মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কার ঘটনায় আহত একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল তিনজনের।
সবশেষ মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম কামাল আহমদ। ৩৫ বছরের কামাল ওই দুর্ঘটনায় আহত হয়ে সিলেটের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। সেখানে বুধবার রাতে মারা যান তিনি।
কামাল দুর্ঘটনার দিন মারা যাওয়া ফরিদ উদ্দিনের ভাই। তারা নগরের আম্বরখানা এলাকার লোহারপাড়ার বাসিন্দা।
কামাল আহমদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে তাদের প্রতিবেশী রিজভী আহমেদ বলেন, ‘দুর্ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হয়েছিলেন। চার দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে বুধবার রাতে মারা যান।’
ট্রেন দুর্ঘটনায় কামাল ও ফরিদের আরেক ভাই লাবিব আহমদ আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এই পরিবারটির আরও চার সদস্য।
হতাহতদের পারিবারের সদস্যরা জানান, রোববার একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুটি মাইক্রোবাসে করে কুলাউড়ার ভাটেরায় যাচ্ছিলেন সিলেট নগরের আম্বরখানার এই পরিবারটি। ভাটেরা এলাকার হোসেনপুর গ্রামে ঢোকার সময় তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসগুলোর মধ্যে একটি রেলক্রসিং পার হলেও আরেকটিকে ট্রেন ধাক্কা দেয়।
দ্রুতগতির ট্রেনটি প্রায় আধা কিলোমিটার টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় মাইক্রোবাসটিকে। দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি থেকে বের করা হয় ফরিদ ও তার আট বছরের ছেলের মরদেহ।
প্রায় ১৮ বছর আগে গণমাধ্যমের খবরে দেশের মানুষ প্রথম জানতে পারে তাদের সম্পর্কে। সুশিক্ষিত দুই বোনের স্বেচ্ছা ঘরবন্দি জীবন ও তাদের আচার-আচরণ অবাক করে সবাইকে। কৌতূহলী পাঠকের আগ্রহ দেখে মিডিয়ায়ও একের পর এক খবর প্রকাশ হতে থাকে।
জানা যায়, আরও কয়েক বছর আগে থেকেই তারা স্বেচ্ছায় নিজেদের চার দেয়ালের ভেতর বন্দি করে নিভৃত জীবনযাপন করে আসছেন।
মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত ওই বোন হলেন রিতা ও মিতা। তাদের মধ্যে নুরুন নাহার মিতা প্রকৌশলী এবং আইনুন নাহার রিতা চিকিৎসক। তারা দু’জনই সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত।
দীর্ঘ সময় পেরিয়ে বর্তমানে তারা শারীরিকভাবে আগের তুলনায় অনেকটাই সুস্থ। তবে মানসিক অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।
নিউজবাংলার সঙ্গে আলাপচারিতায় এমনটিই জানিয়েছেন তাদের বড় বোন কামরুননাহার হেনা। বর্তমানে তার ধানমণ্ডির বাসাতেই থাকেন তারা।
২০০৫ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের সি ব্লকের ৯ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়ি থেকে রিতা ও মিতাকে উদ্ধার করে একটি মানবাধিকার সংগঠন। সে সময় বাড়িটি ‘ভূতের বাড়ি’ নামেই পরিচিত ছিল।
বাসার দরোজা-জানালা বন্ধ করে থাকতেন তারা। কারও সঙ্গে মিশতেন না, কথাও বলতেন না। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে থাকা মা বিনা চিকিৎসায় মারা যান। দুই বোন মায়ের লাশ ঘরেই রেখে দেন। কাউকে না জানিয়ে মধ্যরাতে হারিকেনের আলোয় তারা ঘরের বাইরে মায়ের লাশ কবর দেয়ার উদ্যোগ নেন। আর তা দেখে ফেলেন প্রতিবেশীরা। এভাবেই পুরো বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।
মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত দুই বোনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। দিনের পর দিন ঘরবন্দি অবস্থায় থেকে তাদের শরীরের বর্ণ হয়ে গিয়েছিল ফ্যাকাশে। পুরো দেহ হয়ে উঠেছিল অস্থিচর্মসার। শরীরও প্রচণ্ড দুর্বল।
চিকিৎসায় দুই বোন কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। বেশ কিছুদিন তাদের নিয়ে কোনো আলোচনাও ছিল না। ২০১৩ সালে কাউকে না বলে তারা বগুড়ায় চলে গেলে ফের আলোচনা শুরু হয়। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে এনে রাখা হয় বড় বোন কামরুন নাহার হেনার বাসায়।
‘কেমন আছেন সেই রিতা-মিতা’ শিরোনামে ২০২১ সালের ৩১ মে নিউজবাংলায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এরপর আবার তাদের সবশেষ অবস্থা জানতে সম্প্রতি নিউজবাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় বড় বোন কামরুন নাহার হেনার সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘আল্লাহন রহমতে এখন ওরা আগের তুলনায় ভালো আছে। আগে যেমন একটু বেশি উচ্ছৃখল ছিলো, এখন তা কিছুটা কম। তবে আর যাই করুক এখন ওরা ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়াটা করে। আগে তো বেছে বেছে খাবার খেতো। বলতো- এটা খাবো না, সেটা খাবো না। কিন্তু তেমনটা অনেক কম করে।
‘অবশ্য ওদের আচরণটা এখনও আগের মতোই রয়ে গেছে। অনেকটা বাচ্চাসুলভ। কখনও ভালো ব্যবহার করে আবার কখনো উল্টোপাল্টা শুরু করে দেয়। এই ধরুন, ইচ্ছা হলো তো গান গাইতে শুরু করল। আবার ইচ্ছা জাগলে কুরআন শরীফ পড়ে। আর ঘর সব সময় অন্ধকার করে রাখে।
কামরুন নাহার বলেন, ‘বড় সমস্যাটা হলো যে ওরা দুজনই ঠিকমতো ওষুধ খেতে চায় না। আমি খাওয়ার জন্য ওষুধ দিয়ে এলে ওরা জানালা দিয়ে ফেলে দেয়। পাশের বাড়ি থেকে মানুষ দেখে ফেলে তারা আমাকে আবার সেই খবর জানিয়ে দেয়।
‘তখন আমি ওদের জিজ্ঞাসা করি ওষুধ কেন ফেলছো। তখন আবার ওরা কোনো কথা বলে না। এজন্য অনেক সময়ই আমি বুদ্ধি করে ওদের খাবারের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে দেই। কোনোদিন ডালের সঙ্গে মিশিয়ে দেই; আবার আরেক হয়তো অন্য কোনো খাবারের সঙ্গে। অবশ্য মাঝে মাঝে দেখি ওরা নিজের ইচ্ছায়ই ওষুধ খেয়ে ফেলে।’
হেনা বলেন, ‘আগে আমার একমাত্র মেয়ে ওর দুই খালার দেখাশোনা করতো। বেশ কিছুদিন হলো সে ব্যারিস্টারি পড়তে লন্ডনে আছে। এখন আমাকেই ওদের দেখতে হয়। আমি ছাড়া তো ওদের আর কেউ নেই। ওরা শারীরিকভাবে অসুস্থ হোক আর মানসিকভাবে অসুস্থ হোক, অন্য কেউ তো ওদের নিতে চাইবে না।
আমি ওদের একমাত্র বড় বোন। আমি কি ওদের ফেলে দিতে পারি? আমি মায়ের মতোই ওদেরকে দেখে রাখি। আমার স্বামীও ওদের দিকে খেয়াল রাখে। সাথে আমার একটা কাজের লোক আছে। সেও ওদের দেখভাল করে।’
রিতা-মিতা কী খেতে পছন্দ করেন- এমন প্রশ্নের জবাবে হেনা বলেন, ‘ওরা আইসক্রিম আর রেস্টুরেন্টের খাবার খেতে পছন্দ করে। এই ধরুন ওদের মনে হলো এখন আইসক্রিম খাবে। তখনই আইসক্রিম কিনে দিতে হবে। অন্যথা হলেই খুব জেদ করে। তাই আমি বাসার ফ্রিজে আইসক্রিম কিনে রাখি। রিতা একটু সহনশীল হলেও মিতা আগে থেকেই একটু জেদী। ও-ই জেদ বেশি করে। তখন আবার রিতা ওর সঙ্গে তাল মেলায়।
‘আবার অল্প পরিমাণ আইসক্রিম দিলে ওরা খাবে না। কম দিলে বা না দিলে অনেক চিৎকার-চেঁচামেচি করে। হাতের কাছে কিছু পেলে সেটা ছুড়ে মারে। অথচ ডাক্তার ওদের আইসক্রিম কম খেতে বলেছেন।
‘করোনা মহামারির সময়ে আইসক্রিম নিয়ে ওরা বেশি ভুগিয়েছে। ওই সময়টাই ঠাণ্ডা কিছু খাওয়ার ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই চিকিৎসকরা নিষেধ করতেন। কিন্তু ওদের আইসক্রিম চাই-ই চাই। সে সময়টাতে এই অসুস্থ দুই বোনকে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। তবে আল্লাহর রহমতে ওদের করোনা হয়নি।’
রিতা ও মিতা অন্ধকার রুমে দিন-রাত কী করে- এমন প্রশ্নের জবাবে বড় বোন হেনা বলেন, ‘ওরা একেক সময় একেকটি বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকে। কোনো সময় ধ্যানে বসে, কোনো সময় বিড় বিড় করে কী যেন বলে। আবার কোনো সময় গান গায়। বিশেষ করে হিন্দি গান। আবার কোনো সময় কুরআন শরীফ পড়ে।
‘আসলে আমরা এখন এগুলো নিয়ে বেশি মাথা ঘামাই না। ওরা ওদের মতো করে থাকে, আমরা আমাদের মতো কাজ করি। মানসিক আচরণটা ওদের এই ভালো এই খারাপ। মোট কথা ওদের আচরণ আগের মতোই আছে। বাইরে বের হয় না। বাইরের কারো সঙ্গে মেশেও না। ওরা সব সময় অন্ধকার ঘরে থাকতেই পছন্দ করে।’
হেনা আরও বলেন, ‘রিতা-মিতাকে যে ডাক্তার দেখাই তিনি বলেছেন ওদের নিয়ে চিন্তা না করতে। ডাক্তার বলেছেন, ওরা যদি ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করে তাহলে কোনো সমস্যা হবে না। ওদের স্বাস্থ্যও এখন ভালো আছে।’
কামরুন নাহার হেনার একমাত্র মেয়ে সামিনা তুন নুরের সঙ্গে দুই বছর আগে কথা হয়েছিল নিউজবাংলার। সে সময় তিনি বলেন, ‘খালারা ওষুধ খেলে ছয়-সাত মাস ভালো থাকে। খাওয়া ছেড়ে দিলে আবার আগের মতো মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে; উল্টোপাল্টা কথা বলে।’
উল্টোপাল্টা কী বলেন- এমন প্রশ্নে তখন সামিনা বলেন, ‘এই যেমন বলে- আমি তো পুরা বাংলাদেশের মালিক। আমিই এই দেশ চালাব। এই পুরা বিশ্বব্রহ্মাণ্ড আমার। আমাদের কাছে আল্লাহর বাণী আসছে।
‘তারা বসে বসে শুধু বিভিন্ন কোড বানায় আর বিড় বিড় করতে থাকে। এসব আমরা বুঝি না। তবে তারা দিনে সময় করে কুরআন তেলাওয়াত করে এবং বাংলায় অর্থসহ পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘তারা এতটাই উল্টোপাল্টা বলে যে মাঝে মাঝে আমাকেই বলে- তুমি তো আগে ছেলে ছিলা, এখন মেয়ে হলা কীভাবে? আমার বাবা-মাকে বলে- তোদের ছেলে কই? এই মেয়ে কে? অথচ আমার কোনো ভাই নেই, আমিই বাবা-মার একমাত্র মেয়ে।’
কেন তারা ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন জানতে চাইলে সামিনা বলেন, ‘গত বছর হঠাৎ করেই দুই খালা বলে বসে- আমরা ওষুধ খাব না। আল্লাহর ওহি আমাদের কাছে আসছে। আমাদের ওষুধ খেতে নিষেধ করা হয়েছে।
‘শুধু ওষুধ নয়, তারা মাঝে মাঝে খাওয়া-দাওয়াই বন্ধ করে দেয়। আল্লাহর ওহিতে নাকি তাদের সব খাওয়া-দাওয়া বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়। তারপর আমরা সবাই মিলে জোর করে ধরে খাওয়াই।’
রিতা-মিতার এই ভাগনি বলেন, ‘রাতের বেলা যখন আমি পানি খেতে উঠি, তখন মাঝে মাঝে দেখি খালাদের রুম থেকে আওয়াজ আসছে। তারা তখন রুমের লাইট বন্ধ করে দিয়ে গান গায়। পুরনো দিনের বাংলা সিনেমার গান গায়। দুজনে মিলে হাসিঠাট্টা করে। তারা আমাদের সামনে তেমন কথা না বললেও নিজেদের মধ্যে অনেক গল্প করে, গান গায়।’
সামিনা বলেন, ‘তারা ডিকশনারি পড়ে। একেকটা করে ওয়ার্ড মুখস্ত করে। আর তাদের মাথায় যা আসে সেটা ফিজিক্সের কোডের মতো করে লেখে। উল্টোপাল্টা যা মনে আসে তাই লেখে। একজন সাধারণ মানুষ সেই লেখা দেখলে কিছুই বুঝতে পারবে না।
‘আমরা এতোটা কাছে থেকেও তাদের লেখা বুঝতে পারি না। খালারা আগে নিয়মিত টিভি দেখত। এখন আর টিভি দেখে না। এখন তারা কাউকেই পছন্দ করে না। যেই কাছে যায় তাকে গালাগালি করা শুরু করে।’
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র অগ্রভাগ কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির আবহাওয়াবিদ শরিফুল নেওয়াজ কবির রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ আবহাওয়াবিদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগ কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এর বড় অংশটি অতিক্রম শুরু করলে ঝড়বৃষ্টিসহ বড় পরিসরে প্রভাব বোঝা যাবে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় (১৮.৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১.৩ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আজ সকাল ৬টায় (১৪ মে, ২০২৩) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। এটি কক্সবাজার-মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে।
“এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ (১৪ মে, ২০২৩) বিকাল/সন্ধ্যা নাগাদ সিট্টুয়ের (মিয়ানমার) নিকট দিয়ে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।”
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৯৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।’
আরও পড়ুন:প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে জানিয়ে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, ঝড়টি বাংলাদেশের দক্ষিণপূর্ব এবং মিয়ানমারের উত্তর উপকূল অতিক্রম করতে পারে রোববার দুপুরের মধ্যে।
ভারতের রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি ওই দিন বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমারের সিট্টুয়ের কাছে কিয়াউকপিয়ুর মাঝামাঝি উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এ সময় ঘণ্টায় বাতাসের একটানা গতিবেগ ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার হতে পারে, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দেয়া বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সামান্য উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১২.৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি বৃহস্পতিবার গভীর রাত ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও আরও ঘনীভূত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ নিয়ে বলা হয়, ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।’
উপকূলে সতর্ক সংকেত নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
‘উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হলো।’
আরও পড়ুন:গাজীপুরের সালনায় রাবেয়া আক্তার নামে এক কলেজ ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা এবং নিহতের মা ও বোনকে গুরুতর আহত করার ঘটনায় মামলার একমাত্র আসামি সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানিয়ে বলেন, আসামি সাইদুল ইসলামকে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রসঙ্গত, বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় রাবেয়া আক্তারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে সোমবার সন্ধ্যায়। এ সময় ওই কলেজছাত্রীর মা এবং বোনও গুরুতর আহত হয়েছেন। অভিযোগ ওঠে যে সাইদুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।
স্বজনদের বরাত দিয়ে গাজীপুর সদর মেট্রোপলিটন থানার ওসি জানান, আবদুর রউফ গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকায় স্ত্রী ও চার মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন। তিনি ছোট দুই মেয়েকে কোরআন শিক্ষার জন্য স্থানীয় টেকিবাড়ি জামে মসজিদের ইমাম মো. সাইদুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। তাদের পড়ানোর জন্য বাসায় যাওয়া-আসার সুবাদে বড় মেয়ে কলেজছাত্রী রাবেয়া আক্তারের দিকে সাইদুলের কুনজর পড়ে। তিনি রাবেয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তা সরাসরি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়। সাইদুল এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাবেয়াকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সাইদুল বাড়িতে ঢুকে রাবেয়াকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। তার চিৎকারে মা ও বোন এগিয়ে এলে তাদেরকেও কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যান সাইদুল।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাবেয়া মারা যান। গুরুতর আহত মা ও ছোট বোনকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে সাইদুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করেন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার মধ্যম মাঝিগাছা এলাকায় প্রেমের জের ধরে মাহিন নামে এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তারা হলেন- প্রেমিকার বাবা রওশন মিয়া ওরফে মুজা মিয়া ও তার ভাই এজাহারনামীয় আসামি জাহাঙ্গীর মিয়া।
সোমবার বেলা আড়াইটায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১ কুমিল্লার কোম্পানি মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
মেজর সাকিব জানান, প্রেমিকার বাবা ও চাচার পিটুনিতে অসুস্থ হয়ে যুবকের মৃত্যু হয়। ছেলের মৃত্যু সংবাদের বিষয়ে কথা বলার সময় জেলার আদর্শ সদর উপজেলার মধ্যম মাঝিগাছা গ্রামের বাসিন্দা হিরন মিয়াও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ঘটনা হওয়ায় র্যাব ছায়াতদন্ত শুরু করে। পরে এ ঘটনায় মামলা হওয়ার ৪ ঘণ্টার মধ্যে রোববার রাতে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সোমবার দুপুরে তাদেরকে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সনজুর মোর্শেদ জানান, গ্রেপ্তার দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (৪ মে) রাতে প্রেমের জেরে মাহিন নামে এক তরুণকে বেধড়ক পেটান প্রেমিকার চাচা ও বাবা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার মাহিন মারা যান। ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বাবা হিরণ মিয়াও মারা যান।
আরও পড়ুন:চুয়াডাঙ্গার ভালাইপুরে কাপড়ের দোকানে দর কষাকষিকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতে দুই যুবককে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন নিহত মামুন অর রশিদের বড় ভাই স্বপন আলী। মামলায় সদর উপজেলার হুচুকপাড়ার আলা উদ্দিনের ছেলে আকাশ আলীকে প্রধান আসামি করে আরও ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে।
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল মামুন জানান, মঙ্গলবার রাতে ভালাইপুরে কাপড়ের দোকানে দর কষাকষিকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতে দুই যুবককে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় মামলা হয়েছে। এর আগে সকালে ওই ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন-সদর উপজেলার হুচুকপাড়ার খবির উদ্দিনের ছেলে মিঠু মিয়া ও আব্দুল খালেকের ছেলে মানিক মিয়া। তাদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার ভালাইপুর মোড়ে একটি কাপড়ের দোকানে দর কষাকষিকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতে সজল আলী ও মামুন অর রশিদ নামে দুই যুবককে হত্যা করা হয়।
কক্সবাজারের নাজিরারটেক সাগর উপকূলে ট্রলার থেকে ১০ জনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
বুধবার পুলিশ আসামিদের সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চাইলে আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাজমুল হুদা।
রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া দুজন হলেন- মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি মাতারবাড়ি এলাকার ট্রলার মালিক বাইট্টা কামাল ও ৪ নম্বর আসামি ট্রলার মাঝি করিম সিকদার। মঙ্গলবার তাদেরকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছিল পুলিশ। এজাহারভুক্ত চারজনের মধ্যে অপর দুই আসামি হলেন মাতারবাড়ির আনোয়ার হোসেন ও বাবুল মাঝি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্জয় বিশ্বাস জানান, রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার পর এখন আসামিদের হেফাজতে নেয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে ঘটনায় এজাহারভুক্ত অপর দুই আসামিসহ জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের পাঁচটি দল কাজ করছে।
রোববার দুপুরে একটি ট্রলার সাগরে ভাসতে দেখে নাজিরারটেক এলাকার উপকূলে নিয়ে আসেন জেলেরা। ট্রলারের ভেতরে মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ট্রলারটির হিমঘর থেকে ১০ জনের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করে।
ওই ট্রলারের মালিক মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের হরিয়ারছড়া এলাকার ছনখোলা পাড়ার মৃত রফিক উদ্দিনের ছেলে সামশুল আলম প্রকাশ সামশু। ১০ জনের মধ্যে তার মরদেহও ছিল। মরদেহ গ্রহণ করেছেন তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম। এ ঘটনায় তিনি কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন।
ইতোমধ্যে ছয়জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনাক্ত না হওয়ায় মর্গে রয়ে গেছে চারজনের মরদেহ। ডিএনএ পরীক্ষায় এ চারজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য