রাজধানীর মালিবাগের ঢাকা ক্যাডেট স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী মালিহা। এই স্কুলে আর যাওয়া হবে না তার। কারণ, স্কুলটি বন্ধ হয়ে গেছে করোনার কারণে।
১৭ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সময় মালিহা অনলাইনেও ক্লাস করেনি। পড়াশোনা করেছে বাসাতেই। এবার তাকে নতুন স্কুলে ভর্তি হতে হবে।
এখানেই জটিলতা। ঢাকা ক্যাডেট যেখানে ছিল, তার এক থেকে দেড় কিলোমিটারের মধ্যে আরও তিনটি স্কুল ছিল, যার প্রতিটিই বন্ধ হয়ে গেছে।
তাহলে মেয়ের পড়াশোনার কী হবে?
মা আফরোজা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাধ্য হয়েছি মেনে নিতে। কী করব বলেন। বছরের বাকি তিনমাস আর ওকে কোনো স্কুলে দিব না। নতুন বছরে অন্য কোথাও ভর্তি করব।’
তবে এই অন্য কোথাও ভর্তি করাটা যে সহজ হবে না, সেই বিষয়টি আফরোজা জানেন না। তার এলাকার চারটি স্কুলই বন্ধ। রাজধানীতে শিশুদেরকে দূরের স্কুলে যাওয়া-আসা করা বেশ কষ্টকর বলে বাসার পাশের স্কুলেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন অভিভাবকরা। তাই স্কুলের পাশেই সাধারণত বাসা নিয়ে থাকেন। ফলে মালিহার পরিবারকেও এমনটি করতে হতে পারে যদি না এই চার স্কুলের একটি চালু না হয়।
মালিবাগের এই চারটি স্কুলের মতো সারাদেশে প্রায় ১৫ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা জানাচ্ছে এই স্কুলগুলোর সমিতি বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাদের হিসেবে প্রতি চারটি স্কুলের একটির আর কোনো অস্তিত্ব নেই।
করোনার কারণে রাজধানীর মালিবাগের এই কিন্ডারগার্টেন স্কুলটির (ঢাকা ক্যাডেট স্কুল) আশপাশের দেড় কিলোমিটারে মধ্যে আরও তিনটি স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে এ এলাকার মতো শহর অঞ্চলের হাজারো শিশুদের স্কুলে যাওয়া অনিশ্চতায় পড়তে পারে। ছবি: নিউজবাংলা
যখন স্কুল বন্ধ হয়, মাসের পর মাস খরচ মিটিয়ে সঞ্চয় বা জমিজমা বিক্রি করেও পাওনা পরিশোধ করেছেন মালিকরা। নতুন করে স্কুল চালুর সঙ্গতি নেই বহুজনের।
কিন্ডারগার্টেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন তথ্য বলছে, সারাদেশে ৬০ হাজারের বেশি স্কুল ছিল করোনার আগে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী ছিলেন ১২ লাখ। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৮০ লাখ।
সারাদেশে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা পৌনে তিন কোটির কিছু বেশি। এদের মধ্যে সরকারি স্কুলে পড়ে দুই কোটির কাছাকাছি। এদের সিংহভাগই মফস্বল ও গ্রাম এলাকার। আর বড় শহরের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই এখন কিন্ডারগার্টেনে পড়ে। আর এরাই এখন স্কুলে ভর্তি হওয়ার সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে।
রাজধানীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে হাতে গোণা কয়েকটি। আর তাতে নিম্ন আয়ের মানুষদের সন্তানরাই মূলত ভর্তি হয়। সেখানে পরিবেশ, অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে মধ্যবিত্তরা তাদের সন্তানদেরকে পাঠাতে আগ্রহী হন না।
ফলে সারা দেশে প্রাথমিকে ভর্তির আসন হিসেব করলেই শিশুদের পড়াশোনার সংকট বোঝা যাবে না। শহর এলাকায় হাজার হাজার কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে লাখ লাখ শিশুর ভর্তিই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক এই বিষয়ে কথাই বলতে চান না। এর কারণ হিসেবে তিনি কিন্ডারগার্টেনের সরকারি নথিভুক্ত না থাকার কথা জানান।
তাহলে লাখ লাখ শিশুর ভর্তির সংকটকে আপনারা কি গুরুত্ব দিচ্ছেন না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কিন্ডারগার্টেনগুলোর কোনো সরকারি অনুমোদন নেই। তারপরও নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় থাকবে।’
আবার শিক্ষার্থীরা খুব একটা স্কুলে আসবে না বলে মনে করেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন এর মহাসচিব জি এম জাহাঙ্গীর কবির রানা।
তিনি বলেন, ‘স্কুল-কলেজ খোলার ঘোষণার পর আমরা অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। কিন্তু তেমন আশানুরূপ ফল পাচ্ছি না। কেউ বলছে ছেলেকে মাদ্রাসায় ভর্তি করেছেন, কেউবা সপরিবারে গ্রামে চলে গেছেন। আর আমাদের অনেক শিক্ষকও পেশা বদল করেছে।’
তিনি বলেন, ‘যেসব কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে সেসব স্কুলের শিক্ষার্থীরা চাইলে পাশের স্কুলে মাইগ্রেশন করতে পারে। তবে আমার মনে হয় না খুব বেশি শিক্ষার্থী মাইগ্রেশন করবে। কেননা তাহলে নতুন স্কুলে পুরো বছরের বেতন দিতে হবে।’
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, ‘এ বছরের বাকি কয়েকমাাসের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলায় এখন আমরা আরও বিপদে পড়েছি। কেননা অধিকাংশ অভিভাবকই বাকি কয়েক মাসের জন্য শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠাবে না। আর যেসব কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে তাদের শিক্ষার্থীরা যাতে যদি অন্য কিন্ডারগার্টেন এ ভর্তি হতে পারে সে বিষয়ে সভা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা নতুন বছরকে মাথায় রেখেই আবার শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সংগ্রহে কাজ করছি।’
কিন্ডারগার্টেন ও সমমান স্কুল রক্ষা জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ আবদুল অদুদ বলেন, ‘করোনার কারণে ১৭ মাস বন্ধ শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আমরা কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়গুলোর দৈন্যতা নিরসনে সরকারের কাছে ১০ হাজার কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা চেয়েছি। মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে আমাদের প্রস্তাব তোলা হয়েছে ও বিশেষজ্ঞ কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তবে আমারা এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি আশ্বাস পাইনি।’
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়ার পর ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় বাড়ানো হয় ছুটির মেয়াদ। সর্বশেষ ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়। এই ছুটি শেষে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলবে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন:৪৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ভাইভা শুরু হবে আগামী ৮ জুলাই থেকে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পিএসসি।
এবার চাকরি প্রত্যাশীরা তাদের আবেদনের পছন্দক্রম পরিবর্তন করতে পারবেন কিংবা আবেদনের ক্রমও বহাল রাখতে পারবেন সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করার আগে। তবে পছন্দক্রম পরিবর্তনের ফরমটি তাৎক্ষণিক চাকরিপ্রার্থীদের সরাসরি হাতে সরবরাহ করা হবে এবং তা পূরণ করে সাক্ষাৎকার বোর্ডে জমা দিতে হবে।
৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় সাময়কিভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ ক্যাডারে ২০৬ জন, সাধারণ ও কারিগরি /পেশাগত উভয় ক্যাডারে ১৮১ জন এবং শুধু কারিগরি/পেশাগত ক্যারের পদগুলোর ৬৫ জনসহ মোট ৪৫২ জন প্রার্থীর সাক্ষাৎকারের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে, যা কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশে চীন দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে চীন সফরে যোগদান করবেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। আগামী ৬ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত (ভ্রমণ সময় ব্যতীত) মোট ৬ দিনের সফরে যাচ্ছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত পহেলা জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এএসএম কাশেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভ্রমণ সংক্রান্ত সকল খরচ বাংলাদেশে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন দূতাবাস বহন করবেন। এতে বাংলাদেশ সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আর্থিক সম্পৃক্ততা থাকবেন না। মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে কর্মস্থলে যোগদান করবেন। ভ্রমণের একটি প্রতিবেদন তাঁর প্রত্যাবর্তনের ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। এছাড়া উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইয়াকুব আলী উপাচার্যের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন।
ইবি উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) গোলাম মাহফুজ মঞ্জু জানান, উপাচার্যের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৬ তারিখে উপাচার্যের সফরে যাবেন। তিনি উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির চেয়ারম্যানের অধীনে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যাচ্ছেন।
ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানান, ‘উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির অধীনে একটা বড় প্রতিনিধিদল নিয়ে চীন সফরে যাওয়া হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাস্ট) উপাচার্যগণ সঙ্গে থাকবেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হলো “ক্লাব ফেস্ট–২০২৫”। বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদ্প্তর কর্তৃক আয়োজিত ২দিন ব্যাপী (১-২জুলাই, ২০২৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে উক্ত ক্লাব ফেস্ট অনুষ্ঠিত হয়। সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত ক্লাব ফেস্ট চলে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
উৎসবটি উদ্বোধন করেন বুয়েটের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মো. বদরুজ্জামান। এসময় উপস্থিত ছিলেন মাননীয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী ও ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. মাসুদ।
উদ্বোধনী দিনে উপাচার্য মহোদয় অংশগ্রহণকারী ৩৩টি ক্লাবের প্রতিটি স্টল পরিদর্শন করেন এবং ক্লাব প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তিনি বলনে, “বুয়েটের শিক্ষার্থীরা শুধু অ্যাকাডেমিক নয়, সহশিক্ষা ক্ষেত্রেও দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। এ ধরনের আয়োজন তাদের নেতৃত্ব, সৃজনশীলতা এবং মানবকি গুণাবলিকে বিকশিত করতে সহায়ক ভূমকিা রাখে।”
ক্লাব ফেস্টে প্রতিটি ক্লাব তাদের অ্যাকাডেমিক, সামাজিক, প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের প্রর্দশনী উপস্থাপন করে। শিক্ষার্থীরা চিত্রাঙ্কন, ফান গেমস, সচেতনতামূলক আয়োজন এবং নতুন সদস্য সংগ্রহের মাধ্যমে ক্লাব কার্যক্রমে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করে।
শিক্ষার্থীদের পদচারণা, ক্লাব সদস্যদের উদ্যম এবং দর্শনার্থীদের আগ্রহ এই আয়োজনকে প্রাণবন্ত করে তোলে। আয়োজকরা জানান, প্রতি বছর ক্লাব ফেস্টে আয়োজনের মাধ্যমে বুয়েটের সহশিক্ষা কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত ও গঠনমূলক হয়ে উঠছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় সরকার স্বীকৃত প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থী এবং ডিএনসিসিতে কর্মরত অসচ্ছল চাকরিজীবীদের সন্তানের মধ্যে শিক্ষা ও মেধাবী বৃত্তির অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
রবিবার গুলশান নগর ভবনে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘একটি সুস্থ, ন্যায্য ও টেকসই শহর গড়ে তুলতে হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুশিক্ষিত হিসেবে গড়ে তোলা অপরিহার্য। ডিএনসিসি শিক্ষার্থীদের পাশে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এই সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, শুধু অবকাঠামো নয়, সামাজিক কল্যাণ ও মানবসম্পদ উন্নয়নেও ডিএনসিসি আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহায়তা প্রদান তারই অংশ। এই কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশের পরিবেশ তৈরি করবে। একেবারে প্রান্তিক পর্যায় থেকে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হবে—এটাই আমাদের অঙ্গীকার।
ডিএনসিসির শিক্ষা ও মেধাবী বৃত্তি নীতিমালা ২০১৭ অনুযায়ী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ঊনসত্তর জন শিক্ষার্থীকে মোট ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৮০০ টাকা বৃত্তি দেওয়া হয়।
বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ডিএনসিসির এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধি, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
জনদুভোর্গ এড়াতে চলমান এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা উপলক্ষে পরীক্ষার্থীদের সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কেন্দ্র চত্বরে প্রবেশের জন্য জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। তবে পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ-সংক্রান্ত আগে সব নির্দেশনা বহাল থাকবে বলেও জানানো হয়।
গতকাল শনিবার ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দারের সই করা জরুরি স্মারকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলমান এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৫-এর পরীক্ষা কেন্দ্রসমূহের আশপাশের যানজট ও জনদুভোর্গ লাঘবের লক্ষ্যে কেবলমাত্র পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র চত্বরে সকাল ৮.৩০ থেকে প্রবেশের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
তবে পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ সংক্রান্ত পূর্বের নির্দেশনা বহাল থাকবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বোর্ডের আওতাধীন এইচএসসি পরীক্ষার সব কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কারণে দেরি হওয়ায় এইচএসসির প্রথম দিন সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেননি আনিসা আহমেদ নামে এক পরীক্ষার্থী। ফলে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি তিনি। তবে মানবিক দিক বিবেচনায় তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।
গতকাল শুক্রবার শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরারের বরাত দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
বার্তায় বলা হয়, চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। অসুস্থ মাকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেরি হওয়ায় প্রথম দিনের এইচএসসি পরীক্ষায় রাজধানীর সরকারি মিরপুর বাঙলা কলেজ কেন্দ্রের এক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা না দিতে পারার ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে।
এ বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার বলেছেন, ‘মানবিক বিবেচনায় ওই শিক্ষার্থীর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত আইন ও বিধির আলোকে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেছেন, ‘তার এ দুঃসময়ে আমরাও সমব্যথী। এ পরীক্ষার্থীকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সারাদেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। কিন্তু মায়ের মেজর স্ট্রোকের কারণে কেন্দ্রে পৌঁছাতে দেড় ঘণ্টা দেরি হয় ওই ছাত্রীর। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ মেলেনি তার। পরীক্ষাকেন্দ্রের গেটের বাইরে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে ফিরে যান তিনি।
এরপর সেদিন দুপুরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা না দিতে পারার ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে তাকে কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদতে দেখা যায়।
সে সময় কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অন্য দায়িত্বরতরা জানান, নিয়মের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ জানান অনেকে। অনেকে সমালোচনাও করেন। অবশেষে সরকারে নজরে আসায় কপাল খুলছে তার।
জামালপুর ও কিশোরগঞ্জে গতকাল শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ১৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে জামালপুরে প্রবেশপত্র না পাওয়ায় এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ১৭ জন শিক্ষার্থী। আর কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি পরীক্ষার্থী মারজিয়া বেগম। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত; রাজু আহমেদ জামালপুর থেকে জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশে একযোগে শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ১৭ জন শিক্ষার্থী। এ নিয়ে সকাল থেকে কলেজ প্রাঙ্গণে আন্দোলন করে পরীক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় প্রশান্তি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে তালা লাগিয়ে গা ঢাকা দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, জামালপুর শহরের দড়ি পাড়ায় বেসরকারিভাবে কয়েক বছর থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে প্রশান্তি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। মাধ্যমিক স্কুলের রেজিস্ট্রেশন থাকলেও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি না থাকায় জেলার বিভিন্ন কলেজ থেকে ছাত্রদের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম সেলিম। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র বাবদ অর্থ নিলেও পরীক্ষার আগে প্রবেশপত্র সরবরাহ করতে পারেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় সকাল থেকে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেছে ওই কলেজে পরীক্ষা দিতে না পারা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। এ বিষয়ে জানতে প্রশান্তি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম সেলিমের সঙ্গে যোগযোগ করার জন্য কলেজে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলে একাধিকার কল দিলেও তিনি ধরেননি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আফসানা তাসলিম জানান, কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবক আমাদের কিছু জানায়নি। তবে প্রশান্তি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরীক্ষা বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে আবেদন বা অভিযোগ দিলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। চলতি বছরে এইচএসসি পরীক্ষায় জেলায় ৫২টি কেন্দ্রে ২৬ হাজার ৫৭৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে।
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি পরীক্ষার্থী মারজিয়া বেগম। ফরম পূরণ করেও পরীক্ষার প্রবেশপত্র না পাওয়ায় চরম হতাশায় পড়েছে সে ও তার পরিবার। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। মারজিয়া গজারিয়া ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি গ্রামের জেড. রহমান প্রিমিয়ার ব্যাংক স্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক বিভাগের ছাত্রী। সময়মতো ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করলেও পরীক্ষার আগে প্রবেশপত্র তুলতে গিয়ে জানতে পারে, তার অ্যাডমিট কার্ড আসেনি। কলেজ অফিস সহকারী মো. শফিক একাধিকবার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত জানানো হয়, ‘ডাবল ক্লিকের’ কারণে ফরম বাতিল হয়েছে। মারজিয়া বলেন, ‘আমি টেস্ট পরীক্ষায় ৪.০৭ পেয়েছিলাম, আর ফাইনাল পরীক্ষার জন্য আরও ভালো প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু প্রবেশপত্র না পাওয়ায় বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষায় অংশ নিতে পারিনি। পুরো এক বছর হারিয়ে গেল আমার জীবনের।’ তার বাবা স্বপন মিয়া বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের ভুলে আমার মেয়ে পরীক্ষায় বসতে পারেনি। কলেজের শিক্ষকরা ভুল স্বীকার করে আমাদের বাড়িতে এসে পরের বছর বিনা ফিতে পরীক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে আইনি ব্যবস্থা নিইনি।’ কলেজ অফিস সহকারী মো. শফিক বলেন, ‘ফরম পূরণের সময় ভুল করে ‘ডাবল ক্লিক’ করায় তা বাতিল হয়ে যায়। এটি আমাদের ভুল।’ অধ্যক্ষ শরীফ আহমেদ জানান, ‘ঘটনার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ দায়ী। শিক্ষা বোর্ডে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো সমাধান হয়নি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শবনম শারমিন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস.এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘অ্যাডমিট কার্ড বোর্ড থেকে আসার পর দ্রুত বিতরণ করলে ভুল সংশোধনের সুযোগ থাকে। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠান তা পরীক্ষার আগের দিন দেয়, ফলে এমন সমস্যা হয়। তবে এ ঘটনায় অফিস সহকারীর পক্ষ থেকে বোর্ডে কোনো যোগাযোগ হয়নি।’
মন্তব্য