নেটফ্লিক্সের একটি সিনেমায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক সম্পর্কে ‘অসম্মানজনক ও অবমাননাকর’ সংলাপ সরানোর বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে আবারও চিঠি দিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
এরপরও বিতর্কিত এই সংলাপটি সরানো না হলে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে যত ধরনের ব্যবস্থা নেয়া যায়, সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
এ ব্যাপারে বিজিএমইএ পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বুধবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া ফরাসি সিনেমার একটি সংলাপে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেয়া হয়েছে। সেটি প্রত্যাহার করার জন্য আমরা ৭ থেকে ৯ আগস্ট বিজিএমইএর পক্ষ থেকে নেটফ্লিক্সের সিইও, চলচ্চিত্র পরিচালক, ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু এ বিষয়ে এখনও আশাব্যঞ্জক কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে আমরা আবারও ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে চিঠি দিয়েছি। আশা করছি এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে। যদি পদক্ষেপ না নেয়া হয়, তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে সে বিষয়ে আমরা চিন্তা করব।’
মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘তবে এ ধরণের অবমাননাকর সংলাপ জাতি হিসেবে আমাদের বাংলাদেশিদের অনুভূতি ও গর্বকে আহত করে। এ ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য প্রত্যাহারের জন্য আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করব।’
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা কোনোভাবেই ছেড়ে দেব না। বিতর্কিত সংলাপটি সরানোর আগ পর্যন্ত যত ধরনের ব্যবস্থা নেয়া যায়, সব ধরনের ব্যবস্থা নেব আমরা।’
৩০ জুলাই নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে ভ্যান ড্যাম অভিনীত সিনেমা দি লাস্ট মার্সেনারি। সিনেমাটি এখন ওই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে জনপ্রিয়তার তালিকায় সেরা দশে রয়েছে। দর্শকপ্রিয় হওয়া সিনেমাটির একটি সংলাপে বাংলাদেশি পণ্যবিরোধী প্রচারণার অভিযোগ উঠেছে।
অনেকেই মন্তব্য করেছেন, ডেভিড শ্যারন পরিচালিত ফ্রেঞ্চ ভাষার এই সিনেমায় বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যকে নিম্নমানের বলে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
সিনেমাটির ১ ঘণ্টা ৪১ মিনিটে শুরু হওয়া দৃশ্যে দেখা যায়, একজন অভিনয়শিল্পী বলছেন, ‘হ্যাঁ, এটা বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট (Ah, yes. Bulletproof tuxedo)’।
উত্তরে আরেকজন বলেন, ‘এটা মেড ইন ফ্রান্স। তবে এটি বাংলাদেশ থেকে আসলে আমি শেষ হয়ে যেতাম (Made in France. If it was from Bangladesh, I,d be gone.)।
বাংলাদেশে তৈরি পোশাক সম্পর্কে ‘অসম্মানজনক ও অবমাননাকর’ এই সংলাপ সরানোর আগ পর্যন্ত দি লাস্ট মার্সেনারি সিনেমাটির সম্প্রচার বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ভিডিও স্ট্রিমিং ওয়েবসাইট নেটফ্লিক্সকে ৭ আগস্ট চিঠি দিয়েছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
একই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ৯ আগস্ট চলচ্চিত্রটির পরিচালক, ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূতকেও চিঠি লিখেছিলেন তিনি।
কিন্তু এক মাস পার হলেও এখনও চলচ্চিত্রটি থেকে ওই সংলাপ সরানো হয়নি বা কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ কারণেই হতাশা প্রকাশ করে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বুধবার আবারও আলাদা আলাদা চিঠি লিখেছেন ফারুক হাসান। চিঠি দুটির ভাষা একই।
নতুন চিঠিতে ফারুক হাসান লিখেছেন, ‘ব্যবসা, অর্থনীতি আর সামাজিক বিষয়গুলোতে বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যকার সম্পর্ক কয়েক দশক ধরেই বিরাজমান। আপনার এ সমর্থন দেয়ার বিষয়টিকে সামনে রেখে ২০২১ সালের ৭ আগস্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপনাকে চিঠি দিয়েছিলাম। একটি বিষয়, যা কি না বাংলাদেশিদের হৃদয়কে ‘ভেঙেচুরে’ দিয়েছে, চিঠিতে সেটি উপস্থাপন করেছিলাম।
ডেভিড শ্যারন পরিচালিত দি লাস্ট মার্সেনারি নামে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ফরাসি মুভিতে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য রয়েছে।
চিঠিতে ফারুক হাসান বলেছেন, ‘মেড ইন বাংলাদেশ শুধুমাত্র যে আমাদের জাতির জন্য গর্বের বিষয়, সেটি নয়; এর বিস্তৃতি আরও বেশি। এর মধ্য দিয়ে জাতি হিসেবে আমাদের গৌরবময় আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। লাখো প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছরের ধারাবাহিকতায় পোশাকশিল্প আজ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। গত তিন দশক ধরে অর্থনীতির অন্যান্য খাতগুলোতেও এ শিল্পের সরব পদচারণা প্রশংসিত হয়েছে।’
চিঠিতে তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমরা আমাদের তৈরি পোশাক শিল্পকে সব দিক থেকে নিরাপদ, সুরক্ষিত, সবুজ এবং টেকসই করার জন্য সব প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। সুরক্ষার জন্য সব নিরাপত্তা মান নিশ্চিত করেছি এবং সেরা ব্যবসায়িক অনুশীলনগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। করোনা মহামারির মধ্যে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, আন্তর্জাতিক বাজার যখন তার স্বাভাবিক গতি ফিরে পাওয়ার পথে রয়েছে, তখন আমাদের নিজস্ব ব্র্যান্ড নিয়ে এ ধরনের অযৌক্তিক ও আপত্তিকর মন্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
চিঠিতে বলা হয়, ‘এর আগে আমরা নেটফ্লিক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ওই চলচ্চিত্রের পরিচালককে আমাদের এ উদ্বেগের বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, তাদের কাছ থেকে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাইনি। চলচ্চিত্রটি এখনও নেটফ্লিক্সের প্লে লিস্টে রয়েছে এবং চলচ্চিত্র থেকে সেই আপত্তিকর সংলাপগুলোও সরিয়ে ফেলা হয়নি।
‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য আমাদের ব্যথিত করেছে। আমরা এর নিন্দা জানাই এবং আপনার বেঞ্চের মাধ্যমে ফরাসি সরকার ও চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের প্রশ্নবিদ্ধ সংলাপটি অনতিবিলম্বে অপসারণের জন্য পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
ফারুক হাসান বলেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করা মানবাধিকার আইন ১৯৯৮ এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। তবে এটি অবশ্যই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে পালন করতে হবে। এরপরও জনপ্রতিনিধিরা মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার সীমাবদ্ধ রাখার ক্ষমতা রাখেন, যদি কি না সেটি কোনো সুপ্রতিষ্ঠিত খ্যাতিকে বিনষ্ট করে। এরপরও বলা যায় যে, চলচ্চিত্রে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ নিয়ে যে মন্তব্য আছে, সেটি পুরোপুরি ভুল। কারণ, বাংলাদেশ বুলেট প্রুফ জ্যাকেট তৈরি করে না। গত চার দশক ধরে আমরা যে পোশাক তৈরি করছি, সেটি বিশ্বব্যাপী ক্রেতা ও ভোক্তাদের আস্থা অর্জন করেছে তার গুণগত মান ও প্রতিযোগিতামূলক মূল্য দিয়ে।’
চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘এ কারণে বিজিএমইএ ও পোশাক শিল্প পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জ্ঞাপন এবং আপনার (রাষ্ট্রদূত) মাধ্যমে ফরাসি কর্তৃপক্ষকে চলচ্চিত্রটি থেকে প্রশ্নবিদ্ধ সংলাপটি সরিয়ে নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
বিজিএমইএ পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জানান, একই বিষয় অবহিত করে এবং সহযোগিতা চেয়ে বিজিএমইএ থেকে উল্লিখিত চলচ্চিত্রটির পরিচালক, বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:দেশের ক্রমবর্ধমান স্টার্ট-আপ খাতকে অর্থায়ন সুবিধা দিতে ব্র্যাক ব্যাংকের সাথে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এই চুক্তির আওতায় স্টার্ট-আপ খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের সৃষ্ট ৫০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল ব্যবহারের সুযোগ পাবে ব্র্যাক ব্যাংক, যা ব্যাংকটির এই খাতে অর্থায়ন সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করবে। এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো, অর্থায়ন সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে উদীয়মান উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং তাঁদেরকে জাতীয় অর্থনীতিতে আরও বেশি অবদান রাখতে উৎসাহিত করা।
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন চুক্তিপত্র হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অংশগ্রহণকারী ২২টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্টের সহায়তায় এই উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করা হবে।
এই সম্ভাবনাময় খাতের উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশের স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই খাতটি ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে টেকসই সম্পর্কও গড়ে তুলছে। ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন সুবিধাটি উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী উদ্যোগ সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন পেতে সহায়তা করবে, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমন উদ্যোগ বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় তরুণ উদ্যোগগুলোর বিকাশে ব্যাংকটির ব্যক্ত করা প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখবে।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ২৯১টি শাখা ও উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
দেশে বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার খাতে স্মার্ট ও জ্বালানি-সাশ্রয়ী ব্যাটারির ব্যবহার বাড়াতে কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি ও সোলশেয়ার লিমিটেড কৌশলগত অংশীদারিত্বে যুক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার (০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কিমিয়া সাআদত এবং সোলশেয়ার লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ড. সেবাস্টিয়ান গ্রোহ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি ব্যাংকের, হেড অব করপোরেট ব্যাংকিং ও হেড অব বিজনেস (ব্রাঞ্চ) ড. মো. আরিফুল ইসলাম; হেড অব এডিসি অ্যান্ড হেড অব এমডি’স কোঅর্ডিনেশন টিম মো. মামুন-উর রহমান; সোলশেয়ার-এর ফাইন্যান্স ডিরেক্টর আনিসা আলী, সিএফএ সহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এই অংশীদারিত্বের ফলে দেশের শত শত বৈদ্যুতিক পরিবহনের গ্যারেজ সহজেই স্মার্ট ব্যাটারি প্রযুক্তি গ্রহণে সক্ষম হবে। এখন পর্যন্ত উচ্চ ব্যয়ের কারণে অনেক উদ্যোক্তা ব্যাটারি ব্যবহারে আগ্রহী হলেও অর্থায়নের সীমাবদ্ধতায় তা সম্ভব হচ্ছিল না। কমিউনিটি ব্যাংকের গ্রিন এসএমই ঋণ সুবিধা ও সোলশেয়ার -এর উদ্ভাবনী পে-অ্যাজ-ইউ-গো (পিএওয়াইজি) প্রযুক্তি একত্রে উদ্যোক্তাদের জন্য সাশ্রয়ী, নমনীয় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।
এ উদ্যোগের মাধ্যমে গ্যারেজ মালিকরা টেকসই অর্থায়ন সুবিধা পাবেন, দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে জ্বালানি-সাশ্রয়ী ব্যাটারি ব্যবহার, দেশের বৈদ্যুতিক পরিবহন খাতে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত হবে এবং বাংলাদেশ পরিচ্ছন্ন জ্বালানির দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।
এই উদ্যোগকে দেশের পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ও টেকসই পরিবহন ব্যবস্থার জন্য এক মাইলফলক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
যমুনা ব্যাংক পিএলসি. এবং অ্যাপোলো ক্লিনিক লাইসেন্সঃ জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতাল লিমিটেডের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে রাজধানীর যমুনা ব্যাংক টাওয়ারে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। যমুনা ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিও নূর মোহাম্মদ এবং অ্যাপোলো জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতাল লিমিটেডের উপদেষ্টা মসিউর রহমান কামাল উক্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে যমুনা ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিওও মো. আব্দুস সালামসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এই চুক্তির মাধ্যমে যমুনা ব্যাংক তাদের সম্মানিত গ্রাহক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাঁদের পোষ্যদের জন্য বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা আরও সহজলভ্য ও সুফলদায়ক করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করল। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অ্যাপোলো ক্লিনিকের লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতালের সঙ্গে এই অংশীদারিত্ব গ্রাহকদের জন্য বিশেষ সুবিধাসহ উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করবে।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এর করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত সোমবার কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার হতদরিদ্র কৃষক ও রিকশাচালককে স্ত্রী ও সন্তানের চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির করপোরেট প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ইমতিয়াজ ইউ. আহমেদ হতদরিদ্র কৃষক ও রিকশাচালক মো. মেহেদী হাসানকে ওই অনুদানের চেক প্রদান করেন।
ওই অনুদানের চেক প্রদানকালে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির এসইভিপি ও কোম্পানি সচিব জনাব মো. আবুল বাশার, ব্যাংকের এসএভিপি মো. জাকির হোসেন, ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগ ও ব্যাংক ফাউন্ডেশনের ইনচার্জ কে. এম. হারুনুর রশীদ এবং ব্যাংক ফাউন্ডেশন এর এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. কামাল মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় সীমান্ত ব্যাংকের উদ্যোগে শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) এবং টেকনাফ (কক্সবাজার) উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপনের মাধ্যমে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়। এই কর্মসূচির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা হয় এবং বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত করা হয়। শ্যামনগরের ৭টি এবং টেকনাফে ২টি বিদ্যালয়ে গাছের চারা রোপণ করা হয়।
সীমান্ত ব্যাংকের টেকনাফ শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হোসেন এবং শ্যামনগর উপশাখার ব্যবস্থাপক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম যথাক্রমে টেকনাফ এবং শ্যামনগরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী সমন্বয় করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীগন স্বতঃস্ফূর্তভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করেন।
বাংলাদেশে প্রতি বছর হাজারো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে যক্ষ্মা (টিবি)। কেবল ২০২৩ সালেই ৪৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে- ফলে প্রতি ১২ মিনিটে একজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন যক্ষ্মায়। এই জাতীয় সংকট মোকাবেলায় সাহসী উদ্যোগ নিয়েছে প্রাইম ব্যাংক পিএলসি। জীবনরক্ষাকারী যক্ষ্মা প্রতিরোধ কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করতে প্রাইম ব্যাংক বিশ্বখ্যাত স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি-এরর সাথে অংশীদারিত্ব করেছে।
আজ (০৯ সেপ্টেম্বর) গুলশানে প্রাইম ব্যাংকের করপোরেট অফিসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এক সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুযায়ী, প্রাইম ব্যাংক এক বছরের জন্য আইসিডিডিআর,বি-এর সিলেট টিবি স্ক্রিনিং অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টার (TBSTC)-এর যক্ষ্মা পরীক্ষার ও চিকিৎসা সেবার ধারাবাহিকতায় আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে। প্রাইম ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান ও. রশীদ এবং আইসিডিডিআর,বি-এর নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমীদ আহমেদ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
দেশে যক্ষ্মা প্রতিরোধে দীর্ঘদিনের আস্থাভাজন প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৫ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষকে স্ক্রিনিং করেছে। এ সময়ে শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজারের বেশি টিবি রোগী, যার মধ্যে ১৮ হাজার শিশু। পাশাপাশি ৫,৫০০-এরও বেশি ওষুধ-প্রতিরোধী টিবি রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এই সহযোগিতার মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংক জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কমিউনিটির কল্যাণে তাদের অঙ্গীকার আরও জোরদার করছে। ব্যাংকটি প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু হ্রাস এবং একটি সুস্থ, সহনশীল বাংলাদেশ গঠনে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উপর্যুক্ত বিষয়ের প্রতি সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো।
০২। সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কাস্টমস হাউস/স্টেশনে আমদানিকালে দাখিলকৃত পণ্য ঘোষণায় প্রদত্ত পণ্যের বর্ণনা ও HS Code কায়িক পরীক্ষায় পণ্যের নমুনা কিংবা শুল্কায়ন পরবর্তী সময়ে পণ্যের ঘোষিত বর্ণনা পরিবর্তিত হয়, যা ক্ষেত্রবিশেষে প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স অথবা প্রাপ্যতা শীট বা সংশ্লিষ্ট Utilization Declaration (UD) তে অন্তর্ভূক্ত থাকে না। ফলে শুল্কায়নকালে উহা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে যথাসময়ে কাঁচামাল/পণ্য খালাস না হওয়ায় রপ্তানি আদেশ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য জাহাজীকরণে বিঘ্ন ঘটছে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অবগত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ও রপ্তানি বাণিজ্যের বৃহত্তর স্বার্থে জরুরি বিবেচনায় নিম্নরূপ নির্দেশনা প্রদান করা হলো:
(ক) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন HS Code নিরূপণ করলে এবং নিরূপিত HS Code এর প্রথম ৪ ডিজিট বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত HS Code এর প্রথম ৪ ডিজিট এর সাথে মিল থাকলে; আমদানিকারক পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে এই নিরূপিত HS Code বন্ড লাইসেন্সে ও ইউডিতে অন্তর্ভূক্ত করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস এর কমিশনার এর নিকট দাখিল করবেন যার বিপরীতে কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
(খ) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন বর্ণনা নিরূপণ করলে; আমদানিকারক পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্তরূপ নিরূপিত পণ্যের বর্ণনা বন্ড লাইসেন্সে ও ইউডিতে অন্তর্ভূক্ত করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস এর কমিশনার এর নিকট দাখিল করবেন যার বিপরীতে কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
গ) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভিন্ন HS Code নিরূপণ করা হলে এবং বন্ড লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কাস্টমস বন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটের মাধ্যমে তার প্রাপ্যতায় উক্ত HS Code অন্তর্ভুক্ত করলে কাস্টমস হাউস এর কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করবেন এবং পণ্য চালান খালাসের তথ্য সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
০৩। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে; এবং বর্তমানে উক্তরূপ কারণে শুল্কায়ন নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষমান পণ্যচালানসমূহের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
মন্তব্য