পিই রেশিও ৪০-এর বেশি কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বেড়ে যাওয়া এবং এসব শেয়ারে মার্জিন ঋণ দেয়া হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখার আদেশ দেয়ার পরদিন ভয় দেখিয়ে উত্থানই দেখল পুঁজিবাজার।
একপর্যায়ে সূচক ২৮ পয়েন্ট কমে গেলেও শেষ পর্যন্ত তা আগের দিনের চেয়ে ৬২ পয়েন্ট বেড়ে শেষ হয়েছে লেনদেন।
টানা আট কর্মদিবসে বেড়েছে সূচক। গত ৩১ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত সূচক বেড়েছে ৪৩৫ পয়েন্ট। এর মধ্যে চলতি সপ্তাহেই বেড়েছে ২০৬ পয়েন্ট।
এ নিয়ে টানা ১০ সপ্তাহ চাঙাভাবে শেষ হলো লেনদেন।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরুতেই সূচক বেড়ে গেলেও আধাঘণ্টার মধ্যে ২৮ পয়েন্টের মতো কমে যায়। আগের দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির আদেশ দেয়ার পর তার প্রতিক্রিয়া কি না, এ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
তবে ২০ মিনিটও স্থায়ী হয়নি মন্দা পরিস্থিতি। বেলা পৌনে ১১টার দিকে পড়ে যাওয়া সূচক ফিরে পাওয়ার পর থেকে বেলা পৌনে ২টা পর্যন্ত কেবল বেড়েছেই সূচক। শেষ পৌনে এক ঘণ্টায় সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে কিছুটা কমে শেষ হয়েছে লেনদেন।
সূচকের মতোই ছিল লেনদেনের চিত্রও। প্রথম দেড় ঘণ্টায় লেনদেনের গতি খুব একটা বেশি না থাকলেও শেষ দুই ঘণ্টায় শেয়ার কেনাবেচার ধুম পড়ে।
দিনশেষে সূচকের মতোই লেনদেন ছাড়িয়ে যায় আগের দিনকে।
এদিন স্বল্প মূলধনী ৪০ পিই রেশিওর বেশি কোম্পানির ক্ষেত্রে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। লভ্যাংশ না দেয়া, লোকসানি কিছু কোম্পানির শেয়ারদর যেমন কমেছে, তেমনি মুনাফায় থাকা স্বল্প মূলধনী বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
এই উত্থানের পেছনে কাজ করেছে মূলত বড় মূলধনি কোম্পানি ওয়ালটন, স্কয়ার, বিএসআরএম লিমিটেড, বিএসআরএম স্টিল, অলিম্পিক, গ্রামীণ ফোন, বেক্সিমকো ফার্মার আর ব্যাংকের শেয়ারদর বৃদ্ধি।
খাতওয়ারি হিসাব করলে ব্যাংকের পর সবচেয়ে ভালো দিন গেছে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে। বিমা খাতেও দিনটি খুব একটা খারাপ যায়নি।
প্রধান খাতগুলোর মধ্যে প্রকৌশল, আর্থিক এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা।
অন্যদিকে সবচেয়ে বাজে দিন গেছে বস্ত্র খাতে। জ্বালানি খাতেও দর হারিয়েছে বেশিরভাগ কোম্পানি। একই দশা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে।
স্বল্পমূলধনি কোম্পানির কী চিত্র
গত কয়েকদিন ধরেই পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে স্বল্প মুলধনি কোম্পানি নিয়ে।
শেয়ার সংখ্যা কম, কেবল এই কারণে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে লোকসানি, বন্ধ, কখনও লভ্যাংশ না দেয়া কোম্পানির শেয়ারদরও। কারসাজি হচ্ছে-এমন আলোচনা ব্যাপক।
এর মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা মোটি দুটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব কোম্পানি নিয়ে করণীয় নির্ধারণে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে এই কমিটি।
সবশেষ সিদ্ধান্ত এসেছে বুধবার। মূল্য আয় অনুপাত তথা পিই রেশিও ৪০ এর বেশি-এমন কোম্পানির শেয়ারদর কেন বাড়ছে, এসব কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ে মার্জিন ঋণ দেয়া হচ্ছে কি না, এই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্তও হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের পর দিন প্রতিক্রিয়া কী হয়, তা নিয়ে আলোচনা ছিল।
দিনভর লেনদেনের চিত্র দেখলে একক সিদ্ধান্তে আসা কঠিন। সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির তালিকায় যেমন ছিল স্বল্প মূলধনি এক ঝাঁক কোম্পানি, তেমনি সবচেয়ে বেশি দর পতনের তালিকাতেও ছিল এসব কোম্পানি।
সবচেয়ে বেশি দর হারানো সাতটি কোম্পানির ৫টিই স্বল্প মূলধনী, যেগুলোর শেয়ারদর বাড়ছিল লাফিয়ে লাফিয়ে।
সবচেয়ে বেশি কমেছে মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার দর। ৭.৫২ শতাংশ কমে ৩১ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ২৯ টাকা ৫০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে।
মেঘটা কনডেন্সড মিল্কের শেয়ার দর কমেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬.৮৫ শতাংশ। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৬.৫০ শতাংশ কমেছে ইমাম বাটনের দর।
উড়তে থাকা স্বল্প মূলধনী সমতা লেদার ৫.৯৪ শতাংশ আর অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ ৫.২৬ শতাংশ দর হারিয়েছে।
টানা বাড়তে থাকা লোকসানি তাল্লু স্পিনিংয় ও মিথুন নিটিংও দর হারিয়েছে। তাল্লুর দর কমেছে ৫.৩৩ আর মিথুন নিটিংয়ের ৩.৯৩ শতাংশ।
আবার সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধির তালিকায় থাকা রংপুর ফাউন্ড্রির দর ৮.৯১ শতাংশ আর কোহিনুর কেমিক্যালের দর বেড়েছে ৮.৭৪ শতাংশ।
এএমসিএল প্রাণের দর ৮.৭৪ শতাংশ, এপেক্স ফুটওয়্যারের ৮.৪১ শতাংশ, ফার্মা এইডের ৯.৪৯ শতাংশ, অ্যাম্বি ফার্মার ৭.৪৮ শতাংশ, লিব্রা ইনফিউশনের ৭.৪০ শতাংশ, ন্যাশনাল টিউবের দর ৭.৩০ শতাংশ, সোনালী পেপারের দর ৭.০৪ শতাংশ, অ্যাপেক্স ফুডের দর ৬.৭৪ শতাংশ বেড়েছে।
ব্যাংক, বিমা, মিউচ্যুয়াল ফান্ডে উত্থান
এই তিনটি খাতের শেয়ারধারীরা অবশেষে স্বস্তি পেয়েছেন।
ব্যাংক খাতে দরের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেন। হাতবদল হয়েছে হয়েছে ১৯৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১৭৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ নতুন বিনিয়োগ হয়েছে ১৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
৩২টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে কেবল দুটির। এর একটি নতুন তালিকাভুক্ত সাউথবাংলা ব্যাংক। বেড়েছে বেড়েছে ২২টির, আর অপরিবর্তিত ছিল ৮টির।
ব্যাংক খাতের সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের ২.২৯ শতাংশ। শেয়ার দর ৮ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮ টাকা ৯০ পয়সা।
তারপরেই আছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, যার শেয়ার দর ২.২৯ শতাংশ বেড়ে ২১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে হয়েছে ২২ টাকা ৩০ পয়সা।
ওয়ান ব্যাংকের দর বেড়েছে ২.১৭ শতাংশ। শেয়ার দর ১৩ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪ টাকা ১০ পয়সা।
আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের দর বেড়েছে ১.৪০ শতাংশ। দাম ৭ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭ টাকা ২০ পয়সা।
ব্যাংকের পাশাপাশি দর বেড়েছে বিমা খাতেরও। দরের পাশাপাশি লেনদেনও বেড়েছে। কেনাবেচা হয়েছে ৩৩৮ কোটি ৪ লাখ টাকার মেয়ার। আগের দিন লেনদেন ছিল ১৬৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
এই খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৩০টির, কমেছে ১৮টির আর অপরিবর্তিত ছিল বাকি তিনটির দর।
বেশি বেড়েছে জীবন বিমা কোম্পানিগুলো শেয়ার। এর মধ্যে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ১০ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার দর ১০৩ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১১৩ টাকা ৩০ পয়সা।
তারপরই আছে পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যার দর ৫২ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৮.৬০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৫৬ টাকা ৮০ পয়সা।
প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ৭.৮৪ শতাংশ, ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর ৭.৭৪ শতাংশ, সান লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৭.৭১ শতাংশ, প্রগতি লাইফের শেয়ার দর বেড়েছে ৭.৪৫ শতাংশ।
দর বৃদ্ধির পাওয়া পুঁজিবাজারের আরেক খাত মিউচ্যুয়াল ফান্ড। দারুণ লভ্যাংশ আসার পরেও এক মাসেরও বেশি সময় ধরে দরপতনের বৃত্তে থাকা খাতটিতে একটি মাত্র ফান্ডের দর কমেছে, বেড়েছে ৩৪টির, আর একটির দর ছিল অপরিবর্তিত।
লেনদেন হয়েছে ৬৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। ফলে একদিনের ব্যবধানে এ খাতের লেনদেন বেড়েছে ৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
বস্ত্র, তথ্য প্রযুক্তি ও বিদ্যুৎ খাতের পতন
বৃহস্পতিবার সবচেয়ে হতাশ হয়েছে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের শেয়ারধারীরা। ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে কেবল ৮টির, কমেছে ৪৯টির, একটির দর ছিল অপরিবর্তিত।
গত কয়েকদিন ধরে এ খাতের শেয়ার দরে উত্থানে অনেকটা মূল্যসংশোধনের পথে হাটতে থাকা বস্ত্র খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ২৫৬ কোটি ১১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৫৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। আটটি কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ার বিপরীতে কমেছে ১১টির। লেনদেন হয়েছে মোট ২২১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩০৮ কোটি টাকা।
অন্যান্য খাতের লেনদেন
ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর পতন হয়েছে ১২টির, বেড়েছে ১৬টির। হাতবদল হয়েছে ৩৪৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ৩১৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫টির, কমেছে ১৫টির। লেনদেন হয়েছে ১৭১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৭০ কোটি ০৯ লাখ টাকা।
বিবিধ খাতের ১৪টি কোম্পানির মধ্যে দাম কমেছে ৯টির, বেড়েছে ৪টির। হাতবদল হয়েছে ১২৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১২১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৮টির। কমেছে ১০টির। মোট হাতবদল হয়েছে ২১৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ১৮৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
শেয়ার দর কমেছে তথ্য প্রযুক্তি খাতেও। এখাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটর মধ্যে মাত্র ৩টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। কমেছে ৭টির। বাকি একটি কোম্পানির শেয়ার দর ছিল অপরিবর্তিত।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে ৪৫ কোটি ১১ লাখ টাকা, আগের দিন যা ছিল ৫৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬২ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ২৫৮ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ২০ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৯২ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৩৩ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৪৭ পয়েন্টে।
লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা।
চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৫২ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ১৩১ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে ৯৬ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮৪ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
মন্তব্য