গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকলের জমি থেকে উচ্ছেদ ও আখ কাটাকে কেন্দ্র করে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর স্থানীয় সাঁওতাল-পল্লিতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও তিন সাঁওতালকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তীব্র সমালোচনা হয়েছিল দেশজুড়ে। সাঁওতালদের বাড়িঘরে আগুন দেয়ার ভিডিও হয়েছিল ভাইরাল। এসেছিল বিশ্ব মিডিয়ায়ও।
এরপর দীর্ঘদিন এ নিয়ে আলোচনা ছিল না। ২০১৬ সালের সেই ঘটনার পর চিনিকলের ১ হাজার ৮৪২ একর জমি পুরোটাই প্রায় দখলে নেয় সাঁওতাল জনগোষ্ঠী।
পরবর্তী সময়ে কিছু জমিতে অবশ্য কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে এই জনগোষ্ঠীর যাতায়াত বন্ধ করে দেয় মিল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে গত বছর সরকারের সিদ্ধান্তে বন্ধ হয়ে যায় রংপুর চিনিকলসহ দেশের বেশ কয়েকটি চিনিকল। এরপর থেকে পুরো সম্পত্তিই দখলে নিয়েছে সাঁওতালরা।
সম্প্রতি এই এলাকা নিয়ে ফের উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় দুই হাজার একরের এই জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল ইপিজেড (রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর জমি পরিদর্শনসহ পরবর্তী কাজও শুরু করেছে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা)।
এর পরই এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ফেটে পড়েছেন সাঁওতালরা। এ জমি নিজেদের দাবি করে ফের আন্দোলনে নেমে সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাসিন্দারা।
জনগোষ্ঠীটির দাবি, ইপিজেড স্থাপন সাঁওতালদের নিঃস্ব করার পরিকল্পনা। ৬ নভেম্বরে মানুষ হত্যা করেও উচ্ছেদে ব্যর্থ হয়ে সরকার নতুন করে ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তারা এ সিদ্ধান্ত মানবেন না। তিন ফসলি এই জমিতে কৃষি আবাদই হবে; ইপিজেড নয়। জীবন দিয়ে হলেও তারা বাপ-দাদার জমি রক্ষার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
স্থানীয় একটি পক্ষ অবশ্য বলছে অন্য কথা। তাদের দাবি, চিনিকলের জমিতে ইপিজেড হলে অসংখ্য শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। সেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে গাইবান্ধাসহ উত্তরাঞ্চলের ২ লাখ মানুষের।
প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে এ অঞ্চলের মানুষদের মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল করতেও দেখা গেছে।
প্রশাসন বলছে, চিনিকলের জমিতে ইপিজেড হলে এ অঞ্চলের শিক্ষিত ও বেকার যুবকরা চাকরির সুযোগ পাবেন। গাইবান্ধাসহ পুরো রংপুর বিভাগের জীবনমানে পরিবর্তন আসবে। সেখানে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীই বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে। উত্তরাঞ্চল হবে অর্থনৈতিক এলাকা; যা জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
তবে সরকারের বৃহত্তর এই পরিকল্পনা মানতে রাজি নয় সাঁওতালরা। গত শনিবার ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ভূমি পুনরুদ্ধার কমিটির ব্যানারে গোবিন্দগঞ্জের মাদারগঞ্জ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তারা।
একই ধরনের কর্মসূচি ছাড়াও বেশ কিছু দিন ধরে ঘোড়াঘাট-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন-স্মারকলিপির মাধ্যমেও এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে জনগোষ্ঠীটি।
এসব কর্মসূচিতে সাঁওতাল নেতারা জানান, ফসলি জমি নষ্ট করে শিল্পকারখানা স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিষেধ রয়েছে। তারপরও একটি মহল বেপজা কর্তৃপক্ষকে প্রভাবিত করে সাঁওতাল-পল্লির তিন ফসলি জমিতে শিল্পকারখানা স্থাপনের পাঁয়তারা করছে; যা কোনোভাবেই মানবেন না তারা।
তারা আরও জানান, ১৯৫৩-৫৪ সালে বাঙালি ও সাঁওতালদের কাছ থেকে এসব জমি অধিগ্রহণ করে রংপুর চিনিকল। শর্ত অনুযায়ী, কখনও মিল বন্ধ হয়ে গেলে বা জমিতে আখ চাষ না হলে জমি প্রকৃত মালিকরা ফেরত পাবেন। বর্তমানে মিল বন্ধসহ আখ চাষ বন্ধ হওয়ায় সেই শর্ত শেষ হয়েছে। তাই এই জমির পৈতৃক সূত্রে মালিক সাঁওতাল ও বাঙালিরা।
সাঁওতাল-পল্লি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের খবরে পতিত জমিগুলোতেও ছোট ছোট নতুন ছাপরা ঘর নির্মাণ করে দখলে নিয়েছেন সাঁওতালরা, যা সেই ৬ নভেম্বরের ঘটনার সঙ্গে মিলে যায়। এ ছাড়া তারা দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে বসবাস করে এলেও এখন জমি হাতছাড়া না করতে ভিন্ন ভিন্ন জমিতে ছাপরায় বসবাস শুরু করেছেন।
ইপিজেড স্থাপনের বিরোধিতা করে সাঁওতাল-পল্লির চামগড়া এলাকার টাটু টুডু বলেন, ‘আমি চাই আমার বাপ-দাদার পৈতৃক জমি সরকার ফিরত দেক। আমাদের সরিয়ে দিয়ে সরকার ইপিজেড করতি পারে না। এটা হতে দিব না। জীবন দিব, কিন্তু জমি দেব না।’
৬ নভেম্বরে ঘটনায় পুলিশের গুলিতে পা হারানো পল্লীর বিমল কিসকু বলেন, ‘আমরা বাপ-দাদার ভিটেতে চাষাবাদ করে থাকতে চাই। খাইতে চাই। আমরা কৃষি লোক, চাষবাদ করব; বাপ-দাদার জমিতে থাকব। ইপিজেড আমরা আশ্রয়ও দিব না। জমিতে কিছু তুলতিই দিব না।’
সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি বার্নাবাস টুডু বলেন, ‘২০১৬ সালে অনেকভাবে আমাদের নির্যাতন করা হইছে। পুলিশসহকারে এলাকার যারা প্রভাবশালী তারা আমাদের নির্যাতন করেছে। গুলি করে আমাদের তিনজন ভাইকে মেরে ফেলছে। আমাদের ঘরে আগুন লাগে দিছে। লুটপাট করছে। বাপ-দাদার এই পৈতৃক ভিটে আমরা মরলেও ছাড়ব না। ইপিজেড হতে দিব না।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাফরুল ইসলাম প্রধান বলেন, ‘এই সম্পত্তি আমাদের মা। এই সম্পত্তি আমাদের জীবন। এটাই আমাদের অস্তিত্ব। এখানে আমরা জীবন দিয়ে হলেও জমি রক্ষা করব।’
স্বাধীনতাযুদ্ধে সাঁওতালদের বিভিন্ন অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরাও দেশের উন্নয়ন চাই। তবে নৃগোষ্ঠী সাঁওতাল সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ, নিঃস্ব করে সেই উন্নয়ন করাটা কতটুকু যৌক্তিক?’
সরকার দ্রুত ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণাও দেন তিনি।
৬ নভেম্বর সাঁওতাল-পল্লিতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনার মামলার বাদী থমাস হেমব্রম বলেন, ‘সরকারের যে কর্তৃপক্ষ আমাদের বাপ-দাদার জমিতে ইপিজেড করতে চাচ্ছে; তা আমরা দেব না। আমরা তিন-তিনটে ভাই হারাছি, দরকার হলে আমরাও জীবন দিব, তবুও জমিতে একটা ইট পুঁততে দেব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘৬ নভেম্বর গুলি করে হত্যা, হামলা, লুটপাটের মামলার বাদী হয়েও হয়তো এর বিচার দেখে যেতে পারব না। কারণ বারবার ভুল ও ত্রুটিপূর্ণ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ছাড়া মামলার মূল আসামিদের বারবার চার্জশিট থেকে নাম বাদ দেয়া হচ্ছে।’
সাঁওতালরা বিরোধিতা করলেও স্থানীয়দের একটি অংশ আবার ইপিজেড করার পক্ষে।
স্থানীয় পাড়া কচুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এ এফ এম শরিফুজ্জামান শরীফ বলেন, ‘ইপিজেড হলে এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে। এখানে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। গোবিন্দগঞ্জসহ উত্তরাঞ্চলে উন্নয়ন হবে।’
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেমলেন্দু মোহন রায় জিবু বাবু বলেন, ‘সাঁওতালদের আমরা কখনোই আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবি না। তারা তো শুধু ১২ শতাংশ। আর আমরা হিন্দু-মুসলিম ৮৮ শতাংশ। তাহলে এই সম্পত্তি তারা তাদের বাপ-দাদার সম্পত্তি বলে চালিয়ে দিলে তো হবে না। যত দ্রুত সম্ভব এই ইপিজেড বাস্তবায়ন হোক, এটাই আমি চাই।’
এমন অবস্থায় গত ২৪ আগস্ট ইপিজেড বাস্তবায়নে রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল নজরুল ইসলাম। এর আগে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন তিনি।
ওই সময় তিনি বলেন, ‘গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড স্থাপনের মাধ্যমে এমন একটা কর্মপরিবেশ তৈরি করা হবে, যা হবে আন্তর্জাতিক মানের। সরকার কখনও সাধারণ মানুষের অমঙ্গল কামনা করে না। বৃহত্তর রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মাঝামাঝি এই গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড এই বৃহৎ অঞ্চলের আমূল পরিবর্তন ঘটাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ইপিজেড দুই লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। ইপিজেড এখানে দেবে মিনি ক্যান্টনমেন্ট। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে। তা ছাড়া এখানে আন্তর্জাতিক মানের কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।’
এ ছাড়া এখানকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানসহ তাদের পুনর্বাসনের আশ্বাসও দেন তিনি।
সাঁওতালরা আন্দোলন শুরু করলেও এবার স্থানীয় প্রশাসন বেশ সতর্ক। সাঁওতালদের সঙ্গে কোনো সংঘাত নয় বরং শান্তিপূর্ণ আলোচনার কথা জানিয়েছে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন।
ইউএনও আবু সাঈদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইপিজেড স্থাপন সরকারি সিদ্ধান্ত। এর বিরোধিতা করে কেউ অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটাতে পারে, সে জন্য সজাগ রয়েছে উপজেলা প্রশাসন।’
৬ নভেম্বরের ঘটনা যেভাবে
১৯৫৩-৫৪ সালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জে রংপুর চিনিকলের আখ চাষের জন্য উপজেলার সাপমারা ও কাটাবাড়ী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ১ হাজার ৮৪২ দশমিক ৩০ একর জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। এ জমির মধ্যে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ছিল ২৭ শতাংশ এবং স্থানীয় মুসলমানদের ৭৩ শতাংশ। জমি অধিগ্রহণের পর এর নামকরণ করা হয় সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম।
২০১৬ সালের জুলাইয়ে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের প্রায় ১০০ একর জমিতে ছোট ছোট ছাপরা ও ঝুপড়ি ঘর তুলে বসবাস শুরু করেন সাঁওতাল-বাঙালিরা। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর সকালে আখ কাটা নিয়ে পুলিশসহ চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ বাধে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিন সাঁওতাল নিহত হন। আহত হন উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন।
ওই দিন সন্ধ্যার দিকে সাঁওতালদের ঘরে আগুন দিয়ে উচ্ছেদের চেষ্টা চালায় পুলিশ ও প্রশাসন। এ ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে ওই এলাকা সাঁওতালদের দখলে চলে যায়।
অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য