফুড। অন্যদিকে ৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইউসিবি ব্যাংক।
চট্টগ্রামে পতন
ঢাকায় উত্থান হলেও সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৭ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৭৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৬৯, কমেছে ৬৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ১৬ কোটি ১০ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার শমরিতা হাসপাতাল এবং ১০ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
গত মার্চ মাসে মোবাইলে ১ লাখ ৭৮ হাজার ১২৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। একক মাসের হিসাবে এই লেনদেন অতীতের যেকোনো মাসের চেয়ে বেশি। ব্যাংকিং সেবায় বৈপ্লবিক এক পরিবর্তন এনেছে মোবাইল ব্যাংকিং। এখন প্রতিদিন গড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।
কেবল টাকা পাঠানোই নয়, দেশের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করেছে মোবাইল ব্যাংকিং। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবামূল্য পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ প্রবাসী-আয় বা রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন অন্যতম পছন্দের মাধ্যম। এই সেবার কারণে বেড়েছে নতুন কর্মসংস্থান।
গত মার্চ মাসে মোবাইলে ১ লাখ ৭৮ হাজার ১২৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। একক মাসের হিসাবে এই লেনদেন অতীতের যেকোনো মাসের চেয়ে বেশি। এর আগে চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল, যা ছিল এতদিন সর্বোচ্চ।
মার্চে প্রতিদিনের গড় হিসাবে লেনদেনের হয়েছে ৫ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা; আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে এই অঙ্ক ছিল ৫ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক শনিবার মোবাইলে আর্থিক লেনদেনের হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের শেষ মাস জুনে মোবাইলে লেনদেন হয়েছিল ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৮৩ টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে তা কমে ১ লাখ ২২ হাজার ৯২২ কোটি টাকায় নেমে আসে।
পরের মাস আগস্টে লেনদেন বেড়ে হয় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয় ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৭ কোটি টাকা। অক্টোবরে বেড়ে হয় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা। নভেম্বর মাসে তা আরও বেড়ে হয় ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা। গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা।
২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইল ফোনে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়। ফেব্রুয়ারিতে তা কমে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮০ কোটি টাকায় নেমে আসে।
হাতের মোবাইল ফোনই এখন ব্যাংক। হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিই হয়ে উঠেছে সব ধরনের লেনদেনের অপরিহার্য মাধ্যম। এসব লেনদেনের হিসাব খুলতে কোথাও যেতে হয় না। গ্রাহক নিজেই অনায়াসে নিজের হিসাব খুলে লেনদেন করতে পারছেন। মোবাইল ফোনের সাহায্যে অন্যকে টাকা পাঠানো, মোবাইল রিচার্জ, বিভিন্ন পরিষেবা ও কেনাকাটার বিল পরিশোধ, টিকেট কেনাসহ কত সেবা যে মিলছে, তা এক দমে বলা খুবই কঠিন। সব মিলিয়ে বিকাশ, রকেট, নগদ ও উপায়ের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে আর্থিক স্বাধীনতা ও স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিয়েছে।
২০২৪ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইলে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন হয় ১ লাখ ৩০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। মার্চে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা।
এপ্রিল ও মে মাসে লেনদেন হয় যথাক্রমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৯ কোটি ও ১ লাখ ৪০ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা; নভেম্বরে হয়েছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা।
তার আগের মাস অক্টোবরে এক লাখ ২০ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়। সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয় এক লাখ ৮ হাজার ৩৭৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগস্টে লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক লাখ ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা।
২০২২-২৩ অর্থ বছরের শেষ চার মাসেই (মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন) মোবাইলে লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম মাস জুলাইয়ে তা কমে লাখ কোটি টাকার নিচে, ৯৮ হাজার ৩০৬ কোটি টাকায় নেমে আসে। এরপর থেকে প্রতি মাসেই লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হচ্ছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোবাইলে লেনদেন হয়েছিল ৩২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা।
এভাবেই বাংলাদেশে মোবাইলে আর্থিক সেবা বা এমএফএস ব্যবহার প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত গতিতে বাড়ছে।
গ্রাহক ২৪ কোটি ৩৬ লাখ
মোবাইল লেনদেনে গ্রাহক সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৬৮। মার্চে সেই গ্রাহক সংখ্যা ২৪ কোটি ৩৬ লাখ ২৭ হাজার ২৮ এ দাঁড়িয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ২৪ কোটি ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৩৩৪। জানুয়ারিতে ছিল ২৩ লাখ ৯৩ লাখ ২ হার ৯৯১।
গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ২৩ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার ১৫৩। নভেম্বরে ছিল ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ১২ হাজার ৫১৫। অক্টোবর ছিল ২৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪ হাজার ৭১৩। সেপ্টেম্বরে ২৩ কোটি ৩৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫২৩। একজন গ্রাহক একাধিক এমএফএস সেবায় হিসাব খুলতে পারেন। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে ঠিক কত নাগরিক এমএফএসের আওতায় এসেছেন, তা বলা যাচ্ছে না। তবে প্রতিটি পরিবারেই সেবাটি পৌঁছে গেছে, এটা বলা যায়।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ভোক্তা এবং ব্যবসায়ীদের স্বার্থে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার ব্যবসা চলমান থাকবে। ভারতের পদক্ষেপের বিষয়ে আমরা এখনও অফিসিয়ালি কিছু জানি না। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানার পর ব্যবস্থা নিতে পারবো। যদি সমস্যা দেখা দেয় বা তৈরি হয় তাহলে উভয়পক্ষ আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবো।
উপদেষ্টা আজ রোববার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের সিদ্ধান্তের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া ও নিউজ থেকে আমরা জেনেছি তারা স্থলবন্দর বিশেষ করে আখাউড়া, ডাউকিস্থ বন্দরসহ সীমান্তবর্তী কয়েকটি অঞ্চলের বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জনই আমাদের বড় লক্ষ্য। এটা দু’দেশের জন্য লাভজনক বিষয়। আমরা মনে করি ভারত নিজেও একটা টেক্সটাইল বা বস্ত্র শিল্পে সমৃদ্ধ দেশ। এরপরও যখন আমাদের দেশ থেকে এসব পণ্য রফতানি হয় সেটা আমাদের সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করেই হয়।
তিনি আরো বলেন, ট্রান্সশিপমেন্টের প্রভাব আমাদের নেই। আমরা নিজেদের সক্ষমতা ব্যবহার করে নিজস্বভাবেই এ সমস্যার সমাধান করেছি।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমরা যেহেতু ভৌগোলিকভাবে কানেক্টেড একটা দেশ, আমাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা, পরিবহণ ব্যয়সহ অন্যান্য বিষয়গুলো নির্দিষ্ট। এক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন সময় আমাদের কৃষিপণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করি, ভারতও করে। এটা বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার প্রক্রিয়া এবং আমরা সে বিষয়ে কাজ করছি। সেখানে যদি সমস্যা দেখা দেয় বা তৈরি হয় তাহলে উভয়পক্ষ আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবো।
উপদেষ্টা বলেন, আমি উদার বাণিজ্যে বিশ্বাসী। আমার কাছে বাণিজ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমার দেশের ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বাণিজ্য উদারীকরণ ও বাণিজ্য ইনক্লুশন ছাড়া আর কোনো রাস্তা আমি দেখি না। বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়ে তিনি আরো বলেন, আমাদের বৈচিত্র্যকরণ ও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা বাণিজ্য বৃদ্ধিতে কাজ করবো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ফের পিছিয়ে আগামী ২ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত। রবিবার (১৮ মে) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল।
তবে মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন এ দিন ধার্য করেন।
২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করা হয়।
পরে ওই টাকা ফিলিপাইনে পাঠানো হয়। দেশের অভ্যন্তরের কোনো একটি চক্রের সহায়তায় হ্যাকার গ্রুপ রিজার্ভের অর্থপাচার করে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ওই ঘটনায় একই বছরের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে অজ্ঞাতানামাদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন।
মামলাটি বর্তমানে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে উত্থান দিয়ে শুরু হলেও প্রথম ঘণ্টার পর কমতে শুরু করে লেনদেন সূচক। প্রথম ধাক্কায় বেশিরভাগ কোম্পানির দাম বাড়লেও সূচকের অকস্মাৎ পতনে দোলাচলে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসইএসও নিম্নমুখী।
বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এ ছাড়া, লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৬০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৭ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সব মিলিয়ে প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৬০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
এদিকে, বড় উত্থান দিয়ে লেনদেন শুরু করলেও দুই ঘণ্টার মধ্যে সূচকে ধস নামে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৮২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৭১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৪ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য