করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন তিন দিন পর মেয়ের ডাকে সাড়া দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মেয়ে সোনিয়া ইসরাত ‘বাবা’ বলে ডাক দেন; তখন খন্দকার মাহবুব ইশারায় সাড়া দেন বলে নিউজবাংলাকে জানান তার জুনিয়র অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান দুলাল।
তিনি বলেন, ‘স্যারের অবস্থা আগের থেকে সামান্য কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আজকে স্যারের মেয়ে বাবা বলে ডাক দিয়েছেন, তখন ইশারায় সাড়া দিয়েছেন। তিন দিন পর আজকেই সাড়া দিলেন। স্যারের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
রাজধানীর বসুন্ধরায় এভারকেয়ার (সাবেক অ্যাপোলো) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন খন্দকার মাহবুব। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বুধবার বিকেলে থেকে তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে নেয়া হয়। হাসপাতালটিতে গত ১৭ আগস্ট ভর্তি হন তিনি।
খন্দকার মাহবুবের অসুস্থের কথা শুনে তার তিন সন্তান যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছেন। আর স্ত্রী ড. ফারহাত হোসেন হাসপাতালে অবস্থান করছেন।
খন্দকার মাহবুব হোসেন ১৯৩৮ সালের ২০ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ল পাস করে ১৯৬৭ সালের ৩১ জানুয়ারি আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। এরপর একই বছরের ২০ অক্টোবর তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
১৯৭৩ সালে দালাল আইনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এই আইনজীবী।
এরপর একাধিকবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন খন্দকার মাহবুব। ৫৪ বছরের আইন পেশায় দেশের প্রথম সারির সব রাজনীতিবিদের মামলা পরিচালনা করেন এই আইনজীবী।
সবশেষ ২০০৮ সালে বিএনপিতে যোগ দেন খন্দকার মাহবুব। বর্তমানে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
গত ৬ জুলাই কারাগারে থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দরিদ্র স্বপন কুমার বিশ্বাসের পক্ষে বিনা ফিতে আপিল বিভাগে আইনি লড়াই করে ব্যাপক প্রশংসিত হন খন্দকার মাহবুব।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত জসীম উদ্দীনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে খিলক্ষেত থানা পুলিশ।
খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আজহারুল ইসলাম নিজউবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বাড্ডা থানায় একটি মারামারির ঘটনায় জসীম উদ্দীন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য গ্রেপ্তার আসামিকে বাড্ডা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’
ইমাম হোসেন তাঈম হত্যা মামলায় বুধবার যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সকালে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের শুনানি শেষে এ আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
পাশাপাশি আবুলকে আগামী ১২ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেয়া হয়।
আইনজীবী মোহাম্মদ আবুল হাসান এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে যাত্রাবাড়ী এলাকায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তার পক্ষে আজ ওকালতনামা দাখিল করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে সময়ের আবেদন করা হয়েছে, যা ট্রাইব্যুনাল মঞ্জুর করেছেন।’
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, শহীদ ইমাম হোসেন তাঈমকে কাছ থেকে গুলি করার পর থানায় নিয়ে মুখমণ্ডল বিকৃত করে মৃত্যু নিশ্চিত করার ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিলেন সাবেক এ পুলিশ কর্মকর্তা।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা করা হয়। এ মামলায় আবুল হাসান এজাহারভুক্ত আসামি।
আরও পড়ুন:চলতি বছরে দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু পাঁচশ’ ছাড়িয়ে গেল। সবশেষে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৬২৯ জন।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সোমবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া সাতজনের মধ্যে চারজন পুরুষ ও তিনজন নারী।
এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট মারা গেছেন ৫০৪ জন। তাদের মধ্যে ২৪৫ জন পুরুষ ও ২৫৯ জন নারী। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৩ হাজার ৬৮৫ জন।
আর সবশেষ এই ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৮৪২ জন ডেঙ্গু রোগী।
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মালয়েশিয়া থেকে আসা দুটি ফ্লাইটের পাঁচ যাত্রীর কাছ থেকে ওয়েল্ডিং মেশিনের কয়েলের ভেতরে লুকানো সাত কেজি স্বর্ণ জব্দ করেছে ঢাকা কাস্টম হাউজ। জব্দ করা স্বর্ণের বাজার মূল্য প্রায় ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
সোমবার রাতে এই পরিমাণ স্বর্ণসহ তাদেরকে আটক করা হয়। আটকরা হলেন- রুবেল হোসেন, দুলাল আহম্মেদ, সামিউল ইসলাম, সবুজ আলী ও সাগর মিয়া।
বিমানবন্দর কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার মো. আল আমিন মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মালয়েশিয়া থেকে আসা এয়ার এশিয়ার একটি ফ্লাইট সোমবার রাত আড়াইটায় বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এরপর রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাটিক এয়ারের একটি ফ্লাইট বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টম হাউজের প্রিভেন্টিভ দল দুটি ফ্লাইটের পাঁচ সন্দেহভাজন যাত্রীর সঙ্গে আনা কম্বলে প্যাঁচানো অন্যান্য মালামালের সঙ্গে ওয়েল্ডিং মেশিন চিহ্নিত করে স্ক্যান করে। এ সময় প্রতিটি ওয়েল্ডিং মেশিনের কয়েলের ভেতরে মোট পাঁচটি স্বর্ণের চাকতি, দুটি স্বর্ণেরর টুকরো ও ১০০ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। জব্দ স্বর্ণের মোট ওজন প্রায় সাত কেজি এবং বাজার মূল্য সাত কোটি ৫০ লাখ টাকা।
প্রাথমিক পরীক্ষায় সেগুলো স্বর্ণ বলে নিশ্চিত হলে জব্দ করা হয়। আটক যাত্রীদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় ফৌজদারি মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন। চোরাচালানের মাধ্যমে আনা স্বর্ণের উৎস শনাক্ত করতে তদন্ত চলছে।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানী ঢাকার বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে এই বিক্ষোভ ও মিছিল করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ইউনুস আহমাদ বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ চাই। আমাদের ১৫ কোটি মানুষের শক্তিশালী ৩০ কোটি হাত সাম্যের জন্য লড়াই করতে প্রস্তুত। ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই এই হামলার তদন্ত করতে হবে এবং দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা সীমান্তে বাংলাদেশিদের নির্যাতনের খবর পেয়েছি। তারা সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে। আমরা ভারতের পক্ষ থেকে এই ধরনের আচরণ সহ্য করব না।’
সংগঠনটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি ইমতিয়াজ আলম বলেন, ‘শুধু ক্ষমা চাওয়াই যথেষ্ট নয়। ভারতীয় মন্ত্রীদের আত্মমূল্যায়ন করতে হবে। মুসলিম, খ্রীষ্টান, হিন্দু সবাই বাংলাদেশের নাগরিক।’
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘ভারত ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিচ্ছে। ভারতের গণমাধ্যমগুলো সহিংসতায় ইন্ধন জোগাচ্ছে। তারা বাংলাদেশে সংঘাত উস্কে দেয়ার চেষ্টা করছে।’
ভারত প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানাবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
বিক্ষোভ মিছিলটি বায়তুল মুকাররমের উত্তর গেট থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকা হয়ে পল্টন মোড়ে এসে শেষ হয়।
বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে গত সোমবার ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলা চালায় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সমর্থকরা।
আরও পড়ুন:ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, গত ১৫ বছরে দেশে সার্বিকভাবে ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ খানা দুর্নীতির শিকার হয়েছে। বেশি দুর্নীতি হয়েছে পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায়।
রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে মঙ্গলবার ‘সেবা খাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ-২০২৩’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরে টিআইবি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জরিপে অন্তর্ভুক্ত ঘুষদাতা খানার ৭৭ দশমিক ২ শতাংশ বলেছে, ঘুষ না দিলে সেবা পাওয়া যায় না। ঘুষ আদায়ে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ অব্যাহত রয়েছে। জরিপবর্ষে ১০ হাজার ৯০২ কোটি টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। আর আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে (২০০৯ থেকে এপ্রিল-২০২৪) ঘুষ লেনদেনের প্রাক্কলন করা হয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৫২ কোটি টাকার।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জাতীয় খানা জরিপ ১৯৯৭ সাল থেকে প্রতি বছর করে আসছে টিআইবি। এই জরিপ ধারণাভিত্তিক গবেষণা নয়, সেবা নিতে গিয়ে যে হয়রানি শিকার হতে হয়, তাদের অভিজ্ঞতাভিত্তিক।’
তিনি জানান, ১৫ হাজার ৫১৫টি খানার ওপর জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে ছিল শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার, ভূমি, কৃষি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, বিচারিক প্রক্রিয়া, বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং, বিআরটিএ, কর ও শুল্ক, এনজিও, পাসপোর্ট, বিমা, গ্যাস, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ সহায়তা এবং এনআইডি সেবা।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ২০২৩ সালে সার্বিকভাবে গড়ে ৫ হাজার ৬৮০ টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছেন সেবাগ্রহীতারা। বিচারিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায় দুর্নীতি ও ঘুষের উচ্চহার অব্যাহত, যা সাধারণ জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে বড় বাধা।
তিনি বলেন, ভূমি সেবা, পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র সেবায় উচ্চ দুর্নীতি ও ঘুষ বিদ্যমান, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সেবা প্রাপ্তির অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করছে।
দুর্নীতি প্রতিরোধ, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, তদারকি জোরদার, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন, অভিযোগের ব্যবস্থা সম্পর্কে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত সম্পদের হিসাব প্রকাশ ও নিয়মিত গণশুনানির আয়োজনের ওপর জোর দিতে বলেছে টিআইবি।
আরও পড়ুন:ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সোমবার রাতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ একাধিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অ্যাকটিভিস্ট জাহিদ আহসান বলেন, ‘আগরতলায় হাইকমিশনে হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, ভারতের সঙ্গে খেলা হবে সমানে সমান। কোনো রাজা-প্রজার সম্পর্ক থাকবে না। শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে আমরা ভারতের আধিপত্য মেনে নেব না।’
সমাবেশের একপর্যায়ে সেখানে মিছিল নিয়ে যোগ দেন জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থীরা।
ওই সময় তারা ‘হিন্দু মুসলিম ঐক্য করো, বাংলাদেশ রক্ষা করো’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, চলবে না চলবে না’, ‘দূতাবাসে হামলা, জগন্নাথ হল মানবে না’ ধরনের স্লোগান দেন। ওই সময় বাকি শিক্ষার্থীরা হাততালি দিয়ে তাদের স্বাগত জানান।
সমাবেশে জগন্নাথ হলের ছাত্র জয় পাল বলেন, ‘ধর্ম,বর্ণ, জাত-পাত নির্বিশেষে আমরা সকলেই বাংলাদেশি। এটাই আমাদের একমাত্র পরিচয়। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমরা সকলেই এক।
‘বাংলাদেশের সনাতনীসহ সকল নাগরিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সেই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের একসাথে রুখে দাঁড়াতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসে যে হামলা হয়েছে, সেটির বিরুদ্ধে শুধু জগন্নাথ হল নয়, সকলের উচিত প্রতিবাদ জানানো। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপে আমাদের উদ্দেশে বলা হয়, আমরা নাকি ভারতের দালাল।
‘আমরা যদি ভারতের দালালই হতাম তাহলে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সংহতি জানাতে আমরা এখানে আসলাম কেন?’
পরবর্তী সময়ে এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেন বিভাজন না করা হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান জয় পাল।
ছাত্রদলের প্রতিবাদ
ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে হামলা এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কূটনৈতিক শিষ্টাচার-বহির্ভূত বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ভারত সরকার ভিয়েনা কনভেনশনের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী কূটনীতিকদের সুরক্ষা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সহিংস ঘটনার সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্লিপ্ত অবস্থান উক্ত ঘটনার পেছনে কর্তৃপক্ষের মৌন সম্মতির স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে।
‘বিগত ২৮ নভেম্বরে কলকাতায়ও একই ধরণের সহিংস ঘটনা ঘটেছে, যা একটি বিপজ্জনক পরম্পরা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।’
ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের পূর্ণ নিরাপত্তা প্রদান, হামলার ঘটনার যথাযথ তদন্তপূর্বক দায়ীদের চিহ্নিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিতকরণ এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্য ভারত সরকার ও রাজনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানান ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য