ব্যতিক্রমী কিছু না ঘটলে সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, যখন দেশের সুপরিচিত গবাদি পশু মহিষকে দেখতে যেতে হবে চিড়িয়াখানায়! দেশে মহিষের অভ্যন্তরীণ প্রজনন বা উৎপাদন কমছে আশঙ্কাজনক হারে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, আশির দশকে দেশে মহিষের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪২ লাখ। গত কয়েক দশকে এ সংখ্যাটি কোটিতে পরিণত হতে পারত। কিন্তু বাংলাদেশে সেটি হয়নি। বছর বছর এ সংখ্যা কমতে কমতে ২০১০ সাল নাগাদ নেমে আসে ১৪ লাখ ৮৩ হাজারে।
২০১৫ সালে দেশে মহিষের সংখ্যা আরও কমে দাঁড়ায় ৮ লাখ ৩০ হাজার, ২০১৮ সালে ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৮৩০টি। সবশেষ ২০১৯ সালের হিসাবে দেশে মহিষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৪১১টিতে।
তবে ২০১৯ সালের পর চলতি বছর পর্যন্ত দেশে দুটি কোরবানির উৎসব গেছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে প্রতিটি উৎসবেই গড়ে ১ লাখ মহিষ জবাই করা হয়েছে। এ ছাড়া মাংস ব্যবসায়ী সমিতির দাবি, মাংসের চাহিদার জন্য সারা দেশে প্রতিদিন কয়েক শ মহিষ জবাই করা হয়। কিন্তু মাংস সরবরাহের জন্য যে পরিমাণ মহিষ জবাই হয়, তার ঘাটতি পূরণে দেশে সে হারে মহিষের বংশবিস্তার বা নতুন মহিষের জন্ম হচ্ছে না।
সংশ্লিষ্টদের মতে, গত কয়েক দশকে দেশে যে সংখ্যক মহিষ জন্ম হয়েছে, জনসংখ্যা অনুপাতে মাংস উৎপাদনের প্রয়োজন মেটাতে তার থেকে কয়েক গুণ বেশি মহিষ নিধন হয়েছে।
দেশে মহিষের মাংস তত জনপ্রিয় নয়। গরুর চাহিদা ও দাম বাড়তে থাকায় এবং এর বিপরীতে তুলনামূলক মহিষের চাহিদা কম থাকার কারণে, দাম ক্রমাগত কমতে থাকায় বাজারে অনেক বিক্রেতা ভোক্তাকে ধোঁকা দিয়ে মহিষের মাংসকেই অবাধে গরুর মাংস বলে চালিয়ে দিত। এতে অস্তিত্ব সংকটে পড়ে মহিষ।
মাংস খাওয়ার নামে নির্বিচার মহিষ নিধনই এ গবাদি পশুর বিলুপ্তির আশঙ্কার একমাত্র কারণ নয়। এর পাশাপাশি মহিষ রক্ষা, জাত উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে সরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ ও পরিকল্পনার অভাব ছিল। জনসংখ্যার চাপে মহিষের চারণভূমি ক্রমাগত কমতে থাকায় বাসযোগ্য আবাসন এলাকার সংকট তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া চিকিৎসা পদ্ধতির অভাব এবং নানা রোগ-বালাইয়ের কারণেও অনেক মহিষের মৃত্যু ঘটেছে। এ পরিস্থিতিতে উপকূলীয় অঞ্চলের চারণভূমি এলাকা ছাড়া ইতিমধ্যে অনেক এলাকা মহিষশূন্য হয়ে পড়েছে। এভাবে ধারাবাহিকভাবে কমে আসায় দেশ থেকে এখন গৃহপালিত মহিষ বিলুপ্তির পথে।
অথচ দেশে এ চিত্রটি পুরাই উল্টো হতে পারত। কেননা এই সময়ে গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ প্রায় সব পশুপাখির খামার বেড়েছে।
গরুর চেয়ে মহিষ লাভজনক
মহিষ পালনের গুরুত্বের বিষয়ে সম্প্রতি একটি প্রকাশনা বের করেছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অবস্থিত সোসাইটি ফর ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভস (এসডিআই) নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। এর নির্বাহী পরিচালক সামছুল হক দেশে মহিষ পালনের সম্ভাবনা বিষয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে দাবি করেন, গরুর তুলনায় মহিষ পালনে সুবিধা বেশি। কারণ এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। মৃত্যুর হার কম। মহিষ সহজেই নিম্নমানের খাবার খেয়ে হজম করতে পারে- এই দিয়েই সে দেহ বৃদ্ধি অক্ষুণ্ন রাখতে পারে। তাছাড়া গৃহপালিত হিসেবে এদের বাসস্থান কিংবা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খামার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্য যে কোনো প্রাণীর তুলনায় খুব কম ব্যয়বহুল।
এদের পরিচর্যা আরও সহজ। মহিষ গরুর তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশিসংখ্যক বাচ্চা জন্ম দেয় এবং তার থেকে বেশি মাংসও পাওয়া যায়। নানাবিধ দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনের জন্যও মহিষের দুধ বেশি উপযোগী ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। এ ক্ষেত্রে দুই কেজি গরুর দুধের সমান এক কেজি মহিষের দুধ।
সামছুল হক দাবি করেন, বাংলাদেশের আবহাওয়া ও ভূ-প্রকৃতি মহিষ পালনের খুবই উপযোগী। ইতিমধ্যে গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে, বাংলাদেশের সার্বিক আবহাওয়ায় লাভজনকভাবে মহিষ পালন সম্ভব। জনসংখ্যার চাপে বাংলাদেশের পশুর চারণভূমি কমে গেলেও উপকূলীয় বিরাণ চরাঞ্চল, যা মহিষের আদর্শ চারণভূমি হিসেবে খ্যাত, সেসব অঞ্চলে ব্যাপক আকারে কিছুটা আধুনিক পদ্ধতিতে মহিষের লাভজনক খামার গড়ে তোলার সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এ দেশে মহিষ পালনের বিপুল সম্ভাবনার দিকটি এখন পর্যন্ত ব্যাপক সংখ্যক কৃষক, খামারি ও পরিকল্পনাবিদদের কাছে যথাযথ দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়নি। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা শাখা) আফলাক উদ্দিন ফকির নিউজবাংলাকে জানান, ‘মহিষের প্রতি দেশের মানুষের আগ্রহ কম। তা ছাড়া যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশে মহিষের জাত উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম সেভাবে বিস্তার লাভ করেনি। মানুষ এখন হাই-ইল্ডি ব্রিড পালনে আগ্রহী। মহিষের সে রকম জাত দেশে পাওয়া যায় না।’
আফলাক উদ্দিন দাবি করেন, সরকারিভাবে ইতিমধ্যে দেশে মহিষ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে উন্নত জাতের বীজ উৎপাদনের জন্য তিনটি মহিষের খামার স্থাপন, গাভি মহিষের কৃত্রিম প্রজনন, উন্নতমানের বীজ সংগ্রহের জন্য উন্নত জাতের মহিষের ষাঁড় পালন, হিমায়িত সিমেন তৈরির জন্য ল্যাবরেটরি স্থাপন এবং মহিষের সংখ্যার অগ্রাধিকারভিত্তিক ১৩টি জেলার ৩৯টি উপজেলায় প্রকল্প এলাকা বিস্তারের মাধ্যমে সেখানে কৃষক ও খামারিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে মহিষের জাত উন্নয়ন ও বংশ বিস্তার ঘটবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দাবি করছেন, সরকারিভাবে নেয়া এ প্রকল্পের আওতায় অল্পসংখ্যক মহিষ ও অল্পসংখ্যক কৃষক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে এর সুফল কতটা পাওয়া যাবে তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কারণ এর আগে গরুর জাত উন্নয়নেও একাধিক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কিন্তু তার কোনো সুফল দেশ পায়নি।
বিশ্বজুড়ে মহিষ
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ৭৪টি দেশে মহিষের বাণিজ্যিক উৎপাদন হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে মাংসের চাহিদার ৩০ শতাংশই জোগান দেয় মহিষ। এশিয়ার সব দেশে মহিষের উৎপাদন বেড়েছে। শুধু বাড়েনি বাংলাদেশে।
খাদ্য ও কৃষি সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বে মোট মহিষের সংখ্যা ১৯ কোটি ৫০ লাখ ৯৮ হাজার ৩১৬টি, যার শতকরা ৯৭ দশমিক ০৯ ভাগ রয়েছে এশিয়া অঞ্চলে। এশিয়া অঞ্চলের মোট মহিষের ৭৭ দশমিক ৭০ ভাগ দক্ষিণ এশিয়ায়, ১২ দশমিক ১৯ ভাগ পূর্ব এশিয়ায়, ৬ দশমিক ৬৭ ভাগ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়, শূন্য দশমিক ৫ ভাগের কম পালন করা হয় মধ্য এবং পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোতে। তবে বিশ্বে বেশি মহিষ আছে এমন শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান প্রথম, যাদের মহিষের সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখ। বাংলাদেশে সে সংখ্যা ৪ লাখের নিচে।
বাংলাদেশের ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও মেঘনা নদীর অববাহিকা এবং উপকূল এলাকা বিশেষভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে মহিষের বিচরণ তুলনামূলক বেশি।
মহিষের মাংসে চর্বি কম
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগসহ (ইউএসডিএ) আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার গবেষণায় দেখা যায়, মহিষের মাংসে কোলেস্টেরলের পরিমাণ মুরগির চেয়ে কম। এতে ক্যালোরি ও প্রয়োজনীয় চর্বিজাতীয় উপাদান গরুর মাংসের তুলনায় অনেক বেশি। প্রোটিনও তুলনামূলক বেশি। গরুর মাংসে চর্বির পরিমাণ ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হলেও মহিষের মাংসে তা মাত্র ২ শতাংশ। অন্যদিকে গরুর তুলনায় মহিষের মাংস কম লাল হলেও মহিষের মাংসে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। উভয় মাংসের স্বাদও প্রায় একই রকম।
বিলুপ্তি ঠেকাতে মহিষ আমদানির চেষ্টা
দেশে মহিষের জাত রক্ষায় বিদেশ থেকে মহিষ আমদানির ইচ্ছা পোষণ করেছে ‘সেভ অ্যান্ড সেফটি ইন্টারন্যাশনাল’ নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।
এই বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মেহেদি হোসেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গত সপ্তাহে একটি চিঠি দিয়ে দেশে মহিষের নানা সংকটের কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি সংকট উত্তরণে ভূমিকা রাখার কথা জানিয়ে চিঠিতে ভারত থেকে ৫০ হাজার মহিষ আমদানির অনুমতি চেয়ে অনাপত্তিপত্র ইস্যুর আবেদন করেন তিনি।
আমদানি নীতি ২০১৫-১৮ অনুযায়ী দেশে মহিষ আমদানি নিষিদ্ধ নয়। তবে আমদানিতে বাধা না থাকলেও ভারত থেকে মহিষ আমদানি করতে গেলে ভারতীয় কাস্টম কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের অনাপত্তি চেয়ে থাকে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেহেদি হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একসময়ের গৃহপালিত মহিষ এখন কোনো গৃহে দেখতে পাবেন না। প্রতিদিনই কমছে মহিষের সংখ্যা। এটি এখন আশঙ্কাজনক পর্যায়ে চলে এসেছে। পাশাপাশি সময় এসেছে প্রাণীটির অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার আগেই এ বিষয়ে সরকারের কার্যকর কিছু পদক্ষেপ নেয়ার।’
তিনি দাবি করেন, জরুরি ভিত্তিতে দুইভাবে মহিষের অস্তিত্ব রক্ষা করা যায়। প্রথমত, মহিষের সংখ্যা দ্রুত বাড়াতে বাণিজ্যিক খামার পর্যায়ের কিছু প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত মহিষ আমদানির অনুমতি দেয়া। দ্বিতীয়ত, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিদেশ থেকে উন্নত প্রজাতির মহিষের বিপুলসংখ্যক হিমায়িত সিমেন আমদানি করে তা সংরক্ষণ এবং কৃষক ও খামারি পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়া।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, প্রতিবছর প্রতি উপজেলায় মহিষের চাহিদা রয়েছে ৪০ হাজার। মোট ৪৯২ উপজেলায় এ হিসাবে গড়ে ২ কোটি মহিষের প্রয়োজন।
তবে দেশে যে পরিমাণ মহিষ পালিত হয়, তা চাহিদার তুলনায় নগণ্য। মহিষের এ স্বল্পতার ফলে এটির চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। বাকি মহিষ যোগান দিতে গিয়ে খামারিরা বিভিন্নভাবে চোরাই পথে ভারত থেকে আসা মহিষের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। এ সমস্যা সমাধান না হলে মহিষ পালন হুমকির মুখে পড়বে।
চিঠিতে বলা হয়, মাংসের চাহিদা পূরণ করার জন্য ভারত থেকে মহিষের মাংস আমদানি করা হচ্ছে, যা বিভিন্নভাবে বিক্রি ও বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে সঠিক, মানসম্মত ও পুষ্টিকর মাংস পাওয়া যাচ্ছে না। যদি সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বৈধভাবে মহিষ আমদানি করা হয়, তাহলে খামারিরা খামার করতে আগ্রহ ফিরে পাবেন এবং সরকার কয়েক শ কোটি টাকার রাজস্ব পাবে। এতে বেকারত্বও অনেকটা কমে আসবে। সার্বিকভাবে সারা দেশে ২ লাখ বেকারের কাজের সুযোগ তৈরি তো হবেই, এতে বিপন্ন হতে যাওয়া মহিষের জাতটিও রক্ষা পাবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি অনুবিভাগ) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মহিষ আমদানি নিষিদ্ধ নয়। তবে কিছু অশুল্ক বাধা রয়েছে। আমরা বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব। নতুন আমদানি নীতিও তৈরি হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে তথ্য নেব। সবকিছু ঠিক থাকলে মহিষ আমদানির ক্ষেত্রে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে অনাপত্তিপত্র ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশ-এর ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হলেন ফারুক আহমেদ।
ট্রাস্টি বোর্ডের ৬৬তম সভায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ফারুক আহমেদ ২৭ এপ্রিল থেকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বাস্থ্য বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত ফারুক আহমেদের উন্নয়ন খাতে রয়েছে বিস্তৃত অভিজ্ঞতা।
তিনি এক সময় ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন এবং ঢাকায় বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ে বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জেনেভাভিত্তিক গ্যাভি, দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (এঅঠও)-এর বোর্ড সদস্য ছিলেন, এছাড়া তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন কমিটিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ফারুক আহমেদ সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি) এন্টারপ্রাইজের পরিচালনা পরিষদের একজন সদস্য। তিনি বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ ওয়ার্কিং গ্রুপেরও একজন সদস্য।
ফারুক আহমেদ ২০২০ সালের ১৬ মার্চ থেকে আরডিআরএস-এর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
আরডিআরএস বিশ্বাস করে, ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে সংস্থাটি দেশজুড়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রাখতে এবং এ সম্পর্কিত কার্যক্রমকে বেগবান করতে সক্ষম হবে। প্রেস রিলিজ
দেশের বাজারে টানা তৃতীয় দিনের মতো কমেছে স্বর্ণের দাম। ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে ৬৩০ টাকা। সে হিসাবে স্বর্ণের ভরি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ টাকা। আগের দিন বুধবার তা ছিল এক লাখ ১৪ হাজার ১৯১ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট থেকে স্বর্ণের নতুন নির্ধারিত দাম কার্যকর হবে।
বাজুস এর আগে চলতি এপ্রিল মাসের ৬, ৮ ও ১৮ তারিখ তিন দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ভালো মানের স্বর্ণের ভরিতে ৬ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল দুই হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়। মাঝে ২০ এপ্রিল ভরিতে ৮৪০ টাকা দাম কমানোর পরদিন ২১ এপ্রিল আবার ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস।
এবার শুরু হয় দাম কমানোর পালা। সবশেষ দাম বাড়ানোর দু’দিন পর ২৩ এপ্রিল ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে তিন হাজার ১৩৮ টাকা ও ২৪ এপ্রিল দু’হাজার ৯৯ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। আর বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ টানা তিন দিনে স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ টাকা।
সোনার দামে এমন উত্থান-পতনের কারণ জানতে চাইলে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন নতুন পদ্ধতি বা পলিসি অনুসরণ করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করি। সেটি হচ্ছে বিশ্ব স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল পলিসি।
‘এতদিন আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করতাম। সেক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে যখন স্বর্ণের দাম কমত তখন আমরা কমাতাম। আর যখন বাড়ত তখন বাড়াতাম।’
তিরি আরও বলেন, ‘এখন আমরা আমাদের স্বর্ণের সবচেয়ে বড় বাজার তাঁতীবাজারের বুলিয়ান মার্কেট ফলো করে দর নির্ধারণ করি। এই বাজারে স্বর্ণের দাম ঘণ্টায় ঘণ্টায় উঠা-নামা করে। সেটা অনুসরণ করে আমরা নতুন দর নির্ধারণ করে থাকি। সেক্ষেত্রে দিনে দু’বারও গোল্ডের দাম বাড়ানো-কমানো হতে পারে।’
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০২৩ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড সুপারিশ করেছে।
ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে এ ডিভিডেন্ড প্রদান করা হবে।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলমের সভাপতিত্বে বুধবার অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদসহ অন্যান্য পরিচালক, ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এবং অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, এফসিএস উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ২৫ জুন ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। লভ্যাংশ প্রাপ্তি এবং সাধারণ সভায় যোগদানের ক্ষেত্রে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১৬ মে।
সভায় অন্যান্য আলোচ্যসূচির সঙ্গে ৩১ মার্চ শেষ হওয়া ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুমোদন করা হয়।
আরও পড়ুন:কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাতে সমগ্র বিশ্ব যখন টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে পতিত হয়, ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে টেনে তুলতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের দরবারে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়।
যদিও একটি শ্রেণি বাজারে নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে বরাবরই সক্রিয় ছিল। তবে দূরদর্শী নেতৃত্বগুণে বিনিয়োগকারীদের অর্থের সুরক্ষা দিতে বারবার বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হতে দেননি অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে অস্বাভাবিক আচরণ করছে পুঁজিবাজার। নিয়ন্ত্রক সংস্থাও এ পরিস্থিতি সামাল দিতে এরই মধ্যে অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে বাজারকে স্থিতিশীল করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এমনকি পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে গতকাল ফ্লোর প্রাইসমুক্ত সব শেয়ারে একদিনের দর কমার নিম্নসীমা (সার্কিট ব্রেকার) ৩ শতাংশে বেঁধে দিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএসইসির সময়োপযোগী এমন পদক্ষেপ বাজারকে আবারও টেনে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সন্দেহভাজন বেশকিছু লেনদেন পরিলক্ষিত হয়েছে বাজারে। এতে বিশেষ একটি শ্রেণি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বাজারকে ম্যানিপুলেট করার চেষ্টা করছে। কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও এতে জড়িত রয়েছে। বাজারে অবাঞ্ছিত বিক্রির আদেশ দিয়ে তারা অস্থিরতা তৈরি করছে। তাছাড়া বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে বাজারে একটা শ্রেণি স্বার্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। ফলে বেশ কিছুদিন ধরে বাজার কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করছে।
এ বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বেশ কিছু ট্রেডার নিজেদের মধ্যে যোগশাজসের মাধ্যমে প্রথমে কম দরে শেয়ার বিক্রি করত। পরে তাদের দেখাদেখি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যখন প্যানিক হয়ে শেয়ার বিক্রি করত তখন তারা আবার কম দরে শেয়ারগুলো কিনে নিত। এভাবে তারা নিজেদের মধ্যে শেয়ার লেনদেন করে প্যানিক সৃষ্টির মাধ্যমে ভালো শেয়ারগুলোর দাম কমাত। এই কাজে তাদের বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও সহযোগিতা করত।’
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শেয়ারের দর কমার কথা নয়। গুটি কয়েক অসাধু ট্রেডারের কারসাজিতে বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে বড় বড় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আল-আমিন বলেন, ‘এক শ্রেণির অসাধু বিনিয়োগকারী চাচ্ছেন বর্তমান কমিশন বিদায় হয়ে নতুন কেউ দায়িত্বে আসুক, যাতে তারা নতুন করে আরও সুযোগ নিতে পারেন। তারাই বিভিন্ন দুর্বল শেয়ারে কারসাজি করে সুবিধা নিচ্ছেন।
‘ফোর্সড সেলের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার তারা কম দরে কিনে নিচ্ছেন। কমিশনের উচিত হবে কারসাজিকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা, যাতে তারা বারবার বাজারকে ম্যানিপুলেট করার সাহস না পায়।’
এদিকে শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক সময়ের টানা পতন ঠেকাতে আবারও শেয়ারের মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে বিএসইসি এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে।
ওই আদেশে বলা হয়, এখন থেকে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর এক দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না। বর্তমানে দরভেদে কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত দরপতন হতে পারে।
দেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে আদেশে জানানো হয়েছে। সার্কিট ব্রেকারের এ সিদ্ধান্ত বুধবার থেকে কার্যকর করতে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘আজকের এই সার্কিট ব্রেকার আরোপ বাজারে কারসাজি রোধ করবে। এটি সন্দেহভাজন লেনদেন বন্ধ করবে। আর এ সিদ্ধান্তের ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও উচ্চ সম্পদশালী একক বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি সক্রিয় হবে বলে আশা করছি।’
তিনি বলেন, ‘অনেক ভালো শেয়ার বর্তমানে আন্ডারভ্যালুতে আছে। এখানে তারা বিনিয়োগ করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।’
সার্কিট ব্রেকার বাজারের দরপতন ফেরাতে ব্যর্থ হলে আবারও ফ্লোর প্রাইস দেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত আছে কি না জানতে চাইলে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আশা করছি, আমাদের বাজারে আর কখনও ফ্লোর প্রাইস দিতে হবে না। শিগগিরই বাজার একটা স্থিতিশীল অবস্থানে ফিরবে।’
আরও পড়ুন:দেশের পুঁজিবাজারে শেয়ারের দরপতনের গতি কমিয়ে আনার চেষ্টার অংশ হিসেবে এবার মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার আগের দিনের শেষ হওয়া দরের ভিত্তিতে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না।
শেয়ারের দাম কমার ক্ষেত্রে আগে মূল্যসীমা ছিল ১০ শতাংশ। তবে ঊর্ধ্বসীমা অর্থাৎ কোনো শেয়ারের দাম বাড়ার সীমা ১০ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বুধবার এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে। বৃহস্পতিবার থেকেই এ আদেশ কার্যকর হবে বলে আদেশে জানানো হয়েছে।
বিএসইসি জানিয়েছে, যেসব শেয়ার ফ্লোর প্রাইসের আওতায় আছে সেসব শেয়ারের ক্ষেত্রে নতুন আদেশ প্রযোজ্য হবে না।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে বাজার সূচকের অবাধ পতন ঠেকাতে এর আগে ২০২২ সালের জুলাই শেষে প্রতিটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দিয়েছিল বিএসইসি। ফ্লোর প্রাইস ছিল ২০২২ সালের ২৮ জুলাই ও তার আগের চার দিনের ক্লোজিং প্রাইসের গড়।
বর্তমানে বেক্সিমকো, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও শাহজীবাজার পাওয়ার কোম্পানির ক্ষেত্রে ওই ফ্লোর প্রাইস কার্যকর রয়েছে।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম একদিনের ব্যবধানে আরেক দফা কমেছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম ভরিতে দু’হাজার ১৩৯ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। বলা হয়েছে,
স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। নতুন নির্ধারিত দাম বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিট থেকে কার্যকর হবে।
বাজুস এর আগের দিন মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়ে ওই দিন থেকে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা নির্ধারণ করে। সে হিসাবে দুদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে কমলো ৫ হাজার ২৭৭ টাকা।
নতুন নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৩৯ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৯৫ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৯ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের ভরি ১ হাজার ৭১৪ টাকা কমিয়ে ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৩৭৭ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা।
অবশ্য স্বর্ণালঙ্কার কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের এর চেয়ে বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সে সঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় নূন্যতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৫৮ টাকা।
স্বর্ণের দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রূপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রূপার ভরি ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের বাজারে গত বছর প্রথমবারের মতো ল্যাপটপ নিয়ে আসে ট্রেন্ডি প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স। ইনবুক ওয়াইটু প্লাস নামের ল্যাপটপটি দিচ্ছে চমৎকার ডিজাইন, শক্তিশালী পারফরম্যান্স ও সাশ্রয়ী দামের প্রতিশ্রুতি। অল্প সময়ের মধ্যেই প্রযুক্তিপ্রেমী শিক্ষার্থী ও এক্সিকিউটিভদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে এ ল্যাপটপ।
দেখে নেওয়া যাক কী আছে ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাস ল্যাপটপটিতে। এর ফিচার, পারফরম্যান্স ও ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাই বা কেমন।
ডিজাইন ও গঠন
স্লিক ও হালকা ডিজাইনের ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাস সহজেই সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। শিক্ষার্থী ও ব্যস্ত এক্সিকিউটিভদের জন্য এ ল্যাপটপ যথার্থ। এর পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক মেটালিক ডিজাইন স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে দেয় প্রিমিয়াম অনুভূতি। স্লিক প্রোফাইল ও প্রাণবন্ত ডিসপ্লের সঙ্গে যুক্ত সরু বেজেল ল্যাপটপটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। ফলে বাজারের একই ধরনের দামি ল্যাপটপের সমকক্ষ হয়ে ওঠে ওয়াইটু প্লাস।
তা ছাড়া এর মসৃণ এজি গ্লাস টাচ প্যানেলের কারণে সিল্কি-স্মুথ ও স্থায়ী টাচের অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। ১.৫ মিলিমিটার কি ট্র্যাভেল এবং ব্যাকলাইটিংযুক্ত রেসপনসিভ কি-বোর্ড টাইপিংকে করে তোলে সহজ ও আরামদায়ক। তাই কম আলোতেও টাইপ করতে কোনো সমস্যা হয় না।
পারফরম্যান্স ও প্রোডাক্টিভিটি
১১তম প্রজন্মের কোর আই৫ প্রসেসর ও ৮ জিবি র্যাম রয়েছে ইনফিনিক্স ওয়াইটু প্লাসে। স্টোরেজের প্রয়োজন মেটাতে এতে আছে ৫১২ জিবি এনভিএমই পিসিআইই এসএসডি। প্রোডাক্টিভিটি সফটওয়্যার, ওয়েব ব্রাউজ করা কিংবা কনটেন্ট স্ট্রিম করাসহ সব ধরনের উচ্চ চাহিদাসম্পন্ন অ্যাপ্লিকেশন চালানো যায় খুব সহজেই। এর ইন্টিগ্রেটেড ইন্টেল ইউএইচডি গ্রাফিকস সাধারণ গেমিং ও মাল্টিমিডিয়া এডিটিংয়ের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যময় গ্রাফিকস পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। উইন্ডোজ ১১ পরিচালিত ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাসের অপারেটিং সিস্টেম সবার পরিচিত ও ব্যবহার করা সহজ।
ডিসপ্লে ও মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতা
উজ্জ্বল রং ও ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের সঙ্গে স্পষ্ট ও পরিষ্কার ভিজ্যুয়াল দেয় ১৫.৬ ইঞ্চি ফুল এইচডি আইপিএস ডিসপ্লেযুক্ত ইনবুক ওয়াইটু প্লাস। ৮৫ শতাংশ স্ক্রিন-টু-বডি রেশিওর সঙ্গে চমৎকার মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতার জন্য ডিসপ্লেটি দারুণ। কাজেই আপনার প্রিয় নেটফ্লিক্স সিরিজ দেখা কিংবা ফটো এডিট করা— সবই হবে স্বাচ্ছন্দ্যে।
ল্যাপটপটিতে আছে ডুয়েল এলইডি ফ্ল্যাশ ও এআই নয়েজ ক্যান্সেলেশন প্রযুক্তিযুক্ত ১ হাজার ৮০ পিক্সেলের ফুল এইচডি+ ক্যামেরা। এর ফলে ভিডিও কলের অভিজ্ঞতা হবে আরও উন্নত।
ব্যাটারি লাইফ ও চার্জিং
ইনবুক ওয়াইটু প্লাসের ৫০ ওয়াট-আওয়ার ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কোনো চার্জ ছাড়াই প্রতিদিনের কাজে আট ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাকআপ দিতে সক্ষম। পাশাপাশি এর ৪৫ ওয়াট টাইপ-সি পোর্টযুক্ত চার্জারে ডিভাইসটি দ্রুত ও সহজেই চার্জ করা যায়। ফলে ভারী চার্জার বহনের প্রয়োজন হয় না।
দাম
ল্যাপটপটির বর্তমান বাজারমূল্য ৫৮ হাজার ৯৯০ টাকা। অনুমোদিত ইনফিনিক্স রিটেইলার থেকে ল্যাপটপটি কেনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য