শুল্ক কমেছে। আমদানি বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। সরকারি গুদামে মজুত ১৬ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে গেছে। এরপরও প্রধান খাদ্যপণ্য চালের মূল্য বৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না।
সরকারি হিসাবেই বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাঝারি মানের চাল বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকা কেজিতে। আর সরু চাল (নাজিরশাইল ও মিনিকেট) বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকা কেজি দরে।
করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে চালের দাম কমাতে সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও কার্যত সুফল মেলেনি। শেষ চেষ্টা হিসেবে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আগস্টে ৪১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১৬ লাখ ৯৩ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার।
আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। সেই সঙ্গে চলতে থাকে সরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি। এরপরও দাম কমার কোনো বালাই নেই; উল্টো সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে এক-দেড় টাকা করে বেড়ে চলেছে চালের দাম।
আগামীতে চালের দাম কমার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না চাল ব্যবসায়ী, মিল মালিকরাও। তারা আশ্বস্ত করেছেন, যাদের চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে, তারা যদি ঠিকঠাকমতো আমদানি করে, তাহলে দাম আর খুব একটা বাড়বে না।
খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, ‘আমরা আশাবাদী যে চালের দাম কমে আসবে। আমন মৌসুমে ধান কাটার আগেই আমদানি প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়া হবে, যাতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’
মজুত পরিস্থিতি
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারের গুদামগুলোতে খাদ্যশস্যের মজুত ছিল ১৮ লাখ ২১ হাজার টন। এর মধ্যে চাল ১৬ লাখ টন ও গম ১ লাখ ৬৪ হাজার টন। আর ধান ৮৮ লাখ টন।
চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত ১২ আগস্ট পণ্যটির আমদানির শুল্ক কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চালের আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়।
এরপর প্রথম দফায় গত ১৭ আগস্ট ৪১ প্রতিষ্ঠানকে ৪ লাখ ১০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এরপর ১৮ আগস্ট ৬৯ প্রতিষ্ঠানকে ৪ লাখ ১৮ হাজার টন, ২১ আগস্ট ৯১ প্রতিষ্ঠানকে ৩ লাখ ৯১ হাজার টন, ২২ আগস্ট ৭৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ২২ হাজার টন, ২৩ আগস্ট ৯৪ হাজার টনের জন্য ৪১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে, ২৪ আগস্ট ৫৭ হাজার টনের জন্য ৩৪ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে এবং সর্বশেষ ৩১ আগস্ট ৭৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ১ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়।
সব মিলিয়ে এ দফায় ৪১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১৬ লাখ ৯৩ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল রয়েছে ১৪ লাখ ৮৩ হাজার টন। বাকি ২ লাখ ১০ হাজার টন আতপ চাল।
এ চাল আমদানি করে তা আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাজারে বিক্রি করার শর্ত দেয়া হয়েছে আমদানিকারকদের।
৭ দিনে বেসরকারি পর্যায়ে ১৬ হাজার টন আমদানি
অনুমতির পর বেসরকারি উদ্যোগে শুরু হয় চাল আমদানি। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) বেসরকারি পর্যায়ে কোনো চাল আমদানি হয়নি। চলতি মাসের ৭ দিনে (১ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর) ১৬ হাজার ২৪০ টন চাল আমদানি করা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৩ লাখ ১৮ হাজার ৩০ লাখ টন চাল আমদানি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৬৪০ টন সরকার সরাসরি আমদানি করে গুদামগুলোতে মজুত করেছে। বাকি ১৬ হাজার ২৪০ টন বেসরকারি উদ্যোগে আমদানি করা হয়েছে।
গত ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে (১ জুলাই থেকে ৭ সেপ্টেম্বর) মোট ৭ লাখ ৮৬ হাজার ২৮০ টন চাল আমদানি হয়েছিল, যার পুরোটাই সরকারি পর্যায়ে। ওই সময়ে বেসরকারি উদ্যোগে কোনো চাল আমদানি হয়নি।
আন্তর্জাতিক বাজারে এখন প্রতি টন সিদ্ধ চাল ৩৫৫ থেকে ৩৮৫ ডলারে এবং আতপ চাল ৩৬১ থেকে ৩৯৫ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। গত এক বছর ধরেই এ দাম। ভারত, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে চাল আমদানি করে বাংলাদেশ। বেশির ভাগই আসে ভারত থেকে।
এবার বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আনুমানিক প্রায় ২ কোটি টনেরও বেশি ধান কাটা হয়েছে। তবুও চালের দাম কমেনি।
বোরো মৌসুমের আগে ২০২১ সালের শুরু থেকেই চালের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারি গুদামে মজুত এবং বাজারে সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারি গুদামে চালের মজুত ছিল মাত্র ৫ লাখ ২৫ হাজার টন, যা ছিল অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে কম।
দেশে সরকারি চালের গুদামগুলোতে মজুতের ক্ষমতা প্রায় ২৫ লাখ টন। এসব গুদামে ন্যূনতম ১২ থেকে ১৫ লাখ টনের মজুত রাখার নিয়ম রয়েছে। গত বছরও একই সময়ে ১৩ লাখ টনের বেশি চাল মজুত ছিল।
সরকারের মজুত সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসায় গত ফেব্রুয়ারিতে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম বেড়ে ৫০ টাকায় ওঠে। সরকার স্থানীয় বাজার থেকে ৯ লাখ ৩২ হাজার টন বোরো ও ৩ লাখ ৫০ হাজার টন অন্য জাতের চাল সংগ্রহ করে মজুত বাড়ালেও বাজারে দাম আর কমেনি।
সেসময় বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হলেও শুল্ক বেশি হওয়ায় খুব বেশি চাল আমদানি করেননি ব্যবসায়ীরা।
গত ২৪ আগস্ট পর্যন্ত সরকারের গুদামগুলোতে মোট ১৭ লাখ ২৫ হাজার টন খাদ্য মজুত ছিল। এর মধ্যে ১৪ লাখ ৯ হাজার টন চাল এবং বাকিটা ধান, গম ও আটা।
গত বছরের আগস্ট শেষে এই মজুতের পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ১৪ হাজার টন। এর মধ্যে ৯ লাখ ৮৫ হাজার টন চাল ছিল।
দাম কমার সম্ভাবনা নেই
সরকারের গুদামগুলোতে প্রচুর চাল মজুত থাকার পরও দাম কেন কমছে না, এমন প্রশ্ন করা হয় বাংলাদেশ চাল ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি জাকির হোসেন রনির কাছে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কী বেসরকারি পর্যায়ে আসলে খুব একটা চাল আমদানি হচ্ছে না। আগেরবার যখন ব্যবসায়ীদের কোটা নির্ধারণ করে দিয়ে আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছিল, সেই কোটা কিন্তু ব্যবসায়ীরা পূরণ করেনি। এবার কী হবে, জানি না।’
জাকির হোসেন বলেন, ‘আসলে ব্যবসায়ীরা চাল আমদানি করবেন কি না, তা নিয়ে দ্বিধায় আছেন। অক্টোবরের শেষের দিকে আমন ধান উঠবে তখন যদি দাম কমে যায়, তাহলে তাদের লোকসান হবে। সে ভয়ে তারা আমদানি করতে সাহস পাচ্ছেন না।
‘তবে যেহেতু সরকারের কাছে প্রচুর চাল মজুত আছে, সে কারণে চালের দাম আর বাড়ার কোনো আশঙ্কা নেই। বর্তমানে যে দাম আছে, আগামী কয়েক মাস সে দামই থাকবে বলে আমার মনে হয়।’
একই প্রশ্নে বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম খোরশেদ আলম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুল্ক কমানোর পর এখনও চাল আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক লাগে। এত বেশি শুল্ক দিয়ে চাল আমদানি করলে ব্যবসায়ীরা লাভের মুখ দেখতে পারবেন না; লোকসান দিতে হবে। সে কারণেই বেসরকারি উদ্যোগে চাল আমদানি করতে আগ্রহ দেখান না ব্যবসায়ীরা।’
চাল আমদানিতে শুল্ক আরও কমানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে আমার পরামর্শ হচ্ছে, চালের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনুন। তাহলে দেখবেন প্রচুর চাল আমদানি হবে। চালকল মালিকরাও তাদের মজুত করা চাল বাজারে ছেড়ে দেবেন। তখন চালের দাম এমনিতেই কমে আসবে।
‘এভাবে ২৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে চাল আমদানির অনুমতি দিয়ে উল্টো চালকল মালিকদেরই লাভের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে বলে আমি মনে করি। কেননা সরকারিভাবে যে চাল আমদানি করা হচ্ছে, তা সরকারের গুদামে চলে যাচ্ছে, বাজারে আসছে না। দামে প্রভাব পড়ছে না। সে সুযোগে মিলমালিকরা তাদের কাছে থাকা চাল বাজারে না বিক্রি করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে আরও দাম বাড়িয়ে দিয়ে তারপর বিক্রি করছে।’
খোরশেদ আলম জানান, মিলমালিকরা আগেই ধান কিনে মজুত করে রাখেন। এ কারণে চালের দাম বাড়লেও কৃষক তার মূল্য পান না। ধান চাষে খরচের তুলনায় কম দামে বিক্রি করতে হয়। তাই কৃষক ধান চাষ থেকে সরে আসছেন। সরকার যে ধান সংগ্রহ করে সেখানে সবাই অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না। তাই কম দামে মিল মালিকদের কাছে বিক্রি করতে হয়।
মানুষকে আর কত দুর্ভোগ পোহাতে হবে?
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক গবেষণা পরিচালক কৃষি অর্থনীতিবিদ এম আসাদুজ্জামানের মতে, চালের দাম না কমায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন চাল ব্যবসায়ী এবং চালকল মালিকরা। আবার তাদেরই চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। তারা দ্রুত চাল আমদানি করলে দাম কমে যেতে পারে। সে কারণেই তারা আমদানিতে গড়িমসি করেন।
তিনি বলেন, ‘এরা সবাই মিলে একটা বড় সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। দীর্ঘদিন ধরে চলছে এই সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি সরকার, দেশের মানুষ। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া ছাড়া কোনোভাবেই চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে নামনো যাবে না।’
আক্ষেপ করে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমার খুবই অবাক লাগে, মহামারির এই সংকটকালেও চালের দাম এক পয়সা কমল না। অথচ ধান উৎপাদন হয়েছে পর্যাপ্ত; মজুত আছে প্রচুর। মানুষকে আর কত দুর্ভোগ পোহাতে হবে?’
আরও পড়ুন:এপনিক ফাউন্ডেশনের আইএসআইএফ এশিয়া প্রোগ্রামের মর্যাদাপূর্ণ অনুদান অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা খাতে এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছে টিম ফিনিক্স গ্রুপ। এই অনুদানের সহায়তায় সংস্থাটি বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা খাতকে রূপান্তরিত করার এক অগ্রণী উদ্যোগ ‘সিকিউরনেট বিডি’ (SecureNet BD) চালু করতে যাচ্ছে।
এই প্রকল্পের আওতায় দেশে প্রথমবারের মতো গড়ে উঠবে সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার অব এক্সিলেন্স (CCoE) এবং কমিউনিটি-নির্ভর সিকিউরিটি অপারেশনস সেন্টার (SOC) / কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (CSIRT), যা হবে দেশের ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
বাংলাদেশে দ্রুত ডিজিটাল রূপান্তরের সঙ্গে সঙ্গে সাইবার হামলা এবং অনলাইন নিরাপত্তা হুমকির সংখ্যা ও জটিলতা অভূতপূর্ব হারে বাড়ছে। বিশেষত বড় শহরের বাইরে থাকা প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং কমিউনিটিগুলোতে নিরাপত্তা অবকাঠামো বা প্রশিক্ষণের সুযোগ সীমিত। এই প্রেক্ষাপটে সিকিউরনেট বিডি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহযোগিতামূলক এবং কমিউনিটি-চালিত সাইবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশব্যাপী ১,০০০ এরও বেশি ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যার মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণ কমপক্ষে ৩০% নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া তৈরি হবে আধুনিক সাইবার রেঞ্জ (Cyber Range), যা হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ, স্থানীয় গবেষণা এবং বাস্তব সাইবার প্রতিরক্ষা অনুশীলনের সুযোগ সৃষ্টি করবে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে চালু হবে ফেলোশিপ ও মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম, যা ভবিষ্যতের সাইবার নিরাপত্তা নেতৃত্ব গড়ে তুলবে। পাশাপাশি কমিউনিটি এসওসি/সিএসআইআরটি একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, অলাভজনক সংস্থা এবং স্থানীয় সংগঠনগুলোকে সাইবার হুমকি মোকাবিলায় সহায়তা করবে।
টিম ফিনিক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ অব রিসার্চ এ. এস. এম. শামীম রেজা বলেন, “এই প্রকল্প শুধু প্রযুক্তি নিয়ে নয়, বরং মানুষের ক্ষমতায়নের গল্প। বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ ও কমিউনিটি-চালিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সিকিউরনেট বিডি সাইবার নিরাপত্তাকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং বাংলাদেশের বাস্তবতার সঙ্গে খাপ সামঞ্জস্যপূর্ণ করবে। আমাদের লক্ষ্য, ভবিষ্যৎমুখী কর্মশক্তি তৈরি করা এবং বাংলাদেশকে আঞ্চলিক সাইবার উদ্ভাবনের কেন্দ্রে রূপান্তর করা।”
সিকিউরনেট বিডি–এর এই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও প্রগতিশীল উদ্যোগ বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং দেশটিকে দক্ষিণ এশিয়ায় কমিউনিটি-চালিত সাইবার নিরাপত্তার নেতৃত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী।
বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার দপ্তরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী বলেন, নেপালে ১১টি জুট মিল রয়েছে। নেপালের জুট মিলগুলো তাদের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট আমদানির ওপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ করায় মিলগুলো কিছুটা সমস্যায় পড়েছে। এ সময় তিনি বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট রপ্তানির অনুমতি শিথিল করার আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে বাংলাদেশের পাটপণ্য ও কাঁচাপাটের চাহিদা রয়েছে। কাঁচাপাট রপ্তানি না করে বাংলাদেশ সেমি-ফিনিশড (আধা-প্রক্রিয়াজাত) পাটপণ্য রপ্তানি করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ উচ্চমানের ও পরিবেশবান্ধব সেমি-ফিনিশড পাটপণ্য উৎপাদন করছে। নেপাল এই পণ্যগুলো আমদানি করলে দুই দেশের বাণিজ্য ভলিউম বাড়বে এবং উভয় দেশই লাভবান হবে।
চীনা কোম্পানি অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেড চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে অবস্থিত বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে উচ্চ মানসম্পন্ন গার্মেন্ট উৎপাদনকারী একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে ১৯.৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে।
এ লক্ষ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেপজা কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেনের উপস্থিতিতে বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবীর এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল আহসান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বেপজার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এই প্রতিষ্ঠানটি বার্ষিক ৩০ লাখ পিস স্কি, স্নো স্পোর্টস, হান্টিং ও মোটর রাইডার গিয়ার, ইনসুলেটেড শীতকালীন কোট, ডাউন জ্যাকেট ও প্যান্ট, রেইন গিয়ার, ওয়ার্কওয়্যার, রানিংওয়্যার, ইয়োগাওয়্যার, এবং ওয়াটার স্পোর্টসওয়্যার তৈরি করবে।
প্রতিষ্ঠানটিতে ২ হাজার ৭৮৮ জন বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলকে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে ধন্যবাদ জানান এবং সুষ্ঠু ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডসহ এ পর্যন্ত মোট ৪৯টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যাদের মোট প্রস্তাবিত বিনিয়োগ প্রায় ১.০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৬টি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে। ক্রমাগত উন্নয়ন ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কারণে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বেপজার সদস্য (প্রকৌশল) আবদুল্লাহ আল মামুন, সদস্য (অর্থ) আ ন ম ফয়জুল হক, বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ এনামুল হক, নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) এ.এস.এম. আনোয়ার পারভেজ এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তা, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত ও বিনিয়োগে ধীরগতির প্রবণতার মধ্যেও বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে নিট এফডিআই প্রবাহ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংস্থাটির মতে, এই প্রবৃদ্ধি প্রমাণ করে বিদেশি কোম্পানিগুলোর আস্থা বাংলাদেশের বাজারে বাড়ছে এবং তারা ব্যবসা সম্প্রসারণে আরও বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে কার্যরত লাভজনক বিদেশি কোম্পানিগুলো তাদের মুনাফার একটি বড় অংশ পুনরায় বিনিয়োগ করছে। পুনঃবিনিয়োগের পরিমাণও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু মুনাফা স্থানান্তর করছে না, বরং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণের সম্ভাবনা দেখেই নতুন বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে।
বিশ্বব্যাপী নতুন মূলধনের (গ্রিনফিল্ড এফডিআই) প্রবাহ কমলেও বাংলাদেশে এ খাতে রেকর্ড হয়েছে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। পাশাপাশি বিদেশি মূল কোম্পানিগুলোর স্থানীয় ইউনিটগুলোতে অর্থায়ন বা ইন্টার-কোম্পানি ঋণের হার এক বছরে বেড়েছে ২২৯ শতাংশ।
শুধু ছয় মাস নয়, পুরো অর্থবছরের চিত্রও আশাব্যঞ্জক। জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫ অর্থবছরে নিট এফডিআই প্রবাহ আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৯ শতাংশেরও বেশি।
এদিকে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে দেশের পাঁচটি বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থা- বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বিএইচটিপিএ) ও বিসিকের মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোম্পানির মোট ১ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রস্তাবিত বিনিয়োগ। এর মধ্যে ৬৫ কোটি ডলারেরও বেশি এসেছে সরাসরি বিদেশি কোম্পানির পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার, ২০২৩ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। আর ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেই এ বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও এই প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ পরিবেশের প্রতি বিদেশিদের আস্থার প্রতিফলন। তাদের মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোতে আরও বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পণ্য রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি কমেছে ২০ শতাংশ। আর গত চার মাসে এই পতনের হার প্রায় ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়া নতুন শুল্ক কাঠামোর পুরোপুরি প্রভাব পড়েছে সেপ্টেম্বর মাসে। এই শুল্কের মধ্যে রয়েছে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধে ভারতের অস্বীকৃতির কারণে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ জরিমানা।
দিল্লিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) সহ-প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, শুল্ক বৃদ্ধির পর যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাজারে পরিণত হয়েছে।
জিটিআরআইয়ের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, শ্রমনির্ভর খাতগুলোর মধ্যে বস্ত্র, রত্ন ও গয়না, প্রকৌশলজাত পণ্য এবং রাসায়নিক খাত সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে। এসব খাতে রফতানি আয় ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ছিল ৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। সেপ্টেম্বর নাগাদ তা নেমে আসে ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস পায়। পর পর চার মাস ধরে রপ্তানি কমতে থাকায় ভারতের বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার, যা গত ১৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি কিছুটা ভারসাম্য রক্ষা করেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দীর্ঘ বিরতির পর গত মাসে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনা আবার শুরু হয়। চলমান আলোচনার লক্ষ্য আগামী মাসের মধ্যে একটি প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করা। একটি ভারতীয় প্রতিনিধি দল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছে।
বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে। ওয়াশিংটন মনে করছে, এর মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ক্রেমলিনের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানো সম্ভব হবে।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা বাড়াতে আলোচনা চলছে। বর্তমান মার্কিন প্রশাসন এই সহযোগিতা গভীর করতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
অবশ্য কৃষি ও দুগ্ধ খাতের বাজার প্রবেশাধিকার নিয়ে এখনও বড় ধরনের মতপার্থক্য রয়ে গেছে। বহু বছর ধরে ওয়াশিংটন ভারতের কৃষি খাতকে সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে দেখছে। কিন্তু নয়াদিল্লি খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষকের জীবিকা ও অভ্যন্তরীণ বাজার রক্ষার কারণ দেখিয়ে এই খাতকে রক্ষা করে আসছে।
কিছু দিন আগেও যুক্তরাষ্ট্রই ছিল ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। ২০২৪ সালে দুই দেশের পারস্পরিক বাণিজ্য দাঁড়িয়েছিল ১৯০ বিলিয়ন ডলারে। ট্রাম্প ও মোদি দুজনই এই অঙ্ক ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক শুল্কযুদ্ধ সেই লক্ষ্যকে এখন গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
সর্বস্তরের জনগণকে ব্যাংকিং সেবা প্রদানের লক্ষ্যে শরীয়াহ্ ভিত্তিক ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি’র রয়েছে বিভিন্ন মেয়াদি আকর্ষণীয় বিশেষ আমানত প্রকল্প। পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন ব্যাংকের যে কোন একটি আমানত প্রকল্প বেছে নেওয়ার জন্য ১৭৪ টি শাখা ও উপশাখায় আপনাকে স্বাগতম।
দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি ‘ইন্টিগ্রিটি ও এথিকস প্র্যাকটিস ইন ব্যাংকিং’ শীর্ষক এক গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালার আয়োজন করে। সম্প্রতি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে লার্নিং অ্যান্ড ট্যালেন্ট ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে (LTDC) এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় ।
অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ আবু জাফর, এবং অনুষ্ঠানে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য প্রদান করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান ডাঃ আরিফুর রহমান। তিনি টেকসই ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সততা ও নৈতিকতার গুরুত্বের ওপর বিশেষভাবে আলোকপাত করেন।
কর্মশালার মূল লক্ষ্য ছিল ব্যাংকিং কার্যক্রমের প্রতিটি স্তরে নৈতিক মান, স্বচ্ছতা এবং উত্তম শাসননীতি প্রচার ও বাস্তবায়ন করা। প্রধান কার্যালয় এবং বিভিন্ন শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন, যেখানে দৈনন্দিন ব্যাংকিং কার্যক্রমে সততা ও নৈতিক মূল্যবোধ বজায় রাখার বাস্তবসম্মত দিকগুলো আলোচিত হয়।
প্রযুক্তিগত অধিবেশনগুলো পরিচালনা করেন দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি স্বতন্ত্র পরিচালক এম. নুরুল আলম, এফসিএস, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর যুগ্ম পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান খান, যুগ্ন পরিচালক, এবং বাংলালিংকের কমপ্লায়েন্স ডিরেক্টর মোহাম্মদ আদিল হোসেন, সিসিইপি। তাঁরা ব্যাংকিং খাতে নৈতিক সংস্কৃতি শক্তিশালীকরণ, নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধি মেনে চলা এবং দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণ বিষয়ে মূল্যবান মতামত ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
মন্তব্য